মেনোপজ?

মেনোপজ?

মেনোপজকে বাংলায় সম্ভবত রজঃনিবৃত্তি বলে। আমার রজঃনিবৃত্তি হচ্ছে হবে বলে একটা আশংকা করছিলাম গত তিন চার বছর। হতে হতে তিপ্পান্ন গড়ালো। গত আড়াই মাস আমি ঋতুর দেখা পাইনি, ফুলে ধরেই নিয়েছি আমার রজঃনিবৃত্তি ঘটেছে। অবশ্য রজঃনিবৃত্তি দুম করে ঘটে যায় না, বেজায় বাহানা করে বিদেয় নেওয়ার আগে। কান পাতলে এই যাচ্ছি, খানিকটা জিরোই, অত তাড়া কিসের এসবও শুনি। এমনও হতে পারে হঠাৎ আমাকে চমকে দিয়ে উনি এসে উপস্থিত হবেন। আমি অবশ্য ঋতুর মুখ আর দেখতে চাইনে বলে আবদার করিনি। দেখতে পেলে যত্নআত্তির অভাব রাখবো না,আর না পেলে প্রকৃতির বিচারকে বিনাতকে মেনে নেবো। আমার একটা ক্ষীণ অস্বস্তি ছিল রজঃনিবৃত্তির মন্দ দিকগুলো নিয়ে। হরমোন নিঃসৃত না হলে শরীর আর আগের মতো বিপদমুক্ত থাকবে না জানি। ভেবেছিলাম যৌন ইচ্ছেগুলোরও বোধহয় ছুট্টি হয়ে যাবে। ও মা, গত আড়াই মাস ধরে একটুও দেখলাম না কিছু বদলেছে। যেমন ছিল, তেমনই। আমি বলবো না আমার সেই পঁচিশে যেমন ছিল, এখনও তেমন। সেরকম পাগলপাগল না হলেও খুব কম নয়।

 এখন যৌনতা কী চমৎকার উপভোগ করছি আমি, আর মনে পড়ছে আমার মার কথা। মাকে দেখেছি সম্ভবত তার পঁয়ত্রিশ বা তারও কম বয়স থেকেই আলাদা বিছানায় থাকে। কাচ্চা বাচচা খানিকটা বড় হয়ে গেলে বাঙালি বাবা মারা আর এক বিছানায় ঘুমোন না। যখন ছোট ছিলাম, বাবা মাদের এক বিছানায় না ঘুমোনোটাকেই খুব স্বাভাবিক মনে হতো। আত্মীয় স্বজন, পাড়া পড়শি সব বাড়িতেই এই নিয়ম দেখেছি। ঘর আলাদা। বিছানা আলাদা। ছোটবেলায় বাবা মাদের বয়স খুব বেশি বলে মনে হতো। যখন বয়স তাদের তিরিশের ঘরে, তখনও মনে হতো তারা পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ। লজ্জা শরমের বালাই না থাকলেই ওই বয়সে যৌনতার বোধ থাকে। এরকম ভাবতাম। কিন্তু এখন ভাবছি ওই অল্প বয়সে আমার মা একা একা কী করে যৌনতাহীন জীবন কাটাতো! শুধু মা কেন, আর সব মেয়েরা! চার পাঁচটা বাচ্চা পর পর প্রসব করার পর মায়ের দায়িত্ব ওদের বড় করা। ওই নিয়েই পড়ে থাকা। নিজের জীবন বলে আর কিছু না থাকা। শরীরের সুখ আনন্দ বলে কিছু না থাকা। তখন তাদের পরিচয় আর প্রেমিকা নয়, স্ত্রী নয়, শুধুই মা। মাদের যৌনতা নৈব নৈব চ।

যৌনসুখ ভোগ করার অধিকার সবার। কিন্তু ছলে বলে কৌশলে কী করে বয়সের দোষ দিয়ে মেয়েদের বঞ্চিত রাখা হচ্ছে যৌন সুখ থেকে! কেবল যৌন সুখ নয়, হাজার রকম সুখ থেকে বঞ্চিত করা হয় মেয়েদের।

কলকাতায় দেখেছি কিছু যুবক পাড়াতুতো বৌদিদের বাড়িতে ঢোকে দুপুরবেলার দিকে। দাদারা তখন আপিসে। ওই যুবকগুলোকে দুপুর ঠাকুরপো বলে ডাকে কেউ কেউ। বেশ তো!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *