০৪. অর্জুন ঘড়ি দেখল

অর্জুন ঘড়ি দেখল। দেরি হয়ে গিয়েছে যথেষ্ট। অপেক্ষা করতে করতে অমলদা অবশ্যই বিরক্ত হয়ে যাবেন। সে মাথা নেড়ে বলল, ফেরার সময় যাব। এখানে থাকলে যে-কোনও দিনই আসতে পারি।

যাব এবং আসতে পারি পাশাপাশি দুটো বাক্য ব্যবহার করে নিজেই হেসে ফেলল অর্জুন। সে একই গতিতে বাইক চালাচ্ছিল। গত বর্ষায় এদিকের যে সমস্ত ব্রিজ ভেঙেছে, তা এখনও সারানো হয়নি। নদীর ওপর বাঁধ তৈরি করে পথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সামনের বর্ষায় সব ধুয়ে যাবে, তখন এই এলাকার অবস্থা হবে করুণ। ডান দিকে সুহাসিনী চাবাগান। বাগানের নামটা পড়া মাত্র বেশ ভাল লাগল। নিপাট বাঙালি নাম ভুটানের গায়ে।

সে মেজরকে বলল, ওই যে পাহাড় দেখছেন, ওটা ভুটান। ফুন্টশিলিং নামে একটা শহর আছে ওখানে। পারো কিংবা থিম্পু যাওয়ার রাস্তা।

তুমি কি পাসপোর্ট নিয়ে এসেছ?

ওসব লাগে না। দুই দেশের চুক্তি অনুযায়ী মানুষ এমনিই যাওয়া-আসা করতে পারে।

গুড। যাওয়া যাবে তা হলে।

মন্দিরটাকে বাঁ দিকে রেখে এগোল অর্জুন। মেজর বেশ মজার মানুষ। যে-কোনও নতুন কিছু শোনেন, তাতেই আগ্রহী হয়ে যান। বন্ধনহীন জীবন যাপন করলে বোধ হয় মানুষ এইরকম হয়!

হাসিমারার বাজার এলাকা ছোট। তিন মাথার মোড়ে বাইক থামাতেই মেজর বললেন, আমাকে ধরতে হবে। বাইকটা হেলিয়ো না।

কেন? অর্জুন অবাক হল।

কোমর থেকে পা অবশ হয়ে আছে। মনে হচ্ছে ওগুলো আমার নয়।

অর্জুন বাঁ হাতে বাইকটাকে সামলে ডান হাতে মেজরের হাত ধরল। মাটিতে পা দিয়েই মেজর এমন লটপট করতে লাগলেন যে, দুপাশের দোকানের মানুষজন শব্দ করে হাসতে লাগল। মেজর ওই অবস্থায় খেপে গেলেন, হাসির কী আছে, অ্যাঁ? মানুষের দুরবস্থা দেখে কী করে হাসি বের হয়? অর্জুন বলল, ইগনোর করুন। কলার খোসায় পা পিছলে পড়ে গেলেও লোকে হাসে। তবে আপনি ইতিমধ্যেই এখানে পরিচিত হয়ে গেছেন, আর রাগ করলে সেটা পাকা হয়ে যাবে।

ও হ্যাঁ, মিস্টার সোম তো বলেছিলেন সাধারণ মানুষ হয়ে থাকতে। মেজর ততক্ষণে সামান্য বল পেয়েছেন পায়ে, আসলে কী জানো, আমার শরীরটা এমন, যেখানে যাই সেখানকার মানুষ এক নজর দেখেই মনে রেখে দেয়। নাইনটিন সিক্সটি সেভেনে প্রথম নর্থ পোলে যাই। একটা এস্কিমোর গ্রামে কিছুক্ষণ ছিলাম। নাইনটিন এইট্টি ফাইভে সেখানে যেতেই দেখলাম, অনেকেই আমাকে চিনতে পেরেছে। বুঝতেই পারছ, আমার পক্ষে ছদ্মবেশ ধারণ করা অসম্ভব!

অর্জুন বলল, অমলদা ছদ্মবেশের কথা বলেননি, বলেছেন আমরা যে সাধারণ মানুষ—এই ইম্প্রেশন রাখতে। আপনার খিদে পায়নি?

খুব। কিন্তু এখানকার দোকানের যা চেহারা তাতে খেতে ভরসা হচ্ছে না ভাই।

কেন?

ভারতে এলে বাইরের ভাজাভুজি আমি একদম খাই না। তবে রসগোল্লা খাওয়া যেতে পারে।

অর্জুন কথা বাড়াল না। বিদেশে যাঁরা দীর্ঘকাল আছেন, তাঁদের পক্ষে চট করে ভারতীয় খাবারের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। কোনও উন্নাসিকতা নয়, ওঁদের শরীরের সিস্টেম ভেজাল অথবা পোড়া তেল বরদাস্ত করতে পারে না। বিট্‌সাহেব এব্যাপারে একটা নিষ্ঠুর উপমা দিয়েছিলেন অনেক কাল আগে। ফুটপাতে যেসব শিশু বড় হয়, তাদের সহ্যশক্তি অনেক বেশি। নোংরা, বাসি খাবার খেলেও কিছু ক্ষতি হয় না তাদের। কারণ সেটাকে অতিক্রম করার শক্তি একটু-একটু করে অর্জন করেছে তারা। কিন্তু যত্ন এবং নিরাপত্তার মধ্যে সমস্ত সুবিধের সঙ্গে যারা বড় হচ্ছে, তারা একদিনও ফুটপাতের শিশুর সঙ্গী হতে পারবে না। আমেরিকান খাবারদাবারের সঙ্গে আমাদের সাধারণ দোকানের খাবারের এতটাই প্রভেদ।

মেজর গোটাচারেক রসগোল্লা খেয়ে বললেন, অমৃত।

অর্জুন জিলিপি খেল। ভাজা মিষ্টি খেতে ওর খুব ভাল লাগে। যদিও এখন ভরদুপুর, এসব খাওয়ার সময় নয়, তবু অমলদাকে ফেলে ভাতের হোটেলের সন্ধানে যাওয়া যায় না।

দাম মিটিয়ে ওরা দেখতে পেল, একটা জিপ তাদের বাইকের পাশে দাঁড়িয়েছে। ড্রাইভার গোছের একজন নীচে নেমে এপাশ-ওপাশ তাকাচ্ছে। পাশের দোকানদার লোকটাকে কিছু বলতে সে এগিয়ে এসে নমস্কার করল, আপনারা জলপাইগুড়ি থেকে আসছেন?

হ্যাঁ। অর্জুন বোঝার চেষ্টা করল।

আপনাদের মধ্যে একজনের নাম অর্জুন?

হ্যাঁ, ঠিকই।

তা হলে আমার সঙ্গে চলুন। সাহেবরা অপেক্ষা করছেন। আমি এক ঘণ্টা আগেও এসেছি।

কোথায় যাব? কোন সাহেব?

সুহাসিনী বাগানের সাহেব। আপনাদের একজন বোধ হয় আগেই এসে গেছেন। লোকটা জিপের দিকে এগোল। মেজর বললেন, এটা কীরকম হল! মিস্টার সোম প্রচারিত হতে নিষেধ করেছিলেন, কিন্তু এখন তো সবাই দেখল। যাক গে, যাবে নাকি?

মনে হচ্ছে অমলদাই পাঠিয়েছেন। কাছেই তো বাগানটা। আপনি কি জিপে বসবেন?

অবশ্যই। গটগট করে মেজর জিপের দিকে এগিয়ে গেলেন।

 

জিপটাকে অনুসরণ করে অর্জুন চা বাগানের ভেতর একটা সুন্দর বাংলোর সামনে পৌঁছে গেল। খানিক দূরে ফ্যাক্টরির আওয়াজে বোঝা যাচ্ছে এখন কাজের সময়। বাংলোয় ঢোকার সময় যে দরোয়ান গেট খুলেছিল, তাকে দেখতে অনেকটা হিন্দি সিনেমার অনুপম খেরের মতো।

গাড়ির শব্দ পেয়েই সিঁড়ি বেয়ে যে মানুষটি নেমে এলেন তাঁকে অর্জুন চেনে। ইদানীং জলপাইগুড়ির বেশ কিছু অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ইনি উপস্থিত হন। ছিপছিপে পেটা শরীরের পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিটি একসময় পাহাড়ে উঠতেন। ভদ্রলোক হাত তুলে হাসতে-হাসতে বললেন, ওয়েলকাম, ওয়েলকাম, এই চা-বাগানে আপনাদের পেয়ে আমি খুব গর্বিত। কি অর্জুনবাবু, ভাল আছেন?

হ্যাঁ, আপনি?

চলে যাচ্ছে ভাই। পাণ্ডববর্জিত হয়ে থাকি, তবু তৃতীয় পাণ্ডবের সান্নিধ্য পাব বলে এখন পুলকিত। আসুন সার, আমি ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়। মেজরের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন ভদ্রলোক।

আমি বোধ হয় আপনার নাম শুনেছি। আপনি অভিনেতা? মেজর বেশ হাসি-হাসি মুখে হাত ঝাঁকালেন।

না সার! তিনি আমার শ্রদ্ধার মানুষ এবং অনেক বয়স্ক। সেই ভানুবাবু থাকতেন কলকাতায়। তাঁর সঙ্গে আমার নামের মিলের জন্যে প্রথমে সঙ্কোচ বোধ করতাম, এখন করি না। আপন পরিচয় আমি একটু আগে অমলবাবুর কাছে শুনেছি, আসুন, লাঞ্চ রেডি।

কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে এসে অর্জুন বুঝল, চা বাগানের ম্যানেজাররা বেশ আরামেই থাকেন। সুন্দর সাজানো ড্রইংরুমের সোফায় বসে ছিলেন অমল সোম, সামনের গ্লাসে পানীয়, জিজ্ঞেস করলেন, পথে কোথায় কোথায় নেমেছিলে?

আমি বেশি স্পিড নিতে পারিনি; অবশ্য এক জায়গায় একটু সময় নষ্ট হয়েছে। অর্জুন বলল।

আপনার শরীরের অবস্থা কেমন মেজর?

নামার সময় মনে হচ্ছিল কোমরের নীচটা নেই। হরিল রাস্তা।

আমি এমনটা হবে আন্দাজ করেছিলাম। হাসিমারায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই ভানুবাবুর কথা মনে এল। কোনও-কোনও মানুষের সহ্যশক্তি সাধারণের চেয়েও বেশি। ভানুবাবুও তেমনই। তারপর এসে যখন জানতে পারলাম ওঁর স্ত্রী চন্দ্রিমা এখন কল্যাণীতে, তখন মনে হল আজকের দিনটায় এখানে জেঁকে বসা যেতে পারে। অমল সোম হাসলেন।

একথা চন্দ্রিমা শুনলে দুঃখ পাবে। ও থাকলে আরও বেশি যত্ন করত। ভানুবাবু প্রতিবাদ করলেন।

আমি ওঁকে দুঃখ দিতে চাইনি। কিন্তু তিনটে উটকো লোককে উনি কেনই বা যত্ন করতে যাবেন!

ভানুবাবু মাথা নাড়লেন, তারপর জিজ্ঞেস করলেন, লাঞ্চের আগে কোনও ড্রিঙ্ক?

মেজর মাথার ওপর হাত তুললেন, নো। আমি, যাকে বলে প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত, ঠিক তাই।

টেবিলে বসে খাবারের ব্যবস্থা দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল। খানসামা খাবার পরিবেশন করছিল। মেজর খেতে-খেতে দারুণ, ডিলিসিয়াস, ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করছিলেন। অমল সোম বললেন, মেজর, ভানুবাবু এডমন্ড হিলারির সঙ্গে এভারেস্টে ইয়েতিব সন্ধানে গিয়েছিলেন।

খাওয়া থামিয়ে মেজর কিছুক্ষণ তাকালেন, বঙ্গ সন্তান হয়ে সাহেবকে বোঝাতে পারলেন, যা-যা দেখতে পাওয়া গেল না—তা নেই বলে ঘোষণা করা ঠিক নয়?

আমরা কোনও প্রমাণ পাইনি।

আপনারা না পেতে পারেন, আমি পেয়েছি। আমি একবার তেইশ হাজার ফুট উঁচুতে তিন রাত্তিব ছিলাম। প্রচণ্ড তুষারঝড়ের জন্যে না পারছিলাম এগোতে, না পিছোতে। আমার সঙ্গী ছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্রায়ান নিকলসন। নামকরা মাউন্টেনিয়ার। তৃতীয় দিনে ব্রায়ানকে টেন্টে রেখে আমি একটু বেরিয়েছিলাম বরফের কন্ডিশন বুঝতে। মিনিট তিনেক গিয়েছি, এমন সময় চিৎকার কানে আসতেই কোনও রকমে ফিরে এলাম টেস্টে। দেখলাম ব্রায়ান অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। ওর জ্ঞান ফিরতেই ভয়ার্ত গলায় বলল, সেখানে থাকবে না। আমি বেরিয়ে যেতে সে টেস্টের বাইরে পা বাড়িয়ে চারপাশ দেখছিল, এমন সময় কেউ তার মাথায় আঘাত করে। ওকে যে টেনে টেস্টের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তার দাগ তখনও স্পষ্ট। অবশ্য টিনফুডের কয়েকটা কৌটো ছাড়া কিছু খোয়া যায়নি। তবে বরফের ওপর আমি সেই পায়ের ছাপ দেখেছিলাম, হিলারি যাকে পাহাড়ি মানুষের পদচিহ্ন বলেছেন। বাট মাই ডিয়ার ফ্রেন্ড, পাহাড়ি মানুষ ওই উচ্চতায় এবং অমন ওয়েদারে কাউকে আঘাত করার জন্যে নিশ্চয়ই ঘুরে বেড়াবে না। মেজর একটানা বলে গেলেন।

ভানুবাবু চুপচাপ শুনছিলেন। বললেন, এই ঘটনায় প্রমাণ হচ্ছে না, যে আঘাত করেছিল সে একজন ইয়েতি। হিংস্র প্রাণী নিজের অজান্তেই অস্তিত্ব গোপন করতে পারে না। ব্রায়ানকে সে আঘাত করতে যাবে কেন? আর টিনফুডের ব্যবহার কোনও ইয়েতি জানে, এটাও–। ভানুবাবু হাসলেন।

 

তা হলে ওখানে কে গিয়েছিল?

হ্যাঁ, সেটা রহস্য! কিন্তু রহস্যের সমাধান হওয়ার আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।

অমল সোম এবার কথা বললেন, এবার আমার সিদ্ধান্তে আসি। ইয়েতি নেই শুনতে ভাল লাগছে না। আবার একজন ইয়েতিকে বাক্সবন্দি করে চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয়েছে ভাবলেও খারাপ লাগে। অতএব ওই রহস্যের সমাধান হওয়ার আগে ইয়েতি যেমন আছে তেমন থাকুক।

মেজর মাথা নাড়লেন। তারপর বললেন, মিস্টার ব্যানার্জি, আপনার এখান থেকে নীলগিরির জঙ্গল কতটা দুরে? গিয়েছেন কখনও?

ভানুবাবু মাথা নাড়লেন, বড়জোর আধঘণ্টা লাগে। কাজেকর্মে যেতে তো হয়ই।

ওখানকার কোনও রহস্যের খবর রাখেন?

যেমন?

একটি ফুল আছে। তার গন্ধে যে বিষক্রিয়া হয়, তাতে একজন মানুষ মারা যেতে পারে।

হ্যাঁ, এরকম একটা গুজব কানে এসেছে বটে কিন্তু প্রমাণ পাইনি।

ফুলটাকে খোঁজার চেষ্টা করেছেন?

না। তার জন্যে ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট রয়েছে।

অমল সোম বললেন, মেজর ওই ফুলের সন্ধানে এসেছেন।

ইন্টারেস্টিং! আমি এ ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করতে পারি। নীলগিরির রেঞ্জারসাহেব আমার বিশেষ পরিচিত। আগামীকালই আমরা তাঁর কাছে যেতে পারি। কিন্তু আপনি তো আমেরিকায় থাকেন। নীলগিরির খবরটা কী করে পেলেন?

মেজর জবাব না দিয়ে হাসতে লাগলেন এমন ভঙ্গিতে যে, গোপন তথ্য প্রকাশ করবেন না।

অর্জুন জিজ্ঞেস করল, এদিকের জঙ্গলে জীবজন্তু কীরকম আছে?

আটত্রিশ রকমের প্রাণীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।

মাই গড! আটত্রিশ? মেজর বললেন।

হ্যাঁ, ভালুকই তিন রকমের, শ্লথ ভালুক, কালো ভালুক আর হগ বিয়ার। এরা খুদি-খুদি ভালুক। আর্কটনিক্স কোলারিস। বাঘ সাত রকমের। সাধারণ বাঘ, চিতাবাঘ, ক্লাউডেড লেপার্ড, এদের বক্সা পাহাড়ে পাওয়া যায়, নিওফেলিস নেবুলোসা, লেপার্ড ক্যাট, জাঙ্গল ক্যাট, নেসার ক্যাট, সিভেট ক্যাট। কেউ-কেউ অবশ্য বিরল হয়ে আসছে। আমার বাগানে মাঝে-মাঝেই চিতার উৎপাত হয়। পাতা তোলার সময় শ্রমিকরা আক্রান্ত হলে ব্যবস্থা নিতে হয়। বাগানের মধ্যে আমাকে ফাঁদ পাততে হয়েছে। গত রাতেই সেই ফাঁদে একটা প্রমাণ সাইজের চিতাবাঘ ধরা পড়েছে। ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টকে খবর দিয়েছি, তারা এসে সাহেবকে নিয়ে যাবেন।

খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলে বাইরের ঘরে এসে অর্জুনের মনে পড়ল। সে জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা, ব্যানার্জি টি গার্ডেন্সটা কোথায়?

নীলগিরির ওপাশে। ভানুবাবু জবাব দিলেন।

সঙ্গে সঙ্গে মেজর উত্তেজিত গলায় বললেন, আপনি কি নীল চ্যাটার্জিকে চেনেন?

ভানুবাবু অবাক হয়ে তাকালেন, সর্বনাশ! নীলকে আপনারা চিনলেন কী করে? বিশেষ করে আপনার তো ওকে চেনার কথাই নয়।

অমল সোম জিজ্ঞেস করলেন, লোকটা কে?

ওই ব্যানার্জি টি কোম্পানির ভবিষ্যৎ মালিক। মিসেস ব্যানার্জির ভাই। কিন্তু এটাই ওর একমাত্র পরিচয় নয়। ড়ুয়ার্সের এই তল্লাটে এমন কেউ নেই, যে ওকে ভয় না পায়। ওর মন বলে কোনও বস্তু নেই।