সামনে সমুদ্র নীল – পরিচ্ছেদ ৫

০৫.

এক সময় থমকে দাঁড়াল অনুরাধা।

সমুদ্রের নির্জন তীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে ইতিমধ্যে কখন যেন সে হোটেল থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে, এখন বাঁয়ে অশান্ত কল্লোলিত সমুদ্র একটানা গর্জন করে চলেছে, অন্যদিকে ধু ধু বালিয়াড়ি, কোন লোকালয়ের চিহ্নমাত্রও নেই। ভিজে বালির উপর দিয়ে হাঁটছিল অনুরাধা। এবারে সেখানেই বসে পড়ল, পা দুটো ক্লান্ত। মধ্যে মধ্যে ঢেউগুলো এসে পায়ের পাতা ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। মাথায় আঁচলটা ঘোমটার মত তুলে দিয়ে চপ্পলজোড়া পা থেকে খুলে হাতে তুলে। নিয়েছিল অনুরাধা। রৌদ্রের তাপটা যেন কেমন এখন ঝিমিয়ে এসেছে। আকাশের দিকে তাকাল অনুরাধা, সেই হাল্কা ইতস্তত ছড়ানো টুকরো টুকরো মেঘগুলো কখন যেন পরস্পরের সঙ্গে মিলেমিশে আর অনেকখানি আকাশের গায়ে জুড়ে বসেছে। কি ভেবে ফিরল অনুরাধা। আর এগুনো হয়ত ঠিক হবে না।

এ দুই বৎসর অনুরাধাদের সংসারেরও অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আকস্মিকভাবেই বৎসরখানেক আগে মধুছন্দার বিয়েটা হয়ে গেল। রিটায়ার্ড জজ যোগেশবাবু হাঁটতে হাঁটতে লেক থেকে ফিরবার পথে অনেক দিন মধুছন্দাকে দেখেছেন, কারণ তার বাড়িও ছিল ঐ রজনী সেন স্ট্রীটেই! একমাত্র ছেলে তার ইলেকট্রিক্যাল ইনজিনিয়ার, ভিলাইতে চাকরি করছিল, স্ত্রীর অনেক দিন আগেই মৃত্যু হয়েছিল, ছেলে যেবার আই. আই. টি.-তে ভর্তি হয়। সংসারে বাপবেটা ছাড়া কোন তৃতীয় ব্যক্তি ছিল না। ছেলের বিবাহ দেবেন বলে যোগেশবাবু পাত্রী দেখছিলেন, মধুছন্দাকে দেখে তার ভাল লাগে, তিনি নিজে তার মা সরোজিনীর সঙ্গে দেখা করে বিবাহের প্রস্তাব তোলেন।

মা-ও হাতে স্বর্গ পান। তাছাড়া কিছুদিন থেকে পেটের একটা যন্ত্রণায় মা খুবই কষ্ট পাচ্ছিলেন, প্রায়ই শয্যাশায়ী হয়ে থাকতে হত তাকে এবং আরও একটা কথা—অনুরাধার কথা ভেবে তার মনের সমস্ত শান্তি চলে গিয়েছিল। মেয়ে অনু চাকরি নেবার কয়েক মাস পর থেকেই যেন তার মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করতে শুরু করেছিলেন ওদের মা সরোজিনী দেবী।

অনুরাধা প্রায়ই তার অফিসের বড় সাহেবের সঙ্গে আজ দিল্লী, পরশু বোম্বাই, তরশু মাদ্রাজ যেতে শুরু করল কখনও সাত দিন, কখনও দশ দিন পরে ফিরত। অবিবাহিতা বয়সের মেয়ে, আদৌ ভাল লাগছিল না ব্যাপারটা সরোজিনীর। একদিন আর না থাকতে পেরে প্রশ্নই করলেন, অনু, সরিৎকে আর দেখি না কেন রে? সেই যে যার সঙ্গে তোর পরিচয় ছিল, এখানে প্রায়ই আসত–

তা আসে না কেন আমি জানব কি করে।

সরিৎ তো তোকে বিয়ে করবে বলেছিল—

সে বিয়ে হবে না।

বিয়ে হবে না? কেন? সে বলেছে বিয়ে করবে না?

না—আমার বস দত্ত মজুমদার চান না তার সঙ্গে আমি কোন সম্পর্ক রাখি।

সে আবার কিরকম কথা?

মিঃ দত্ত মজুমদারকেই আমি বিয়ে করছি—

দত্ত মজুমদারকে বিয়ে করবি? লোকটার তো অনেক বয়েস হয়েছে বলছিলি!

তাতে কি হয়েছে, ব্যাচিলার এখনও।

সরোজিনীর ব্যাপারটা আদৌ ভাল লাগল না, কিন্তু তিনি আর কোন কথা বললেন না।

সরিৎশেখর যে গত দুই বৎসর অনুরাধাকে কখনও পথে যেতে আসতে দেখেনি তার কারণ সে দত্ত মজুমদারের গাড়িতেই সর্বদা যাতায়াত করত। সকালে দত্ত মজুদারের গাড়ি এসে তাকে নিয়ে যেত, ফিরে আসতে আসতে প্রায়ই রাত এগারোটা সাড়ে এগারোটা হয়ে যেত।

সরোজিনী মেয়েকে কখনও আর কোন প্রশ্নই করেননি। অনুরাধা অফিসে চাকরি করে, মোটা মাইনে পায়, নিত্য নতুন দামী দামী শাড়ি ব্লাউজ—সবই দেখতেন সরোজিনী, কিন্তু কোন কথা বলতেন না। তবে মেয়ের হালচাল দেখে অনেক কিছুই অনুমান করতে তার কষ্ট হয়নি। তাই যোগেশবাবুর প্রস্তাবে সঙ্গে সঙ্গে সম্মত হয়ে গেলেন সরোজিনী। পরের মাসেই মধুছন্দার বিবাহ হয়ে গেল। সে চলে গেল তার স্বামীর কাছে দিল্লীতে। সেই মধুছন্দাই দিন কয়েকের জন্য কলকাতায় এসে তার মাকে দিদি সম্পর্কে অনেক কথা বলে গেল।

বললে, সবাই জানে মা, দিদির দত্ত মজুমদারের সঙ্গে বিয়ে হয়নি।

বিয়ে হয়নি!

না। আমি ভাল করে খোঁজ নিয়ে জেনেছি, দিদি দত্ত মজুমদারের রক্ষিতার মত আছে। দত্ত মজুমদারের স্ত্রী আছে। তাহলেই বুঝে দেখ ব্যাপারটা।

সরোজিনী অস্ফুট একটা চিৎকার করে উঠলেন, মধু!

হ্যাঁ মা, ঐ দত্ত মজুমদারটা একটা স্কাউড্রেল—

সরোজিনী যেন পাথর হয়ে গেলেন। অনুরাধা সে-সময় কলকাতায় ছিল না। দিল্লীতেই ছিল। চার দিন পরে অনুরাধা যখন ফিরে এল, ব্যথায় সরোজিনী শয্যাশায়ী। সলিল দত্ত মজুমদার সব শুনে অনুরাধাকে পরামর্শ দিলেন, মাকে নার্সিং হোমে ভর্তি করে দাও-খরচপত্র যা লাগে। আমিই দেব।

কি জানি কেন অনুরাধা আর কোন আপত্তি করল না। সরোজিনীও আপত্তি করলেন না। কিন্তু নার্সিং হোমে পেট ওন করে দেখা গেল ক্যানসার। এবং রোগ তখন অনেক ছড়িয়ে গিয়েছে, করবার আর কিছু নেই।

তিন মাস বাদে ঐ নার্সিং হোমেই সরোজিনী শেষ নিঃশ্বাস নিলেন। এবং তারই কিছুদিন পরে সেই বিচিত্র ঘটনাটা ঘটল।

এক শনিবার বেলা তখন সোয়া তিনটে হবে, অফিস ছুটি হয়ে গিয়েছে। অনুরাধা ঘরে একা বসে একটা চিঠি টাইপ করছিল। পাশেই দত্ত মজুমদারের ঘরে একটা তর্কাতর্কি চেঁচামেচি তার কানে এল। কড়া-গলায় দত্ত মজুমদার ও অন্য এক ব্যক্তি পরস্পরের সঙ্গে তর্কাতর্কি করছেন।

আমি জানতে চাই সলিল, মুকুল কোথায়? পুরুষকণ্ঠে প্রশ্ন।

আমি তোমার প্রশ্নের কোন জবাব দেব না জীমূতবাহন—

দিতে তোমাকে হবে, মুকুল আমার বোন—তোমার বালিগঞ্জের ফ্ল্যাটে সে নেই, সেখানে অন্য ভাড়াটে–

সে আমার স্ত্রী, আমার স্ত্রী সম্পর্কে সব কিছু তোমার এক্তিয়ারের বাইরে—

হ্যাঁ, স্ত্রীর মর্যাদা তো তাকে যথেষ্ট দিয়েছ!

এখান থেকে চলে যাও—

জবাব না নিয়ে আমি যাব না। আমি জানতে চাই, তুমি আবার বিয়ে করেছ কিনা?

আমি আবার বিয়ে করেছি? হ্যাঁ করেছি।

তবে শুনে রাখ, I shall drag you to the court. পলিগেমির শাস্তি কি সেটা জানতে তোমার দেরি হবে না।

I say get out—দত্ত মজুমদারের হাতে পিস্তল, তার ড্রয়ারে সব সময়ই একটা পিস্তল থাকত, সেটা তখন তিনি বের করেছেন Get out of this room!

ঠিক আছে আমি যাচ্ছি, তবে আবার আমাদের দেখা হবে, লোকটা চলে গেল।

পাশের ঘরে অনুরাধার মাথাটা তখন ঘুরছে। পায়ের তলার মাটি সরে যাচ্ছে। একটু একটু করে নিজেকে সামলে নিয়ে সোজা অফিস থেকে বের হয়ে একটা ট্যাক্সি নিল অনুরাধা।

রাত তখন দশটা।

রজনী সেন স্ট্রীটের বাড়িতে তার ঘরে ঝিম মেরে বসে ছিল অনুরাধা।

ঝি বেলার মা সেদিন আবার কাজে আসেনি, সে-ই রান্না করে রেখে যেত, ঐ দিন রাত্রে স্থির ছিল বাইরের হোটেলে সে ও দত্ত মজুমদার ডিনার করবে।

সিঁড়িতে জুতোর শব্দ।

ঘরের দরজাটা খোলাই ছিল। দত্ত মজুমদার এসে ঘরে ঢুকলেন, অনু—

ফ্যাকাশে অসহায় বোবা দৃষ্টি তুলে তাকাল অনুরাধা দত্ত মজুমদারের দিকে।

তুমি হঠাৎ অফিস থেকে আমায় না বলে চলে এলে কেন অনু? চল চল, ডিনার খেতে যাবে না?

না। তারপরই অনুরাধা বললে, তুমি–তুমি বিবাহিত?

কে বললে?

যেই বলুক কথাটা সত্যি কিনা তাই শুধু জানতে চাইছি!

না, সত্যি নয়—

সত্যি নয়? তুমি বিবাহিত নও—তোমার স্ত্রীর নাম মুকুল নয়?

হ্যাঁ, তার নাম মুকুলই ছিল। মানে অনেককাল আগে একজনকে বিয়ে ঠিক নয় লাইফ কম্প্যানিয়ান হিসাবে ছিল, সেই মুকুল।

ছিল মানে?

সে বেঁচে নেই। দুই বৎসর আগে তার মৃত্যু হয়েছে, She is dead.

আমি কথাটা বিশ্বাস করি না। তুমি মিথ্যুক—

আমার কথা তুমি বিশ্বাস করো না রাধা?

না—না—না–করি না, তুমি চলে যাও–

কেন কেলেঙ্কারি করবে, নীচের ভাড়াটেরা সব জেনে যাবে, চল আমার পার্ক স্ট্রীটের ফ্ল্যাটে চল।

না, যাব না আমি।

দুজনের মধ্যে মনোমালিন্যের সূত্রপাত ওখানেই।

যায়নি সেদিন অনুরাধা সলিল দত্ত মজুমদারের পার্ক স্ট্রীটের ফ্ল্যাটে। কিন্তু তারপর কটা দিনই বা, নিজের অপমান লজ্জা ও কেলেঙ্কারির ভয়ে অনুরাধাকে কয়েকদিন পরেই আবার। সলিল দত্ত মজুমদারের ফ্ল্যাটে গিয়ে ঢুকতে হয়েছিল। কিন্তু মনের মধ্যে যে চিড় খেয়েছিল সেটা আর জোড়া লাগল না। ক্রমশ সেটা গভীর থেকে গভীরতর হয়ে চলেছিল। একটা অজগর যেমন তার শিকারকে গ্রাস করে, দত্ত মজুমদার যেন তেমনি করেই তাকে গ্রাস করেছিল। বের হয়ে আর আসতে পারেনি অনুরাধা সেই গ্রাস থেকে।

কিন্তু আজ আজ আবার অনেক দিন পরে সরিৎকে দেখে অনুরাধার মনের মধ্যে যেন–একটা ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। সে যেন এই দুর্বিসহ বন্দী জীবন থেকে বেরুবার একটা ইঙ্গিত পেয়েছে। মনের কোথায় যেন একটা মুক্তির বাঁশি শুনতে পেয়েছে।

তার এই দুই বৎসরের বন্দীজীবনে কতবার ভেবেছে সরিৎশেখরের কাছে সে ছুটে যায়, কিন্তু কেন যেন সাহস হয়নি।

ঐ দত্ত মজুমদার মানুষটা হয়তো তাহলে সরিৎশেখরকেও নিষ্কৃতি দেবে না, ভয়ংকর চরিত্রের ঐ মানুষটা, ওকে বিশ্বাস নেই।

অনুরাধা মনে মনে স্থির করে, আজ সে বলবে, সরিৎকে সব কথা বলবে। বলবে, বাঁচাও আমাকে সরিৎ, আমাকে বাঁচাও। বালুর উপর বসেছিল অনুরাধা, উঠে দাঁড়াল, হাতঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখল বেলা একটা বেজে গিয়েছে। সূর্য দেখা যাচ্ছে না, আকাশে মেঘ জমেছে, একটা কালো শান্ত ছায়া যেন আকাশ ও সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। অনুরাধা আবার হোটেলের দিকে হাঁটতে শুরু করল।

অনুরাধা যখন হোটেলের ১৬নং ঘরে এসে ঢুকল, সলিল দত্ত মজুমদার তখন একটা চেয়ারে বসে ঐ দ্বিপ্রহরে নির্জলা হুইস্কি পান করছিল। কাল রাত্রে যে বোতলটা খুলেছিল, আজ দুপুরের আগেই সেটা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে।

অনুরাধাকে ঘরে ঢুকতে দেখে সলিল দত্ত মজুমদার ওর দিকে চোখ তুলে তাকাল। চোখ দুটো লাল, মাথার চুল রুক্ষ।

এতক্ষণ কোথায় ছিলে? সলিল প্রশ্ন করল।

অনুরাধা কোন জবাব দিল না।

আমার কথার জবাব দিচ্ছিস না কেন হারামজাদী! কথার জবাব দে—যেন একটা বিষাক্ত কেউটে রাগে হি হি করে।

অনুরাধা নির্নিমেষ চেয়ে আছে ঐ লোকটার দিকে।

পুরানো নাগর দেখে পীরিত উথলে উঠেছিল, তাই না? আবার গর্জে উঠল সলিল দত্ত মজুমদার, জবাব দে।

মনে রাখবেন এটা হোটেল। পাশের ঘরে লোক আছে।

Shut up! চেঁচিয়ে উঠল সলিল দত্ত মজুমদার।

অনুরাধা ঘর থেকে বের হয়ে যাবার জন্য দরজার দিকে এগিয়ে গেল। সলিল দত্ত মজুমদার চেঁচিয়ে উঠল, দাঁড়া, এক পা এগুবি তো কুকুরের মত গুলি করে মারব। হারামজাদী, বেশ্যা!

কি কুৎসিত দেখাচ্ছিল দত্ত মজুমদারের মুখটা, যেন একটা কালো নেকড়ে বাঘ। রক্তাক্ত চোখের চাউনি থেকে যেন কুটিল হিংস্রতা বিচ্ছুরিত হচ্ছিল।

স্তম্ভিত বিস্ময়ে অনুরাধা লোকটার মুখের দিকে নির্বাক তাকিয়েছিল, ঘৃণায় লজ্জায় যেন অনুরাধা ঐ মুহূর্তে পাথর হয়ে গিয়েছে। এইটাই বোধ করি ঐ মানুষটার সত্যিকারের পরিচয়।..

পাশের ১৭নং ঘরে ছিল কিরীটী। পাশের ১৬নং ঘরের দেওয়াল ভেদ করে যেন সলিল দত্ত মজুমদারের প্রত্যেকটি কথা স্পষ্ট তার কানে যাচ্ছিল। আর একজনও শুনতে পাচ্ছিল—চন্দ্রকান্ত ঘাই, একটু আগে যে ১৫নং ঘরে এসে ঢুকেছে। তারও কানে যায় কথাগুলো। সে দেওয়ালে কান পেতে দাঁড়ায়। ঐ গলাটা তার চেনা। তাহলে এই হোটলের ঠিক পাশের ঘরেই ঐ লোকটা এসে উঠেছে! চন্দ্রকান্ত ঘাই মনে মনে হাসে। সংবাদটা তাহলে মিথ্যা নয়? চন্দ্রকান্ত ঘরে ঢুকে চেয়ারে বসল। তারপর পকেট থেকে একটা বিড়ি নিয়ে দেশলাই দিয়ে বিড়িটা ধরাল। তারপর যেন পরম নিশ্চিন্তে বিড়িটায় সুখটান দিতে লাগল।

কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে অনুরাধা বলল, আমি আজকের ট্রেনেই কলকাতায় ফিরে যাব।

কি বললি! ফিরে যাবি?

ভদ্রভাবে কথা বলুন, অনুরাধা বলল! নতুবা এখুনি আমি নীচে গিয়ে তোক জড়ো করব—থানায় যাব।

জোঁকের মুখে নুন পড়লে যেমন হঠাৎ গুটিয়ে যায়, থানার নাম শুনে সেও যেন চুপসে গেল সঙ্গে সঙ্গে। বার দুই কেবল হেঁচকি তুলল উ উ শব্দে।

আমি নীচে গিয়ে লোক জড়ো করে তাদের বলব, আপনি আমাকে জোর করে এখানে ধরে রেখেছেন—

তুমি আমার স্ত্রী-মিনমিনে গলায় সলিল দত্ত মজুমদার বললে।

না, কোন দিনই আপনার স্ত্রী ছিলাম না, আজও নই।

কিন্তু আমাদের বিয়ে হয়েছে–

সে বিয়ে আইনত অসিদ্ধ, আদালতে গেলেই তা প্রমাণ হবে। অনুরাধা যেন কুঁসছিল। আরও সে কিছু বলত কিন্তু বন্ধ দরজার গায়ে করাঘাত পড়ল।

দত্তবাবু, দত্তবাবু–

কে?

আমি চাদু, হোটেলের বেয়ারা।

সলিল উঠে গিয়ে দরজাটা খুলে দিল, কি চাই?

ম্যানেজারবাবু বলে পাঠালেন, আপনার ট্যাক্সি ঠিক হয়ে গিয়েছে। ট্যাক্সিওয়ালা জিজ্ঞাসা করছে আপনি কখন বেরুবেন।

চল, আমি নীচে যাচ্ছি।