॥ অতি সংক্ষেপে মহাভারত ॥
যাঁদের হাতে সময় খুবই কম, মহাভারতের আঠের পর্বের কোন্ পর্বে কী আছে, তা জানার জন্যে যাঁরা পাঁচ-দশ মিনিটের বেশি সময় ব্যয় করতে পারবেন না, শুধু মিনিট পাঁচ-দশেকের মধ্যে গোটা মহাভারতের কোন্ পর্বে কী উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছিল তা ‘পাখির নজরে এক ঝলক দেখে নিতে চান, তাঁদের জন্যে অতি সংক্ষেপে নিবেদন করা হল সমগ্র মহাভারত।
(১) আদিপর্ব
কৌরব পাণ্ডবদের জন্ম। খেলতে খেলতে ঝগড়া। কুয়েতে কাঠের গোলক। দ্রোণাচার্য কুমারদের শিক্ষাগুরু নিযুক্ত। একলব্যের গুরু-দক্ষিণা। শিষ্যদের পরীক্ষা নিলেন দ্রোণাচার্য। প্রকাশ্য অঙ্গনে কুমারদের অস্ত্রনৈপুণ্য দেখানো। যুধিষ্ঠিরের রাজ্যলাভ। দুর্যোধনের চক্রান্ত। জতুগৃহ। পাণ্ডবদের খনকের তৈরি সুড়ঙ্গপথে পলায়ন। হিড়িম্ব এবং বক রাক্ষস বধ। দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভা। অর্জুনের লক্ষ্যভেদ। পাঁচভাই মিলে দ্রৌপদীকে বিয়ে করা। পাণ্ডবদের হস্তিনাপুরে ফিরিয়ে আনা। পাণ্ডবদের খাণ্ডবপ্রস্থ বা ইন্দ্রপ্রস্থে যাত্রা। রাজপুরী নির্মাণ। অর্জুনের বনবাস। সুভদ্রা হরণ। খাণ্ডব দাহন।
(২) সভাপর্ব
পাণ্ডবদের জন্যে ময়দানবের অসাধারণ সভাগৃহ তৈরি করা। রাজসূয় যজ্ঞ। জরাসন্ধ বধ। দুর্যোধনের ঈর্ষা এবং অপমান। পাশা খেলা। যুধিষ্ঠিরের হার। দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ। ভীমের প্রতিজ্ঞা। আবার পাশা এর হার। শর্ত মতো বার বছর বনবাস এবং পরবর্তী এক বছর অজ্ঞাত বাসের জন্যে পাঞ্চালীসহ পাণ্ডবদের যাত্রা।
(৩) বনপর্ব
যুধিষ্ঠির-দ্রৌপদী কথোপকথন। মহাদেব এবং ইন্দ্রের কাছ থেকে অর্জুনের অস্ত্রলাভ। দ্বৈতবনে দুর্যোধনের উচিত শিক্ষা। দুর্বাসার দশ হাজার শিষ্যসহ আতিথ্য গ্রহণ। জয়দ্রথের দ্রৌপদী হরণ। ইন্দ্রকে কর্ণের কবচ-কুণ্ডল দান। বক-যুধিষ্ঠির কথোপকথন।
(৪) বিরাটপর্ব
বিরাট রাজার প্রাসাদে দ্রৌপদীসহ পঞ্চ পাণ্ডব। কীচক-বধ। বিরাট রাজার গো-হরণে দুর্যোধনের চেষ্টা এবং সমূহ পরাজয়। অজ্ঞাতবাস শেষ॥
(৫) উদ্যোগপর্ব
পাণ্ডবদের রাজ্য ফিরে পাবার চেষ্টায় ধৃতরাষ্ট্রের কাছে শান্তিদূত পাঠান। শান্তিদৌত্য ব্যর্থ। কৃষ্ণের শান্তি-প্রস্তাব দুর্যোধন কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত। যুদ্ধের আয়োজন।
(৬) ভীষ্মপর্ব
যুদ্ধ শুরু। অর্জুনের দুর্বলতা। কৃষ্ণের উপদেশ। ভীষ্মের সেনাপতিত্বে ভীষণ যুদ্ধ। শিখণ্ডীর সাহায্যে ভীষ্মের শরশয্যা।
(৭) দ্রোণপর্ব
দ্রোণ সেনাপতি। অভিমন্যু বধ। জয়দ্রথ বধ। ঘটোৎকচ বধ। যুধিষ্ঠিরের মিথ্যাচার। দ্রোণ বধ।
(৮) কর্ণপর্ব।
কর্ণ সেনাপতি। শল্য সারথি। কর্ণ-শল্য বিরোধ। ভীম কর্তৃক দুঃশাসনের বুক চিরে রক্তপান। কর্ণ-বধ।
(৯) শল্যপর্ব
শল্য সেনাপতি। শল্য বধ। দ্বৈপায়ন হ্রদে দুর্যোধনের আত্মগোপন। ভীমের প্রতিজ্ঞা রক্ষা—দুর্যোধনের ঊরুভঙ্গ। বলরামের ক্রোধ।
(১০) সৌপ্তিক পর্ব
অশ্বত্থামা কর্তৃক পাণ্ডব শিবিরে রাতের অন্ধকারে নির্বিচার হত্যা। দুর্যোধনের মৃত্যু। পাণ্ডবদের চরম শোক। ভীম কর্তৃক অশ্বত্থামার মণি হরণ।
(১১) স্ত্রীপর্ব
শোক। মৃতদেহ সৎকার। ধৃতরাষ্ট্র কর্তৃক লোহার ভীমকে চূর্ণ করা। কৃষ্ণকে গান্ধারীর অভিশাপ।
(১২) শান্তিপর্ব
যুধিষ্ঠিরের রাজ্যাভিষেক।
(১৩) অনুশাসনপর্ব
ভীষ্মের উপদেশ এবং ইচ্ছামৃত্যু।
(১৪) অশ্বমেধপর্ব
পাণ্ডবদের অশ্বমেধ যজ্ঞ। অর্জুনের সঙ্গে বভ্রুবাহনের যুদ্ধ।
(১৫) আশ্রমবাসিকপর্ব
ধৃতরাষ্ট্র, গান্ধারী, কুন্তী, বিদুর এবং সঞ্জয়ের বন-গমন। বিদুরের দেহত্যাগ। ধৃতরাষ্ট্র, গান্ধারী এবং কুন্তীর দাবানলে আত্মাহুতি।
(১৬) মুষলপর্ব
যদু-বংশ ধ্বংস। কৃষ্ণ-বলরামের লীলা সংবরুণ।
(১৭) মহাপ্রস্থানপর্ব
দ্রৌপদীসহ পঞ্চ পাণ্ডবের মহাপ্রস্থান। যুধিষ্ঠির ছাড়া অন্য সকলের পতন এবং মৃত্যু।
(১৮) স্বর্গারোহণ পর্ব
যুধিষ্ঠিরের সশরীরে স্বর্গারোহণ এবং সামান্য নরক দর্শনের পর সব আত্মীয়দের সঙ্গে স্বর্গে মিলন।