অবগুণ্ঠিতা – পরিচ্ছেদ ২০

২০.

বাবলুর কথা শুনে সুব্রত চিন্তিত হয়ে উঠল। যে উপায়ে তোক রাণুকে শত্রুর কবল থেকে উদ্ধার করতে হবে। কিন্তু তাড়াতাড়ি করলে কোন কাজই হবে না। ভেবেচিন্তে অগ্রসর হতে হবে। বাবলুর কথাগুলো ভেবে দেখবার মত। যদি সেই কথা অনুসারেই কাজ করতে হয় তবে বাবলুর নির্দিষ্ট পথ ধরেই অগ্রসর হতে হবে। বাবলুকে সঙ্গে নিয়ে গেলে হয়তো সহজেই সব জায়গাগুলো খুঁজে দেখতে পারবে। সুব্রত বাবলুর দিকে তাকিয়ে বললে, সেই ভাল বাবলু, চল তুমি আমার সঙ্গে। তুমি ওদের আড্ডার সব গলি-খুঁজি জানো।

বাবলু চটপট প্রস্তুত হয়ে নিল।

শিশিরের কপাল অনেকখানি কেটে গিয়েছিল। ডাঃ বোসের হাতে শিশিরের শুশ্রুষার ভার তুলে দিয়ে এবং অমিয়াদি ও ডাঃ বোসকে রাণুর সম্বন্ধে চিন্তা না করতে বলে সুব্রত বাবলুর হাত ধরে ঘর থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়ে গেল।

রাস্তার ওপরই সুব্রতর ডিমলার গাড়িখানা অপেক্ষা করছিল। বাবলুর হাত ধরে গাড়িতে উঠে বসে ড্রাইভারকে চিৎপুরের দিকে দ্রুত গাড়ি চালাতে বললে সুব্রত।

গাড়ি ছুটে চলল।

চিৎপুর রোডে অবস্থিত সেই বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামিয়ে ড্রাইভারকে সতর্ক করে সুব্রত বাবলুর হাত ধরে গাড়ি থেকে নামল। রাত্রি তখন বোধ করি প্রায় বারোটা। চিৎপুরের রাস্তাটা তখন একেবারে নির্জন হয়ে যায়নি। মানুষের চলাচল তখনও বেশ আছে। দুএকটা খালি। মোষের গাড়ি পিচের সড়কের ওপর দিয়ে ঘড়ঘড় শব্দ করতে করতে চলে গেল।

বাবলু সুব্রতর হাত ধরে এগুচ্ছিল। বাড়িটার কাছাকাছি এসে চাপা স্বরে বললে, দাদা, এ দরজা দিয়ে ঢুকবো না। ওদিককার সরু একটা গলির মধ্যে দিয়ে গেলে বাড়িতে ঢুকবার আরও একটা দরজা আছে। সেটা দিয়েই বাড়িতে ঢুকব।

বেশ তাই চল। আমি তো চিনি না, তুমি রাস্তাটা দেখিয়ে নিয়ে চল।

বাবলু চাপা গলায় আবার বললে, আমার সঙ্গে আসুন।

ফুটপাতের উপর দিয়ে বাড়িটার গা ঘেঁষে ঘেঁষে কিছুদূর এগিয়ে যেতেই হঠাৎ সংকীর্ণ সরু অন্ধকার গলিপথের মধ্যে বাবলু প্রবেশ করল। সুব্রত পিছু পিছু এগিয়ে চলল।

আলো-বাতাসহীন দুর্গন্ধময় দুটো বাড়ির মধ্যবর্তী সংকীর্ণ পথ।

সুব্রত জিজ্ঞাসা করল, আলো জ্বালব বাবলু?

না। আমার পিছনে পিছনে আসুন। এ পথ একমাত্র দলের লোক ছাড়া কেউ জানে না। নিকষ কালো অন্ধকারে যেন চোখের দৃষ্টি অন্ধ হয়ে যায়।

অতি কষ্টে অন্ধকারে ঠাহর করে করে বাবলুর পায়ের শব্দ অনুসরণ করে সুব্রত এগিয়ে চলে।

হঠাৎ একসময় চলতে চলতে বাবলু থেমে গেল, দাদা?

এই যে আমি!

একবার আলোটা জালুন তো!

সুব্রত পকেট থেকে টর্চ বের করে বোতাম টিপে আলো জ্বালাল।

সামনেই একটা জানালা। জানালার কপাট দুটো বন্ধ।

কতকালের কাঠের পুরাতন কপাট। মসীবর্ণ, জীর্ণ।

বাবলু উঁচু হয়ে জানালার বন্ধ কপাটের গায়ে হঠাৎ একটা ধাক্কা দিতেই কপাট দুটো ক্যাচ করে মৃদু একটা শব্দ করে খুলে গেল। জানালার গায়ে শিক বসান। মাঝখানের দুটো শিক নেই। বাকিগুলো আছে।

এই জানালা-পথে বাড়ির মধ্যে ঢুকতে হবে দাদা। দাঁড়ান, আগে আমি ভিতরে দেখে আসি, তারপর আপনি আসবেন।

বাবলু জানালার একটা শিক দুহাতে ধরে ঝুলে উঠে পড়ল। এবং পরমুহূর্তে জানালাপথে শিকের মধ্যবর্তী রাস্তা দিয়ে গলে অন্ধকার ঘরের মধ্যে ওপাশে অদৃশ্য হয়ে গেল।

সুব্রত হাতের টর্চ-বাতি নিভিয়ে নিঃশব্দে অন্ধকারে বাবলুর প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে রইল। কতকাল আগে কলকাতার এই শহরের উপরে এইসব বাড়ির তৈরি হয়েছিল কে জানে!

বড় বড় সব বাড়ি। বেশির ভাগই দোতলা-তেতলা। খালি পড়ে আছে। একতলাগুলো গুদামঘর হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

অন্ধকারে কয়েকটা মশা কানের কাছে ভন করছে। হঠাৎ পায়ের উপর দিয়ে প্রকাণ্ড একটা ইদুর সড়সড় করে চলে গেল।

সুব্রত শশব্যস্ত সরে দাঁড়াল একটু। অতি আধুনিক শহরের সঙ্গে এই সংকীর্ণ অন্ধকার গলিপথের যেন কোন সম্পর্কই নেই।

সুব্রতর মনের মধ্যে অনেক কথাই একসঙ্গে ঘুরপাক খেয়ে খেয়ে ফিরছিল। মাত্র চারদিনের মধ্যে ঘটনার সংঘাতে কোথায় ভেসে এসেছে।

মিঃ সরকারের মৃত্যু তদন্তের ব্যাপারে সব কাজই এখনও বাকি। সমস্ত ব্যাপারটা ভেবে দেখবারও এখনও পর্যন্ত সময় পায়নি। কিরীটাই বা কতদূর কী করল কে জানে?

আজ এই কদিনে যেসব ঘটনাগুলো ঘটে গেল, এগুলো কিরীটী জানতে পারলে হয়ত তদন্তের ব্যাপারে অনেকখানি আলোর সন্ধান দিতে পারত। তারপর এই মেয়েটি। দুঃখ ধান্ধার মধ্যে এই অল্প বয়সে কী টানাপোড়েনই বেচারীর চলেছে! আশ্চর্য স্বভাব। যে রাণু তাকে অনায়াসেই বিপদের মুখে ঠেলে দিতে এতটুকুও পশ্চাৎপদ হয়নি, তারই জন্য ও কতখানি ব্যাকুল হয়েই না এই বিপদের মধ্যে ছুটে এল। এতটুকু দ্বিধাবোধও করলে না।

হঠাৎ এমন সময় ও বাবলুর ডাকে চমকে উঠল।

দাদা!

উঁ? সুব্রত জবাব দিল।

দাদা, সমস্ত বাড়িটাই আমি ঘুরে দেখে এলাম। কিন্তু ওরা কেউ নেই। একমাত্র অবু আর বঙ্কা একটা ঘরের মধ্যে বসে বসে কথা বলছে। এখানে নিশ্চয়ই ওরা রাণুদিকে নিয়ে আসেনি।

তবে?

মিঞার ওখানে এখন যেতে হবে আমাদের। আমার মনে হয়, ওরা নিশ্চয়ই রাণুদিকে ধরে সেখানে নিয়ে গেছে।

বাবলু আবার জানালাপথে নীচে লাফিয়ে পড়ল, চলুন মিঞার ওখানে যাওয়া যাক।

সে কোথায়?

বড় রাস্তার ওপরেই, অল্প দূরে।

চল।

ওরা দুজনে আবার গলিপথ থেকে বের হয়ে বড় রাস্তার উপরে এসে পড়ল। বড় রাস্তার উপর দিয়ে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে আর একটা সরু গলির মধ্যে প্রবেশ করল।

এ গলিপথটা আগেকার চাইতে সামান্য একটু প্রশস্ত বটে, তবে এখানে আলোর কোন সংস্পর্শ নেই। অন্ধকার।

কিছুটা পথ এগিয়ে গিয়ে বাবলু একটা দোতলা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল।

দাদা, এই বাড়িতে মিঞা থাকে। আলো জ্বেলে দেখুন, সামনে একটা ছোট পাঁচিল।

সুব্রত বাবলুর কথামত টর্চবাতি জ্বেলে দেখলে, সামনেই প্রায় হাত আড়াই উঁচু একটা পুরাতন প্রাচীর। প্রাচীরের গায়েই একতলার ছাদ। ছাদের ওপরে একটা গঙ্গাজলের ট্যাঙ্ক দেখা যাচ্ছে।

আলোটা নিভিয়ে ফেলুন দাদা। ঐ পাঁচিলের ওপরে উঠে জলের ট্যাঙ্কটার ওপর দাঁড়ালেই দেখতে পাবেন বারান্দা। বারান্দাটায় লাফিয়ে পড়বেন। সেটা দোতলার বারান্দা। বারান্দা দিয়ে একটু এগোলেই দেখবেন নীচে নামবার কাঠের সিঁড়ি। সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে এসে আগে দরজাটা খুলে দিন।

সুব্রত নিমেষে প্রস্তুত হয়ে নিল মালকোচা এঁটে। তারপর অন্ধকারে বার দুই লাফিয়ে চেষ্টা করতেই তৃতীয়বারে ও পাঁচিল ধরে ফেলল। নিমেষে ও হাতের ওপর ব্যালেন্স করে পাঁচিলের ওপর উঠে বসল। পাঁচিলের ওপর থেকে ট্যাঙ্কের ওপর উঠতে বেশি বেগ পেতে হল না।

হ্যাঁ, ঠিক সামনেই সরু একটা ফালিমত বারান্দা দেখা যাচ্ছে বটে।

অতি সন্তর্পণে লাফিয়ে সুব্রত বারান্দায় গিয়ে পড়ল।

বারান্দায় কোন আলো নেই, অন্ধকার। একটা খালি ঘর, তার দরজা খোলা হাঁ-হাঁ করছে। সুব্রত কিছুক্ষণ কান পেতে শোনবার চেষ্টা করল। কিন্তু কোথাও কোন সাড়াশব্দ নেই। হঠাৎ যেন মনে হল অন্ধকারে কোথা থেকে একটা চাপা কান্নার শব্দ আসছে। সুব্রত থমকে দাঁড়াল, কে কাঁদে না! হ্যাঁ, তাই তো। কার কান্নার শব্দ? এমন সময় একটা চাপা গর্জন শোনা গেল, এই থাম হুঁড়ি!

সুব্রত চমকে উঠল। কিন্তু ঠিক ঠাহর করে এবং তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চারপাশ দেখেও বুঝতে পারল কোথা থেকে শব্দটা আসছে।

আর দেরি নয়। বাবলু একা গলিপথে নীচে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ছেলেমানুষ।

ও বারান্দা দিয়ে আর একটু এগিয়ে গেল। আকাশের বুকে তখন সরু এক ফালি চাঁদ উঠেছে।

চাঁদের ক্ষীণ আলোয় এই ভাঙা পুরাতন বাড়ির খানিকটা যেন ফ্যাকাসে করুণ দেখায়।

সেই মৃদু আলোয় সুব্রত দেখতে পেল, সামনেই একটা ভাঙা পুরাতন কাঠের সিঁড়ি। নীচে, একটা সংকীর্ণ উঠান।

উঠানটাও ক্ষীণ চালোকে অস্পষ্ট দেখা যায়।

সুব্রত আর দেরি না করে সিঁড়ি বেয়ে সন্তর্পণে নেমে এল। উঠানের ওপাশে একটা মাত্র ঘর। ঘরের দরজাটা খোলা। আলো হাতে ঘরের মধ্যে ঢুকতেই ও দেখলে, ঘরের মধ্যে একটা খিল আঁটা দরজা। আন্দাজেই ও বুঝতে পারল, এটাই ও-বাড়ি থেকে বাইরে বেরুবার রাস্তা।

সুব্রত খিলটা খুলে ফেলতেই দরজাটা ঠেলে বাবলু ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল। সুব্রত চাপা গলায় বাবলুকে বললে, কার যেন চাপা কান্না শুনতে পেলাম বাবলু।

বাবলু জবাব দিল চাপা গলায়, ঠিক, তাহলে তারা এখানেই রাণুদিকে নিয়ে এসেছে। এবারে আমার পিছনে পিছনে আসুন। বাবলু এগিয়ে চলল। উঠানটা পার হতেই আর একটা দরজা। এ দরজাটা ভেজানোই ছিল, ঠেলা দিতেই খুলে গেল। সামনেই একটা ঘর। ঘরের মাঝখানে একটা কাঠের টেবিলের ওপরে একটা ধূম্রমলিন হ্যারিকেনবাতি জ্বলছে।

সেই টেবিলের সামনে একটা টুলের ওপরে পিছন ফিরে বসে একটা লম্বা-চওড়া লোক আপন মনে বিড়ি ফুঁকছে।

লোকটার পরিধানে একটা লুঙ্গি, গায়ে একটা কোর্তা। মাথায় একটা মুসলমানী টুপি।

সুব্রত মুহূর্তে সমস্ত পরিস্থিতিটা মনে মনে একবার পর্যালোচনা করে নিল। সুব্রত তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে একবার চারিধারে পরীক্ষা করে নিল। আশেপাশে আর কোন দ্বিতীয় প্রাণী নজরে পড়ে না। লোকটা চোখ মেলে বসে থাকলেও সজাগ নয়। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় চকিতে লোকটাকে পশ্চাৎ থেকে আক্রমণ করে ঘায়েল করা।

মনে মনে তাই ও ঠিক করে ফেললে। লোকটাকে আক্রমণই করবে-ও।

বাবলু চাপা গলায় বলল, ওই মিঞা বসে আছে দাদা। আপনি ওকে যদি ধরতে পারেন, তবে সেই ফাঁকে আমি ঘরের ভিতর থেকে রাণুদিকে খুঁজে আনতে পারি।

সুব্রত মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানালো, তাই হবে।

সুব্রত চকিতে গিয়ে মিঞাকে পশ্চাৎ থেকে দুহাতে জাপটে ধরল সজোরে। অতর্কিতে সহসা এমনভাবে আক্রান্ত হয়ে লোকটা ভয়ানক চমকে গিয়েছিল এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেল। কিন্তু সে ক্ষণমাত্র। পরক্ষণেই লোকটা প্রবল এক ঝাপটা দিয়ে গায়ের সমগ্র শক্তি প্রয়োগ করে নিজেকে সুব্রতর দৃঢ় আলিঙ্গন থেকে মুক্ত করে নেওয়ার চেষ্টা করল। লোকটার গায়ে প্রচণ্ড শক্তি। বাবলু ততক্ষণে এক দৌড়ে সামনের ঘরের ভেজানো দরজাটা ঠেলে ঘরের মধ্যে গিয়ে প্রবেশ করল।

ছোট অপরিসর ঘরটা।

ঘরের এক কোণে একটা কাঠের বাক্সের ওপরে একটা ধূম্রমলিন হ্যারিকেনবাতি টিটি করে আলোর চাইতে বেশি ধূমোদগীরণ করছে। ঘরের মাঝখানে একটা দড়ির খাটিয়ার ওপর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রাণু পড়ে আছে। ঘরের ম্লান আলোকে বাবলু এসে রাণুর সামনে দাঁড়ালো। রাণু বাবলুকে দেখে উঠে বসতে চেষ্টা করল, কিন্তু পারল না। বাঁধা হাত পা নিয়ে আবার হেলে পড়ে গেল।

বাবলু চকিতে রাণুর ওপর ঝুঁকে পড়ে তাড়াতাড়ি রাণুর হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দিতে লাগল।

রাণু বাবলুর ব্যবহারে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিল। সে বিস্ময়-বিস্ফারিত চোখে বাবলুর দিকে চেয়ে দেখছিল।

বাঁধন খোলা হয়ে গেলে রাণু খাটিয়ার ওপর উঠে বসল।

বাবলু ডাকল, রাণুদি, শীঘ্র পালিয়ে চল!

রাণু খাটিয়ার ওপর থেকে নীচে নেমে দাঁড়াল।

ওদিকে ততক্ষণ সুব্রত লোকটাকে ঘায়েল করে তার বুকের ওপরে চেপে বসেছে। লোকটা সুব্রতকে তার নিজের শরীরের উপর থেকে ফেলে দেওয়ার জন্য প্রবল চেষ্টা করছে।

রাণুর হাত ধরে একপ্রকার টানতে টানতে বাবলু ওই ঘরে এসে প্রবেশ করল।

সুব্রত লোকটাকে কায়দা করে আনলেও নিজে তখন প্রবলভাবে হাঁপাচ্ছে। বাবলু রাণুর হাত ধরে থমকে যুদ্ধরত সুব্রতর দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে গেল। ঘরের চারপাশ একবার চকিতে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি বুলিয়ে দেখে নিল। সহসা ওর নজরে পড়ল ঘরের এক কোণে একটা লোহার ডাণ্ডা পড়ে। আছে। ছুটে গিয়ে বাবলু ডাণ্ডাটা হাতে তুলে নিল এবং ডাণ্ডাটা দিয়ে বসাল এক আঘাত। লোকটা একটা আর্তনাদ করে উঠল এবং দেখতে দেখতে মুষ্টি তার শিথিল হয়ে গেল।

লোকটা জ্ঞান হারাল।

সুব্রত উঠে দাঁড়াল এবং অদূরে দণ্ডায়মান বাবলুর মুখের দিকে তাকাল। অজস্র কৃতজ্ঞতায় সুব্রতর চোখের দৃষ্টি তখন অশ্রুসজল হয়ে উঠেছে। সুব্রত দুহাত বাড়িয়ে গভীর স্নেহে বাবলুকে বুকের ওপরে টেনে নিল। কৃতজ্ঞতায় তার কণ্ঠস্বরও বুঝি তখন রুদ্ধ হয়ে গেছে।

কিন্তু বাবলু বাধা দিল, দাদা, শীঘ্র এখান থেকে পালিয়ে চলুন! কেউ এসে পড়তে পারে!