(১) গুজ্জরীরাগঃ॥একতালী ॥ দধি দুধেঁ পসার সজাআঁ। নেতা বাস ওহাড়ন দিআঁ ॥ ল রাধা সব সখিজন মেলি রঙ্গে। একচিত্তে বড়ায়ির সঙ্গে ॥ ল রাধা ॥ ১ নিতি জাএ সর্ববাঙ্গসুন্দরী। বনপথে মথুরা নগরী ॥ ল রাধা ॥ ধ্রু এক দিনে মনের উল্লাসে। সখি সমে রস পরিহাসে ॥ আগু গেলি সত্বর গমনে। বড়ায়িক না করী যতনে ॥ ২ বকুলতলাত গোআলী। বড়ায়ির পন্থ নেহালী ॥ বসিলী মাথাত দিআঁ হাথে বড়ায়ি চলিলী আন পথে ॥ ৩ রাধিকা গুণিআঁ মনে মনে। বড়াইর বিলম্ব কারনে ॥ বন মাঝেঁ পাইল তরাসে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ॥ ৪ (২) পাহাড়ীআরাগঃ ॥ ক্রীড়া ॥ রাধিকা হারাআঁ বড়ায়ি বুলে থানে থানে। ভালমনে পথক না দেখে নয়নে ॥ নাতিনীর মোহে বড়ায়ি মনে বিমরিষে। কমণ উপায় করোঁ জাওঁ কোন দিশে ॥ ১ পথ হারাইল বড়ায়ি মাঝ বৃন্দাবনে। দৈবে সে জাণএ যার যেহেন ঘটনে ॥ ধ্রু মনেত গুনেত বড়ায়ি আধিক তরাসে। কথাঁ গিআঁ পাওঁ মোএঁ রাধার উদ্দেশে ॥ একসরী হৈলোঁ মোএঁ হেন ঘোর বনে। রাধিকা এড়িআঁ আজি জীবোঁ কেনমনে ॥ ২ কথো দুর পথ গিআঁ দেখিল বড়ায়ি। বৃন্দাবন মাঝে চরে শতসংখ্য গাই॥ তাক দেখি বড়ায়ির মনেত হরিষে। এহা রাখোআল পুছোঁ রাধার উদ্দেশে ॥ ৩ হেন মনে গুণী বড়ায়ি গেলান্তি তথাঞিঁ। দেখিল লগুড় করে নাতিআ কাহাঞিঁ ॥ হরিষে মেলিলী বড়ায়ি তাহার পাশে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে ॥ ৪ (৩) পাহাড়ীআরাগঃ ॥ চিত্রক লগনী ॥ একতালী ॥ আচম্বিত বুঢ়ী দেখি বৃন্দাবন মাঝে। বিনয় করিআঁ পুছন্তি দেবরাজে ॥ ১ কথাঁ হৈতেঁ আইলা তোহ্মে কিবা তোর কাজে। একলী বুলসি কেহ্নে বৃন্দাবন মাঝে ॥ ২ গোঠে হৈতেঁ আসি আহ্মি বুঢ়ী গোআলিনী। আগুত চলিলী মোর সুন্দরি নাতিনী ॥ ৩ পাছে পাছে জাইতেঁ পথ হারাইল আহ্মি। মথুরার পথ পুতা কহিআঁ দেহ তুহ্মি ॥ ৪ সঙ্গে কেহ্নে লআঁ ধুল নাতিনিখানী। কথাঁ তাক হারাইলেঁ কহ তত্ববাণী ॥ ৫ কি নাম তাহার কেহেন তার রূপ। আহ্মার থানত বুঢ়ী কহিআর সরূপ ॥ ৬ দধি বিকে জাইতেঁ সঙ্গে মথুরা নগরী। বৃন্দাবনে হারাইলোঁ ত্রৈলোক্যসুন্দরী ॥ ৭ নাতিনী হারাইলোঁ নামে চন্দ্রাবলী। কোঁঅলী পাতলী বালী সুন বনমালী ॥ ৮ সরূপ কহিবোঁ তবেঁ মথুরার পথ। যে কাজ বোলোঁ তোহ্মাক তাত কর সত ॥ ৯ বোলা এক বোলোঁ তোক যবেঁ ধর মনে। তবেঁসি করিবোঁ তোর রাধা দরশনে ॥ ১০ তোঁ মোর নাতি যেহ্ন দুঅজ পরাণ। তোহ্মার বোলত আহ্মে না করিব আন ॥ ১১ সত্যেঁ সত্যেঁ করিবোঁ মো তোহ্মার বচন। যবেঁ আন করোঁ তাক বধওঁ বাহ্মণ ॥ ১২ উদ্দেশ বুলিব যবেঁ রাধিকার আহ্মে। তবেঁ ভালমতেঁ তার রূপ কহ তোহ্মে ॥ ১৩ কাহ্নের বচনে বড়ায়ি পাইল হরিষে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে ॥ ১৪ (৪) গুজ্জরীরাগঃ ॥ রুপকং ॥ কেশপাশেঁ শোভে তার সুরঙ্গ সিন্দুর। সজল জলদে যেহ্ন ঊইল নব সূর॥ কনককমলরুচি বিমল বদনে। দেখি লাজে গেলা চান্দ দুঈ লাখ যোজনে ॥ ১ মুনিমনমোহিনী রমণী আনুপামা। পদুমিনী আহ্মার নাতিনী রাধানামা ॥ ধ্রু ললিত আলকপাঁতিকাঁতি দেখি লাজে। তমালকলিকাকুল রহে বনমাঝে ॥ আলস লোচন দেখি কাজলে উজল। জলে পসি তপ করে নীল উতপল ॥ ২ কন্ঠদেশ দেখিআঁ শঙ্খত ভৈল লাজে। সত্বরে পসিলা সাগরের জলমাঝে॥ কুচযুগ দেখি তার আতি মনোহরে। আভিমান পাআঁ পাকা দাড়িম বিদরে ॥ ৩ মাঝা খিনী গুরুতর বিপুল নিতম্বে। মত্ত রাজহংস জিণী চলএ বিলম্বে ॥ দিনে দিনে বাঢ়ে তার নহুলী যৌবন। গাইল বড়ু চণ্ডীদাস বাসলীগণ ॥ ৪ (৫) দেশাগরাগঃ ॥ রুপকং ॥ অথবা,কানড়া ॥যতিঃ তোর মুখে রাধিকার রূপকথা সুনী। ধরিবাক না পারোঁ পরাণী ॥ বড়ায়ি ল দারুন কুসুমশর সুদৃঢ় সন্ধানে। আতিশয় মোর মন হানে ॥ বড়ায়ি ল ॥ ১ পরাণ আধিক বড়ায়ি বোলোঁ মো তোহ্মারে। রাধিকা মানাআঁ দেহ মোরে ॥ ধ্রু ॥ কুসুমিত তরুগণ বসন্ত সমএ। তাত মধুকর মধু পীএ ॥ সুসর পঞ্চম শর গাএ পিকগণে। তেকারণে থীর নহে মনে ॥ ২ আতিশয় বাঢ়ে মোর মদনবিকার। তাত কর মোর উপকার ॥ এ থানক আইলা বড়ায়ি আহ্মার ভাগে। মোর কাজ তোহ্মাত লাগে ॥ ৩ একবার মোর তোহ্মে কর উপকার। আহ্মে দেব সংসারের সার॥ রাধিকা মানাআঁ বড়ায়ি পুর মোর আশ। বাসলী বন্দী গাইল চণ্ডীদাস ॥ ৪ (৬) আহেররাগঃ ॥ লঘুশেখরঃ ॥ আহ্মে তোর বড়ায়ি তোহ্মে মোর নাতী। চিন্তিবোঁ তোহ্মার হিত পরাণশকতী ॥ তোহ্মার আন্তরে তাক করিবোঁ শকতী। আয়র মানায়িবোঁ করী আশেষ যুগতী ॥ বোলহ সুন্দর কাহ্ন রাধার উদ্দেশে। তথাঁ গেলেঁ তোর কাজ সাধিবোঁ হরিষে ॥ ধ্রু এ সব কাজের আহ্মে জাণিএ প্রবন্ধ। এতেকেঁ তোহ্মার তার হৈব নেহাবন্ধ ॥ পরাণ দিবাক পারোঁ তোহ্মার বচনে। এ কাজ সাধিবো আহ্মে করিআঁ যতনে ॥ ২ আযোড় যোড়ন আহ্মে করিবাক পারী। সে কি রাধিকা ভৈলী সীতা সতী নারী ॥ আহ্মার হাথত দেহ কিছু ফুল পানে। তাক লআঁ জাই আহ্মে রাধিকার থানে ॥ বিলম্ব না কর বোল রাধার উদ্দেশে। আর কিছু দেহ কাহ্নাইঁ উত্তম সন্দেশে ॥ ঝাঁট করি জাই আহ্মে রাধার উদ্দেশে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে ॥ ৪ (৭) পাহাড়ীআরাগঃ ॥ ক্রীড়া ॥ লগনী প্রকীণ্ণক ॥ কথা খানি খানি কহিল বড়ায়ি বসিআঁ রাধার পাশে। কর্পূর তাম্বুল দিআঁ রাধাক বিমুখ বদনে হাসে ॥ ল বড়ায়ি ॥ ১ কহির কপুর তাম্বুল বড়ায়ি কহির নেত পাটোল। নেআলী মাহলী আওর নানা ফুল কে দিআঁ পাঠাইলে মোর ॥ ল বড়ায়ি ॥ ২ আইস রাধা কহোঁ তোহ্মারে কৃষ্ণের পাঁচ আবথা। বিরহ জরেঁ তেহেঁ জরিলা পাঠাইল তোহ্মা বেথাঁ ॥ ল রাধা ॥ ৩ এ বোল সুণিআঁ নাগরী রাধা হাণএ সকল গাএ। যত নানা ফুল পান করপুর সব পেলাইল পাএ ॥ ৪ উঠিআঁ বড়ায়ি রাধাক বুইল হেন কাম না করিএ। নান্দের নন্দন ভুবন বন্দন তোর দরশনে জীএ ॥ ৫ ঘরের সামী মোর সর্ব্বাঙ্গে সুন্দর আছে সুলক্ষণ দেহা। নান্দের ঘরের গরু রাখোআল তা সমে কি মোর নেহা ॥ ৬ যে দেব স্মরণে পাপ বিমোচনে দেখিল হএ মুকতী। যে দেব সনে নেহা বাঢ়াইলেঁ হএ বিষ্ণুপুরে স্থিতী ॥ ৭ ধিক ঝাউ নারীর জীবন দহেঁ পসূ তার পতী। পর পুরুষের নেহাএঁ যাহার বিষ্ণুপুরে হএ স্থিতী ॥ ৮ নাগর শেখর নান্দের সুন্দর উপেখিল মতিমোষে। বাসলীচরণ শিরে বন্দীআঁ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ॥ ৯ (৮) কোড়ারাগঃ ॥ রুপকং ॥ আহ্মার কোমল দেহে। না জাণো দূতী পরপুরুষের নেহে ॥ সরূপেঁ তোরে কহিলোঁ। আল হের প্রতিজ্ঞা করিলোঁ। প্রথম যৌবন মোএঁ বঞ্চিলোঁ ॥ ১ না বোল না বোল দূতী নাএ। আবালী রাধা নহোঁ সুরতী যোগে ॥ ধ্রু পান আনি নিজ দোষে। ফল পাইবেঁ মোর রোষে। ধূর্ত্ত কাহ্নাই না বুঝে সে মতিমোষে ॥ ক্ষেমা করু কাহ্ন মণে। ধরুক মোর বচনে। যবেঁ না মরিবে রাধা রস ণিরকারণে ॥ ২ না বুঝোঁ রঙ্গ ধামালী। না জাণো সুরতী কেলী। বাহুড়িআঁ চল সে নিষধ বনমালী ॥ জৈসাণে রতি জাণিবোঁ ৫। তেসাণে কাহ্ন আণিবোঁ। সুরতী সম্ভোগে সকল রাতী পোহাইবোঁ ॥ ৩ দেখি তোহ্মাক আজলী। পর কাজে তোঁ বিকলী। তেসিঁ না বুঝসি আহ্মে বালী ॥ বোল গিআঁ কাহ্ন পাশে। ছাড়ু সুরতীর আশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ॥ ৪ (৯) দেশাগরাগঃ ॥ যতিঃ ॥ আজি রজনীত বড়ায়ি দেখিলোঁ সপনে। রাধা সিআঁ বসিলী শয়নে ॥ বড়ায়ি ল তখনে হৃদয়ে মোর বেধিল মদনে। বুইলোঁ পরিহাস বচনে ॥ বড়ায়ি ল ॥ ১ না জীবোঁ না জীবোঁ বিণি রাধা দরশনে। সরূপেঁ কহিলোঁ তোর থানে ॥ ধ্রু নীল জলদ সম চিকণ চিকুরে। বদন সংপুন শশধরে ॥ বচন ঝরএ তার আমৃতের ধার। তাক বড় লোভ আহ্মার ॥ ২ হাথ দিআঁ দেখ বড়ায়ি মোর কলেবরে। জত বড় উপজিল জরে ॥ এত দুখ বড়ায়ি মোর পরাণ না সহে। মরোঁ হের রাধার বিরহে ॥ ৩ বারেক করাহ যবেঁ রাধা দরশনে। তবেঁ রহে আহ্মার জীবনে ॥ এহা জাণী ঝাঁট চল রাধিকার পাশে। গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে॥ (১০) রামগিরিরাগঃ ॥ রূপকং ॥ এত কালে বুঢ়ী তোর কেহ্নে হেন মন। ভাল বুলিবে তোরে শুণী কোন জন ॥ আদি আন্ত এখো বোল না বোলসি ভাল। মারিবোঁ পরাণে তোকে জানাআঁ গোআল ॥ ১ দারুণী বুঢ়ী তোর বাপেত নাহিঁ লাজ। তেকারণে মোক বোলসি হেন কাজ ॥ ল ॥ ধ্রু বার বার না বুলিহ হেনক উত্তর। সামী দুরুবার মোর নহোঁ সতন্তর ॥ মো যবেঁ জাণোঁ তোর হেন দুষ্ট মতী। তবেঁ কেহ্নে আসিবোঁ মো তোহ্মার সংহতী ॥ ২ তোঁ মোর বড়ায়ি মোঁ তোর নাতিনী। এবেঁসি তোহ্মার মুখে শুণী হেন বাণী ॥ আর যবেঁ বোল মোরে হেন পরিহাস। আবসি করিবোঁ তবেঁ তোহ্মার বিনাশ ॥ ৩ এহা গুআ পান তোহ্মে আপণেই খাহা। আপণাক চিহ্নিআঁ কাহ্নের থান যাহা ॥ এহা বুলী বড়ায়িক চড়ে মাইল রোষে। বাসলী শিরে বন্দী গাইল চণ্ডীদাসে ॥ (১১) বরাড়ীরাগঃ ॥ রূপকং ॥ তোহ্মার আন্তরে কাহ্নাঞিঁ করিলোঁ যতনে। আনেক প্রকারেঁ তাক বুলিলোঁ বচনে ॥ তাহাত মুগধী রাধা না পাতিল কানে। পাএ পেলাইল তোর সব গুআ পানে ॥ ১ কাহ্নাঞিঁ। চড়েঁ মাইলে রাধা মোরে দেখ বিদ্যমানে। এত আপমান সহে কাহার পরাণে ॥ ধ্রু আওর বুইল তোক যত বীরদাপ। তাক সোঁঅরিতেঁ মোর মনে বাঢ়ে তাপ ॥ এখোহি না রাখিলেক তোর মাঅ বাপ। কোপেঁ গরজিলী রাধা যেন কালসাপ ॥ ২ তীন ভুবনে নাহিঁ হেন আছিদরী। হাণে কুলে এখো নাহিঁ পাটাবুকী তিরী॥ তোহ্মার কারণে মোরে যত দিল দুখ। পালটি না দেখোঁ আর তাহার মুখ ॥ ৩ নিতি নিতি দধি বিকে মথুরাক জাএ। তাক দুখ দিতেঁ কিছ চিন্তহ উপাএ ॥ তবেঁসি মনের মোর দুখ পালাএ। বাসলী শিরেঁ বন্দী চণ্ডীদাস গাএ ॥ ৪ (১২) দেশাগরাগঃ ॥ রূপকং ॥ বড়ায়ি ল। কদলের তলে বসী যমুনার তীরে দান ছলেঁ রাখিবোঁ রাধারে। বড়ায়ি ল। লুড়িআঁ সব পসার খাইবোঁ দধি তাহার কাঢ়ী লৈবোঁ সাতেসরী হারে ॥ ১ বড়ায়ি ল। বাটেত সৃজিআঁ দান করি তার আপমান তোর মোর সাধিব মান ॥ ধ্রু বড়ায়ি ল। ধরিহ মোর যুগতী রাধার হআঁ সংহতী চলি জাইহ মথুরার হাটে। আহ্মাক রুষ্ট বচনে তোষিহ রাধার মনে আহ্মে যবেঁ রোধিব বাটে ॥ ২ ছাড়াইবেঁ তার ক্ষীর কাঞ্চুলী করিবোঁ চীর হাথ দিবোঁ তাহার তনে। তোর আনুমতী লআঁ বলে রাধাক ধরিআঁ লআঁ যাইবোঁ মাঝ বৃন্দাবনে ॥ ৩ পাছেত মদনবাণে হাণিআঁ তাক পরাণে রহিবোঁ ধরি মুনিবেশে। বসি তোহ্মে তার পাশে করিহলি ঊপহাসে গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে ॥ ৪