জাতিস্মর
আমি যতবার আসি, মনে হয় একই মাতৃগর্ভ থেকে পুনঃ
রক্তে আবর্তিত হয়ে ফিরে আসি পুরনো মাটিতে।
ওঁয়া ওঁয়া শব্দে দুঃখময় আত্মার বিলাপ
জড়সড় করে দেয় কোন দীন দরিদ্র পিতাকে।
আর ক্লান্ত নির্ভার আরামে
মায়ের সজল চোখ মুদে আসে।
কখন, কিভাবে যেন বেড়ে উঠি
পূর্বজন্মের সেই নম্রস্রোতা নদীর কিনারে।
কে কোথায় জাতিস্মর?
সমস্ত প্রাণীর মধ্যে আমি কি কেবলই
স্মরণে রেখেছি স্পষ্ট কোন গাঁয়ে জন্মেছি কখন?
অথচ মানুষ
নিজের পাপের ভারে
শুনেছি জন্মায় নাকি পশুর উদরে—
বলে ত্রিপিটক।
কী প্রপঞ্চে ফিরে আসি, কী পাতকে
বারম্বার আমি
ভাষায়, মায়ের পেটে
পরিচিত, পরাজিত দেশে?
বাক্যের বিকার থেকে তুলে নিয়ে ভাষার সৌরভ
যদি দোষী হয়ে থাকি, সেই অপরাধে
আমার উৎপন্ন হউক পুনর্বার তীর্যক যোনিতে।
অন্তত তাহলে আমি জাতকের হরিণের মতো
ধর্মগণ্ডিকায় গ্রীবা রেখে
নির্ভাবন দেখে যাবো
রক্তের ফিনকিতে লাল হয়ে
ধুয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ নির্ভয়ে, নির্বাণে।