১৯৫৩। বয়স ৫৪ বছর
ফেব্রুয়ারি মাসে জীবনানন্দের বরিষা কলেজের চাকরিটা চলে যায়। এ সময় ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হন জীবনানন্দ। শরীরে ও মনে ভয়ানক অবসাদ। রক্তচাপজনিত মানসিক দৌর্বল্য তাঁকে বিপন্ন করে তোলে। চোখের দৃষ্টি ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে।
ডায়মন্ড হারবার ফকির চাঁদ কলেজে অধ্যাপনার জন্যে আবেদন করেন। কিন্তু যাতায়াতের অসুবিধার কথা চিন্তা করে শেষ পর্যন্ত এ কলেজে চাকরি গ্রহণ করেননি। পরে ‘ভারতবর্ষ’ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক গোপালচন্দ্র রায় (জন্ম. ১৯১৬)-এর সহযোগিতায় জীবনানন্দ হাওড়া গার্লস কলেজের (বর্তমানে বিজয়কৃষ্ণ কলেজ) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ বিজয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্য (১৮৯৫–১৯৭৫)- এর সঙ্গে দেখা করেন। শেষ পর্যন্ত বিনা আবেদনেই গার্লস কলেজ কর্তৃপক্ষ জীবনানন্দকে ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক পদে নিযুক্তি দিলেন। [সূত্র : ‘তাঁকে সহকর্মী হিসাবে দেখেছি’, অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘কোরক’, জীবনানন্দ সংখ্যা, শারদ ১৯৯৪, পৃ. ৩১৮-১৯)। বছরের মাঝামাঝিতে ১ জুলাই-এ তিনি হাওড়া গার্লস কলেজে যোগ দিলেন। মৃত্যু পর্যন্ত এখানেই জীবনানন্দ অধ্যাপনা করেন। এই পদটি ছিল স্থায়ী অধ্যাপকের পদ। ১৫০ টাকা মাসিক বেতনের সঙ্গে ১৫ টাকা ভাতা। ১৯৫৪ সালের ১ জুলাই থেকে বার্ষিক ২৫ টাকা বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব পালনের জন্যে আরও ২৫ টাকা বিশেষ ভাতা দেওয়া হয় তাঁকে।
সারাজীবনে ২৮ বছর অধ্যাপনা করেছেন জীবনানন্দ দাশ। তাঁর পেশাগত জীবনের সময়ভিত্তিক তালিকাটি এরকম—
১৯২২–১৯২৮ : সিটি কলেজ।
১৯২৯ সালে মাত্র ৩ মাসের জন্যে : বাগেরহাট কলেজ, খুলনা।
মে ১৯২৯–১৯৩০ : রামযশ কলেজ, দিল্লি।
১৯৩৫–১৯৪৬ : ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল।
১৯৫০–১৯৫১ : খড়গপুর কলেজ, মেদিনীপুর।
নভেম্বর ১৯৫২–ফেব্রুয়ারি ১৯৫৩ : বরিষা কলেজ।
১৯৫৩–১৯৫৪ : হাওড়া গার্লস কলেজ।
১৯২২ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত— এই ৩৩ বছরে জীবনানন্দকে বেকার থাকতে হয়েছে প্রায় ১০ বছর। দীর্ঘ বেকারত্বের কাল দুটো হল : ১৯৩০–১৯৩৫ এবং ১৯৪৬–১৯৫০। বরিশালের ব্রজমোহন কলেজের চাকরির এক যুগ সময় ছাড়া বাকি সময়টা বেকারত্ব বা বেকারত্বের সম্ভাবনা তাঁকে তাড়া করে ফিরেছে। এ প্রসঙ্গে কবিপত্নী লাবণ্য দাশের একটি উক্তি কৌতূহলোদ্দীপক। ‘মানুষ জীবনানন্দ’ গ্রন্থে তিনি লিখেছেন—
‘উনি যে চাকরি পেতেন না তা নয়। উনি চাকরি করতে চাইতেন না। বারবার বলতেন, বলো তো কি নিদারুণ সময়ের অপচয়। বড়ো ক্ষতি হয়। এভাবে এতটা সময় চলে যাওয়া, আহা! যদি আমার এমন সঞ্চয় থাকত যে এভাবে সময় নষ্ট না করলেও চলত।’
২০ বছরের ওপর জীবনানন্দ ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক স্তরে অধ্যাপনা করেছেন। কেমন শিক্ষক ছিলেন তিনি? হয়তো তেমন জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন না; অন্তত ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র আবুল কালাম শামসুদ্দীন, বরিষা কলেজের সহকর্মী শান্তিপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়, গবেষক আবদুল মান্নান সৈয়দ সেই কথাই বলেছেন। হাওড়া গার্লস কলেজের ছাত্রী ও সহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে গোপালচন্দ্র রায় জানিয়েছেন—ভালোই পড়াতেন জীবনানন্দ। তবে এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাবার মতো যথেষ্ট তথ্য আমাদের হাতে নেই।
সিগনেট প্রেস থেকে প্রকাশিত ‘বনলতা সেন’ ১৩৬০ বঙ্গাব্দের শ্রেষ্ঠগ্রন্থ হিসেবে ‘নিখিল বঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলন’ কর্তৃক পুরস্কৃত হয়। পুরস্কারটির নাম ‘রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার’। মে মাসে মহাজাতি সদনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জীবনানন্দকে ‘রবীন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার’টি দেওয়া হয়। অতুলচন্দ্র গুপ্তের (১৮৮৪–১৯৬১) হাত থেকে কবি এই পুরস্কার গ্রহণ করেন (২ জ্যৈষ্ঠ ১৩৬০)। পুরস্কারের অর্থমূল্য ১০০ টাকা। এর সঙ্গে কবিকে একটি তসরের চাদর এবং ডালায় কিছু ফল ও মিষ্টান্ন দেওয়া হয়েছিল। সংবর্ধনার উত্তরে অত্যন্ত সংকোচের সঙ্গে কুণ্ঠিত কণ্ঠে প্রায় দু’হাজার দর্শকের সামনে দু’চার কথা বলেছিলেন জীবনানন্দ।
১৯৫৩ সালে শান্তিনিকেতনে বসন্ত উৎসবের সময় তিনদিনের (১৫-১৭ ফাল্গুন) একটি সাহিত্যমেলা বসে। উভয় বঙ্গের নামকরা সাহিত্যিকরা এই মেলায় আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। কাব্যশাখার আহ্বায়ক অশোকবিজয় রাহা (জন্ম. ১৯২০) জীবনানন্দকে উক্ত সভায় যোগ দেওয়ার জন্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি রাজি হননি। সুরজিৎ দাশগুপ্তকে বলেছিলেন— এত বড় সভাসমিতিতে তিনি আড়ষ্ট হয়ে যান। তাছাড়া এত বড় আয়োজনের সার্থকতা সম্বন্ধেও তিনি সংশয়গ্রস্ত ছিলেন।
সুভাষ মুখোপাধ্যায় এই সভায় জীবনানন্দ বিষয়ে মন্তব্য করেন-
‘সমস্ত কিছুর মধ্যে থেকেও তিনি কিছুর মধ্যেই নন, সেই ভাবান্তরহীন কবি হলেন জীবনানন্দ দাশ। সমস্ত কিছুই তিনি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন, আর তারপর একের পর এক তাদের মুখগুলো ধূসর কুয়াশায় মুড়িয়ে দেন। নাম, সংখ্যা, আকৃতি তাঁর কাব্যে কথার কথা মাত্র। প্রাকৃত থেকে অপ্রাকৃত, আকার থেকে নিরাকারে তাঁর যাত্রা। সময়ের কণ্ঠরোধ করে তিনি কথা বলেন, শব্দ তাঁর কাছে বস্তুবিরহিত
সংকেত মাত্র। বিপরীতভাবে গায়ে জুড়ে তিনি তাসের ঘর সাজান, তারপরই নিজেই নিয়তিপুরুষ সেজে এক ফুঁয়ে সে ঘর উড়িয়ে দেন।’ [পাঁচ বছরের বাংলা কবিতা’, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, সাহিত্যমেলা, সম্পাদক : ক্ষিতীশ রায়, বেঙ্গল পাবলিশার্স প্রা. লি. কলকাতা, পৃ. ১২৯]।
অমিয় চক্রবর্তীও এই সভায় সুভাষ মুখোপাধ্যায় দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সভায় উপস্থিত বুদ্ধদেব বসু জীবনানন্দ-বিষয়ে সুভাষবাবুর এ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন—
‘ফরমাস মতো কোনো একটা কথা বললেই সেটা কবিতা হল না হলেই হল না, এ মনোভাবের বিরুদ্ধে আমি তীব্র প্রতিবাদ করতে চাই। জীবনানন্দ ও অমিয় চক্রবর্তী সম্বন্ধে সুভাষ বললেন যে এঁরা হচ্ছেন শূন্যচারী, প্রকৃতজ্ঞানের সঙ্গে এঁদের যোগ নেই। তাঁর মতে যোগ যাঁদের আছে, তাঁদের রচনা থেকে অনেক উদাহরণ তো শুনলাম। এঁদের মোট বলবার কথা এই যে, ‘বর্তমান পৃথিবীটা খারাপ। একে ভাঙবো, আবার নতুন করে গড়ব।’ গত পাঁচ বছরে এ রকম বহু লেখা হয়েছে। তাদের মধ্যে কবিতা হয়েছে ক’টি? খুব চেঁচিয়ে কিংবা নাচুনি ছন্দে বললে মন ও প্রাণ সহজে আকর্ষণ করে। কিন্তু সেটাই কি কবিতার আদর্শ হবে? জীবনানন্দ, অজিত দত্ত আসলে যথেষ্ট অন্তর্মুখী। এরও যে বিপদ নেই একথা বলব না। তবে, চেঁচাননি বলেই কি এঁদের কবিতাকে কবিতা বলতে বাধে?’ [‘কি লিখব’, বুদ্ধদেব বসু, সাহিত্যমেলা, সম্পাদক : ক্ষিতীশ রায়, বেঙ্গল পাবলিশার্স প্রা. লি. পৃ. কলকাতা, ১৩৭-৩৮]।
১৯৫২ সালের ‘সীমান্ত’ পত্রিকায় লিখিত প্রবন্ধে সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনানন্দের কবিতায় প্রকৃতি, প্রেম ও মৃত্যুচেতনা বিষয়ে বিরূপ সমালোচনা করেছিলেন। এতে সরোজ বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেন –
জীবনানন্দ হলেন ‘এক আচ্ছন্ন করা বিষণ্নতার জনক’।
জীবনানন্দের চোখে সেই পত্রিকা পড়েনি। সুরজিৎ দাশগুপ্ত জলপাইগুড়ি থেকে সেই বিরূপ সমালোচনাপূর্ণ প্রবন্ধটির কথা জানালে জীবনানন্দ ২.৫.৫৩ তারিখে সুরজিৎ দাশগুপ্তকে লিখেন ‘সীমান্ত আমি দেখিনি।’
পরে ‘সীমান্ত’ থেকে প্রাসঙ্গিক অংশের উদ্ধৃতি সুরজিৎ জীবনানন্দকে পাঠালে ২০.৫.৫৩ তারিখে লেখা এক চিঠিতে কবি লিখেন—
‘আমার কবিতা সম্বন্ধে নানা জায়গায় নানা রকম লেখা দেখেছি, মন্তব্য শুনেছি; প্রায় চৌদ্দ আনি আমার কাছে অসার বলে মনে হয়েছে; কিন্তু এ নিয়ে বিতর্কে নেমে বিশেষ কোন ফল হবে না। আমাদের দেশে বড় সমালোচক আজকাল নেই-ই এক রকম।’ [‘জীবনানন্দ দাশের অপ্রকাশিত পত্রগুচ্ছ’, পৃ. ৬৫]
১৯৫৩ সালে শামসুর রাহমান জীবনানন্দের সঙ্গে দেখা করতে যান কলকাতার ল্যান্সডাউন রোডের বাসায়। শামসুর রাহমান এই সাক্ষাতের বর্ণনা দিয়েছেন এ রকম—
‘বলতে দ্বিধা নেই, জীবনানন্দ দাশকে দেখে আমি হতাশ হয়েছিলাম। দেখতে মোটেই কবির মতো নন তিনি। কালো, স্থূলকায়; চেহারা বৈশিষ্ট্যবর্জিত। শুধু চোখে ছিল এক ধরনের মায়া। আর তাঁর হাসি ছিল জোরালো এবং খাপছাড়া।’ [‘অসীমের সৈকতে’, শামসুর রাহমান]।
এ বছর জীবনানন্দ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ/আলোচনা বেরোয়
১. ‘নির্জনতম কবি’ (‘বনলতা সেন’ কাব্যের আলোচনা), সুভাষ মুখোপাধ্যায়, ‘পরিচয়’, শ্রাবণ ১৩৬০।
২. ‘বাংলা কবিতার বহিরঙ্গ, অরুণকুমার সরকার, ‘গাঙ্গেয়’, ভাদ্র ১৩৬০।
৩. শুদ্ধসত্ত্ব বসু সম্পাদিত ‘একক’ পত্রিকায় ‘বনলতা সেন’ কাব্য বিষয়ে আলোচনা বেরোয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ ১৩৬০।
‘কবিতা’র আষাঢ়, ১৩৬০ সংখ্যায় জীবনানন্দকৃত ‘অন্ধকার’ কবিতার তর্জমা ‘Darkness’ প্রথম প্রকাশিত হয়।
সুকান্ত ভট্টাচার্যের সঙ্গে বুদ্ধদেব বসুর বিশেষ কোনো ঘনিষ্ঠতা ছিল না। বুদ্ধদেব বসুর ভাষায় ‘পাঁচ বছরে বোধ হয় পাঁচ বারও সুকান্তকে চোখে দেখিনি।’ সুকান্ত ভট্টাচার্য মাত্র দু’বারই ‘কবিতা’য় লিখেছিলেন নবম বর্ষের প্রথম সংখ্যায় ‘অবৈধ’, একাদশ বর্ষের চতুর্থ সংখ্যায় ‘ব্যর্থতা’। অথচ এই কিশোর কবির অকাল প্রয়াণে (১৯২৬–১৯৪৭) কী আশ্চর্য মমতায় বুদ্ধদেব বসু সুকান্ত বিষয়ে লিখেছিলেন! ‘কবিতা’র কাছাকাছি হয়েও সমর সেন সুকান্তের কবিত্ব বিষয়ে নিঃসংশয় হতে পারেননি। ১৯৫৩ সনের ১৩ মে একটি চিঠিতে তিনি বুদ্ধদেবকে প্রশ্ন করেছেন—
সুকান্ত কি মহাকবি? আমার কল্পনা ও বোধশক্তি এতো কমে গিয়েছে যে কিছুই ঠিক করে উঠতে পারি না।’
‘নজরুল নিরাময় সমিতি’র উদ্যোগে নজরুল ও নজরুল-পত্নীকে চিকিৎসার জন্যে ‘জল আজাদ’ নামক জাহাজে করে ইংল্যান্ডে প্রেরণ করা হয়। রবিউদ্দীন আহমদ এবং অনিরুদ্ধ তাদের সঙ্গী হন। লন্ডনে ছয় মাস অবস্থানের পর কবি ও কবিপত্নীকে ভিয়েনায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর সোমবার শেষ রাতে তাঁরা বিমানযোগে রোম থেকে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন।
বগুড়ার মোহাম্মদ আলী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হলেন। তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর চৌধুরী খালিকুজ্জামান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়। ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে মুনীর চৌধুরী ‘কবর’ নাটকটি লিখেন।
আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে যুক্তফ্রন্ট গঠনের সিদ্ধান্ত হয় এবং ২১ দফার খসড়া গৃহীত হয়।
‘দৈনিক ইত্তেফাকে’র আত্মপ্রকাশ ঘটে।
এভারেস্টের চূড়ায় উঠে প্রতিকূল প্রকৃতির বিরুদ্ধে মানুষের ইচ্ছাশক্তির জয়ের স্বাক্ষর আঁকলেন এডমন্ড হিলারী এবং তেনজিং নোরগে।
এ বছর পরলোকে যান আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, ১৯৩৬ সালে সাহিত্যে নোবেলজয়ী ইউজিন ও’নীল।
আর জন্মালেন রতনতনু ঘাটী, প্রমোদ বসু, অজয় সেন।
১৯৫৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান উইনস্টন চার্চিল (১৮৭৪–– ১৯৬৫)। ঐতিহাসিক লেখক। ইংল্যান্ডের অধিবাসী।
পুরস্কার দেওয়ার পক্ষে নোবেল কমিটি লিখেন-
‘For his mastery of historical and biographical description as well as for brilliant oratory in defending exalted human values.’
তাঁর উল্লেখনীয় রচনা হল— ‘Malborough : His Life and Times’, ‘The life of Lord Randolph Churchill’, ‘The World Crisis’.
এ বছর ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ পান দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য তাঁর ‘বাঙালীর সারস্বত অবদান’ (বঙ্গে নব্যন্যায় চর্চা) গ্রন্থের জন্যে।
প্রকাশিত গ্রন্থ : প্রকাশিত হয় সুধীন্দ্রনাথ দত্তের ‘সংবর্ত’, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’, সৈয়দ আলী আহসানের ‘কবিতার কথা’, সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘অভিযান’, অমিয় চক্রবর্তীর ‘পারাপার’, প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘প্রেমেন্দ্র মিত্রের শ্রেষ্ঠ কবিতা’, বুদ্ধদেব বসুর ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, আবুল মনসুর আহমদের ‘সত্যমিথ্যা’, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আরোগ্য নিকেতন’, সমরেশ বসুর ‘বিটি রোডের ধারে’, প্রমথনাথ বিশীর ‘পদ্মা’। প্রকাশ পায় বিষ্ণু দে’কৃত এলিয়টের কবিতার অনুবাদগ্রন্থ। আর প্রকাশিত হয় ‘নাম রেখেছি কোমল গান্ধার’ কাব্যগ্রন্থ। [কবিতার সংখ্যা : ৪১, রচনাকাল : ১৯৪৬–১৯৫৩; উৎসর্গ : জন আরউইন, মার্টিন কার্কম্যান, পার্সি ও এপ্রিল মার্শালকে। প্রকাশক : সুপ্রিয় সরকার, কলকাতা]।
এ বছর বের হয় ‘পদ্মানদীর মাঝি’র সুইডিশ অনুবাদ, অনুবাদক: Viveca Barthel. প্রকাশ পায় ‘মাটি না মহেল’ নামে ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’র গুজরাটি অনুবাদ। অনুবাদক : শ্রীকান্ত ত্রিবেদী। এছাড়া প্রকাশিত হয় মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘তেইশ বছর আগে পরে’, ‘নাগপাশ’, ‘আরোগ্য’, গল্পগ্রন্থ ‘ফেরিওলা’, ‘লাজুকলতা’।