কাক ও কাঠবেড়ালীর কাহিনী
বাদশাহ শারিয়ার বলে তোমার ছোট্ট ছোট্ট গল্পগুলো বেশ সারগর্ভ। অনেক কিছু শেখা যায়। এরপর বিশ্বস্ত বন্ধুর কাহিনী শোনাও।
শাহরাজাদ বলে, শুনুন জাঁহাপনা একটি কাক আর কাঠবেড়ালীর কাহিনী শোনাচ্ছি। একটি কাকের সঙ্গে এক কাঠবিড়ালীর খুব বন্ধুত্ব ছিলো। একদিন তারা দুই বন্ধু মিলে গাছের গুডির উপরে বসে জমিয়ে গল্প করছিলো। এমন সময় গাছের ওধারে কখন একটা বাঘ এসে দাঁড়িয়েছে কেউ টেরই পায়নি। বাঘাটা যখন হুঙ্কার দিয়ে ওঠে তখন কাঠবিড়ালীর পিলে চমকে যায়।
বাঘের গর্জন শুনে কাক তার বন্ধুর পাশ থেকে উড়ে গিয়ে উপরের একটা ডালে গিয়ে বসে। কিন্তু কাঠবিড়ালী ভেবে পায় না কোথায় সে লুকাবে। কাককে জিজ্ঞেস করে, কি করি বন্ধু तृळऊ?
কাক বলে, তাই তো? মুশকিল হলো, তোমাকে কি করে বাঁচানো যায়, বুঝতে পারছি না। বাঘ ব্যাটা ধারে কাছেই এসে পড়েছে। এখুনি হয়তো হালুম করে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
এমন সময় কাক দেখতে পেলো, অদূরে মাঠের মধ্যে একপাল ভেড়া চরছে। তাদের পালে কয়েকটা সিংহের মতো তাগড়াই কুকুর ছিলো। কুকুরগুলোকে রাখা হয় বাঘের হাত থেকে ভেড়াগুলোকে রক্ষা করার জন্য।
কাক উড়তে উড়তে গিয়ে কুকুরগুলোর চোখে ঠোকা মেরে উড়ে উড়ে পালাতে লাগলো। রাগে হুঙ্কার দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে ওঠে কুকুরগুলো। পায় তো কাকটাকে চিবিয়ে খায় আর কি! কিন্তু কাকের সঙ্গে তারা এটে উঠতে পারবে কেন। সে ঠোকা মেরেই আবার শূন্যে পালিয়ে যায়। কাকের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে কুকুরগুলো দিগবিদিগ জ্ঞানশূন্য হয়ে উড়ন্ত কাকের নিশানা লক্ষ্য করেই ছুটতে থাকে। কাকেরও সেই উদ্দেশ্যই ছিলো। এইভাবে সে তাদের বাগের মধ্যে নিয়ে আসে। একটা গাছের ডালে বসে কাকটা কুকুরগুলোর দিকে তাকিয়ে জুলজুল করে হাসতে থাকে। তখন কুকুরগুলোর সে কি বিকট চিৎকার। পারে তো তারা পুরো গাছ সুদ্ধ কাকটাকে গিলে ফেলবে।
কুকুরের এই চিৎকারে বাঘ ব্যাটা হাওয়া হয়ে যায়। কাক তখন উড়ে অন্যত্র চলে গেলে কুকুরগুলোও হতাশ হয়ে ফিরে যায়।
তখন কাক এসে কাঠবিড়ালীকে বলে, কী। এখন ভয় কেটেছে তো?
কাঠবিড়ালী বলে সত্যিই তুমি বন্ধুর মতো কাজ করেছ ভাই।