1 of 3

০৭।০২ সপ্তম কাণ্ড : দ্বিতীয় অনুবাক

দ্বিতীয় অনুবাক
প্রথম সূক্ত : সবিতা
[ঋষি; অথর্বা দেবতা : সবিতা ছন্দ : অনুষ্টুপ, ত্রিষ্টুপ, জগতী]

অভি ত্যং দেবং সবিতারমোণ্যোঃ কবিক্রতুম। অর্চামি সত্যসবং রত্নধামভি প্রিয়ং মতিম ॥১॥ ঊর্ধ্বা যস্যামতির্ভা অদিতৎ সীমনি। হিরণ্যপাণিরমিমীত সুক্ৰতুঃ কৃপাৎ স্বঃ ॥২॥ সাৰীৰ্হি দেব প্রথমায় পিত্রে বর্মাণমস্মৈ বরিমাণমস্মৈ। অথাস্মভ্যং সবিতর্বার্যাণি দিবোদিব আ সুবা ভূরি পশ্বঃ ॥৩৷৷ দমূনা দেবঃ সবিতা বরণ্যো দধ রত্নং দক্ষং পিতৃভ্য আয়ুংষি। পিবাৎ সোমং মমদদেনমিষ্টে পরিক্সা চিৎ ক্ৰমতে অস্য ধর্মণি ॥৪॥

বঙ্গানুবাদ –আমি দ্যুলোক ও পৃথিবীর সেই সবিতা দেবের পূজা-উপাসনা করছি, যিনি সমগ্র জগৎসংসারের রক্ষক, সকলের উৎপাদক, জগকর্তা, জ্ঞানী, সত্যের প্রেরক, রমণীয় পদার্থসমূহের ধারক, সকলের প্রিয় এবং ধ্যান করার যোগ্য ॥ ১৷

সেই সবিতা দেবের অপার তেজঃ, তার ইচ্ছানুসারের উপর বিকশিত হয়ে সর্বত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে; উত্তম কর্মসাধনশীল ব্রহ্মা যার প্রেরণায় হিতকরী হস্তে (বা হিরণ্যপাণিরূপে), অঙ্গুলি ইত্যাদির কল্পনায় স্বর্গদায়ক সোম উৎপন্ন করছেন (বা গ্রহণ করছেন। সেই সবিতা দেবকে আমরা প্রার্থনা করছি ॥ ২॥

হে সবিতা দেব! তুমি এই পালক যজমানের দেহ (অর্থাৎ দেহের পুষ্টি বা রোগহীনতা) ও পুত্র-পৌত্র ইত্যাদির সমৃদ্ধি, এবং অন্য রকমের যশ প্রদান করো। তুমি আমাদের নিত্য উত্তম পদার্থ (বা সাফল্য) এবং প্রভূত পশু প্রদান করো ৷৷ ৩।

হে দেব! তুমি সকলের প্রেরক, শ্রেষ্ঠ এবং সকলকে দান-পরায়ণশীল। তুমি আমাদের পূর্বজগণের (অর্থাৎ পিতৃপুরুষবৃন্দের) নিকট হতে ধন-বল ও আয়ু আহরণ করে আমাদের প্রদান করো এবং এই অভিযুত সোম পান করো। এই সোম আনন্দিত করণশালী; এটি গতিমান হয়ে দেবলোকের প্রতি (অথবা সবিতাদেবের জঠরে) সঞ্চার করে থাকে। ৪

.

দ্বিতীয় সূক্ত : সবিতা

[ঋষি : ভৃগু দেবতা : সবিতা ছন্দ : ত্রিষ্টুপ]

তাং সবিতঃ সত্যসং সুচিত্রামাহং বৃণে সুমতিং বিশ্ববারাম। যামস্য কণো অদুহৎ প্রপীনাং সহস্রধারাং মহিষো ভগায় ॥১॥

বঙ্গানুবাদ –হে সবিতা দেব! আমি তোমার সেই সত্যের প্রেরণা-করণশালী, সকলের গ্রহণ করণের যোগ্য, বরণীয় শোভাযুক্ত সুমতির বা অনুগ্রহ-বুদ্ধির) যাচনা করছি, পীনোন্নত-পয়োধরা গাভীর অনেক ধারাশালিনী পীযূষ-সদৃশ যে সুমতিকে আপন সৌভাগ্যসাধনের উদ্দেশ্যে মহান কথ ঋষি দোহন (অর্থাৎ সগ্রহ) করে নিয়েছিলেন৷ ১৷৷

.

তৃতীয় সূক্ত : সবিতা

 [ঋষি : ভৃগু দেবতা : সবিতা ছন্দ : ত্রিষ্টুপ]

 বৃহস্পতে সবিতর্বর্ধয়ৈনং জ্যোতয়ৈনং মহতে সৌভগায়। সংশিতং চিৎ সন্তরং সং শিশাধি বিশ্ব এমনু মদন্তু দেবাঃ ॥১॥

বঙ্গানুবাদ –হে দেবগণের প্রভু বৃহস্পতি! হে সর্ব-প্রসবিতা দেব সবিতা! যে যজমান (বা ব্রহ্মচারী) অন্য ব্রতের পালন করে থাকে, তাকে সূর্যোদয় কাল পর্যন্ত শয়নজনিত দোষ পরিহার করিয়ে অগ্রবর্তী করে নিয়ে চলো; আরও ব্রতের পালনশালী করে তোলে। এই যজমান (বা ব্রহ্মচারী)-কে উত্তম ভাগ্যের নিমিত্ত উদ্বোধিত করো। সকল দেবতা তার সাধুতাকে অনুমোদন করুন। ১।

.

চতুর্থ সূক্ত : দ্রবিণার্থং প্রার্থনা

[ঋষি : ভৃগু দেবতা : ধাতা, সবিতা, ব্রহ্মা, অগ্নি, ত্বষ্টা, বিষ্ণু ছন্দ : গায়ত্রী, ত্রিষ্টুপ, অনুষ্টুপ]

ধাতা দধাতু নো রয়িমীশানো জগতস্পতিঃ। স নঃ পূর্ণেন যুচ্ছতু ॥১॥ ধাতা দধাতু দাশুষে প্রাচীং জীবাণুমক্ষিতাম্। বয়ং দেবস্য ধীমহি সুমতিং বিশ্বরাধসঃ ॥২৷৷ ধাতা বিশ্বা বার্ষা দধাতু প্রজাকামায় দাশুষে দুররাণে। তস্মৈ দেবা অমৃতং সং বয়ন্তু বিশ্বে দেবা অদিতিঃ সজোষাঃ ॥৩ ধাতা রাতিঃ সবিতেদং জুষাং প্রজাপতিনিধিপতিনো অগ্নিঃ। ত্বষ্টা বিষ্ণুঃ প্রজয়া সংররাণে যজমানায় দ্রবিণং দধাতু ॥৪॥

বঙ্গানুবাদ –জগতের স্বামী, বিশ্বের ধারণকর্তা ধাতা দেবতা আমাদের প্রভূত ধনের সাথে সংযুক্ত করুন। সেই ধাতা দেবতা আমাদের সকল প্রয়োজনকে সফল (বা পূর্ণ) করতে সমর্থ। ১।

 ধাতা দেবতা আমি হেন যজমানকে অক্ষয় জীবন-শক্তি প্রদান করুন। আমরা সেই সম্পূর্ণ ধনের স্বামী ধাতা দেবতার উত্তম বুদ্ধির (অর্থাৎ সদয় মতির) ধ্যান করছি, এবং কৃপা যাচনা করছি। ২৷৷

ধাতা দেবতা প্রজা-কামনাকারী যজমানের নিমিত্ত সকল বরণীয় পদার্থ প্রদান করুন। ইন্দ্র প্রমুখ সম্পূর্ণ দেবতাগণ, অদিতি দেবী ও অন্য দেবতাগণ তাঁকে (অর্থাৎ যজমানকে) অমৃতত্ব প্রদান করুন ৷ ৩৷

সকলের ধারক ধাতাদেবতা, সকলের প্রেরক ও সমস্ত কল্যাণের দাতা সবিতাদেব, প্রজাগণের স্রষ্টা ও রক্ষক পরমেষ্ঠী ব্রহ্মা, পুরুষার্থ যুক্ত বেরক্ষক প্রকাশরূপ অগ্নিদেব, রূপসমূহের কর্তা ত্বষ্টা দেবতা, বিশ্বলোকে ব্যাপ্তিশীল বিষ্ণু দেবতা আমাদের হবিঃসমূহ গ্রহণ করুন এবং পুত্র-পৌত্রাদি ইত্যাদি প্রজাগণের সাথে আপন আপন ফল প্রদান করে যজ্ঞকর্তা যজমানকে অভিলষিত ধন (বা যজ্ঞফল) প্রদান করুন। ৪।

 সূক্তস্য বিনিয়োগঃ –অত্র অভি ত্যং ইত্যাদ্যে সূক্তে আদিতশ্চতুঋচেন সূত্রোক্তং স্থানং গত্বা তত্র উদপাত্ৰং সম্পাত্য সোমমিশ্রং কৃত্বা সারূপবৎসুং ওদনং সম্পত্য অভিমন্ত্র পুষ্টিকামঃ অশ্নীয়াৎ। তাং সবিতঃ ইতি ঋচা একবারপ্রসূতায়া গোর্বন্ধনরঙ্কুমণিং কৃত্বা সম্পত্য অভিমন্যু পুষ্টিকামো বর্ধীয়াৎ। সূত্রিতং হি।… বৃহস্পতে সবিত ইত্যনয়া সূর্যোদয়পর্যন্তং সুপ্তং ব্রহ্মচারিণং উত্থাপয়েৎ…ধাতা দধাতু ইতি চতুঋচেন সফলকামো ধাতারং যজতে উপতিষ্ঠেত বা। সূত্রিতং হি।…তথা বীরপুত্রপ্রজননার্থং অনেন চতুঋচেন গর্ভিণ্যা উদরং অভিমন্ত্ৰয়েত।…ইত্যাদি৷ (৭কা, ২অ. ১-৪)।

টীকা— উপযুক্ত প্রথম সূক্তের চারটি মন্ত্র পুষ্টিকামনায় সুত্রোক্ত স্থানে গমন করে জলপাত্র সম্পাতিত করে সোমমিশ্রণ পূর্বক পান ইত্যাদি কর্মে বিনিয়োগ করণীয়। দ্বিতীয় মন্ত্রটিও পুষ্টিকামনায় একবার-প্রসূতা গাভীর বন্ধনরঙ্কু-মণি সূত্রোক্তপ্রকারে বন্ধন ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করণীয়। তৃতীয় সূক্তের মন্ত্রের দ্বারা সূর্যোদয় অবধি সুপ্ত ব্রহ্মচারীর উত্থাপনে বা জাগরণ-করণে সূত্রোক্তপ্রকারে বিনিযুক্ত হয়ে থাকে। শেষোক্ত সূক্তের চারটি মন্ত্রের দ্বারা সফলকামনায় ধাতার যাগ বা উপাসনা করণীয়। তথা বীরপুত্রকামনার্থে গর্ভিণীর উদরে এই চারিটি মন্ত্র কৌশিক সূত্রানুসারে অভিমন্ত্রিত পূর্বক বিনিয়োগ করণীয়।…ইত্যাদি। (৭কা, ২অ. ১-৪)।

.

পঞ্চম সূক্ত : বৃষ্টি

[ঋষি : অথর্বা দেবতা : পৃথিবী, পৰ্জন্য ছন্দ : উষ্ণিক, ত্রিষ্টুপ]

 প্র নভস্ব পৃথিবী ভিন্ধীদং দিব্য নভঃ। উদ্বো দিব্যস্য নো ধাতরীশানো বি য্যা দৃতিম্ ॥১৷৷ ন ঘুংস্ততাপ ন হিমো জঘান প্র নভং পৃথিবী জীরদানুঃ। আপশ্চিদস্মৈ ঘৃতমিৎ রন্তি যত্র সোমঃ সদমিৎ তত্র ভদ্রম্ ॥২॥

বঙ্গানুবাদ –হে বিস্তীর্ণা পৃথিবী মাতা! হলের দ্বারা কর্ষিতা হওয়ার পরেও (অর্থাৎ বীজবপনার্থে ক্ষেত্ৰাদিকর্ষণে ক্লেশবতী হয়েও) তুমি মহতী বৃষ্টিতে শিথিলাবয়বা না হয়ে বরং দৃঢ়া হয়ে থাকো। হে পর্জন্য! তুমি ঐ দিব্য মেঘ বিদীর্ণ করে উত্তম বর্ষণ প্রদান করো। তুমি বৃষ্টিপ্রদানে সামর্থযুক্ত রূপে মেঘরূপা জলপূর্ণা ভস্ত্রার মুখ উন্মোচিত করে মহতী বৃষ্টির সৃষ্টি করো ॥১॥

যে, স্থানে সোমদেবের পূজা হয়ে থাকে, সোম ইত্যাদি ঔষধিসমূহ উৎপন্ন হয়, সেই স্থানে যথোচিত কালে পর্যাপ্ত বর্ষণ হয়ে থাকে এবং সকল প্রকার কল্যাণ হয়ে থাকে। গ্রীষ্ম অসহ্য তাপ প্রদান করে না এবং হেমন্ত ঋতু অতি শৈত্যের দ্বারা গাত্রসঙ্কোচনরূপ বাধার সৃষ্টি করে না। উপযুক্ত বর্ষণের ফলে ভূমি সমৃদ্ধি লাভ করে। ২।

.

ষষ্ঠ সূক্ত : প্রজাঃ

 [ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : প্রজাপতি, ধাতা ছন্দ : জগতী ]

প্রজাপতির্জনয়তি প্রজা ইমা ধাতা দধাতু সুমনস্যমানঃ। সংজানানাঃ সংমনসঃ সযোনয়ো ময়ি পুষ্টিং পুষ্টপতির্দধাতু ॥১॥

 বঙ্গানুবাদ –প্রজাপতি ব্রহ্মা প্রজাগণকে উৎপন্ন করুন এবং ধাতা দেব তাদের পোষণ করুন। এই সকল প্রজা (ভাবী সন্তান) সঙ্গঠিত এক মনঃসম্পন্ন হয়ে বিবেকশীলতার সাথে কার্য নির্বাহ করুক। পুষ্টির দেবতা আমাদের প্রজা-সম্বন্ধী পুষ্টি প্রদান করুন। ১।

.

সপ্তম সূক্ত : অনুমতিঃ

  [ঋষি : অথর্বা দেবতা : অনুমতি ছন্দ : অনুষ্টুপ, ত্রিষ্টুপ, জগতী ]

অদ্য নোহনুমতির্যজ্ঞং দেবেষু মন্যতা। অগ্নিশ্চ হ্যবাহনো ভবতাং দাশুষে মম ॥১৷৷ অন্বিদনুমতে ত্বং মংসসে শং চ নস্কৃধি। জুষ হব্যমাহুতং প্রজাং দেবি ররা নঃ ॥২৷৷ অনুমন্যতামনুমন্যমানঃ প্রজাবন্তং রয়িমক্ষীয়মাণম। তস্য বয়ং হেডসি মাপি ভূম সুমৃড়ীকে অস্য সুমতৌ স্যাম ॥৩৷৷ যৎ তে নাম সুহবং সুপ্রণীতেহনুমতে অনুমতং সুদানু। তেনা নো যজ্ঞং পিপৃহি বিশ্ববারে রয়িং নো ধেহি সুভগে সুবীরম্ ॥৪৷ এমং যজ্ঞমনুমতির্জগাম সুক্ষেত্ৰতায়ৈ সুজাত। ভদ্রা হ্যস্যাঃ মতিবর্ভূব সেমং যজ্ঞমবতু দেবগোপা ॥৫৷৷ অনুমতিঃ সর্বমিদং বভূব যৎ তিষ্ঠতি চরতি যদু চ বিশ্বমেজতি। তস্যান্তে দেবি সুমতৌ স্যামানুমতে অনু হি মংসসে নঃ ॥৬॥

বঙ্গানুবাদ— আজ আমাদের যজ্ঞের বার্তা, আমাদের সকল কর্মের অনুমন্ত্রী চন্দ্রমা দেবতা অর্থাৎ পূর্ণিমার অভিমানী দেবতা, আমাদের অনুকূল হয়ে সকল দেবতার নিকট প্রকাশিত করে দিন। অগ্নিদেবও আমাদের দ্বারা সমর্পিত হবির ভাগ প্রত্যেক দেবতাকে প্রাপ্ত করানোর কৃপা করুন, (অর্থাৎ তাদের নিকট বহন করে গমন করুন। ১।

হে অনুমতি নামী দেবি! আমাদের সুবুদ্ধি প্রদান করো। আমরা যেন কল্যাণকারক কর্ম সাধনের বুদ্ধি প্রাপ্ত হই। তুমি অগ্নিতে হোমকৃত হবিঃ উপভোগ করে আমাদের উত্তম সন্তান প্রদান করো ৷ ২৷

আমরা অনুমন্তা পুরুষ দেবতার ক্রোধের ভাজন যেন না হই; বরং তার সুখদায়ক সুমতির দ্বারা লাভ প্রাপ্ত হই। তিনি আমাদের প্রতি প্রসন্ন হয়ে আমাদের পুত্র ইত্যাদি সন্তানের দ্বারা সম্পন্ন করুন এবং অক্ষয় ধন প্রদান করুন ॥ ৩।

 হে অনুমতি দেবী! তোমার নাম অনেক প্রকারের যশের বা কীর্তির সাথে প্রসিদ্ধ আছে। তুমি যজমানকে ধনদানের দ্বারা স্নেহ-করণশালিনী। তুমি আমাদের যজ্ঞকে সফল করে তোনো এবং উত্তম বীর পুত্রগণের সাথে ধন প্রদান করো। ৪

আমাদের এই সকল প্রকারে সম্পন্ন যজ্ঞকে রক্ষা করে, হে অনুমতি দেবি! তুমি সুক্ষেত্র ও শোভনপুত্র ইত্যাদিরূপ ফল দানের নিমিত্ত আগমন করো। তোমার কৃপাতেই আমরা শ্রেষ্ঠ কার্য সম্পন্ন করার প্রেরণা লাভ করে থাকি। ৫।

 হে অনুমতি দেবি! তুমি স্থাবর-জঙ্গমাত্মক সকল জগতে অবুদ্ধির দ্বারা এবং সুবুদ্ধির দ্বারা কার্য- করণশালী সব কিছুর মধ্যে ব্যাপ্ত হয়ে আছে। তুমি আমাদের সুবুদ্ধি প্রদান করো ৷ ৬ ৷৷

.

অষ্টম সূক্ত : একো বিভু:

[ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : আত্মা ছন্দ : জগতী]

সমেত বিশ্বে বচসা দিব একো বিভূতিথির্জনানাম। স পূর্বে নূতনমাবিবাসৎ তং বর্তনিরনু বাবৃত একমি পুরু ॥১॥

 বঙ্গানুবাদ –হে বন্ধুবর্গ! জন্মগ্রহণকারী নবজাত প্রাণীগণের স্বামী, অতিথির সমান পূজনীয় এবং স্বর্গলোকের অধিপতি সূর্য দেবতাকে সুন্দর মন্ত্রের দ্বারা স্তুতি করো। হে চিরন্তন বা চিরপুরাতন সূর্যদেব! তুমি এই নবজাত প্রাণীকে আপনার মনে করে তার কল্যাণ করো। তুমি সেই একই সূর্যরূপে সকল সকর্মমার্গ অনুবর্তন করে চলেছে (বা. সকল সঙ্কর্মের সঞ্চালকরূপে বিদ্যমান হয়ে আছো ॥ ১।

.

নবম সূক্ত : জ্যোতিঃ

[ঋষি : ব্রহ্মা দেবতা : ব্ৰধ্ন ছন্দ : অনুষ্টুপ, গায়ত্রী ]

অয়ং সহস্রমা নো দৃশে কবীনাং মতির্জ্যোতির্বিধর্মণি ॥১॥ ব্ৰধঃ সমীচীরুষসঃ সমৈরয়। অরেপসঃ সচেতসঃ স্বসরে মমত্তমাশ্চিতে গোঃ ॥২॥

বঙ্গানুবাদ –সকলের মধ্যে আত্মা-রূপে ব্যাপ্ত এই সূর্যদেব আমাদের সহস্র সম্বৎসরকাল পর্যন্ত সুস্থ হয়ে জীবন ধারণের শক্তি প্রদান করুন, (আমরা যেন সহস্র বৎসরব্যাপী তাকে চক্ষুগোচর করতে পারি)। এই সূর্যদেবই সকল জ্ঞানী পুরুষের মাননীয় এবং তাদের সৎকর্ম ও কর্মফলের মধ্যে সংযোগ রক্ষাশালী। হে ভগবন্! তুমি সক্কার্য সম্পাদনের নিমিত্ত আমাদের দীর্ঘ আয়ু প্রদান করো ॥ ১।

 জ্ঞান-দানশালিনী, পাপহারিণী, তেজঃসংযুক্তা ঊষার রশ্মিগুলি (বা গো-সকল) সূর্য ভগবানের দিকে আমাদের প্রেরিত করতে থাকুক ॥ ২॥

সূক্তস্য বিনিয়োগঃ— প্র নভস্য ইতি ঘৃচেন বৃষ্টিকামো মরুদ্ভো মান্ত্ৰবৰ্ণিকীভ্যো বা দেবতাভ্যঃ ক্ষীরৌদন হোমহোমঃ আজ্যহোমঃ কাশদিবিধুবকবেতসাখ্যা ওষধীরেকস্মিন পাত্রে কৃত্বা সম্পত্য অভিমন্ত্র…অভিবর্ষণকর্মাণি কুর্যাৎ। সুত্রিতং হি।…প্রজাপতির্জনয়তু ইতি ঋচা বন্ধ্যায়ঃ পুত্রলাভকর্মণি তস্যা উৎসঙ্গে আজ্যং জুহুয়া…সূত্রিতং হি। অন্বদ্য নোহনুমতিঃ ইতি ষডুচেন অভিলষিতফলকামঃ অনুমতিং যজেত উপতিষ্ঠেত বা। সূত্রিতং হি।…পিতৃমেধকর্মণি ইষ্টকাভিশ্চিতং শ্মশানং সমেত বিশ্বে ইত্যনয়া সর্বে বান্ধবাঃ পরিষিঞ্চেয়ুঃ। অয়ং সহস্রং ইতি দ্বাভ্যাং পৃশিসবে হবিস্মৰ্শনসম্পাতপ্ৰদানাদীনি কর্মাণি কুর্যাৎ। সূত্রিতং হি ৷ (৭কা, ২অ. ৫-৯)। 

টীকা –উপযুক্ত পঞ্চম সূক্তের দুটি মন্ত্র বৃষ্টিকামনায় সূত্রানুসারে বিনিয়োগ করণীয়। ষষ্ঠ সূক্তের মন্ত্রটি বন্ধ্যার পুত্রলাভকর্মে সূত্রোক্তপ্রকারে আজাহুতি প্রদানে বিনিযুক্ত হয়। সপ্তম সূক্তের ছয়টি মন্ত্র সূত্রানুসারে অভিলষিত ফলকামনায় অনুমতির যুগ বা উপাসনায় বিনিয়োগ করণীয়। অষ্টম সূক্তের মন্ত্রটি পিতৃমেধকর্মে সূত্রানুসারে বিনিয়োগ করণীয়। নবম সূক্তের মন্ত্র দুটি ষষ্ঠ কাণ্ডের তৃতীয় অনুবাকের একাদশ সূক্তের সূত্রানুসারে বিনিয়োগ করণীয়। (৭কা, ২অ. ৫-৯সূ)।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *