[ ১৭ ]
প্রায় ১৪ বৎসর পূর্ব্বে আমাদের স্কুলে একজন লক্ষ্ণৌ নিবাসী শিক্ষয়িত্রী ছিলেন, নাম আখতর জাঁহা। তাঁহার তিনটি কন্যাও এই স্কুলে পড়িত। একদিন তিনি একালের মেয়েদের নির্লজ্জতার বিষয় আলোচনা প্রসঙ্গে নিজের মেয়েদের বেহায়াপনার কথা বলিয়া দুঃখ প্রকাশ করিলেন। কথায় কথায় নিজের বধূ-জীবনের একটা গল্প বলিলেনঃ “এগারো বৎসর বয়সে তাঁহার বিবাহ হইয়াছিল। শ্বশুরবাড়ী গিয়া তাঁহাকে এক নির্জ্জন কক্ষে থাকিতে হইত। তাঁহার এক ছোট ননদ দিনে তিন চার বার আসিয়া তাঁহাকে প্রয়োজন মত বাথ-রুমে পৌঁছাইয়া দিত। একদিন কি কারণে সে অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত তাঁহার সংবাদ লয় নাই। এদিকে বেচারী প্রকৃতির তাড়নায় অধীরা হইয়া পড়িলেন। লক্ষ্ণৌ-এ মেয়েকে বড় বড় তামার পানদান যৌতুক দেওয়া হয়। তাঁহার মস্ত পানদানটা সেই কক্ষেই ছিল। তিনি পানদান খুলিয়া সুপারীর ডিবেটা বাহির করিয়া সুপারীগুলি একটা রুমালে ঢালিয়া ফেলিলেন। পরে তিনি সেই ডিবেটা যে জিনিষ দ্বারা পূর্ণ করিয়া খাটের নীচে রাখিলেন, তাহা লিখিতব্য নহে! সন্ধ্যার সময় তাঁহার পিত্রালয়ের চাকরাণী বিছানা বাড়িতে আসিলে তিনি তাহার গলা ধরিয়া কাঁদিয়া ডিবের দুর্দ্দশার কথা বলিলেন। সে তাঁহাকে সান্ত্বনা দিয়া বলিল, “থাক, তুমি কেঁদ না; আমি কালই ডিবেটা কালাই (ঞরহহরহম) করাইয়া আনিয়া দিব। সুপারী এখন রুমালের বাঁধা থাকুক।”