ওল্ড স্টেটমেন্ট
নিউ স্টেটমেন্ট
1 of 2

রাজাবলি ২ – ২৫

১ তাই বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্‌সর, তাঁর সমস্ত সেনাবাহিনী নিয়ে জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন। সিদিকিয়র রাজত্ব কালের নবম বছরের ১০ মাসের ১০ দিনে এই ঘটনা ঘটেছিল। জেরুশালেম শহরে যাতাযাত বন্ধ করতে নবূখদ্নিত্‌সর শহরের চারপাশে তাঁর সেনাবাহিনী মোতাযেন করে একটা দেওয়াল বানিয়ে শহরটা অবরোধ করেছিলেন।
২ এই ভাবে তাঁর সেনাবাহিনী সিদিকিয়র রাজত্বের একাদশ বছর পর্য়ন্ত জেরুশালেম ঘিরে রেখেছিল।
৩ এদিকে শহরের ভেতরে খাদ্যাভাব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল। চতুর্থ মাসের ৯তম দিনের পর থেকে শহরে সাধারণ মানুষের খাবার মত এককণা খাবারও আর অবশিষ্ট ছিল না।
৪ শেষ পর্য়ন্ত নবূখদ্নিত্‌সরের সেনাবাহিনী শহরের প্রাচীর ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়লে, সে রাতেই বাগানের গুপ্তপথের ফাঁপা দেওয়ালের মধ্যে দিয়ে রাজা সিদিকিয় ও তাঁর সেনাবাহিনীর লোকরা পালিয়ে যায়। যদিও শএুপক্ষের সেনাবাহিনী সারা শহর ঘিরে রেখেছিল, কিন্তু তবুও সিদিকিয় ও তাঁর পার্শ্বচররা মরুভূমির পথে পালিয়ে য়েতে সক্ষম হন।
৫ কিন্তু বাবিলের সেনাবাহিনী তাঁদের ধাওযা করে য়িরীহোর কাছে রাজা সিদিকিয়কে বন্দী করে। সিদিকিয়র সমস্ত সেনা তাঁকে একলা ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
৬ বাবিলীযরা তাঁকে বন্দী করে বাবিলে রাজার কাছে নিয়ে যায় যা এখন ছিল রিব্লাতে, যিনি তাকে শাস্তি দেন।
৭ তারা সিদিকিয়র সামনেই তাঁর চার পুত্রকে হত্যা করে, তাঁর চোখ গেলে দিয়ে শিকল পরিযে তাঁকে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল।
৮ নবূখদ্নিত্‌সরের বাবিল শাসনের উনিশ বছরের পঞ্চম মাসের ৭তম দিনে নবূষরদন জেরুশালেমে আসেন। নবূষরদন ছিলেন তাঁর সর্বাপেক্ষা রণকুশলী সৈন্যদের সেনাপতি।
৯ তিনি প্রভুর মন্দির এবং রাজপ্রাসাদ পুড়িয়ে ফেললেন। তিনি ছোট বড় সমস্ত ঘর বাড়ীও ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।
১০ এরপর, নবূখদ্নিত্‌সরের সৈন্যবাহিনীর সেনারা জেরুশালেমের চারপাশের প্রাচীর ভেঙ্গে ফেলে
১১ অবশিষ্ট য়ে কজন লোক তখন পড়ে ছিল তাদের বন্দী করে নিয়ে যায়। এমনকি য়ে সমস্ত লোক আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল তাদেরও রেহাই দেওয়া হয় নি।
১২ নবূষরদন একমাত্র দীনদরিদ্র লোকদের দ্রাক্ষা ক্ষেত ও শস্য ক্ষেতের দেখাশোনা করার জন্য ফেলে রেখে গিয়েছিলেন।
১৩ বাবিলীয সেনাবাহিনী প্রভুর মন্দিরের পিতলের সমস্ত জিনিসপত্র ভেঙে টুকরো টুকরো করে। পিতলের জলাশয, সেই ঠেলাগাড়িটা কিছুই তারা ভাঙতে বাকি রাখেনি। তারপর সেই পিতলের ভাঙা টুকরোগুলো তারা বাবিলে নিয়ে যায়।
১৪ গাছের টব, কোদাল, বাতিদানের শিখা উস্কানোর যন্ত্র থেকে শুরু করে পিতলের থালা, চামচ, কড়াই, পাত্র,
১৫ সোনা ও রূপোর সমস্ত জিনিসপত্রই নবূষরদন সঙ্গে করে নিয়ে যান।
১৬ তিনি যা নিয়েছিলেন তার তালিকা নীচে দেওয়া হল:২৭ ফুট দৈর্ঘ্যের ২টি পিতলের স্তম্ভ, স্তম্ভের মাথার ওপরের কারুকার্য়খচিত ৪ ১,২ ফুট উঁচু গম্বুজ, পিতলের বড় জলাধার, প্রভুর মন্দিরের জন্য শলোমনের তৈরী করা ঠেলাগাড়িটা; সব মিলিয়ে এগুলোর ওজন সঠিক কত ছিল তা বলাও কঠিন!
১৭
১৮ মন্দির থেকে নবূষরদন, প্রধান যাজক সরায, সহকারী যাজক সফনিয়, প্রবেশদ্বারের তিন জন দারোযানকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন।
১৯ আর শহর থেকে তিনি ১ জন সেনাসচিব, রাজার ৫ জন পরামর্শদাতা, সেনাপ্রধানের ব্যক্তিসচিব যিনি লোকদের মধ্যে থেকে বাছাই করে সেনা নিযোগ করতেন, এরা ছাড়াও ৬০ জন সাধারণ মানুষকে বন্দী করেন।
২০ তারপর নবূষরদন এদের সবাইকে হমাতের রিব্লায বাবিল-রাজের কাছে নিয়ে গেলে, বাবিল-রাজ সেখানেই তাদের হত্যা করেন। আর যিহূদার লোকদের বন্দী করে তাঁরা সঙ্গে নিয়ে যান।
২১
২২ বাবিল-রাজ নবূখদ্নিত্‌সর কিছু লোককে যিহূদায় রেখে গিয়েছিলেন। তিনি শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিযকে এই সমস্ত লোকদের শাসন করার জন্য শাসক হিসেবে যিহূদায় বসিযে যান।
২৩ এদিকে এ খবর পেয়ে নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল, কারেযের পুত্র য়োহানন, নটোফাতীয তনহূমতের পুত্র সরায আর মাখাথীযের পুত্র যাসনিয প্রমুখ সেনাবাহিনীর প্রধানরা তাদের দলবল নিয়ে মিস্পাতে গদলিযর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
২৪ গদলিয তাদের আশ্বস্ত করে বললেন, “বাবিলীয রাজকর্মচারীদের ভয পাবার কোন কারণ নেই। তোমরা যদি এখানে থেকে বাবিল-রাজের অধীনে কাজ কর তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।”
২৫ কিন্তু নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল ছিলেন রাজপরি-বারের সদসস্য এভাবে সাতমাস কাটার পর তিনি ও তাঁর দলের দশ জন মিলে গদলিয ও সমস্ত ইহুদীদের হত্যা করলেন। মিস্পাতে গদলিযর সঙ্গে য়ে সমস্ত বাবিলীযরা বাস করছিল তারাও রক্ষা পেল না।
২৬ তারপর সেনাবাহিনীর লোক থেকে শুরু করে ছোট বড় সবাই বাবিলীযদের ভয়ে মিশরে পালিয়ে গেল।
২৭ পরবর্তীকালে ইবিল-মরোদক বাবিলের রাজা হলেন। তিনি যিহূদার রাজা যিহোয়াকীমকে তাঁর বন্দীত্বের ৩৭ বছরের মাথায় জেল থেকে মুক্ত করলেন। মরোদকের রাজত্বের বারো মাসের ২৭ দিনের মাথায় এই ঘটনা ঘটেছিল।
২৮ তিনি যিহোয়াকীমের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছিলেন এবং রাজসভায অন্যান্য রাজাদের তুলনায় তাঁকে আরও গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসার অধিকার দিয়েছিলেন।
২৯ মরোদক, যিহোয়াকীমের আসামীর পোশাক খুলে দিয়েছিলেন। এবং জীবনের বাকী কটা দিন যিহোয়াকীম মরোদকের সঙ্গে একই টেবিলে বসে খাওয়া দাওয়া করেন।
৩০ রাজা ইবিল-মরোদক যিহোয়াকীমকে এরপর থেকে পোষণ করছিলেন।