ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

এজেকিয়েল ১১

১ তারপর আত্মা আমাকে প্রভুর মন্দিরের পূর্বদিকের দরজায বয়ে নিয়ে গেল। এই দরজার মুখ পূর্বদিকে যেদিকে সূর্য় ওঠে সেই দরজার মুখে আমি ২৫ জন পুরুষ দেখতে পেলাম। অসূরের পুত্র যাসনিয় এই সব লোকদের সঙ্গে ছিল। বনায়ের পুত্র প্রটিয সেখানে ছিল। এই দুই জন ছিল লোকদের অধ্যক্ষ।
২ তখন ঈশ্বর আমায় বললেন, “মনুষ্যসন্তান, এরাই সেই লোক যারা এই শহরের মধ্যে মন্দ পরিকল্পনাগুলি করছে। তারা সব সময়েই লোকদের মন্দ কাজ করতে বলে।
৩ এই লোকেরা বলে, ‘আমরা খুব শীঘ্রই আমাদের বাড়ীঘর বানাব। আমরা হলাম রান্নার হাঁড়ির ভেতর মাংসের মতন।’
৪ তাই তুমি অবশ্যই আমার হয়ে লোকেদের কাছে বলবে। মনুষ্যসন্তান, যাও লোকেদের কাছে গিয়ে ভাব্বাণী কর।”
৫ তখন প্রভুর আত্মা আমার কাছে এল। তিনি আমায় বললেন, “তাদের বল প্রভু এই কথাগুলি বলেছেন: ইস্রায়েলের গৃহ, তুমি বড় বড় পরিকল্পনা করছ। কিন্তু আমি জানি তুমি কি চিন্তা করছ।
৬ এই শহরে তুমি অনেক লোক হত্যা করেছ। শহরের রাস্তা মৃতদেহে ভরিয়ে দিয়েছ।
৭ এখন প্রভু আমার সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘ঐ মৃতদেহরা মাংস আর শহরটা পাত্র। কিন্তু নবূখদ্নিত্‌সর তোমাদের এর মধ্যে থেকে বের করে আনা হবে!
৮ তোমরা তরবারির ভয়ে ভীত। কিন্তু আমি আর কারো নয়, শুধু তোমার বিরুদ্ধেই তরবারিটি আনছি।”‘ প্রভু, আমাদের সদাপ্রভু এই কথাগুলি বলেছেন।
৯ ঈশ্বর আরও বললেন, “আমি তোমাদের শহরের বাইরে নিয়ে যাব। আর বিদেশীদের হাতে তুলে দেব। আমি তোমাদের শাস্তি দেব!”
১০ তোমরা তরবারির ঘাযে মারা যাবে। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতে তোমাদের শাস্তি দেব, যেন তোমরা জান যে আমিই তোমাদের শাস্তি দিচ্ছি, আমিই প্রভু।
১১ হ্যাঁ, এই জায়গা রান্নার পাত্র হয়ে উঠবে না। আর তোমরা তার মধ্যে পাক করা মাংস হবে না। আমি এই ইস্রায়েলের সীমাতেই তোমাদের শাস্তি দেব।
১২ তখন তোমরা জানবে যে আমিই প্রভু। আমার আজ্ঞা তোমরা লঙঘন করেছিলে। তোমরা আমার পথ অনুসরণ করনি। পরিবর্ত্তে, তোমরা তোমাদের চার দিকের জাতিদের পথই অনুসরণ করেছিলে!”
১৩ আমি যেই ঈশ্বরের কথা বলা শেষ করলাম, বনায়ের পুত্র প্লটিয মারা গেল। আমি মাটিতে পড়ে গেলাম। উপুড় হয়ে মাটিতে মুখ ঠেকিযে জোরে কেঁদে উঠে আমি বললাম, “হে প্রভু, আমার সদাপ্রভু, আপনি কি অবশিষ্ট ইস্রায়েলীয়দের সবাইকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবেন?”
১৪ কিন্তু তখন প্রভুর বাক্য আমার কাছে এল। তিনি বললেন,
১৫ “মনুষ্যসন্তান, ইস্রায়েলের পরিবারগুলি অর্থাত্‌ তোমার ভাযেদের, যারা ইস্রায়েল দেশটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল তাদের স্মরণ কর। কিন্তু এখন জেরুশালেমের অধিবাসীরা বলছে, ‘প্রভুর কাছ থেকে তারা বহু দূরে চলে গিয়েছিল। এই দেশ আমাদের দেওয়া হয়েছিল- এটা আমাদেরই!’
১৬ “তাই ঐ লোকদের এই বিষয়গুলি বল: প্রভু আমার সদাপ্রভু বলেন, ‘এটা সত্য যে আমি আমার প্রজাদের দূরের দেশে যেতে বাধ্য করেছিলাম। আমিই তাদের বহু দেশে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অল্প সময়ের জন্য ঐসব দেশে আমিই তাদের মন্দির হব।
১৭ কিন্তু তুমি ঐসব লোকদের অবশ্যই বলবে যে প্রভু আমার সদাপ্রভু তাদের ফিরিয়ে আনবেন। আমি তোমাদের বহু জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু আমি তোমাদের আবার এক জায়গায় সংগ্রহ করব এবং ঐসব জাতির মধ্যে থেকে ফিরিয়ে আনব। ইস্রায়েলের ভূমি আবার তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব!
১৮ আর আমার প্রজারা ফিরে এলে তারা এখানে এখন যে সব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তি রয়েছে সে সব ধ্বংস করবে।
১৯ আমি তাদের একত্র করব। আমি তাদের নতুন আত্মা দেব। আমি তাদের পাথরের হৃদয় সরিয়ে সেখানে প্রকৃত হৃদয় স্থাপন করব।
২০ তখন তারা আমার বিধিগুলি পালন করবে। তারা আমার আজ্ঞাগুলি পালন করবে। আমি তাদের যা বলব তারা তাই করবে। তারা প্রকৃতই আমার লোক হবে, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।”‘
২১ তখন ঈশ্বর বললেন, “কিন্তু এখন তাদের মন অধিকার করে আছে ঐসব ভয়ঙ্কর নোংরা মূর্ত্তিরা। আর ঐ লোকরা যে মন্দ কাজ করেছে তার জন্য অবশ্যই আমি তাদের শাস্তি দেব।” প্রভু আমার সদাপ্রভুই ঐসব কথা বলেছেন।
২২ তারপর করূব দূতরা তাদের ডানা ওঠাল আর আকাশে উড়ে গেল। চাকাগুলিও তাদের সঙ্গে গেল। আর ইস্রায়েলের ঈশ্বরের মহিমা তাদের ওপরে ছিল।
২৩ পরে প্রভুর মহিমা নগরের মাঝখান থেকে উঠে গিয়ে নগরের পূর্বদিকে পাহাড়ের ওপরে গিয়ে থেমে গেল।
২৪ তারপর আত্মাটি আমায় তুলে নিয়ে আবার বাবিলনে সেই সব লোকদের কাছে, যারা ইস্রায়েল ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, সেখানে ফিরিয়ে আনল। আমি ঐসব ঈশ্বরীয দর্শনে দেখলাম। তারপর যাকে আমি আমার দর্শনে দেখেছিলাম তিনি শূন্যে উঠে চলে গেলেন।
২৫ তখন আমি নির্বাসনে যারা ছিলেন তাদের কাছে প্রভু আমায় যা যা দেখিয়েছিলেন তা বললাম।