পালক ভাঙার প্রতিবাদে
আমি যেন সেই পাখি, স্বজন পীড়নে যারা
কালো পতাকার মতো হাহাকার করে ওঠে, ক-কা
আর্তনাদে ভরে দেয় ঘরবাড়ি, পালক ভাঙার
উপায়বিহীন প্রতিবাদে
আকাশ কাঁপিয়ে কাঁদে।
ছত্রখান হয়ে উড়ে উড়ে
ঘুরে ঘুরে পাখসাটে।
পিষ্ট প্রায় সগীর দশায়।
এমন রোদন ধ্বনি কেন আজ বেজে ওঠে?
এইতো সেদিনও
বোস্তামীর পুকুরের ঘোলা-ময়লা জলের কাছিম
হওয়ার সাধনা ছিলো, টকটকে লাল
মাংসের মণ্ডের মতো লোভ এসে ছিটকে পড়তো
থকথকে সিঁড়িতে সারাদিন।
আজ যেনো ভেঙে গেলো দারুণ খোলস, খুলে গেলো যেন
আমার কঠিন প্রাণ। রহস্যের ময়লা কালো জলে
অজস্র সফেদ ফিটকিরি ইতস্তত ছুঁয়ে দিয়ে কেউ
সহসা ধরিয়ে দিলো কম্পমান পানির পাতালে
ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেঙে যাওয়া নির্বোধের মুখচ্ছবিখানি।
এ মুখ আমার নয়, এ মুখ আমার নয়, বলে—
যতবার কেঁপে উঠি, দেখি,
আমার স্বজন হয়ে আমার স্বদেশ এসে
দাঁড়িয়েছে পাশে। নির্ভয়ে, আশ্বাসে
জিয়ল মাছের ভরা বিশাল ভাণ্ডের মতো নড়ে ওঠে বুক।
ব্যাকুল মুখের সারি ক্ষমার সুরভি নিয়ে আজ
হঠাৎ ফোটালো এক রক্তবর্ণ শতমুখী ফুল।
কাতারে কে ডাকে নাম ধরে? আদেশের গম্ভীর নিনাদে
আমার নামের ধ্বনি আমারই শরীর ঘিরে ঘিরে
ঝিঁঝির শব্দের মতো ঢুকে গেলো গ্রামের ভিতর।
মনে হলো, ডাক দিলে জড়ো হয়ে যাবে সব নদীর মানুষ
অসংখ্য নাওয়ের বাদাম মুহূর্তে গুটিয়ে ফেলে রেখে
জমা হয়ে যাবে এই চরের ওপর।
খেতের আড়াল থেকে কালো
মানুষের ধারা এসে বলে সরোষে আমাকে
কী ভাবে এগোবে তারা দুর্ভেদ্য নগরের তোরণে প্রথম।