৪. চন্দন ঘরে আসতেই

০৪.

চন্দন ঘরে আসতেই কিকিরা বললেন, “কী ব্যাপার হে, নাটকের মাঝখানে তোমার আবিভাব। বলি এটা কি দাশরথি পার্টির যাত্রা।” বলে রঙ্গ করে চোখ এলে তাকিয়ে থাকলেন চন্দনের দিকে। কে যে দাশরথি তিনি বললেন না।

চন্দন মাথা মুছতে লাগল। ইলশেগুঁড়ির মতন বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। দু-দশ ফোঁটা জল গায়ে-মাথায় লেগেছে তার। মাথা মুছতে মুছতে চন্দন বলল, “ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছেন আপনারা, আমার তো সে আহ্লাদ করার সময় নেই। ডিউটি ডিউটি ডিউটি। লাইফ হেল করে ছেড়ে দিল। ওপরঅলা গিয়েছেন দিল্লি, সেমিনার করতে, যত ঝঞ্জাট আমার। আসছে জন্মে যেন আর ডাক্তার না হই।”

“কী হতে চাও?” কিকিরা মজা করে বললেন, “কম্পাউন্ডার?”

“আজ্ঞে না, বরং ম্যাজিশিয়ান হব। ভড়কি মেরে বাজিমাত। কত হাততালি। কাগজে ছবি।”

“তাই হবে। এখন বোসো। চা-টা খাও।”

 কিকিরার ঘরে তিনি আর তারাপদ। সন্ধে হয়েছে সবে। আজকের দিনটায় মোটামুটি আরাম লাগছিল। গরম নেই, ঘাম নেই, বাদলাও না থাকার মতন। শরকাল যেন পুরোপুরি দেখা দিচ্ছে।

“আপনার পা কেমন?”

“ও-কে।”

“আপনি বাইরে বেরোতে শুরু করেছেন শুনলাম?”

“এই মাঝে-মাঝে!”

“চালাকি করবেন না কিকিরা। আমি সব জানি। রবিবারে আপনি সফর করতে বেরিয়েছিলেন। গতকালও টহল মেরে এসেছেন।”

কিকিরা অমায়িক হাসি হেসে বললেন, “যাচ্চলে, আমার তো খেয়ালই থাকে না। বুড়ো হয়ে ভীমরতি হয়েছে আমার। …তা স্যান্ডেলউড, ইয়ে মানে–তিরিশ হাজার টাকার ব্যাপারটা তোমায় বলেনি তারাপদ?” কিকিরা বললেন বটে বোকা সেজে, কিন্তু তিনি জানেন, তারাপদর কাছ থেকে সব খবরই পেয়েছে চন্দন।

তারাপদ চন্দনের মুখের দিকে তাকিয়ে হাসল।

 চন্দন বলল, “যা ইচ্ছে আপনি করুন, স্যার। কিন্তু আপনার পায়ের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি না। পরে যখন ব্যথায় কাতরাবেন, আমি নেই।”

কিকিরা হেসে-হেসে জবাব দিলেন, “পাগল নাকি! আমি তোমার অ্যাডভাইস ছাড়া কিছু করি নাকি? তবে কী জানো, তিরিশ হাজারের লোভটা সামলাতে পারিনি বলে দু’দিন বাড়ির বাইরে বেরিয়েছি। খুব সাবধানে। ওয়াকিং করিনি বললেই হয়, সঙ্গে ছড়ি রেখেছি। প্রথমদিন তারাপদ ছিল। …তুমি সব শুনেছ তো?”

“লোচন দত্ত শুনেছি। “

“কাল একবার উত্তরে গিয়েছিলাম। বাগবাজার আর দিনেন্দ্র স্ট্রিট।”

চন্দন বসল। বসে হাত বাড়িয়ে তারাপদর সামনে রাখা প্লেট থেকে একটা শিঙাড়া তুলে নিল।

কিকিরা নিজেই বললেন, “দিনেন্দ্র স্ট্রিটে থাকেন লোচনের মাসতুতো দাদা। অনিলচন্দ্র দেব, অনিলদা। মাসতুতো হলেও ঠিক নিজের মাসির নয়। মায়ের খুড়তুতো দিদির ছেলে। বয়েস হয়েছে। পঞ্চাশ-টঞ্চাশ হবে। অনিলচন্দ্র সেরে একবার সতীশবাবুর কাছে গেলাম। সতীশবাবু নোচনের বড় শ্যালক। থাকেন বাগবাজারে। আলাদাভাবেই থাকেন, মানে লোচনের নিজের শ্যালক হলেও, নিজেদের পৈতৃক বাড়িতে থাকেন না। ভাড়া বাড়িতে থাকেন।”

চন্দন বলল, “দেখুন কিকিরা, আমি তারার মুখের গোড়ার কথা সব শুনেছি। সব ব্যাপারে আপনি নাক গলাতে যান কেন?”

মজা করে কিকিরা বললেন, “নাক এখনো গলাইনি; শুধু গন্ধটা শুকছি। …তা ছাড়া তিরিশ হাজার ফেলনা নয় আজকের দিনে। আমি গরিব মানুষ। যদি থার্টি থাউজেন্ড পেয়ে যাই…।

“কচু পাবেন। ওসব ধাপ্পাবাজি আমি অনেক দেখেছি।”

“তুমি আগে থেকেই সব মাটি করে দিচ্ছ! কথাগুলো যদি না শোনো, ব্যাপারটার মধ্যে কী আছে বুঝবে কেমন করে?”

চন্দন আর কথা বলল না।

কিকিরা সামান্য সময় চুপ করে থেকে বললেন, “ব্যাপারটা যা ভাবছ তা নয়। এর মধ্যে সামথিং হ্যাজ…!”

বগলা চা নিয়ে এসেছিল চন্দনের জন্য। তারাপদদের চা তখনও শেষ হয়নি।

চা নিতে নিতে কিকিরার দিকে তাকাল চন্দন। বলল, “সামথিং তো সব ব্যাপারেই থাকে। তা বলে আপনি খোঁড়া পায়ে নেচে বেড়াবেন!”

কিকিরা কথাটা শুনলেন, পাত্তা দিলেন না।

চন্দন নিজের ঝোঁকেই বলল, “আমার মাঝে-মাঝে মনে হয়, আপনার উচিত ছিল ক্রিমিন্যাল প্র্যাকটিসে নেমে পড়া। বিস্তর পয়সা কামাতেন। আজকাল ও-লাইনে অনেক কদর।”

কিকিরা বললেন, “নেক্সট লাইফ, মানে পরের জন্মে চেষ্টা করব। এখন আমার কথাটা শোনো।”

চন্দন আর কিছু বলল না। কিকিরা বললেন, “বলছিলাম অনিলবাবুর কথা। বাড়িতে গিয়েই ধরলাম তাঁকে। বললাম, আমি লোচনবাবুর হয়ে কাজ করছি। ভদ্রলোক আমাকে পাত্তাই দিতে চান না। পরে ফোন করলেন লোচনকে। জেনুইন পার্টি আমি। শেষে কথা বললেন।”

“কী বললেন?” তারাপদ বলল।

“বললেন টেলিফোন কল বার-দুই হয়েছে। টেলিফোনে গলা শুনে তিনি আন্দাজ করতে পারেননি ওটা মোহনের গলা কি না! এত বছর পর কারও গলার স্বর মনে রাখা অসম্ভব। তার ওপর লাইনে শব্দ হচ্ছিল। পাবলিক বুথ থেকে ফোন করছিল বোধ হয় কেউ। “

“অনিলবাবুর মোট কথাটা কী?

“বললেন, মোহন কি না তা তিনি জানেন না, তবে লোকটা লোচনদের ঘরবাড়ি পরিবার ছাপাখানা সম্পর্কে যা-যা বলল, দু-দশটা কথা, তা ঠিকই। মানে অনিলবাবু যতটা জানেন।”

চন্দন তাচ্ছিল্যের গলায় বলল, “এটা কোনো কথা হল কিকিরা? ইনফরমেশান জোগাড় করা কঠিন নাকি?”

কিকিরা বললেন, “কোনো কোনো জিনিস খুঁজে বের করা কঠিন। মানে, আমি বলছি–কোনো লোক বা বাড়ির সম্পর্কে আমরা যখন খোঁজখবর করি, ওপর-ওপরই করি। হয়ত খানিকটা খুঁটিয়েও করলাম কিন্তু সেটা কতটা হতে পারে। তোমার মা-বাবা-ভাই-বোন ঘরবাড়ি সম্পর্কে তুমি যা জানো, যতটা জানো, দেখেছ ছেলেবেলা থেকে–আমি বা তারাপদ ততটা কি জানতে পারি? পারি না।”

চন্দন বলল, “জাল মোহন কি সব কথা বলতে পেরেছে?”

“সব কথা নয়। সে-অবস্থাও ছিল না। মোহন দত্ত-পরিবার সম্পর্কে, নিজের বাবা আর কাকা, মানে লোচনের বাবা সম্বন্ধে দু-চার কথা যা বলেছে, তা ঠিক।”

“একটু শুনি?”

“যেমন ধরো সে বলেছে, তার বছর দশ বয়েসে তাকে দত্তক নেন রামকৃষ্ণ দত্ত, মানে লোচনের জ্যাঠামশাই। লোচনের বয়েস তখন দশ-এগারো। মোহন নামটা রামকৃষ্ণরই দেওয়া। আগে তার নাম ছিল গোপাল। নিজের বাবার সম্পর্কে এইটুকু তার ভাসা-ভাসা মনে আছে যে, ভদ্রলোক বড় গরিব ছিলেন, সামান্য একটা কাজ করতেন। স্ত্রী মারা গিয়েছিলেন। …তা রামকৃষ্ণর বন্ধু ছিলেন ভদ্রলোক। গোপালের নিজের বাবার টিবি রোগ হয়। বাড়াবাড়ি। উনি মারাও যান। মারা যাওয়ার আগে রামকৃষ্ণকে বলেন, গোপালকে দত্তক নিয়ে নিতে। রামকৃষ্ণর ছেলেপুলে ছিল না। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী গোপালকে দত্তক নিয়ে নেন। পোষ্যও বলতে পারো।”

তারপদ বলল, “অনিলবাবু এ-সব জানেন?”

“জানেন। শুনেছেন।”

“আর কী বলল মোহন?”

“লোচনের বাবার অসুখের কথা। দু-দুবার এমন অসুখ হয়েছিল যে, মারা যেতে বসেছিলেন। নোচনের মা দক্ষিণেশ্বরে পুজো দিতে গিয়ে গঙ্গার ঘাটে পা হড়কে হাত-পা ভেঙেছিলেন–সে কথাও বলেছে।”

চন্দন আর তারাপদ সিগারেট ধরাল। কিকিরাও একটা চেয়ে নিলেন।

“অনিলবাবুর কী ধারণা, এই লোকটা আসল মোহন?”

 মাথা নাড়তে নাড়তে কিকিরা বললেন, “না। তাঁর ধারণা লোকটা জাল।”

“আসল বলে তিনি মানতে চাইছেন না কেন?”

“যে জন্যে তোমারাও মানতে চাইছ না। মরা মানুষ কেমন করে ফিরে আসবে? মোহন যে মারা গেছে তার প্রমাণ রয়েছে হাতেনাতে। লোচন ছাড়াও বাকি দুজন তাকে মারতে দেখেছে, লোচনের মেজো শ্যালক আর মোহনের বন্ধু।”

তারাপদ বলল, “অনিলবাবু শেষ পর্যন্ত কী বলতে চাইলেন?”

“তিনি অবাক হয়েছেন ঠিকই, তবে এই ফোন করা মোহনকে ভদ্রলোক জালিয়াত জোচ্চোর ছাড়া আর কিছু ভাবতে রাজি না।”

 চন্দন কোনো কথা বলল না। তারাপদও চুপচাপ।

 কিকিরা নিজের থেকেই বললেন, “অনিলবাবু সেরে গেলাম সতীশবাবুর কাছে। উনি থাকেন বাগবাজারে। পৈতৃক বাড়িতে থাকেন না। বাগবাজারে একটা বাড়ির দোতলা ভাড়া নিয়ে থাকেন।”

“পৈতৃক বাড়ি কী দোষ করল?”

“সেটা কি আমি জিজ্ঞেস করতে পারি? নিজেদের ফ্যামিলির ব্যাপার। ..সতীশবাবু মানুষটি কিন্তু সজ্জন। ভাল। বছর পঞ্চান্ন বয়েস হয়েছে। একটা ওষুধ কোম্পানিতে কেমিস্ট। পরিবার বলতে স্ত্রী আর ছেলে। ছেলে কলেজে পড়ায়। বিয়ে-থা এখনো হয়নি।”

“সতীশবাবু কী বললেন?”

“বললেন অনেক কথাই। মোহনের গলার স্বর তিনি ধরতে পারেননি ঠিকই তবে দু-পাঁচটা কথা প্রমাণ হিসাবে যা বললেন, তা ঠিকই। সতীশবাবু বেশ আশ্চর্যই হলেন। উনি বললেন, দেখুন, ও-বাড়ির সব খোঁজখবর আমি রাখি না, কুটুমবাড়ির নাড়ির খবর, হাঁড়ির খবর রেখে আমার কী লাভ! তবে হ্যাঁ, আমাদের জামাইয়ের বাবা যেদিন মারা গেলেন সেদিন কলকাতা যে জলে ডুবে ছিল, তা আমার মনে আছে। ওদের ছাপাখানায় আগুন লেগে অনেক ক্ষতি হয়েছিল সেটাও আমি জানি। …এইরকম কয়েকটা কথা মোহন যা বলেছে–সতীশবাবু স্বীকার করে নিলেন সত্যি বলেই।”

“সতীশবাবুর ধারণা, এ-মোহন তবে আসল?”

“না, সে কথা তিনি কেমন করে বলবেন।”

“তবে?”

“তবে এটা তিনি স্পষ্টই বললেন, মোহন ছেলেটিকে তাঁর খুবই ভাল লাগত। হাসিখুশি ছেলে, আচার-ব্যবহার সুন্দর। চট করে নজর কেড়ে নিত। মোহন কিন্তু স্বভাবে খুব ভিতু ছিল। সাবধানী ছিল। বেপরোয়া ধরনের ছেলে সে একেবারেই ছিল না। চলন্ত ট্রামে বাসে সে লাফিয়ে উঠত কি না সন্দেহ। ময়দানে বড় খেলা থাকলে গণ্ডগোলের ভয়ে সে মাঠে যেত না। রেডিয়ো শুনত, টিভি দেখত। এই ছেলে যে কেমন করে ঝরনা-নামা দেখতে পাহাড়ের মাথায় উঠবে, উঠে অমন বিপজ্জনক জায়গায় যাবে–সতীশবাবুর তা মাথায় ঢোকেনি। বললেন, একেই বলে নিয়তির টান মশাই, নিয়তি তাকে টান ছিল…।”

চন্দন হঠাৎ বলল, “ওর কি ভারটিগো রোগ ছিল? তা থাকলে মাথা ঘুরে যেতে পারে।”

কিকিরা বললেন, “সে-খবর নিইনি।”

তারাপদ বলল, “সতীশবাবুর কথা থেকে কি আপনার মনে হল, ওঁর মনে কোনো সন্দেহ আছে?”

“সন্দেহের কথা কেমন করে বলবেন! তবে আমার মনে হল, ব্যাপারটা এমনই যে, সতীশবাবু মনে-মনে মেনে নিতে পারেননি।”

“লোচন সম্পর্কে বললেন কিছু?”

“না। নিজের ভগিনীপতি সম্পর্কে চুপচাপ দেখলাম। বেশি কিছু বললেন। হয়ত এড়িয়ে গেলেন।”

চন্দন বলল, “আপনার কী মনে হচ্ছে?”

“ভাবছি। এখনো অনেকের সঙ্গে দেখা করা বাকি। দেখি কোথাকার জল। কোথায় গড়ায়। মুশকিল কী জানো চাঁদু, যে দু’জন বড় সাক্ষী ছিল, তাদের একজন এখন চা বাগানে, অন্যজন বেপাত্তা। ঘটনা যে সময় ঘটেছে তখন ওরা ওখানে ছিল। ওরাই বলতে পারে।”

বাধা দিয়ে তারাপদ বলল, “স্যার, অন্য দু’জন কাছে ছিল কিন্তু পাশে বা গায়ের কাছে ছিল না। আমার যতদূর মনে হচ্ছে লোচন সেই রকমই। বলেছিল।”

চন্দন বলল, “সতীশবাবুর কী ধারণা, এই লোকটা মোহন হলেও হতে পারে?”

“না। তা নয়; তবে তিনি ধোঁকা খেয়েছেন। …মরা মানুষ ফিরে আসে না–এটা সবাই বোঝে। কথা হল, মোহন সত্যিই মারা গিয়েছে কি না?”

“সতীশবাবুরও সন্দেহ রয়েছে?”

“বাইরে প্রকাশ করলেন না, ভেতরে মনে হল, কোনো একটা সন্দেহ আছে।”

চন্দন আর তারাপদ পরস্পরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করল।

কিকিরা তাঁর মচকানো পায়ের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়ালেন। দেখলেন নিজে। দেখালেন চন্দনকে, “হাঁটতে পারি। ব্যথা কম। বেশি হাঁটাচলা করলে ব্যথা বাড়ে।”

“আপনি তা হলে বেশি হাঁটাচলা করছেন?”

হাসলেন কিকিরা, ছেলেমানুষ যেমন করে মিথ্যে গল্প সাজায়, অবিকল সেইভাবে বললেন, “না, কোথায়? রিকশায়-রিকশায় ঘুরি। আজকাল আবার অটো বেরিয়েছে।” বলে অন্য কথায় চলে গেলেন। “কাল আমি তুলসীবাবুর কাছে যাব। পটুয়াটোলা লেন। উনি ম্যানেজার ছিলেন দত্ত কোম্পানির ছাপাখানার। তুলসীবাবুই একমাত্র লোক যিনি জাল মোহনকে সামনাসামনি দেখেছেন। দেখি তিনি কী বলেন?”

“আরও তো আছে।”

“হ্যাঁ, ভবানী আর সেই উকিল মিহিরবাবু, থিয়েটার পাগলা।”

“সবই কি একদিনে সারবেন?”

“তা বোধ হয় হবে না। দেখি! একটা কথা আমায় বড় ভাবাচ্ছে হে! তোমরা নিশ্চয় লক্ষ করেছ, যে দু’জন লোক লোচনদের সঙ্গে ছিল তখন-মানে ঘটনার সময়, তাদের কেউ আর কলকাতায় নেই। একজন চলে গিয়েছে চা বাগানে, অন্যজন কোথায় কেউ জানে না। তার চেয়েও যা আশ্চর্যের ব্যাপার, লোচনের মেজো শ্যালক আগে কলকাতাতেই থাকত। ঘটনার পর সে চা বাগানে চলে গিয়েছে চাকরি নিয়ে। সতীশবাবুই আমাকে বললেন। মোহনের বন্ধু সম্পর্কে অবশ্য তিনি কিছু জানেন না। আমি ভাবছি, এই দুটো লোককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, না, তারা নিজেরাই সরে গেছে। লাখ টাকার প্রশ্ন হে! জবাবটা কে দেবে?”