মাছের কাঁটা – ১০

১০

কোর্ট-ফেরত সবাই এসে বসেছেন বাসু-সাহেবের বাড়ির সামনের লনে। বৈশাখী সন্ধ্যা, ঘরের চেয়ে বাইরেই আরামপ্রদ। তার উপর চাঁদনি রাত। গোল হয়ে বসেছেন বাসু, রানি, কৌশিক, সুজাতা, সুপ্রিয়, সুবর্ণ আর এ. কে. রে। বৃদ্ধ ব্যারিস্টার এখনও বাড়ি যাননি। ব্যাপারটা সব জেনে না গেলে নাকি তাঁর নিদ্রায় ব্যাঘাত হবে। সুজাতা

বললে, এবার বলুন বাসু-মামু। কী করে কী হল?

কৌশিক বাধা দিয়ে বলল, আমি কিন্তু ইন্টারেস্টেড জানতে, আপনি কোন্ পর্যায়ে কতটা বুঝতে পেরেছিলেন, কোন্ কোন্ ব্লুয়ের সাহায্যে এবং কখন সবটা বুঝলেন।

এ. কে. রে বলেন, অর্থাৎ আমাদের কাছে এটা আড্ডা! তোমার কাছে ট্রেনিং ক্লাস।

রানি বললেন, তা তো হবেই। এ. কে. রে-র পতাকা তুলে নিয়েছিলেন পি. কে. বাসু—ভবিষ্যতে সেটাই তো বহন করবেন কে. মিত্ৰ।

কৌশিক বললে, ভবিষ্যৎ পড়ে মরুক। আপাতত আমি হচ্ছি পেরি মেসনের সাদে—পল ড্রেক। কিন্তু আর দেরি নয়। শুরু করুন আপনি

বিশু খাবারের ট্রে নিয়ে এসে পরিবেশন শুরু করল।

বাসু বললেন, শুরু আমি করব না, সুপ্রিয় বলে যাও তোমার অভিজ্ঞতা-

—আমি সুবর্ণকে বলে এসেছিলাম, সাতদিনের জন্য কলকাতা যাচ্ছি। কেন যাচ্ছি, তা ও জানত না। মিস্টার কাপাডিয়ার নির্দেশে আমি ব্যাপারটা ওর কাছেও গোপন করি। কলকাতায় এসে পার্ক হোটেলে উঠি। আমি আর জীবনবাবু। গুডফ্রাইডের আগের দিন এগারোই বাড়িটা বিক্রি হল। যদুপতি নগদ দু-লক্ষ টাকা আমাকে হোটেলে পৌঁছে দিয়েছিল, এগারোই সকালে। সেটা হোটেলের ভল্টে রেখে আমরা রেজিস্ট্রেশান অফিসে যাই

—হোটেলে আপনারা কত নম্বর ঘরে উঠেছিলেন?

—39 নম্বরে। ডবল বেড রুম। একসঙ্গেই ছিলাম। যাই হোক, রেজিস্ট্রেশান হয়ে গেলে জীবনবাবু যদুপতিকে বললেন, স্যার আমাদের মিষ্টিমুখ করিয়ে দেবেন না? যদুপতি ওকে আড়ালে ডেকে নিয়ে গেল। তারপর ফিরে এসে আমাকে বলল, আজ রাত্রে আপনাকে ডিনারে নিমন্ত্রণ করছি। মোকাম্বোতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। আমি রাজি হই। আমি আর যদুপতি রাত ন’টা পর্যন্ত মোকাম্বোতে ছিলাম। তারপর ফিরে আসি হোটেলে। রাত দশটায় জীবন ফিরে আসে। সারাদিনের ধকলে আর কলকাতার গরমে আমার ভীষণ মাথা ধরেছিল। বেয়ারাটাকে ডেকে আমি সারিডন আনতে দিচ্ছিলাম। জীবন বললে, আনাতে হবে না, তার কাছেই আছে। সে আমাকে একটা ট্যাবলেট দেয়। আমি খেয়ে বাতি নিভিয়ে শুয়ে পড়ি। তারপরের কথা আর কিছু জানি না আমি। যখন জ্ঞান হয়, দেখি, আমি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় কোনো অজানা জায়গায় পড়ে আছি। মাঝে মাঝে একটি অচেনা স্ত্রীলোককে দেখেছি। জ্ঞান হলেই সে আমাকে একটা পানীয় খেতে দিত। প্রচণ্ড তেষ্টায় আমি সেটা ঢঢক্ করে খেয়ে ফেলতাম। এখন হিসাবে করে দেখছি, এভাবে সাতদিন আমি ঘুমিয়েছি। তারপর গতকাল শেষ রাত্রে কৌশিকবাবু আমাকে উদ্ধার করেন আসানসোল থেকে। এ-ছাড়া আমি কিছুই জানি না।

বাসু-সাহেব ওর সূত্র তুলে নিয়ে বললেন, সমস্ত ব্যাপারটার মূল পরিকল্পনা হচ্ছে জীবন বিশ্বাসের। লোকটার সঙ্গে আন্ডার ওয়ার্ল্ড-এর দু-একজনের জানাশোনা ছিল। মাসকতক আগে থেকেই সে জানতে পারে যে, মোহনস্বরূপ কাপাডিয়া এভাবে বাড়িটা বিক্রি করবেন। তখন থেকেই সে সক্রিয় হয়। খোকন মিস্ ডি-সিল্ভার মাধ্যমে এই পরিকল্পনাটা ছকে। ডি. সিল্ভার এক ভাই রাঁচি উন্মাদাশ্রমে ছিল। সে তাকে নয় তারিখে ওখান থেকে খালাস করে এনে পার্ক হোটেলে তোলে এবং নয়-দশ তারিখে বারে বারে তাকে গাড়ি করে নিয়ে বার হয়। ওর ভাই ছিল জড়ভরত প্রকৃতির পাগল। তাই এতে তার কোনো অসুবিধা হয়নি। দশ তারিখে সে তাকে কলকাতার কোনো প্রাইভেট উন্মাদাগারে ভর্তি করে দিয়ে একাই ফিরে আসে। হোটেলের সবাই জানত ভাইটি হোটেলেই আছে। এগারোই রাত্রে বড়বাজার জৈনের গদিতে ডাকাতি করে খোকন এসে আশ্রয় নেয় ডি. সিলভার ঘরে। মধ্যরাত্রে সুপ্রিয় অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে ধরাধরি করে পাশের ঘরে আনা হয় এবং খোকন সুপ্রিয়র সিটে চলে যায়। বারো তারিখ সকালেই ডি. সিল্ভা একটা অ্যাম্বাসাডারে করে বর্ধমান চলে যায়। সঙ্গে যায় অজ্ঞান অবস্থায় আসল সুপ্রিয়, তার ভায়ের পরিচয়ে।

কৌশিক বলে, আমি ব্যাপারটা বুঝলাম না। সুপ্রিয়বাবু, আপনি কী জীবনবাবুকে বম্বে মেলে তিনখানা টিকিট কাটতে বলেননি।

—আদৌ না। আমার প্লেনে ফেরার কথা ছিল। টিকিটও কাটা ছিল।

—তাহলে?

বাসু-সাহেব বলেন, জীবন বিশ্বাসের পরিকল্পনাটা তুমি বুঝতে পারনি কৌশিক। তার প্ল্যান ছিল—বম্বে মেলে ওরা দু’জন, জীবন আর খোকন রওনা হবে। রেলওয়ে রেকর্ড-এ থাকবে—ক্যুপেতে ছিলেন মিস্টার অ্যান্ড মিসেস দাশগুপ্ত আর তার পাশের কম্পার্টমেন্টে যাচ্ছিলেন জীবন বিশ্বাস। গাড়ি বর্ধমানে পৌঁছলে মিস্ ডি. সিল্ভা তার তথাকথিত অসুস্থ ভাই, অর্থাৎ সুপ্রিয় দাশগুপ্তকে নিয়ে বিনা টিকিটে কামরায় উঠবে। সেই আসল সুপ্রিয় দাশগুপ্তকে শুইয়ে দেওয়া হবে ক্যুপের লোয়ার বার্থে। তারপর খোকন আর ডি. সিল্ভা বর্ধমানেই নেমে যাবে দু-লাখ টাকা সমেত। রাত ভোর হলে জীবন এ কামরায় এসে চিৎকার চেঁচামেচি জুড়ে দেবে। দেখা যাবে, সুপ্রিয় বিষ খেয়ে মারা গেছে এবং তাঁর দুটি স্যুটকেস নেই। জীবন ধরা-ছোঁওয়ার মধ্যে নেই। সে তার ম্যানেজারের নির্দেশে তিনখানা টিকিট কেটেছে। ম্যানেজার সুপ্রিয় কোথা থেকে একটা অসচ্চরিত্রের মেয়েছেলে জুটিয়ে এনেছিল তা সে কেমন করে জানবে? তার সন্দেহ হয়েছিল কিনা?—হ্যাঁ হয়েছিল। তাই ঘটনার অনেক আগে সে ক্রিমিনাল ব্যারিস্টার বাসু-সাহেবকে তার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল। বিশ্বাস না হয়, তাঁকে জিজ্ঞাসা করুন।

সুজাতা বলে, চমৎকার প্ল্যান!

কৌশিক বলে, দাঁড়াও, দাঁড়াও! তাহলে ঐ জৈন-সাহেবের রিভলভারটা ও কামরায় এল কেমন করে?

বাসু হেসে বলেন, সেটা জীবনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নয়। খোকনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ঐ ডি. সিল্ভার সঙ্গে যৌথভাবে। ওরা দু-জনে হচ্ছে বর্ন-ক্রিমিনাল। দু-লাখ টাকা তিনভাগ করার চেয়ে তারা দু-জনে সেটাকে দু-ভাগ করতে চাইল। যাকে বলে ডবল্-ক্রস। ব্যবস্থা করা হল—ট্রেন ছাড়ার আগে ওদের দলের একজন একটা লোডেড রিভলভার খোকনকে পৌঁছে দেবে। রুদ্ধদ্বার সি-ক্যুপেতে অতি অনায়াসে খোকন জীবনকে হত্যা করত। ট্রেন বর্ধমানে পৌঁছলে জীবনের মৃতদেহকেও ঐ ক্যুপেতে রেখে তারা সুযোগমতো বর্ধমানে বা আসানসোলে নেমে যেত। পরদিন জোড়াখুন আবিষ্কৃত হত ঐ ক্যুপেতে। কেউ জানতে পারত না–কে খুন করে টাকাটা নিয়ে ভেগেছে।

রানি বলেন, তাহলে জৈনকে কে খুন করেছিল?

—খুব সম্ভব খোকন নিজেই। সুকুমার বোস-এর এভিডেন্স থেকে তাই মনে হয়। আপনি কী বলেন? বাসু-সাহেব প্রশ্ন করেন এ. কে. রে-কে।

—আই বেগ টু ডিফার!—বললেন এ. কে. রে। একহারা চেহারা, ফর্সা রং আর বড় বড় জুলফি ছাড়া আর কোনো যুক্তি নেই।

—কিন্তু বিরুদ্ধ যুক্তিও কিছু নেই।—বললেন বাসু-সাহেব

—আছে। প্রকাণ্ড একটা বিরুদ্ধ যুক্তি আছে। তাই যদি হত, তাহলে জৈনের রিভালভারটা এগারোই রাত্রে খোকনের কাছে থাকারই সম্ভাবনা। সে-ক্ষেত্রে ট্রেনে অন্য কেউ তাকে ঐ রিভলভারটা পৌঁছে দিতে আসত না। এগারোই তারিখ থেকে তার পকেটে থাকত একটা রিভলভার, যার নম্বর 759362।

সুজাতা অবাক হয়ে বললে, নম্বরটা মুখস্থ আছে এখনও!

—বাঃ! কোর্টে স্বকর্ণে শুনলাম যে!

কৌশিক বললে, সে তো আমরাও শুনেছি। ভুলে মেরে দিয়েছি।

এ. কে. রে বললেন, তাহলে কোনদিন ‘পল-ড্রেক্ অব দ্য ইস্ট’ হতে পারবে না তুমি! কিন্তু একটা ব্যাপার এখনও পরিষ্কার হয়নি। সুপ্রিয়বাবু—তুমি কি এগারোই সকালে লেট-ল্যামেন্ডেড মিস্টার জৈনের বাড়িতে ফোন করেছিলে?

—না তো! ফোন করব কেন?

—ধর, ঐ হুন্ডির ব্যবস্থা পাকা করতে?

—সে কথা তো হয়েই ছিল তাঁর সঙ্গে। নেহাত তিনি রাজি না হলে আমি অন্য কারও দ্বারস্থ হতাম। কাপাডিয়া কোম্পানির ম্যানেজার হিসাবে আমি কলকাতার অনেক ধনী ব্যবসায়ীকে চিনি। আর কাউকে না পেলে যদুপতির কাছ থেকে হুন্ডি নিতাম।

—যদুপতি রাজি না হলে—

—অ্যাট লিস্ট দু-লাখ টাকা স্যুটকেশে নিয়ে বোম্বাই মেলে যেতাম না। হয় কোনো ব্যাঙ্ক ভল্টে রাখতাম—নেহাৎ না হয় প্লেনে নিয়ে যেতাম টাকাটা! কৌশিক বলে, এবার আপনি বলুন স্যার, কেমন করে আন্দাজ করলেন ব্যাপারটা।

বাসু-সাহেব বুঝিয়ে বলেন, আমার প্রথম সন্দেহ জাগে জীবন ঠিক যে মুহূর্তে প্রথমবার আমার কক্ষে ঢোকে। কিন্তু সেটা আমি বুঝিয়ে বলতে পারব না। সেটা একটা অনুভূতি। আমার সন্দেহ জাগে। জীবন যে সন্দেহজনক ব্যক্তি এ আশঙ্কা তোমাদের সকলেরই হয়েছিল। আমার খটকা লাগল মোহনস্বরূপ কাপাডিয়ার একটি টেলিগ্রামের একটি শব্দে। উনি লিখেছেন, ‘হিজ ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইজ বিয়ন্ড কোশ্চেন’ অর্থাৎ তার সততা আর কর্মদক্ষতা সন্দেহের অতীত। ঐ ‘কর্মদক্ষতা’ শব্দটায় খটকা লাগল আমার। মোহনস্বরূপ একজন কোটিপতি—তাঁর ম্যানেজারের ‘কর্মদক্ষতার’ বিষয়ে এতবড় সার্টিফিকেট তিনি কেন দিলেন? অমন দক্ষ ম্যানেজার বোম্বাই মেল-এ স্যুটকেসে করে পাচার করা ছাড়া আর কোনো রাস্তা খুঁজে পেল না! দু-লাখ টাকা! দ্বিতীয়ত এতবড় কোম্পানির ম্যানেজার খুনের মামলায় জড়িয়ে পড়ল অথচ বোম্বাই থেকে কোনো সাড়া-শব্দ নেই কেন? মালিক না হয় বিদেশে—কিন্তু আর সবাই তো আছে—

—কিন্তু ওরা দু-জন তো গোপনে সম্পত্তিটা বেচতে এসেছিল। আর কেউ হয়ত জানে না—

—মানলাম। কিন্তু স্বাভাবিক হতো কী? এক্ষেত্রে জীবন নিজেই ট্রাঙ্ককল করে হেড অফিসে জানাত, কোনো একটা কাজে মালিকের নির্দেশে কলকাতা এসে ওরা ভীষণ বিপদে পড়েছে!

—তা ঠিক।

—তৃতীয়ত, খুনের মামলায় যে লোকটা ফাঁসি যেতে বসেছ সে তার উকিলের মাধ্যমে বাবা-দাদা-স্ত্রী-কাউকে খবরটা জানাবে না। সাহায্য চাইবে না? চতুর্থত, স্ত্রীর আগমন আশঙ্কায় সে অমন শিউরে উঠল কেন? আর সবচেয়ে বড় কন্ট্রাডিকশান হচ্ছে সুপ্রিয় দাশগুপ্তের চরিত্র-চিত্রণ! পান্ডে সাহেবের আঁকা ছবির সঙ্গে মোহনস্বরূপের আঁকা ছবিখানার আমান-জমিন ফারাক! আমার মনে হল—দুটো লোক আলাদা। সেটা নিঃসন্দেহ হলাম যখন আলিপুরের হাজতে আসামি তার স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে অস্বীকার করল। তার আগেই অবশ্য আমার সন্দেহ হয়েছিল—ডি. সিল্ভার হেপাজতেই আছে আসল সুপ্রিয়। আসামি যদি সুপ্রিয় না হয় তাহলে কখন সে সুপ্রিয়ের চরিত্রে অভিনয় শুরু করেছে? নিঃসন্দেহ এগারোই দুপুরের পরে। কারণ দলিলে নিশ্চয় আসল সুপ্রিয় সই করেছে? সেটা সন্দেহাতীতরূপে দেখে নেবে যদুপতি। অথচ যদুপতি বলছে রাত ন’টা পর্যন্ত সে আসল সুপ্রিয়কে দেখেছে। যদুপতির মিথ্যাভাষণের কোনো যুক্তিপূর্ণ কারণ নেই। সে আসল সুপ্রিয়কে নিশ্চিত চেনে, যেহেতু রেজিস্ট্রেশান অফিসে তাকে শনাক্ত হতে দেখেছে। তাহলে এগারোই রাত নটার পর এবং বারোই বেলা দশটার আগে—

—কেন, বারোই বেলা দশটার আগে কেন?—প্রশ্ন করে সুজাতা।

—যেহেতু বারো তারিখ বেলা দশটায় কৌশিক পার্ক হোটেলে থেকে টেলিফোনে জানায় সে সুপ্রিয়কে দেখেছে, যে-সুপ্রিয়কে সে আদালতে আসামির কাঠগড়ায় দেখেছে। ফলে, ঐ রাত্রেই মানুষটার বদল হয়েছে। ঐ পার্ক হোটেল থেকেই। অথচ দেখা যাচ্ছে, ঐ বারো তারিখেই বেলা নয়টার সময় ওদের পাশের ঘর থেকে মিস্ ডি. সিল্ভা তার পাগল ভাইকে নিয়ে হোটেল ছেলে চলে যায়। বাই রোড–দিল্লি রোড ধরে। বাকিটা দুইয়ে দুইয়ে চার …

ঠিক সেই সময়েই একটা প্রকাণ্ড গাড়ি এসে থামল পোর্টিকোতে। নেমে এলেন একজন সুসজ্জিত যুবক। তাঁকে দেখে সুপ্রিয় উঠে দাঁড়ায়, হ্যালো! আপনি?

ভদ্রলোক গরুড়পক্ষীর মতে হাত দুটি জোড় করে বলেন, চ্ছমা মাংতে এসেছি। ঔর ছিপিয়ে থাকার জরুরত না আছে!

সুপ্রিয় বলে, আপনাদের সঙ্গে এঁর পরিচয় করিয়ে দিই। ইনি হচ্ছেন….

বাধা দিয়ে কৌশিক বলে, প্রয়োজন হবে না। ওঁর ভাষাতেই আমাদের মালুম হয়েছে! ভদ্রলোক একগাল হেসে বলেন, আমিও আপনাকে পচানতে পেরেছি সুকৌশলীদাদা! কৌশিক বলে, আপনার গাড়ির ডায়নামো ঠিক হয়ে গেছে?

—বিলকুল!

—আর সেই মাছের কাঁটাটা?

—না-পাত্তা!—তারপর হঠাৎ নাটকীয় ভঙ্গিতে কৌশিকের সামনে মাথাটা নিচু করে যোগ করেন, মাথা পাতিয়ে দিলাম সুকৌশলীদাদা! অগর চাহেন তো এক ঝাপড় মারুন! লেকিন শালা-বাহনচোৎ করবেন না!

—বলেই পান-জর্দায় লাল আধ-হাত জিভ বার করেন। দুটি হাত কানে ছুঁইয়ে যোগ করেন, সিয়ারাম! বিলকুল নজর হোয় নাই। লেডিসরা আছেন ইখানে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *