৭. র‍্যাগনারক

সপ্তম অধ্যায় —র‍্যাগনারক

নর্স মিথোলজি কেবল অতীতের কথা বলেই শেষ হয়ে যায়নি। ভবিষ্যতে কী ঘটবে, অর্থাৎ অন্তিম যুদ্ধ বা র‍্যাগনারকের একটা পরিষ্কার ধারণা সেখানে দেওয়া আছে। কীভাবে পৃথিবী ধ্বংস হবে, কীভাবে দেবতাদের অন্ত হবে। কীভাবে দেবতারা তাঁদের প্রত্যেকটি ভুল কাজ বা সিদ্ধান্তের জন্য অনুতাপ করবেন ভবিষ্যতে, সেই সব কথাই বেশ বিস্তারিত ভাবে বলা আছে। এখানেই অন্যদেশের মিথের সঙ্গে নর্স মিথোলজির মূল পার্থক্য। কেউই দোষত্রুটির ঊর্ধ্বে না। সকল প্রকার অন্যায় এবং ভুল সিদ্ধান্তের মাসুল শেষপর্যন্ত সবাইকেই গুণতে হবে।

এখনও অবধি সেই কাহিনীই বলা হয়েছে— নর্স মিথ অনুযায়ী যেটা অতীতে ঘটেছে, তবে এবার যা বলা হবে তা হল ভবিষ্যতের কথা। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী বল্ডার এবং হোডার মৃত, লোকি শাস্তিপ্রাপ্ত। ওডিন জানেন র‍্যাগনারক ভবিষ্যতে আসবেই—সেদিন সবকিছু ধ্বংস হবে। কিন্তু সেদিন ঠিক কী ঘটবে তিনি জানেন না কারণ ভবিষ্যৎ দেখার ক্ষমতা তাঁর নেই। তিন নর্ন বোনের ছোটজন জানেন কি ঘটবে, কিন্তু তিনি প্রকাশ করবেন না আগেই জানিয়ে দিয়েছেন। ওডিনের মনে পড়ল ভোলভার কথা। কিন্তু ভোলভাও বলেছেন যে তিনি র‍্যাগনারকের আগে আর ফিরে আসবেন না। তখন তিনি লিদস্কাল্ফ-এ বসে নয়টি জগতে তন্নতন্ন করে খুঁজতে লাগলেন এমন কাউকে যিনি ভবিষ্যত দেখতে পারেন। অবশেষে তিনি একজন জ্ঞানী নারীকে খুঁজে পেলেন। তাঁর নাম হাইড— তিনি ভবিষ্যত দেখতে পান। ওডিন তাঁর জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে জানতে পারলেন এই হাইড ভোলভার থেকেও বেশি জ্ঞানী। তিনি ওডিনের সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানেন।

তিনি ছদ্মবেশে মিডগার্ডে বেরিয়ে পড়লেন। সেই চিরাচরিত ছদ্মবেশ— জাদুকরের টুপি, নীল আলখাল্লা আর লম্বা জাদুদণ্ড। হাইডের কাছে তিনি নিজে পৌঁছনোর আগে ভ্যালকারিদের পাঠিয়েছিলেন। তাঁরা হাইডকে নানা উপহার দিয়েছিলেন, বিভিন্নরকম মন্ত্র, যা দিয়ে ধনসম্পদ পাওয়া যায়, নানারকম জাদু রুন লেখা পাথর ইত্যাদি।

তিনি হাইডের কাছে পৌঁছলেন এক মানুষের রূপে, তাঁকে কিছু মূল্যবান হার এবং আংটি উপহার দিলেন। কিন্তু হাইড তাঁর দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলেন তিনি আসলে কে। ওডিন হাইডকে ভবিষ্যতের ঘটনা বর্ণনা করার জন্য জন্য পিড়াপিড়ি করতে লাগলেন। অবশেষে হাইড তাঁর গুরুগম্ভীর গলায় বলে উঠলেন, “তুমি আমার থেকে ঠিক কী চাও ওডিন, কেন আমাকে বিভিন্ন জিনিসের লোভ দেখাচ্ছ? আমি সবকিছু জানি, জগতের শুরুর কথা যেমন জানি, জগত শেষ কি করে হবে সেটাও জানি। প্রথম দৈত্য য়িমিরের কথা যেমন জানি, তেমনি জানি মিসলটো দিয়ে তৈরি বাণে বল্ডারের মৃত্যুর কথাও।”

“যা ঘটে গেছে সেই সব সংবাদ— তুমিও যেমন জানো আমিও তেমনি জানি। সেসব জানার আমার আগ্রহ নেই। আমি শুধু জানতে চাই বিশ্বের শেষের সেই বিরাট যুদ্ধের কথা, যাকে র‍্যাগনারক বলা হয়। সেই কথা জানার জন্য আমি তোমার সঙ্গে আমার সমস্ত জ্ঞান ভাগ করে নিতে রাজি আছি।” এই বলে তিনি হাইডের পিছনে দাঁড়িয়ে তাঁর মাথায় হাত রেখে মন্ত্র পড়লেন, এবং সমস্ত জ্ঞানের রুন তাঁর আর হাইডের মধ্যে একটা শিকল তৈরি করল। এক অপার্থিব দৃশ্যের সৃষ্টি হল।

হাইডের চোখ বড়বড় হয়ে গেল, এবং তিনি যেন পার্থিব সকল কিছুর বাইরে অন্যকিছু দেখছেন এমন একটা শূন্যতা তৈরি হল।

তিনি বলতে শুরু করলেন—“ভবিষ্যতে এক এমন দিন আসবে যখন মানুষের পাপ সকল সীমা ছাড়াবে, নিজের স্বার্থের জন্যে মানুষ নিকটাত্মীয়দের খুন করতেও পিছ-পা হবে না। দেবতারা তখন ঘুমিয়ে থাকবেন, একমাত্র হিমদল ঘুমোবেন না। তিনি সবকিছুই দেখবেন, কিন্তু কিছু করতে পারবেন না।

এক শীতকালে এই ঘটনা শুরু হবে। এই শীতকাল শুরু হবে, কিন্তু শেষ হবে না। কোনো বসন্তকাল আসবে না, কোনো ফসল ফলবে না, মানুষরা ক্ষুধার্ত হবে, তাঁরা শীতের প্রকোপে জর্জরিত হবে কিন্তু সমাধানের জন্য কিছুই করতে পারবে না। তিনবছর ধরে শুধুই শীতকাল চলবে। এই শীতকালকে ফিম্বলউইন্টার বলা হবে। সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়ে মানুষের ক্ষোভের সীমা থাকবে না। তাই সারা পৃথিবীতে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়বে। ভাই ভাইয়ে যুদ্ধ হবে, পিতারা হত্যা করবেন সন্তানকে, মা আর কন্যাদের মধ্যে যুদ্ধ হবে, এমনকি মা-বাবারা দেখবেন তাঁদের সন্তানেরা এঁকে অপরকে হত্যা করছে।

এই সময়ে মানুষ আর বুনো জন্তুতে কোনো পার্থক্য থাকবে না, মানুষের বাসস্থান ধ্বংসাবশেষে পরিণত হবে। দিন-রাতের পার্থক্য ঘুচে যাবে। সবসময়ই সন্ধ্যার মত আবহাওয়া থাকবে। তারপর একসময় পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যাবে। তখনো যারা বেঁচে থাকবে, তারাও জন্তু জানোয়ারের মত বেঁচে থাকবে। চতুর্দিকে বরফপাত শুরু হবে। বরফের ঝড়ের মত বায়ু বইবে। এত ঠান্ডা, এত শীতল সেই বায়ু যে প্রশ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়ে উঠবে। ঠান্ডায় চোখের জলও জমে যাবে। এই শীতের পর কোনো বসন্ত নেই, কোনো গ্রীষ্ম নেই, কোনো শরত নেই। শুধুই শীতকাল, তারপর আবার শীত, তারপর আবার।

একদিন য়োটুনহাইমে একটি লাল মোরগ, হেলহাইমে একটি কালচে-লাল মোরগ এবং অ্যাসগার্ডে একটি সোনালী মোরগ একই সঙ্গে ডেকে উঠবে। তাদের ডাক র‍্যাগনারকের সূচনা চিহ্নিত করবে।

এরপর আসবে একের পর এক বিরাট ভুমিকম্প। পর্বত থেকে বড়বড় পাথরের চাঁই ভেঙে পড়বে, শিকড়শুদ্ধ গাছ উপড়ে পড়বে, এবং যদি মানুষের বসবাসের মত কোনো জায়গা অবশিষ্ট থেকেও থাকে, তা ধ্বংস হবে। এত বড় ভুমিকম্প হবে যে সব বাঁধন ভেঙে যাবে। সব! সঙ্গে সঙ্গে যে যেখানে বাঁধা আছে, সকলেই মুক্ত হবে।

ফেনরির, সেই বিশাল নেকড়ে, তার বাঁধন থেকে মুক্ত হবে। ততদিনে সে এত বড় হবে যে তার উপরের চোয়াল আকাশ ছোঁবে নিচের চোয়াল ছোঁবে মাটি। তার চোখ আর নাক থেকে আগুনের হলকা বেরোবে। যেখানে যেখানে সে যাবে, সমস্ত কিছু আগুনে পুড়ে ধ্বংস হবে যাবে। যে কটি মানুষ অবশিষ্ট থাকবে, তারা অবাক হয়ে দেখবে, সুর্য নেই, যেন এক নেকড়ে বাঘ তাকে গ্রাস করেছে, চাঁদেরও একই অবস্থা। কেউ আর একটি তারাও দেখতে পাবে না। সমগ্র আকাশে বাতাসে কুয়াশার গহন চাদরের মত অন্ধকার ছেয়ে থাকবে।

এর সঙ্গে যুক্ত হবে বন্যা। জরমুঙ্গড সাপ তীরের দিকে আসতে থাকবে তাই সমুদ্রের উচ্চতা বাড়বে, তার ফলে বিরাট বিরাট বন্যা দেখা দেবে। তার বিষ জলের সঙ্গে মিশবে, ফলে জলের সব প্রাণী মারা যাবে। সে বাতাসেও তার বিষ ছড়াবে, যাতে সব সামুদ্রিক পাখিরাও মারা যায়। যেখানে যেখানে এই মিডগার্ড সর্পের মস্তক যাবে, সেখানে আর কোনো প্রাণ অবশিষ্ট থাকবে না। সমস্ত মৃত পচা জলজ প্রাণী, মাছ, তিমি, এমনকি সমুদ্রদানবরাও মৃত হয়ে তীরে ভেসে আসবে। যারাই ফেনরির অথবা মিডগার্ড সর্পকে দেখতে পাবে, সকলেরই মৃত্যু হবে।

এরপর আকাশ ফেটে যাবে, সেখান দিয়ে মুসপেল হাইমের রাজা অগ্নিদানব সুর্তর আসবেন, সঙ্গে আসবে তাঁর সেনাবাহিনী, আগুনের সন্তানরা। সুর্তরের তরবারি এত জাজ্বল্যমান যে সেদিকে কোনো মরণশীল জীব তাকালেই তার মৃত্যু হবে। তারা পুরো আকাশ জ্বালিয়ে দিয়ে রামধনুসেতু বেয়ে অ্যাসগার্ডে যাবেন। তাঁদের আগুনে রামধনু সেতু নষ্ট হয়ে যাবে। যেখানে রামধনু দেখা যেত, সেখানে কেবল কয়লার কালো আর ছাইয়ের রঙ দেখা যাবে, আর কখনও সেখানে আরেকটা রামধনু হবে না।

লোকিও নিজের বাঁধন থেকে মুক্ত হবেন। তিনি একটি জাহাজের কান্ডারী হবেন, যার নাম নাগল্ফার। এই জাহাজের মত বড় জাহাজ কোথাও নেই। মৃত মানুষদের আঙ্গুলের নখ দিয়ে তৈরি এই জাহাজ। (সেইজন্যেই নর্স রীতিতে মৃতব্যক্তির নখ পরিষ্কার করে কেটে দেওয়া হত, যাতে এই জাহাজ বানাতে যতটা সম্ভব দেরী হয়)। সমুদ্রের উপর দিয়ে লোকি জাহাজ চালালেও এই জাহাজের অধিপতি হবেন রিম, তিনি বরফ-দানবদের রাজা। যে সব বরফ-দানব বেঁচে থাকবেন তাঁরা সবাই তাঁকে অনুসরণ করবেন।

হেলহাইমেরর নাগরিকরা হবেন লোকির সেনা। যাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে বীরের মত মৃত্যুবরণ করেননি। এঁরা শেষবারের মত পৃথিবীতে ফিরে আসবেন চলমান মৃতদেহের মত। অ্যাসগার্ড এবং মিডগার্ড থেকে সমস্তরকম জীবনকে শেষ করে দেওয়াই এদের উদ্দেশ্য।

সকল দানব আর মুসপেলহাইমের আগুন সন্তানেরা এসে জড় হবে ভিগ্রিড নামক রণক্ষেত্রে। ভিগ্রিড অ্যাসগার্ডের কাছেই প্রায় তিনশ মাইল লম্বা এবং চওড়া এক স্থান। ফেনরির নেকড়ে এবং মিডগার্ড সর্পও ভিগ্রিডের কাছাকাছি চলে আসবেন। মিডগার্ড সৰ্প শুধুমাত্র তার মাথা আর তার শরীরের প্রথম এক মাইল নিয়ে আসবেন তীরে, বাকি অংশ থাকবে সমুদ্রেই।

এরপর তাঁরা সৈন্য সাজাবেন। সুর্তর এবং তার সন্তানেরা থাকবেন একদিকে, হেল এবং লোকির সেনাবাহিনী আসবেন মাটির তলা থেকে, বরফদৈত্যরা থাকবেন রিমের নেতৃত্বে আর ফেনরির এবং মিডগার্ড সর্পও থাকবে তাদের সঙ্গে। দেবতাদের সবকজন সবথেকে খারাপ শত্রুরা সকলেই একসঙ্গে থাকবে।

হিমদল সবই দেখতে পাবেন, কারণ তিনি দেবতাদের প্রহরী। কিন্তু তিনি কিছুই করতে পারবেন না তখন পর্যন্ত, কারণ তাঁর কিছু করার অনুমতি নেই, কিন্তু এবার তাঁর কাজ শুরু হবে। মিমিরের মৃত্যুর পর ওডিন হিমদলকে যে শিঙাটা দিয়েছিলেন, জ্যালার-হর্ন, সেটা তিনি সর্বশক্তি দিয়ে বাজাবেন। সম্পূর্ণ অ্যাসগার্ড সেই আওয়াজে নড়ে উঠবে। ঘুমন্ত দেবতারা সকলেই জেগে উঠবেন। তারপর তাঁরা অস্ত্র নিয়ে সকলে ইগড্রাসিলের গোড়ায় জমা হবেন

ইগড্রাসিল, সেই বিরাট বিশ্ববৃক্ষ, এই বিপদে ঝড়ের সামনে কুটোর মত কাঁপতে থাকবে। অ্যাসির আর ভ্যালহালায় বসবাসকারী যে সব দক্ষ সেনা রয়েছে সকলে যুদ্ধসাজ করে ভিগ্রিডের দিকে রওয়ানা হবেন। ওডিন সবার সামনে চলবেন, তাঁর উজ্জ্বল বর্ম পরে। তাঁর পাশে থাকবেন থর, হাতে তাঁর মিয়লনির হাতুড়ি।”

হাইড থামলেন। ওডিন সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করলেন—”তারপর? তারপর কী হবে?”

হাইড জিজ্ঞাসা করলেন—“আপনি সত্যিই জানতে চান?”

ওডিন বললেন—”অবশ্যই।”

“তাহলে শুনুন…” এই বলে হাইড আবার বলা শুরু করলেন। “যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছে ওডিন সোজা ফেনরির নেকড়ের দিকে চলতে শুরু করবেন। ফেনরির এখন এতই বড় হয়েছে যে কল্পনাও করা যায় না। ওডিনের হাতে গাংনির, তাঁর বর্শা। থর চলতে শুরু করবেন মিডগার্ড সর্পের দিকে, তাঁর হাতে শক্ত করে ধরা তাঁর হাতুড়ি, মিয়লনির।

ফ্রে সুর্তরের দিকে চলতে শুরু করবেন। তবে সুর্তরের জ্বলন্ত তরোয়ালের কাছে তাঁর তরবারি কিছুই না। তিনি বীরের মত লড়েও সুর্তরের হাতে মারা পড়বেন। মারা যাওয়ার আগে একবার তাঁর নিজের তরোয়ালের কথা মনে পড়বে, যে বিশেষ তরবারিটি নিজে নিজেই যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখত। তবে দানবী গের্ডের ভালোবাসা লাভ করার জন্য তিনি ওই তরবারিটি তাঁর কর্মচারী স্কিরনিরকে পুরষ্কার হিসাবে দিয়ে দিয়েছিলেন। হয়তো সেই তরবারিটি এই সময়ে তাঁর হাতে থাকলে তিনি বাঁচতে পারতেন।

এদিকে ওডিনের ভ্যালহালার যোদ্ধা, যাঁরা আইনহের্জার নামে পরিচিত— তাঁরা লোকির মৃতদের সেনাবাহিনীর সঙ্গে ভীষণ যুদ্ধ করবেন। পাতালের কুকুর গার্ম এক বিরাট হুঙ্কার ছেড়ে যুদ্ধক্ষেত্রে আসবে। গার্ম ফেনরিরের থেকে ছোট, কিন্তু সমস্ত কুকুরের মধ্যে সবথেকে বড় এবং সবথেকে বিপজ্জনক। সেও তাঁর বাঁধন ছিঁড়েছে ভুমিকম্পের সময়ে এবং অ্যাসগার্ডে এসেছে। তার একমাত্র লক্ষ্য যত বেশি সংখ্যক আইনহোর যোদ্ধার টুটি ছিঁড়ে ফেলা। টিউ লড়তে শুরু করবেন গার্মের সঙ্গে, এক হাত দিয়েই। টিউয়ের

হাতে গার্ম মারা পড়বে তবে অন্তিম সময়ে সে টিউয়ের টুটি কামড়ে ধরবে, তাই টিউও মারা যাবেন। টিউয়ের দুটি হাতই অবিকৃত থাকলে গার্মকে হত্যা করে তিনি বেঁচে থাকতে পারতেন, কিন্তু এক হাতের জন্য দুইজনেই অবশেষে মারা পড়বেন।

থরের স্বপ্ন ছিল মিডগার্ড সর্পের হত্যা করা, তিনি শেষ পর্যন্ত তা করবেনও। এর থেকে বড় বীরত্বের কোনো কাজ কখনো হয়নি এবং হবেও না ভবিষ্যতে। তিনি তাঁর হাতুড়ির আঘাতে ওই ভয়ানক সর্পের মাথা থেঁতো করে দেবেন। সর্পের মাথাকে শূন্যেই ভয়ানক ভাবে দুলতে দেখে তিনি বেশ দূরত্বে সরে আসবেন, কিন্তু তিনি বুঝতে পারবেন না যে সেই দুরত্বটাও যথেষ্ট নয়। এক সময় সর্পের মাথা মাটিতে আছড়ে পড়বে আর সঙ্গে সঙ্গেই সে তার সমস্ত বিষ উজাড় করে ঢেলে দেবে। থরের সারা শরীর কালো রঙের বিষে ঢেকে যাবে, তিনি একবার যন্ত্রণায় চিৎকার করে উঠবেন, তারপরেই তাঁর মৃতদেহ আছড়ে পড়বে মাটিতে।

ওডিন খুব সাহসের সঙ্গে ফেনরিরের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন, কিন্তু ওই নেকড়েবাঘ অতিরিক্ত বিশাল এবং ওডিনের ধারণার থেকেও বেশী বিপজ্জনক। সে ততদিনে সুর্যের থেকেও বড়, চাঁদের থেকেও বিরাট হয়েছে। ওডিন তার মুখ বর্শা দিয়ে এফোঁড় ওফোঁড় করে দেবেন, কিন্তু এক ঝটকায় সে বর্শা ভেঙে ফেলবে, তারপর আরেক ঝটকায় সে ওডিনকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবে। এভাবেই সর্বশক্তিমান, পরমপিতা, সবথেকে জ্ঞানী দেবতার মৃত্যু ঘটবে। ওডিনের সন্তান ভিডার এই ঘটনা দেখে পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে এগিয়ে আসবেন।

ভিডার একেবারেই কথা বলতে পছন্দ করেন না। তিনি চুপচাপ কিন্তু দেবতাদের মধ্যে তাঁর থেকে বেশি নির্ভরযোগ্য কমই আছেন। ভিডারের দুটি পা দুরকম। এক পায়ে একটি সাধারণ জুতো পরা, অন্য পায়ে এক অদ্ভুত জুতো রয়েছে। জুতো আবিষ্কারের পর থেকেই সবার সব জুতোর আঙুল আর গোড়ালির কাছের কিছু অংশের চামড়া বাদ দেওয়া হয়, সেই চামড়াগুলি নিজের থেকেই ভিডারের এই জুতোর মধ্যে যোগ দেয়। (নর্সধর্মে বিশ্বাসীরা নিজেদের জুতোর আঙুল আর গোড়ালির অংশ থেকে চামড়া কেটে ফেলে দিত, তারা বিশ্বাস করত যে এইসব চামড়া গিয়ে ভিডারের জুতোয় যুক্ত হবে এবং তাঁকে র‍্যাগনারকে সাহায্য করবে।) এতদিন ধরে ফেলে আসা টুকরো চামড়া দিয়ে তৈরি বিশাল জুতোসহ পা, ভিডার ফেনরিরের নিচের চোয়ালের উপর চাপিয়ে দেবেন। তাতে ফেরির আর নড়তে চড়তে পারবে না, তখন ভিডার এক হাত দিয়ে তাঁর উপরের চোয়াল ধরে এক ঝটকায় দুইদিকের চোয়াল আলাদা করে দেবেন। এইভাবেই ফেনরিরের মৃত্যু হবে আর ভিডার তাঁর পিতার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবেন।

ডিগ্রিডের যুদ্ধে, দেবতারাও যেমন মারা যাবেন, বরফ দানবরাও তেমনি মারা যাবেন, হেলের পাঠানো চলমান মৃতদেহরা যেমন রণভূমিতে পড়ে থাকবেন, তেমন তাদের পাশেই ওডিনের আইনহের্জারদের দেহও থাকবেন। সবার মৃত্যুই চুড়ান্ত। এই সুর্যহীন, প্রাণহীন, কুয়াশাময় আকাশের নিচে সকলের মৃতদেহ পড়ে থাকবে চিরকালের মত, ভবিষ্যতে কখনোই তাঁরা আবার জীবিত হয়ে উঠবেন না, আর কখনও এঁরা লড়বেন না।

লোকির সেনাদলে একমাত্র লোকিই জীবিত থাকবেন তখনো। রক্তাক্ত শরীর এবং পাগলপারা চোখ তাঁর। তবুও তাঁর ফেটে যাওয়া ঠোঁটে এক প্রশান্তির হাসি খেলে যাচ্ছে।

হিমদল, দেবতাদের অতন্দ্রপ্রহরীও তখন বেঁচে, তিনিও এক কোণে দাঁড়িয়ে। হাতে তাঁর তরবারি ‘হোফুড’— তরবারি এবং হাত দুটোই রক্তে ভেসে যাচ্ছে। মৃতদেহের উপর দিয়ে হেঁটে তারা পরস্পরের দিকে এগিয়ে যাবেন। এক সময় দুইজনেই সামনাসামনি হবেন। আমি এটুকুই দেখতে পাচ্ছি।” এই বলে হাইড চুপ করলেন।

কিন্তু খুব ধীরে ধীরে ওডিনের চোখের সামনে যেন একটা পর্দা উঠে গেল। হাইডের চোখ দিয়ে নয়, নিজের চোখ দিয়েই তিনি দেখতে পাচ্ছেন যে হিমদল আর লোকি সামনাসামনি হলেন। তিনি মন দিয়ে দেখতে লাগলেন তারপর কী হয়। তিনি দেখলেন…

লোকি ক্রুর-হেসে বলছেন—“তুমি বড়ই দেরীতে শিঙা বাজিয়েছ হিমদল, দেবতারা বড্ড দেরী করে ফেলেছেন। অবশ্য একে একে তাঁদের সবাইকে মৃত্যুবরণ করতে দেখাটাও আনন্দদায়ক, তাই না?”

লোকি আশা করেছিলেন হিমদলের থেকে কিছু প্রতিক্রিয়া পাবেন, কিন্তু হিমদল একেবারেই শান্ত হয়ে রইলেন। তাঁকে কথা বলার জন্য উসকাতে লোকি আবার বললেন—“এখন আর তোমার কিছুই বলার নেই হিমদল? যখন আমাকে মাটির নিচে বেঁধে রাখা হয়েছিল, যখন সেই সাপের বিষ আমার মুখের উপর পড়ছিল, বেচারী সিজিন সারাক্ষণ আমার পাশে দাঁড়িয়ে একটি পাত্রে বিষ জড়ো করার চেষ্টা করছিল। যখন আমি অন্ধকারে, আমারই সন্তানের নাড়িভুঁড়ির বাঁধনে ছিলাম, তখনো আমি পাগল হয়ে যাইনি, কেন জানো? আমি এই মুহূর্তের স্বপ্ন দেখছিলাম। আমি জানতাম, আমি এবং আমার প্রিয় সন্তানরা মিলে দেবতাদের রাজত্বের অন্ত করব, এই জগতের অন্ত করব।”

হিমদল তাতেও কিছু বললেন না, তবে খুব জোরে আঘাত করলেন লোকিকে। লোকির বর্মে তাঁর তরবারি লাগল, এবং লোকিও প্রত্যাঘাত করলেন, দুইজনে ভয়ানক যুদ্ধ আরম্ভ করলেন। কিছুক্ষণ পরে দুইজনেই মারাত্মক আহত হয়ে মাটিতে পড়লেন, দুইজনেই বুঝেছেন কেউই বাঁচবেন না। লোকি বললেন “র‍্যাগনারকের অন্ত হল এবার, আমি জিতলাম।”

এবার হিমদল হাসলেন, তিনি বললেন—“তোমার দূরদৃষ্টি নেই লোকি, তুমি বড়ই মুর্খ। আমি আগামীকে দেখতে পাচ্ছি, তাই আমার মৃত্যু তোমার থেকে অনেক বেশি শান্তির।”

লোকি আবার বললেন—”সমস্ত মরণশীল জীবের মৃত্যু ঘটেছে, মিডগার্ড ধ্বংস হয়েছে। আমি জয়ী হয়েছি।”

হিমদল আবার হাসলেন, বললেন “তোমার দেখার চোখ থাকলে তুমি নিশ্চয়ই দেখতে পেতে যে জীবন শেষ হয়ে যায়নি। আসলে শেষ বলেই কিছু হয়না। এটা কেবলমাত্র পুরোনো যুগের অন্ত, এরপর আবার নতুন যুগের জন্ম হবে। কারণ মৃত্যুর পরে সবসময় পুনর্জন্ম আসে।” এই বলে হাসতে হাসতেই তাঁর প্রাণ বেরিয়ে গেল।

লোকি হয়তো খুব বুদ্ধিমানের মতই কিছু উত্তর দিতেন, কিন্তু তাঁরও ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে।

আগুন দানব সুর্তর, যিনি সৃষ্টির আগে থেকে আছেন, আবার ধ্বংসের পরেও থাকবেন, যুদ্ধের শেষে তিনি তাঁর জ্বলন্ত তরবারি ঘুরিয়ে সমস্ত কিছু পুড়িয়ে দিলেন। যেন পুরো জগতের অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন হল। বাতাসও তখন জ্বলতে শুরু করেছে। সবকিছুই জ্বলতে লাগল। সব দেবতাদের, দৈত্যদের, সমস্ত জীবিত ও মৃত সেনাদলের দেহ, এমনকি লোকি এবং হিমদলের দেহও পুড়ে ছাই হয়ে গেল। সমস্ত কিছুর সামনে একটা অন্ধকারের পর্দা নেমে এলো।

ওডিন ভাবলেন এই শেষ। আর কীই বা বাকি থাকতে পারে।

তবে অবাক হয়ে তিনি দেখলেন, তখনো ঘটনাক্রমের অন্ত হয়নি। তিনি আরো মনোনিবেশ করলেন, এবার সেই কালো পর্দা আবার উঠল, নাটকের পরবর্তী পর্ব শুরু হল।

যখন সমস্ত আগুন নিভে গেল, তখন বেশ কিছুদিন ধরে আকাশ থেকে বৃষ্টির মত কালো ছাই পড়তে লাগল। তারও বেশ কিছুদিন পরে সমুদ্র এসে সকল ছাইকে গ্রাস করে নিল। সুর্যহীন আকাশের নিচে সমস্তরকম জীবন শেষ হয়ে গেল। যে বরফ এবং আগুন থেকে বিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল, সেই বরফ এবং আগুনেই বিশ্বের অন্ত ঘটল।

কিন্তু তার অনেকদিন পরে ধীরে ধীরে সমুদ্রের ধূসর জল থেকে আবার সবুজ মাটির জন্ম হল। আবার সেখানে বনজঙ্গল, ফুল ফল ফিরে এলো, আবার নতুন এক সুর্য উঠলো। বরফ গলে বড় বড় নদী তৈরি হলো, এবং সমুদ্রের রং ধীরে ধীরে আবার ধুসর থেকে নীল হল।

যে স্থানে অ্যাসগার্ড ছিল, সেই স্থানে এক নতুন স্থল দেখা দিল, যার নাম ইভাডল। সেখানে দেখা গেল ওডিনের দুই সন্তানকে, ভিডার এবং ভালি। তাঁরা র‍্যাগনারক যুদ্ধে মারা যাননি। তারপরে তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন থরের দুই সন্তান, ম্যাগনি এবং মোডি যারা মিয়লনির হাতুড়িকে তাঁদের পিতার মৃতদেহের কাছ থেকে নিয়ে এসেছেন। তাঁরা থরের মত মহান শক্তিশালী না হলেও দুইজনে মিলে ওই হাতুড়ি আবার ব্যাবহার করার মত ক্ষমতা রাখেন। ধরিত্রী ফেটে গেল, সেখান থেকে বার হয়ে এলেন পুনর্জন্মপ্রাপ্ত বল্ডার এবং হোডার। তাঁরা সকলে একসঙ্গে বসে আলোচনা করতে লাগলেন, যে জগত আবার কীভাবে সৃষ্টি করা হবে। তাঁরা পুরানো দিনের কথাও আলোচনা করলেন, দেবতাদের বিভিন্ন ভুল সিদ্ধান্তের ফলে কীভাবে র‍্যাগনারকের যুদ্ধ তাঁদের বিরুদ্ধে চলে গেছে। ইতিমধ্যে ভ্যানাহাইম থেকে হোনির ফিরে এসেছেন অনেক নতুন জ্ঞান নিয়ে। তিনিও আলোচনায় যোগ দিলেন। অবশেষে ইগড্রাসিলের মধ্যে, এক লুকোনো জায়গা থেকে বেরিয়ে এলেন, একজোড়া মানব-মানবী, যাদের নাম লিফ আর লিফগ্র্যাসির, যার অর্থ জীবন এবং জীবনের আকাঙ্খা। তাঁদের থেকেই মিডগার্ডে আবার জীবনের জয়গান শুরু হল। নতুন সুর্য উজ্জ্বলতর জ্বলতে লাগল, আবার নতুন জগতের সৃষ্টি হল।

ওডিনের দৃষ্টি আনন্দাশ্রুতে ঝাপসা হয়ে গেল। ধীরে ধীরে তিনি ফিরে এলেন বর্তমান সময়ে। বহুদিন পর ছোটশিশুর মত কাঁদলেন অনেকক্ষণ। র‍্যাগনারক আসতে এখনো বহু দেরী আছে, শুধু তাই নয়, তিনি অবশেষে জানতে পেরেছেন যে র‍্যাগনারকেই এই বিশাল সৃষ্টির অন্ত হয়ে যাবে না। ওডিন আবার ফিরে এলেন অ্যাসগার্ডে। মত বন্ডারের কানে কানে যে আশ্চর্য শব্দ তিনি বলেছিলেন তাঁর অন্ত্যেষ্টির সময়ে, সেই শব্দের অর্থ তখন তিনি বুঝতে পারেননি। অবশেষে সেই শব্দের মানে তিনি বুঝতে পেরেছেন। সেই শব্দটি হল পুনর্জন্ম।

তিনি জেনেছেন সেই শাশ্বত সত্য। পুনর্জন্ম ঘটবে, যত ধ্বংসই হোক না কেন সবকিছু শেষ হয়ে যাবে না।

.

পরিশিষ্ট

(এখানে ব্যবহৃত নর্স মিথোলজির শব্দগুলির ইংরেজি বানান এবং সংক্ষিপ্ত পরিচয় বর্ণানুক্রমে লিপিবদ্ধ করা হল)

Ægir—অ্যাগির-—সমুদ্রদৈত্যদের মধ্যে সবথেকে বিশাল। র‍্যান (Ran) এর স্বামী এবং নয়টি কন্যার জনক, যারা সকলেই সমুদ্রের ঢেউ। এই নয়টি কন্যাই হিমদলের মাতা।

Æsir—অ্যাসির-—অ্যাসগার্ডে বসবাসকারী দেবতাদের জাতি।

Álfheimr —এল্ফহাইম—বিশ্ববৃক্ষ ইগড্রাসিলের মধ্যে থাকা নয়টি জগতের একটি। এখানে এক্ষরা বসবাস করেন।

Angrboða—অ্যাঙ্গ্রবোদা–এক দানবী। লোকির প্রেয়সী, লোকির তিন দানব সন্তানের জননী।

Asgard —অ্যাসগার্ড —অ্যাসিরদের বাসস্থান। ইগড্রাসিলের নয়টি জগতের একটি।

Ask —আস্ক —প্রথম পুরুষ, একটি অ্যাশ গাছ থেকে যার জন্ম

Audumbla —অদুমল্লা —প্রথম গরু, যার জিভ থেকে প্রথম দেবতা আকারপ্রাপ্ত হয়। যার থেকে দুধের নদী বয়ে যেত, এবং দৈত্য য়িমির এই দুধে প্রাণধারণ করত।

Baldr —বল্ডার —তিনি, “সুন্দরতম” বলে পরিচিত, ওডিনের দ্বিতীয় সন্তান, লোকি ছাড়া সমগ্র বিশ্বের সকলের ভালোবাসার পাত্র।

Baugi —বাউগি —সুতং এর ভাই, একজন দানব।

Bergelmir–বেরগেলমির —য়িমির এর পৌত্র, একজন দৈত্য, একমাত্র তিনি আর তাঁর স্ত্রীই য়িমিরের রক্তের বন্যায় প্রাণে বেঁচে গেছিলেন।

Bestla —বেসলা —ওডিন, ভিলি এবং ভে এর জননী। বোর এর স্ত্রী। বলথর্ন নামক দানবের কন্যা, মিমিরের ভগ্নী।

Bifröst —বাইফ্রস্ট —অ্যাসগার্ড এবং মিডগার্ডের সংযোগ রক্ষাকারী এক রামধনু সেতু।

Bolverk —বলভার্কর, ওডিনের এক ছদ্মনাম, যেটা তিনি ছদ্মবেশে য়োটুনহাইম ঘোরার সময় ব্যবহার করতেন।

Borr —বোর —দেবতা, বুরির সন্তান, বেসলার স্বামী। ওডিন, ভিলি এবং ভে এর জনক।

Bragi —ব্র্যাগি —কবিতার দেবতা

Breidablik —ব্রাইডাব্লিক —বল্ডারের বাড়ি, যেখানে আনন্দ, সঙ্গীত এবং জ্ঞান ফুরোয় না কখনও।

Brokkr —ব্রক —একজন ডোয়ার্ফ যে অসাধারণ সব উপহার বানাতে পারত, ইট্রির ভাই।

Buri —বুরি —দেবতাদের পুর্বপুরুষ, বোরের পিতা, ওডিনের ঠাকুর্দা।

Draupnir —ড্রপনির —ওডিনের স্বর্ণ বাজুবন্ধ। প্রতি নবম রাত্রিতে আরো আটটি সম সৌন্দর্য এবং মানের বাজুবন্ধ ঝরে পরে এর থেকে।

Einherjar —আইনহার্জার —সেইসব মহান আত্মা যারা বীরের মত যুদ্ধে প্রাণত্যাগ করেছেন, তাঁরা এখন ভ্যালহ্যালায় আছেন এবং প্রতিদিন মহাভোজ করেন এবং যুদ্ধ করেন। ওডিন এঁদের র‍্যাগনারকে যুদ্ধের জন্য সংগ্রহ করছেন।

Eitri—ইট্রি—একজন ডোয়ার্ফ যিনি নানারকম অদ্ভুত উপহার তৈরি করতে পারতেন। ইনি থরের হাতুড়ি তৈরি করেছিলেন। ব্রকের ভাই।

Emble —এমরা —প্রথম নারী, একটি এল্ম গাছ থেকে তৈরি হয়েছিলেন।

Fárbauti —ফারবৌটি —লোকির পিতা, একজন দৈত্য। তাঁর এমন নাম হওয়ার কারণ হল তিনি খুব জোরে বা বিপজ্জনক ভাবে অঘাত করতে পারতেন।

Fenrir —ফেনরির —এক বিরাট নেকড়ে, লোকি এবং দানবী অ্যাগ্রবোদার সন্তান।

Fimbulwinter —ফিম্বলউইন্টার —এমন এক শীতকাল যা কখনও শেষ হয়না। ভবিষ্যতবানী অনুযায়ী র‍্যাগনারকের আগে এমন শীত আসবে।

Fjalar —জ্যালার —গ্যালারের ভাই এবং ভ্যস্যারের হত্যাকারী 1 Fjölnir —জলনির ফ্রে এবং দানবী গের্ড এর সন্তান, সুইডেনের প্রথম রাজা।

Franang’s Falls ফ্র্যানাও’স জলপ্ৰপাত এক উঁচু জলপ্রপাত, যেখানে লোকি স্যামন মাছের ছদ্মবেশে লুকিয়ে ছিলেন।

Freki —ফ্রেকি ওডিনের দুই পোষা নেকড়ের একজন।

Freyr—ফ্রে—ভানির গোত্রের দেবতা যিনি অ্যাসগার্ডে থাকতেন, ফ্রেয়ার ভ্রাতা।

Freyja —ফ্রেয়া—ভানির গোত্রের দেবী যিনি অ্যাসিরদের সাথে থাকতেন, ফ্রে এর ভগিনী।

Frigg —ফ্রিগ—ওডিনের স্ত্রী, দেবতাদের রানী, বল্ডারের মাতা।

Fulla—ফুল্লা— একজন অ্যাসিরগোত্রীয় দেবী। ফ্রিগের ব্যক্তিগত পরিচারিকা

Galar —গ্যালার— একজন ডোয়ার্ফ, জ্যালারের ভাই এবং ভ্যস্যারের হত্যাকারী।

Garmr–গার্ম —পাতালবাসী এক দানব হাউন্ড কুকুর। র‍্যাগনারকের সময়ে টিউএর হাতে এর মৃত্যু হয় এবং এ টিউকে হত্যাও করে।

Gerðr —গের্ড —সুন্দরী দানবী, ফ্রে-র প্রেমিকা এবং স্ত্রী।

Geri —গেরি —ওডিনের দুই পোষা নেকড়ের একজন, ওডিন যেহেতু খাদ্য ছাড়াই বাঁচেন, তাই ওডিনের টেবিলের সব খাদ্য এরাই পায়।

Gilling —গিলিং —এক দানব, জ্যালার এবং গ্যালার এর হত্যা করে, ইনি সুতং এবং বাউগির পিতা।

Ginnungagap —গিনুনগাগ্যাপ —এক বিশাল মহাশূন্যতা মুসপেলহাইম আর নিফেলহাইমের মাঝে, সৃষ্টির পুর্বে।

Gjallarhorn—জ্যালেরহর্ণ–হিমদলের শিঙা, মিমিরের কুঁয়োর পাশে রাখা থাকে।

Gleipnir —গ্লিপনির —ডোয়ার্ফদের তৈরি এক জাদু শিকল যা দিয়ে ফেনরিরকে দেবতারা বেঁধে রেখেছিলেন।

Grimnir —গ্রিমনির মানে হল আলখাল্লায় গোপন করা এমন, ওডিনের এক নাম।

Gungnir —গাংনির —ওডিনের বর্শা। কখনও লক্ষভেদ করতে যার ভুল হয় না এবং এই বর্শার উপরে করা কোনও শপথ ভাঙা যায় না।

Gunnlóð —গানলড —একজন সুন্দরী দানবী, সুতং এর কন্যা, কবিদের মদ্য পাহারা দেওয়ার ভার যার উপর ছিল।

Heiðrun —হেইড্রান —এমন এক ছাগল, যে দুধ দেওয়ার বদলে মদ্য দেয়। সে ভালহ্যালায় মৃতসেনাদের পানীয় দেয়।

Heimdallr—হিমদল —দেবতাদের সতর্কীকরণ প্রহরী, বহু দূর অবধি দেখতে পান।

Hel—হেল–লোকি এবং অ্যাঙ্গবোদার কন্যা, তিনি হেলহাইমের রানী, যেখানে যাঁরা বীরের মত যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত্যু হয়নি এমন সমস্ত জীব মৃত্যুর পর যায়।

Hermóðr —হারমোড দ্য নিম্বল—ওডিনের এক সন্তান, যিনি স্লিপনিরে চড়ে হেলের কাছে গেছিলেন, বল্ডারকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ নিয়ে।

Hliðskjálf —লিদস্কাল্ফ —ওডিনের সিংহাসন, যেখানে বসলে পুরো ৯টি জগতে কি হচ্ছে দেখা যায়।

Hoðr —হোড —বন্ডারের ভাই, একজন অন্ধ দেবতা।

Hoenir —হোয়েনির —একজন পুরানো দেবতা, যিনি মানুষকে যুক্তিবদ্ধ চিন্তা করার ক্ষমতা উপহার দিয়েছেন। তিনি অ্যাসির হলেও ভানিরদের রাজত্বে রাজা হিসাবে গিয়েছিলনে ।

Hrym —রিম —বরফ দৈত্যদের নেতা, যিনি র‍্যাগনারকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

Huginn —হুগিন —ওডিনের দুই র্যাভেনের মধ্যে একজন, এর নামের মানে হল চিন্তা।

Hvergelmir —ভারগেল্মির —নিফেলহাইমের এক গভীর কূপ (মতান্তরে ঝরনা) যেখান থেকে অনেক নদী এবং স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।

Idavoll—ইডাভল– শব্দের অর্থ অনন্যসাধারন ভুমি। র‍্যাগনারকের পরে এই ভুমিতেই অবশিষ্ট দেবতারা ফিরে আসবেন।

Idunn —ইডুনা একজন অ্যাসির দেবী। ওডিন তাঁকে যৌবনের দেবীর পদ দেন। তাঁর কাছে যৌবনের আপেল আছে, যা খেয়ে দেবতারা চিরযৌবনের অধিকারী হন।

Ivaldi —ইভালদি —একজন ডোয়ার্ফের নাম, তাঁর তিন সন্তান খুবই নামকরা কারিগর। তাঁরা ওডিনের বর্শা গাংনির, ফ্রের জাহাজ স্কিডব্লাডনির এবং থরের স্ত্রী সিফের জন্য সোনালী চুল বানিয়েছিলেন।

Jord —জর্ড —থরের মাতা, ধরিত্রীদেবী, মতান্তরে একজন দানবী।

Jörmungandr —জরমুঙ্গন্ড —একটি সুবিশাল সর্প মিডগার্ডের চারদিকে যে সমুদ্র আছে, সেখানে বাস করে। মিডগার্ড সর্প নামে ও পরিচিত। লোকির সন্তান এবং থরের চিরশত্রু।

Jotunheimr —য়োটুনহাইম —য়োটুন শব্দের অর্থ দানব। য়োটুনহাইম হল দানবদের জগত।

Kvasir —ভ্যস্যার —ভানির এবং অ্যাসির দেবতাদের থুথু এক পাত্রে জমা করা হয়েছিল, সেখান থেকে এই দেবতার উৎপত্তি। ইনি জ্ঞানের দেবতা ছিলেন। দুইজন ডোয়ার্ফ এঁকে হত্যা করে, অবশ্য পরে তিনি আবার প্রাণ ফিরে পান।

Laufey —লফি —লোকির মাতা, তিনি অত্যন্ত রোগা ছিলেন বলে তাঁকে নাল বা সূঁচ বলেও ডাকা হত।

Loki —লোকি–দানব লফি এবং ফারবৌটির সন্তান, ওডিনের ব্লাড ব্রাদার। তিনি সমস্ত দেবতাদের মধ্যে সবথেকে চালাক। যেকোন রূপ ধারণ করতে পারেন তিনি। এবং তাঁর একজোড়া যুতো আছে যা পরে তিনি শূন্যে হাঁটতে পারেন।

Magni—ম্যাগনি–থরের সন্তান। ‘শক্তিশালী’ নামেও পরিচিত

Megingjörð —মেগিংজর্থ —থরের এক অদ্ভুত বেল্ট, যা পরলে তাঁর শক্তি দ্বিগুণ হয়ে যায়।

Midgard —মিডগার্ড —শব্দটি এসেছে মিডল ইয়ার্ড বা মধ্যবর্তী ভূমি থেকে। মানবদের জগত।

Mimir —মিমির —একজন দানব, এবং সম্পর্কে ওডিনের মামা। তিনি অত্যন্ত জ্ঞানী ছিলেন। দানব হলেও দেবতাদের পক্ষে ছিলেন, ওডিনের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব ছিল। তিনি হোনিরের সাথে ভানাহাইমে যান, সেখানে এক ভুলবোঝাবুঝিতে ভানিররা তাঁকে মস্তক ছেদন করে হত্যা করেন। তবে ওডিন জাদুবিদ্যার সাহয্যে মস্তকটিকে বাঁচিয়ে তোলেন এবং সেই মস্তক এখনো ওডিনকে নানা পরামর্শ দেন।

Mimir’s well —মিমিরের কূপ —ইগড্রাসিলের একটি শিকড় এই কূপে চলে গেছে। এই কূপে বিশ্বের সব জ্ঞান রয়েছে। ওডিন এই কূপের জল খাওয়ার জন্য নিজের একটি চোখ দিয়ে দিয়েছিলেন। মিমির এই কূপের প্রহরায় আছেন।

Mjollnir —মিয়লনির —থরের হাতুড়ি। ইট্রি (মতান্তরে সিন্ড্রি) এবং এক নামে দুই ডোয়ার্ফের বানানো এক আশ্চর্য এবং শক্তিশালী হাতুড়ি।

Móðguðr—মডগুড়–মডগুড শব্দের অর্থ হল রাগী

পরিচারিকা। মৃতদের রাজ্যে ঢোকার জন্য যে সেতু আছে সেই সেতুর প্রহরী ইনি।

Móði —মোডি থরের পুত্র। ‘সাহসী’ নামে পরিচিত।

Muninn —মুনিন–ওডিনের দুটি র্যাভেনের একটি, নামের অর্থ হল স্মৃতি।

Muspelheim —মুসপেলহাইম —নর্স মিথ অনুযায়ী নয়টি জগতের একটি। বিশ্বসৃষ্টির আগে থেকে রয়েছে এই আগুনের জগত। সুর্তর নামক আগুনদানব এর রাজা।

Naglfar —নাগল্ফার —এক বিরাট জাহাজ। র‍্যাগনারকের সময় দৈত্য এবং হেল এর মৃতদের সেনাবাহিনী এই জাহাজে করে ওডিনের সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করতে আসবে। মৃতদের আঙুলের নখ দিয়ে এই জাহাজ বানানো হয়েছে।

Narfi —নারফি —লোকি এবং তাঁর অ্যাসির স্ত্রী সিজিনের বড় পুত্র। তার ভাইয়ের নাম ভালি।

Niðavellir —নিদাভেলর–এটা স্‌ভ্যাতেলহাইমের আরেক নাম। যেখানে ডোয়ার্ফরা থাকে।

Nidhöggr —নিডহগ —একটি ড্রাগন, যে মৃতদেহ খায় এবং ইগড্রাসিলের শিকড়ে কামড় বসায়।

Niflheim—নিফেলহাইম– বিশ্ব শুরু আগে থেকে এই বরফাবৃত জগত ছিল।

Njörör —নিয়র্ড —ভানিরদের প্রধান, ফ্রে এবং ফ্রেয়ার পিতা।

Norns —নর্ন —এই তিন বোন ইগড্রাসিলের এক শিকড়ের কাছে উর্ড কূপের রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে আছেন। তাঁদের নাম হল উর্ড, ভারডান্ডি এবং স্কাল্ড। তাঁরা মানবের ভবিতব্য নির্ধারণ করেন।

Odin —ওডিন —দেবরাজ ওডিনকে পরমপিতা বলে অভিহিত করা হয়। ইনি সবথেকে পুরোনো নর্স দেবতা। তাঁর একটিমাত্র চোখ রয়েছে। তিনি যুদ্ধ, যাত্রা এবং ফাঁসিকাঠের দেবতা।

Ratatoskr—রাটাটোস্ক-একটি বিরাট কাঠবিড়ালী যে ইগড্রাসিলের ডালে থাকে। তার কাজ হল ইগড্রাসিলের একেবারে উপরে বসে থাকা বিরাট ঈগলপাখি এবং নিডহগ ড্রাগনের মধ্যে সংবাদ বহন করা।

Rati —রাটি–দেবতাদের ড্রিলযন্ত্র।

Sif —সিফ —থরের স্ত্রী। লম্বা সোনালী চুলের জন্য বিখ্যাত।

Sigyn —সিজিন —লোকির স্ত্রী। ভালি এবং নারফির মা। যখন লোকিকে শাস্তি দেওয়া হয়, তখন তিনি লোকির সাথেই থাকেন, একটি পাত্রে সাপের বিষ জড় করেন যাতে লোকির মুখে বিষ না পড়ে।

Skadi —স্কাডি—থিয়াসি নামক দানবের কন্যা, নিয়র্ডের স্ত্রী।

Skiðblaðnir —স্কিডব্লান্ডির —ফ্রে র জন্য ডোয়ার্ফদের বানানো এক জাদু জাহাজ, যাকে একটা রুমালের মত ভাঁজ করে ফেলা যায়।

Skirnir —স্কিরনির, একজন এক। ফ্রের ব্যক্তিগত পরিচারক।

Skuld —স্কাল্ড —ননদের একজন। ইনি ভবিষ্যত দেখতে পান।

Sleipnir —স্লিপনির —ওডিনের ঘোড়া, এটি আটপা বিশিষ্ট এবং ঘোড়াদের মধ্যে সবথেকে দ্রুতগামী। স্প্যাদিলফারি নামক দানব ঘোড়া এবং লোকির সন্তান।

Surtr–সুর্তর —মুসপেল হাইমের রাজা একজন আগুন দানব। দেবতাদের আগেও এঁর অস্তিত্ব ছিল।

Suttung —সুতং একজন দানব, গিলিং নামক দানবের পুত্র। তিনি তাঁর পিতার হত্যাকারীদের উপর প্রতিশোধ নেন।

Svaðilfari—স্‌ভ্যাদিলফারি–স্লিপনিরের পিতা, এক দানবঘোড়া।

Tanngrisnir and Tanngnjóstr–ট্যানগ্রিসনির ও ট্যানোস্টার —থরের দুই ছাগলের নাম। এরা থরের রথ টানতেন। দরকারে থর এঁদের কেটে মাংস রান্না করে খেয়ে নিতেন। পরের দিন এরা নিজের জীবন ফিরে পেয়ে আবার রথ টানতে শুরু করত।

Thiazi —থিয়াসি–একজন দৈত্য, যে ঈগলের ছদ্মবেশে ইডুনাকে অপহরন করেছিল। ইনিই স্কাডির পিতা।

Thokk —থক —এক বুড়ি দানবী। নামের মানে কৃতজ্ঞতা, কিন্তু সেই একমাত্র যে বল্ডারের মৃত্যুতে শোক করেনি।

Thor —থর–ওডিন এবং ধরিত্রীদেবী জর্ডের পুত্র। বজ্রবিদ্যুতের দেবতা, দেবতাদের মধ্যে সবথেকে শক্তিশালী।

Thrud —থ্রাড —থরের কন্যা, ক্ষমতাশিলা নামে পরিচিত।

Tyr —টাইর বা টিউ —ইনি যুদ্ধবিগ্রহের দেবতা, অসীম সাহসী, ডানহাত কবজি থেকে কাটা। প্রোজ এডা অনুসারে ইনিও ওডিনেরই সন্তান।

Ullr —উল্লার —থরের সৎ-পুত্র, সিফের পুত্র। তীরধনুক, শিকার এবং স্কি এর দেবতা।

Urd —উর্ড —নর্নদের তিন বোনের একজন। ইনি অতীত নির্ধারণের দায়িত্বপ্রাপ্তা।

Urd’s well—উর্ডের কূপ —ইগড্রাসিলের এক শিকড় চলে গেছে, এমন একটি কূপ। তিনজন নর্ন বোন এই কূপের এবং ইগড্রাসিল গাছের রক্ষনাবেক্ষণ করেন।

Valhalla —ভ্যালহালা —ওডিনের এক বিশাল হলঘর। পাঁচশ চল্লিশটা দরজাবিশিষ্ট এই হলঘরে যুদ্ধে বীরের মত মৃত সৈন্যেরা বাস করেন।

Vali —ভালি —এই নামে দুইজন দেবতা আছেন। একজন লোকি এবং সিজিনের পুত্র, যিনি পরে একটি নেকড়ে হয়ে যান এবং নিজের ভাই নারফিকে হত্যা করেন। অপরজন ওডিন এবং রাজকন্যা রিন্ডার পুত্র, যিনি বল্ডারের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছেন।

Valkyries —ভ্যালকারি —ওডিনের নারীসেনা, যারা যুদ্ধে বীরের মত মৃত্যুবরন করেন, তাঁদের আত্মাকে ভ্যালহালায় নিয়ে আসার দায়িত্ব পালন করেন।

Vanaheim—ভ্যানাহাইম– ভানির গোত্রের দেবতাদের জগত।

Ve —ভে —ওডিনের ভাই, বোর এবং বেসলার এক সন্তান।

Verdandi —ভারড্যান্ডি —তিন নর্নের মধ্যে একজন। তাঁর নামের অর্থ বর্তমান। তিনি বর্তমানকে নির্ধারণ করেন।

Vidar —ভিডার —ওডিনের সন্তান। চুপচাপ কিন্তু ভরসাযোগ্য অ্যাসির দেবতা। তাঁর একটি জুতো বিশাল, কারণ সমস্ত জুতো থেকে যে চামড়া কেটে বাদ দেওয়া হয়, তা তাঁর জুতোয় এসে যোগ দেয়।

Vigrid —ভিগ্রিড —একটি বিশাল মাঠ, যেখানে র্যাগনারক হবে।

Vili —ভিলি —ওডিনের ভাই, বোর এবং বেসলার সন্তান।

Yggdrasil —ইগড্রাসিল —বিশ্ববৃক্ষ। যার মধ্যে নয়টি জগত স্থান পেয়েছে।

Ymir —য়িমির —সৃষ্টির প্রথম জীব। সকল দৈত্যের পুর্বপুরুষ। প্রথম গরু অদুম্বলার দুধ খেয়ে ইনি জীবনধারণ করতেন।

.

তথ্যসূত্র

নর্স জাতির মিথোলজি নিয়ে বাংলা ভাষায় কোনো বই খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে বাংলায় সুকুমার রায়ের লেখা দুটি ছোট নর্স মিথোলজির গল্প রয়েছে। ইংরেজি ভাষায় মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের থর আর অ্যাভেঞ্জার সিরিজ থেকে নর্স মিথোলজির দেবতা এবং কিছু জীবের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সের সঙ্গে আসলে নর্স মিথোলজির অনেক পার্থক্য রয়েছে। সেদিক থেকে নর্স জীবদের বর্ণনার ক্ষেত্রে জে আর আর টলকিনের ‘দ্য হবিট’ আর ‘লর্ড অফ দ্য রিংস্’ এই দুই সিরিজ অনেক বিশ্বাসযোগ্য। নর্স মিথোলজির সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থাকলে রিক রিওর্ডানের ‘ম্যাগনাস চেজ’ সিরিজও পড়তে ভালো লাগবে। নিল গেইম্যানের ‘নর্স মিথোলজি’ বইটির তুলনা নেই। এই বইতে সবথেকে বেশি প্রভাব নিল গেইম্যানের বইটিরই আছে। এইখানে আরো দুটো বইয়ের কথা উল্লেখ করা প্রয়োজন। একটির নাম ‘মিথস্ অফ নর্সমেন’, লিখেছেন রজার ল্যান্সলিন গ্রিন। নিল গেইম্যানও এই বইটি রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করেছেন। নর্স মিথকে অসাধারণ সরস ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে। দ্বিতীয় বইটি হল, নর্স মিথের সবচেয়ে প্রথম প্রচলিত লিখিত রূপ, যার নাম ‘প্রোজ এডা’, দ্বাদশ শতকে এই বইটি লিখেছিলেন স্মরি স্টারলুসন। বিশাল এই বইতে স্নরি বিভিন্ন নর্স মিথের কাহিনী লিখেছেন, নিজের মত করে ব্যাখ্যাও করেছেন। নর্স নিয়ে একটু গভীরে পড়াশোনা করতে গেলে এই বইটি পড়তেই হবে।

যেসব বই, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলের সাহায্য নেওয়া হয়েছে এই বইটি সৃষ্টির জন্য, তার একটা তালিকা নিচে দেওয়া হলো—

Norse Mythology —Neil Geiman

Myths of the Norsemen —Roger Lancelyn Green

Norse Mythology: Captivating Stories of the Gods, Sagas and Heroes —Matt Clayton

Encyclopedia of Norse and Germanic Folklore, Mythology and Magic —Claude Lecouteux (Translated by Jon. E. Graham)

Norse Mythology —Mortensen & Crowell

The Prose Edda —Snorri Sturlusen (Translated with an Introduction and Notes by Jesse L. Byock)

The Poetic Edda —Reworked by Henry Adams Bellows (1923)

norse-mythology.org

crystalinks.com

The youtube Channel —Skjalden

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *