[ ১৬ ]
বেহার শরীফের এক বড়লোক দার্জ্জীলিং যাইতেছিলেন, তাঁহার সঙ্গে এক ডজন ‘মানব-বোঝা” (ঐঁসধহ-খঁমমধমব) অর্থাৎ মাসী পিসী প্রভৃতি ৭ জন মহিলা এবং ৬ হইতে ১৬ বৎসর বয়সের ৫জন বালিকা। তাঁহারা যথাক্রমে ট্রেণ ও ষ্টীমার বদল করিবার সময় সর্ব্বত্রই পাল্কীর ব্যবস্থা করিয়াছিলেন। মণিহারী ঘাট, সক্রিগলি ঘাট ইত্যাদিতে পাল্কী ছিল। বিবিদের পাল্কীতে পুরিয়া ষ্টীমারের ডেকে রাখা হইত। আবার ট্রেণে উঠিবার সময় তাঁহাদিগকে পাল্কী সহ মালগাড়ীতে দেওয়া হইত। কিন্তু ই· বি· রেলওয়ে লাইনে আর পাল্কী পাওয়া গেল না। তখন তাঁহার ট্রেণের রিজার্ভ করা সেকেণ্ড কাসের গাড়ীতে বসিতে বাধ্য হইলেন।
শিলিগুড়ি ষ্টেশনেও পাল্কী বেহারা পাওয়া গেল না। এত বড় বিপদ-বিবিরা দার্জ্জালিঙ্গের ট্রেণে উঠিবেন কি করিয়া? অতঃপর দুইটা চাদর চারিজন লোকে দুই দিকে ধরিল,-সেই চাদরের বেড়ার মধ্যে বিবিরা চলিলেন। হতভাগা পর্দ্দাধারী চাকরেরা ঠিক তাল রাখিয়া পার্ব্বত্য বন্ধুর পথে হাঁটিতে পারিতেছিল না। কখনও ডাইনের পর্দ্দা আগে যায়, বামের পর্দ্দা পিছনে থাকে; কখনও বামের পর্দ্দা অগ্রসর হয়, আর ডাইনের পর্দ্দা পশ্চাতে। বেচারী বিবিরা হাঁটিতে আরও অপটু-তাঁহার পর্দ্দা ছাড়িয়া কখনও আগে যান, কখনও পিছে রহিয়া যান! কাহারও জুতা খসিয়া রহিয়া গেল-কাহারও দোপাট্টা উড়িয়া গেল!
কি দিন