ভালোবাসি তোমাকেই – ৩

তমসার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের একজন কর্ণেল। নাম লোকমান। তমসার আসল নাম সায়রা বানু। তমসারা তিন বোন এক ভাই। ভাই কাদের সবার বড়। সে একজন ব্রিগেডিয়ার। তমসা সবার ছোট। বড় দু’বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। সবার ছোট বলে তমসা খুব আদরে মানুষ হয়েছে। অন্যান্য ভাইবোনদের চেয়ে সে একটু বেশি উচ্ছৃঙ্খল স্বভাবের। দেখতে অত্যন্ত সুন্দরী। যে কোন পুরুষকে পাগল করার মতো তার ফিগার। কলেজে ঢোকার সাথে সাথে বয়ফ্রেণ্ড জুটতে শুরু করে। বি. এ. পড়ার সময় নয়ন নামে একটা ছেলের সঙ্গে তার মন দেয়া নেয়া হয়। সে কথা তার বাবা ও ভাই জানতে পেরে তমসাকে সাবধান করে দেয়। আর নয়নকেও করে। নয়ন সাধারণ সিভিল ঘরের ছেলে। তমসার বাবা ও ভাইয়ের কথামতো তার সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তমসা ততদিনে নয়নকে গভীরভাবে ভালবেসে ফেলেছে। সে নয়নের পিছু ছাড়ল না। তমসার ভাই সে কথা জানতে পেরে তার কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে বলল, তুই প্রাইভেট পরীক্ষা দিবি। বাবা ও ভাইয়ের কড়াকড়িতে তমসা কলেজে যাওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হল। কিন্তু নয়নের জন্য পাগল হয়ে উঠল। কোনো উপায় না দেখে একদিন গোপনে পালিয়ে এসে নয়নকে বিয়ের প্রস্তাব দিল

নয়ন নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। তার বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। আগের থেকে সে তমসার পরিচয় জানত। তাই তার রূপে পাগল হলেও তাকে এড়িয়ে চলত। নয়ন দেখতে খুব সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান। তমসার তাকে খুব ভালো লাগে। সেই জন্যে সে তার সাথে বন্ধুত্ব করে। সেই বন্ধুত্ব থেকে তমসা তাকে ভালবেসে ফেলে। নয়ন তাকে ভালবাসলেও তা ছিল শুধু তার দেহ ভোগ করার জন্য। কারণ সে জানত তমসাকে পাওয়া স্বপ্ন ছাড়া কিছু নয়। তাই দেহ ভোগ করার জন্য সে তমসার সঙ্গে ভালবাসার অভিনয় করত। তমসা যখন বাসা থেকে পালিয়ে এসে বিয়ের প্রস্তাব দিল তখন নয়ন খুব চিন্তায় পড়ে গেল। ভাবল, তার বাবা ও ভাই এ বিয়ে মেনে নেবে না। তা ছাড়া তমসার মতো মেয়ের উপযুক্ত সে নয়, একথা সে ভালভাবে জানে। তাকে বিয়ে করার ইচ্ছাও নেই। তার দেহ ভোগ করাই নয়নের মুখ্য উদ্দেশ্য। কি করবে না করবে চুপ করে চিন্তা করছিল।

তাকে চুপ করে থাকতে দেখে তমসা বলল, কিছু বলছ না কেন?

নয়ন বলল, তুমি তো আমাদের আর্থিক অবস্থা জান। বাবা মা জানলে রাজি হবে না। আর আমি এই ছাত্র অবস্থায় কি করব কিছু ভেবে ঠিক করতে পারছি না।

তমসা বলল, তোমাকে কিছু ভাবতে হবে না। আমার কাছে বেশ কিছু টাকা আছে। ঢাকায় চলে যাই চল। সেখানে বিয়ের কাজ সেরে ঘরভাড়া করে থাকব। তারপর তুমি চেষ্টা করে একটা চাকরি জোগাড় করতে পারলে আমাদের কোনো অসুবিধে থাকবে না।

তমসার শরীরের দিকে নয়নের প্রচণ্ড টান। তাকে একান্ত করে পাবে ভেবে কোন কিছু চিন্তা না করে সেই দিনই দু’জনে ঢাকায় চলে আসে।

তারপর বিয়ে করে বাসা ভাড়া নিয়ে বেশ কিছুদিন আনন্দে কাটাল। তমসা যা টাকা পয়সা এনেছিল তার সবটাই নয়নের হাতে তুলে দিয়েছিল। সেই টাকা ফুরিয়ে যেতে প্রথমে অর্ধাহার ও পরে অনাহারে দিন কাটাতে লাগল। অনেক চেষ্টা করেও নয়ন একটা চাকরি যোগাড় করতে পারল না।

তমসা বাসা থেকে পালিয়ে আসার সময় একটা চিঠি লিখে রেখে এসেছিল। তাতে লিখেছিল, বাবা, তোমাদের কথা রাখতে না পেরে আমি চলে যাচ্ছি। আমার খোঁজ তোমরা করো না। জানবে আমি মনের গেছি। যদি নয়নের বা তার বাবার বিরুদ্ধে কিছু করে আমাকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা কর, তবে শুধু আমার লাশ পাবে। এ ব্যাপারে নয়নের বাবা কিছু জানে না। আর নয়ন ও নির্দোষ। আমার জন্য তাদের কারুর পিছনে লেগো না। নয়নকে আমি ভালবাসি। তাকে ছাড়া বাঁচতে পারব না। তাই তোমাদের শত নিষেধ সত্বেও চলে গেলাম। পারলে এই অবাধ্য মেয়েকে ক্ষমা করো।

ইতি

তোমাদের অবাধ্য মেয়ে সায়রা।

.

চিঠি পেয়ে তমসার ভাই আইনের আশ্রয় নিয়ে তাকে খুঁজে বের করতে চেয়েছিল এবং নয়নকেও কঠোর শাস্তি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার বাবা কর্ণেল লোকমান তাতে বাধা দিয়ে বলেছেন, যা হবার হয়েছে। ওর ভাগ্যে যা আছে তা হবেই। শুধু হৈ চৈ করে কোনো লাভ নেই। তাতে করে আমাদের মান ইজ্জৎ আরো ডুবে যাবে।

এদিকে নয়ন চাকরি না পেয়ে খুব মুষড়ে পড়ল। ভাড়া চারমাসের বাকি পড়তে বাড়িওয়ালা নোটিশ দিল। উপোষ থাকতে থাকতে তমসারও মেজাজ বিগড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিন নয়নের সাথে ঝগড়া করে। এই মহল্লায় শামসের নামে এক গুণ্ডা ছিল। ঘটনা ক্রমে নয়নের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। শামসের তার পরিচয় ও আর্থিক অবস্থা জানতে পেরে দু’টো ছাত্রকে পড়াবার ব্যবস্থা করে দেয়। কিন্তু তাতে কি আর চলে? বাসাভাড়া দেবে না খাবে? শামসের বাড়িওয়ালাকে বলে বাসা ভাড়ার টাকা জিম্মা হয়ে নয়নকে বেবীট্যাক্সী চালান শিখাল। তারপর একটা ভাড়া বেবীট্যাক্সী ঠিক করে দিল। তাতে করে নয়নের একরকম ভালোভাবে চলে যেতে লাগল।

এর মধ্যে বন্ধুত্বের সুযোগে শামসের তমসাকে দেখে লোভ সামলাতে পারল না। নয়ন গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর প্রায় প্রতিদিন নয়নের বাসায় এসে তমসার সঙ্গে ভাব করার চেষ্টা করতে লাগল। আসার সময় সংসারের প্রয়োজনীয় এটা সেটা নিয়ে আসে।

তমসা শামসেরকে স্বামীর উপকারী বন্ধু হিসাবে প্রথম দিকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করত। কিন্তু কিছুদিন পর যখন শামসের তার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল, ভাবি, আপনি অত্যন্ত সুন্দরী। আপনার চেহারাও দারুন। এই বস্তিতে আপনাকে মানায় না। আপনি ইচ্ছা করলে প্রাসাদে বাস করতে পারেন।

তখন তমসা তার স্বামীর উপকারী বন্ধুর আসল রূপ বুঝতে পারল। বলল, ছোটবেলা থেকে রূপের কথা শুনে শুনে কান ঝালাপালা হয়ে গেছে। ওসব কথা আর কোনোদিন বলবেন না। একটা কথা না বলে থাকতে পারছি না, আপনার বন্ধুর অনুপস্থিতিতে আপনি আসবেন না।

কথাটা শুনে শামসের মনে মনে রেগে গেল। কিন্তু তা বাইরে প্রকাশ না করে ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে বলল, কেন? এলে কোনো ক্ষতি আছে?

তমসা বলল, ক্ষতি আছে কি না বলব না, তবে না এলে আমি খুশী হব।

শামসের ভিতরে ভিতরে আরো রেগে গিয়ে বলল, আপনি যখন নিষেধ করছেন তখন আর আসব না।

এরপর সে আসা বন্ধ করল বটে, কিন্তু কিভাবে তমসাকে ভোগ করা যায়, তা চিন্তা করতে লাগল।

কয়েকদিন থেকে নয়নের শরীরে জ্বর। বেবীট্যাক্সী নিয়ে বেরোয় নি। একদিন তমসাকে জিজ্ঞেস করল, শামসের ভাইয়ের খবর জান?

তমসা বলল, তার খবর আমি জানব কেমন করে। তোমার বন্ধু, তুমি খবর রাখ নি?

নয়ন বলল, আমার সঙ্গে বেশ কিছুদিন দেখা হয় নি। আমার সময় কোথায় যে খোঁজ নেব। সেই তো মাঝে মাঝে আমার কাছে আসে।

এমন সময় শামসেরের গলা শোনা গেল, নয়ন ভাই বাসায় আছেন নাকি?

নয়ন বলল, হ্যাঁ আছি; ভিতরে আসুন। শামসের ভিতরে আসার পর বলল, আপনি অনেক দিন বাঁচবেন। এক্ষুনি আপনার ভাবির সঙ্গে আপনার কথা হচ্ছিল।

শামসের হাসিমুখে বলল, তাই নাকি? আমার সৌভাগ্য বলতে হয়। শুনলাম জ্বর হয়েছে। কয়েকদিন বেবীট্যাক্সী নিয়ে বেরোন নি। তা এখন কেমন আছেন?

নয়ন বলল, আগের থেকে ভালো। আপনি যে আমাদের বাসায় আসা ছেড়ে দিয়েছেন।

শামসের একবার তমসার দিকে তাকিয়ে নিয়ে বলল, ক’দিন ছিলাম না। এসে আপনার অসুখের কথা শুনে দেখতে এলাম।

ততক্ষণে তমসা স্টোভ জ্বেলে দু’কাপ চা তৈরি করে তাদের সামনে দিল।

শামসের তমসাকে জিজ্ঞেস করল, ভাবি, কেমন আছেন?

তমসা শুধু ভালো বলে ডিবে থেকে চার পাঁচটা বিস্কুট বের করে একটা পিরীচে দিয়ে বলল, নিন, চা বিস্কুট খান।

শামসের চা খেয়ে বিদায় নিয়ে চলে গেল।

দু’দিন পর নয়ন গাড়ি নিয়ে বেরল।

তমসা দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল! কেউ যেন তার বুকের কাপড় সরাচ্ছে বুঝতে পেরে চেয়ে শামসেরকে দেখে চমকে উঠে চৌকি থেকে নেমে রাগের সাথে বলল, এ সময় কেন এসেছেন? একটা ঘুমন্ত মেয়ের ঘরে ঢুকে তার গায়ে হাত দিতে লজ্জা করল না? যান বেরিয়ে যান।

শামসের একটা ধারাল ছুরী বের করে তার শ্বাসনালীতে ঠেকিয়ে বলল, চেঁচামেচি করলে চালিয়ে দেব। কচি খুকী, কেন এসেছি জান না? শামসের যে মেয়ের দিকে একবার চোখ ফেলে, তাকে ভোগ না করে ছাড়ে না। কথা শেষ করে তমসাকে জোর করে শুইয়ে দিয়ে ইজ্জৎহানীর চেষ্টার করল।

তমসার গলায় শামসের একহাতে ছুরী ঠেকিয়ে রেখে অন্য হাতে তাকে বিবস্ত্র করছে। তমসা শুধু তাকে দু’হাত দিয়ে বাধা দিচ্ছে। ভয়ে চিৎকার করতে পারছে না।

দুপুরের দিকে নয়নের জ্বর বাড়তে থাকলে সে বাসায় ফিরে আসতে লাগল। যখন শামসের তমসাকে বিবস্ত্র করে উপগত হবার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঠিক তখন নয়ন বাসায় ঢুকল।

এমনি নয়নের জ্বর প্রায় চার পাঁচের মত উঠেছে, তার উপর বাসায় ঢুকে তাদেরকে ঐ অবস্থায় দেখে তার মাথা খারাপ হয়ে গেল। এদিক ওদিক তাকিয়ে আনাজকাটা বঁটি দেখতে পেয়ে সেটা নিয়ে তাদের দিকে এগিয়ে এল।

নয়নকে শামসের দেখতে পায়নি। তমসা পেয়ে চিৎকার করে বলল, নয়ন, তুমি এই শয়তানটার হাত থেকে আমাকে বাঁচাও। তমসার কথায় শামসের বুঝতে পারল, নয়ন ফিরে এসেছে। তাই তাড়াতাড়ি তমসাকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়াতে গেল। ততক্ষণে নয়ন এগিয়ে এসে শামসেরের গর্দানে কোপ মারল। নতুন ধারাল বঁটির কোপে শামসেরের মাথা ধড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ধড়টা লাফাতে লাগল, আর রক্তে বিছানা ও ঘরের মেঝে ভেসে যেতে লাগল।

শামসেরের অবস্থা দেখে তমসা প্রথমে হতবাক হয়ে যায়। পরক্ষণে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বলল, যা করেছ ঠিক করেছ। শয়তানটা আমাকে একা পেয়ে আমার ইজ্জৎ লুটতে চেয়েছিল।

নয়নের তখন হিতাহিত জ্ঞান নেই। বলল, মাগী তুইও নষ্টা। তা না হলে ওর কি সাধ্য তোর ইজ্জৎ লুটার। আজ তোকেও শেষ করে দেব। এই বলে তাকেও উম্মাদের মতো কোপ মারতে উদ্যত হল।

তমসা ততক্ষণে শাড়িটা কোনো রকমে গায়ে জড়িয়ে নিয়েছে। নয়নকে বঁটির কোপ তুলতে দেখে ও তার কথা শুনে ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে পালাবার সময় বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে লাগল।

নয়নও তার পিছু পিছু বঁটি উচিয়ে ছুটল।

তমসার চিৎকারে আশপাশের ও মহল্লার লোকজন বেরিয়ে এল। তারা রক্তাক্ত বঁটি হাতে নয়নকে তমসার পিছনে ছুটতে দেখে তাকে ধরার চেষ্টা করল। শামসেরের সহযোগী ফেলু পিছন থেকে নয়নকে ধরে ফেলল। সেই সঙ্গে অন্যান্য লোকেরা তার হাত থেকে বঁটি কেড়ে নিয়ে যখন বেঁধে ফেলল তখন নয়ন অজ্ঞান হয়ে গেছে। সবাই শামসেরের অবস্থা দেখে ঘটনাটা বুঝতে পারল। তারা শামসেরের স্বভাব চরিত্র জানে। তাই কোনো উচ্চবাচ্য না করে থানায় খবর পাঠাল।

ফেলু শামসেরের সঙ্গে মাঝে মাঝে নয়নের বাসায় এসেছে। তমসাকে দেখে সেও তাকে ভোগ করার জন্য লালায়িত। কিন্তু ওস্তাদকে সেদিকে ঝুঁকতে দেখে মনের কামনা মনে চেপে রেখেছিল। এখন ওস্তাদের অবস্থা দেখে এক ফাঁকে তমসাকে আড়ালে নিয়ে এসে বলল, আর একদন্ড এখানে তোমার থাকা ঠিক নয়। পুলিশ তোমাকেও ছেড়ে কথা বলবে না। নয়নের ফাঁসি হবেই। আর সেই সঙ্গে তোমার ফাঁসি না হলেও হয় যাবজ্জীবন জেল হবে নচেৎ দ্বীপান্তর হবে। যদি বাঁচতে চাও, তা হলে আমার সঙ্গে পালিয়ে চল।

ফেলুকে তমসা শামসেরের বন্ধু বলে জানে। সেও যে খারাপ লোক তাতে তার সন্দেহ নেই। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে তার কথা বিশ্বাস না করেও পারল না। একরকম বাধ্য হয়ে তার সঙ্গে যেতে রাজি হল।

ফেলু তাকে নিয়ে যশোরে চলে গেল।

এদিকে নয়ন সেই যে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল, পুলিশ প্রহরায় হাতপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরও জ্ঞান ফিরেনি। তিন দিনের দিন মারা গেল।

ফেলু যশোরে এসে তমসাকে নিয়ে আত্মগোপন করে রইল। তমসা অনেক চিন্তা ভাবনা করে নিজেকে ফেলুর হাতে সঁপে দিল। ফেলু যখন শামসেরের সঙ্গে নয়নের বাসায় যেত তখন থেকে তমসাকে ভোগ করার জন্য পাগল হয়েছিল। এখন তাকে একান্ত করে পেয়ে মনের সুখ মেটাতে লাগল। তমসা কিছুদিন পর থেকে বিয়ের জন্য তাগিদ দিতে লাগল। ফেলু জানে তমসা সুন্দরী ও শিক্ষিতা বেকায়দায় পড়ে বিয়ের কথা বলছে। সুযোগ পেলে কেটে পড়বে। তাই ভাবল, এই মেয়েকে নিয়ে কিছুদিন ফূর্তি করা গেলেও বিয়ে করা চলবে না। তমসা বিয়ের তাগিদ দিলে নানান রকম টালবাহানা করে ভোগ করে চলল।

ছয় সাত মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও ফেলুকে টালবাহানা করতে দেখে তমসা তার মনের উদ্দেশ্য বুঝতে পারল। একদিন বিয়ের কথা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বেশ ঝগড়া হল। এরপর থেকে বেশ মনোমালিন্য চলতে লাগল। তমসা ফেলুর বিছানা ছেড়ে দিল। শেষে ফেলু যখন বুঝতে পারল, তমসাকে বিয়ে না করলে তাকে ভোগ করা যাবে না। তখন একটা বুদ্ধি এঁটে তাকে বিয়ে করার কথা বলে ঢাকায় নিয়ে এল। ঢাকায় এসে বাসা ভাড়া নিল। তারপর বিষিদ্ধ পল্লীর একজন সর্দারণীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তমসাকে তার কাছে বিক্রি করে মোটা টাকা কামাবার ষড়যন্ত্র করল। তার সঙ্গে কথা হল, সেখানে লোক দেখান তাদের বিয়ে হবে। বিয়ের পরের দিন ফেলু তমসাকে রেখে চলে যাবে। ঢাকায় আসার দু’দিন পর সেই সর্দারনী খালার সঙ্গে কথা বার্তা পাকা করে এসে তমসাকে বলল, আমার দূর সম্পর্কের এক খালা এখানে থাকে। সে যে এখানে থাকে আমি জানতাম না। হঠাৎ আজ তার সঙ্গে দেখা। সব কিছু শুনে তোমাকে তার বাসায় নিয়ে যেতে বলল। খালা আমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করবে। বিয়ে না করে এতদিন একসঙ্গে রয়েছি জেনে খুব রাগারাগি করল। তৈরি হয়ে নাও, এখনই সেখানে যাব।

তমসা শুনে খুশী মনে কাপড় চোপড় গুছিয়ে নিয়ে ফেলুর সঙ্গে তার খালার বাসায় উঠল। ঐ দিন রাতেই খালা তাদের বিয়ে দিয়ে দিল। ঝগড়া ঝাঁটির ফলে বেশ কিছুদিন তাদের দৈহিক মিলন হয়নি। বিয়ের রাতে দু’জনে অনেক ফূর্তি আমোদ করল। সকালে নাস্তা খেয়ে ফেলু খালার কাছ থেকে চুক্তি মোতাবেক টাকা নিয়ে তমসাকে বলল, খালার কোনো ছেলেমেয়ে নেই। আমাদের পেয়ে খুব খুশী হয়েছে। আমাকে বলল, তুই বৌমাকে নিয়ে আমার কাছেই থাক। তোকে টাকা দিচ্ছি কিছু ব্যবসা-পাতি কর। সে ব্যাপারে একটু বাইরে যাচ্ছি।

তমসা খালার মেকী ব্যবহারে ও কথাবার্তায় খুব খুশী হয়েছে। যৌবনে পদার্পণ করার পর থেকে তার স্বপ্ন ছিল, স্বামী বড় চাকরি অথবা ব্যবসা করবে। সংসারে দেওর ননদ কেউ থাকবে না। সংসার দেখাশুনা করার জন্য শুধু শাশুড়ী থাকবে। আর সে স্বামীকে নিয়ে নানা জায়গা ঘুরে বেড়িয়ে আনন্দ ফূর্তি করবে। নয়নকে বিয়ে করে সে স্বপ্ন সফল হয়নি। বরং দারিদ্রের নিপীড়নে জর্জরিত হয়েছে। আজ ফেলুর কথা শুনে সেই স্বপ্ন সফল হতে যাচ্ছে দেখে আনন্দে তাকে জড়িয়ে ধরে আদর দিতে দিতে বলল, এতদিনে আল্লাহ আমার আশা পূরণ করবে।

তমসাকে এভাবে রেখে চলে যেতে ফেলুর বুকটা একবার কেঁপে উঠল। বিয়ের তাগিদে ঝগড়া ঝাঁটি হয়ে তার মন বিষিয়ে উঠলেও এতদিন একসাথে থেকে সুন্দরী তমসাকে চিরদিনের জন্য ছেড়ে চলে যেতে তার মনটা খারাপ হয়ে গেল। পরক্ষণে বিরাট অংকের টাকার কথা ভেবে সামলে নিল। আদরের প্রতিদান দিয়ে দেশের পথে রওয়ানা দিল।

হতভাগী তমসা জানতে পারল না, এতদিন অশান্তিতে দিন কাটলেও বিয়ের মাধ্যমে অশান্তির সাগরে প্রবেশ করল। সারাদিন অপেক্ষা করে রাত হয়ে যেতেও যখন ফেলু ফিরল না তখন খালাকে সেকথা জানাল।

খালা তখন তার আসল রূপ ধারণ করে বলল, এক ফেলু গেছে তো কি হয়েছে, আজ থেকে দিনে রাতে কত ফেলু তোমার ঘরে আসবে। সে তোমাকে অনেক টাকার বিনিময়ে আমার কাছে বেচে দিয়ে চলে গেছে। আর কখনও আসবে না।

তমসা বলল, আমি আপনার কথা বিশ্বাস করি না। সে আমাকে বিয়ে করেছে। বিয়ে করা স্ত্রীকে কেউ কি বেচতে পারে? না ফেলে রেখে যেতে পারে?

খালা কর্কশস্বরে বলল, শোন মেয়ে, ফেলু তোমাকে বিয়ে করেনি, বিয়েটা ছিল সাজানো ব্যাপার। এখানে বিক্রি করার কৌশল মাত্র। যাক, যা হবার হয়েছে, তোমাকে কিনতে আমার অনেক টাকা গেছে। তোমার রূপ যৌবন আছে। বড় বড় ধনীঘরের লোকজন সেই রূপ যৌবন ভোগ করতে আসবে। তুমি তাদেরকে ঐসব অস্ত্র দিয়ে, ঘায়েল করে মোটা টাকা কামাবার চেষ্টা করবে। যদি তা না কর, তা হলে তোমাকে অকথ্য অত্যাচার সহ্য করতে হবে। তাতেও কাজ না হলে যা শাস্তি দেয়া হবে, তা শুনলে তুমি আঁৎকে উঠবে।

খালার কথা শুনে তমসার মাথায় যেন বিনা মেঘে বজ্রাঘাত পড়ল। নিজের রুমে ফিরে এসে বিছানায় শুয়ে ফুলে ফুলে কাঁদতে কাঁদতে চিন্তা করল, জান দেব তবু খালার কথা মানব না। কঠোরভাবে সেই প্রতিজ্ঞা করে দরজা লাগিয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে শুয়ে পড়ল।

কিছুক্ষণ পরে খালা খদ্দের নিয়ে এসে অনেক ডাকাডাকি করেও দরজা খোলাতে পারল না। পরের দিন থেকে শুরু হল নির্মম অত্যাচার। তমসা দিনের পর দিন সেই অত্যাচার সহ্য করে চলল, তবু খালার কথা মানল না। সেই সঙ্গে তার মনের পরিবর্তন হল। কেবল মনে হতে লাগল, বাবা ও ভাইয়ের কথা মতো চললে এই পরিণতি হত না। এই পাপপূরী থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে দীলে দীলে ফরিয়াদ জানাতে লাগল। কিন্তু মানুষকে তার কর্মফল ভোগ করতেই হয়। কতদিন আর অত্যাচার সহ্য করবে। শেষে সেখানকার ফরিদা নামে একটা মেয়ের বোঝানোর ফলে বাধ্য হয়ে খালার কথা মেনে নিল। এর কিছুদিন পর মজাহার তার কাছে আসে।

.

মজাহার আজ এজাজের অফিসে গিয়ে সাহেবের সঙ্গে কথা বলে তমসার কাছে এল।

তমসা বলল, কি ব্যাপার এতদিন আসনি কেন? তোমাকে যেন খুব চিন্তিত দেখাচ্ছে।

মজাহার বলল, বলব সবকিছু বলব।

তমসা চৌকির নিচে থেকে একটা টুল টেনে বের করে বসতে বলল। মজাহার বসার পর বলল, বল, কি বলবে।

মজাহার বিদেশ যাওয়ার কথা চেপে গিয়ে বলল, চাকরি তো কপালে জুটল না। তাই ব্যবসা করার কথা চিন্তা করে দেশে গিয়ে বাবার কাছ থেকে কিছু নিয়ে এলাম। কিন্তু সেই টাকায় ব্যবসায় নামা যাচ্ছে না। আরো বেশ কিছু টাকার দরকার। বন্ধুদের কাছে অনেক ছুটাছুটি করলাম, কিন্তু তারা কেউ সাহায্য করল না। শেষে তোমার কাছে এলাম। তুমি যদি আমাকে সাহায্য কর, তা হলে তোমাকে নিয়ে ভবিষ্যৎ জীবনের যে স্বপ্ন দেখেছি তা পূরণ হবে।

তমসা চোখের পানি ফেলতে ফেলতে বলল, তুমি তো আমার অবস্থা জান। আমি তোমাকে টাকা দেব কোথা থেকে।

মজাহার তার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল, সে কথা আমি জানি। তবে তুমি আমার কথা মতো কাজ করলে টাকা জোগাড় হয়ে যাবে।

তমসা বলল, বেশ, বল কি করতে হবে। তোমার জন্য সব কিছু করতে পারব।

মজাহার তন্ময়ের সব কথা বলে বলল, এই কাজটা তুমি চালাকির সঙ্গে করবে। তার মা সুস্থ হয়ে গেলে তোমাকে এখানে আর ফিরে আসতে দেব না, বিয়ে করে একেবারে বাসায় তুলব।

তমসা মনে মনে খুশী হলেও আতঙ্কিত স্বরে বলল, কিন্তু সর্দারনী খালাম্মা ছাড়বে কেন?

মজাহার বলল, সে কথা তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি তার সাথে বোঝাপড়া করব। খালাম্মাকে একটু ডেকে নিয়ে এস। এখন তোমার সামনে তার সাথে কিছু কথা বলব। আজ রাত আটটা-নটার সময় তোমাকে সেই সাহেবের কাছে নিয়ে যাব। কোনো দুশ্চিন্তা করো না। সাহেব খুব ধনী। খুব ভদ্র বলেও মনে হল। আমাকে কথা দিয়েছে, তোমার কোনো অসম্মান করবে না।

তমসা আনন্দে মজাহারকে জড়িয়ে ধরে কয়েকটা চুমো দিয়ে বলল, সত্যি বলছ? এ যে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।

মজাহার বলল, হ্যাঁ সত্যি। যাও খালাকে ডেকে নিয়ে এস।

তমসা খালাকে ডাকার জন্য গেল। খালা তমসার কাছে অনেক আগে মজাহারের পরিচয় শুনেছে। সে ভার্সিটির ছাত্র জেনে একটু খাতির করে। কারণ খালা জানে ছাত্রদের ঘাঁটালে কখন কোন দিক থেকে বিপদ আসবে তার ঠিক নেই।

তমসার সাথে এসে বলল, কি ভাগনা খালাকে তবল কেন?

মজাহার খালার হাতে বেশ কিছু টাকা দিয়ে বলল, তমসাকে মাসখানেকের জন্য আজই নিয়ে যাব। যদি দেরি হয়, তা হলে ফিরে এসে পুষিয়ে দেব।

খালা টাকাগুলো গুণে দেখল, তমসা একমাসে যা রোজগার করে তার চেয়ে অনেক বেশি। খুশী হয়ে বলল, বেশ নিয়ে যাও। তবে ওকে নিয়ে পালাবার চেষ্টা করো না। করলে বিপদে পড়বে।

মজাহার বলল, খালাম্মা কি যে বলেন। পালাব কেন? আর যখন ওকে একেবারে নিয়ে যাব তখন হিসেব নিকেশ চুকিয়েই নিয়ে যাব।

খালা বলল, বেশ কথার যেন নড়চড় না হয়। তারপর তমসাকে বলল, তুমিও ফাঁকি দেয়ার মতলব করো না। করলে তার পরিণামের কথা চিন্তা করে করো।

তমসার হয়ে মজাহার বলল, খালাম্মা, আপনি আমাকে বিশ্বাস করুন, আমি কখনও কথা নড়চড় করব না।

খালা বলল, ঠিক আছে, নিয়ে যাও। তারপর চলে গেল।

খালা চলে যাওয়ার পর মজাহার তমসাকে আর একবার সাহেবের ও তার মায়ের সঙ্গে কি রকম ব্যবহার করবে বুঝিয়ে দিল। তারপর বলল, তোমাকে আমার চাচাতো বোন বলে পরিচয় দিয়েছি। ওদের সামনে আমার সঙ্গে সেই রকম ব্যবহার করবে। এর মধ্যে খালার সঙ্গে তোমাকে বিয়ে করার কথা বলে টাকা পয়সার হিসেব নিকেশ মিটিয়ে ফেলব।

ঐদিন রাত নটার সময় মজাহার তমসাকে নিয়ে নির্দিষ্ট হোটেলে পৌঁছে তাকে রিসেপসানে বসিয়ে তন্ময়ের সাথে দেখা করল।

তন্ময় বাকি টাকাটা নগদ তার হাতে দিয়ে বলল, আপনিও আমাদের বাসায় যাবেন। আপনাকে সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব। এখন আপনার বোনকে এখানে নিয়ে এসে কিছুক্ষণ বাইরে অপেক্ষা করবেন। আমি তাকে সম্পূর্ণ ব্যাপারটা বুঝিয়ে বলব।

মজাহার রিসেপসানে এসে তমসাকে নিয়ে তন্ময়ের রুমের কাছে গিয়ে বলল, তুমি ভিতরে যাও, আমি বারান্দায় অপেক্ষা করছি।

তসমা রুমে ঢুকে তন্ময়কে দেখে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইল। তার মনে হল, সাহেব যেন স্বপনপুরের রাজপুত্র। একে যে মেয়ে পাবে, তার জীবন ধন্য হয়ে যাবে।

তন্ময়ও তমসাকে দেখে খুব অবাক হল। সত্যিই মেয়েটা অত্যন্ত সুন্দরী। কয়েক সেকেন্ড কেউ কোনো কথা বলতে পারল না।

প্রথমে তন্ময় সামলে নিয়ে বলল, দাঁড়িয়ে কেন বসুন।

তমসা দৃষ্টি ফিরিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে চেয়ারের কাছে গিয়ে বসল।

তন্ময় জিজ্ঞেস করল, আপনার নাম?

মজাহার আসবার সময় তমসাকে শিখিয়ে দিয়েছিল, আজ থেকে তোমার নাম তামান্না। সে কথা ভুলে গিয়ে বলল, তমসা।

তন্ময় বলল, আপনার ভাই তো বললেন, আপনার নাম তামান্না। তমসা ভুলটা শুধবার জন্য বলল, ওটা আমার আসল নাম। আর এটা ডাক নাম।

তন্ময় বলল, আপনার সুন্দর চেহারার সঙ্গে তমসা নামটা খাপ খায় না।

তমসা নামের অর্থটা জানে। তবু জিজ্ঞেস করল, কেন বলুন তো?

আপনি শিক্ষিত। তবু যখন জানতে চাচ্ছেন তখন না বলে পারছি না। তমসা মানে অন্ধকার। তামান্না নামটা খুব সুন্দর।

অর্থটা বলবেন?

আকাঙ্খিতা। আমি আপনাকে তামান্না বলেই ডাকব।

বেশ তো তাই ডাকবেন।

এবার আপনাকে কয়েকটা কথা বলছি মন দিয়ে শুনুন। আপনার ভাই হয়তো আমার ও আমার মায়ের কথা বলেছে। তবু সমস্ত ঘটনাটা আপনার জানা দরকার। তারপর সবকিছু বুঝিয়ে বলে বলল, আশা করি, আমার কথাগুলো বুঝতে পেরেছেন?

তমসা চেয়ারে বসার পর থেকে তন্ময়ের মুখের দিকে তাকিয়েছিল। বুঝতে পারল, লোকটা খুব সৎ। তার চাহনির মধ্যে এতটুকু লোলুপতা নেই। তার কথা শুনে বলল, জি পেরেছি। আশা করি, সবকিছু ম্যানেজ করতে পারব।

তন্ময় যদিও মজাহারের কাছে শুনেছিল, তামান্না বি. এ. পাস। তবু শিওর হওয়ার জন্য জিজ্ঞেস করল, কিছু মনে করবেন না, আপনি কতদূর লেখাপড়া করেছেন বলবেন?

বি. এ. ফাইনাল ইয়ারে পড়তে পড়তে ছেড়ে দিয়েছি।

তন্ময় একটা ছোট চামড়ার সুটকেস দেখিয়ে বলল, ওতে বিয়ের পোষাক ও প্রসাধন সামগ্রি এবং ব্যবহারের জন্য জামা কাপড় আছে। কিছু সোনার অলংকারও আছে। আপনি বিয়ের পোষাক ও অলংকারগুলো পরে তৈরি হয়ে নিন। আমি বারান্দায় অপেক্ষা করছি। ঠিক আধঘণ্টা পর এসে নিয়ে যাব। কথা শেষ করে বেরিয়ে এল।

তন্ময় বেরিয়ে যাওয়ার পর তামান্না ড্রেস চেঞ্জ করার সময় চিন্তা করল, সাহেব বলল, “তার মা ভালো হয়ে যাওয়ার পর ধুমধাম করে তাকে বিয়ে করে ঘরে তুলবে। এখন মাকে বলবে, তাড়াহুড়ো করে কাজি অফিসে কাবিন করে নিয়ে এসেছে। একথা মজাহার তাকে বলল না কেন? সাহেবের মুখে বিয়ের কথা শুনে তমসার বুকটা ধক করে উঠেছিল। তার মতো পাপীর কি এত সৌভাগ্য হবে? মজাহার যে তাকে গ্রহণ করতে চাচ্ছে এটাই তার সৌভাগ্য। ভাগ্যে যা আছে হবে ভেবে সে ড্রেসিং টেবিলের কাছে বসে প্রসাধন শেষ করে দরজা খুলল।

তন্ময় এতক্ষণ বারান্দায় মজাহারের সঙ্গে কথা বলছিল আর মাঝে মাঝে রুমের দরজার দিকে তাকিয়ে দেখছিল। তামান্নাকে দরজা খুলতে দেখে বলল, তামান্না রেডী হয়ে গেছে; চলুন রুম থেকে সবকিছু নিয়ে আসি।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *