দশাশ্বমেধে আজ দসেরার দিন ভিড় হবে বলে আমরা ঠিক করলাম অভয় চক্রবর্তীর বাড়ির রাস্তা দিয়ে আগে কেদার ঘাট যাব। সেখান থেকে সিঁড়ি ধরে উত্তরে হাঁটলে প্রথমেই পড়বে রাজা ঘাট। লালমোহনবাবু আজ সকালে হোটেলের কাছেই একটা ডাক্তারি দোকান থেকে ষোলো অক্ষরের নামওয়ালা কী একটা বড়ি কিনে এনে এরই মধ্যে দুবার দুটো করে খেয়ে নিয়েছেন। বললেন গতকাল রাত্রে নাকি ওঁর আধঘুম অবস্থায় বার বার দাঁত কপাটি লেগে যাচ্ছিল, এখন সেটা একদম সেরে গেছে।
সাহস যে খানিকটা বেড়েছে সেটা বুঝলাম বড় রাস্তা থেকে মোড় ঘুরে প্রথম গলিটায় ঢুকেই। সামনেই একটা ষাঁড়—গোরু নয়, ষাঁড়—রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে আমাদের দিকে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখছে। লালমোহনবাবু সটান এগিয়ে গিয়ে ‘অ্যাই ষণ্ড, হ্যাট হ্যাট’ বলে সেটাকে ঠেলা মেরে সরিয়ে পাশ কাটিয়ে দিব্যি চলে গেলেন। আমি ভয় পাইনি, তবে মজা দেখবার জন্য দাঁড়িয়েছিলাম; লালমোহনবাবু আমাকে ‘এসো তপেশ, কিচ্ছু বলবে না’ বলে হাতছানি দিয়ে ডাকলেন।
অভয়বাবুর বাড়ির বাইরে আর ভিতরে বেশ ভিড় দেখলাম। কেন ভিড় সেটা ভাবতে গিয়েই খেয়াল হল যে আজই তো মছলিবাবার চলে যাবার দিন। আমরা এসেছি তৃতীয়াতে, আর আজ হল দশমী। যাক, তা হলে ভাসান ছাড়াও একটা বড় ঘটনা আছে আজকে।
বাইরে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তার মধ্যে আমাদের হোটেলের এক মুখচেনা ভদ্রলোককে দেখে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম মছলিবাবা কেদারঘাট থেকে যাবেন কি না। ভদ্রলোক বললেন, ‘না—বোধহয় দশাশ্বমেধ।’ তা হলে আমাদের একটু দূরে থেকে দেখতে হবে ঘটনাটা। লালমোহনবাবুর তাতে আপত্তি নেই। বললেন, ‘ভক্তদের চাপে চিঁড়ে-চ্যাপটা হয়ে দেখার চেয়ে একটু দূর থেকে দেখা ঢের ভাল।’
কেদার ঘাট থেকে উত্তর দিকে হাঁটা শুরু করে মিনিট পাঁচেক লাগল রাজাঘাট পৌঁছতে। ঘাটের পাশে সারি সারি উঁচু বাড়ি থাকার জন্য এদিকটা থেকে রোদ সরে যায় অনেক আগেই। বর্ষার পরে জল এগিয়ে এসেছে, বাড়ির ছায়া জলের কিনারা ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেছে। কিছুক্ষণ পরে আর রোদ থাকবেই না। আর তার পরেই ঝপ করে নামবে অন্ধকার। ঘাটের পাশে এক জায়গায় সারি সারি নৌকো, তার উপরে ঢ্যাঙা বাঁশের মাথায় কার্তিক মাসের বাতি জ্বলছে। উত্তরে বোধহয় দশাশ্বমেধ ঘাট থেকেই একটা শব্দের ঢেউ ভেসে আসছে—বুঝতে পারছি বহু লোকের ভিড় জমেছে সেখানে। তার মধ্যে ঢাকের শব্দ পাচ্ছি, আর মাঝে মাঝে পটকার শব্দ আর হাউইয়ের হুশ্।
রাজা ঘাটের ধাপ শেষ হয়ে ভিজে মাটি শুরু হল। মিনিটখানেক হাঁটার পর বিজ্ঞাপনটা চোখে পড়ল। বৈদ্যনাথ সালসা। প্রায় এক-মানুষ বড় বড় এক-একটা হিন্দি অক্ষর। পরে ফেলুদাকে জিজ্ঞেস করাতে ও বলেছিল সালসা কথাটা নাকি পোর্তুগিজ; ওটার মানে হল একরকম রক্ত পরিষ্কার-করা ওষুধ।
জায়গাটা সত্যি খুব নিরিবিলি। শুধু তাই না—এখান থেকে দশাশ্বমেধ দিব্যি দেখা যাচ্ছে। ঘাটের ধাপে মানুষের ভিড় আর জলে নৌকো আর বজরার ভিড়।
‘দুর্গা মাঈকি জয়!’
একটা ঠাকুর ভাসান হয়ে গেল। বজরার মাথায় তুলে খানিকটা নদীর ভিতরে নিয়ে গিয়ে ফেলে দিলেই হল। দু নৌকো ফাঁক করে ভাসান দেওয়ার ব্যাপার এখানে নেই।
রোদ চলে গেল, কিন্তু ঘাটের গণ্ডগোল এখন বেড়েই চলবে। ছটা বাজতে কুড়ি। লালমোহনবাবু হাতের ঘড়িটা দেখে সবে বলেছেন ‘তোমার দাদার টেলিফোকাসটা থাকলে খুব ভাল হত’, এমন সময় একটা নতুন চিৎকার শোনা গেল—
‘গুরুজী কি জয়! মছলিবাবা কি জয়! গুরুজী কি জয়!’
বেনারসের ঘাটে একরকম আটকোনা বুরুজ থাকে, যার উপর অনেক সময় ছাতার তলায় পাণ্ডারা বসে, পালোয়ানরা মুগুর ভাঁজে, আবার এমনি সাধারণ লোকও বসে। আমাদের ঠিক সামনেই হাত পঞ্চাশেক দূরে সেইরকম একটা বুরুজ জল থেকে চার-পাঁচ হাত উঁচুতে উঠে রয়েছে—সেটা এখন খালি। সেইরকম বুরুজ দশাশ্বমেধে অনেকগুলো আছে। তার মধ্যে যেটা আমাদের দিকে, তার উপর কিছু লোক এতক্ষণ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। ‘গুরুজী কি জয়’ শুনেই তাদের মধ্যে একটা ব্যস্ত ভাব দেখা গেল। তারা এখন সবাই ঘাটের সিঁড়ির দিকে চেয়ে রয়েছে।
এবার দেখলাম একটা প্রকাণ্ড দল সিঁড়ি দিয়ে নেমে বুরুজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দলের মাথায় যিনি রয়েছেন তিনি আর কেউ নন—স্বয়ং মছলিবাবা। টকটকে লাল লুঙ্গিটা এখন মালকোচা দিয়ে ধুতির মতো করে পরা। গায়ের লাল চাদরের উপর হলদে রং দেখে বুঝলাম বাবা অনেক গাঁদা ফুলের মালা পরে আছেন।
বুরুজ এবার প্রায় খালি হয়ে গেল। শুধু দুজন রইল, তারা বাবার হাত ধরে তাকে উপরে তুলল। বাবার মাথা এখন সবাইয়ের উঁচুতে।
বাবা এবার দু হাত তুললেন ভক্তদের দিকে ফিরে। কী বললেন, বা কিছু বললেন কি না সেটা এতদূর থেকে বোঝা গেল না।
এবার বাবা হাত তোলা অবস্থাতেই বুরুজের উলটোদিকে এগিয়ে গেলেন। বাবার সামনে এখন গঙ্গা। পিছন থেকে আবার জয়ধ্বনি উঠল—‘জয় মছলিবাবা কি জয়!’
সেই জয়ধ্বনির মধ্যে বাবা গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন।
একটা অদ্ভুত আওয়াজ উঠল ভক্তদের মধ্যে। লালমোহনবাবু সেটাকে ‘সমস্বরে বিলাপ’ বললেন। বাবাকে কিছুক্ষণ জলের মধ্যে সাঁতরাতে দেখা গেল। তারপর তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। লালমোহনবাবু বললেন, ‘ডুব সাঁতারে পৌঁছে যাবে পাটনা—কী থ্রিলিং ব্যাপার ভাবতে পার?’
আরও একটা থ্রিলিং ব্যাপারে আমাদের প্রায় হার্টফেল হয়ে যাবার অবস্থা হল যখন দশাশ্বমেধ ঘাট থেকে চোখ ঘুরিয়ে দেখি এই ফাঁকে কখন জানি একটি লোক এসে আবছা অন্ধকারে নিঃশব্দে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। লোকটার বাঁ হাতে একটা বাঁশের লাঠি। মাথায় পাগড়ি, মুখে গোঁফ-দাড়ি, গায়ে লম্বা শার্টের উপর ওয়েস্ট কোট, নীচে পায়জামা, আর তারও নীচে একজোড়া ডাকসাইটে কাবলি জুতো।
কাবুলিওয়ালা।
কাবুলিওয়ালা ডান হাতটা অল্প তুলে আমাদের আশ্বাস দিল।
ফেলুদা। কাবুলিওয়ালার ছদ্মবেশে ফেলুদা। এই মেক-আপই সেদিন ব্যবহার করেছিল বেঙ্গলি ক্লাবের ত্রিদিব ঘোষ।
‘ওয়ান্ডার—’
লালমোহনবাবুর প্রশংসা মাঝপথে থামিয়ে দিল ফেলুদার ঠোঁটের আঙুল।
কী ঘটতে যাচ্ছে জানি না, ছদ্মবেশের কী দরকার জানি না, অপরাধী কে বা কারা জানি না, তবু ফেলুদা যদি চুপ করতে বলে তা হলে চুপ করতে হবেই। এটা আমিও জানি, আর লালমোহনবাবুও অ্যাদ্দিনে জেনে গেছেন।
ফেলুদা একদৃষ্টে চেয়ে রয়েছে দশাশ্বমেধ ঘাটের দিকে। আমাদের চোখও সেইদিকে চলে গেল।
দূর থেকে একটা বজরা ভেসে আসছে ঘাটের দিকে। তার মাথায় একটা বাতি জ্বলছে। বড় বজরা। বজরার ছাতে চার-পাঁচজন লোক। কাউকেই চেনা যায় না। এতদূর থেকে সম্ভব নয়।
‘দুর্গা মাঈকি জয়! দুর্গা মাঈকি জয়!’
আরেকটা প্রতিমা আসছে ঘাটে। সিঁড়ি দিয়ে নামানো হচ্ছে। হ্যাজাক লণ্ঠনের আলো পড়ে ঠাকুর মাঝে মাঝে ঝলমল করে উঠছে। দূর থেকেও চিনতে অসুবিধা নেই। এটা ঘোষালদের ঠাকুর।
ফেলুদার সঙ্গে আমরাও পাথরের মতো দাঁড়িয়ে বিসর্জন দেখতে লাগলাম।
বিরাট প্রতিমা বজরার মাথায় চড়ে গেল। বজরা এগোতে শুরু করল আরও গভীর জলের দিকে।
তারপর দেখলাম প্রতিমাটা একবার ঝাঁকি দিয়ে উপরে উঠে চিত হয়ে বজরার পিছনে অদৃশ্য হয়ে গেল। ঝপাং শব্দটা এল কিছু পরে—যেমন ক্রিকেট মাঠে বল মারাটা চোখে দেখার কিছু পরে শব্দটা আসে।
হঠাৎ মনে হল শশীবাবুর তুলির টান এখন জলের তলায়। হয়তো এর মধ্যেই সব ধুয়ে মুছে গেছে।
মছলিবাবাকে দেওয়া গাঁদা ফুলের মালাগুলো এখন ভেসে যাচ্ছে আমাদের সামনে দিয়ে।
যে বজরাটা দূর থেকে নদীর ধার দিয়ে আসছিল, সেটা এখন দশাশ্বমেধ ছাড়িয়ে আমাদের দিকে আসছে।
মগনলালের বজরা। মগনলালের বিশাল দেহটা দেখতে পাচ্ছি বজরার ছাদে। সে বাবু হয়ে বসে আছে, সঙ্গে আরও চারজন লোক।
ফেলুদার ডান হাতটা তার কোমরের কাছে, বাঁ হাতটা এখনও লাঠিটাকে ধরে আছে। আলো কমে এসেছে, কিন্তু তাও আমি বাঁশের একটা গাঁটের নীচে মুঠো করে ধরা বাঁ হাতটা দেখতে পাচ্ছি।
সেদিনের গলিতে শোনা ধুপ ধুপ শব্দটা আবার শুনতে পাচ্ছি। এখন সেটা হচ্ছে আমার বুকের ভিতরে।
আমার গলা শুকিয়ে আসছে।
আমার চোখ ওই বাঁ হাতটা থেকে সরাতে পারছি না।
ফেলুদার বাঁ হাতের কড়ে আঙুলের নখটা লম্বা।
কাবুলিওয়ালার বাঁ হাতের কড়ে আঙুলের নখটা কাটা।
ফেলুদার বাঁ হাতের কবজির কাছে একটা তিল।
কাবুলিওয়ালার বাঁ হাতের কবজির কাছে কোনও তিল নেই।…
এ লোকটা ফেলুদা নয়।
কে এসে দাঁড়িয়েছে কাবুলিওয়ালা সেজে আমাদের পাশে?
লালমোহনবাবু কি জানেন তাঁর পাশে কে দাঁড়িয়ে আছে?
তিনি কি বুঝেছেন ও ফেলুদা নয়?
বজরাটা আমাদের সামনের বুরুজের কাছাকাছি চলে এসেছে। এখান থেকে বুরুজটা প্রায় পঁচিশ গজ দূরে। বজরা এখন তারও প্রায় পঁচিশ গজ উত্তর দিকে। ব্যবধান কমে আসছে।
কাবুলিওয়ালা আমাদের ইশারা করল খুপরিটার ভিতর ঢুকে যেতে। লালমোহনবাবু নিজে ঢুকে আমার হাত ধরে টেনে নিলেন। এক হাতের বেশি গভীর নয় খুপরিটা। আমরা এখান থেকে সবই দেখতে পাচ্ছি, যদিও বাইরের লোকে আমাদের দেখতে পাবে না।
বজরা এবার থামো-থামো।
বুরুজের ঠিক পিছনে জলে কী যেন নড়ছে।
একটা লোকের শুধু মাথাটা জলের উপর উঠল। লালমোহনবাবু হাতটা বাড়িয়ে আমার কোটের আস্তিনটা খামচে ধরলেন।
একটা লোক বজরা থেকে প্রায় নিঃশব্দে জলের মধ্যে লাফিয়ে পড়ল।
লোক নয়—ছোকরা।
রুকুর বন্ধু সূরয।
সূরয সাঁতরে এগিয়ে এল বুরুজের দিকে।
বুরুজের পিছনে জল থেকে এবার লোকের মাথাটা উঠতে শুরু করে কাঁধ অবধি বেরিয়ে এল। একী স্বপ্ন, না সত্যি? ও যে মছলিবাবা! দু হাতে জাপটে কী যেন ধরে আছে। সূরয তার দিকেই এগিয়ে এসেছে। বজরার ছাতের লোকেরা ওদের দুজনের দিকেই দেখছে।
এবার আরেকটা—একটা নয়, পর পর দুটো—ধাঁধা লাগানো জিনিস ঘটল। মছলিবাবা তার হাত থেকে এবড়ো-খেবড়ো বলের মতো জিনিসটা ছুঁড়ে ঘাটের দিকে ফেলে দিল, আর সঙ্গে সঙ্গে কাবুলিওয়ালা হাতের লাঠিটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বিদ্যুদ্বেগে সামনের দিকে ছুটে গিয়ে জিনিসটা বাঁ হাতে তুলে নিয়ে ডান হাতে পকেট থেকে রিভলবার বার করে বজরার দিকে তাগ করে দাঁড়াল।
সেই মুহূর্তেই মগনলাল একলাফে সোজা হয়ে দাঁড়াতেই দেখলাম তারও হাতে একটা রিভলবার এসে গেছে। তার পাশে লোকগুলোও উঠে দাঁড়িয়েছে, আর মনে হচ্ছে ওদের হাতেও অস্ত্র রয়েছে।
এদিকে আমাদের মাথার উপরেও পায়ের শব্দ পাচ্ছি। ধুপ ধাপ করে দু-তিনটে সশস্ত্র পুলিশ বোধহয় বৈদ্যনাথ সালসার পিছনের চত্তরটা থেকে লাফিয়ে আমাদের দু পাশে পড়ল।
তার পরেই শুরু হল কান ফাটানো গুলির শব্দ। একটা গুলি আমাদের খুপরির ঠিক পাশে দেওয়ালের গায়ে লাগল। জখম দেওয়ালের গুঁড়ো গঙ্গার হাওয়ায় সোজা এসে ঢুকল লালমোহনবাবুর নাকের ভিতর।
‘হ্যাঁচ্চো!’
ওদিকে মগনলালের হাত থেকে রিভলভারটা ছিটকে বেরিয়ে গেছে। আর তার পরেই এক তাজ্জব ব্যাপার। ওই হিপোপটেমাসের মতো লোকটা বজরার উলটোদিকে ছুটে গিয়ে এক বিকট চিৎকার দিয়ে হাত দুটো মাথার উপর তুলে একটা বিরাট লাফ দিয়ে গঙ্গায় পড়ে চতুর্দিকে জলের ফোয়ারা ছিটিয়ে দিল।
কিন্তু কোনও লাভ নেই। দুটো নৌকো এরই মধ্যেই বজরার পাশে এসে পড়েছে, তাতে পুলিশ বোঝাই।
আর মছলিবাবা?
তিনি সূরযকে বগলদাবা করে জল থেকে উঠে আসছেন। এবার তিনি কাবুলিওয়ালার দিকে ফিরে বললেন, ‘থ্যাঙ্ক ইউ, তেওয়ারিজী।’
আর কাবুলিওয়ালা মছলিবাবার দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাকে জল থেকে টেনে তুলে বলল, ‘থ্যাঙ্ক ইউ, মিস্টার মিত্তির।’
আমি আর লালমোহনবাবু মাটিতে বসে পড়লাম; না হলে হয়তো মাথা ঘুরে পড়ে যেতাম।
সূরয একজন পুলিশের হাতে চলে গেল। ফেলুদা কাছে আসতে বুঝলাম তার মেক-আপটা কী অসাধারণ হয়েছে—যদিও এখন শরীরের কোনও কোনও জায়গায় কালো রঙের ফাঁক দিয়ে চামড়ার আসল রংটা বেরিয়ে পড়েছে।
‘শ্বেতীর মতো লাগছে না রে তোপ্সে?’
‘ওয়ান্ডারফুল!’—বললেন লালমোহনবাবু।
ফেলুদা এবার তেওয়ারির দিকে ফিরে বলল, আপনার লোককে বলে দিন তো—জিপে তোয়ালে আর আমার জামাকাপড়গুলো রয়েছে—চট করে নিয়ে আসুক।’