৮. কে অতীতকে নিয়ন্ত্রণ করে? কে ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করে? পশ্চিম কেন স্তালিনকে ঘৃণা করে?

আমরা বলি : আমাদের লক্ষ্য হলো সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা অর্জন করা, যা, শ্রেণিতে শ্রেণিতে মানবজাতির বিভক্তিকে বিলোপ করে, মানুষ কর্তৃক মানুষের উপর আর এক জাতি কর্তৃক অন্য জাতির উপর সমস্ত শোষণের অবসান ঘটিয়ে, অপরিহার্য রূপে যুদ্ধের খোদ সম্ভাবনাকেই বিলুপ্ত করে। — ভ. ই. লেনিন

৮. কে অতীতকে নিয়ন্ত্রণ করে? কে ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করে? পশ্চিম কেন স্তালিনকে ঘৃণা করে?

ইয়োরোপ ২৩ আগস্ট দিনটিকে তাদের তথাকথিত স্ট্যালিনিজম এবং নাজিইজমের ক্ষতিগ্রস্তদের স্মরণের দিন হিসেবে চিহ্নিত করে। কাকতালীয়ভাবে এই দিনটিতে মলোটভ-রিবেটুপ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দিনটিকে স্মরণের দিন’ করবার অনেক কারণের মধ্যে অন্যতম কারণ হলো স্তালিন এবং হিটলারকে, এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন আর নাজি জার্মানিকে এক করে দেখাতে চায়। এই বিষয় নিয়ে অধ্যাপক গ্রোভার কার ফার স্পুটনিক এর সাথে কথা বলেছেন।

বহুমুখী আক্রমণের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নের অতীত কলঙ্কজনক বলে আমেরিকা এবং তার মিত্র ন্যাটো জোট রাশিয়ার বর্তমান নেতৃত্বকে টার্গেট করেছে যেন তারা তাদের সামনে বিশেষ করে পশ্চিমের সামনে মাথা নত করে রাখে! যাই হোক সোভিয়েত ইউনিয়ন কখনোই বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ গত শতাব্দীতে যা করে এসেছে তা করেনি! যদিও আমেরিকা এবং ন্যাটোর হাতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পর প্রচণ্ড সামরিক শক্তি এবং তা ব্যবহারের হুমকি-ধামকিও ছিল। স্পুটনিককে কথাগুলো বলেন সোভিয়েত বিষয়ে আমেরিকার বিশেষজ্ঞ Montclair State University’1 9743797 Grover Carr Furr.

অযৌক্তিক মনে হওয়া সত্ত্বেও ঘটনা হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন এক যুগ আগেই সোভিয়েত ইউনিয়নকে কালিমালিপ্ত করার পশ্চিমা অপপ্রচারযন্ত্র অকেজো করে দিতে পেরেছিল। প্রথম ব্রিটিশ-আমেরিকান ইতিহাসবিদ Robert Conquest এবং পরে আমেরিকার বুদ্ধিজীবী Timothy Snyder সোভিয়েতবিরোধী অপপ্রচারের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন।

অধ্যাপক Grover Carr Furr জোর দিয়ে বলেন :

“কেন এত স্তালিন এবং কমিউনিজম-বিরোধিতা? কমিউনিজম বিরোধিতা? কারণ কমিউনিজম পুঁজিবাদের বিপরীত এবং স্তালিন বিরোধিতা, কারণ স্ক্যালিনের আমলে সোভিয়েত ইউনিয়ন বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলনের পক্ষে সুদৃঢ় ভূমিকা নিয়েছিল এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছিল। অধিকন্তু স্তালিনবিরোধিতা এবং কমিউনিজমবিরোধিতা, কারণ পুঁজিবাদীরা এবং সাম্রাজ্যবাদীরা পুরো বিংশ শতাব্দীজুড়ে ভয়াবহ নৃশংসতা ঘটিয়েছিল, যা বর্তমানেও বলবৎ রয়েছে।”

.

ঠান্ডা লড়াই : পশ্চিমা ইতিহাসবিদদের গোয়েন্দাগিরি

অধ্যাপক Grover Carr Furr নির্দিষ্ট করে দেখিয়ে দেন যে রবার্ট কনকোয়েস্ট (“The Great Terror: Stalin’s Purges of the 1930s” বইয়ের লেখক, ২০১৫ সালের ৩ আগস্টে যিনি মারা গেছেন।) কাজ করেছিল British Information Research Department বা IRDর হয়ে এটার জন্ম থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত । এই IRD কে আদতে বলা হয় কমিউনিস্ট ইনফরমেশন ব্যুরো, যার গোড়াপত্তন হয়েছিল ১৯৪৭ সালে যখন ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগ শুরু হয়েছে।

“IRD’র প্রধান কাজ ছিল বিশ্বজুড়ে রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে কমিউনিজমবিরোধী গল্প পয়দা করে ঢুকিয়ে দিয়ে কমিউনিজমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জারি রাখা, অধ্যাপক ফার এভাবেই ব্যাখ্যা করেন। তথাকথিত সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্যাক স্টোরি তৈরিতে কনকোয়েস্টের বড় অবদান ছিল।” তিনি আরও বলেন- “অন্য কথায় ভুয়া গল্পগুলো সত্যি ঘটনা হিসেবে সাংবাদিকসহ যারা সমাজে মতামত সৃষ্টি করতে পারেন তাদের মথ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিল।”

অধ্যাপক ফার আরও দেখান যে “কনকোয়েস্টের The Great Terror বইটি মূলত কমিউনিজমবিরোধী বই, যার অন্যতম বিষয় ছিল ১৯৩৭ সালের সোভিয়েত ইউনিয়নের ক্ষমতার দ্বন্দ এবং তিনি তা খুঁচিয়ে বার করার চেষ্টা করেছেন। সে সময় তিনি সিক্রেট সার্ভিসে কাজ করতেন। বইটি সম্পূর্ণ করা এবং প্রকাশ করার কাজে IRD সাহায্য করে। বইটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ হয় Praeger Press-এর সাহায্যে, সাধারণত এই প্রতিষ্ঠানটি প্রকাশনার দিক দিয়ে CIA’র উৎপন্ন!”

অধ্যাপক মন্তব্য করেন, বর্তমান সময়ে কনকোয়েস্ট সোভিয়েত ইউনিয়নে কমিউনিজমবিরোধী এবং সোভিয়েতবিদ্বেষী ইতিহাসবিদদের অন্যতম সোর্স বা মাধ্যম।

অপপ্রচারকারীদের কর্মযজ্ঞ ছিল অনেকটা স্কলারশিপের মতো যা সোভিয়েত ইউনিয়নকে লক্ষ্য করে গড়ে তোলা হয়েছিল এবং সমন্বয় করেছিল আমেরিকান ব্রিটিশ ইন্টেলিজেন্স!

অধ্যাপক দেখান যে কনকোয়েস্ট মাঝেমধ্যেই পশ্চিমা গুরুত্বপূর্ণ পণ্ডিতদের সমালোচনার সামনে পড়তেন। তারা তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে সোভিয়েত ইউনিয়নের তথ্য বিকৃতি বা উর্বর অনুমানের জন্য তিরস্কার করতেন। কনকোয়েস্ট সেই সব সোর্স ব্যবহার করতেন যারা যে কোনো কারণেই হোক স্তালিনবিরোধী এবং সোভিয়েত বিরোধী ছিলেন। সেই ‘একচোখা লোকগুলোই কনকোয়েস্টের সোর্স ছিল।

.

সোভিয়েতবিরোধী কথোপকথন পশ্চিমের দ্বিতীয় ধারা হিসেবে উদ্ভূত হলো

একথা বলা বাহুল্য যে, ব্রিটিশ-আমেরিকান ইতিহাসবিদ রবার্ট কনকোয়েস্টের প্রচুর অনুসারী আছে, বিশেষ করে যখন পশ্চিম-রাশিয়ার সম্পর্ক ভীষণভাবে অবনতি ঘটেছে। এই নির্লজ্জ ইতিহাস বিকৃতিই দ্বিতীয় ধারা হিসেবে প্রচলিত ঠান্ডা লড়াইয়ের একটি উপাদান হয়ে উঠেছিল

“কে অতীতকে নিয়ন্ত্রণ করে,
কে ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করে,
পশ্চিম কেন স্তালিনকে ঘৃণা করে?”

যদিও আশ্চর্যজনকভাবে পশ্চিমা ঐতিহাসিক কথোপকথন সমসাময়িক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং স্তালিন সম্পর্কে রাজনৈতিক মিথ তৈরি করতে পেরেছিল।

সোভিয়েত রাশিয়াকে কালিমালিপ্ত করাদের মধ্যে একজন টিমোথি সেডার, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের অধ্যাপক এবং “Bloodlands” বইয়ের লেখক। যিনি কনকোয়েস্টের মতো পশ্চিমা প্রকাশকদের আগ্রহ আর সাহায্য অপপ্রচারের কাজে ব্যবহার করেছেন।

স্তালিনকে আক্রমণের সময় স্নেডার পাঠককে এটা বোঝাতে চেষ্টা করেন যে হিটলার নৃশংস ছিলেন না, অধিকন্তু সোভিয়েত নেতার চেয়ে কম নৃশংস ছিলেন । স্নোডেন এমনকি এটা বোঝাতে চেয়েছেন হিটলার ইহুদি নির্মূলের জন্য স্তালিনের উপর এবং তার পদ্ধতির উপর নির্ভর করতেন! অধ্যাপক ডেভিড এ. বেল স্নেডারের “Black Earth” এর সাম্প্রতিক রিভিউতে এ মন্তব্য করেন :

“আশ্চর্যজনকভাবে স্নেডার ব্যাপকভাবে কনকোয়েস্টের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। তার আখ্যান তৈরি হতো বিতর্কিত সোর্স, অপবাদ, অর্ধ সত্য সব সময়ই সোভিয়েতের প্রতি শতু ভাবাপন্ন। অধ্যাপক ফার তার বই “Blood Lies তে প্রকাশ করে দেন যে স্ক্যালিনের বিরুদ্ধে টিমোথি স্নেভারের প্রত্যেকটি প্রমাণ প্রত্যেকটি অভিযোগ এবং সেভারের “Bloodlands” নির্ভেজাল মিথ্যা।”

.

মলোটভ-রিবেনট্রপ আঁতাত : সত্য এবং মিথ্যা

১৯৩৯ সালের মলোটভ-রিবেট্রপ আঁতাতের যে বর্ণনা সেডার এবং অন্যান্য কমিউনিস্টবিরোধী ইতিহাসবিদরা দিয়েছিলেন সেসবও ছিল অনুমান মাত্র।

“তারা লিখেছিলেন : সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং নাজি জার্মানি এই মর্মে একটি চুক্তি করতে ঐকমত্যে পৌঁছেছিল যে পূর্ব ইয়োরোপকে তারা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেবে, সেটাও ছিল সর্বৈব মিথ্যা। গোপন দফাসম্বলিত চুক্তিতে চিহ্নিত করা হয়েছিল পুরো পূর্ব পোল্যান্ড সোভিয়েত প্রভাব বলয়ে থাকবে। এর অর্থ হলো যখন জার্মান সেনাবাহিনী পোল্যান্ড সেনাবাহিনীকে পরাস্ত করল তখন দুটি শর্তের আওতায় তাদেরকে পোল্যান্ড ছাড়তে হলো। শর্ত দুটি ছিল (ক) জার্মান সেনাবাহিনী ১৯৩৯ এর সোভিয়েত সীমান্ত থেকে শত শত মাইল দূরের পূর্ব পোল্যান্ড থেকে নিজেদেরকে প্রত্যাহার করবে। (খ) পোল্যান্ড তার অস্তিত্ব বহাল রাখবে এবং স্বইচ্ছায় হিটলারবিরোধী সোভিয়েত জোটে অন্ত ভুক্ত থাকবে।” অধ্যাপক ফার বলেন।

ফার দেখিয়ে দেন যে সোভিয়েত ইউনিয়ন পোল্যান্ডকে পেতে প্রবলভাবে চেষ্টা করেছিল, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স ‘যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সম্মত, আর সেটাই একে অপরের প্রতি কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ হয় যে হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করলে তারা জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। হায়! ওয়ারশ এবং লন্ডন এধরনের কোনো চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বসল!

.

গ্রোভার ফার জোর দিয়ে বলেন : “অক্টোবর ১৯৩৮ এর ‘মিউনিখ চুক্তি’ যেখানে ইউকে এবং ফ্রান্স চেকশ্লোভাকিয়ার বৃহৎ অংশ হিটলারকে উপহার দিয়েছিল। আরও পরে তারা চেকশ্লোভাকিয়ার মওজুদ সোনাও হিটলারকে ‘ভেট’ দিয়েছিল। আর এটা প্রমাণ করে যে পুঁজিবাদীরা চেয়েছিল হিটলার সোভিয়েত ইউনিয়ন আক্রমণ করুক। কমিউনিস্টবিরোধী এবং সেমেটিকবিরোধী পোলিশ সরকারও চেকশ্লোভাকিয়ার একাংশ ছিনিয়ে নিয়েছিল।”

.

অধ্যাপক ফার এর গুরুত্বারোপ

১৯৩৯ সালে সেপ্টেম্বরে জার্মান সেনাবাহিনী পোল্যান্ড দখল করে নিলে পোল্যান্ড সরকার রুমানিয়ায় পালিয়ে যায়। তখন সেখানে কোনো সরকারও ছিল না, সেটা কোনো রাষ্ট্রও ছিল না।

হিটলারের লোকজন বলে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রাক্তন পূর্ব পোল্যান্ডে একটি জার্মান নাজিপন্থী ও কমিউনিস্টবিরোধী ইউক্রেনিয়ান রাষ্ট্র গঠনে সম্মতি দিয়েছিল। সুতরাং পূর্ব পোল্যান্ড দখল করতে সোভিয়েতের কোনো সমস্যা ছিল না। যাই হোক পূর্ব পোল্যান্ড আসলে পোলিশ ছিল না, এটা ১৯২১ সালে সোভিয়েত ‘সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দখল করে নিয়েছিল। তখন দেশটির অধিকাংশ অধিবাসী ছিল ইউক্রেনীয়, বেলারুশীয় এবং ইহুদি।

অধ্যাপক ফার জোর দিয়ে বলেন- মলোটভ-রিবেটুপ চুক্তির তাৎপর্য ছিল অপরিসীম। এটা সোভিয়েত ইউনিয়নকে এবং কার্যত ইয়োরোপকে হিটলারের আধিপত্য থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছিল।

তিনি আরও জোর দিয়ে বলেন–

“যদি জার্মানি সোভিয়েত সীমানার ৩০০ মাইলের মধ্যে আক্রমণ করতে সক্ষম হতো তাহলে দলে দলে নাজি বাহিনী মস্কো দখল করে নিত। আর যদি হিটলার সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করতে পারত তাহলে তার পদানত হতো ক্ষমতাবান এবং সম্পদসহ বিশাল একটি দেশ, যার মিলিত শক্তি ইয়োরোপ তথা বিশ্বকে শাসন করত। ইতোমধ্যেই হিটলার প্রায় পুরো ইয়োরোপই দখল করে নিয়েছিল।”

সুতরাং কেন সেডার আর তার স্যাঙাত্রা এটা মেনে নিতে অস্বীকার করেন?

সোভিয়েত ইউনিয়নকে আক্রমণ করে পশ্চিমারা বর্তমান রাশিয়াকে টার্গেট করতে চায় অধ্যাপক ফার আরও যোগ করেন, প্রথম সারির পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা সত্য অনুসন্ধানে আগ্রহী ছিলেন না। আগে ছিলেন কনকোয়েস্ট এখন আছেন স্নেডার নামক অপপ্রচারকারী।

.

তিনি স্পুটনিককে বলেন

“আমি তাদের কাজকে বলি ‘পাদটীকাযুক্ত অপপ্রচার’। ওই পাদটীকা এবং পাণ্ডিত্যপূর্ণ যন্ত্রপাতি প্রচার মাধ্যমকে এবং যে বুদ্ধিজীবীরা স্তালিনবিরোধী এবং কমিউনিজমবিরোধী অপপ্রচারের ডালপালা বিস্তারে সাহায্য করেছিল তাদেরকে বোকা বানানোর জন্য দরকারী ছিল।”

স্লেভারের লক্ষ্য… শুধু সেডার কেন, দীর্ঘ মেয়াদে এমন অনেকেই ছিলেন যারা স্তালিনকে হিটলারের সমতুল্য, নাজি জার্মানিকে সোভিয়েতের সমতুল্য এবং কমিউনিজমকে নাজিবাদের সমতুল্য জ্ঞান করতেন। সেটা এই কারণে আরও যে ২৩ আগস্ট “স্মরণ করার দিন যেটা পালন করত উগ্র ডান পোলিশ, ইউক্রেনীয় এবং হাঙ্গেরীয় সরকার।

“আমি এই ‘রক্তাক্ত মিথ্যার শেষে বলতে চাই, টিমোথি সেডারের Bloodlands’ এ জোসেফ স্তালিন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রত্যেকটি অভিযোগ, প্রত্যেকটি প্রমাণ মিথ্যা। অধ্যাপক ডোমিনিকো লোসুরদো থেকে সাহায্য নিয়ে বরং এটা বলা যায় যে চার্চিল হিটলারের বা ডালাডিয়ের অথবা চেম্বারলিনের সমতুল্য, কোনোভাবেই স্তালিনের নয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন নাজি জার্মানি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। আর হিটলার এবং নাজিরা যে পশ্চিমের রাজনীতিকদের প্রিয় সেটা তো সকলেই জানেন।
.

কিন্তু ওয়াশিংটন কেন রাশিয়াবিরোধী?

The professor explained that unlike Gorbachev or Yeltsin, President Putin does not bow before Washington and NATO, adding that the US’ capitalist competition will inevitably lead to imperialist competition and war.

অধ্যাপক ফার ব্যাখ্যা করে বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিন তার পূর্বসূরি গর্বাচেভ বা ইয়েলেৎসিনের মতো ওয়াশিংটন এবং ন্যাটোর সামনে মাথা নত করার মতো লোক নন। আমেরিকাকে এখন বিশ্বে মাতব্বরির জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হচ্ছে।

অধ্যাপক ফার স্পুতনিককে বলেন- “আমার অভিজ্ঞতায় আমি এটা স্বীকারে কুণ্ঠিত নই যে আমেরিকার বৈদেশিক নীতিতে অনেক সারল্য রয়েছে। আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সব চেয়ে বেশি শক্তি আর ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। সারা বিশ্বের অন্তত একশোটি দেশে তাদের সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের বৃহত্তম…। আমরা তাদের মতো অমন ‘সরল’ নই। আমরা জানি কোনো দেশ কোনো স্বার্থ ছাড়া এই পরিমাণ ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করে না। সুতরাং তারা পরবর্তী যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে!”

“My point is this: the USSR and world communist movement never did anything remotely comparable to what the capitalists and imperialists did in the last century. And this is unacceptable (for capitalists]. They must show communism and Stalin to be worse than, not better than, what the capitalists and imperialists were doing. Lying is the only way,” Professor Grover Furr concluded.

“আমার পয়েন্টগুলো হচ্ছে, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং বিশ্ব কমিউনিস্ট আন্দোলন তুলনা করার মতো এমন কিছু করেনি যা পুঁজিবাদী এবং সাম্রাজ্যবাদীরা গত শতাব্দীজুড়ে করে এসেছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তাদেরকে অবশ্যই দেখাতে হবে যে স্তালিন এবং কমিউনিজম পরিত্যক্ত, পুঁজিবাদীরা যেমনটি করছেন তেমনটি নয়। আর এটা প্রমাণের এক মাত্র উপায় মিথ্যা।”

.

গ্রন্থপঞ্জি

১। Who Controls the Past Controls the Future: Why Does West Hate Stalin? Ekaterina Blinova 25.08.2015

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *