দীপুর অঙ্ক

দীপুর অঙ্ক

অঙ্কে দীপুর মাথা খুব ভালো বটে, কিন্তু অন্য বিষয়ে সে একেবারে ন্যাদোস। এবার বার্ষিক পরীক্ষায় সে ইংরিজিতে পেয়েছে বারো, বাংলায় আঠেরো, ইতিহাসে পনেরো এইরকম সব আর কী। মোট পাঁচ বিষয়ে ফেল। তবে অঙ্কে একশোতে একশো। সেই ক্লাস ওয়ান থেকে এই ক্লাস টেন অবধি অঙ্কের নম্বরে কোনো নড়চড় নেই, সেই একশোতে একশো। অনেক চেষ্টা করেও অঙ্কের স্যার কোনোদিন তার এক নম্বরও কাটতে পারেননি।

কথা হল পাঁচ বিষয়ে ফেল করে সে নতুন ক্লাসে ফি বছর ওঠে কী করে? আসলে স্কুলের হেডস্যার বলেন, দীপুর অঙ্কের মাথা যখন এত ভালো তখন সে তো আর গবেট নয়। অন্য বিষয়ে মন দিলে পাশ নম্বর পাবে। মন দেয় না এই যা।

তাই প্রতি বছর স্পেশাল কনসিডারেশনে তাকে প্রমোশন দেওয়া হয়। কিন্তু ক্লাস টেন—এ ওঠার পর সমস্যা দেখা দিল।

হেডস্যার তাকে ডেকে বললেন, দ্যাখ দীপু, এত দিন তোকে স্পেশাল কনসিডারেশনে প্রমোশন দিয়ে এসেছি বটে, কিন্তু এরপর তো তোকে বোর্ডের পরীক্ষায় বসতে হবে। তখন তোকে কেউ খাতির করবে না। কাজেই মন দিয়ে অন্য বিষয়গুলো পড়। টেস্টে এক বিষয়ে ফেল হলেও কিন্তু অ্যালাউ করা যাবে না। মনে থাকে যেন।

দীপু পড়ল অগাধ জলে। দুনিয়াতে অঙ্ক ছাড়া সে আর কিছুই বোঝে না। অন্য কিছু তার ভালোও লাগে না। তবে অঙ্কে তার মাথা এমনই খোলতাই যে স্কুলের অঙ্ক তো দূরস্থান বি এসসি এম এসসি ক্লাসের অঙ্ক বইও তার কাছে জলভাতের মতো লাগে। যেকোনো অঙ্ক— তা যে যত শক্তই হোক— দীপু দেখলেই অঙ্কটা কী চাইছে, কোন পদ্ধতিতে এগোবে এবং শেষে কোথায় পৌঁছোবে তা পরিষ্কার বুঝতে পারে। অঙ্কেরা যেন দীপুর কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্যই বসে আছে। কিন্তু অন্য বিষয়ের বইপত্র খুলে বসলেই যেন দীপুর গায়ে জ্বর আসে। ইংরিজি, বাংলা, ভূগোল, ইতিহাস বড়োই বিস্বাদ লাগে তার। বাংলা বই খুললেই যেন শত্রুপক্ষের সৈন্যরা ঢাল—তরোয়াল নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসে। ইংরিজি বই খুললেই যেন বইয়ের পাতা থেকে গোলাগুলি ছুটে আসতে থাকে। ইতিহাস খুললেই যেন একদল ডাকাত ‘রে রে’ করে ওঠে। ভূগোল বই খুললেই মনে হয় ম্যাপ আর অক্ষরগুলো তাকে নিয়ে হাসাহাসি আর ব্যঙ্গবিদ্রূপ করছে আর দুয়ো দিচ্ছে।

অথচ পাশ না করলেই নয়। তার গরিব বাপ সাত মাইল দূরের গঞ্জে একটা গুদামে সামান্য হিসেব রাখার চাকরি করে। বড়োই টানাটানির সংসার। দীপুর আরও দুটো বোন আর দুটো ভাই আছে। দীপু পাশ—টাশ করে চাকরি পাবে এই আশায় তার পরিবারটা বসে আছে। তার ওপর সকলের ভরসার একটাই কারণ যে সে অঙ্কের ভালো ছাত্র।

কিন্তু শুধু অঙ্ক জানলেই যে হবে না তা দীপুর মতো হাড়ে হাড়ে আর কে জানে? মাস্টার রাখার সাধ্য তার নেই, তাই সে মাস্টারমশাইদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ইংরিজি, বাংলা ইত্যাদিতে তালিম নেওয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু কাজ বিশেষ এগোলো না। বাংলার স্যার বঙ্কুবাবু একদিন তাকে বললেন, ওরে দীপু, তোর মাথা হল অঙ্কময়। অঙ্ক ছাড়া তোর যে আর কিছুই সয় না। রবীন্দ্রনাথের অত ভালো কবিতাটা মুখস্থ করতে দিলুম, আর তাতে কিনা তোর সর্দি ধরে গেল!

ইংরিজির স্যার নরেনবাবু বললেন, তোর মাথার ভিতরটায় অঙ্কের একেবারে জঙ্গল হয়ে আছে। ওই জঙ্গলে কি আর ইংরিজি সেঁধোতে পারে রে? খানিকটা অঙ্ক মুড়িয়ে কেটে তবে ঢোকার রাস্তা করতে হবে। কিন্তু সে তো হওয়ার নয়।

ইতিহাসের স্যার নন্দবাবু বা ভূগোলের স্যার পাঁচুবাবুও বিশেষ আশা দিতে পারলেন না। শুধু বলে দিলেন, মাথার অঙ্কের ভাবটা না কমালে অন্য সব বিষয়ের সেখানে জায়গা হচ্ছে না।

দীপু ভারি দমে গেল। এতকাল অঙ্কই ছিল তার বন্ধু। কিন্তু এখন মনে হতে লাগল অঙ্কের মতের এমন শত্রু তার আর কেউ নেই। রাগ করে দিন দশেক সে অঙ্কের বই ছুঁল না, একটাও অঙ্ক করল না। তাতে তার মাথা ধরল, আইঢাই হতে লাগল, খিদে কমে গেল, অনিদ্রা হতে লাগল। তবু সে দশ দিন অঙ্কহীন কাটিয়ে দিল। কিন্তু অঙ্ক ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে বিশেষ লাভ হল না, দশদিন বাদে যখন ফের অঙ্ক কষতে বসল তখন তার মাথা থেকে অবরুদ্ধ অঙ্কের স্রোত বাঁধভাঙা বন্যার মতো বেরিয়ে এল। ভারী আনন্দ হল তার, ভারী ভালো লাগতে লাগল। নাঃ, অঙ্ক ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করে লাভ নেই। সে মাথায় অঙ্ক নিয়েই জন্মেছে, একে মাথা থেকে তাড়াবে কী করে?

কিন্তু কথা হল, মাথার মধ্যে অঙ্ক গিজগিজ করছে বলে অন্য বিষয়গুলো ঢুকতেও চাইছে না। ইতিহাসের স্যার মৃগাঙ্কবাবুও বলছিলেন, বুঝলি দীপু, অঙ্ক হল একটা গুণ্ডা সাবজেক্ট, যেমন ষণ্ডা তেমনি রাগী জিনিস। ইতিহাস হল দুর্বল, ভীতু জিনিস। তোর মাথায় অঙ্কের দাপাদাপি দেখে ভয়ে ভীতু ইতিহাস ঢুকতেই চাইছে না।

ভূগোলের অন্য স্যার রমেশবাবু তাকে ভূগোল শেখানোর চেষ্টা করে অবশেষে একদিন ক্ষ্যামা দিয়ে বললেন, তোকে কথাটা বলি—বলি করেও এতদিন বলিনি। বুঝলি দীপু, অঙ্ক হল আসলে এক ধরনের ভূত। ও যার ঘাড়ে চাপে তার আর নিস্তার নেই। ওঝা—বদ্যি ডেকেও লাভ হয় না। আমার সোজা মামার কথাই ধর না, দিব্যি খেয়ে—দেয়ে ফুর্তি করে দিন কাটাচ্ছিলেন, হঠাৎ একদিন অঙ্কের বাই চাপল। চাপল তো চাপলই। নাওয়া—খাওয়া ভুলে গেলেন, কাছাকোছার ঠিক নেই, ধান শুনতে কান শোনেন। শেষে পাগলাগারদে দেওয়ার জোগাড়। শেষে অঙ্ক কষে কষেই জীবনটা শেষ হয়ে গেল।

ভূত হোক, গুণ্ডা হোক, অঙ্কের জন্যই যে তার বেশ ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে এটা বুঝতে পারছে দীপু, কিন্তু অঙ্কের হাত থেকে পরিত্রাণই বা কোথায়? ভেবে ভেবে সে রোগা হয়ে যেতে লাগলে।

কপালটাই খারাপ। টেস্ট পরীক্ষায় পাঁচ বিষয়ে ডাব্বা মারল সে, শুধু অঙ্কে কোনো নড়চড় হল না, সেই একশোতে একশো।

হেডস্যার ডেকে দুঃখ করে বললেন, এবারটা আর মাধ্যমিক দেওয়া হল না তোর। এক বছর ভালো করে পড়, এর পরের বার দিস।

চোখ ফেটে জল এল দীপুর। বাবা বলে রেখেছে টেস্টে অ্যালাউ হতে না পারলে জোতজমির কাজে লাগিয়ে দেবে। সেই ভালো, চাষবাস করতে করতে মাথা মোটা হয়ে যাবে তার। অঙ্কেও ভাটা পড়বে।

ইস্কুল থেকে বেরিয়ে দীপু নীলকুঠির নির্জন পোড়ো জমিতে একটা গাছজলায় এসে চুপচাপ বসে রইল। মনটা বড়োই খারাপ। তার লেখাপড়া তাহলে এখানেই শেষ!

শীতের বেলা পড়ে চারদিক অন্ধকার হয়ে আসছে। দীপুর তবু বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে হল না, বসে বসে নিজের অন্ধকার ভবিষ্যতের কথা ভাবতে লাগল।

এমন সময় কাছেপিঠে মানুষের গলা শুনতে পেল দীপু। চাষি—বাসি বা রাখাল ছেলেরাই হবে। প্রথমটায় অত খেয়াল করেনি। একটু বাদেই মনে হল কথাগুলো খুব কাছেই কারা যেন বলাবলি করছে। কিন্তু ভাষাটা যেন কেমনতরো, ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। দীপু চারপাশে তাকিয়ে কাউকে দেখতে পাচ্ছিল না। চারদিকে ঘর ঝোপঝাড়, তার ওপর শীতের বেলা ফুরিয়ে অন্ধকারও হয়ে এসেছে অনেকটা।

দীপু একটু অবাক হয়ে গলা খাঁকারি দিয়ে বলল, কে ওখানে?

সঙ্গে সঙ্গে কথা বন্ধ হয়ে গেল। দীপু জানে নীলকুঠিতে পুরোনো সব সাহেব ভূত আছে। সেই ভয়ে রাতবিরেতে এদিকে কেউ আসেন না। তারও একটু ভয়—ভয় করছিল। তবে মন খারাপ বলে ভয়টা তেমন বেশি হল না। সে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ল।

বাড়ি যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েও দীপু থমকে গেল।

তার সামনে পথ আটকে তিনজন লোক দাঁড়ানো। তিনজনের চেহারাই একরকম এবং অদ্ভুত। বেঁটে, পেটমোটা, মাথায় টাক। তিনজনেরই পরনে হেঁটো ধুতি আর ফতুয়ার মতো জামা, দেখলে মনে হয় সার্কাসের বামনবীর জোকার।

দীপু ভারি অবাক হয়ে তিনজনকে দেখছিল।

তিনজনের মাঝখানের জন একটু এগিয়ে এসে নিজের টাকে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, ওহে বাপু, আমরা একটু বিপাকে পড়েছি, সাহায্য করতে পারো?

দীপু ঢোঁক গিলে বলল, কীরকম সাহায্য?

লোকটা ফস করে একটা কাগজ আর পেনসিল বের করে তার হাতে দিয়ে বলল, দেখ তো বাপু, অঙ্কটা কষতে পারো কিনা।

দীপু অঙ্ক দেখলেই পাগল হয়। সে আর দ্বিরুক্তি না করে কাগজটা নিয়ে খসখস করে অঙ্কটা কষতে লাগল। মিনিট পাঁচেক বাদে কাগজটা ফেরত দিয়ে বলল, এই নিন, হয়ে গেছে।

লোকটা বাঁ—হাতে কাগজটা নিয়ে তাচ্ছিল্যের সঙ্গে একবার চেয়ে সঙ্গীদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলল, না হে বীজদত্ত, সাংখ্যদত্ত, ছোকরার এলেম আছে।

বাকি দু—জন একটু মুখ তাকাতাকি করল।

মাঝখানের জন দীপুর দিকে চেয়ে বলল, বুঝলে ছোকরা, জগতে অঙ্ক ছাড়া আর কিছুই নেই। অঙ্কময়ং জগৎ, দুনিয়াটা চলছেই তো অঙ্কের জোরে। গান বলো, কবিতা বলো, সাহিত্য বলো সবকিছুর পিছনেই দেখবে অঙ্ক ঠিক ঘাপটি মেরে আছে। এই যে ফুল ফোটে, জ্যোৎস্না ওঠে, মলয় পবন বয়ে যায়, একটু চেপে যদি ভেবে দেখ তাহলে দেখবে তার পিছনেও ওই অঙ্কেরই খেলা। তা শুনলুম তোমার নাকি অঙ্ক নিয়ে কীসব সমস্যা হচ্ছে। সত্যি নাকি?

দীপুর চোখে জল এল, সে ধরা গলায় গলল, আপনারা কি অন্তর্যামী?

লোকটা শহব্যস্তে বলে ওঠে আহা, চোখের জল ফেরার কী হল হে ছোকরা? তা বাপু, অন্তর্যামী আমরা বটে। আমার নাম হল ঘণক। আমি হলুম গে জ্যামিতি, ত্রিকোণোমিতি আর ঘণকের দেবতা। আমার নাম ঘণকদত্ত। আর ওই যে বাঁ—দিকেরটি উনি হচ্ছেন বীজগণিত আর কল্প অঙ্কের দেবতা। বীজদত্ত। আর ডানদিকেরটি সংখ্যাবিদ সাংখ্যদত্ত।

দীপু চোখ বড়ো বড়ো করে বলল, আপনারা দেবতা নাকি? কই, এরকম নাম তো শুনিনি!

লোকটা টাকে হাত বোলাতে বোলাতে বিজ্ঞের মতো হেসে বলে, তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর মধ্যে ক—জনের নাম জানো হে ছোকরা? যদি চেপে ধরি তাহলে তেত্রিশ জনের নামও কি বলতে পারবে?

দীপু ভয় খেয়ে বলল, আজ্ঞে না।

তাহলে!

দীপু আমতা আমতা করে বলে, আমি শুনেছিলুম লেখাপড়ার দেবতা হলেন মা সরস্বতী।

তা তো বটেই। কিন্তু লেখাপড়া তো আর চাট্টিখানি জিনিস নয়। বিশাল সমুদ্দুর। মা সরস্বতীর অধীনে এই আমরাই নানা শাখা—প্রশাখা আগলাই। তা ধরো কয়েক হাজার তো হবেই। কেউ ছন্দ সামলায় তো কেউ অলংকার, কেউ কাব্য সামলায় তো কেউ গদ্য। গদ্যেরও আবার কত ভাগ, প্রবন্ধ, গল্প, উপন্যাস। তারপর ধরো ইতিহাস, ভূগোলের পিছনেও মেলা দেবতাকে মেহনত দিতে হচ্ছে। বিশাল কর্মযজ্ঞ হে, বিশাল কর্মযজ্ঞ। তা ওসব কথা থাক, তোমার সমস্যাটা কী হচ্ছে বলো তো!

দীপু ম্লানমুখে বলল, অঙ্ক ছাড়া আর সব বিষয়েই যে আমি বছর বছর ফেল করি!

লোকটা সঙ্গীদের দিকে ফিরে বলল, ওহে সাংখ্যদত্ত, বীজদত্ত, কী বুঝছো?

সঙ্গী দু—জন মাথা নেড়ে গম্ভীর মুখে প্রায় একসঙ্গেই বলল, অসম্ভব!

ঘণক দীপুর দিকে ফিরে একগাল হেসে বলল, শুনলে তো! জগৎটাই অঙ্কময়। যে অঙ্ক জানে সে তো কেল্লা মেরেই দিয়েছে!

তাহলে আমি ফেল করি কেন?

ঘণক মাথা চুলকে বলে, কেন ফেল করো তার কারণটা খুব জটিল, বললেও তুমি বুঝবে না। শুধু এটুকু বলি, তোমার মাথাটা একটা ঘর। তুমি সেই ঘরের মধ্যে দরজা—জানালা এঁটে অঙ্ককে কয়েদ করে রেখেছো। কুনকে হাতি কাকে বলে জানো?

আজ্ঞে না।

কুনকে হাতি হল এক ধরনের পোষা হাতি, যারা জঙ্গলের বুনো হাতিকে ভুলিয়ে—ভালিয়ে নিয়ে আসে, তারপর হাতি মানুষের ফাঁদে ধরা পড়ে।

আজ্ঞে বুঝলাম।

কিছুই বোঝোনি। অঙ্ক হল তোমার কুনকে হাতি, তাকে আটক রাখলে তো চলবে না। তাকে ছেড়ে দাও। অঙ্কই গিয়ে ইংরিজি, বাংলা, ইতিহাস, ভূগোলকে ধরে আনবে।

দীপু অবাক হয়ে বলে, কী করে?

ওই যে বললুম, অঙ্কময়ং জগৎ, সব কিচুই মধ্যেই যে চোরা অঙ্ক রয়েছে সেটাই তুমি ধরতে পারোনি। ওই অঙ্ক দিয়েই সব কিছু বোঝার চেষ্টা করো, তাহলেই দেখবে কেল্লা ফতে।

দীপু হাঁ করে রইল।

ঘণক বলল, আমরা তোমাকে বর দিতে এসেছি। বর মানে জানো?

একটু একটু জানি।

ছাই জানো। বর মানে বরণ করা। যা পেতে হবে, যা পেতে চাও তার জন্য সব কষ্টকে বরণ করে নেওয়াই হচ্ছে বর লাভ। বুঝলে?

দীপু ভয় খেয়ে বলল, যে আজ্ঞে।

তা কষ্টটা কি করবে?

যে আজ্ঞে।

তথাস্তু। বলে তিন বেঁটে দেবতা হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে গেল।

দীপু চমকে উঠে বুঝতে পারল, সে গাছতলায় বসে ঘুমিয়ে পড়েছিল। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখেছে।

কিন্তু স্বপ্নটাকে খুব একটা অবিশ্বাস্য মনে হল না তার। অন্ধকার হয়ে এসেছে। দীপু উঠে বাড়ি ফিরে গেল।

পরের বছর টেস্ট পরীক্ষায় দীপুর নম্বর হল বাংলায় আশি, ইংরিজিতে বিরাশি, ভূগোলে নব্বই, ইতিহাসে পঁচাত্তর, অঙ্কে সেই একশোতে একশো।

না, দীপুর আর অঙ্কের ওপর অভিমান নেই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *