২০. হযরত সালিহ (আ)-এর বর্ণনা

হযরত সালিহ (আ)-এর বর্ণনা

ছামূদ একটি ইতিহাসপ্রসিদ্ধ জাতি। তাদের পূর্ব-পুরুষ ‘ছামূদ’ এর নামানুসারে এ জাতির নামকরণ করা হয়েছে। ছামুদ-এর আর এক ভাই ছিল জুদায়স। তারা উভয়ে ‘আবির ইব্‌ন ইরাম ইব্‌ন সাম ইব্‌ন নূহ)-এর পুত্র। এরা ছিল আরবে আরিবা তথা আদি আরব সম্প্রদায়ের লোক। হিজায ও তবৃকের মধ্যবতী ‘হিজর’ নামক স্থানে তারা বসবাস করত। তবুক যুদ্ধে যাওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (স) এই পথ দিয়ে অতিক্রম করেছিলেন- এর বর্ণনা পরে আসছে। আদি জাতির পর ছামূদ জাতির অভু্যদয় ঘটে। তাদের মত এরাও মূর্তি পূজা করত। এদেরই মধ্য থেকে আল্লাহ তাঁর এক বান্দা সালিহ (আ)-কে রাসূল রূপে প্রেরণ করেন। তাঁর বংশ লতিকা

ইরাম ইব্‌ন সাম ইব্‌ন নূহ (আ)। তিনি তাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদত করতে, তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করতে এবং মূর্তিপূজা ও শিরক বর্জনের নির্দেশ দেন। ফলে কিছু সংখ্যক লোক তাঁর প্রতি ঈমান আনে। কিন্তু অধিকাংশ লোকই কুফৱীতে লিপ্ত থাকে এবং কথায়-কাজে তাকে কষ্ট দেয় এমনকি এক পর্যায়ে তাকে হত্যা করতেও উদ্যত হয়। তারা নবীর সেই উটনীটিকে হত্যা করে ফেলে যাকে আল্লাহ তা’আলা নবুওতের প্রমাণস্বরূপ প্রেরণ করেছিলেন। তখন আল্লাহ তাদেরকে শক্তত্বাবে পাকড়াও করেন। এ প্রসংগে সূরা আ’রাফে আল্লাহ বলেন :

ছামূদ জাতির নিকট তাদের স্ব-গোত্রীয় সালিহকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ নেই। তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে স্পষ্ট নিদর্শন এসেছে। আল্লাহর এ উটনীটি তোমাদের জন্যে একটি নিদর্শন। একে আল্লাহর যমীনে চরে খেতে দাও এবং একে কোন ক্লেশ দিও না। দিলে তোমাদের উপর মর্মসুদ শাস্তি আপতিত হবে। স্মরণ কর, ‘আদি জাতির পর তিনি তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন, তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে, তোমরা সমতল ভূমিতে প্রাসাদ ও পাহাড় কেটে বাস-গৃহ নির্মাণ করছি। সুতরাং আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটিয়াে না।

তার সম্প্রদায়ের দাম্ভিক প্রধানরা সেই সম্প্রদায়ের ঈমানদার যাদের দুর্বল মনে করা হত তাদের বলল, তোমরা কি জান যে, সালিহ্ আল্লাহ্ কর্তৃক প্রেরিত? তারা বলল, ‘তার প্রতি যে বাণী প্রেরিত হয়েছে আমরা তাতে বিশ্বাসী। দাম্ভিকেরা বলল, তোমরা যা বিশ্বাস কর আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। তখন তারা সেই উটনীটি বধ করে এবং আল্লাহর আদেশ অমান্য করে এবং বলে, ‘হে সালিহ! তুমি রাসূল হলে আমাদের যার ভয় দেখােচ্ছ তা নিয়ে এসো।’ তারপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হয়। ফলে তাদের প্রভাত হল নিজ গৃহে অধঃমুখে পতিত অবস্থায়। তারপর সে তাদের নিকট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! আমি তো আমার প্রতিপালকের বাণী তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছিলাম এবং তোমাদেরকে হিতোপদেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তোমরা তো হিতাকাজকীদেরকে পছন্দ কয় না।’ (সূরা আ’রাফ, ৭৩-৭৯)

ছামূদ জাতির নিকট তাদের স্বগোত্রীয় সালিহকে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি তোমাদেরকে ভূমি থেকে সৃষ্টি করেছেন। এবং তাতেই তিনি তোমাদেরকে বসবাস করিয়েছেন। সুতরাং তার ক্ষমা প্রার্থীনা কর ও তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন কর। আমার প্রতিপালক নিকটেই, তিনি আহবানে সাড়া দেন।’ তারা বলল, ‘হে সালিহ! এর পূর্বে তুমি ছিলে আমাদের আশা-স্থল। তুমি কি আমাদেরকে নিষেধ করছি। ইবাদত করতে তাদের, যাদের ইবাদত করত। আমাদের পিতৃ-পুরুষরা? আমরা অবশ্যই বিভ্রান্তিকর সন্দেহ পোষণ করি সে বিষয়ে, যার প্রতি তুমি আমাদেরকে আহবান করছ।’ সে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কি ভেবে দেখেছ, আমি যদি আমার প্রতিপালক প্রেরিত স্পষ্ট প্রমাণে প্রতিষ্ঠিত হয়ে থাকি এবং তিনি যদি আমাকে তাঁর নিজ অনুগ্রহ দান করে থাকেন, তবে আল্লাহর শান্তি থেকে আমাকে কে রক্ষা করবে, আমি যদি তাঁর অবাধ্যতা করি? সুতরাং তোমরা তো কেবল আমার ক্ষতিই বাড়িয়ে দিচ্ছি।

হে আমার সম্প্রদায়!! আল্লাহর এ উটনীটি তোমাদের জন্যে একটি নিদর্শন। একে আল্লাহর যমীনে চরে খেতে দাও। একে কোন ক্লেশ দিও না, ক্লেশ দিলে আশু শান্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে।’ কিন্তু তারা ওকে বধ করল। তারপর সে বলল, তোমরা তোমাদের ঘরে তিনদিন জীবন উপভোগ করে লও। এই একটি প্রতিশ্রুতি যা মিথ্যা হবার নয়। এবং যখন আমার নির্দেশ আসল, তখন আমি সালিহ ও তাঁর সংগে যারা ঈমান এনেছিল তাদেরকে আমার অনুগ্রহে রক্ষা করলাম এবং রক্ষা করলাম। সে দিনের লাঞ্ছনা হতে। তোমার প্রতিপালক তো শক্তিমান, পরাক্রমশালী। তারপর যারা সীমালংঘন করেছিল মহা নাদ তাদেরকে আঘাত করল, ফলে ওরা নিজ নিজ ঘরে নতজানু অবস্থায় শেষ হয়ে গেল। যেন তারা সেথায় কখনও বসবাস করেনি। জেনে রেখ! ছামূদ জাতি তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করেছিল। জেনে রেখ!

ংসই হল ছামূদ জাতির পরিণাম (সূরা হ্রদ : ৬১-৬৮)

সূরা হিজরে আল্লাহ বলেন :

হিজরবাসিগণও রাসূলগণের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল। আমি তাদেরকে আমার নিদর্শন দিয়েছিলাম, কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেছিল। তারা পাহাড় কেটে ঘর তৈরি করত নিরাপদ বাসের জন্যে। তারপর প্রভাতকালে এক মহা নাদ তাদেরকে আঘাত করল। সুতরাং তারা যা অর্জন করেছিল তা তাদের কোন কাজে আসেনি। (সূরা হিজুর : ৮০-৮৪)

পূর্ববর্তিগণ কর্তৃক নিদর্শন অস্বীকার করাই আমাকে নিদর্শন প্রেরণ করা থেকে বিরত রাখে। আমি শিক্ষাপ্রদ নিদর্শনস্বরূপ ছামূদ জাতিকে উটনী দিয়েছিলাম, অতঃপর তারা ওর প্রতি জুলুম করেছিল। আমি ভীতি প্রদর্শনের জন্যেই নিদর্শন প্রেরণ করি। (সূরা ইসরা : ৫৯)

সূরা শু’আরায় আল্লাহ বলেনঃ

ছামূদ সম্প্রদায় রাসূলগণকে অস্বীকার করেছিল। যখন ওদের স্বগোত্রীয় সালিহ তাদেরকে বলল, ‘তোমরা কি সাবধান হবে না? আমি তো তোমাদের জন্যে এক বিশ্বস্ত রাসূল। অতএব, আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর, আমি তোমাদের নিকট এর জন্যে কোন প্রতিদান চাই না; আমার পুরস্কার তো জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকটেই আছে। তোমাদেরকে কি নিরাপদে ছেড়ে রাখা হবে, যা এখানে আছে তাতে-উদ্যানে, প্রস্রবণে ও শস্যক্ষেত্রে এবং সুকোমল গুচ্ছবিশিষ্ট খেজুর বাগানে? তোমরা তো নৈপুণ্যের সাথে পাহাড় কেটে ঘর তৈরি করছি। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং আমার আনুগত্য কর এবং সীমালংঘনকারীদের আদেশ

J (द्र न।

যারা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, শান্তি স্থাপন করে না তারা বলল, ‘তুমি তাে জাদুগ্রস্তদের অন্যতম। তুমি তো আমাদের মত একজন মানুষ, কাজেই তুমি যদি সত্যবাদী হও একটি নিদর্শন উপস্থিত কর। সালিহ বলল, এই যে উটনী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে পানি পানের পালা, নির্ধারিত এক এক দিনে; এবং এর কোন অনিষ্ট

সাধন করো না; করলে মহা দুবসের শাস্তি তােমাদের উপর আপতিত হবে। কিন্তু ওরা ওকে বধ করল, পরিণামে ওরা অনুতপ্ত হল। তারপর শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করল। এতে অবশ্যই

রয়েছে নিদর্শন, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মু’মিন নয়। তোমার প্রতিপালক, তিনি তো পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু। (সূরা শু’আরা : ১৪১-১৫৯)

। i OOG

সূরা নামলে আল্লাহ বলেন :

আমি অবশ্যই ছামূদ সম্প্রদায়ের নিকট তাদের স্বগোত্রীয় সালিহকে পাঠিয়েছিলাম। এ আদেশসহ, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, কিন্তু ওরা দ্বিধা বিভক্ত হয়ে বিতর্কে লিপ্ত হল। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কেন কল্যাণের পূর্বে অকল্যাণ ত্বরান্বিত করতে চােচ্ছ? কেন তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থীনা করছি না, যাতে তোমরা অনুগ্রহভাজন হতে পার? তারা বলল, ‘তোমাকে ও তোমার সংগে যারা আছে তাদের আমরা অমংগলের কারণ মনে করি।’ সালিহ্ বলল, ‘তোমাদের শুভাশুভ আল্লাহ্র ইখতিয়ারে, বস্তুত তোমরা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।’

/আর সে শহরে ছিল এমন নয় ব্যক্তি, যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করত এবং সৎকর্ম করত না। তারা বলল, তোমরা আল্লাহর নামে শপথ গ্ৰহণ কর, ‘আমরা রাতের বেলা তাকে ও তার পরিবার-পরিজনকে অবশ্যই আক্রমণ করব, তারপর তার অভিভাবককে নিশ্চয় বলব, তার পরিবার-পরিজনের হত্যা আমরা প্ৰত্যক্ষ করিনি; আমরা অবশ্যই সত্যবাদী।’ তারা এক চক্রান্ত করেছিল এৰং আমিও এক কৌশল অবলম্বন করলাম, কিন্তু ওরা বুঝতে পারেনি। অতএব দেখ, তাদের চক্রান্তের পরিণাম কী হয়েছে -আমি অবশ্যই তাদেরকে ও তাদের সম্প্রদায়ের সকলকে ধ্বংস করেছি। এই তো ওদের ঘরবাড়ি- সীমালংঘনের কারণে যা জনশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে; এতে জ্ঞানী-সম্প্রদায়ের জন্যে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে এবং যারা মু’মিন ও মুত্তাকী ছিল তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছি। (সূরা নামিল : ৪৫-৫৩) /

সূরা হা-মীম-আস-সাজদায় আল্লাহর বাণী :

আর ছামুদ সম্প্রদায়ের ব্যাপার তো এই যে, আমি তাদেরকে পথ-নির্দেশ করেছিলাম, কিন্তু তারা সৎপথের পরিবর্তে ভ্রান্তপথ অবলম্বন করেছিল। তারপর তাদেরকে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি আঘাত হানল তাদের কৃতকর্মের পরিণামস্বরূপ। আমি উদ্ধার করলাম তাদেরকে যারা ঈমান এনেছিল এবং তাকওয়া অবলম্বন করত। (সূরা হা-মীম-আস-সােজদা : ১৭ : ১৮)

সূরা কামারে আল্লাহ বলেন :

ছামূদ সম্প্রদায় সতর্ককারিগণকে মিথ্যাবাদী বলেছিল। তারা বলেছিল, আমরা কি আমাদেরই এক ব্যক্তির অনুসরণ করব? তবে তো আমরা বিপথগামী এবং উন্মাদরূপে গণ্য হব। আমাদের মধ্যে কি ওরই প্রতি প্রত্যাদেশ হয়েছে? না, সে তো একজন মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক। আগামীকাল তারা জানবে, কে মিথ্যাবাদী, দাম্ভিক। আমি তাদের পরীক্ষার জন্যে পাঠিয়েছি। এক উটনী। অতএব, তুমি ওদের আচরণ লক্ষ্য কর এবং ধৈর্যশীল হও। এবং ওদেরকে জানিয়ে দাও যে, ওদের মধ্যে পানি বণ্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশের জন্যে প্ৰত্যেকে উপস্থিত হবে পালাক্রমে। তারপর তারা তাদের এক সংগীকে আহবান করল, সে ওকে ধরে হত্যা করল। কী কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী! আমি ওদেরকে আঘাত হেনেছিলাম এক মহানাদ দ্বারা; ফলে ওরা হয়ে গেল খোয়াড় প্রস্তুতকারীর বিখণ্ডিত শুকনো শাখা-প্ৰশাখার মত। আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্যে; অতএব, উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি? (সূরা

কামার : ২৩-৩২)

ولاً یکخافه قباها. ছামুদ সম্প্রদায় অবাধ্যতাবশত অস্বীকার করেছিল। তাদের মধ্যে যে সর্বাধিক হতভাগ্য, সে যখন তৎপর হয়ে উঠল, তখন আল্লাহর রাসূল তাদেরকে বলল, আল্লাহর উটনী এবং ওকে পানি পান করাবার ব্যাপারে সাবধান হও। কিন্তু তারা রাসূলকে অস্বীকার করে এবং ওকে কেটে ফেলে। তাদের পাপের জন্যে তাদের প্রতিপালক তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে একাকার করে দিলেন এবং এর পরিণামের জন্যে আল্লাহর আশংকা করার কিছু নেই। (সূরা শাম্স : ১১-১৫)

Woo

আল্লাহ কুরআনের বহু স্থানে আদ ও ছামূদ জাতির উল্লেখ একসাথে পাশাপাশি করেছেন। যেমন সূরা বারাআত, সূরা ইবরাহীম, সূরা ফুরকান, সূরা সাদ, সূরা কাফ, সূরা নাজম ও সূরা ফজুর। বলা হয়ে থাকে যে, এই দুটি জাতি সম্পর্কে আহলিকিতাবরা কিছুই জানতো না এবং তাদের তাওরাত কিতাবেও এ সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। কিন্তু পবিত্র কুরআন থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, হযরত মূসা (আ) এ দুই জাতি সম্পর্কে তাঁর সম্প্রদায়কে অবগত করেছিলেন। যেমন সূরা ইবরাহীমে আছেঃ

মূসা বলেছিল, তোমরা এবং পৃথিবীর সকলেই যদি অকৃতজ্ঞ হও, তথাপি আল্লাহ অমুখাপেক্ষী এবং প্রশংসাৰ্থ। তোমাদের নিকট কি সংবাদ আসেনি তোমাদের পূর্ববতীদেরনূহের সম্প্রদায়ের, আন্দের ও ছামুদিদের এবং তাদের পরবর্তীদের? তাদের বিষয় আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ জানে না। তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের রাসূল এসেছিল (সূরা

ইবরাহীম : ৮-৯) –

এ আয়াত থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, এখানে সবগুলো কথাই মূসা (আ)-এর যা তিনি নিজের জাতির উদ্দেশে বলেছিলেন। কিন্তু আদি ও ছামুদ সম্প্রদায় দুটি যেহেতু আরব জাতির অন্তর্ভুক্ত, তাই বনী ইসরাঈলরা এদের ইতিহাস ভালভাবে সংরক্ষণ করেনি এবং গুরুত্ব-সহকারে স্মরণও রাখেনি; যদিও মূসা (আ)-এর সময়ে বনী ইসরাঈলদের মধ্যে তাদের ঘটনা মশহুর ছিল। আমার তাফসীর গ্রন্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। সমস্ত প্ৰশংসাই আল্লাহর।

এখন ছামূদ জাতির অবস্থা ও তাদের ঘটনা বর্ণনা করাই আমাদের উদ্দেশ্য। অর্থাৎ আল্লাহ তাঁর নবী হযরত সালিহ (আ)-কে ও যারা তার উপর ঈমান এনেছিল তাদেরকে কিভাবে আযাব থেকে বাঁচিয়ে রাখেন, আর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণকারী, অত্যাচারী কাফিরদেরকে কিভাবে নিৰ্ম্মল করেছিলেন এখন তা বর্ণনা করা হবে। পূর্বেই বলা হয়েছে যে, ছামূদ সম্প্রদায় জাতিতে ছিল আরব। আদি সম্প্রদায়ের ধ্বংস হবার পর ছামূদ সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হয়। তারা তাদের অবস্থা থেকে কোন শিক্ষা গ্রহণ করেনি। এ কারণেই তাদের নবী তাদেরকে বলেছিলেন :

হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের অন্য কোন ‘ইলাহ নেই। তোমাদের নিকট তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে স্পষ্ট নিদর্শন এসেছে। আল্লাহর এই উটনী তোমাদের জন্যে একটি নিদর্শন। একে আল্লাহর জমিতে চরে খেতে পাও এবং একে কোন ক্লেশ দিও না, দিলে মর্মসুদ শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে। স্মরণ কর, আদি জাতির পর তিনি তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করেছেন, তিনি তোমাদেরকে পৃথিবীতে এমনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন যে, তোমরা সমতল ভূমিতে প্রাসাদ ও পাহাড় কেটে বাসগৃহ নির্মাণ করছি। সুতরাং আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর এবং পৃথিবীতে বিপর্যয় ঘটিয়াে না। (शूझा जा’ब्राय 8 १७-१8)

অর্থাৎ আদি জাতিকে ধ্বংস করে তোমাদেরকে তাদের স্থলাভিষিক্ত করার উদ্দেশ্য এই যে,

তাদের ঘটনা থেকে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে এবং তারা যে সব অন্যায় আচরণ করত। তোমরা তা করবে না। এ যমীন তোমাদের আয়ত্তাধীন করে দেয়া হয়েছে। এর সমভূমিতে তোমরা অট্টালিকা নির্মাণ করছি আর পাহাড় কেটে সুনিপুণভাবে তাতে ঘরবাড়ি তৈরি করছি। অতএব, এর অনিবাৰ্য দাবি হিসেবে এসব নিয়ামতের শোকর আদায় কর, সৎকর্মে তৎপর থাক, একনিষ্ঠভাবে এক আল্লাহ্র বন্দেগী করা যায় কোন শরীক নেই। তাঁর নাফরমানী ও দাসত্ব থেকে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে সাবধান থাক। কেননা, এর পরিণতি খুবই জঘন্য।

এ উদ্দেশ্যে নবী এ বাণী দ্বারা উপদেশ দিচ্ছেন :

তোমাদেরকে কি এ জগতের ভোগ-বিলাসের মধ্যে নিরাপদে রেখে দেয়া হবে?

উদ্যানসমূহের মধ্যে ও ঝরনাসমূহের মধ্যে শস্যক্ষেত্রের মধ্যে ও মঞ্জুরিত খেজুর বাগানের মধ্যে? (সূরা শু’আরাঃ ১৪৬-১৪৮)

তোমরা পাহাড় কেটে জাকজমকের ঘরবাড়ি নির্মাণ করছি। সুতরাং আল্লাহকে ভয় কর ও আমার আনুগত্য কর এবং সীমালংঘনকারীদের আদেশ মান্য করো না-যারা পৃথিবীতে অনর্থ সৃষ্টি করে এবং শান্তি স্থাপন করে না। (সূরা। শু’আরা : ১৪১-১৪২)

নবী তাদেরকে আরও বললেন, :

হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা আল্লাহর দাসত্ব কবুল কর। তিনি ব্যতীত তোমাদের আর কোন ইলাহ নেই। তিনিই তোমাদেরকে যমীন থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার মধ্যেই বসবাস করার সুবিধা দিয়েছেন। অর্থাৎ আল্লাহু তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং যমীন থেকে উদ্ভাবন

VO)

করেছেন। তারপর তোমাদেরকেই যমীনের আবাদকারী বানিয়েছেন। অর্থাৎ পৃথিবীর যাবতীয় শস্য এবং ফল-ফলাদি তােমাদেরকে প্রদান করেছেন। এভাবে তিনিই তােমাদের সৃষ্টিকারী ও রিফিকদাতা। সুতুরাং ইবাদত পাওয়ার হকদার একমাত্র তিনিই, অন্য কেউ নয়। 432.a; A.L. — -2,1:23, 24 অতএব, তাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থীনা কর ও তওবা কর। অর্থাৎ তােমাদের বর্তমান কর্মনীতি’ পরিহার করে তাঁর ইবাদতের দিকে ধাবিত হও; তোমাদের ইবাদত

ইসতিগৃফার কবুল করবেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেবেন।

‘আমার প্রতিপালক নিকটেই আছেন, তিনি তওবা কবুল করবেন-এতে কোন সন্দেহ নেই। তারা বলল, হে সালিহ্! ইতিপূর্বে তোমার উপর আমাদের বড় আশা ছিল।’ অর্থাৎ তোমার এই জাতীয় কথাবার্তা বলার পূর্বে আমাদের আশা ছিল যে, তুমি একজন প্রজ্ঞাবান লোক হবে। কিন্তু আমাদের সে আশা ভূ-লুষ্ঠিত হল—এখন তুমি আমাদেরকে এক আল্লাহর ইবাদত করতে, আমরা যে দেবতাদের পূজা করছি সেগুলো বর্জন করতে ও বাপ-দাদার ধর্ম ত্যাগ করতে বলছি। এ জন্যেই তারা বলল?

আমাদের বাপ-দাদারা যাদের পূজা করত, তুমি কি আমাদেরকে তাদের পূজা করতে নিষেধ করছো? তুমি আমাদেরকে আহবান জানাচ্ছি, সে বিষয়ে আমরা অবশ্যই বিভ্রান্তিকর সন্দেহ পোষণ করি। সে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা কি ভেবে দেখেছে। আমি যদি আমার

অনুগ্রহ দান করে থাকেন, তারপর আমি যদি তাঁর অবাধ্যতা করি, তবে তাঁর শাস্তি থেকে আমাকে কে রক্ষা করবে? তোমরা তো কেবল আমার ক্ষতিই বাড়িয়ে দিচ্ছে। (সূরা হ্রদ : VS-VO)

এ হচ্ছে হযরত সালিহ (আ.)-এর কোমল ভাষার প্রয়োগ ও সৌজন্যমূলক আচরণের মাধ্যমে তাদেরকে কল্যাণের পথে আহবান। অর্থাৎ তোমাদের কী ধারণা-যদি আমি তোমাদেরকে যেদিকে আহবান জানাচ্ছি তা প্রকৃতপক্ষে সত্য হয়ে থাকে। তবে আল্লাহর নিকট তোমাদের কি ওজর থাকবে এবং তখন তোমাদেরকে কিসে মুক্তি দেবে? অথচ তোমরা আমাকে আল্লাহর দিকে দাওয়াতের কাজ পরিহার করতে বলছি আর তা কোনক্রমেই আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কেননা, এটি আমার অপরিহার্য কর্তব্য। আমি যদি তা ত্যাগ করি, তবে তার পাকড়াও থেকে না তোমরা আমাকে বাচাতে পারবে; না অন্য কেউ, না কেউ আমাকে সাহায্য করতে সক্ষম হবে। সুতরাং তোমাদের ও আমার মধ্যে আল্লাহর ফয়সালা আসার পূর্ব পর্যন্ত আমি লা-শরীক এক আল্লাহর দিকে আহবানের কাজ চালিয়ে যেতে থাকব।

ספס

л / AW

w, (আ)-কে তাঁর সম্প্রদায়ের লোকজন আরো বলেছিল : … এ. L/….

……. ……j)। (তুমি তো একজন জাদুগ্ৰস্ত লোক) অর্থাৎ তোমার উপর জাদুর প্রভাব পড়েছে,

محمدبر

তাই সঁকল দেবতাকে বাদ দিয়ে এক আল্লাহর ইবাদত করার জন্যে তুমি যে আমাদেরকে

আহবান জানাচ্ছি। তাতে তুমি কী বলছে তা তুমি নিজেই বুঝতে পারছে না।

অধিকাংশ আলিমই এই অর্থ করেছেন : 644.42, অর্থ ১০:2, …-। কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন যে, তােমার কাছে জাদু আছে, আঁর্থাৎ তুমি জাদুকর ( – L ৬- )। তারা এ কথা বলছে যে, তুমি একজন মানুষ, তোমার জাদু জানা আছে। তবে প্রথম অর্থই অধিকতর স্পষ্ট। যেহেতু পরেই তাদের কথা আসছে যে, তারা বলেছে : %%%%%’ |

f8) فأثبت بلايةراين كشك ملك الصنارقين 1 R ثابة R كالة STNI015 691 85 مثلك কোন একটা নিদর্শন নিয়ে এসো যদি তুমি সর্ত্যবাদী হয়ে থাক।) তাঁরা নবীর কাছে দাবি জানায়, যে কোন একটা অলৌকিক জিনিস দেখিয়ে তিনি যেন নিজের দাবির সত্যতার পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপিত করেন।

قال هزم نافهٔ لهاً شارل لگم شثرئب بیو معلوم. ولاً تم شوها پشؤو

সালিহ বলল, এই উটনী, এর জন্যে আছে পানি পানের পালা এবং তোমাদের জন্যে আছে

পানি পানের পালা-নির্দিষ্ট এক এক দিনের। তোমরা একে কোন কষ্ট দিও না, তাহলে

তোমাদেরকে মহা দিবসের আযাব পাকড়াও করবে। (সূরা শু’আরা : ১৫৩)

আল্লাহ্ তা’আলা অন্যত্র বলেন :

তোমাদের কাছে তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে স্পষ্ট নিদর্শন এসেছে। আল্লাহর এ উটনী তোমাদের জন্যে একটি নিদর্শন। অতএব, একে আল্লাহর যমীনে চরে খেতে দাও। একে কোন ক্লেশ দিও না, দিলে মর্মসুদ শাস্তি তোমাদের উপর আপতিত হবে। (সূরা আ’রাফ : ৭৩)

আল্লাহর বাণী : আমি শিক্ষাপ্রদ নিদর্শনস্বরূপ ছামূদ জাতিকে উটনী দিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা তার প্রতি জুলুম করেছিল। (সূরা বনী ইসরাঈল : ৫৯)

মুফাসসিরগণ উল্লেখ করেন, ছামূদ সম্প্রদায়ের লোকেরা একবার এক স্থানে সমবেত হয়। ঐ সমাবেশে আল্লাহর নবী হযরত সালিহ (আ) আগমন করেন। তিনি তাদেরকে আল্লাহর দিকে আহবান জানান, উপদেশ দান করেন, ভীতি প্ৰদৰ্শন করেন, নসীহত করেন এবং তাদেরকে সৎ কাজের নির্দেশ দেন। উপস্থিত লোকজন তাকে বলল, ঐ যে একটা পাথর দেখা যায়, ওর মধ্য থেকে যদি অমুক অমুক গুণসম্পন্ন একটি দীর্ঘকায় দশ মাসের গর্ভবতী উটনী বের করে দেখাতে পার, তবে দেখাও। সালিহ (আঃ) বললেন, : তোমাদের বর্ণিত গুণসম্পন্ন উটনী যদি আমি বের

ΟΣ Σ

করে দেই তাহলে কি তোমরা আমার আনীত দীন ও আমার নবুওতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে? তারা সবাই বলল : হ্যা, বিশ্বাস করব। তখন তিনি এ কথার উপর তাদের থেকে অঙ্গীকার ও প্রতিজ্ঞা গ্ৰহণ করেন। এরপর সালিহ (আঃ) সালাত আদায়ের জন্যে দাড়িয়ে যান এবং সালাত শেষে আল্লাহর নিকট তাদের আবদার পূরণ করার প্রার্থীনা করেন। আল্লাহ্ ঐ পাথরকে কেটে গিয়ে অনুরূপ গুণসম্পন্ন একটি উটনী বের করে দেয়ার নির্দেশ দেন। যখন তারা স্বচক্ষে এরূপ উটনী দেখতে পেল, তখন তারা সত্যি সত্যি এক বিস্ময়কর বিষয়, ভীতিপ্রদ দৃশ্য, সুস্পষ্ট কুদরত ও চূড়ান্ত প্রমাণই প্রত্যক্ষ করল। এ দৃশ্য দেখার পর উপস্থিত বহু লোক ঈমান আনে বটে, কিন্তু অধিকাংশ লোকই তাদের কুফৱী, গুমরাহী ও বৈরিতার উপর অটল হয়ে থাকিল।

এ জন্যেই কুরআনে বলা হয়েছে : 4, 13:21র্ব (তারা তার সাথে জুলুম করল) অর্থাৎ তাদের অধিকাংশই মানতে অস্বীকার করল এবং সত্যকে গ্ৰহণ করল না। যারা ঈমান এনেছিল তাদের প্রধান ছিল জানদা ইব্‌ন আমর ইব্‌ন মুহাল্লাত ইব্‌ন লবীদ ইব্‌ন জুওয়াস। এ ছিল ছামুদ সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা। সম্প্রদায়ের অবশিষ্ট শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিবর্গও ইসলাম গ্রহণে উদ্যত হয়, কিন্তু তিন ব্যক্তি তাদেরকে তা থেকে বিরত রাখে। তারা হল : যাওয়াব ইব্‌ন উমর ইব্‌ন লবীদ ও খাবৃবাব-এ দুইজন ছিল তাদের ধর্মগুরু এবং রাবাব ইব্‌ন সামআর ইব্‌ন জালমাস। জানদা ইসলাম গ্ৰহণ করার পর আপনি চাচাত ভাই শিহাব ইব্‌ন খলীফাকে ঈমান আনার জন্যে আহবান জানায়। সেও ছিল সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় লোক এবং ইসলাম গ্ৰহণ করার জন্যে সেও উদ্যত হয়। কিন্তু ঐ ব্যক্তিরা তাকে বাধা দিলে সে তাদের দিকেই বুকে পড়ে। এ ঘটনার

८= 3

‘আমার পরিবারের একদল লোক শিহাবকে নবীর দীন কবুল করার জন্যে আহবান জানায়। এরা সকলেই ছামূদ সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট লোক। শিহাবও সে আহবানে সাড়া দিতে উদ্যত হয়। যদি সে সাড়া দিত। তাহলে নবী সালিহ (আ) আমাদের মাঝে বিপুল ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যেত। জুওয়াব তার সঙ্গীর সাথে সুবিচার করেনি। বরং হিজর উপত্যকার কতিপয় নির্বোধি

লোক আলোর পথ দেখার পরেও মুখ ফিরিয়ে থাকে।’

এ কারণে ণ হযরত সালিহ (আঃ) তাদেরকে বললেন : আল্লাহ্র উটনী, তােমাদের জন্যে নিদর্শন)। আল্লাহর উটনী শব্দটি বলা হয়েছে উটনীর্টির মর্যাদা নির্দেশের উদ্দেশ্যে। যেমন বলা হয় ৭_LI – এ, আল্লাহর ঘর; 4_L|| w – আল্লাহর বান্দা। | <!– তােমাদের জন্যে নিদর্শন। অর্থাৎ আমি তােমাদের কাছে যে দাওয়াত নিয়ে এসেছি

এটা তার সত্যতার প্রমাণ

— ‘একে আল্লাহর যমীনে চরে খেয়ে বেড়াতে দাও এবং এর অনিষ্ট সাধন করো না। অন্যথায় এক নিকটবতী আযাব তোমাদেরকে পাকড়াও করবে।’ তারপর অবস্থা এই দাঁড়াল যে, এ

উটনীটি তাদের মধ্যে স্বাধীনভাবে যেখানে ইচ্ছা চরে বেড়াত, একদিন পর পর পানির ঘাটে

O)N

অবতরণ করত। যেদিন সে পানি পান করত সেদিন কুপের সমস্ত পানি নিঃশেষ করে ফেলত।

করে রাখতু, কথিতু আছে যে,সম্প্রদায়ের লোকজন ঐ উটনীটির দুধ পর্যাপ্ত পরিমাণ পান করত। (এ উটনীটির জন্যে রয়েছে পানি পান্তের

(আমি এ উটনী পাঠিয়েছি তাদের পরীক্ষার জন্যে) পরীক্ষা এই 6ण, जाब्रा कि थष्ठ प्रभाग जान, मा कि করে। আর প্রকৃত অবস্থা এই যে, তারা কি করবে তা আল্লাহই ভাল ড্রালেন। :484MM (অতএব, তুমি তাদের আচরণের প্রতি লক্ষ্য

4A / 2 ( m / / / a ( / সুস্পষ্ট খবর এসে পড়বে। :444 ، و نبیه ان الما A%2€ @8< (এবং তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের মধ্যে পানি বন্টন নির্ধারিত এবং পানির অংশেৰ্ম্ম জন্যে প্ৰত্যেকে উপস্থিত হবে পালাক্রমে। (সূরা কামার : ২৭-২৮)

দীর্ঘ দিন যাবত এ অবস্থা চলতে থাকায় সম্প্রদায়ের লোকেরা অধৈৰ্য হয়ে পড়ে। এর থেকে নিভৃতি লাভের জন্যে তারা একদা সমবেত হয় ও পরামর্শ করে। তারা সম্মিলিতভাবে এই সিন্ধান্ত করে যে, উটনীটিকে হত্যা করতে হবে। এর ফলে তারা উটনীটির কবল থেকে নিকৃতি পাবে এবং সমস্ত পানির উপর পূর্ণ কর্তৃত্ব তাদের প্রতিষ্ঠিত হবে। শয়তান তাদেরকে এ কাজের যুক্তি ও সুফল প্ৰদৰ্শন করল। আল্লাহর বাণী :

ان کنت مِن المزسسُلین. অতঃপর তারা সেই উটনীটি বধ করে এবং আল্লাহর আদেশ অমান্য করে এবং বলে, হে সালিহু! তুমি রাসূল হয়ে থাকলে আমাদেরকে যার ভয় দেখােচ্ছ তা নিয়ে এসো।

(সূরা আ’রাফ : ৭৭)

যে লোক উটনী হত্যার দায়িত্ব গ্ৰহণ করে তার নাম কিদার ইব্‌ন সালিফ ইব্‌ন জানন্দাসে ছিল সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা। সে ছিল গৌরবর্ণ, নীল চোখ ও পিঙ্গল চুল বিশিষ্ট। কথিত মতে, সে ছিল সালিফ-এর যারাজ সন্তান। সায়বান নামক এক ব্যক্তির ঔরসে তার জন্ম হয়। কিদার একা হত্যা করলেও যেহেতু সম্প্রদায়ের সকলের ঐকমত্যে করেছিল। তাই হত্যা করার দায়িত্ব সবার প্রতি আরোপিত হয়েছে।

ইব্‌ন জারীর (র) প্রমুখ মুফাসসির লিখেছেন : ছামূদ সম্প্রদায়ের দুই মহিলা- একজনের নাম সাদৃক। সে মাহয়া ইব্‌ন যুহায়র ইব্‌ন মুখতারের কন্যা এবং প্রচুর ধন-সম্পদ ও বংশীয় গৌরবের অধিকারী। তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করে। ফলে স্ত্রী তাকে ত্যাগ করে এবং নিজের চাচাত ভাই মিসরা ইব্‌ন মিহরাজ ইব্‌ন মাহয়াকে বলে, যদি তুমি উটনীটি হত্যা করতে পোর, তবে তোমাকে আমি বিবাহ করব। অপর মহিলাটি ছিল উনায়যা বিনত গুনায়াম ইব্‌ন মিজলায, তাকে উন্মে উছমান বলে ডাকা হতো। মহিলাটি ছিল বৃদ্ধা এবং কাফির। তার স্বামী ছিল সম্প্রদায়ের অন্যতম সর্দার যুওয়াব ইব্‌ন আমরা। এই স্বামীর ঔরসে তার চারটি কন্যা ছিল।

ס צס

মহিলাটি কিদার ইব্‌ন সালিফকে প্ৰস্তাব দেয় যে, সে যদি উটনীটি হত্যা করতে পারে। তবে তার এ চার কন্যার মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছে বিয়ে করতে পারবে। তখন ঐ যুবকদ্বয় উটনী হত্যার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং সম্প্রদায়ের লোকদের সমর্থন লাভের চেষ্টা চালায়। সে মতে, অপর সাত ব্যক্তি তাদের ডাকে সাড়া দেয়। এভাবে তারা নয়জন ঐক্যবদ্ধ হয়। কুরআনে সে কথাই বলা

আর সেই শহরে ছিল এমন নয় ব্যক্তি যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করত এবং কোন সৎকর্ম করত না। (সূরা মামল।৪৮)

তায়পায় এই নয়জন গোটা সম্প্রদায়ের কাছে যায় এবং উটনী হত্যার উদ্যোগের কথা জানায়। এ ব্যাপায়ে সকলেই তাদেরকে সমর্থন করে ও সহযোগিতায় আশ্বাস দেয়। এরপর তারা উটনীর সন্ধানে বের হয়। যখন তারা দেখতে পেল যে, উটনীটি পানির ঘাট থেকে ফিরে আসছে, তখন তাদের মধ্যকার মিসূরা নামক ব্যক্তিটি যে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে বসে ছিল সে একটি তীর তার দিকে ছুঁড়ে মারে, তীরটি উটনীটির পায়ের গোছা ভেদ করে চলে যায়। এদিকে মহিলারা তাদের মুখমণ্ডল অবারিত করে গোটা কবিলার মধ্যে উটনী হত্যার কথা ছড়িয়ে তাদেরকে উৎসাহিত করতে থাকে। কিদার ইব্‌ন সালিফ অগ্রসর হয়ে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করে উটনীটির পায়ের গোছার রগ কেটে দেয়। সাথে সাথে উটনীটি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং বিকট শব্দে চিৎকার দিয়ে ওঠে। চিৎকারের মাধ্যমে সে তার পেটের বাচ্চাকে সতর্ক করে। কিদার পুনরায় বর্শা দিয়ে উটনীটির বুকে আঘাত করে এবং তাকে হত্যা করে। ওদিকে বাচ্চাটি একটি দুর্গম পাহাড়ে আরোহণ করে তিনবার ডাক দেয়।

আবদুর রজ্জাক (র) হাসান (র) থেকে বর্ণিত : উটনীটির বাচ্চার ডাক ছিল এই : ২৭-০৬ –৷ ৩। হে আমার রব! আমার মা কোথায়? এরপর সে একটি পাথরের মধ্যে প্রবেশ করে অদৃশ্য হয়ে যায়। কারো কারো মতে, লোকজন ঐ বাচ্চার পশ্চাদ্ধাবন করে তাকেও হত্যা করেছিল।

فکائژ اضاجیه فتباطلی فایفر) . فگتلفی کان عذا پی و نفر. sigl۹۹۶۹

অতঃপর তারা তাদের এক সংগীকে আহবান করল এবং সে এসে উটনীটিকে ধরে হত্যা করল। দেখ, কি কঠোর ছিল আমার শাস্তি ও সতর্কবাণী (সূরা কামার : ২৯-৩০)

অন্যত্র আল্লাহ বলেন :

‘ওদের মধ্যে যে সর্বাধিক হতভাগ্য সে যখন তৎপর হয়ে উঠলো, তখন আল্লাহর রাসূল বলল, আল্লাহর উটনী ও তার পানি পান করার বিষয়ে সাবধান হও।’ অর্থাৎ তোমরা একে ভয়। করিও। কিন্তু তারা রাসূলকে অস্বীকার করল এবং উটনীটিকেও হত্যা করে ফেললো।

তাদের পাপের জন্যে তাদের প্রতিপালক তাদেরকে সমূলে ধ্বংস করে একাকার করে দিলেন এবং এর পরিণামের জন্য আল্লাহর আশঙ্কা করার কিছু নেই। (সূরা শামস : ১২-১৫)  (১ম খণ্ড) ৪০

WOS8

ইমাম আহমদ (র) আবদুল্লাহ ইব্‌ন নুমােয়র (র) সূত্রে আবদুল্লাহ ইব্‌ন যাম’আ (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা) একবারু ভাষণ দিতে গিয়ে উটনী ও তার হত্যকারীর প্রসংগ উল্লেখ করেছিলেন : LAL… … এ.423 J (তাদের মধ্যে যে সর্বাধিক হতভাগা সে যখন তৎপর হয়ে উঠল) যে লোকটি তৎপর হয়েছিল সে অত্যন্ত কঠিন, রূঢ় ও কওমের সর্দার। আবু যাম’আর ন্যায় মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক লিখেছেন, ইয়ায়ীদ ইব্‌ন মুহাম্মদ আম্মার ইব্‌ন ইয়াসির (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : হে আলী! আমি কি তোমাকে মানব গোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় দুই হতভাগার কথা শুনাব? আলী (রা) বললেন, বলুন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ একজন হল ছামূদ সম্প্রদায়ের সেই গৌরবর্ণ লোকটি, যে উটনী হত্যা করেছিল; আর দ্বিতীয়জন হল সেই ব্যক্তি যে তোমার এই স্থানে (অর্থাৎ মস্তকের পার্শ্বে) আঘাত করবে, যার ফলে এটা অর্থাৎ দাড়ি ভিজে যাবে। ইব্‌ন আবু হাতিম (র) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ

ऊ’ज्ञाब्लां ब्लन् १

অতঃপর তারা সেই উটনী বধ করে এবং আল্লাহর আদেশ অমান্য করে এবং বলে, হে সালিহ! তুমি রাসূল হয়ে থাকলে আমাদেরকে যার ভয় দেখােচ্ছ তা আনয়ন করা। (সূরা আরাফ :৭৭)

এই উক্তির মধ্যে তারা কয়েকটি জঘন্য কুফৱী কথা বলেছে। যথা : (১) আল্লাহ যে উটনী তাদের জন্যে নিদর্শন রূপে পাঠিয়ে তাকে কোন প্রকার কষ্ট দিতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছিলেন, তারা তাকে হত্যা করে আল্লাহ ও রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে। (২) আযাব আনয়নের জন্যে তারা বেশি রকম তাড়াহুড়া করে। দুই কারণে তারা সে আযাবে গ্রেফতার হয়, (এক) তাদের উপর আরোপিত শর্ত— 2.4% ولاً تمشوها بشثور فيأخذكم عذاب (একে কোনরূপ কষ্ট দিও না, অন্যথায় অর্তি শীঘ্রই আযাব তােমাদেরকে পাকড়াও করবে।) जनg dक जायां0ऊ عدًا فظيع. (ভয়াবহ আযাব), অপর এক আয়াতে আছে – NITINF আর্যাব)। এর প্রতিটিই যথার্থরুপে দেখা দেয়। (দুই) আযাব) عذاب الیم তাড়াতাড়ি এনে দেয়ার জন্যে তাদের পীড়াপীড়ি করা। (৩) তারা তাদের নিকট প্রেরিত রাসূলকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে অথচ তিনি তাঁর নবুওতের দাবির সত্যতার পক্ষে চূড়ান্ত প্রমাণ উপস্থিত করেছিলেন এবং তারাও তা নিশ্চিতরূপে জানতো। কিন্তু সত্যকে এড়িয়ে চলার মানসিকতা ও আযাবে গ্রেফতার হওয়ার যোগ্যতাই তাদেরকে ভ্ৰান্ত কুফরী পথে যেতে ও বিদ্বেষী

হয়ে চলতে উদ্বুদ্ধ করে। আল্লাহ বলেন :

‘কিন্তু ওরা তাকে বধ করল।ফলে সালিহ বলল, তােমরা তােমাদের বাড়িতে তিনদিন জীবন উপভোগ করে নাও। এ এমন একটি ওয়াদা যা মিথ্যা হবার নয়। (সূরা হ্রদ : ৬৫)

মুফাসসিরগণ লিখেছেন, উটনীটির উপর প্রথম যে ব্যক্তি হামলা করে তার নাম কিদার ইব্‌ন সালিফ (তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ বৰ্ষিত হোক।) প্রথম আঘাতেই উটনীটির পায়ের

OSGł

গোছা কেটে যায় এং সে মাটিতে পড়ে যায়। এরপর অন্যরা দৌড়ে গিয়ে তরবারি দ্বারা কেটে উটনীটির দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে। উটনীটির সদ্য প্রসূত বাচ্চা এ অবস্থা দেখে দৌড়ে নিকটবতীর্ণ এক পাহাড়ে গিয়ে ওঠে এবং তিনবার আওয়াজ দেয়। এজন্যে সালিহ (আঃ) তাদেরকে क03 . £1» *l¢ &616.28 13:24, % তােমরা তিনদিন পর্যন্ত তােমাদের ঘরবাড়িতে জীবন উপর্ভোগ কর। অর্থাৎ ঘটনার ঐ দিন বাদ দিয়ে পরবর্তী তিনদিন। কিন্তু এত কঠোর সতর্কবাণী শুনানো সত্ত্বেও তারা এ কথা বিশ্বাস করল না। বরং ঐ রাত্ৰেই নবীকেও হত্যা করার ষড়যন্ত্র পাকায় এবং উটনীটির মত তাকেও খতম করার পরিকল্পনা করে। 132.446 1517 41464… &i/L, তারা পরস্পরে বলল, আল্লাহর নামে কসম কর যে, আমরা সালিহ ও তার পরিবারসহ লোকদের উপর রাত্ৰিবেলায় আক্রমণ চালাব। অর্থাৎ আমরা তার বাড়িতে হামলা করে সালিহকে তার পরিবার -পরিজনসহ হত্যা করব এবং পরে তার অভিভাবকরা যদি

রক্তপণ চায়। তবে আমরা হত্যা করার কথা অস্বীকার করব। এ কথাই কুরআনে বলা হয়েছে :

পরে তার অভিভাবককে বলব, আমরা তার পরিবারের হত্যা প্রত্যক্ষ করিনি। (সূরা নামল : ৪৯)

আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন :

তারা এক চক্রান্ত করেছিল এবং আমিও এক কৌশল অবলম্বন করলাম, কিন্তু ওরা বুঝতে পারেনি। অতএব দেখ, ওদের চক্রান্তের পরিণতি কি হয়েছে! আমি অবশ্যই ওদের এবং ওদের সম্প্রদায়ের সকলকে ধ্বংস করেছি। এই তো ওদের ঘরবাড়ি – সীমালংঘন করার কারণে যা জনশূন্য অবস্থায় পড়ে আছে। এতে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্যে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। আর যারা

মুমিন-মুত্তাকী ছিল তাদেরকে আমি উদ্ধার করেছি। (সূরা নামল : ৫০-৫৩)

ছামূদ জাতির ধ্বংসলীলা সংঘটিত হয়েছিল নিম্নরূপে : যে কয় ব্যক্তি হযরত সালিহ (আ)-কে হত্যা করতে সংকল্পবদ্ধ হয়, আল্লাহ প্ৰথমে তাদের উপর পাথর নিক্ষেপ করে চূৰ্ণ-বিচূর্ণ করেন। পরে গোটা সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেন। যে তিনদিন তাদেরকে অবকাশ দেয়া হয়েছিল তার প্রথমদিন ছিল বৃহস্পতিবার। এই দিন আসার সাথে সাথে সম্প্রদায়ের সকলের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে যায়। যখন সন্ধ্যা হল তখন পরস্পর বলাবলি করল, ‘জেনে রেখ, নির্ধারিত সময়ের প্রথম দিন শেষ হয়ে গেল। দ্বিতীয় দিন শুক্রবারে সকলের চেহারা লাল রঙ ধারণ করে। সন্ধ্যাকালে তারা বলাবলি করে যে, শুনে রেখ, নির্ধারিত সময়ের দুইদিন কেটে গেছে। তৃতীয় দিন শনিবারে সকলের চেহারা কাল রঙ ধারণ করে। সন্ধ্যাবেলা তারা বলাবলি করে যে, জেনে নাও, নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেছে। রবিবার সকালে তারা খোশবু লাগিয়ে প্রস্তুত হয়ে ‘অপেক্ষায় থাকল— কি শাস্তি ও আযাব-গযিবা নাযিল হয় তা দেখার জন্যে। তাদের কোনই

ப்ே

NOS NA ऊठाल्ल-दिशी ७ांन्न निशंशा

ধারণা ছিল না যে, তাদেরকে কি করা হবে এং কোন দিক থেকে আযাব আসবে। কিছু সময় পর সূর্য যখন উপরে এসে উজ্জ্বল হয়ে উঠল, তখন আসমানের দিক থেকে বিকট আওয়াজ এলো এবং নিচের দিক থেকে প্রবল ভূকম্পন শুরু হল। সাথে সাথে তাদের প্রাণবায়ু উড়ে গেল, সকল নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেল, শোরগোল স্তব্ধ হল এবং যা সত্য তাই বাস্তবে ঘটে গেল। ফলে সবাই লাশ হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে রইল।’

ইতিহাসবেত্তাগণ লিখেছেন, ছামুদ সম্প্রদায়ের এ আযাব থেকে একজন মাত্র মহিলা ছাড়া আর কেউই মুক্তি পায়নি। মহিলাটির নাম কালবা বিনত সালাকা, ডাকনাম যারী।আ। সে ছিল কট্টর কাফির ও হযরত সালিহ (আ)-এর চরম দুশমন। আযাব আসতে দেখেই সে দ্রুত বের হয়ে দৌড়ে এক আরব গোত্রে গিয়ে উঠল এবং তার সম্প্রদায়ের উপর পতিত যে আযাব সে প্রত্যক্ষ করে এসেছে-তার বর্ণনা দিল। পিপাসায় কাতর হয়ে সে পানি পান করতে চাইল। কিন্তু পানি পান করার সাথে সাথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল।

ላላ /

আল্লাহর বাণী : 1344.134 (যেন সেখানে তারা কােন দিন বসবাস করে নাই)। আল্লাহ বলেন : .45%; )لأن كوك كفوا ربهم 1% بثلا )GUICR রেখা, ছামুদ সম্প্রদায় তাদের প্রতিপালককে অস্বীকার করেছিল। জেনে রেখ, ধ্বংসই হল ছামুদ সম্প্রদায়ের পরিণাম) (সূরা হ্রদ ৪৬৮)। এটাই ছিল তাদের অদৃষ্ট লিখন।

ইমাম আহমদ (র), আবদুর রাজাক (র) জাবির (রা) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) একবার হিজর উপত্যকা দিয়ে অতিক্রম করার সময় বলেন, : তোমরা আল্লাহর নিদর্শন অর্থাৎ মুজিযা দেখার আবদার করো না। সালিহ (আ)-এর সম্প্রদায় এরূপ আবদার জানিয়েছিল। সেই নিদর্শনের উটনী এই গিরিপথ দিয়ে পানি পান করার জন্যে যেত এবং পান করার পর এই পথ দিয়েই উঠে আসত ‘A354.448.445 154 1344… (তারা আল্লাহর হুকুমের অবাধ্য হল ও উটনীটিকে বধ করল)। اسم سمي في –

উটনী একদিন তাদের পানি পান করত এবং তারা একদিন উটনীর দুধ পান করত। পরে তারা উটনীটিকে বধ করে। ফলে এক বিকট আওয়াজ তাদেরকে পাকড়াও করে। এতে ছামুদ সম্প্রদায়ের শুধু একজন লোক ব্যতীত আসমানের নিচে তাদের যত লোক ছিল সবাইকে আল্লাহ ধ্বংস করে দেন। সেই লোকটি হারম শরীফে অবস্থান করছিল। সঙ্গীরা জিজ্ঞেস করল, কে সেই লোকটি ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেন, তার নাম আবু রাগাল। পরে হারম শরীফ থেকে বের হবার পর ঐ আযাব তাকে ধ্বংস করে, যে আযাব তার সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিল। এ হাদীসটি ইমাম মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সংগৃহীত; কিন্তু হাদীসের প্রসিদ্ধ ছয়টি কিতাবের কোনটিতেই এর কোন উল্লেখ নেই। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

আবদুর রাজ্জাক (র) ইসমাঈল ইব্‌ন উমাইয়া (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন, একদা নবী করীম (সা) আবু রাগালের কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি জান, এই কবরবাসী কে? তারা বলল, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সম্যক জানেন। তিনি বললেন, এটা আবু রাগালের কবর, সে হামুদ সম্প্রদায়ের লোক। আল্লাহর হারমে সে অবস্থান করছিল। সুতরাং আল্লাহর হারম আল্লাহর আযাব থেকে দূরে রাখে। পরে হারম থেকে সে

NOS Գ

বেরিয়ে আসলে সেই আযাব তাকে ধ্বংস করে, যে আযাব তার সম্প্রদায়কে ধ্বংস করেছিল। তারপর এখানে তাকে দাফন করা হয় এবং তার সাথে স্বর্ণনির্মিত একটি ডালও দাফন করা হয়। এ কথা শুনে কাফেলার সবাই বাহন থেকে নেমে এসে তরবারি দ্বারা কবর খুঁড়ে স্বর্ণের ডাল বের করে নিয়ে আসে। V.

আবদুর রাজ্জাক (র) যুহরী থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আবু রাগালের অপর নাম আবু ছাকীফ। বর্ণনার এই সূত্রটি মুরসাল। এ হাদীস মুত্তাসিল সনদেও বর্ণিত হয়েছে। যেমন মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক (র) তাঁর সীরােত গ্রন্থে আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমর (রা) প্রমুখাৎ থেকে বর্ণনা করেছেন। আবদুল্লাহ (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর তাইফ গমনের সময় আমরাও সাথে ছিলাম। একটি কবর অতিক্রম করার সময় তিনি বললেন, এটি আবু রাগালের কবর— যাকে আবু ছাকীফও বলা হয। সে ছামূদ সম্প্রদায়ের লোক! হারমে অবস্থান করায় তার উপর তাৎক্ষণিকভাবে আযাব আসেনি। পরে যখন হারম থেকে বেরিয়ে এই স্থানে আসে, তখন সেই আযাব তার উপর পতিত হয়, যে আযাব তার সম্প্রদায়ের উপর পতিত হয়েছিল। এখানেই তাকে দাফন করা হয়। এর প্রমাণ এই যে, তার সাথে স্বর্ণের একটি ডালও দাফন করা হয়েছিল। তোমরা তার কবর খুঁড়লে সাথে ঐ ডালটিও পাবে। তখনই লোকজন কবরটি খুঁড়ে ডালটি বের করে আনে। আবু দাউদ (র) মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক (র) সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। হাফিজ আবুল হাজ্বজাজ মাযায়ী একে হাসান ও ‘আয়ীয’ পর্যায়ের হাদীস বলে মন্তব্য

করেছেন।

আমার মতে, এ হাদীসটি বুজায়ার ইব্‌ন আবু বুজােয়র একাই বৰ্ণনা করেছেন। এ হাদীস ব্যতীত অন্য কোন হাদীসের বর্ণনাকারী হিসেবে তাকে দেখা যায় না। এছাড়া ইসমাঈল ইব্‌ন উমাইয়া ব্যতীত অন্য কেউ এটা বৰ্ণনা করেননি। শায়খ আবুল হাজাজাজ ৰলেছেন, এ হাদীসকে মারফু’ বলা অমূলক, এটা আসলে আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমরেরই একটি উক্তি। তবে পূর্বে বর্ণিত মুরসাল ও জাবিরের হাদীসে এর সমর্থন পাওয়া যায়। আল্লাহর বাণী : فتولى عثهم وقال يا قوم لقث أثالثتُكُمْ رسالة ربى وتُضحك لكم

অতঃপর সালিহ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল, হে আমার সম্প্রদায়! আমি তো আমার প্রতিপালকের বাণী তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছিলাম। এৰং তোমাদেরকে হিতোপদেশ দিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা তাে হিতাকাঙ্ক্ষীদেরকে পছন্দ কর না। (সূরা আ’রাফ : ৭৯)।

তোমাদেরকে উপদেশও দিয়েছিলাম) অর্থাৎ তোমালের হিদায়াতের জন্যে আমি আমার

S)Xbr

সাধ্যমত চেষ্টা করেছিলুম; কৃথায়, কাজে ও সদিচ্ছা দিয়ে তা একান্তভাবে কামনা করেছিললাম 64 64।( %: 248 351% (কিন্তু হিতাকাঙ্ক্ষীদেরকে তােমরা পছন্দ কর না) অর্থাৎ সত্য তোমরা কবুল করনি। আর না। কবুল করতে প্ৰস্তৃত ছিলে। এ কারণেই আজ তোমরা চিরস্থায়ী আযাবের মধ্যে পড়ে রয়েছ। এখন আমার আর করার কিছুই নেই। তােমাদের থেকে আযাব দূর করার কোন শক্তি আমার আদৌ নেই। আল্লাহর বাণী পৌঁছিয়ে দেয়া ও উপদেশ দেয়ার দায়িত্বই আমার উপর ন্যস্ত ছিল। সে দায়িত্ব আমি পালন করেছি। কিন্তু কাৰ্যত সেটাই হয়। যেটা আল্লাহ চান।

শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা)ও অনুরূপভাবে বদর প্রান্তরে অবস্থিত কূপে নিক্ষিপ্ত নিহত কাফির সর্দারদের লাশগুলো সম্বোধন করে ভাষণ দিয়েছিলেন। বদর যুদ্ধে নিহত কুরায়শ সর্দারকে বদরের কুপে নিক্ষেপ করা হয়। তিনদিন পর শেষরাতে ময়দান ত্যাগ করার সময় রাসূলুল্লাহ (সা) উক্ত কুপের নিকট দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘হে কৃপবাসীরা! তোমাদের সাথে তোমাদের প্রভু যে ওয়াদা করেছিলেন তার সত্যতা দেখতে পেয়েছে তো? আমার সাথে আমার প্রভুর যে ওয়াদা ছিল তা আমি পুরোপুরি সত্যরূপে পেয়েছি।’ রাসূলুল্লাহ (সা) আরও বলেন, ‘তোমরা হচ্ছে নবীর নিকৃষ্ট পরিজন। তােমরা তো তোমাদের নবীকে মিথুক প্রতিপন্ন করছি। কিন্তু অন্য লোকেরা আমাকে সত্য বলে স্বীকার করেছে। তোমরা আমাকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছ। অন্যরা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। তোমরা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছো, পক্ষান্তরে অন্যরা আমাকে সাহায্য করেছে- তোমরা তোমাদের নবীর কত জঘন্য পরিজন ছিলে!’

হযরত উমর (রা) রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি এমন একদল লোকের সাথে কথা বলছেন, যারা লাশ হয়ে পড়ে আছে। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, ‘যে মহান সত্তার হাতে আমার জীবন, তার শপথ করে বলছি, আমি যেসব কথাবার্তা বলছি তা ওদের চেয়ে তোমরা মোটেই বেশি শুনিছ না; কিন্তু তারা উত্তর দিচ্ছে না। এই যা।’

ما انتم باسمع لما اقول منهم و لکن هم لایجیبون .

পরে যথাস্থানে এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা আসবে ইনশাআল্লাহ। কথিত আছে, হযরত সালিহা (আ) এ ঘটনার পর হারম শরীফে চলে যান এবং তার ইন্তিকাল পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন।

ইমাম আহমদ ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, বিদায় হজ্জের প্রাক্কালে রাসূলুল্লাহ (সা) যখন উসূফান উপত্যকা অতিক্রম করেন তখন জিজ্ঞেস করেন, হে আবু বকর! এটা কোন উপত্যকা? আবু বকর (রা) বলেন, এটা উসূফান উপত্যকা। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, এই স্থান দিয়ে হ্রদ ও সালিহ (আ) নবীদ্বয় অতিক্রম করেছিলেন। তাদের বাহন ছিল উটনী, লাগাম ছিল খেজুর গাছের ছাল দ্বারা তৈরি রশি, পরনে ছিল জোব্বা এবং গায়ে ছিল চাদর। হজের উদ্দেশ্যে তালবিয়া (—এI.J) পড়তে পড়তে তাঁরা আল্লাহর ঘর তওয়াফ করছিলেন। এ হাদীসের সনদ হাসান পর্যায়ের। হযরত নূহ নবীর আলোচনায় তাব্বারানী থেকে এ হাদীসটি উদ্ধৃত করা হয়েছে- সেখানে নূহ, হ্রদ ও ইবরাহীম (আ)-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

VOS)

তবুক যুদ্ধের সময় ছামূদ জাতির আবাসভূমি হিজর উপত্যকা দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর গমন

ইমাম আহমদ ইব্‌ন উমর (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, তাবুক অভিযানকালে রাসূলুল্লাহ (সা) সদলবলে হিজর উপত্যকায় অবতরণ করেন। যেখানে ছামূদ জাতি বসবাস করত। ছামুদ সম্প্রদায় যেসব কূপের পানি পান করত, লোকজন সেসব কূপের পানি ব্যবহার করে। এ পানি দিয়ে আটার খামীর তৈরি করে এবং যথারীতি ডেকচি উনুনে চড়ান। এমন সময় রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নির্দেশ আসায় তারা ডেকচির খাদ্য ফেলে দিয়ে খামীর উটকে খেতে দেন। তারপর তিনি সেখান থেকে রওয়ানা হয়ে যে কৃপ থেকে আল্লাহর উত্নী পানি পান করত। সে কূপের নিকট অবতরণ করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) লোকজনকে সেই ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির বাসস্থানে যেতে নিষেধ করেন। তিনি বললেন, ‘আমার আশংকা হয় তোমাদের উপর না তাদের মত আযাব আপতিত হয়। সুতরাং তোমরা তাদের ঐ স্থানে প্রবেশ করো না।’ ইমাম আহমদ (র) আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রা) থেকে অন্য এক বর্ণনায় বলেন, হিজারে অবস্থানকালে রাসূল (সা) বলেছিলেন : তোমরা আল্লাহর গযবে ধ্বংস প্রাপ্তদের ঐসব বাসস্থানে কান্নারত অবস্থায় ছাড়া যেয়ো না, যদি একান্তই কান্না না আসে তাহলে সেখানে আদৌ। যেয়ো না। যে আযাব তাদের উপর এসেছিল, সেরূপ আযাব তোমাদের উপরও না পতিত হয়ে যায়। বুখারী ও মুসলিমে একাধিক সূত্রে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে। কোন কোন বর্ণনায় এভাবে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) যখন ছামূদ জাতির এলাকা অতিক্রম করেন তখন মাথা ঢেকে রাখেন, বাহনকে দ্রুত চালান এবং কান্নারত অবস্থায় ব্যতীত কাউকে তাদের বাসস্থানে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। অন্য বর্ণনায় এতটুকু বেশি আছে যে, ‘যদি একান্তই কান্না না আসে। তবে কান্নার ভঙ্গী অবলম্বন কর এই ভয়ে যে, তাদের উপর যে আযাব এসেছিল, অনুরূপ আযাব তোমাদের উপরও না এসে পড়ে।’

ইমাম আহমদ (র) আমের ইব্‌ন সা’দ (রা) থেকে বর্ণনা করেন : তাবৃক যুদ্ধে গমনকালে লোকজন দ্রুত অগ্রসর হয়ে হিজরবাসীর বাসস্থানে প্রবেশ করতে থাকে। রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট এ সংবাদ পৌছলে তিনি লোকজনের মধ্যে ঘোষণা করে দেন। ধ-L; ১IL-২। অর্থাৎ সালাত আদায় করা হবে। আমের (রা) বলেন, এ সময় আমি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট উপস্থিত হই। তিনি তখন নিজের বাহন উট থামাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন : তােমরা কেন ঐসব লোকের বাসস্থানে প্রবেশ করছ, যাদের উপর আল্লাহ। গযব নাযিল করেছেন। এক ব্যক্তি আশ্চর্যান্বিত হয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা আশ্চর্যজনক বস্তু হিসেবে এগুলো দেখছি। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, আমি কি এর চেয়ে অধিক আশ্চর্যের কথা তােমাদেরকে বলবো না? তা হল এই যে, তোমাদের মধ্যেই এক ব্যক্তি তোমাদেরকে সেসব ঘটনা বলে দেয় যা তোমাদের পূর্বে অতীত হয়ে গেছে এবং সেসব ঘটনার কথাও বলে যা ভবিষ্যতে সংঘটিত হবে। অতএব, তোমরা সত্যের উপর অটল-অবিচল হয়ে থাক। তা না হলে আল্লাহ তোমাদেরকে শাস্তি দিতে বিন্দুমাত্র পরোয়া করবেন না। শীঘই এমন এক জাতির আবির্ভাব হবে যারা তাদের উপর আগত শাস্তি থেকে নিজেদেরকে বিন্দুমাত্র রক্ষা করতে পারবে না। এ হাদীসের সনদ হাসান’ পর্যায়ের কিন্তু অন্য হাদীস গ্রন্থকারগণ এ হাদীসটি বর্ণনা করেননি। কথিত আছে যে, সালিহ (আ.)-এর

9ՀO ज्ञाळ-विष्मा ७ान् निशा

সম্প্রদায়ের লোকজন দীর্ঘায়ু হতো। মাটির ঘর বানিয়ে তারা বাস করত। কিন্তু কারোর মৃত্যুর পূর্বেই তার ঘর বিনষ্ট হয়ে যেত। এ কারণে তারা পাহাড় কেটে প্রাসাদ নির্মাণ করত।

ইতিহাসবেত্তাগণ লিখেছেন, হযরত সালিহ (আ)-এর নিকট নিদর্শন দাবি করলে, আল্লাহ ঐ কওমের জন্যে উটনী প্রেরণ করেন। একটি পাথর থেকে উটনীটি বের হয়ে আসে। এই উটনী ও তার পেটের বাচ্চার সাথে দুর্ঘ্যবহার করতে তাদেরকে তিনি নিষেধ করেন। দুর্ব্যবহার করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি আসবে বলেও তিনি জানিয়ে দেন। তিনি আরও জানিয়ে দেন যে, শীঘই এরা উটনীটিকে হত্যা করবে এবং এর কারণেই তারা ধ্বংস হবে। যে ব্যক্তি উটনীটিকে হত্যা করবে। তিনি তার পরিচয়ও তুলে ধরেন। তার গায়ের রঙ হবে গৌরী, চোখের রঙ নীল এবং তার চুল হবে পিঙ্গল বর্ণের। সম্প্রদায়ের লোকজন এই বৈশিষ্ট্যের কোন শিশু জন্মগ্রহণ করলে সাথে সাথে তাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গোটা জনপদে ধাত্রীদের নিয়োজিত করে। এই অনুসন্ধান দীর্ঘকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ ভাবে এক প্রজন্মের পর অন্য প্রজন্মের অবসান घ |

তারপর এক সময়ে উক্ত সম্প্রদায়ের এক সর্দার ব্যক্তির পুত্রের সাথে আর এক সর্দার ব্যক্তির কন্যার বিবাহের প্রস্তাব দেয়। সেমতে বিবাহও হয়। এই দম্পতির ঘরেই উটনীর হত্যাকারীর জন্ম হয়। শিশুটির নাম রাখা হয় কিদার ইব্‌ন সালিফা। সন্তানের পিতা-মাতা ও বাপ-দাদা সন্ত্রান্ত ও প্রভাবশালী হওয়ার কারণে ধাত্রীদের পক্ষে তাকে হত্যা করা সম্ভব হলো না। শিশুটি দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। অন্য শিশুরা এক মাসে যতটুকু বড় হয় সে এক সপ্তাহে ততটুকু বড় হয়ে যায়। এভাবে সে সম্প্রদায়ের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরূপে আত্মপ্রকাশ করে। সবাই তাকে নেতা হিসেবে মেনে চলে। এক পর্যায়ে তার মনের মধ্যে উটনী হত্যা করার বাসনার উদ্রেক হয়। সম্প্রদায়ের আরও আট ব্যক্তি এ ব্যাপারে তাকে অনুসরণ করে। এই নয়জন লোকই হযরত সালিহ (আ)-কেও হত্যা করার পরিকল্পনা করে। এরপর যখন উটনী হত্যার ঘটনা সংঘটিত হলো এবং সালিহ (আ.)-এর নিকট এ সংবাদ পীেছল, তখন তিনি কাঁদতে কাঁদতে সম্প্রদায়ের লোকদের নিকট যান। সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয় লোকেরা নবীর কাছে এই কথা বলে ওজর পেশ করল যে, আমাদের নেতৃস্থানীয় কারো দ্বারা এ ঘটনা ঘটেনি। ঐ কয়েকজন অল্প বয়সী যুবক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।

কথিত আছে যে, তখন সালিহ (আ.)-এর প্রতিকার হিসারে উটনীটির বাচ্চাটিকে নিয়ে এসে তার সাথে উত্তম ব্যবহার করার নির্দেশ দেন। লোকজন বাচ্চাকে ধরে আনার জন্যে অগ্রসর হলে বাচ্চাটি পাহাড়ে উঠে যায়। লোকজনও পিছে পিছে পাহাড়ে উঠল। কিন্তু বাচ্চা আরও উপরে উঠে পাহাড়ের শীর্ষে চলে যায়, যেখানে তারা পেঁৗছতে সক্ষম হয়নি। বাচ্চা সেখানে গিয়ে চােখের পানি ফেলে কঁদিতে থাকে। তারপর সে হযরত সালিহ (আ.)-এর দিকে মুখ ফিরিয়ে তিনবার ডাক দেয়। তখন সালিহ (আ) সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে বললেন, তোমরা তিনদিন পর্যন্ত বাড়িতে বসে জীবন উপভোগ কর-এ এমন এক ওয়াদা যা মিথ্যা হবার নয়। নবী তাদেরকে আরও জানালেন্স, আগামীকাল ডোমাদের চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যাবে, পরের দিন রক্তিম এবং

: : ফলে তাঙ্ক নিজ নিজ ঘরে মারে উপৃদ্ধ হয়ে পড়ে থাকে। এ বর্ণনার সাথে কোন কোন দিক সম্পর্কে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে এবং কুরআনের সুস্পষ্ট বর্ণনায় সংঘর্ষশীল, যা ইতিপূর্বে আমরা

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *