৬. কিকিরার ঘরে বাতি

০৬.

কিকিরার ঘরে বাতি জ্বালা হয়ে গিয়েছিল। কেরোসিনের টেবিলবাতি, দেখতে কিন্তু সুন্দর, সাদা ঘষা কাচের শেড় পরানো, সরু মতন, চিমনিটা শেডের মাথা ছাড়িয়ে গেছে। গেস্ট হাউসে ঠাকুর চাকর থাকে সব সময়। সন্ধেবেলায় চা দিয়ে গিয়েছে চাকরে।

ঘরের দরজাটা খোলাই রেখেছিলেন কিকিরা, তারাপদকে দরজার কাছাকাছি বসিয়ে রেখেছিলেন পাছে কেউ এসে আড়ি পাতে। মাঝে-মাঝে তারাপদকে দরজার বাইরে গিয়ে দেখে আসতে হচ্ছিল আশেপাশে কেউ ঘোরাঘুরি করছে কিনা!

কিকিরা তাঁর সরু চুরুট ধরিয়ে নিয়ে বললেন, “সমস্ত ব্যাপারটা এবার একবার ভাল করে ভেবে দেখা যাক, কী বলো?”

চা খেতে খেতে মাথা হেলাল চন্দন।

 কিকিরা বললেন, আস্তে গলায়, “সোজা কথাটা হচ্ছে এই মাসখানেক আগে জয়নারায়ণ রাজবাড়িতেই মারা গেছেন। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, সেটা দুর্ঘটনা; দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন জয়নারায়ণ। বাইরের লোক এই কথাটাই জানে। কিন্তু জয়নারায়ণের দাদা দীপনারায়ণের পরে সন্দেহ হয়েছে, তাঁর ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর কারণ দুর্ঘটনা নয়, কেউ তাকে খুন করেছে। তাই না?”

চন্দন আরাম করে চায়ে চুমুক দিল। দিয়ে সিগারেটের প্যাকেট বার করল।

 কিকিরা বললেন, “প্রশ্নটা হল, জয়নারায়ণকে কেউ খুন করেছে, নাকি তিনি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন? যে মারা গিয়েছে তাকে আমরা চোখে দেখিনি। মানুষ দুর্ঘটনায় মারা গেলে তার পোস্ট মর্টেম হয়, ডাক্তারেরা অনেক কিছু বলতে পারে। এখানে কোনোটাই হয়নি। কাজেই কিছু জানার বা সন্দেহ করার প্রমাণ আমাদের নেই। তবু মানুষের মন মানতে চায় না; তার সন্দেহ বলল, ধোঁকা বলল, থেকে যায়। দীপনারায়ণের মনে একটা ঘোরতর সন্দেহ জন্মেছে, জয়নারায়ণকে কেউ খুন করেছিল।”

তারাপদ চন্দনের দেওয়া সিগারেট ধরিয়ে নিয়ে একবার উঠল; দরজা দিয়ে মুখ বাড়াল। কাউকে দেখতে পেল না। ফিরে এসে বসল।

কিকিরা চা খাচ্ছিলেন ধীরে ধীরে। বললেন, “দীপনারায়ণের সঙ্গে কথা বলে আমি দেখেছি, এরকম সন্দেহ হবার প্রথম কারণ রাজবাড়ির ওই ছোরা, যার নাকি একটা আশ্চর্য গুণ আছে। কী গুণ তা তোমরা শুনেছ। ওই ছোরা কাউকে অন্যায় কারণে খুন করলে ছোরা থেকে রক্তের দাগ কিছুতেই যায় না, তা ছাড়া দিন দিন ছোরাটা ভোঁতা আর ছোট হয়ে আসে।”

চন্দন সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে বলল, “গাঁজা।”

“গাঁজা না গুলি–সেটা পরে ভাবলেও চলবে”, কিকিরা বললেন, “আপাতত ধরে নাও দীপনারায়ণ যা বলছেন সেটাই সত্যি। যদি তাই হয় তবে জয়নারায়ণকে খুন করল কে? কেনই বা করল?”

তারাপদ মাথা নাড়ল। তাকাল দরজার দিকে। চন্দন চুপ করে থাকল।

কিকিরা বললেন, “আমি একটা জিনিস ভেবে দেখেছি। রাজবাড়ির ওই ছোরার জাদু যাই থাক না কেন–তার বাঁটটার বাজার-দর আছে। দামি পাথর দিয়ে কারুকার্য করে বাঁটটা যেভাবে বাঁধানো–তাতে ওটা যেন কোনো মানুষকে রাতারাতি বেশ কিছু পাইয়ে দিতে পারে। যদি কেউ অর্থের লোভে খুন করে, থাকত–তবে বাঁটটা রেখে যেত না। তাই না?”

চন্দন কিকিরার দিকে তাকিয়ে থাকল। যেন বলল, ঠিক কথা।

চুরুটটা আবার ধরিয়ে নিলেন কিকিরা।”অর্থের লোভে কেউ জয়নারায়ণকে খুন করেনি। কিংবা যদি করেও থাকে–শেষ পর্যন্ত বাঁটটা নিয়ে পালাবার পথ পায়নি। যে অর্থের লোভে ছোরা চুরি করবে, খুন করবে–সে বাঁটটা ফেলে রাখবে এ বিশ্বাস করা যায় না।”

চন্দন বলল, “ছোরাটা না দীপনারায়ণের ঘরে সিন্দুকে থাকত?”

“হ্যাঁ।”

“দীপনারায়ণের শোবার ঘরে ঢুকে কেউ একজন সিন্দুক খুলে ছোরাটা চুরি করবে, সেই ছোরা দিয়ে খুন করবে, আবার সিন্দুকে রেখে আসবে বাঁটটা–এটা বেশ বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না কিকিরা?”

মাথা হেলিয়ে কিকিরা বললেন, “হচ্ছে বইকি! খুবই বাড়াবাড়ি হচ্ছে।”

“এরকম বোকা লোক কে থাকতে পারে! রাজবাড়ির ছোরা-রহস্যের কথা জেনেও, ধরা পড়ার জন্যে সেই ছোরা বার করে আনবে, আবার খুন করে রেখে আসবে?”

“আমিও তো তাই ভাবছি। জয়নারায়ণ কেমন করে মারা গিয়েছিলেন। জানো?”

“অ্যাকসিডেন্টে। মাথার ওপর ভারী জিনিস পড়ে।”

“হ্যাঁ। লাইব্রেরি-ঘরে জয়নারায়ণ মারা যান। তাঁর মাথার ওপর একটা বড় সেলফ বইপত্রসমেত ভেঙে পড়ে, সেই সঙ্গে বড় একটা ছবি, কাঁচে গলা হাত কেটে গিয়েছিল। মাথায় চোট লেগেছিল, তা ছাড়া রক্তপাত হয়েছিল প্রচুর। গলার নলি কেটে গিয়েছিল, হাত কেটেছিল, মুখের নানা জায়গায় কাঁচ ঢুকে গিয়েছিল।”

তারাপদ উঠল। বাইরে চলে গেল।

 চন্দন বলল, “ঘটনাটা ঘটেছিল কখন?”

“রাত্রের দিকে। আটটা নাগাদ।”

“কোনো ডাক্তার আসেনি?”

“এখানে কোনো ডাক্তার নেই। মাইল কুড়ি দূরে ডাক্তার আছে। রাজবাড়ি থেকে গাড়ি গিয়ে যখন ডাক্তার নিয়ে এল–ততক্ষণে জয়নারায়ণ মারা গেছেন।”

“কাছেপিঠে কোনো হাসপাতাল নেই?”

“না। এ-জঙ্গলে তুমি হাসপাতালে কোথায় পাবে!”

তারাপদ ফিরে এসে আবার বসল।

কিকিরা বললেন, “কাল তোমাকে লাইব্রেরিতে নিয়ে যাব। দেখবে লাইব্রেরির চেহারাটা কেমন। মেঝে থেকে পনেরো আঠারো ফুট উঁচুতে ছাদ। চারদিকে বিরাট বিরাট র‍্যাক। বই পড়তে হলে সিঁড়ি লাগে। সিঁড়ি রয়েছে কাঠের। র‍্যাকে ঠাসা বই। বিশাল বিশাল চেহারা। ওজনও কম নয়। জয়নারায়ণ সিঁড়ি দিয়ে উঠে সেলফ থেকে বই টানছিলেন এমন সময় হুড়মুড় করে এক তাক বই তাঁর ঘাড়ে মুখে পড়ে, সিঁড়িসমেত উলটে মাটিতে পড়ে যান। ব্ল্যাকটাও ভেঙে যায়।”

“জয়নারায়ণ কি পণ্ডিত লোক ছিলেন?” জিজ্ঞেস করল চন্দন।

কিকিরা বললেন, “দীপনারায়ণ বলেন, লাইব্রেরি-ঘরে প্রায়ই গিয়ে বসে থাকতেন।”

“পড়াশোনা করতেন?”

“হয়ত করতেন, আমি জানি না।” কিকিরা একটু থেমে হঠাৎ বললেন, “তুমি একটা জিনিস মোটেই লক্ষ করছ না। বই পড়তে গিয়ে একসঙ্গে অনেকগুলো বই হঠাৎ পড়ে যাওয়া সম্ভব। র‍্যাক ভেঙে যাওয়াও অসম্ভব নয়। কিন্তু অত বড় একটা বাঁধানো ছবি, যার ওজন অন্তত পনেরো কুড়ি সের হবে, কেমন করে দেওয়াল থেকে ভেঙে পড়ল তা বলতে পারো? দীপনারায়ণকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বললেন, তাঁদের ধারণা হয়েছিল, জয়নারায়ণ যখন সিঁড়ি সমেত উলটে পড়ছিলেন–তখন হয়ত হাত বাড়িয়ে ছবিটা ধরবার চেষ্টা করেছিলেন।”

“ছবিটা কি নাগালের মধ্যে ছিল?”

“দুটো পাশাপাশি র‍্যাকের ফাঁকে ছবিটা টাঙানো ছিল। ফ্রেম দিয়ে বাঁধানো ছবি।”

“অত বড় ছবি কেমন করে টাঙানো ছিল?”

“তার দিয়ে।”

“তার ছিঁড়ে গেল?”

“পুরনো তার ছিঁড়তে পারে। মরচে ধরে ক্ষয় হতে পারে। কিংবা কোনো জায়গায় পলকা ছিল।”

“আমি বিশ্বাস করি না। তবু দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। ঘরের টাঙানো পাখাও তো মাথায় পড়ে। ছাদ খসে মানুষ মারা যায়।”

চন্দন কিছু বলল না।

কিকিরা বললেন, “বিপদের সময় মানুষের মাথার ঠিক থাকে না। ছবিটা কেমন করে পড়ল, কেমন করে তার কাঁচে জয়নারায়ণের গলা মুখ হাত কেটে রক্তে সব ভেসে গেল তা কেউই খেয়ালও করল না। জয়নারায়ণ মারা যাবার পর দীপনারায়ণ যখন একদিন নিতান্তই আচমকা নিজের সিন্দুকের মধ্যে ছোরাটাকে দেখলেন তখন তাঁর টনক নড়ল। তখনই তাঁর সন্দেহ হল, ভাইয়ের মৃত্যু দুর্ঘটনা নয়। ছবির ব্যাপারটাও তাঁর খেয়াল হল।”

তারাপদ বলল, “আপনি বলতে চাইছেন, জয়নারায়ণকে আগে খুন করা হয়েছে; তারপর বাকি যা কিছু সাজানো হয়েছে।”

“আমি এখনই কিছু বলতে চাইছি না। যা বলার পরশু রাত্রে বলব, শুধু রাজবাড়ির ছোরা নয়, ওই ছবিও নয়, জয়নারায়ণ যখন দুর্ঘটনায় পড়েছিলেন তখন ইরচাঁদের ওই ডালকুত্তার মতন কুকুরগুলো কেন তাদের ঘর থেকে বেরিয়ে চারপাশে ছোটাছুটি করছিল এবং ডাকছিল–সেটাও রহস্য। কুকুরের ডাকের জন্যে আশপাশের কেউ অনেকক্ষণ কিছু শুনতে পায়নি।”

চন্দন কিছু বলার আগেই কিকিরা আবার বললেন, “কাল আমার অনেক কাজ তোমাদের নিয়ে। চন্দন, কতটুকু ড পয়জেন এনেছ?”

চন্দন হাত দিয়ে মাপ দেখাল।

পরের দিন সকাল থেকেই দেখা গেল কিকিরা খুব ব্যস্ত। সকালে চা খেয়ে তারাপদদের নিয়ে লাইব্রেরিতে চলে গেলেন, ফিরলেন দুপুরে। তারাপদ আর চন্দনকে দেখলেই বোঝা যায় যত রাজ্যের ধুলো ঘেঁটেছে, মুখে চোখে মাথায় ধুলোর ছোপ।

দুপুরে স্নান-খাওয়ার পর চন্দন আর তারাপদ দিব্যি ঘুমিয়ে পড়ল; কিকিরা সামান্য বিশ্রাম সেরে তাঁর ঝোলাঝুলি নিয়ে বসলেন। দরজা বন্ধ থাকল। কী যে করলেন তিনি সারা দুপুর, কেউ জানল না।

বিকেলে চন্দনদের নিয়ে প্রথমে গেলেন দীপনারায়ণের সঙ্গে দেখা করতে। তারপর দীপনারায়ণের সঙ্গে রাজবাড়ির ভেতর মহল ঘুরে বেড়ালেন, দেখলেন সব। মায় দীপনারায়ণের ঘরের সিন্দুক পর্যন্ত।

ফিরে এসে আবার দীপনারায়ণের নিচের অফিস-ঘরে বসলেন সকলে।

কিকিরা বললেন, “দীপনারায়ণবাবু, এবার খোলাখুলি ক’টা কথা জিজ্ঞেস করতে চাই।”

“বলুন।”

“এই রাজবাড়িতে আপনার অনুগত বিশ্বাসী লোক ক’জন আছে?”

 দীপনারায়ণ কেমন যেন অবাক হলেন। বললেন, “কেন?”

“দরকার আছে। আপনি যাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ করতে পারেন, এমন লোকদের বাদ দিয়ে বলছি।“

সামান্য ভেবে দীপনারায়ণ বললেন, “চার-পাঁচজন আছে।”

“আপনার বাড়িতে বন্দুক রাইফেল, রিভলবার নিশ্চয় আছে?”

 মাথা নেড়ে সায় দিলেন দীপনারায়ণ।

“কার কার আছে?”

“আমার আর জয়নারায়ণের। কাকারও বন্দুক ছিল।”

“কে কে বন্দুক-টন্দুক চালাতে পারে আপনারা তিনজন বাদে?”

আমার ছেলেরা পারে। ইন্দরও পারে।”

“অন্য কোনো মারাত্মক অস্ত্র আছে?”

“পুরনো কিছু অস্ত্র ছিল, কৃপাণবল্লম গোছের, সেসব কোথায় পড়ে আছে, কেউ ব্যবহার করে না।”

কিকিরা একটু চুপ করে থেকে বললেন, “রাজবাড়িতে কাঠের মিস্ত্রি আছে কেউ?”

“কাঠের মিস্ত্রি? কেন?”

“কেউ নেই?”

“আছে।”

“তাদের মধ্যে একজনকে কাল আমার একটু দরকার। সকালের দিকে। আর আপনার বসার ঘরে উঁচু গোল হালকা একটা টেবিল দেখেছি। ওটাও দরকার।”

দীপনারায়ণ অবাক হয়ে বললেন, “কাঠের মিস্ত্রি, টেবিল–এ-সব নিয়ে কী .. করবেন আপনি?”

কিকিরা মজার মুখ করে বললেন, “ম্যাজিক দেখাব।”

“ম্যাজিক?”

“আপনি তো জানেন, আমি ম্যাজিশিয়ান, কিকিরা দি ওয়ান্ডার…!” কিকিরা হাসতে লাগলেন।

দীপনারায়ণ বিরক্ত বোধ করলেও মুখে কিছু বললেন না। সংযতভাবে বললেন, “কিংকরবাবু, এখন আমার মনের অবস্থা ম্যাজিক দেখার মতন নয়।”

কিকিরা বললেন, “জানি দীপনারায়ণবাবু, কিন্তু কাল সন্ধের পর ওই লাইব্রেরি-ঘরে আমি একটা ম্যাজিক দেখাব। আপনাকে সেখানে থাকতে হবে; শুধু আপনি হাজির থাকলেই চলবে না, ইন্দর, শশধর, আপনার কাকা ললিতনারায়ণকেও থাকতে হবে।”

দীপনারায়ণ কিছুই বুঝতে পারছিলেন না। বললেন, “কাকা অন্ধ। তিনি কেমন করে ম্যাজিক দেখবেন?”

“তাঁকে দেখতে হবে না। তিনি হাজির থাকলেই চলবে।” বলে কিকিরা উঠে দাঁড়ালেন, চোখের ইশারায় চন্দনদের উঠতে বললেন।

দীপনারায়ণ বোবা বোকা হয়ে বসে থাকলেন।

কিকিরা হেসে হেসেই বললেন, “দীপনারায়ণবাবু, আপনি আপনাদের রাজবাড়ির ছোরার অদ্ভুত-অদ্ভুত গুণের কথা বিশ্বাস করেন। আমার একটা ম্যাজিক আছে যার নাম দিয়েছিলাম–’মিস্ট্রিরিয়াস আইজ’–এই খেলাটার মধ্যে একটা অলৌকিক গুণ আছে। কাল সেটা দেখাব। ওই খেলা ছাড়া জয়নারায়ণের খুনিকে ধরবার আর কোনো উপায় আমার জানা নেই। আপনার দায়িত্ব হল, যাদের কথা বলেছি তাদের প্রত্যেককে ঠিক সময়ে ঠিক মতন লাইব্রেরিতে হাজির করা। আপনার হুকুম সবাই মানতে বাধ্য। আর আমরা যখন লাইব্রেরিতে বসব কাল রাত্রে, তখন আপনার বিশ্বাসী লোক দিয়ে। লাইব্রেরি-ঘরের চারপাশে পাহারা বসাবেন। খেলার কথা কাউকে বলবেন না।”

দীপনারায়ণ কিকিরার দিকে তাকিয়ে থাকলেন। বলার কথা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। শেষে বললেন, “আপনি এসেছেন পুরনো বইয়ের ভ্যালুয়ার হিসেবে। লোকে সেটাই জানে। আপনি তাদের ম্যাজিক দেখাবেন?”

কিকিরা বললেন, “আপনি ম্যাজিক দেখানোর কথা বলবেন না কাউকে। অন্য কিছু বলবেন। হুকুম করবেন। ও দায়িত্বটা আপনার।…আর একটা কথা, কাল আপনি যখন লাইব্রেরিতে আসবেন, ছোরার বাক্সটা সঙ্গে রাখবেন। লুকিয়ে।…পারলে একটা পিস্তল গোছের কিছু রেখে দেবেন।”