যথাসময়ে গ্রিকরা ত্রয় নগরের তীরে এসে উপস্থিত হলেন। পথে তাঁরা একটা বড় নিষ্ঠুর কাজ করেছিলেন। একজন সঙ্গীর সাংঘাতিক পীড়া হয়–কিছুমাত্র লজ্জাবোধ না করে পীড়িত লোকটিকে সমুদ্রের এক দ্বীপের মাঝে তারা তাকে রেখে এসেছিলেন।
মেনেলাস ও ওদেসিজ যখন জাহাজ ছেড়ে তীরে নামলেন, তখন ত্রয় শহরের বুড়ো রাজা প্রিয়াম এবং আরও একজন ভালো লোক তাদেরকে আদর করে বাড়ি নিয়ে যেয়ে বললেন–আপনাদের সঙ্গে আমার ছেলে যে কুব্যবহার করেছে, সেজন্য আমি বড় লজ্জিত আছি। শুধু যে হেলেনকে ফিরিয়ে দেবো তা নয়, সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিপূরণস্বরূপ অনেক টাকাও দেবো-আমাদের অপরাধ ক্ষমা করুন।
মেনেলাসও ওদেসিজ খুব খুশি হয়ে রাজা আর সেই ভদ্রলোককে ধন্যবাদ দিলেন। সে ভদ্রলোক রাজদরবারেরই একজন।
এই সময় যুবক পেরিস ক্রোধে মেনেলাসকে শুনিয়ে বললেন–যে রহ আমি হাতে পেয়েছি,তাকে কিছুতেই ছাড়বো না। যদি প্রাণে বাঁচতে চাও, তবে দেরি না করে নগরের। সীমা ত্যাগ করে বাড়ি চলে যাও। মেনেলাস ও ওদেসিজ নিতান্ত অপমানিত হয়ে নিজেদের দলে ফিরে এলেন।
এরপর ভীষণ যুদ্ধ বেধে উঠলো। ত্রয়-বাসীদের মধ্যে যুদ্ধের সাড়া পড়ে গেল। রাজা প্রিয়ামের বড় ছেলে হেক্তর হলেন তাদের সর্দার–আরও অন্যান্য বহু লোক তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন।, গ্রিকেরা জাহাজ ছেড়ে তীর বল্লম নিয়ে কূলে নামলেন। অসংখ্য মানুষের মাথা–তা দেখলে তোমরা অবাক হয়ে যেতে, তোমাদেরও গায়ের রক্ত নেচে উঠত!
জনৈক গ্রিক যুবক প্রথমেই বীরদর্পে শত্ৰুদলের সম্মুখে যেয়ে দাঁড়ালেন, আর সঙ্গে সঙ্গে হেকতর তার দীর্ঘ তরবারির আঘাতে তার মাথাটা কেটে ফেললেন–তার পর ভীষণ যুদ্ধ বেধে গেল। তোমরা যেমন ছুরি দিয়ে কচু কেটেছ, ত্রয়-বাসীরা তেমনি গ্রিকদের কেটে ফেলতে লাগলো। সে কী ভয়ানক দৃশ্য!
বীরবর এচিলীস রক্তের স্রোতকে উপেক্ষা করে তার বিরাট তলোয়ারখানা আকাশের দিকে ধরে উচ্চকণ্ঠে বললেন–এচিলীসের সম্মুখে কে আসতে সাহস কর, এস।
সম্মুখে সাইনাস নামক এক ব্যক্তি দাঁড়িয়েছিল। ত্রয় দলের যোদ্ধাদের মধ্যে এ লোকটি ভয়ানক বীর–যেমন তার দীর্ঘ বিরাট দেহ, তেমনি তার অস্ত্র নিক্ষেপে পারদর্শিতা। তার চোখ দিয়ে আগুন বের হচ্ছিল! তার ঘোড়াটাই বা কত বড়! আর কেউ হলে তার সম্মুখে যেতেই বেহুশ হয়ে পড়তে, কিন্তু এচিলীস দমলেন না। এচিলীসও তো কম বীর নয়–পরী-মায়ের রক্ত তার শিরায় শিরায় বইছে। তিনি ভীমবেগে দীর্ঘ ধারাল বর্শা ফেলে সাইনাসের বুকে আঘাত করলেন! বর্শা জোরে ঘুরে এল। সাইনাসের গায়ে পুরু লোহার কোট ছিল–বর্শার আঘাতে তার বুকের উপর থেকে আগুনের ফুলকী বের হল, তবু বিশেষ কিছু হল না। এইবার ভীষণ গদা তুলে এচিলীস তার মাথায় আঘাত করলেন। এবারও আঘাত ব্যর্থ হল। এচিলীস বিস্মিত হয়ে ভাবলেন, আমার আঘাত তো কোনোদিন ব্যর্থ হয় নি!
একবার হাত দিয়ে নেড়ে দেখলেন–বর্শার মাথা ঠিক আছে কি না। দেখলেন, ঠিক আছে তবে এমন হচ্ছে কেন?
কাছেই আর একটা পাহাড়ের মতো লোক দাঁড়িয়েছিল–অস্ত্রের ফলা পরীক্ষা করবার জন্যে, সাইনাসকে রেখে এচিলীস তাকে আক্রমণ করলেন–এক আঘাতেই বেচারা দুই খণ্ড হয়ে মাটিতে পড়ে গেল।
এচিলীস দেখলেন–অস্ত্রের ধার তো কমে নি। এবার দারুণ ক্রোধে তলোয়ার দিয়ে শক্রকে পুনরায় আঘাত করলেন। সাইনাসও চুপ করে বসে ছিল না। সেও গদা দিয়ে এচিলীসকে আক্রমণ করছিল। সে ভীষণ আক্রমণ সহ্য করা এচিলীসের পক্ষে কঠিন হচ্ছিল।
ঘৃণা ও ক্রোধে এচিলীসের সর্ব শরীর কাঁপছিলো। একবার আল্লার নাম ধরে এচিলীস মৃদু স্বরে প্রার্থনা করলেন–হে খোদা, অন্যায়কে হত্যা করার জন্যে যুদ্ধে এসেছি, আমার বাহুতে বল দাও।
কে যেন তাঁর কানের কাছ বলে গেল–ভয় নেই। এচিলীস বুকের ভিতর নূতন করে শক্তি অনুভব করলেন–সাইনাসের দিকে অগ্রসর হয়ে বললেন–দুর্বত্ত, এইবার আমার আঘাত সহ্য কর। এই কথা বলতে বলতে সাইনাসের কাঁধের উপর তিনি এরূপ পুনঃ পুনঃ আঘাত করতে লাগলেন যে সাইনাসের লোহার কোট কেটে গেল। এচিলীসের তলোয়ার সাইনাসের পার্শ্ব ভেদ করে গেল, সাইনাস বেহুঁশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেল।
সাইনাসের পতন দেখে ত্রয়-বাসীদের মনে ভয়ানক আতঙ্কের সঞ্চার হল।
যেদিক হেক্টর ও প্রিয়াম রাজার ছোট ছেলে যুদ্ধ করছিল, বর্শা তুলে সেই দিকে এচিলীস দ্রুতবেগে ধাবিত হলেন। এচিলীসের ভীম চেহারা দেখে ভয়ে সে কাঁপতে লাগলো,–কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে এলে ভয়ে কাঁপলে তো যমে ছাড়বে না! এচিলীসের কোনো কিছু বলবার আগে সে তার তলোয়ারখানা তুলে একবার এচিলীসকে আঘাত করতে চেষ্টা করলে, কিন্তু অবশ হাত তার নিচে নেমে এল। এচিলীস হাতের তলোয়ার তুলতেই, সে ঘাড় ফিরিয়ে দে ছুট!
এচিলীসের বীরত্ব দেখে ত্রয়-বাসীরা বুঝতে পারলে এমন করে সামনাসামনি যুদ্ধ করলে কিছুতেই তাদের জেতবার উপায় নেই–তারা স্থির করে, শহরের ভিতর প্রাচীরের আড়ালে থেকেই যুদ্ধ করবে।
এদিকে গ্রিকরাও বুঝলেন এ যুদ্ধ সহজে মেটবার নয়। তাঁরাও ঠিক-ঠাক হয়ে বসলেন। শিবিরের চতুর্দিকে একটা প্রকাণ্ড গড় কাটা হল–যাতে শত্রুরা তাহাদের হঠাৎ আক্রমণ করতে না পারে।
ইতোমধ্যে এচিলীস এক নূতন রাজ্য জয় করে ফেললেন, কিছুদিন বাদে আর একটা রাজত্ব জয় করতে গিয়ে তিনি এক পরমা সুন্দরী কুমারী লাভ করলেন। মেয়েটির নাম ব্রীসাস। ব্রীসাসকে শেষে এচিলীস বিয়ে করলেন।
বীরবর এগামেমনন এচিলীসের সৌভাগ্য দেখে মনে মনে ভারি ঈর্ষান্বিত হলেন। তিনিও এক নূতন দেশ জয় করবার আয়োজন করলেন। তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হল। ব্রীসাসের মতো এক সুন্দরী কন্যা লাভের আশায় তিনি সে দেশের এক সাধু ব্যক্তির কন্যাকে জোর করে হরণ করে নিয়ে এলেন।
কন্যার পিতা দারুণ বেদনায় এগামেমননের কাছে এসে বহু মিনতি করে বললেন, হে দেশের রাজা, হে বীর, আমার বৃদ্ধ বয়সের অবলম্বনকে আপনি হরণ করবেন না। ওকে নিয়েই আমি বেঁচে আছি। কন্যার অদর্শনে আমি বাঁচবো না। দয়া করে আমার নয়নের মণিকে ফিরিয়ে দেন।
এগামেমনন বৃদ্ধের কন্যাকে তো ফিরিয়ে দিলেনই না, বরং হুকুম দিলেন, এ লোকটাকে এইখান থেকে তাড়িয়ে দাও।
সাধু মহাজনকে ব্যথা দিলে তার ফল হাতে হাতে ফলে। এগামেমননের এই দুর্ব্যবহারের কী ফল হবে তা তোমরা একটু পরেই বুঝবে। সাধু দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলেন–হে খোদা, তুমি এর বিচার করো। খোদা সত্যই সাধুর কাতর নিবেদন শুনলেন। কয়েক দিনের মধ্যেই গ্রিক সৈন্যদের মাঝে খোদার অভিশাপ এসে দেখা দিল। তাদের মধ্যে ভায়নক কলেরা আরম্ভ হল।–সে যে কী ভীষণ ব্যাপার তা বুঝে উঠা কঠিন। মানুষের পাপের জন্যে তাকে অনেক সময় খোদার গজব নাজেল হয়, তা জান? এ কলেরা আর কিছু নয়–এগামেমননের পাপে খোদার গজব।
প্রায় ১৫ দিন ধরে এই ভীষণ ব্যাধির প্রকোপ চলতে লাগলো–গ্রিকরা ভাবলো, যুদ্ধবিগ্রহ ফেলে যার যার প্রাণ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে।
কী কর্তব্য ঠিক করবার জন্যে একটা সভা আহুত হল। সভার মাঝে এক জ্ঞানবৃদ্ধ মহাজন গম্ভীর স্বরে বললেন–তোমরা কি জান, খোদা কেন এই ভীষণ ব্যাধি আমাদের উপর পাঠিয়েছেন? এগামেমনন কি পাপ করেছে, তার খবর তোমরা রাখ? সে জনৈক সাধুর কন্যাকে হরণ করেছে। সাধু যখন কাঁদতে কাঁদতে এগামেমননের কাছে কন্যা ফিরিয়ে পাবার জন্য বলেছিল তখন তাকে বড় অপমান করে এগামেমনন তাড়িয়ে দিয়েছে। সাধুর অভিশাপই আমাদের এই বিপদের কারণ।
এগামেমননও সেই সভায় ছিলেন। বৃদ্ধের বাক্য শেষ হলে তিনি সরোষে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন–দুর্বৃত্ত, তুমি বহুবার আমার ক্ষতির চেষ্টা করেছ। আর সহ্য করতে পারছি না। তুমি যে একজন বকধার্মিক, তা আমার জানা আছে। এচিলীস কুমারী ব্রীসাসকে লাভ করেছে, সে বেলা তোমার মুখ ফোটে নি। আমার বেলায় ধর্মজ্ঞানের পরিচয় দিচ্ছ!
ক্রোধে এচিলীস বললেন–এগামেমনন, মুখ সামলে কথা বলো। কারো মনে ব্যথা দিয়ে আমি ব্রীসাসকে লাভ করি নি। তা ছাড়া যুদ্ধ জয়ের পরে লব্ধ ধনসম্পত্তি সকলের মধ্যে সব মতানুসারে ভাগ হয়েছে–তোমার ভাগ্যে যা পড়েছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাক। তুমি অবিলম্বে সাধুর কন্যাকে ফিরিয়ে দাও।
এগামেমনন বললেন–স্বার্থপর এচিলীস, নিজে এক সুন্দরী রমণী লাভ করেছ–অপর কেউ কিছু পাক না পাক, সেদিকে তোমার কিছুমাত্র দৃষ্টি নেই। মানুষ এতই অন্ধ!
এচিলীস বললেন–এগামেমনন তোমার পাপে জাতির মাথা নত হবে। রমণী লাভ করবার জন্যেই কি যুদ্ধক্ষেত্রে নেমেছ?
এগামেমনন তোমার ঐ সব রঙ্গিন কথা ফেলে রাখ। বেশ, তোমার ব্রীসাসকে আমায় দিয়ে দাও, নইলে আমি আমার বিজিতা কুমারীকে কিছুতেই ছাড়ব না। যে আমার বিরুদ্ধে কথা বলবে, তার রক্তে এই তরবারি লাল করবো, এই আমার কথা।
এচিলীস বললেন–অকৃতজ্ঞ এগামেমনন, কাঁদের জন্য যুদ্ধ করতে এসেছি? আমার কি ক্ষতি হয়েছিল? আমার সঙ্গে এই দুর্ব্যবহার! তোমারি বোনকে পেরিস চুরি করে এনেছে, তাতে আমার কী? আমি দেখে আসছি, যত কষ্টের কাজ আমাকেই করতে হয়, অথচ ভোগের বেলায় তোমরাই বড় ভাগ নেবার জন্যে এগিয়ে আস! তাতেও আমার দুঃখ ছিল না, কিন্তু তোমার এ অপমান আমার সহ্য হচ্ছে না। থাক, আমি আর দুঃখ করতে চাই নে, তোমরা থাক, আমি দেশে যাই।
নিতান্ত ধৃষ্টের মতো এগামেমনন বললেন, তা বেশ–যাও তুমি চলে, তোমায় দিয়ে আমাদের কোনো দরকার নেই। কে তোমাকে আসতে বলেছিল? গায়ে শক্তি আছে বলে, তোমার এত অহঙ্কার? তুমি যদি আমায় না মানো তাতে আমার বিশেষ আসবে–যাবে না–এখানে বহু বীর আছে, যারা আমার সম্মান বোঝে। কে তোমার শরীরে অসীম শক্তি দিয়েছে? খোদা দিয়েছেন বলেই এত বড় হয়েছ,তার জন্যে এত অহঙ্কার কেন? তোমার জাহাজ, তোমার লোক-লস্কর নিয়ে এই মুহূর্তে ত্রয়ভূমি ত্যাগ কর–আমি আমার কুমারীকে। ফিরিয়ে দিচ্ছি, কিন্তু ঠিক জেনো, ব্রীসাসকে নিয়ে তুমি কিছুতেই জাহাজে চড়তে পারবে না।
এচিলীস এই অপমান সহ্য করতে পারলেন না, কম্পিত বাহুতে দীর্ঘ তলোয়ার কোষ মুক্ত করতে যাচ্ছিল, এমন সময় দেখতে পেলেন–মহাশূন্যে পরী কুমারী এনিথী তাকে হাতছানি দিয়ে ডেকে বলছেন–থাম এচিলীস, বীরধর্মের অবমাননা করো না। নিজেদের মধ্যে কলহ, বিবাদ করে জাতির অসম্মান বাড়াচ্ছো? গ্রিসের প্রতি কত বড় অন্যায় হয়েছে, এর প্রতিশোধ নেবে না? পেরিসের পাপের যদি শাস্তি না দাও, তা হলে তোমার তরবারি ধারণ বৃথা। পরীবালা হেরা তোমাকে ভালবাসে, তারি আদেশে তোমার কাছে এসেছি। দেখ, জীবনে মহৎ হতে অনেক বেদনা সহ্য করতে হয়, ক্রোধে তোমার মহত্ত্বকে খাটো করে ফেলো না। এও তোমার বলে রাখছি, শীঘ্রই সময় আসবে যখন এগামেমননকে এই দুর্ব্যবহারের জন্য অনুশোচনা করতে হবে।
এচিলীস তলোয়ার ছেড়ে দিয়ে বললেন–পরীরা চিরকালই মানুষের মঙ্গল কামনা করে–হে পুণ্যের ছবি, তোমার আদেশ আমি পালন করলাম।
এচিলীস অতঃপর এগামেমননকে বললেন–কাপুরুষ, তোমার সঙ্গে ঝগড়া করে জাতির সর্বনাশ করতে চাই নে। বীর নামের কলঙ্ক তুমি; তোমার প্রজারা কাপুরুষ, তাদের রাজা তুমি, তাই এই স্বার্থান্ধ স্বভাব তোমার। আমি আজ আল্লাহকে সাক্ষী করে বললাম, আমাকে যে আপমান করেছ, তার ফল তোমাকে ভোগ করতে হবে। বীরত্বের পুরস্কারস্বরূপ ব্রীসাসকে তোমরাই আমাকে দিয়েছিলে–ফিরিয়ে যদি নিতে চাও, নাও আমার তাতে আপত্তি নেই।
তারপর সভা ভেঙ্গে গেল। এগামেমনন সাধুর মেয়েকে বাড়ি যেতে দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে গ্রিকদের মধ্যে আবার শান্তি ফিরে এল–সে ভীষণ ব্যাধি হতে তাঁরা রক্ষা পেলেন।
এচিলীস ব্রীসাসকে পরিত্যাগ করলেন। গভীর শোকে এচিলীসের হদয় চূর্ণ হয়ে গেল। দুঃখ যখন বেশি লাগতো, চোখের পানি ঠেকিয়ে রাখতে পারতেন না, তখন সাগর কূলে যেয়ে বসতেন, দূর সমুদ্রসীমার পানে চেয়ে থাকতেন।