২২. কারাগারের চত্বর

সময়, গোধুলি বেলা। স্থান, কারাগারের চত্বর। হারুনর রশীদ, মশরুরের প্রবেশ। চত্বরের পাশে দণ্ডায়মান তাতারী ও কোড়াদার। তাতারীর হাতে-পায়ে জিঞ্জির। কোড়াদারের হাতে চাবুক। চত্বরের দুই ভাগ। একদিক উঁচু। অন্যদিক কয়েদীর অবস্থানভূমি। সেদিকটা নিচু।

হারুন : তাতারী, তিন দিনের জায়গায় তিন বৎসর কেটে গেল। তোমার জীবনের মেয়াদ বহু দিনদিন বাড়িয়ে দিয়েছি। আজ কিন্তু আমি বোঝাঁপড়া করতে চাই। বাজি ধরে, বন্ধুদের কাছে আমি হেরেছি। কিন্তু আর না…। তোমাকে। আমি শেষ সুযোগ দিতে চাই। জবাব দাও…

[তাতারীর দিকে তাকাল। সে নিশ্চল পাথরের মত দণ্ডায়মান। সমস্ত শরীরে চামড়া নেই বললেই চলে। অবয়ব কিন্তু পূর্বের মতই আছে। নির্যাতনে তা ক্ষয়ে যায় নি। তাতারী অবশ্য পৃথিবীকে আর সম্পূর্ণ দেখে না। দুই স্ফীত ভুরু চোখের উপর ঝুলে পড়েছে। চাবুকের আঘাত-ফল।]

জবাব দাও… আবু নওয়াস বলেছিল, তুমি কালো পাথর। সত্যই তুমি কালো পাথর। তোমার শরীর কি ফুলাদের মত ইস্পাতে গড়া? চাবুকের ঘায়ে তুমি নাকি আর্তনাদ পর্যন্ত করো না। সত্যি কোড়াদার?

কোড়াদার : জাঁহাপনা, বহুদিন আপনার নেমক খেয়েছি। কিন্তু এমন হিমাকাওয়ালা কয়েদী আমি কোনদিন দেখি নি। পিটে পিটে ওকে দুরস্ত করলেও, ও শব্দ করে না, আওয়াজ তোলে না।

হারুন : কি করে?

কোড়াদার : দেখবেন, আলম্পানা?

হারুন : হা, সেই জন্যেই ত এসেছি।

কোড়াদার : তবে দেখুন–

[কোড়া চালায়। অব্যক্ত যন্ত্রণায় তাতারী শুধু দক্ষ অভিনেতার মত মুখমণ্ডল বিকৃত করে, আর হাঁপায়]

হারুন : খামুস, কোড়াদার আর কি করে?

কোড়াদার : জাঁহাপনা বেহুঁশ হয়ে যায়। কিন্তু তখনও গোঙায় না, আর্তনাদ করে না। জনাব, এ কয়েদী ইন্‌সান নয়। জীন, দেও বা পাথর।

হারুন : যা কোড়াদার, তুই বাইরে যা। কোড়া মশরুরের হাতে দে। যে হাতে মশ্‌রুর তলওয়ার চালায়, সেই হাতে আজ কোড়া চালাবে।

কোড়াদার : জো হুজুর, জাঁহাপনা।

[মরুরের হাতে কোড়া-প্রদান এবং প্রস্থান]

মশ্‌রুর : আলম্পানা, কয়েদীর সমস্ত শরীর থেকে প্রায় খুন ঝরছে, ওর উপর আর কোড় চালানো বৃথা। বেহুঁশ হয়ে যাবে। আর কথা বলা চলবে না–যে জন্যে আপনার এখানে আগমন।

হারুন : বেশ, কোড়া ফেলে দাও। তবে রাখো, দরকার হোতে পারে।–তাতারী, মনে রেখো আজ তোমার কেয়ামৎ। আজরাইলও (যমদূত) আজ তোমাকে বাঁচাতে পারবে না। জবাব দাও–জবাব দাও। বেতমীজ গোলাম তবু স্থির নিশ্চল দাঁড়িয়ে রইল। মশ্‌রুর এই বেতমীজের জিভ টেনে টেনে ছেঁড়ার আয়োজন করতে হয়।

মশ্‌রুর : তা হোলে কি কথা-বলা সহজ হবে, জাঁহাপনা?

হারুন : হুঁ, মশ্‌রুর, সেও এক সমস্যা। ইনসানের সঙ্গে লড়া যায় কিন্তু এ ত পাথর–(পায়চারী-রত) গোলাম, তোমাকে শেষ সুযোগ দিলাম। নচেৎ–তারপর মশ্‌রুর তার কাজ শুরু করবে… জবাব দাও… (তাতারী নির্বিকার। শারীরিক যন্ত্রণায় শুধু মুখ কুঁচকে নিঃশ্বাস নেয় আর ফেলে) না, মশ্‌রুর–বৃথা কালক্ষেপ।

[হাততালি দিল। দুই জন প্রহরীর প্রবেশ]

প্রহরী : জাঁহাপনা।

হারুন : ওই কামরায় একজন জানানা অপেক্ষা করছে, তাকে নিয়ে আয়।

প্রহরীদ্বয় : আস্‌সামায়ো তায়াতান।

(প্রস্থান)

হারুন : (অঙ্গুলি নির্দেশ) এক আজব সমস্যা।

মশ্‌রুর জাঁহাপনা, সমস্যা জইয়ে রেখে লাভ কি? আপনি শুধু হুকুম দিন।

হারুন : মশ্‌রুর, তার জন্য এত ব্যস্ততা কেন? আমি ভাবছি—

মশ্‌রুর : আলম্পানা, কি ভাবছেন?

হারুন : ভাবছি, এত দৈহিক যন্ত্রণা এরা সহ্য করে কিভাবে?

মশ্‌রুর : জাঁহাপনা, আবু নওয়াস বলে–মানুষ আনন্দাতীত আরো কিছু পায়, যার কাছে এই যন্ত্রণা আর যন্ত্রণা মনে হয় না।

হারুন : আনন্দাতীত–ও একটা পাগলের প্রলাপ। আবুনওয়াসই তা বলতে পারে।

মশ্‌রুর : আমি কিন্তু এই কয়েদীকে দেখে তা প্রায় বিশ্বাস করতে বসেছি।

হারুন : তুমিও বোধ হয় পাগল হয়ে যাচ্ছে।

মশ্‌রুর : জাঁহাপনা, অথবা এরা বোধ হয় মানুষ নয় অথবা মানুষ যা দিয়ে তৈরি এদের উপাদান তার চেয়ে আলাদা।

হারুন : তোমার পাগল হতে বেশি দেরী নেই। এই দ্যাখো…

[এতক্ষণ তাতারী দাঁড়াইয়াছিল। শরীরে বোধ হয় অব্যক্ত যন্ত্রণা, তাই ধীরে ধীরে বসিয়া পড়িল। জায়গাটা বালুময়। হতব্যক্তির রক্ত পরিষ্কারের সুবিধার জন্য এই ব্যবস্থা। তাতারী বসিয়া পড়িল। তারপর দুই গোড়ালি চাপিয়া ধরিয়া মাথা দুই হাঁটুর মধ্যে খুঁজিয়া দিল। সবই নিঃশব্দে ঘটে।]

মশ্‌রুর : জাঁহাপনা–

হারুন : আস্তে আস্তে, মশ্‌রুর।

[দুই জন ফিসফিস্ কণ্ঠে কথা বলে]

আস্তে, একটু বিশ্রাম নি।

মশ্‌রুর : ওর বিশ্রামের প্রয়োজন নেই।

হারুন : আছে। একটু তেজ সঞ্চয় করে নি।

মশ্‌রুর : জাঁহাপনা, তেজের উৎস আনন্দ। ওর তেজ হয়ত সেই এক জায়গা থেকেই আসে।

হারুন : মশ্‌রুর। তুমি বড় বাজে বকো। শুধু দেখো, দেখো। ওর তেজের সব পরীক্ষা নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছি আজ। এই গোলাম—

[কথার ছেদ পড়ে। মেহেরজানের প্রবেশ। পরনে রেশমি লেবাস। যৌবন সর্বাঙ্গে ক্ষমাপ্রার্থীর মতো লুটাইয়া পড়িতেছে। চোখেমুখে হাসির ঝিলিক ছাপাইয়া ওঠে। আপ্ত-রমণীর মতো চলাফেরা।]

মেহেরজান : জাঁহাপনা, কোথায় আপনার তামাসা? আমি—

হারুন : হঠাৎ পেছন ফিরে ধীরে, আস্তে—

[এবার সকলে খুব নিচু গলায় সংলাপ-রত]

 মেহেরজান : বহুৎ আচ্ছা। কিন্তু আপনার তামাশা কোথায়? আমি ত কোতোয়ালের মাকানে বসে বসে হয়রান। শেষে আপনার ডাক যে পড়ল, তার জন্য শুরিয়া, ধন্যবাদ—

হারুন : তামাশা নিশ্চয় দেখবে।

মেহেরজান : কিন্তু কোথায়?

হারুন : আছে, বেগম সাহেবা।

মেহেরজান : কিন্তু কই?

হারুন: [উপবিষ্ট তাতারীর দিকে নির্দেশ] ওই—

মেহেরজান : ও কে?

হারুন : একটা নাফরমান, অবাধ্য কয়েদী, আমার কথার কোন ইজ্জৎ রাখে না।

মেহেরজান : ওর গর্দান দু-টুকরা করেন। ওর অপরাধ কি?

হারুন : তার শুমার নেই।

মেহেরজান : তবু—

হারুন : আমার অবাধ্য গোলাম।

মেহেরজান : চাবুক লাগান।

হারুন : তা-ই লাগিয়ে লাগিয়ে ত শরীরের ওই দশা।

মেহেরজান : বেশ করেছেন। কিন্ত গোলামটা কে?

হারুন : বলছি, সব বলব তোমাকে।

মেহেরজান : কে এই গোলাম, মশ্‌রুর?

হারুন : মশ্‌রুর ওর নাম জানে না।

মেহেরজান : তা মশ্‌রুর নিজের মুখেই বললে পারে। গোলামটা কে?

হারুন : তুমি এগিয়ে গিয়ে নিজেই জিজ্ঞাসা কর না।

মেহেরজান : বেশ।

[অগ্রসর হইয়া চত্বরের কিনারায় আসে,তারপর বেশ জোরেই ডাক দেয়। এরপর স্বাভাবিক কণ্ঠে সব সংলাপ]

কে–তুমি কে?

[হাঁটুর মধ্যে মুখ গোঁজা তাতারী প্রথম ‘ক’ শব্দে বিদ্যুৎ-স্পৃষ্টের মত মাথা তোলে। তারপর ধীরে ধীরে মেহেরজানের দিকে দৃষ্টি-নিবদ্ধ রাখিয়া খাড়া হয়।]

তুমি কে?

(তাতারী উদভ্রান্তের মত জিঞ্জির-বাঁধা দুই হাত তোলার চেষ্টা করে]

কে তুমি?

[কোন জবাব আসে না। পেছনে ফেরে মেহেরজান]

কে এই গোলাম, আমিরুল মুমেনীন?

হারুন : তুমিই জিজ্ঞেস কর, জবাব নাও।

মেহেরজান : (মুখ ফিরাইয়া) তুমি কে? জবাব দাও। জবাব দিচ্ছে না কেন? (আবার খলিফার দিকে) কে এই গোলাম, জাঁহাপনা? ও জবাব দিচ্ছে না।

হারুন : জবাব আদায় কর।

মেহেরজান : তুমি কে?

[তাতারী নিরুত্তর]

হারুন : এ-কে চেনো না?

মেহেরজান : না।

হারুন : মশ্‌রুর, হাহ্‌ হা, মশ্‌রুর।

[হাসিতে লাগিল। বাধা]

মেহেরজান : হাসি বন্ধ করুন আমিরুল মুমেনীন। কে এই গোলাম?

হারুন : তুমি এ-কে চেনো না?

মেহেরজান : দুনিয়ার তামাম মানুষ কি আমার জানা যে এ-কে চিন্‌ব?

হারুন : হাহ্‌ হা।… জিজ্ঞেস কর তোমাকে চেনে কি না।

মেহেরজান : জাঁহাপনা, কয়েদখানার এই অন্ধকারে এই বুঝি আপনার তামাশা? আমি বাইরে চলোম।

হারুন : তা যাও। কিন্তু তার জন্যে সারাজীবন আফসোস করতে হবে।

মেহেরজান : কেন?

হারুন : তুমি ওকে চেনো।

মেহেরজান : চিনি?

হারুন : হাঁ। ওই কোঁকড়া-কঠিন চুলের দিকে তাকাও। গায়ের চামড়া তো আর কালো নেই। চুল ঠিক আছে।

মেহেরজান : তুমি কে কয়েদী? জবাব দাও।

হারুন : হাহ্ হা। চার বছর ধরে আমরা জবাব পাই নি, আর তুমি। এই কয়েক লহমায় উত্তর পাবে।

মেহেরজান : কিন্তু এ কে? আমি চিনতে পারছি নে, জাঁহাপনা।

হারুন : হাহ্‌ হা। চিনতে পারলে না? গোলাম তাতারীকে আজ চিনতে পারলে না, মেহেরজান?

মেহেরজান : তাতারী… তাতারী… কিন্তু তাতারীর এই দশা কেন?

হারুন : নাফরমান অবাধ্য। তাই–

মেহেরজান : নাফরমান। কি ওর অপরাধ? হারুন : মুখের কথা বন্ধ করেছে। ওকে কি না দিয়েছিলুম। বাগবাগিচা তয়খানা,

বাদী গোলাম ইমার–সব ইকার ঘৃণা করলে। বন্ধ করলে মুখের কথা। তাই চার বছর ধরে, তিলে তিলে শায়েস্তা হচ্ছে–

মেহেরজান : ইন্‌কার করলে?

হারুন : হ্যাঁ।

মেহেরজান : ইন্‌কার করলে [একটু অগ্রসর হয়, পরে পেছনে ফিরিয়া]… জাঁহাপনা, যে নাফরমান তাকে কতল করেন নি কেন?

হারুন : হিমাকতের শাস্তি দেব বলে।

মেহেরজান : সে শাস্তি ত অনেক পেয়েছে। আজ এখনই ওকে কতল করুন। হুকুম দিন, মরকে।

হারুন : তোমার পরামর্শে হবে না, মেহেরজান। আজো ও কথা বলুক, ওর সব অপরাধ আমি মাফ করে দেব।

মেহেরজান : তাতারী, কথা বল, জবাব দাও। খোদ্ আমিরুল মুমেনীন ওয়াদা করেছেন। কথা বল। তোমার সমস্ত শরীর জখমে-খুনে জারেজার। এই জর্জর দেহের যন্ত্রণা আর কেন সহা করবে? কথা বল।

(তাতারী নিরুত্তর)

হারুন : হাহ্ হা। জবাব আদায় কর, মেহেরজান।

মেহেরজান : তাতারী, খোদার ওয়াস্তে–একবার কথা বলা। বল… [হারুনর রশীদ হাসিতে লাগিলেন। হাসি থামিলে] জাঁহাপনা, ওকে কতল করুন। ওর এই কষ্ট আর সহ্য করা যায় না। হুকুম দিন মশ্‌রুরকে।

হারুন : না, মেহেরজান। কতল আমি ওকে করব না। জীবনকে যে পাশার ঘুটি বানাতে পারে এত সহজে, তাকে হত্যা করব না। তিলে তিলে দগ্ধে দগ্ধে—

মেহেরজান : না, জাঁহাপনা, এত নিষ্ঠুর হবেন না। দয়া করুন।–

[নতজানু]

আমি আপনার কাছে দয়া ভিক্ষা চাইছি, ওকে কতল করুন।

হারুন : না, না–তা হবে না।

মেহেরজান : হবে না?

হারুন : না।

মেহেরজান : (উদ্ভ্রান্ত) হবে না… তোতারীর দিকে অগ্রসর কথা বল, তাতারী। তুমি এমন নির্বোধ কেন? স্বপ্নভাঙার পর স্বপ্নে-দেখা ধন-দৌলত হারানোর শোকে কেউ কোনদিন কাঁদে নাকি–এক নির্বোধ ছাড়া। নিজেকে কেন এইভাবে চুরমার করে ফেলছ? কথা বল। আমিরুল মুমেনীন ওয়াদা করেছেন… কথা বলো … আমি তোমার দিকে চেয়ে রইলাম, কান পেতে রইলাম…

[তাতারী নিরুত্তর। খলিফা হাসিয়া উঠিলেন। হাসি থামার পর, মেহেরজান ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়, একদম তাতারীর কাছে বালুভূমির উপর] কথা বলো, আমি অনুরোধ করছি। কথা বলো….

তুমি যা বলতে, তুমি কি এত যন্ত্রণা বুকে আজও তাই মনে রেখেছ। তুমি বলতে, “মেহেরজান, গোলামের মহব্বৎ আর এক আলাদা চিজ। তা। আমির-ওমরার মহব্বৎনয়। তারা দৌলতের কদর বোঝে। আর দৌলতের বড় গুণ হল বিনিময় আর হাতফেরী হওয়া। হস্তান্তর ছাড়া তার গুণ প্রকাশ পায় না। আমির-ওমরার মহব্বৎ এই হাতফেরীর মহব্বৎ। গোলামের প্রেম ধ্রুবতারার মত স্থির–আকাশের একটি প্রান্তে একাকী মৌন–অবিচল–রোরুদ্যমান) তুমি তেমনই অবিচল আছ। কিন্তু আমি… আমি ত বিনিময়ের ভাটিতে সিদ্ধ হয়ে গেলাম। আর বান্দী থলািম না। কোড়াঘাতের এত ব্যথা বয়েছ, এস মুছিয়ে দিই মুছিয়ে নিই–

[মেহেরজান হস্ত প্রসার মাত্র]

হারুন : শান্ত্রী শান্ত্রী—

[দুই প্রহরীর প্রবেশ]

শান্ত্রী, যা এই বিবি সাহেবকে বাইরে নিয়ে যা।

মেহেরজান : [আর্তস্বর] না, না।

হারুন : সরম করিস নে, প্রহরী। দুইজনে দুই হাত ধর।

[তথাকরণ, টানিতে টানিতে অগ্রসর]

মেহেরজান : [পশ্চাতে মুখ] তোমার যন্ত্রণা মুছে নিতে পারলাম না, তোমার নির্মল দেহ স্পর্শের যোগ্যতা আমার নেই … নাই বা স্পর্শ করলাম এই কলঙ্কিত হাতে [চিৎকার] তাতারী– তাতারী–

[কারাগার হইতে অপসৃয়মান মুখ, শেষবার মেহেরজান ডাকে : তাতারী]

তাতারী : (সেই দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ) মেহেরজান, মেহেরজান (তারপরই) শোন, হারুন রশীদ—

হারুন : বেতমীজ, জাঁহাপনা বল।

মশ্‌রুর : বেয়াদব। বল্ আমিরুল মুমেনীন।

তাতারী : শোন, হারুনর রশীদ–

হারুন : কোড়াদার মশ্‌রুর, মশ্‌রুর, কোড়া চালাও। বেয়াদব, বেয়াদব–

[কোড়া চালাইতে থাকে সেই অবস্থায়]

তাতারী : শোন, হারুনর রশীদ। দীরহাম দৌলত দিয়ে ক্রীতদাস গোলাম কেনা চলে। বান্দী কেনা সম্ভব–! কিন্তু—কিন্তু–ক্রীতদাসের হাসি—না–না–না–

[পতন ও মৃত্যু, বেগে আবু নওয়াসের প্রবেশ]

নওয়াস : আমিরুল মুমেনীন, হাসি মানুষের আত্মারই প্রতিধ্বনি।

[এই খানে পাণ্ডুলিপি ছিন্ন]

অসমাপ্ত

1 Comment
Collapse Comments
K. M. Fakrul Islam August 30, 2019 at 5:12 pm

আমি বহুকাল আগে বেতারে ক্রিতদাসের হাসি নাটকটি শুনেছিলাম। আজ পড়লাম। অসাধারণ সৃষ্টি। শ্রদ্ধা জানাই প্রয়াত শওকত ওসমানকে। ধন্যবাদ ebanglalibrary.com কে সুযোগ করে দেয়ার জন্যে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *