০১. তার নাম সুবোধ দাশগুপ্ত

একই শ্লেটের দুপিঠে দুজনে একই জনের নাম লিখলাম।

তেরো শ আটাশ সালের কথা। গিয়েছিলাম মেয়েদের ইস্কুলহসটেলে একটি ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। দারোয়ানের কাছে গেট জিম্মা আছে, তাতে কাঙ্ক্ষিতদর্শনার নামের নিচে দর্শনাকাঙ্ক্ষীর নাম লিখে দিতে হবে। আরো একটি যুবক, আমারই সমবয়সী, এপার-ওধার ঘুরঘুর করছিল। শ্লেট নিয়ে আসতেই দুজনে কাছাকাছি এসে গেলাম। এত কাছাকাছি যে আমি যার নাম লিখি সেও তার নাম লেখে।

প্রতিদ্বন্দ্বী না হয়ে বন্ধু হয়ে গেলাম দুজনে। তার নাম সুবোধ দাশগুপ্ত। ডাক নাম, নানকু।

হৃদ্যতা এত প্রগাঢ় হয়ে উঠল যে দুজনেই বড় চুল রাখলাম ও নাম বদলে ফেললাম। আমি নীহারিকা, সে শেফালিকা।

তখন সাউথ সুবার্বন কলেজে-বর্তমানে আশুতোষ—আই-এ পড়ি। এন্তার কবিতা লিখি আর প্রবাসীতে পাঠাই। আর প্রতি খেপেই প্যারীমোহন সেনগুপ্ত (তখনকার প্রবাসীর সহ-সম্পাদক) নির্মমের মত তা প্রত্যর্পণ করেন। একে ডাক-খরচ। তায় গুরু-গঞ্জনা, জীবনে প্রায় ধিক্কার এসে গেল। তখন কলেজের এক ছোকরা পরামর্শ দিলে, মেয়ের নাম দিয়ে পাঠা, নির্ঘাৎ মনে ধরে যাবে। তুই যেখানে পুরো পৃষ্ঠা লিখে। পাশ করতে পারিস না, মেয়েরা সেখানে এক লাইন লিখেই ফার্স্ট ডিভিশন। দেখছিস ত—

ওই ঠিক করে দিলে, নীহারিকা। আর, এমন আশ্চর্য, একটি সদ্যফেরৎ-পাওয়া কবিতা নীহারিকা দেবী নামে প্রবাসীতে পাঠাতেই পত্রপাঠ মনোনীত হয়ে গেল।

দেখলাম, সুবোধেরও সেই দশা। বহু জায়গায় লেখা পাঠাচ্ছে, কোথাও জায়গা পাচ্ছে না। বললাম, নাম বদলাও। নীহারিকার সঙ্গে মিলিয়ে সে নাম রাখলে শেফালিকা। আর, সঙ্গে-সঙ্গে সেও হাতে-হাতে। ফল পেল।

লেখা ছাপা হল বটে, কিন্তু নাম কই? যেন নিজের ছেলেকে পরের বাড়িতে পোয় দিয়েছি। লোককে বিশ্বাস করানো শক্ত, এ আমার রচনা। গুরুজনের গুঞ্জনা গুরুতর হয়ে উঠল। কেননা আগে শুধু গঞ্জনাই ছিল, এখন সে সঙ্গে মিশল এসে গুঞ্জন। নীহারিকা কে?

অনেক কাগজ গায়ে পড়ে নীহারিকা দেবীকে কবিতা লেখবার জন্যে অনুরোধ করে পাঠাতে লাগল। নিমন্ত্রণ হল কয়েকটা সাহিত্যসভায়, দু-একজন গুণমোহিতেরও খবর পেলাম চিঠিতে। ব্যাপারটা বিশেষ স্বস্তিকর মনে হল না। ঠিক করলাম স্বনামেই ত্রাণ খুঁজতে হবে। স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ ইত্যাদি। অনেক ঠোকাঠুকির পর প্রবাসীতে ঢুকে পড়লাম স্বনামে, ভারতীও অনেক বাধা-বারণের পর দরজা খুলে দিল।

গেলাম সুবোধর কাছে। বললাম, পালাও। মাননীয় সাহিত্যিকার। নীহারিকা দেবীর সঙ্গে বাড়িতে দেখা করতে আসছেন। অন্তত নিজের ছদ্মনাম থেকে পালাও। আত্মরক্ষা করো। নইলে ঘরছাড়া হবে একদিন।

অর্ধশস্ফুট একটি বিশেষ হাসি আছে সুবোধের। সেই নির্লিপ্ত হাসি হেসে সুবোধ বললে, ঘরছাড়াই হচ্ছি সত্যি। পালাচ্ছি বাংলা দেশ থেকে।

কোন এক সমুদ্রগামী মালবাহী জাহাজে ওয়ারলেস-ওয়াচার হয়ে সুবোধ অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে। পঞ্চাশ টাকা মাইনে। মুক্ত পাখির মতন খুশি। বললে, অফুরন্ত সমুদ্র আর অফুরন্ত সময়। ঠেসে গল্প লেখা যাবে। যখন ফিরব দেখা করতে এসে ডকে। অক্স-টাং খুব উপাদেয় জিনিস, খেয়ে দেখতে পারো ইচ্ছে করলে। আর এক-আধ দিন যদি রাত কাটাতে চাও, শুতে পাবে পালকের বালিশে।

সেই সুবোধ একদিন হঠাৎ মাদ্রাজ থেকে ঘুরে এসে আমাকে বললে, গোকুল নাগের সঙ্গে আলাপ করবে?

জানতাম কে, তবু ঝাজিয়ে উঠে জিগগেস করলাম, কে গোকুল নাগ? ওই লম্বা চুল-ওলা বেহালা-বাজিয়ের মত যার চেহারা?

অধস্ফুটশব্দে সুবোধ হাসল। পরে গম্ভীর হয়ে বললে, কল্লোলের সহ-সম্পাদক। তোমার সঙ্গে আলাপ করতে চান। তোমার লেখা তাকে পড়াব বলে বলেছি। চমৎকার লোক।

ব্যাপার কি—কৌতূহলী হয়ে তাকালাম সুবোধের দিকে।

গোকুলের প্রতি, কেন জানি না, মনটা প্রসন্ন ছিল না। মাঝে-মাঝে দেখেছি তাকে ভবানীপুরের রাস্তায়, কখনো বা ট্রামে। কেমন যেন দূর ও দাম্ভিক মনে হত। মনে হত লম্বা চালের লোক, ধরাধানাকে যেন সরা জ্ঞান করছে। প্রবাসী ভারতীতে ছোট ধাঁচের প্রেমের গল্প। লিখত, যাতে অর্থের চাইতে ইঙ্গিত থাকত বেশি, যার মানে, দাঁড়ি-কমার চেয়ে ফুটকিই অধিকতর। সেই ফুটকি-চিহ্নিত হেঁয়ালির মতই মনে হত তাকে।

দুরের থেকে চোখের দেখা দেখে বা কখনো নেহাৎ কান-কথা শুনে এমনি মনগড়া সিদ্ধান্ত করে বসি আমরা। আর সে সিদ্ধান্ত সম্বন্ধে এত নিঃসন্দেহ থাকি। সময় কোথায়, সুযোগই বা কোথায়, সে সিদ্ধান্ত যাচাই করি একদিন। যাকে কালো বলে জেনেছি সে চিরকাল কালো বলেই আঁকা থাক।

সুবোধ এমন একটা কথা বললে যা কোনো দিন শুনিনি বা শুনব বলে আশা করিনি বাংলা দেশে।

জাহাজে বসে এতদিন যত লিখেছে সুবোধ, তারই থেকে একটা গল্প বেছে নিয়ে কি খেয়ালে সে কল্লোলে পাঠিয়ে দিয়েছিল। আরো অনেক কাগজে সে পাঠিয়েছিল সেই সঙ্গে, হয় খবর এসেছে মনোনয়নের, নয় ফেরৎ এসেছে লেখা—সেটা এমন কোনো আশ্চর্যজনক কথা নয়। কিন্তু কল্লোলে কী হল? কল্লোল তার গল্প অমনোনীত করলে, সম্পাদকী লেপাফায় লেখা ফেরৎ গেল। কিন্তু সেই সঙ্গে গেল একটি পোস্ট কার্ড। যদি দয়া করে আমাদের অফিসে আসেন একদিন আলাপ করতে। তার মানে, লেখা অপছন্দ হয়েছে বটে, কিন্তু লেখক, তুমি অযোগ্য নও, তুমি অপরিত্যাজ্য। তুমি এসো। আমাদের বন্ধু হও।

ঐ পোস্টকার্ডটিই গোকুল।

ঐ পোস্টকার্ডটিই সমস্ত কল্লোলের সুর। কল্লোলেরর স্পর্শ। তার নীড়নির্মাণের মূলমন্ত্র।

খবর শুনে মন নরম হয়ে গেল। আমার লেখা বাতিল হলেও আমার মূল্য নিঃশেষ হয়ে গেল না এত বড় সাহসের কথা কোনো সম্পাদকই এর আগে বলে পাঠায়নি। যা লিখেছি তার চেয়ে যা লিখব তার সম্ভাব্যতারই যে দাম বেশি এই আশ্বাসের ইসারা সেদিন প্রথম পেলাম সেই গোকুলের চিঠিতে।

সুবোধ বললে, তোমার খাতা বের করো।

তখন আমি আর আমার বন্ধু প্রেমেন্দ্র মিত্র মোটা-মোটা বাঁধানো খাতায় গল্প-কবিতা লিখি। লিখি ফাউন্টেন পেনে নয়—হায়, ফাউন্টেন পেন কেনবার মত আমাদের তখন পয়সা কোথায়-লিখি বাংলা কলমে, সরু জি-মার্কা নিবে। অক্ষর কত ছোট করা যায় চলে তার অলক্ষ্য প্রতিযোগিতা। লেখার মাথায় ও নিচে চলে নানারকম ছবির কেরামতি।

তারিখটা আমার ডায়রিতে লেখা আছে—৮ই জ্যৈষ্ঠ, বৃহস্পতিবার, ১৩৩১ সাল। সন্ধেবেলা সুবোধের সঙ্গে চললাম নিউ মার্কেটের দিকে। সেখানে কি? সেখানে গোকুল নাগের ফুলের দোকান আছে।

যে দোকান দিয়ে বসেছে সে ব্যবসা করতে বসেনি এমন কথা কে বিশ্বাস করতে পারত? কিন্তু সেদিন একান্তে তার কাছে এসে স্পষ্ট অনুভব করলাম, চারপাশের এই রাশীভূত ফুলের মাঝখানে তার হৃদয়ও একটি ফুল, আর সেই ফুলটি ও সে অকাতরে বিনামূল্যে যে-কারুর হাতে দিয়ে দিতে প্রস্তুত।

সুবোধের হাত থেকে আমার খাতাটা সে ব্যগ্র উৎসাহে কেড়ে নিল। একটিও পৃষ্ঠা না উলটিয়ে কাগজে মুড়ে রেখে দিলে সন্তর্পণে। যেন নীরব নিভৃতিতে অনেক যত্নসহকারে লেখাগুলো পড়তে হবে এমনি ভাব। হাটের মাঝে পড়বার জিনিস তারা নয়—অনেক সদ্ব্যবহার ও অনেক সদ্বিবেচনা পাবার তারা যোগ্য। লেখক নতুন হোক, তবু সে মর্যাদার অধিকারী।

এমনি ছোটখাটো ঘটনায় বোঝা যায় চরিত্রের বিশালতা।

বুঝলাম কত বড় শিল্পীমন গোকুলের। অনুসন্ধিৎসু চোখে আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেখছে। চোখে সেই যে সন্ধানের আলো তাতে তেল জোগাচ্ছে স্নেহ।

যখন চলে আসি, আমাকে একটা ব্লকপ্রিন্স উপহার দিলে। বললে, কাল সকালে আপনি আর সুবোধ আমার বাড়ি যাবেন, চা খাবেন।

আপনার বাড়ি–

আমার বাড়ি চেনেন না? আমার বাড়ি কোথায় চেহারা দেখে ঠাহর করতে পারেন না?

কি করে বলব?

কি করে বলবেন। আমার বাড়ি জু-তে, চিড়িয়াখানায়। আমার বাড়ি মানে মামার বাড়ি। কোনো ভয় নেই। যাবেন স্বচ্ছন্দে।

পরদিন খুব সকালে সুবোধকে নিয়ে গেলাম চিড়িয়াখানায়। দেখলাম শিশিরভেজা গাঢ়-সবুজ ঘাসের উপর গোকুল হাটছে খালি পায়ে। বোধহয় আমাদেরই প্রতীক্ষা করছিল। তার সেদিনের সেই বিশেষ চেহারাটি বিশেষ একটা অর্থ নিয়ে আজো আমার মনের মধ্যে বিধে আছে। যেন কিসের স্বপ্ন দেখছে সে, তার জন্যে সংগ্রাম করছে প্রাণপণ, প্রতীক্ষা করছে পিপাসিতের মত। অথচ, সংগ্রামের মধ্যে থেকেও সে নির্লিপ্ত, নিরাকাঙ্ক্ষ। জনতার মধ্যে থেকেও সে নিঃসঙ্গ, অনন্যসহায়।

তার ঘরে নিয়ে গেল আমাদের। চা খেলাম। সিগারেট খেলাম। নিজের অজানতেই তার অন্তরের অঙ্গ হয়ে উঠলাম। বললে, আপনার গুমোট গল্পটি ভালো লেগেছে। ওটি ছাপব আষাঢ়ে।

কল্লোলের তখন দ্বিতীয় বর্ষ। প্রথম প্রকাশ বৈশাখ, ১৩৩০। সম্পাদক শ্রীদীনেশরঞ্জন দাশ; সহ-সম্পাদক, শ্রীগোকুলচন্দ্র নাগ। প্রতি সংখ্যা চার আনা। আট পৃষ্ঠা ডিমাই সাইজে ছাপা, প্রায় বারো ফর্মার কাছাকাছি।

নিজের সম্বন্ধে কথা বলতে এত অনিচ্ছুক ছিল গোকুল। পরের কথা জিজ্ঞাসা করো, প্রশংসায় একেবারে পঞ্চমুখ। তবু যেটুকু খবর জানলাম মুগ্ধ হয়ে গেলাম।

গোকুল হালে সাহিত্য করছে বটে, কিন্তু আসলে সে চিত্রকর। আর্ট স্কুল থেকে পাশ করে বেরিয়েছে সে। অয়েল পেন্টিংএ তার পাকা হাত। তারপর তার লম্বা চুল দেখে যে সন্দেহ করেছিলাম, সে সত্যিই-সত্যিই বেহালা বাজায়। আর, আরো আশ্চর্য, গান গায়। শুধু তাই? সোল অফ এ শ্লেভ বা বাদীর প্রাণ ফিমে সে অভিনয়ও করেছে অহীন্দ্র চৌধুরীর সঙ্গে। শিল্প-পরিচালকও ছিল সে-ই।

গোকুল ও তার বন্ধুদের ফোর আর্টস ক্লাব নামে একটা প্রতিষ্ঠান ছিল। বন্ধুদের মধ্যে ছিল দীনেশরঞ্জন দাশ, মণীন্দ্রলাল বসু আর সুনীতি দেবী। এরা চার জনে মিলে একটা গল্পের বইও বের করেছিল, নাম ঝড়ের দোলা। প্রত্যেকের একটি করে গল্প। মাসিক পত্রিকা বের করারও পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু তার আগে ক্লাব উঠে গেল।

আমার ব্যাগে দেড় টাকা আর দীনেশের ব্যাগে টাকা দুইঠিক করলাম কল্লোল বের করব। স্নিগ্ধ উত্তেজনায় উজ্জ্বল দুই চোখ মেলে গোকুল তাকিয়ে রইল বাইরের রোদের দিকে। বললে, সেই টাকায় কাগজ কিনে হাবিল ছাপালাম। চৈত্র সংক্রান্তির দিন রাস্তায় বেজায় ভিড়, জেলেপাড়ার সং দেখতে বেরিয়েছে। সেই ভিড়ের মধ্যে দুজনে আমরা হাবিল বিলোতে লাগলাম। পরমুহূর্তেই আবার তার শান্ত স্বরে ঔদাস্যের ছোঁয়া লাগল। বললে, তবু ফোর আর্টস্ ক্লাবটা উঠে গেল, মনে কষ্ট হয়।

বললাম, আপনিই তো একাধারে ফোর আর্টস। চিত্র, সঙ্গীত, সাহিত্য, অভিনয়।

নম্রতায় বিমর্ষ হয়ে হাসল গোকুল। বললে, আসুন আপনারা সবাই কল্লোলে। কল্লোলকে আমরা বড় করি। দীনেশ এখন দার্জিলিঙে। সে ফিরে আসুক। আমাদের স্বপ্নের সঙ্গে মিশুক আমাদের কর্মের সাধনা।

যখন চলে আসি, গোকুল হাত বাড়িয়ে আমার হাত স্পর্শ করল। সে স্পর্শে মামুলি শিষ্টাচার নয়, তার অনেক বেশি। একটি উত্তপ্ত স্নেহ, হয়তো বা অস্ফুট আশীর্বাদ।

তারপর একদিন কল্লোল আফিসে এসে উপস্থিত হলাম। ১২ পটুয়াটোলা লেন। মির্জাপুর স্ট্রিট ধরে গিয়ে বাঁ-হাতি।

কল্লোল-আফিস!

চেহারা দেখে প্রথমে দমে গিয়েছিলাম কি সেদিন? ছোট্ট দোতলা বাড়ি—একতলায় রাস্তার দিকে ছোট্ট বৈঠকখানায় কল্লোল-আফিস! বায়ে বেঁকে দুটো সিড়ি ভেঙে উঠে হাত-দুই চওড়া ছোট একটু নোয়ক ডিঙিয়ে ঘর। ঘরের মধ্যে উত্তরের দেওয়াল ঘেঁসে নিচু একজনের শোয়র মত ছোট একফালি তক্তপোশ, শতরঞ্চির উপর চাদর দিয়ে ঢাকা। পশ্চিম দিকের দেওয়ালের আধখানা জুড়ে একটি আলমারি, বাকি আধখানায় আধা-সেক্রেটারিয়েট টেবিল। পিছন দিকে ভিতরে যাবার দরজা, পর্দা ঝুলছে কি ঝুলছে না, জানতে চাওয়া অনাবশ্যক। ফাঁকা জায়গাটুকুতে খান দুই চেয়ার, আর একটি ক্যানভাসের ডেক-চেয়ার। ঐ ভেক চেয়ারটিই সমস্ত কল্লোল-আফিসের অভিজাত্য। প্রধান বিলাসিতা।

সম্পাদকী টেবিলে গোকুল নাগ বসে আছে, আমাকে দেখে সস্মিত শুভাগমন জানালে। তক্তপোশের উপর একটি প্রিয়দর্শন যুবক, নাম ভূপতি চৌধুরী, শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ে, বাড়ির ঠিকানা ৫৭ আমহার্স্ট স্ট্রিট। আরো একটি ভদ্রলোক বসে, ছিমছাম ফিটফাট চেহারা, একটু বা গম্ভীর ধরনের। খোঁজ নিয়ে জানলাম, সতীপ্রসাদ সেন, কল্লোলের গোরাবাবু। দেখতে প্রথমটা একটু গম্ভীর, কিন্তু অপেক্ষা করে, পাবে তার অন্তরের মধুরতার পরিচয়।

ভূপতির সঙ্গে একবাক্যেই ভাব হয়ে গেল। দেখতে দেখতে চলে এল নৃপেন্দ্রকৃষ্ণ চট্টোপাধ্যায়।

কিন্তু প্রথম দিন সব চেয়ে যা মন ভোলাল তা হচ্ছে ঠিক সাড়েচারটের সময় বাড়ির ভিতর হতে আসা প্লেট-ভরা এক গোছা রুটি আর বাটিতে করে তরকারি। আর মাথা-গুনতি চায়ের কাপ।

ভাবলাম, প্রেমেনকে বলতে হবে। প্রেমেন আমার স্কুলের সঙ্গী। ম্যাট্রিক পাশ করেছি এক বছর।

3 Comments
Collapse Comments

Ar kuthay…
Ektu taratari chai, plz

Bangla Library (Administrator) November 27, 2018 at 9:51 am

এটা কিছু কারণবশতঃ এক-এক পর্ব করে বা একটু একটু করে দেয়া হবে। এক সাথে দিতে না পারার জন্য দুঃখিত।

Aah Moshai…Opekkhar cheye kharap kichu nei,
Tobu wait kore achi, apnara subida moto upload din, tobe ektu taratari e jeno puruta pai….Thanks

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *