মহাভারত প্রসঙ্গে

॥ মহাভারত প্রসঙ্গে ॥

মহাভারতকে বলা হয় পঞ্চম বেদ। পৃথিবীর যাবতীয় ভাষায় রচিত মহাকাব্যের মধ্যে মহাভারত বৃহত্তম। এবং নিঃসন্দেহে শ্রেষ্ঠতম। সংস্কৃত ভাষায় এক লক্ষ শ্লোকে মূল মহাকাব্যটি রচনা করেন মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস। মূল থেকে মহাভারতকে বাংলায় প্রথম রূপান্তরিত করেন মহাকবি কাশীরাম দাস।

জনমেজয়ের সপর্যজ্ঞে ব্যাসদেবের আদেশে তাঁর প্রিয় শিষ্য বৈশম্পায়ন চন্দ্র বংশের উৎপত্তি থেকে শুরু করে পাণ্ডবদের মহাপ্রস্থান এবং স্বর্গারোহণ পর্যন্ত যে কাহিনী শুনিয়েছিলেন—তাই মহাভারত।

মোট আঠারটা পর্বে বিভক্ত এই মহাকাব্য। পর্বগুলো হল:—১. আদি পর্ব, ২. সভা পর্ব, ৩. বন পর্ব, ৪. বিরাট পর্ব, ৫. উদ্যোগ পর্ব, ৬. ভীষ্ম পর্ব, ৭. দ্রোণ পর্ব, ৮. কর্ণ পর্ব, ৯. শল্য পর্ব, ১০. সৌপ্তিক পর্ব, ১১. স্ত্রী পর্ব, ১২. শান্তি পর্ব, ১৩. অনুশাসন পর্ব, ১৪. অশ্বমেধ পর্ব, ১৫. আশ্রমবাসিক পর্ব, ১৬. মুষল পর্ব, ১৭. মহাপ্রস্থান পর্ব, ১৮. স্বর্গারোহণ পর্ব।

মহাভারতের রচনাকাল সম্বন্ধে পণ্ডিতেরা একমত নন। কারো মতে, খ্রিষ্টের জন্মের ৩০০০ বছর আগে ব্যাসদেব মহাভারত রচনা করেছিলেন। কারো মতে, মহাভারত রচিত হয়েছে আরও আগে।

সুদীর্ঘ ৫০০০ বছর ধরে একটি মহাকাব্য অসংখ্য মানুষের হৃদয় জয় করে আসছে—ভাবতেও বিস্ময় জাগে। ব্যাপক নৈতিক অবক্ষয় যখন সর্বস্তরে শাশ্বত মূল্যবোধকে গ্রাস করে চলেছে, তখনও মহাভারতের জনপ্রিয়তায় নতুন করে জোয়ার আসছে। বিপন্ন জাতীয় সংহতি রামায়ণ এবং মহাভারতের প্রচারকে কেন্দ্র করে সবার অলক্ষ্যে, অজ্ঞাতসারে, নিঃশব্দে পুষ্ট হয়ে চলেছে। এই দুই মহাকাব্যের সত্যিই কোনও বিকল্প নেই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *