২২. ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ (আ)-এর ঘটনা

ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ (আ)এর ঘটনা

আল্লাহর বাণী :

এবং সে বলল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের দিকে চললাম, তিনি আমাকে অবশ্যই সৎপথে পরিচালিত করবেন; হে আমার প্রতিপালক! আমাকে এক সৎকর্মপরায়ণ সন্তান দান কর।’ তারপর আমি তাকে এক স্থির-বুদ্ধি পুত্রের সুসংবাদ দিলাম। অতঃপর সে যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল, তখন ইবরাহীম (আঃ) বলল, ‘বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে যবেহা করছি; এখন তোমার অভিমত কি বলা? সে বলল, ‘পিতা! আপনি যাতে আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।’ যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইবরাহীম তার পুত্ৰকে কাত করে শায়িত করল, তখন আমি তাকে আহবান করে বললাম, ‘হে। ইবরাহীম! তুমি তাে স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে! এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।’ নিশ্চয়ই এ ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে মুক্ত করলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে। আমি এটা পরবর্তীদের স্মরণে রেখেছি। ইবরাহীমের উপর শান্তি বৰ্ষিত হোক। এভাবে আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি। সে ছিল আমার মুমিন বান্দাদের অন্যতম। আমি তাকে সুসংবাদ দিয়েছিলাম ইসহাকের, সে ছিল এক নবী, সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম। আমি তাকে বরকত দান করেছিলাম এবং ইসহাককেও, তাদের বংশধরদের মধ্যে কতক সৎকর্মপরায়ণ এবং কতক নিজেদের প্রতি স্পষ্ট অত্যাচারী। (সূরা : সাফফাত : ৯৯-১১৩)

○○や

এখানে আল্লাহ বলছেন যে, তার একনিষ্ঠ বন্ধু নবী ইবরাহীম (আ) যখন নিজ সম্প্রদায় ও জন্মভূমি ত্যাগ করে যান, তখন তিনি আল্লাহর নিকট একটি নেককার পুত্ৰ সন্তান প্রার্থীনা করেন। আল্লাহ তাকে একজন ধৈর্যশীল পুত্রের সুসংবাদ দান করেন। তিনি হলেন ইসমাঈল (আ)। কেননা, তিনিই হলেন প্রথম পুত্র। হযরত ইবরাহীম (আ)-এর ছিয়াশি বছর বয়সে তাঁর জন্ম হয়। এ ব্যাপারে কোন মতভেদ নেই। : -1।( 4-5 214 114 (সে যখন তার পিতার সাথে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল) অর্থাৎ ‘যখন যুবক হল ও পিতার ন্যায় নিজের কাজকর্ম করার বয়সে পৌছল।’ মুজাহিদ এর অর্থ করেছেন : সে যখন যুবক হল, স্বাধীনভাবে পিতার ন্যায় চেষ্ট-সংগ্রাম ও কাজকর্ম করার উপযোগী হল। যখন ইবরাহীম (আ) তাঁর স্বপ্ন থেকে বুঝতে পারলেন যে, আল্লাহ তাঁর পুত্রকে যিবোহ করার হুকুম দিয়েছেন। হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে এক মারফু হাদীসে বর্ণিত হয়েছে : ২-৩ – t_1 , ১।( ৬৭৩,০ (নবীদের স্বপ্ন ওহী)। উবায়দ ইব্‌ন উমােয়রও এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। এ নির্দেশ ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে ইবরাহীম খলীলের প্রতি এক বিরাট পরীক্ষা। কেননা, তিনি এই প্রিয় পুত্রটি পেয়েছিলেন। তাঁর বৃদ্ধ বয়সে। তাছাড়া এ শিশুপুত্র ও তার মাকে এক জনমানবহীন শূন্য প্রান্তরে রেখে এসেছিলেন, যেখানে না ছিল কোন কৃষি ফসল, না ছিল তরুলতা। ইবরাহীম খলীল (আ) আল্লাহর নির্দেশ পালন করলেন। আল্লাহর উপর ভরসা রেখে তাদেরকে সেখানে রেখে আসেন। আল্লাহ তাদেরকে মুক্তির ব্যবস্থা করলেন। এমন উপায়ে পানাহারের ব্যবস্থা করে দিলেন, যা ছিল তাদের ধারণাতীত। এরপর যখন আল্লাহ এই একমাত্র পুত্ৰধনকে যবোহ করার নির্দেশ দেন, তখন তিনি দ্রুত সে নির্দেশ পালনে এগিয়ে আসেন। ইবরাহীম (আ) এ প্রস্তাব তাঁর পুত্রের সামনে পেশ করেন। যাতে এ কঠিন কাজ সহজভাবে ও প্রশান্ত চিত্তে করতে পারেন। চাপ প্রয়োগ করে ও বাধ্য করে যবোহ করার চাইতে এটা ছিল সহজ উপায়। ‘

ইবরাহীম বলল, ‘বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি যবেহা করছি। এখন তোমার অভিমত কি বল।’ ধৈর্যশীল পুত্র পিতার নির্দেশ পালন করার জন্যে খুশী মনে প্রস্তাব গ্রহণ করেন। তিনি বললেন, হে আমার পিতা! আপনি যে ব্যাপারে আদিষ্ট হয়েছেন তা-ই করুন। আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে ধৈর্যশীলই পাবেন। এ জবাব ছিল চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্তরিকতার পরিচায়ক। তিনি পিতার আনুগত্য ও আল্লাহর হুকুম পালনের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেন।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন : ১৫ 11:14, 1412.1 1414 (যখন তারা উভয়ে আনুগত্য

প্রকাশ করল এবং তার পুত্রকে র্কাত করে শুইয়ে দিল)। এ আয়াতাংশের কয়েকটি অর্থ বলা

হয়েছে; (১) তাঁরা উভয়ে আল্লাহর হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন ও মনোেবল দৃঢ় করেন। (২) এখানে পূর্বের কাজ পরে ও পরের কাজ পূর্বে বলা হয়ছে। অর্থাৎ পিতা ইবরাহীম (আ) পুত্র ইসমাঈল (আঃ)-কে উপুড় করে শোয়ালেন। (৩) ইবরাহীম (আঃ) পুত্রকে উপুড় করে শোয়ান এ জন্যে যে, যিবোহ করার সময় তাঁর চেহারার উপর যাতে দৃষ্টি না পড়ে। ইব্‌ন আব্বাস (রা), মুজাহিদ, সাঈদ ইব্‌ন জুবায়র, কাতাদা ও যাহাহাক (র) এই মত পোষণ করেন। (৪) লম্বাভাবে চিত করে শায়িত করান, যেমন পশু যিবোহ করার সময় শায়িত করান হয়। এ অবস্থায় কপালের এক অংশ মাটির সাথে লেগে থাকে। t_2-L| অর্থ ইবরাহীম (আ) যবোহ করার জন্যে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবর বলেন। আর পুত্ৰ মৃত্যুর জন্যে কলেমায়ে শাহাদাত পাঠ করেন।

OG GA

সুদৃদী (র) প্রমুখ বলেছেন, হযরত ইবরাহীম (আ) গলায় ছুরি চালান। কিন্তু তাতে বিন্দুমাত্রও কাটল না। কেউ বলেছেন যে, গলার নিচে তামার পাত রাখা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কাটা যায়নি। আল্লাহই সম্যক অবগত।

এ সময় আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় : এওঁ। এ….. ‘4 841.64), 1, 31 (হে ইবরাহীম! তুমি স্বপ্নকে সত্যই পালন করলে) অর্থাৎ তােমাকে পরীক্ষা করার উদ্দেশ্য পূর্ণ হয়েছে। তুমি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছ। আল্লাহর নির্দেশ পালন করার জন্যে তোমার আগ্রহ ও আনুগত্য প্রমাণিত হয়েছে। তুমি পুত্ৰকে কুরবানীর জন্যে পেশ করেছ। যেমন ইতিপূর্বে তুমি আগুনে নিজের দেহকে সমর্পণ করেছিলে এবং মেহমানদের জন্যে প্রচুর অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেছিলে।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, : 65 211 4541 647 114 3) (নিশ্চয়ই এ ছিল স্পষ্ট

পরীক্ষা) প্রকাশ্য ও সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আল্লাহর বাণী :

’64 4১৬%[%^%$% (আমি তাকে মুক্তি দিলাম এক মহান কুরবানীর বিনিময়ে।) অর্থাৎ একটি সহজ বিনিময় দ্বারা আমি ইবরাহীম (আ)-এর পুত্ৰকে যবোহ করা থেকে মুক্ত করে দিলাম। অধিকাংশ আলিমের মতে, এ বিনিময়টি ছিল শিং বিশিষ্ট একটি সাদা দুম্বাযাকে ইবরাহীম (আ) ছাবীর পর্বতে একটি বাবলা বৃক্ষে বাঁধা অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলেন। ইমাম ছাওরী (র) ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, ঐ দুম্বাটি জান্নাতে চল্লিশ বছর পর্যন্ত বিচরণ করেছিল। সাঈদ ইব্‌ন জুবোয়র (রা) বলেছেন : দুম্বাটি জান্নাতে চরে বেড়াত। এক সময়ে এটা ছাবীর পর্বত ভেদ করে বের হয়ে আসে। তার শরীরে ছিল। লাল বর্ণের পশম। ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণিত, শিংযুক্ত একটি দুম্বা ছাবীর পাহাড় থেকে নেমে ইবরাহীম (আ)-এর নিকট হেঁটে আসে এবং ভ্যা ভ্যা করে ডাকতে থাকে। ইবরাহীম (আ) তাকে ধরে যবোহ করে দেন। এই দুম্বাটি হযরত আদম (আ)-এর পুত্ৰ হাবিলও কুরবানী করেছিলেন এবং আল্লাহ তা কবুলও করেছিলেন। ইব্‌ন আবী হাতিম (র) এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

মুজাহিদ (র) বলেছেন, ইবরাহীম (আ) উক্ত দুম্বাকে মিনায় যাবোহ করেন। উবায়দ ইব্‌ন উমায়ার (রা)-এর মতে, স্থানটি ছিল মাকামে ইবরাহীম। ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর বর্ণনা মতে এটা ছিল একটি পাহাড়ী ছাগল। কিন্তু হাসান (রা) থেকে বর্ণিত, এটা একটি বুনো ছাগল। দুম্বার নাম ছিল জুরায়র। সুতরাং ইব্‌ন আব্বাস ও হাসান (রা) থেকে বর্ণিত হওয়ার কথা ঠিক নয়; বরং এগুলো ইসরাঈলী বৰ্ণনা থেকে গৃহীত। অবশ্য এ বিষয়ে কুরআনে যেভাবে বলা হয়েছে তাতে অন্য কোন দিক লক্ষ্যও করার প্রয়ােজন থাকে না। কুরআনে একে? : 4, 24; ‘মহান যবেহ’ বলা হয়েছে এবং ‘সুস্পষ্ট পরীক্ষা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদীসে দুম্বার কথা বর্ণিত হয়েছে। ইমাম আহমদ (র) সাফিয়া বিনত শায়রা (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, বনী সুলায়মের এক মহিলা আমাকে বলেছে যে, রাসূলুল্লাহ (সা) উছমান ইব্‌ন তালহাকে ডেকে পাঠান; বর্ণনাকারী বলেন, উছমানকে জিজ্ঞেস করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) আপনাকে কেন সংবাদ দিয়েছিলেন? উছমান বললেন, আমি যখন কা’বা ঘরে প্রবেশ করি তখন সেই দুম্বার দুটি শিং দেখতে পাই। এটা ঢেকে রাখার জন্যে তোমাকে বলতে আমি ভুলে যাই। তখন তিনি শিং দুটি

O(*br

ঢেকে দেন। কেননা, আল্লাহর ঘরে এমন কিছু থাকা উচিত নয় যা মুসল্লিদের একাগ্রতা বিনষ্ট করে। সুফিয়ান (রা) বলেছেন, ইবরাহীমের দুম্বার শিং দু’টি সর্বদা কা’বা ঘরে সংরক্ষিত ছিল। যখন খানায়ে কাবায় আগুন লেগে যায়। তখন শিং দু’টি পুড়ে ভস্ম হয়ে যায়। ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণিত দুম্বাটির মাথা সর্বদা কা’বার মীযাবে (কাৰ্ণিশে) বুলান থাকত এবং রৌদ্রে তা শুকিয়ে যায়। এই একটি কথাই প্রমাণ করে যে, হযরত ইসমাঈল (আ.)-ই হলেন যাবীহুল্লাহ আর কেউ নয়। কেননা, তিনিই মক্কায় বসবাস করতেন। হযরত ইসহাক (আ) শিশুকালে মক্কায় এসেছিলেন। কিনা আমাদের জানা নেই। আল্লাহই উত্তমরূপে অবগত।

কুরআন থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। বরং বলা যায় এ উদ্দেশ্যেই আয়াত নাযিল হয়েছে যে, ইসমাঈল (আ.)-ই যাবীহুল্লাহ। কেননা, আল্লাহ, কুরআনে প্রথমে যাবীহ-এর ঘটনা উল্লেখ وبشرثاه بإشكاق نبياً من الضرلطين . : 4681087 68* 868ة

(আমি ইবরাহীমকে ইসহাকের সুসংবাদ দিলাম, সে ছিল নবী, সৎকর্মশীলদের একজন।)

বাক্যটিকে যারা একে UL-২ বলেছেন, তাদের এরূপ ব্যাখ্যা স্বেচ্ছাত্ৰমকল্পিত। ইসহাক (আ)-কে যাবীহুল্লাহ বলা ইসরাঈলী চক্রান্ত ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা তাদের কিতাবে এ স্থানে নিঃসন্দেহভাবে বিকৃতি করেছে। তাদের মতে, আল্লাহ ইবরাহীম (আ)-কে আদেশ করেন তাঁর একক ও প্রথম পুত্র ইসহাককে যিবোহ করতে। ইসহাক শব্দকে এখানে প্রক্ষিপ্তভাবে ঢুকান হয়েছে। এটা মিথ্যা ও অলীক। কেননা, ইসহাক একক পুত্ৰও নন, প্রথম পুত্ৰও নন। বরং একক ও প্রথম পুত্র ছিলেন ইসমাঈল (আ)। ইসরাঈলীরা আরবদের প্রতি হিংসার বশবতী হয়ে এমনটি করেছে। কারণ ইসমাঈল (আঃ) হলেন আরবদের পিতৃ-পুরুষ— যারা হিজাযের অধিবাসী এবং যাদের মধ্যে রাসূলুল্লাহ (সা) জন্মগ্রহণ করেন। পক্ষান্তরে, ইসহাক (আ) হলেন ইয়াকুব (আ)-এর পিতা। ইয়াকুব (আ)-কে ইসরাঈলও বলা হত। বনী ইসরাঈলীরা তার দিকেই নিজেদেরকে সম্পর্কিত করে থাকে। তারা আরবদের এই গৌরব নিজেদের পক্ষে নিতে চেয়েছিল। এ উদ্দেশ্যে তারা আল্লাহর কালাম পরিবর্তন করে এবং মিথ্যা ও বাতিল কথার অনুপ্রবেশ ঘটায়। কিন্তু তারা বুঝল না যে, সম্মান ও মর্যাদার চাবিকাঠি আল্লাহর হাতে, যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন। প্রাচীনকালের আলিমদের একটি দল ইসহাক (আ)-কে যাবীহুল্লাহ বলেছেন। তারা এ মত গ্ৰহণ করেছেন সম্ভবত ক’ব আহবারের বর্ণনা থেকে, কিংবা আহলি কিতাবদের সহীফা থেকে। রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে এ ব্যাপারে কোন সহীহ হাদীস বর্ণিত হয়নি। সুতরাং এসব মতামতের দ্বারা আমরা কুরআনের স্পষ্ট বর্ণনাকে ত্যাগ করতে পারি না। কুরআনের বর্ণনা থেকে ইসহাক (আ)-কে যাবীহুল্লাহ বলার কোনই অবকাশ নেই। বরং কুরআন থেকে যা বোঝা যায়- কুরআনের উক্তি ও সুস্পষ্ট বর্ণনা এই যে, তিনি হলেন ইসমাঈল (আ)। মুহাম্মদ ইব্‌ন কা’ব আল কুরাজী (র) এ প্রসঙ্গে একটি সুন্দর যুক্তি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যাবীহুল্লাহ হযরত ইসমাঈল (আ), ইসহাক (আ) নয়। لهم

আমি ইবরাহীমের স্ত্রী সারাহকে ইসহাকের এবং ইসহাকের পরে ইয়াকুবের জন্মের সুসংবাদ क्लिश।

V©(፩እy

এখানে ইসহাকের জন্ম হওয়ার এবং তার থেকে পুত্ৰ ইয়াকুবের জন্ম হওয়ার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই সাথে যদি ইয়াকুবের জন্মের পূর্বেই ইসহাককে বাল্যকালে যাবেহের নির্দেশও দেয়া হয়, তবে পূর্বের সুসংবাদ আর সুসংবাদ থাকে কি করে? বরং এটা হয়ে যায় সুসংবাদের বিপরীত।

সুহায়লী (র) উপরোক্ত যুক্তি-প্রমাণের উপর প্রশ্ন করেছেন। তাঁর প্রশ্নের সারমর্ম এই; | نخift fگ و من وراء لشکلاق یعقؤثبت i۹۹ی آi۹fb if۹۹گ فیگار ناها پایشگاق বাক্য। পূর্ব বাক্যের সুসংবাদের আওতায় এটা আসে না। কেননা, এখানে এ-এ— শব্দের উপর L. – – — না এনে ৩৫.< • পড়া যাবে না – আরবীর নিয়ম অনুযায়ী। যেমন آ)ة الا) با ۹, RT: II اتا ۶۹ مکسور 6۹- عمرو آ۹) آ۹ مررت بیزید و من بعد ه عمرو فالمومن ورع – 5’)STRI >ی تا SI! 6ج 5) پا بعمرو – آگT{{AC{ <F6}{2 > – با ۹)2 & f مفعول آگ فعلی لعقا ۹ ) i۹گ – یعقوب آه)Iة i۹گ – اسحاق یعقوب Aq SBDDSe BB S BBB AAAA AAAA SqSqA q AASDDBB BBB BBB প্রশ্নাতীত নয়, তাই ইসহাক (আ)-কেও যাবীহুল্লাহ বলা যাবে না। সুহায়লী তাঁর মতের সপক্ষে ভিন্ন আরও একটি দলীল দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহর বাণী 2.4।( 41 & 1 ,1, (সে যখন ইবরাহীমের সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল) কিন্তু ইসমাঈল (আ.) যেহেতু সে সময় ইবরাহীম (আ)-এর কাছে ছিলেন না, বরং শিশুকালে মায়ের সাথে মক্কা উপত্যকায় থাকতেন। সুতরাং পিতার সাথে চলাফেরা করার প্রশ্নই উঠে না। এ দলীলও সমর্থনযোগ্য নয়। কেননা, বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, হযরত ইবরাহীম (আ) ঐ সময়ে বহুবার বুরাকে চড়ে মক্কায় গিয়েছেন এবং পুত্র ও পুত্রের মাকে দেখে পুনরায় চলে আসতেন। ইসহাক (আ)-কে যাবীহুল্লাহ বলার পক্ষে যাদের মতামত পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কা’ব আহবার অন্যতম। হযরত উমর, আব্বাস, আলী, ইব্‌ন মাসউদ (রা), মাসরূক, ইকরামা, সাঈদ ইব্‌ন জুবায়র, মুজাহিদ, আতা, শা’বী, মুকাতিল, উবায়দ ইব্‌ন উমর, আবু মায়সারা, যােয়দ ইব্‌ন আসলাম, আবদুল্লাহ ইবন

কাতাদা, আবুল হুযায়ল, ইব্‌ন সাবিত (রা) প্রমুখ এই মত পোষণ করেন। ইব্‌ন জারিরও এ মতকে অগ্ৰাধিকার দিয়েছেন। কিন্তু তার বেলায় এটা একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে দু’টি মত বর্ণিত হয়েছে; তন্মধ্যে একটি মত উপরের অনুরূপ। কিন্তু তাঁর সঠিক মত ও অধিকাংশ সাহাবা, তাবিঈ ও আলিমদের মতে হযরত ইসমাঈল (আ.)-ই যাবীহুল্লাহ। মুজাহিদ, সাঈদ, শা’বী, ইউসুফ ইব্‌ন মাহরান, আতা প্রমুখ ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি হলেন ইসমাঈল (আ)। ইব্‌ন জারীর (র) আতা ইব্‌ন আবী রেবোহর সূত্রে ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন, যার পরিবর্তে দুম্বা যবোহ হয়েছে তিনি হযরত ইসমাঈল (আঃ)। অথচ ইহুদীরা বলে থাকে। ইসহাকের কথা। এটা তারা মিথ্যা বলে। ইমাম আহমদের পুত্র আবদুল্লাহ (র) বলেছেন, আমার পিতার মত এই যে, যাবীহুল্লাহ হযরত ইসমাঈল (আ)। ইব্‌ন আবী হাতিম (র) বলেন, আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করেছি যে, যাবীহুল্লাহ কে? তিনি বলেছেন, যথার্থ কথা হল- তিনি হযরত ইসমাঈল (আ)। ইব্‌ন আবী

ՖԿՕ

হাতিম (র) বলেন, : হযরত আলী, ইব্‌ন উমর, আবু হুরায়রা (রা), আবুত-তুফায়ল, সাঈদ ইবনুল মুসাফির, সাঈদ ইব্‌ন জুবায়র, হাসান, মুজাহিদ, শা’বী, মুহাম্মদ ইব্‌ন কা’ব, আবু জাফর মুহাম্মদ ইব্‌ন আলী ও আবু সালিহ সকলেই বলেছেন-যাবীহুল্লাহ হযরত ইসমাঈল (আ)। ইমাম বগবী (র)-ও উপরোক্ত মত রাবী ইব্‌ন আনাস (রা), কালবী ও আবু আমর ইব্‌ন আলা (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন। হযরত মু’আবিয়া (রা) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি এসে রাসূল (সা)-কে সম্বোধন করল এভাবে; ৩১ – ১২|| ৩৮|| L- হে দুই যাবীহার পুত্র! একথা শুনে রাসূল (সা) হেসে দিলেন। উমর ইব্‌ন আবদুল আয়ীয (র) ও মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক (র)ও এই কথা বলেছেন। হাসান বসরী (র) বলেন, এ বর্ণনায় কোন সন্দেহ নেই। মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক মুহাম্মদ ইব্‌ন কা’ব সূত্রে বর্ণনা করেন— তিনি বলেন, উমর ইব্‌ন আবদুল আয়ীষ (র) যখন খলীফা, তখন আমি সিরিয়ায় ছিলাম। আমি ইসমাঈলের যাবীহুল্লাহ হওয়ার পক্ষে খলীফার নিকট দলীল স্বরূপ এই আয়াত পেশ করলাম;

(আঁমি তাকে ইসহাকের ও ইসহাকের পরে ইয়াকুবের জন্মের সুসংবাদ দিলাম)। তখন খলীফা উমর ইব্‌ন আবদুল আয়ীয বললেন, এটা তো একটা চমৎকার দলীল, এ দিকটা আমি লক্ষ্য করিনি। এখন দেখছি তুমি যা বলছি তাই সঠিক। অতঃপর খলীফা সিরিয়ায় বসবাসকারী এক লোককে ডেকে আনতে বলেন। ঐ লোকটি পূর্বে ইহুদী ছিল। পরে ইসলাম গ্ৰহণ করে এবং একজন ভাল মুসলমান হয়। লোকটি ইহুদী সম্প্রদায়ের আলিম ছিল। খলীফা তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ইবরাহীম (আ)-এর দুই পুত্রের মধ্যে কোন পুত্ৰকে যবোহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সে বলল, আল্লাহর শপথ ইসমাঈল (আঃ)-কে। হে আমীরুল মুমিনীন! ইহুদীরা একথা ভালরূপেই জানে। কিন্তু তারা আরবদের প্রতি হিংসা পোষণ করে এ কারণে যে, তাদের পিতৃপুরুষ এমন এক ব্যক্তি যার ব্যাপারে আল্লাহর নির্দেশ রয়েছে এবং যবেহর নির্দেশ পেয়ে ধৈর্য ধরার কারণে যার সম্মান ও মর্যাদার উল্লেখ করা হয়েছে। এই কারণেই ইহুদীরা জেনে বুঝেই তাকে অস্বীকার করে এবং বলে যে, ইসহাককেই যবোহ করার আদেশ দেয়া হয়েছিল। কেননা, ইসহাক (আ) তাদের পিতৃপুরুষ। এ বিষয়ে আমরা দলীল-প্রমাণসহ বিস্তারিত আলোচনা আমাদের তাফসীরে উল্লেখ করেছি। সমস্ত প্ৰশংসা আল্লাহরই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *