2 of 2

৫২. উবায়দা ইবন হারিছের অভিযান

উবায়দা ইবন হারিছের অভিযান

ইবন ইসহাক বলেন, : রাসূলুল্লাহ্ (সা) মদীনায় অবস্থানকালে উবায়দা ইবন হারিছ ইবন মুত্তালিব ইবন আবদ মানাফ ইবন কুসাইকে ৬০ জন বা ৮০ জনের বাহিনীসহ প্রেরণ করেন। এ বাহিনীর সকলেই ছিলেন অশ্বারোহী এবং মুহাজির ৷ তাদের মধ্যে কোন আনসারী ছিলেন না। এ বাহিনী রওনা হয়ে চলতে চলতে ছানিয়াতুল মুররার’ নিম্নাঞ্চলে একটা কুয়োর নিকট পৌঁছে। সেখানে কুরায়শের এক বিশাল দলের মুখোমুখি হয়। তবে সেখানে কোন সংঘর্ষ হয়নি। অবশ্য সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস এ সময় একটা তীর নিক্ষেপ করেন। আর এটা ছিল ইসলামের ইতিহাসে আল্লাহর রাস্তায় নিক্ষিপ্ত প্রথম তীর। এরপর সকলে সেখান থেকে ফিরে আসেন। মুসলমানরা তখন ছিলেন হৰ্ষোৎফুল্ল। এ সময় বনু যুহরার মিত্র মিকদাদ ইবন আমর আল-বাহরানী এবং বনু নাওফিল ইবন আবদ মানাফের মিত্ৰ উতবা ইবন গাযওয়ান ইবন জাবির আল-মাযিনী। মুশরিকদের দল থেকে পলায়ন করে মুসলমানদের দলে যোগ দেন। এরা উভয়েই

ছিলেন মুসলমান। তবে কাফিরদের দলের সঙ্গে মিশে বেরিয়েছিলেন। ইবন ইসহাক বলেন : এ সময় মুশরিকদের দলপতি ছিল ইকরিমা ইবন আবু জাহল। পক্ষান্তরে ইবন হিশাম, আবু আমর ইবন আলী এবং আবু আমার আল-মাদানীর উদধূতি দিয়ে বলেন যে, তখন মুশরিকদের দলপতি ছিল মিকরা য ইবন হাফস।

আমার মতে, ওয়াকিদীর উদধূতি দিয়ে ইতোপূর্বে দু’টি উক্তি উল্লিখিত হয়েছে। এক উক্তি মতে মুশরিকদের দলপতি ছিল মিকরায। অপর উক্তি মতে তাদের দলপতি ছিল আবু সুফিয়ান সাখার ইবন হারব। তবে আবু সুফিয়ান সে বাহিনীর নেতা ছিলেন এ মতকেই তিনি প্রাধান্য দেন। এরপর ইবন ইসহাক এ বাহিনী সম্পর্কে একটা কসীদার উল্লেখ করেছেন, যা। (আবু বকর) সিদীকের বলে কথিত আছে। কাসীদাটির শুরু এই :

ا من طيف سلمى لسالبطاح الدمسائتث – ارقات و امر فى العشيرة حادث–তুমি কি সালমার কল্পনায় কোমল উপত্যকায় জন্ম নিয়েছ? এবং সমাজে এক নব বিযয় হিসাবে উদ্ভূত হয়েছ?

تری مسن لؤی فرقة لای صدها–عن الکفر تذکیر و لا باعث باعتثতুমি লুয়াই গোত্ৰকে দেখতে পাবে যে কোন উপদেশ বা কোন বাহিনী তাদেরকে কুফার থেকে বিরত রাখে না।

رسول اتاهم صادق فتكذبوا – عليه وقالوا لست فينا بماكث তাদের কাছে এসেছেন এক সত্য রাসূল। তাঁকে তারা অস্বীকার করে এবং বলে— তুমি আমাদের মধ্যে থাকতে পারবে না।

اذا ما دعوناهم الى الحق الدبروا–وهروا هرير المحجرات اللواهتثআমরা তাদেরকে সত্যের দিকে ডাকলে তারা পেছনে ফিরে যায় এবং হাঁপানো কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে পালায়।

দীর্ঘ এ কাসীদার জবাবে আবদুল্লাহ ইবন যাবআরীর একটি কাসীদা বর্ণিত আছে, যার শুরু

এ রকম :

امن رسم دار اقتفرت بالعناعت–بکیت بعین د مسعها غیر لابیث–আমি কি এমন ব্যক্তির ধ্বংসস্তুপের নিকট আশাইছ নামক স্থানে ক্ৰন্দন করেছি এমন চক্ষু দিয়ে, যার অশ্রু অব্যাহত ধারায় প্রবাহিত হয়?

و من عجیب الایام والد هر کله–له عجب من سابقات و حادتثকালের বিস্ময়, আর কাল তো সবটাই বিস্ময়, তা আগের হোক বা পরের হোক।

لجیشی اتانا ذی غرام یقوده–عبیدة بید عنی فی الهیاج ابن حارث–একটা বিদ্রোহী বাহিনী আমাদের নিকট এসেছে, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে উবায়দা, যুদ্ধকালে যাকে ডাকা হয় ইবন হারিছ বলে।

لنترك اصناما بمكة عكفامواريث موروث كريم لوارث

(আমাদেরকে আহবান করে যে,)। আমরা যেন মক্কায় বিসর্জন দেই মূর্তিপূজা, যা সন্ত্রান্তদের জন্যে উত্তম উত্তরাধিকার।

তিনি দীর্ঘ কাসীদাটি উল্লেখ করেছেন। আমরাও পুরোটাই উদধূত করতাম, তবে বাধ সোধেছে। এই যে, ভাষার পণ্ডিত ইমাম আবদুল মালিক ইবন হিশাম উল্লেখ করেছেন যে, অধিকাংশ জ্ঞানীরা এ কাসীদাদ্বয়কে অস্বীকার করেছেন। ইবন ইসহাক বলেন, সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাস তাঁর সে তীর নিক্ষেপ সম্পর্কে এ কবিতা আবৃত্তি করেছেন বলে ঐতিহাসিকরা উল্লেখ করেন :

الاھل اتی رسول الله انی ۔ حمیت صحابتی بصدور نبلی۔–রাসূলুল্লাহ কি খবর পেয়েছেন যে, আমি আমার সঙ্গীদের সহায়তা করেছি আমার তীরের অগ্রভাগ দ্বারা?

اذود بها اوائلهم ذیادا–بکلی حزونة و بکلی سهلی–আমি সেগুলো দিয়ে প্রতিরোধ করে চলেছি তাদের অগ্রবতীদেরকে প্ৰত্যেক প্রস্তরময় এবং নরম ভূমিতে। w

فمایعاتد رام فی عدو–بسسهم یار سول الله قبلی–হে আল্লাহর রাসূল! আমার আগে কোন তীর নিক্ষেপকারী দুশমনের জন্যে তীর তৈয়ার করেনি।

و ذالله ان دینلک دین صدق–وذ و حق اتیت به و فضل–আর তা এ জন্যে যে, আপনার দীন সত্য দীন এবং আপনার আনীত দীন সত্য, তাই সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারী।

ینجی المؤ منون به و یخزی–به الکفار عند مقام مهلতা দ্বারা মু’মিনরা পাবে নাজাত আর কাফিররা হবে লাঞ্ছিত অপেক্ষা-স্থলে।

فمهلا قد غویت فلا تعبینی غوی–الحی و یحلک یا ابن جهل! হে (ইকরামা) ইবন আবু জাহল! ধিক তোমাকে! আমাকে তিরস্কার করবে না যে, আমি গোমরাহ করেছি। গোত্রকে।

ইবন হিশাম বলেন, কবিতা বিষয়ে যাদের জ্ঞান আছে, তাদের অধিকাংশ এ পংক্তিগুলো সাআদ ইবন আবু ওয়াক্কাসের বলে স্বীকার করেন না। ইবন ইসহাক বলেন, : উবায়দার পতাকা ছিল ইসলামে প্রথম পতাকা, যা রাসূলুল্লাহ (সা) কোন মুসলমানের নিকট নিজ হাতে অর্পণ করেছেন। পক্ষান্তরে যুহরী, মূসা ইবন উকবা এবং ওয়াকিদী এ মতের বিরোধিতা করেন।

ভাল জানেন। সাআদ ইবন আবু ওযাক্কাস প্রসঙ্গে উল্লিখিত হবে যে, সারিয়ার আমীরদের মধ্যে প্রথম ছিলেন আবদুল্লাহ ইবন জাহাশ আসাদী।

ইবন ইসহাক বলেন : কোন কোন ঐতিহাসিক মনে করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (সা) গাযওয়া আবওয়া থেকে ফিরে মদীনা পৌছার পূর্বেই তাঁকে প্রেরণ করেছিলেন। মূসা ইবন উকবাও যুহরী সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *