২৯. হযরত ইউসুফ (আ) ঘটনা

হযরত ইউসুফ (আ) ঘটনা

‘স্মরণ কর, ইউসুফ তার পিতাকে বলেছিল, হে আমার পিতা! আমি এগারটি নক্ষত্র, সূর্য ও চন্দ্ৰকে দেখেছি।–দেখেছি তাদেরকে আমার প্রতি সিজদাবনত অবস্থায়। সে বলল, আমার পুত্ৰ! তোমার স্বপ্ন-বৃত্তান্ত তোমার ভাইদের নিকট বর্ণনা করো না; করলে তারা তোমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে। শয়তান তো মানুষের প্রকাশ্য শত্ৰু। এভাবে তোমার প্রতিপালক তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেবেন এবং তোমার প্রতি, ইয়াকুবের পরিবার-পরিজনের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ পূর্ণ করবেন, যেভাবে তিনি এর পূর্বে পূর্ণ করেছিলেন তোমার পিতৃ-পুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের প্রতি। তােমার প্রতিপালক সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (dNR 3 8-V)

ইতিপূর্বে আমরা উল্লেখ করেছি যে, হযরত ইয়াকুব (আ)-এর বারজন পুত্র সন্তান ছিলেন। তাদের নামও আমরা উল্লেখ করেছি। বনী ইসরাঈলের সকলেই তাঁর সাথে সম্পৃক্ত। এই বার ভাইয়ের মধ্যে গুণ-গরিমায় ইউসুফ (আঃ) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। উলামাদের এক দলের মতে, বার ভাইয়ের মধ্যে একমাত্র ইউসুফ (আঃ) ছিলেন নবী। অবশিষ্টদের মধ্যে কেউই নবী ছিলেন না। ইউসুফ (আঃ)-এর ঘটনায় তাঁর ভাইদের যে সব কর্মকাণ্ড ও উক্তি উদ্ধৃত হয়েছে তা থেকে এই মতের সমর্থন পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে কতিপয় আলিমের মতে, অন্য ভাইরাও নবী ছিলেন। নিম্নোক্ত আয়াত থেকে তারা দলীল গ্রহণ করেন। যথা : قُل امتا باللّهِ وَمَا أنزل عليئا وَمَا أنزل على إثر هيم وإشمّاعيل

বল, আমরা আল্লাহতে এবং আমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও তার বংশধরদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছিল তাতে ঈমান এনেছি। (७ ६ br8)

889

এই আলিমগণ মনে করেন যে, LL.I বা বংশধর বলতে ইয়াকুব (আ)-এর বাকি এগার পুত্রকে বুঝান হয়েছে। কিন্তু তাদের এই দলীল মোটেই শক্তিশালী নয়। কেননা LL.| শব্দ দ্বারা বনী ইসরাঈলের বংশকে বুঝানো হয়েছে এবং তাদের মধ্যে যারা নবী ছিলেন যাদের প্রতি আসমান থেকে ওহী এসেছে, তাদেরকেই বুঝানো হয়েছে।

ভ্রাতাদের মধ্যে হযরত ইউসুফ (আঃ)-ই যে কেবল নবী ছিলেন ইমাম আহমদ (র) বর্ণিত ইব্‌ন উমর (রা)-এর রেওয়ায়ত থেকেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন রাসূল (সা) বলেছেন :

اسحاق بن ابراهیم . ‘তিনি ছিলেন এক সম্মানিত পুরুষ যিনি আর এক সম্মানিত পুরুষের পুত্র। তিনিও আর এক সম্মানিত পুরুষের পুত্র, আবার তিনি আর এক সম্মানিত পুরুষের পুত্র-ইনি হলেন ইউসুফ (আ), যিনি ইয়াকুব নবীর পুত্র। আর তিনি ইসহাকের পুত্র এবং তিনি হযরত ইবরাহীমের পুত্র।’

ইমাম বুখারী (র) আবদুল ওয়ারিছের সূত্রে এককভাবে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইবরাহীম (আ)-এর কাহিনী আলোচনায় আমরা এ হাদীসের বিভিন্ন সূত্র উল্লেখ করেছি। এখানে তার পুনরুল্লেখ প্রয়োজন নেই। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই। মুফাসসিরিনে কিরাম ও আলিমগণ বলেন, ইউসুফ (আঃ) যখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক মাত্র, তখন একদা স্বপ্নে দেখেন যেন এগারটি

নক্ষত্র (<3র্থ ………. …) যার দ্বারা ইংগিত করা হয়েছে তাঁর এগার ভাইয়ের প্রতি এবং সূর্য ও চন্দ্র (24 1694.4|16) অর্থাৎ তার পিতা-মাতা তাঁকে সিজদা করছেন। স্বপ্ন দেখে তিনি শংকিত হন। ঘুম থেকে জেগে ওঠে। পিতার কাছে স্বপ্লটি বর্ণনা করেন। পিতা বুঝতে পারলেন যে, অচিরেই তিনি উচ্চমর্যাদায় আসীন হবেন, দুনিয়া ও আখিরাতের উচ্চ মর্যাদায় ভূষিত হবেন; আর তাঁর পিতা-মাতা এবং ভাইগণ তাঁর অনুগত হবেন। পিতা তাকে এ স্বপ্নের কথা গোপন রাখতে বলেন এবং তা ভাইদের কাছে বর্ণনা করতে নিষেধ করেন। যাতে তারা হিংসা না করে এবং ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে না পারে। ইয়াকুব (আ)-এর এই আশংকা আমাদের উপরের বক্তব্যকে সমর্থন করে। এ জন্যে কোন কোন বর্ণনায় আছে :

অর্থাৎ—’তোমরা তোমাদের প্রয়োজন পূরণে গোপনীয়তার সাহায্য গ্রহণ কর, কেননা

প্ৰত্যেক নিয়ামতপ্রাপ্ত ব্যক্তিই হিংসার শিকার হয়ে থাকে।’ আহলি কিতাবদের মতে, হযরত ইউসুফ (আ) স্বপ্নের বৃত্তান্ত পিতা ও ভাইদের সাক্ষাতে একত্রে ব্যক্ত করেছিলেন। কিন্তু তাদের

এ মত ভুল। এ146 14, 21, 410.14% (এভাবেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে

سمي মনোনীত করবেন।) অর্থাৎ যেভাবে তোমাকে এই তাৎপর্যবহ স্বপ্ন দেখান হয়েছে। যখন তুমি একে গোপন করে রাখবে তখন তোমার প্রতিপালক তোমাকে এর জন্যে মনোনীত করবেন।

* / a Stefts Rf85 রকম অনুগ্রহ ও রহমত তোমাকে বিশেষভাবে দান করবেন। (يجتبيلك ريك)

/ আর তোমাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিবেন)। অর্থাৎ কথার( ويعتملك من تأويل الأخادثتي

গৃঢ়তত্ত্ব ও স্বপ্নের ব্যাখ্যা বোঝবার শক্তি দান করবেন—যা অন্য লোকের পক্ষে বোঝা সম্ভব হবে

888  না। এ1:14, 24 25%46 (এবং তাঁর নিয়ামত তােমার উপর পূৰ্ণ করে দিবেন)। অর্থাৎ ওহীরূপ নিয়ামত তােমাকে দান করবেন। এ.৫%: 4.J J 14% (আর ইয়াকুবের পরিবারবর্গের উপর) অর্থাৎ তোমার ওসীলায় ইয়াকুবের পরিবারবর্গ দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণপ্ৰাপ্ত হবে।

كما أكملها على أبويك من قبل إبراهيم وإشكاقَ . (যেমনিভাবে এর পূর্বে তোমার পিতৃ-পুরুষ ও ইবরাহীম ও ইসহাকের উপর তা পূর্ণ করেছিলেন) অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে নিয়ামতে পূৰ্ণ করবেন ও নবুওত দান করবেন। যেভাবে তা দান করেছেন তোমার, পিতৃ ইয়াকুবকে, পিতামহ ইসহাককে ও প্ৰ-পিতামহ ইবরাহীম খলীলুল্লাহকে {{5:44 445%্যু (নিম্মুম্বইতৃেয্যের প্রতিপালক সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়)। অন্যত্র আল্লাহ বলেছেন,4%{L43 51444 434 2121 4f1f (আল্লাহই ভাল জানেন যে, রিসালাতের দায়িত্ব তিনি কাকে অর্পণ করবেন।)

এ কারণে রসূলুল্লাহ (সা)-কে যখন জিজ্ঞেস করা হয় কোন ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা সম্মানিত? উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ইউসুফ—যিনি নিজে আল্লাহর নবী, আর এক আল্লাহর নবীর পুত্র। তিনিও আল্লাহর নবীর পুত্র এবং তিনি আল্লাহর খলীলের পুত্র। ইব্‌ন জারীর ও ইব্‌ন আবী হাতিম (র) তাদের তাফসীরে এবং আবু ইয়ালা ও বাযযার তাদের মুসনাদে জাবির (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট একবার এক ইহুদী আগমন করে-তাকে বুসতানাতুল ইহুদী বলে অভিহিত করা হতো। সে বলল, হে মুহাম্মদ! সেই নক্ষত্রগুলোর নাম কি, যেগুলোকে ইউসুফ (আঃ) সিজদাবনত দেখেছিলেন? রসূলুল্লাহ (সা) কোন প্রকার উত্তর না দিয়ে নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণ পর জিবরাঈল (আ) ঐ নামগুলোসহ অবতরণ করেন। রসূলুল্লাহ (সা) তখন লোকটিকে ডেকে আনেন ও জিজ্ঞেস করেন। আমি যদি ঐ নামগুলো তোমাকে বলতে পারি তাহলে কি তুমি ঈমান আনবে? সে বলল, হ্যা। রসূলুল্লাহ (সা) বললেন, এগুলোর নাম হল জিরয়ান, তারিক, দিয়াল, যুল কান্তিফান, কাবিস, উছাব, উমরদান, ফায়ালাক, মুসবিহ, দারূহ, যুল-ফারা’, দিয়া ও নূর। ইহুদী লোকটি বলল, আল্লাহর কসম, এগুলোই সেই নক্ষত্রসমূহের নাম। এ বর্ণনায় একজন রাবী হাকাম ইব্‌ন যুহায়রকে মুহাদিসগণ যঈফ বলে অভিহিত করেছেন।

আবু ইয়ালার বর্ণনায় আছে যে, ইউসুফ (আঃ) যখন তাঁর স্বপ্নের কথা পিতাকে শোনান তখন পিতা বলেছিলেন, ‘এ বিষয়টি ব্ৰিক্ষিপ্ত, আল্লাহ একে সমন্বিত করে বাস্তবে রূপ দান করবেন।’ রাবী বলেন, সূৰ্য বলতে এখানে তাঁর পিতাকে এবং চন্দ্র বলতে তার মাতাকে বুঝানো

ইউসুফ এবং তার ভাইদের ঘটনায় জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। স্মরণ কর, তারা বলেছিল, ইউসুফ ও তার ভাই আমাদের পিতার নিকট আমাদের অপেক্ষা অধিক প্রিয়। অথচ আমরা একটি সুসংহত দল; আমাদের পিতা তো স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই আছেন। ইউসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে কোন স্থানে ফেলে আস। ফলে তোমাদের পিতার দৃষ্টি শুধু তোমাদের প্রতিই নিবিষ্ট থাকবে। এরপর তোমরা ভাল লোক হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে একজন বলল, ইউসুফকে হত্যা করো না এবং তোমরা যদি কিছু করতেই চাও তাকে কোন গভীর কূপে নিক্ষেপ কর। যাত্রীদলের কেউ তাকে তুলে নিয়ে যাবে। (১২ : ৭-১০)

এ কাহিনীতে যেসব নির্দশন, হিকমত, ইশারা-ইংগিত, উপদেশ ও স্পষ্ট দলিল-প্রমাণ রয়েছে আল্লাহ তা অবহিত করেছেন। এরপর ইউসুফ ও তাঁর সহোদর ভাই বিন-য়ামীনের প্রতি পিতার স্নেহ-মমতার ব্যাপারে অন্য ভাইদের হিংসার কথা উল্লেখ করেছেন। এ হিংসার কারণ ছিল তারা একটি সংহত দল হওয়া সত্ত্বেও পিতা ইউসুফ ও বিন-য়ামীনকে অধিক ভালবাসেন। তাদের দাবি এই যে, আমরা একটি সংহত দল হিসাবে ঐ দু’জনের চেয়ে আমরাই অধিক

a is ( s. 14’s &

ভালবাসা পাওয়ার হকদার। ৫, j……….. … …। (আমাদের পিতা স্পষ্ট বিভ্রান্তিতে রয়েছেন)। তিনি আমাদের থেকে ঐ দু’জনকে বেশি ভালবাসেন। অতঃপর তারা পরামর্শ করল, ইউসুফকে হত্যা করবে নাকি দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে, যেখান থেকে আর কোন দিন সে ফিরে আসতে পারবে না। এতে পিতার পূর্ণ স্নেহ-মমতা কেবল তাদের প্রতিই নিবদ্ধ থাকবে। অবশ্য পরবর্তীতে তারা তওবা করে নেয়ারও গোপন ইচ্ছা পোষণ করেছিল। এই সিদ্ধান্তের উপর যখন তারা ঐক্যবদ্ধ হল তখন (:47, 31 66) তাদের মধ্যে একজন বলল, মুজাহিদের মতে সেই ব্যক্তির নাম শামউন; সুদীর মতে য়াহ্য এবং কাতাদা ও ইব্‌ন ইসহাকের মতে রাবী’ল-যে ছিল তাদের মধ্যে বয়সে বড়’।

لا تَقْتُلُوا يُؤشف والقوة فى غيابي الجيب يلتقطها بعض الشيارة. (ইউসুফকে হত্যা কর না। বরং কোন গভীর কূপে নিক্ষেপ কর। হয়ত কোন পথিক তাকে

ረላ 2 4

উঠিয়ে নিয়ে যাবে) ৩৫%U• ৬্য (যদি তােমরা কিছু করতেই চাও) অর্থাৎ তােমরা যা বলছি তা যদি একান্তই করতে চাও তবে আমার দেয়া প্ৰস্তাব গ্ৰহণ করা। তাকে হত্যা করা বা দূরে ফেলে আসার চাইতে এটা করাই উত্তম। ফলে তারা সবাই এ প্রস্তাবে একমত হয়।

অতঃপর তারা বলল, ‘হে আমাদের পিতা! ইউসুফের ব্যাপারে তুমি আমাদেরকে বিশ্বাস করছ না কেন? যদিও আমরা তার শুভাকাঙ্ক্ষী? আগামীকাল তুমি তাকে আমাদের সঙ্গে প্রেরণ কর, সে ফল-মূল খাবে ও খেলাধুলা করবে। আমরা তার রক্ষণাবেক্ষণ করব। সে বলল, এটা আমাকে কষ্ট দিবে যে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে এবং আমি আশংকা করি, তোমরা তার

88V

প্রতি অমনোযোগী হলে তাকে নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলবে। তারা বলল, আমরা একটি সংহত দল হওয়া সত্ত্বেও যদি নেকড়ে বাঘ তাকে খেয়ে ফেলে, তবে তো আমরা ক্ষতিগ্ৰস্তই হব। (SSR 3 SS-S8)

পুত্ররা পিতার কাছে আবদার করল যে, তিনি যেন তাদের সাথে ভাই ইউসুফকে যেতে দেন। তাদের উদ্দেশ্য জানাল যে, সে তাদের সাথে পশু চরাবে, খেলাধুলা ও আনন্দ-ফুর্তি করবে। তারা অন্তরে এমন কথা গোপন করে রাখল, যে বিষয়ে আল্লাহ সম্যক অবগত ছিলেন। বৃদ্ধ পিতা তাদেরকে আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তর দিলেন, হে পুত্ৰগণ! আমার কাছ থেকে সামান্য সময়ের জন্যেও তার বিচ্ছিন্ন হওয়া আমাকে বড়ই পীড়া দেয়। এছাড়া আমার আরও আশংকা হয় যে, তোমরা খেলাধুলায় মত্ত হয়ে পড়লে সেই সুযোগে নেকড়ে বাঘ এসে তাকে খেয়ে যাবে। আর তোমরা তা প্ৰতিহত করতে পারবে না অসতর্ক থাকার কারণে এবং সেও পারবে না।

অল্প বয়স্ক হওয়ার কারণে।

く、ル (% % é, … 2・イ/パ* %:.(,・仏4 قالوا لبنان اكله الذنب ونحن عصبة انا إذا لخاسرؤن . (তারা বলল, যদি নেকড়ে বাঘে তাকে খেয়ে ফেলে, অথচ আমরা একটা সংহত দল, তাহলে তো আমরা বড়ই ক্ষতিগ্ৰস্ত হব।) অর্থাৎ বাঘ যদি তাঁর উপর আক্রমণ করে ও আমাদের মাঝ থেকে নিয়ে খেয়ে ফেলে কিংবা আমাদের অসতর্ক থাকার কারণে এরূপ ঘটনা ঘটে যায়, অথচ আমরা একটি সংহত দল তথায় বিদ্যমান, তা হলে তা আমরা অক্ষম ও দুর্ভাগা বলে পরিগণিত হব।

আহলি কিতাবদের মতে, হযরত ইয়াকুব (আ) পুত্র ইউসুফকে তার ভাইদের পেছনেপেছনে প্রেরণ করেন। কিন্তু ইউসুফ পথ হারিয়ে ফেলেন। পরে অন্য এক ব্যক্তি তাকে তার ভাইদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয়। কিন্তু এটি তাদের একটি ভ্রান্তি বিশেষ। কেননা, ইয়াকুব (আ) ইউসুফকে এতই বেশি ভালবাসতেন যে, তিনি তাঁকে তাদের সাথে পাঠাতেই চাচ্ছিলেন না, সুতরাং তিনি তাকে একা পাঠাবেন কি করে?

অতঃপর ওরা যখন তাকে নিয়ে গেল এবং তাকে গভীর কূপে নিক্ষেপ করতে একমত হল, এমতাবস্থায় আমি তাকে জানিয়ে দিলাম, তুমি ওদেরকে ওদের এই কর্মের কথা অবশ্যই বলে দিবে যখন ওরা তোমাকে চিনবে না। ওরা রাতে কান্দতে কান্দতে পিতার নিকট আসল। তারা

বলল, হে আমাদের পিতা! আমরা দৌড়ে প্রতিযোগিতা করছিলাম এবং ইউসুফকে আমাদের

88 Գ

মালপত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম, অতঃপর নেকড়ে বাঘ তাকে খেয়ে ফেলেছে; কিন্তু তুমি তো আমাদেরকে বিশ্বাস করবে না, যদিও আমরা সত্যবাদী। ওরা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লেপন করে এনেছিল। সে বলল, না, তোমাদের মন তোমাদের জন্যে একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়, তোমরা যা বলছ সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহই আমার সাহায্যস্থল। (সূরা ইউসুফ : ১৫-১৮)

ইউসুফের ভাইয়েরা পিতাকে পীড়াপীড়ি করতে থাকলে তিনি ইউসুফ (আঃ)-কে তাদের সাথে পাঠিয়ে দেন। পিতার দৃষ্টির আড়াল হয়ে গেলে তারা ইউসুফকে মুখে গালাগালি করতে থাকে এবং হাতের দ্বারা লাঞ্ছনা-গঞ্জনা দিতে থাকে। অবশেষে এক গভীর কূপে নিক্ষেপ করার ব্যাপারে একমত হয় এবং কুপের মুখে যে পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে পানি তোলা হয় সেই পাথরের ওপর দাঁড়িয়ে তারা ইউসুফ (আঃ)-কে কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করে দেয়। তখন আল্লাহ ওহীর মাধ্যমে তাকে জানিয়ে দেয় যে, তোমাকে এ দুরবস্থা থেকে অবশ্যই উদ্ধার করা হবে এবং তাদের এই দুষ্কর্মের কথা এমন এক অবস্থায় তাদেরকে তুমি জানাবার সুযোগ পাবে, যখন তুমি হবে ক্ষমতাশালী আর তারা হবে তোমার মুখাপেক্ষী এবং ভীত-সন্ত্রস্ত। কিন্তু তারা টেরও 2ाद भी।

মুজাহিদ ও কাতাদা (র)-এর মতে, 6, 324…….. (তারা জানবে না) অর্থাৎ আল্লাহ ইউসুফ (আ)-কে ওহীর মাধ্যমে এ বিষয়ে যা বলবেন তা তার ভাইয়েরা জানবে না। ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর মতে,;24.448 অর্থ হল, তুমি তাদেরকে এমন এক সময়ে তাদের এ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানাবে যখন তারা তোমাকে চিনবে না। ইব্‌ন জারীর (র) এটা বৰ্ণনা করেছেন। ইউসুফ (আঃ)-কে কূপে নিক্ষেপ করে তারা তার জামায় কিছু রক্ত মেখে রাত্রিকালে কাঁদতে কাঁদতে পিতার কাছে ফিরে এল। এ জন্যে কোন কোন প্রাচীন বিজ্ঞজন বলেছেন, অত্যাচারের অভিযোগকারীর কান্নাকাটিতে প্ৰতারিত হয়ে না। কেননা, বহু অত্যাচারীও এমন আছে যারা প্রতারণাপূর্ণ কান্নাকাটি করে থাকে। এ প্রসঙ্গে তারা ইউসুফ (আ)-এর ভাইদের কান্নাকাটির কথা উল্লেখ করেন। ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা রাত্রিকালে অন্ধকারের মধ্যে কাঁদতে কাঁদতে পিতার কাছে হাযির হয়। অন্ধকার রাত্রে আসার উদ্দেশ্য ছিল তাদের বিশ্বাস ঘাতকতাকে আড়ালে রেখে প্রতারণার চেষ্টা করা, ওজর প্রকাশ করা নয়।

قَالُوا يُة أباك إِنَّا ذَهَبْنَا تُشكيتُ وَتُوكُنَّا يُؤشف عشدّ مشاجئا. (তারা আরজ করল, হে পিতা! আমরা দৌড়ে প্রতিযোগিতা করছিলাম এবং ইউসুফকে আমাদের মালামাল অর্থাৎ কাপড়-চােপড়ের কাছে রেখে গিয়েছিলাম) এ4%A11 41464 (তখন তাকে নেকড়ে বাঘে খেয়ে ফেলে) অর্থাৎ দৌড় প্রতিযোগিত্যুরু সময় যুগুন আমুর তার থেকে দূরে চলে যাই তখন তাকে বাঘে খেয়ে ফেলে। এওy… … :16 434.এ.31 و ما (কিন্তু আপনি তাে আমাদেরকে বিশ্বাস করবেন না। যদিও আমরা সত্য কথাই বলছি)। অর্থাৎ ইউসুফ (আ)-কে বাঘে খেয়েছে আমাদের এ সংবাদ আপনি বিশ্বাস করবেন না। আপনার কাছে ইতিপূর্বে আমরা কোন বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে অভিযুক্ত হইনি, তবে এ ব্যাপারে আমাদেরকে কিভাবে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে অভিযুক্ত করবেন। কারণ বাঘে খাওয়ার ব্যাপারে

আপনি আশংকা প্ৰকাশ করেছিলেন। আর আমরা তাকে নিজেদের দায়িত্বে গ্রহণ করেছিলাম

88Եr

যে, আমরা থাকতে তাকে বাঘে খেতে পারবে না। কেননা, আমরা সংখ্যায় অধিক। সুতরাং আমরা সত্যবাদী হিসেবে আপনার কাছে প্রমাণিত হতে পারিনি। সে কারণে আমাদেরকে সত্যবাদী না ভাবাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আসল ঘটনা তো এরূপই। — * 1. I gue, এ০১২ (১ (তারা ইউসুফের জামায় মিথ্যা রক্ত মাখিয়ে আসল) তারা একটি বকরীর বাচ্চা যবোহ করে জামায় রক্ত মাখিয়ে আনে। যাতে এই ধারণা দিতে পারে যে, তাকে বাঘে খেয়ে ফেলেছে। তারা রক্ত মাখিয়েছিল বটে। কিন্তু জামা ছিড়তে ভুলে গিয়েছিল। বস্তুত মিথ্যার সমস্যাই হল ভুলে যাওয়া (৩৬… …।( ১২|| —+i) তাদের উপর সন্দেহের লক্ষণাদি যখন স্পষ্ট হয়ে উঠল, তখন তাদের এ কাজ পিতাকে আর প্রতারিত করতে পারেনি। কেননা, ইউসুফের মধ্যে শিশুকালেই যেসব মহৎ গুণাবলী ও নবীসুলভ লক্ষণাদি ফুটে উঠেছিল এবং যার দরুন পিতা তাকে অন্যদের তুলনায় অধিক ভালবাসতেন, এ কারণে ইউসুফের প্রতি অন্য ভাইদের হিংসা ও শক্রতার ব্যাপারে তিনি অবহিত ছিলেন। পিতার কাছ থেকে ফুসলিয়ে নিয়ে তাঁর চােখের আড়ালে নিয়ে তারা ইউসুফকে গায়েব করে দেয় এবং আসল ঘটনা ঢাকা দেওয়ার জন্য তারা কান্নার ভান করে পিতার কাছে আসলে পিতা বললেন :

বরং তোমরা নিজেরাই একটা বিষয় সাজিয়ে নিয়েছ। সুতরাং আমি পূৰ্ণ ধৈর্য ধারণ করছি। তোমরা যা কিছু বলছি সে বিষয়ে আল্লাহর কাছেই আমি সাহায্য প্রার্থীনা করছি।

আহলি কিতাবদের মতে, রুবীল পরামর্শ দিয়েছিল যে, ইউসুফকে কৃপের মধ্যে রাখা হোক। তার উদ্দেশ্য ছিল যে, অন্য ভাইদের অজান্তে তাকে পিতার কাছে ফিরিয়ে দিবে। কিন্তু ভাইয়েরা রুবীলকে ফাকি দিয়ে কাফেলার নিকট তাকে বিক্রি করে দেয়। দিনের শেষে যখন রুবীল ইউসুফ (আঃ)-কে উঠিয়ে আনতে যান, তখন তাকে কুপের মধ্যে পেলেন না। তখন তিনি চিৎকার করে উঠেন এবং নিজের জামা ছিড়ে ফেলেন। আর অন্য ভাইয়েরা একটা বকরী যবোহ করে ইউসুফ (আঃ)-এর জামায় রক্ত মাখিয়ে আনে। হযরত ইয়াকুব (আ) ইউসুফের খবর শুনে নিজের কাপড় ছিড়ে ফেলেন ও কাল। লুঙ্গি পরে নিলেন এবং দীর্ঘ দিন যাবত পুত্ৰ-শোকে বিহবল থাকেন। তাদের এ ব্যাখ্যা ত্রুটিপূর্ণ এবং এ চিত্রায়ন ভ্রান্তি-প্রসূত।

অতঃপর আল্লাহ বলেন :

نجبازي المخسرینیان . এক যাত্রীদল আসল, তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে প্রেরণ করল; সে তার পানির ডোল

নামিয়ে দিল। সে বলে উঠল, কী সুখবর! এ যে এক কিশোর! ওরা তাকে পণ্যরূপে লুকিয়ে রাখলা; ওরা যা করছিল সে বিষয়ে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত ছিলেন। ওরা তাকে বিক্রি করল স্বল্পমূল্যে মাত্র কয়েক দিরহামের বিনিময়ে। মিসরের যে ব্যক্তি তাকে ক্ৰয় করেছিল, সে তার স্ত্রীকে বলল, ‘সম্মানজনকভাবে এর থাকার ব্যবস্থা কর, সম্ভবত সে আমাদের উপকারে আসবে অথবা আমরা ওকে পুত্ররূপেও গ্রহণ করতে পারি।’ এবং এভাবে আমি ইসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম তাকে স্বপ্লের ব্যাখ্যা শিক্ষা দেয়ার জন্যে। আল্লাহ তার কার্য সম্পাদনে অপ্রতিহত; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা অবগত নয়। সে যখন পূর্ণ যৌবনে উপনীত হল, তখন আমি তাকে ‘হিকমত ও জ্ঞান দান করলাম। এবং এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদেরকে পুরস্কৃত कझिं। (७२ : x8-२२)

এখানে আল্লাহ তা’আলা ইউসুফ (আ)-কে যখন কূপে ফেলা হয় তখনকার ঘটনা বর্ণনা করছেন যে, তিনি আল্লাহুর তরফ থেকে বিপদমুক্তি ও তাঁর করুণার প্রতীক্ষা করছিলেন। তখন একটি যাত্রীদল এসে উপস্থিত হলো।

আহলি কিতাবগণ বলেন, গমনকারী ঐ কাফেলার সাথে মালামাল ছিল পেস্তা, খেজুর ও তারপিন। তারা সিরিয়া থেকে মিসরে যাচ্ছিল। ঐ স্থানে এসে তারা একজনকে উক্ত কৃয়া থেকে পানি আনার জন্যে পাঠায়। সে কৃয়ার মধ্যে বালতি ফেললে ইউসুফ তা আঁকড়ে ধরেন। লোকটি তাঁকে দেখেই বলে উঠল ‘ A. এ (কী আনন্দের ব্যাপার!) -514 144 (এতাে একটি কিশোর) ৰ AL.,436%81% (এবং তারা তাকে পণ্যদ্রব্য হিসেবে লুকিয়ে রাখল)। অর্থাৎ তাদের ভুনান্য ব্যবসায়িক পণ্যের সাথে একেও একটি পণ্য বলে দেখালাে। &r/16 $3…. ………. (তারা যা কিছু করছিল আল্লাহ তা ভালরূপুেই জানেন) অর্থাৎ ইউসুফের সাথে তার আচরণ এবং কাফেলা কর্তৃক পণ্যের মাল হিসেবে লুকিয়ে রাখা সবই আল্লাহ দেখছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এর পরিবর্তন করছিলেন না। কেননা এর মধ্যেই নিহিত ছিল বিরাট তাৎপর্য এবং এটা ছিল পূর্ব নির্ধারিত। আর মিসরীয়দের জন্যে এই কিশোর ছিলেন রহমতস্বরূপ, যে কিশোর আজ সেখানে প্রবেশ করছেন বন্দী কৃতদাস রূপে, পরবর্তীতে ঐ কিশোরই হবে সে দেশের সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী। এই কিশোরের সাহায্যেই তারা দুনিয়ায় ও আখিরাতে সীমা-সংখ্যাহীন কল্যাণ লাভ করবে। ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা যখন জানল যে, একটি কাফেলা ইউসুফ (আঃ)-কে কৃয়া থেকে তুলে নিয়েছে, তখন তারা কাফেলার সাথে সাক্ষাৎ করল এবং বলল, এ ছেলেটি আমাদের গোলাম, পালিয়ে এসেছে। তখন তারা ইসুফ (আ)-কে ভাইদের কাছ থেকে কিমে নিল।। ৩৮৪ % » (স্বল্প মূল্যে) স্বল্পমূল্যে YAN কম মূল্য, কেউ কেউ এর অর্থ মেকী মুদ্রা বলেছেন। ‘ ‘

RR RC3F6fb fa88IOR RRNCF) كراهم مغشوكة وكاثوا فيه من الزاهثين এবং এ ব্যাপারে তারা ছিল নির্লোেভ) ইর্বন মাসউদ, ইব্‌ন আব্বাস (রা) নাওফুল বাকালী, সুদী,  (১ম খণ্ড) ৫৭—

8 ( Օ

কাতাদা ও আতিয়্যাতুল আওফী (র) বলেন, তারা বিশ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে। ইউসুফ (আঃ)-এর প্রত্যেক ভাই ভাগে দুই দুই দিরহাম করে পায়। মুজাহিদের মতে, তারা বাইশ দিরহামে এবং ইকরামা ও মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাকের মতে চল্লিশ দিরহামে বিক্রি করে। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

و قال النبی اشئز، من بشیر لاشز آته اگر بی مشوهٔ. (মিসরের যে লোকটি তাকে ক্রয় করেছিল সে তার স্ত্রীকে বলেছিল, একে উত্তম ভাবে থাকার ব্যবস্থা কর।) অর্থাৎ যত্ন সহকারে রােখ। (14 54, … … … … . 34 312.1% (সম্ভবত এ আমাদের কল্যাণে আসবে কিংবা আমরা একে পুত্র বানিয়ে রাখব।) এটা ছিল আল্লাহর বিশেষ রহমত, করুণা ও অনুগ্রহ-যে ব্যবস্থার মাধ্যমে তিনি তাকে উপযুক্ত করে

গড়ে তুলতে এবং দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করতে চেয়েছিলেন।

আহলি কিতাবরা বলে, মিসরের যে ব্যক্তি ইউসুফ (আঃ)-কে খৱীদ করেছিলেন তিনি ছিলেন মিসরের ‘আযিয’ অর্থাৎ অর্থমন্ত্রী। ইব্‌ন ইসহাকের মতে, তার নাম আতকীর ইব্‌ন রূহায়ব। ঐ সময় মিসরের বাদশাহ ছিলেন রায়্যান ইব্‌ন ওলীদ, তিনি ছিলেন আমালিক বংশোদ্ভূত। ইব্‌ন ইসহাকের মতে, আয়ীয্যের স্ত্রীর নাম রাঈল বিনত রা’আঈল (UL-ত এ., J-1)) অন্যদের মতে যুলায়খা। বলাবাহুল্য, যুলায়খা তার উপাধি ছিল। ছ’লাবী আবু হিশাম, রিফাই (র) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আয়ীয্যের স্ত্রীর নাম ফাকা বিনত য়ানুস। মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক (র) ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি ইউসুফ (আঃ)-কে মিসরে নিয়ে বিক্রি করেছিল তার নাম মালিক ইব্‌ন যা আর ইব্‌ন নুওয়ায়ব ইব্‌ন আফাকা ইব্‌ন মাদিয়ান ইব্‌ন ইবরাহীম। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

ইব্‌ন ইসহাক (র) ইব্‌ন মাসউদ (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন : মানব জাতির মধ্যে তিনজন লোক সব চাইতে দূরদর্শী : (১) মিসরের আয়ীয। যখন তিনি তাঁর স্ত্রীকে বলেছিলেন একে সযত্নে রাখ; (২) সেই বালিকা যে তার পিতাকে মূসা (আ) সম্পর্কে বলেছিল; ১৩:44….। -4 ul,

965 * 5 لاfi 8106ة f* S1 S168 68)- ان كثير من اشكيرك القوى الأثين. কারণ, আপনার মজুর হিসেবে সে ব্যক্তিই উত্তম হবে যে হবে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত। (২৮ কাসাস : ২৬) : (৩) হযরত আবু বকর (রা), যখন তিনি হযরত উমর (রা)-কে খলীফা নিযুক্ত

করেন।

কথিত আছে, ‘আমীয’ ইউসুফ (আঃ)-কে বিশ দীনারের বিনিময়ে ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু কেউ কেউ বলেছেন, তার সম ওজনের মিশক, সম ওজনের রেশম ও সম ওজনের রৌপ্যের বিনিময়ে ক্ৰয় করেছিলেন। আল্লাহই সম্যক জ্ঞাত।

আল্লাহর বাণী : ৬%3¥fএ* _4_%3%} & மூker আমি ইউসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠিত করলার্ম)। যেমন এই আষীয ও তাঁর স্ত্রীকে ইউসুফ (আ)-এর সেবাযত্নে ও সাহায্য-সহযোগিতার জন্য নির্ধারণ করার মাধ্যমে মিসরের বুকে তাকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলাম।

w এবং তাকে স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিলাম) অর্থাৎ স্বপ্নের( ويشككمله من تأويلي الأحَاريبي

তত্ত্বজ্ঞান ও তার ব্যাখ্যা ১০- এ. এ. Jus এ LI, (আল্লাহ তাঁর কার্য-সম্পাদনে অপ্রতিহত)

8GS

অর্থাৎ আল্লাহ যখন কোন সিদ্ধান্ত নেন, তখন তা বাস্তবায়িত হয়েই থাকে। কেননা, তিনি তা বাস্তবায়নের জন্যে এমন উপায় নির্ধারণু করে দেন্ত, যা মানুষের কল্পনার বাইরে। এ কারণেই আল্লাহ বলেছেন : %: 21:44, ৩yL*/ *4/350% (কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা অবগত নয়।)

সে যখন পূর্ণ যৌবনে উপনীত হল তখন আমি তাকে হিকমত ও জ্ঞান দান করলাম এবং এভাবেই আমি সৎকর্ম পরায়ণদেরকে পুরস্কৃত করে থাকি।

এ কথা থেকে প্রমাণিত হয় যে, ইতিপূর্বের সমস্ত ঘটনা হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর পূর্ণ যৌবন প্রাপ্তির পূর্বে সংঘটিত হয়েছিল। অর্থাৎ ৪০ বছর বয়সের পূর্বে। কেননা, চল্লিশ বছর বয়সকালে নবীদের প্রতি ওহী প্রেরিত হয়।

কত বছর বয়সে পূর্ণ যৌবন প্রাপ্তি ঘটে, সে ব্যাপারে আলেমগণের মধ্যে মতভেদ আছে। ইমাম মালিক, রাবীআ, যােয়দ ইব্‌ন আসলাম ও শা’বী বলেন, পূর্ণ যৌবন প্রাপ্তি বলতে বালেগ হওয়া বুঝায়। সাঈদ ইব্‌ন জুবায়রের মতে, তা আঠার বছর। দাহহাকের মতে বিশ বছর; ইকরিমার মতে পাঁচিশ বছর; সুদীর মতে ত্রিশ বছর; ইব্‌ন আব্বাস, মুজাহিদ ও কাতাদা (রা)-এর মতে তেত্রিশ বছর এবং হাসান বসরী (র)-এর মতে চল্লিশ বছর। কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত হাসান বসরী (র)-এর মতকে সমর্থন করে।

ላw ሥ / w যথা : …… 6,657 8146 644 614 161 – K (যখন সে যৌবন প্রাপ্ত হল এবং চল্লিশ বছর বয়সে উপনীত হল)। আল্লাহ বলেন :

সে যে স্ত্রীলোকের ঘরে ছিল সে তার থেকে অসৎকর্ম কামনা করল এবং দরজাগুলো বন্ধ করে দিল ও বলল, ‘এসো’। সে বলল, ‘আমি আল্লাহর শরণ নিচ্ছি। তিনি আমার প্রভু; তিনি আমাকে সম্মানজনকভাবে থাকতে দিয়েছিল, সীমালংঘনকারীরা সফলকাম হয় না।’ সে রমণী তো তার প্রতি আসক্ত হয়েছিল এবং সেও ওর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত। যদি না সে তার প্রতিপালকের নিদর্শন প্ৰত্যক্ষ করত। তাকে মন্দ কর্ম ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার জন্যে এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ওরা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল এবং স্ত্রীলোকটি পেছন থেকে তার জামা ছিড়ে ফেলল। তারা স্ত্রীলোকটির স্বামীকে দরজার কাছে পেল। স্ত্রীলোকটি বলল, ‘যে তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম কামনা করে তাকে কারাগারে প্রেরণ অথবা অন্য কোন মর্মন্তদ শাস্তি ব্যতীত আর কি দণ্ড হতে পারে?’ ইউসুফ (আঃ) বলল, ‘সেই আমা থেকে অসৎকর্ম কামনা করেছিল।’ ‘স্ত্রীলোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল, যদি ওর জামার সম্মুখ দিক ছিন্ন করা হয়ে থাকে, তবে স্ত্রীলোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী। কিন্তু ওর জামা যদি পেছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়ে থাকে, তবে স্ত্রী লোকটি মিথ্যা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পেছন দিক হতে ছিন্ন করা হয়েছে, তখন সে বলল, এটি তোমাদের নারীদের ছলনা, ভীষণ তোমাদের ছলনা! হে ইউসুফ! তুমি এটি উপেক্ষা কর এবং হে নারী!! তোমার অপরাধের জন্যে ক্ষমা প্রার্থীনা কর, তুমি অপরাধী! (১২ : ২৩-২৯)

আষীয্যের স্ত্রী হযরত ইউসুফের প্রতি আসক্ত হয়ে নিজ কামনা চরিতাৰ্থ করার জন্যে কিভাবে যে ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছিল এখানে আল্লাহ তা উল্লেখ করেছেন। আয়ীয্যের স্ত্রী ছিলেন অত্যন্ত রূপসী, ঐশ্বর্যশালী, উচ্চ সামাজিক মর্যাদার এবং ভরা যৌবনের অধিকারিণী। তিনি মূল্যবান জলুসপূর্ণ পোশাক পরিধান ও অঙ্গ-সজ্জা করে ইউসুফ (আঃ)-কে আপন কক্ষে রেখে ভবনের সমস্ত দরজা বন্ধ করে তাকে আহবান জানান। সর্বোপরি তিনি ছিলেন মন্ত্রীর স্ত্রী। ইব্‌ন ইসহাকের মতে, এই মহিলাটি ছিলেন মিসরের বাদশাহ রায়্যান ইবনুল ওলীদের ভাগ্নী। অপরদিকে হযরত ইউসুফ (আঃ) ছিলেন অত্যধিক রূপ-সৌন্দর্যে দীপ্তিমান নওজোয়ান। কিন্তু তিনি ছিলেন নবী বংশোদ্ভূত একজন নবী। তাই আল্লাহ তাঁকে এই অশ্লীল কাজ থেকে হেফাজত করেন এবং নারীদের ছলনা থেকে রক্ষা করেন। এর ফলে তিনি সহীহায়নের হাদীসে বর্ণিত সর্বাপেক্ষা মুত্তাকী সাত শ্রেণীর লোকের অন্যতম সর্দার বলে প্ৰতিপন্ন হন।

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, যে দিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া থাকবে না, সে দিন সাত শ্রেণীর লোককে আল্লাহ তার ছায়া দান করবেন :

(১) ন্যায়পরায়ণ শাসক (২) যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে অশ্রু ঝরায় (৩) যে ব্যক্তি সালাত শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে আসার পর পুনরায় মসজিদে না যাওয়া পর্যন্ত তার অন্তর মসজিদের সাথে বাধা থাকে। (৪) সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পরস্পরে মহব্বত করে। আল্লাহর উদ্দেশেই তারা একত্র হয় এবং আল্লাহর উদ্দেশেই তারা বিচ্ছিন্ন হয় (৫) যে ব্যক্তি এমন গোপনীয়তার সাথে সাদকা করে যে, তার ডান হাত কি দিল বাম হাত তার খবর রাখে না। (৬)। ঐ যুবক যে তার উঠতি বয়স আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে কাটায়। (৭) ঐ পুরুষ যাকে কোন সুন্দরী ও সম্রান্ত মহিলা কু-কর্মের প্রতি আহবান করে। কিন্তু সে বলে আমি আল্লাহকে ভয় করি। (বুখারী ও মুসলিম)

8 ( VO

মােটকথা, আয়ীয্যের স্ত্রী ইউসুফ (আঃ)-এর প্রতি আসক্ত হয়ে ও অত্যধিক লোভূতুর হয়ে আপন কামনা চরিতার্থ করার জন্যে আহবান জানায়। ইউসুফ (আঃ) বললেন : if ( $L». (আল্লাহর পানাহ চাই) :465%} (তিনি তাে আমার মনিব) অর্থাৎ মহিলার স্বামী—এ বাড়ির মালিক আমার মনিব। এ… … ………. অর্থাৎ তিনি আমার প্রতি সদয় ব্যবহার করেছেন ও আমাকে মর্যাদার সাথে তার কাছে থাকার বন্দােবস্ত করেছেন। …84}L%। &3» $ 1, SSBBBB BBB BBB BB BBS AAAAASAAAA S00A TAqTAS0SA AAASeS0 0A0 (মহিলাটি ইউসুফের প্রতি আসক্ত হয়েছিাৰ্ল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়তো যদি না সে আপন প্রতিপালকের নিদর্শন প্রত্যক্ষ করত।) তাফসীরে আমরা এ আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত

আলোকপাত করেছি।

মুফাসসিরগণ এ স্থলে যত কথা বলেছেন, তার অধিকাংশই আহলি কিতাবদের গ্রন্থাদি থেকে গৃহীত। সুতরাং সেগুলো উপেক্ষা করাই শ্রেয়। এখানে যে কথাটি বিশ্বাস করা প্রয়ােজন তা এই যে, আল্লাহ হযরত ইউসুফ (আঃ)-কে এ অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে হিফাজত করেন ও পবিত্র রাখেন এবং ঐ মহিলার কবল থেকে তাকে রক্ষা করুন।

তাই তিনি বলেছেন :

‘তাকে মন্দকর্ম ও অশ্লীলতা থেকে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত।’ এ%,11 454.1% (তারা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল) অর্থাৎ হযরত ইউসুফ (আঃ) মহিলার কবল থেকে বঁাচার জন্য ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য দূরত্নত্ব দিকে ছুটে গেলেন এবং মহিলা তার পেছনে পেছনে গোল 6,14…. … … (51% (তারা উভয়ে মহিলার স্বামীকে দরজার কাছে পেল) তখন চট করে মহিলাটি কথা বলতে আরম্ভ করল এবং তুতাকে ইউসুফের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার চেষ্টা

‘মহিলাটি বলল, যে তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম কামনা করে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ কিংবা কোন কঠিন শাস্তি ব্যতীত আর কি দণ্ড হতে পারে?’

মহিলা নিজেই অপরাধী অথচ সে অভিযুক্ত করছে ইউসুফ (আঃ)-কে এবং নিজের পূতচরিত্র ও কলুষমুক্ত হওয়ার কথা বলছে। এ কারণে ইউসুফ বললেন 😀 …….. ওঁ… . . …661% of ਵਿਚ ਇਕ ਸੱਸ ਅੰਸ य2080छ्न्म | بین آمُلها &১৬% »8% (মহিলার পরিবারের জনৈক সাক্ষী সাক্ষ্য দিল)।

ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, যে সাক্ষ্য দিয়েছিল সে ছিল একান্তই দোলনার এক শিশু। আবু হুরায়রা (রা), হিলাল ইব্‌ন আসাফ, হাসান বসরী, সাঈদ ইব্‌ন জুবায়র ও যাহাহাক থেকে অনুরূপ বৰ্ণিত হয়েছে। ইব্‌ন জারীরও এ মতই গ্ৰহণ করেছেন। হযরত ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে এ ব্যাপারে মারফু হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং অন্যরা তা মওকুফররূপে বর্ণনা করেছেন।

8Cሱ8

কেউ কেউ বলেছেন, সাক্ষ্যদাতা ছিল মহিলার স্বামীর নিকট আত্মীয় একজন পুরুষ। আবার কেউ বলেছেন, সে ছিল মহিলার নিকটাত্মীয় একজন পুরুষ। সাক্ষ্যদাতা পুরুষ বলে অভিমত পোষণকারীদের মধ্যে রয়েছেন ইব্‌ন আব্বাস (রা), ইকরিমা, মুজাহিদ হাসান, কাতাদা, সুদী, মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক ও যায়দ ইব্‌ন আসলাম (র)।

(যদি ওর জামার সম্মুখ দিকে ছেড়া হয়ে থাকে। তবে মহিলাটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী)। কারণ, তখন বোঝা যাবে ইউসুফ (আঃ) মহিলাকে ধরতে গিয়েছেন; আর মহিলা প্রতিরোধ করেছে— যার ফলে জামার সম্মুখ দিকে ছিড়ে গেছে।

হয়ে থাকে। তবে মহিলাটি মিথ্যা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী)। কারণ, তখন প্রমাণিত হবে যে, ইউসুফ (আঃ) মহিলার কবল থেকে পালাতে চেয়েছেন এবং মহিলা তাকে ধরার জন্যে পেছনে পেছনে ছুটেছে ও তার জামা টেনে ধরার কারণে পেছন দিকে ছিড়ে গেছে। আর

বাস্তবেও তাই ঘটেছিল। তাই আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেন:

‘গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পেছন দিক থেকে ছেড়া রয়েছে। তখন সে বলল, এ হল তোমাদের নারীদের ছলনা। বস্তুত ভীষণ তোমাদের ছলনা।’ অর্থাৎ এ যা কিছু ঘটেছে তা তোমাদের নারীদের কূট-কৌশল- তুমিই তাকে ফুসলিয়েছ এবং অন্যায়ভাবে তার ওপর দোষারোপ করছি।

এরপর মহিলার স্বামী এ ব্যাপারটির নিষ্পত্তিকল্পে বলেন : ১৯ 6.

(ইউসুফ। এ বিষয়টিকে তুমি উপেক্ষা কর) অর্থাৎ কারও নিকট এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করো না। কারণ, এ জাতীয় বিষয় গোপন করাই বাঞ্ছনীয় ও উত্তম। অপর দিকে তিনি মহিলাকে তার অপরাধের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থীনা ও তওবা করার নির্দেশ দেন। কেননা, বান্দা যখন আল্লাহর কাছে তওবা করে তখন আল্লাহ তার তওবা কবুল করেন। ঐ সময় মিসরবাসী যদিও মূর্তিপূজা করত, কিন্তু তারা বিশ্বাস করত যে, যে সত্তা পাপ মোচন করেন। এবং পাপের শাস্তি দেন। তিনি এক ও লা-শরীক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নন। এ জন্যে স্ত্রী লোকটিকে তার স্বামী ক্ষমা প্রার্থীনা করতে বলেন; তবে কিছু কিছু কারণে তিনি মহিলার অসহায়ত্ব ও অক্ষমতা উপলব্ধি করেন। কেননা, মহিলা এমন কিছু প্ৰত্যক্ষ করেছিল যা দেখে মনকে দাবিয়ে রাখা খুবই কঠিন (অর্থাৎ ইউসুফ (আঃ)-এর রূপ)। তবে ইউসুফ (আঃ) ছিলেন পাক-পবিত্র ও নির্মল নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী। y

তুমি তােমার অপরাধের জন্যে ক্ষমা প্রার্থীনা কর। কারণ নিশ্চিতভাবে তুমিই অপরাধী।

নগরের কতিপয় নারী বলল, আয়ীয্যের স্ত্রী তার যুবক দাস থেকে অসৎকর্ম কামনা করছে; প্রেম তাকে উন্মত্ত করেছে, আমরা তো তাকে দেখছি স্পষ্ট বিভ্ৰান্তিতে। স্ত্রীলোকটি যখন ওদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনল, তখন সে ওদেরকে ডেকে পাঠাল, ওদের জন্যে আসন প্রস্তুত করল, ওদের প্রত্যেককে একটি করে ছুরি দিল এবং ইউসুফ (আঃ)-কে বলল, ওদের সম্মুখে বের হও। তারপর ওরা যখন তাকে দেখল। তখন তারা ওর গরিমায় অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল। ওরা বলল, ‘অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! এতো মানুষ নয়, এতো এক মহিমান্বিত ফেরেশতা।’

সে বলল, ‘এ-ই সে যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করেছ; আমি তো তা থেকে অসৎকর্ম কামনা করেছি; কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে, আমি তাকে যা আদেশ করেছি। সে যদি তা না করে, তবে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ইউসুফ বলল, ‘হে আমার প্ৰতিপালক! এই নারীগণ আমাকে যার প্রতি আহবান করছে তা অপেক্ষা কারাগার আমার কাছে অধিক প্ৰিয়। আপনি যদি ওদের ছলনা থেকে আমাকে রক্ষা না করেন। তবে আমি ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব।’ তারপর তার প্রতিপালক তার আহবানে সাড়া দিলেন এবং তাকে ওদের ছলনা থেকে রক্ষা করলেন। তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (১২ : wo-8)

এখানে আল্লাহ উল্লেখ করছেন সে সব কথা, যা শহরের মহিলা সমাজ তথা আমীর, ওমরাহ ও অভিজাত লোকদের স্ত্রী-কন্যাগণ আযীয্যের স্ত্রী সম্পর্কে নিন্দাবাদ করছিল। নিজের ক্রীতদাসের প্রতি প্রেমে উন্মত্ত হয়ে প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে ছলনা করার জন্য তারা তাকে ভৎসনা করছিল। দাসের প্রতি এরূপ আসক্ত হওয়া তার মত অভিজাত মহিলার পক্ষে

w في’ মোটেই শোভনীয় ছিল না। তাই তারা বলছিল -’… U $_ » ° · LAAM ) (আমরা * / Z Λ,, ζ και « তুকে স্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে দেখছি)। অর্থাৎ সে অপাত্রে প্রের্ম নিবেদন করছে। এ…. … …1; SIRC*}3 স্ত্রী যখন তাদের চক্রান্তের কথা শুনল) অর্থাৎ তার প্রতি শহরের) پكگرهن

মহিলাদের ভৎসনার কথা শুনল এবং দাসের প্রতি প্ৰেম নিবেদন করার কারণে তাকে নিন্দাবাদ

করার কথা জানল। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে আখীয্যের স্ত্রী এ ব্যাপারে ছিল অক্ষম। তাই সে ইচ্ছে করল। তার ওযর ঐ মহিলাদের সামনে প্ৰকাশ করতে। তখন তারা বুঝবে যে, এই যুবক দাস তেমন নয়। যেমন তারা ধারণা করেছে এবং এ সেসব দাসের মত নয়, যেসব দাস তাদের কাছে আছে। সুতরাং সে শহরের মহিলাদের নিমন্ত্রণ করল এবং সকলকে বাড়িতে ডেকে আনল। সে একটি ভোজ সভার আয়োজন করল। ভোজসভায় যে সব খাদ্য-দ্রব্য পরিবেশন করা হয় তার মধ্যে এমন কিছু দ্রব্য ছিল যা ছুরি দিয়ে কেটে খেতে হয়, যেমন লেবু ইত্যাদি। উপস্থিত প্রত্যেককে একটি করে ছুরি দেয়া হল। আয়ীয্যের স্ত্রী পূর্বেই ইউসুফ (আ)-কে উৎকৃষ্ট পোশাক পরিয়ে প্রস্তুত রেখেছিল। তখন তিনি ছিলেন পূর্ণ যৌবনে দীপ্তিমান। এ অবস্থায়, মহিলাটি ইউসুফ (আঃ)-কে তাদের সম্মুখে বেরিয়ে আসার নির্দেশ দিলে তিনি বের হয়ে আসেন। ইউসুফ (আ)-কে তখন পূর্ণিমার চাঁদের চাইতেও অধিকতর সুন্দর দেখাচ্ছিল। 14:51 446 62.1% (যখন তারা তাকে দেখল। তখন ওরা তার গরিমায় অভিভূত হলো) অর্থাৎ তারা ইউসুফ (আ)-এর সৌন্দৰ্য-দর্শনে বিস্মিত হয়ে ভােবল, কোন আদম সন্তান তো এ রকম রূপ-লাবান্যের অধিকারী হতে পারে না। ইউসুফ (আঃ)-এর সৌন্দর্যের দীপ্তিতে অভিভূত হয়ে তারা চেতনা হারিয়ে ফেলে। এমনকি আপনি আপন হাতে রক্ষিত ছুরি দ্বারা নিজেদের হাত কেটে ফেলে। অথচ যখমের কোন অনুভূতিই তাদের ছিল না।

‘ ‘ মহিলারা বলল, অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! এতো মানুষ নয়, এ তো মহিমান্বিত ফেরেশতা! মি’রাজ সংক্রান্ত হাদীসে এসেছে, ‘আমি ইউসুফের কাছ দিয়ে গেলাম, দেখলাম সৌন্দর্যের অর্ধেকই তাকে দেওয়া হয়েছে।

সুহায়লী (র) ও অন্যান্য ইমাম বলেছেন, হযরত ইউসুফ (আঃ)-কে অর্ধেক সৌন্দর্য দেয়া হয়েছিল-এ কথার অর্থ হল আদম (আ)-এর যে সৌন্দর্য ছিল তার অর্ধেক ইউসুফ (আঃ)-কে দেয়া হয়েছিল। কারণ আল্লাহ নিজ হাতে আদম (আ)-কে সৃষ্টি করে তাঁর মধ্যে রূহ ফুকে দিয়েছেন। সুতরাং তিনিই ছিলেন সবার চাইতে বেশি সুন্দর। এ জন্যে জান্নাতবাসী আদিম (আ)-এর দৈহিক মাপ ও সৌন্দর্য নিয়ে জান্নাতে প্ৰবেশ করবে। আর ইউসুফ (আঃ)-এর সৌন্দর্য ছিল আদম (আ)-এর সৌন্দর্যের অর্ধেক। এ দু’জনের মাঝখানে আর কোন সৌন্দৰ্যবান ব্যক্তি হবে না। যেমন হযরত হাওয়া (আ)-এর পরে হযরত ইবরাহীম খলীল (আ.)-এর স্ত্রী সারাহ ভিন্ন আর কেউ হাওয়ার সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। ইব্‌ন মাসউদ (রা) বলেন, হযরত ইউসুফ (আ)-এর চেহারায় বিদ্যুতের ন্যায় উজ্জ্বল দু্যতি ছিল। যখন কোন মহিলা কোন কাজে তার কাছে আসত। তখন তিনি নিজের চেহারা ঢেকে রাখতেন। অন্যরা বলেছেন, লোকজন যাতে চেহারা দেখতে না পায়, সে জন্যে হযরত ইউসুফ (আঃ) বোরকা পরিহিত থাকতেন। এ কারণেই যখন আয়ীয্যের স্ত্রী ইউসুফ (আঃ)-এর প্রেমে আসক্ত হয় এবং অন্যান্য মহিলা তার রূপ-দর্শনে আংগুল ব্লাড়ীর ন্যু ঘটনা ঘটায় ও হতভম্ব হয়ে যায়, তখন আয়ীয্যের স্ত্রী

বলেছিল : ‘‘, ওএম, 21 &31)<<12) * (এই হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার জন্যে তোমরা আমাকে তিরস্কার করছ () অতঃপর মহিলাটি হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর পূত-চরিত্র হওয়ার কথা স্বীকার

8CK °ስ

আমি তা থেকে অসৎকর্ম কামনা( #1%& ژاوادثهٔ عین نفسپس به فاستغفصمم : آبی) ۹۹) ۹ করেছি। কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে। অর্থাৎ রক্ষা করেছে)। & 24/u% 0%; ‘f3, 16 .64*L%J16-6435,466…….। (এ যদি আমার কথা না শুনে তবে তাকে কয়েদ করা হবে এবং লাঞ্ছিত করা হবে)। এ সময় অন্যান্য মহিলা ইউসুফ (আঃ)-কে তাঁর মনিব-পত্নীর প্রস্তাব মেনে নিতে উৎসাহ যোগায়; কিন্তু তিনি তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ, তার

দেহে নবুওতের ধমনী প্রবাহিত ছিল। তিনি রােকবুল আলামীনের কাছে প্রার্থীনা করেন :

. ‘হে আমার রব! তারা আমাকে যে কাজের দিকে আহবান জানায় তার চাইতে কারাগারই বরং আমার কাছে অধিক প্রিয়। আপনি যদি ওদের ছলনা থেকে আমাকে রক্ষা না করেন, তবে আমি তাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং তখন তো আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়ব।’ (SS 3 w)

অর্থাৎ আপনি যদি আমার উপর দায়িত্ব ছেড়ে দেন, তাহলে আমি অক্ষম দুর্বল। নিজের কল্যাণ-অকল্যাণ কোনটির উপরই আমার কোন হাত নেই- আল্লাহ যা চান তাই হয়। আমি দুর্বল, তবে আপনি যতটুকু শক্তি-সামৰ্থ্য দেন এবং আপনার পক্ষ থেকে যতটুকু হিফাজত দান করেন। তাই আমি পেয়ে থাকি। এ জন্যেই আল্লাহ বলেন, :

আল্লাহ তার প্রার্থীনা কবুল করলেন। তার উপর থেকে মহিলাদের চক্রান্ত প্রতিহত করলেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (১২ : ৩৪)

নিদর্শনাবলী দেখার পর তাদের মনে হল যে, তাকে কিছুকালের জন্যে কারারুদ্ধ করতে হবে। তার সাথে দু’জন যুবক কারাগারে প্রবেশ করল। ওদের একজন বলল, আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আংগুর নিংড়িয়ে রস বের করছি এবং অপরজন বলল, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি আমার মাথার উপর রুটি বহন করছি এবং পাখি তা থেকে খাচ্ছে। আমাদেরকে তুমি এর

তাৎপর্য জানিয়ে দাও, আমরা তোমাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখেছি।’ .±

ইউসুফ বলল, ‘তোমাদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয় তা আসার পূর্বে আমি তোমাদেরকে স্বপ্নের তাৎপর্য জানিয়ে দেব। আমি যা তোমাদেরকে বলব তা আমার প্রতিপালক আমাকে যা শিক্ষা দিয়েছেন, তা হতে বলব। যে সম্প্রদায় আল্লাহে বিশ্বাস করে না ও পরলোকে অবিশ্বাসী আমি তাদের মতবাদ বর্জন করেছি; আমি আমার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকুবের মতবাদ অনুসরণ করি। আল্লাহর সাথে কোন বস্তুকে শরীক করা আমাদের কাজ নয়। এটা আমাদের ও সমস্ত মানুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ क(द्ध ना।

‘হে কারাসঙ্গীরা! ভিন্ন ভিন্ন বহু প্ৰতিপালক শ্রেয়, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ? তাকে ছেড়ে তোমরা কেবল কতকগুলো নামের ইবাদত করছ, যে নাম তোমাদের পিতৃপুরুষ ও তোমরা রেখেছি; এগুলোর কোন প্রমাণ আল্লাহ পাঠাননি। বিধান দেবার অধিকার কেবল আল্লাহর। তিনি আদেশ দিয়েছেন অন্য কারও ইবাদত না করতে, কেবল তার ব্যতীত; এটাই সরল দীন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা অবগত নয়।

‘হে কারাসঙ্গী দ্বয়! তোমাদের একজন সম্বন্ধে কথা এই যে, সে তার মনিবকে মদ্য পান করাবে এবং অপরজন সম্বন্ধে কথা এই যে, সে শূলবিদ্ধ হবে; তারপর তার মাথা থেকে পাখি আহার করবে। যে বিষয়ে তোমরা জানতে চেয়েছ তার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে! (সূরা ইউসুফ : ৩৫-৪১)

আষীয ও তার স্ত্রী সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ইউসুফের পবিত্রতা প্ৰকাশ পাওয়ার পর কিছুদিনের জন্যে তাকে জেলে রাখা তাদের কাছে সংগত বলে মনে হল। কারণ, এতে ঐ ব্যাপারে লোকজনের চর্চা কমে যাবে এবং এটাও বোঝা যাবে যে, ইউসুফ (আঃ)-ই অপরাধী যার কারণে তাকে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এভাবে অন্যায়ভাবে তাকে জেলখানায় পাঠান হল। অবশ্য ইউসুফ (আঃ)-এর জন্যে আল্লাহ এটাই নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। এর দ্বারা আল্লাহ তাকে রক্ষা করলেন। কেননা, জেলে থাকায় তিনি তাদের সংসর্গ ও সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার সুযোগ পান।

ইমাম শাফিঈর বর্ণনা মতে, সূফী সম্প্রদায়ের কেউ কেউ এ ঘটনা থেকে দলীল গ্রহণ করে বলেছেন : না পাওয়াটাই এক প্রকার হিফাজত।

8Cጽእ

w

তার সাথে আরও দুই যুবক( 512.6% %_4_4 لسینجمن فنیان . * ۹۹।(۶۹|||||||||||||||||S জেলখানায় প্রবেশ করল।) এদের মধ্যে একজন ছিল বাদশার দরবারের সাকী, তার নাম বানু। বলে কথিত আছে। অপরজন বাদশার রুটি প্রস্তুতকারী অর্থাৎ খাদ্যের দায়িত্বশীল-তুকী ভাষায় যাকে বলে আলজাশেনাকীর। কথিত আছে তার নাম ছিল মাজিলাছ। বাদশাহ এ দু’জনকে কোন এক ব্যাপারে অভিযুক্ত করে কারাগারে আবদ্ধ করেন। জেলখানায় ইউসুফ (আ)-এর আচার-আচরণ, স্বভাব্যচরিত্র, সাধুতা, নীতি-আদৰ্শ, ইবাদত- বন্দেগী ও সৃষ্টির প্রতি করুণা দেখে তারা দু’জনেই বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যায়। এ দুই কারাবন্দী যুবক তাদের নিজ নিজ অবস্থান অনুযায়ী স্বপ্ন দেখে। মুফাসসিরগণ বলেছেন, তারা একই রাত্রে এ স্বপ্ন দেখেছিল। সাকী দেখে, পাকা আংগুরে ভর্তি তিনটি গোছা, সেখান থেকে সে আংগুর ছিড়ে রস নিংড়িয়ে পেয়ালা ভরে বাদশাহকে পরিবেশন করছে। অপর দিকে রুটি প্রস্তুতকারী দেখে, তার মাথার উপর রুটি ভরা তিনটি ঝুড়ি রয়েছে। আর পাখিরা এসে উপরের ঝুড়ি থেকে রুটি মুকরিয়ে খাচ্ছে। স্বপ্ন দেখার পর দু’জনেই নিজ নিজ স্বপ্নের বৃত্তান্ত ইউসুফ (আ)-এর কাছে ব্যক্ত করে তারা এর ব্যাখ্যা জানতে চাইল এবং বললঃ ৬৫ % 2 216 6|1676) (আমরা আপনাকে সৎকর্মপরায়ণ দেখছি।) ইউসুফ তাদেরকে জানালেন যে, স্বপ্নের ব্যাখ্যা সম্পর্কে তিনি সম্যক অবহিত ও অভিজ্ঞ।

(ইউসুফ বলল, তোমরা প্রত্যহ নিয়মিত যে খাদ্য খাও তা আসার পূর্বেই আমি তোমাদেরকে এর তাৎপর্য জানিয়ে দেব।) এ আয়াতের অর্থ কেউ এভাবে করেছেন যে, তোমরা দু’জনে যখনই কোন স্বপ্ন দেখবে, তা বাস্তবে পরিণত হবার পূর্বেই আমি তার ব্যাখ্যা বলে দেব। এবং যেভাবে আমি ব্যাখ্যা দেব সেভাবেই তা বাস্তবায়িত হবে। আবার কেউ এর অর্থ বলেছেন যে, তোমাদেরকে যে খাদ্য দেয়া হয় তা পরিবেশন হওয়ার আগেই আমি বলে দেব

কি খাদ্য আসছে, তা মিষ্টি নাটক।

যেমন হযরত ঈসা (আ) বলেছিলেন :

(আমি তোমাদেরকে বলে দেব কি খাদ্য তোমরা খেয়েছ এবং বাড়িতে কি রেখে এসেছ) হযরত ইউসুফ (আঃ) তাদেরকে জানালেন যে, এ জ্ঞান আল্লাহ আমাকে দান করেছেন। কেননা, আমি তাঁকে এক আল্লাহ বলে বিশ্বাস করি ও আমার পূর্ব পুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের

ধর্মদর্শ অনুসরণ  (আল্লাহর সাথে অন্য 018}}

ww উপর আল্লাহর অনুগ্রহ) কেননা তিনিই আমাদেরকে এ পথ প্রদর্শন করেছেন। ৩yLK) 14%- (এবং মানুষের উপরও) কেননা, আল্লাহ আমাদেরকে আদেশ করেছেন, মানুষকে এদিকে আহবান করার। তাদেরকে সত্য পথে আনার চেষ্টা করার ও সত্য পথ প্ৰদৰ্শন করার। আর এ

সত্য সৃষ্টিগতভাবে তাদের মধ্যে বিদ্যমান এবং তাদের স্বভাবজাত।

(কিন্তু অধিকাংশ লোকই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না)। এরপর হযরত ইউসুফ (আঃ) তাদেরকে আল্লাহর একত্বের প্রতি ঈমান আনার জন্যে তাদেরকে দাওয়াত দেন, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও ইবাদতের নিন্দা করেন। মূর্তির অসারতা, অক্ষমতা ও হেয় হওয়ার কথা శాూడా

হে আমার কারাসঙ্গী দ্বয়! ভিন্ন ভিন্ন বহু প্রতিপালক শ্রেয়, নাকি পরাক্রমশালী এক আল্লাহ? তাকে ছেড়ে তোমরা কেবল কতকগুলো নামের ইবাদত করছি-যে নামগুলো তোমরা ও তোমাদের পিতৃ-পুরুষ রেখেছি। এ সম্পর্কে আল্লাহ কোন প্রমাণ নাজিল করেননি। বিধান দেবার অধিকার কেবল আল্লাহরই।

অর্থাৎ তিনি তাঁর সৃষ্টিকুলের মধ্যে যেরূপ ইচ্ছা করুেন স্রূেপই বাস্তবায়িত্ব করেন। যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করেন। যাকে ইচ্ছা পথভ্রষ্ট করেন। …, 81, 13:46, 8 3, …। (তিনি হুকুম করেছেন : তাকে ব্যতীত কারও ইবাদত কর না) তিনি এক, তার কোন শরীক নেই। /*41.54 11 এJর্ড (এটাই সরল দীন অর্থাৎ সরল ও সঠিক পথ () **1%x]6$ الكاس

%%%14 (কিন্তু অধিকাংশ লোকই তা অবগত নয়।) w سمي

অর্থাৎ সঠিক পথ তাদের সম্মুখে প্রকাশিত ও স্পষ্ট হওয়ার পরও তারা সে পথে চলতে পারে না। কারাগারের এ দুই যুবককে এমন একটি পরিবেশে দাওয়াত দান হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর পূর্ণ কৃতিত্বেরই পরিচায়ক। কেননা, তাদের অন্তরে ইউসুফ (আঃ)-এর প্রভাব ও মহত্ত্ব আসন গেড়ে বসেছিল। যা তিনি বলবেন, তা গ্ৰহণ করার জন্যে তারা ছিল উদগ্ৰীব। সুতরাং তারা যে বিষয়ে জানতে চেয়েছে তার চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক কল্যাণকর বিষয়ের প্রতি আহবান জানানোই তিনি সঙ্গত মনে করেছেন। তাঁর প্রতি আরোপিত সে গুরুদায়িত্ব পালনের পর তিনি

স্বপ্নের ব্যাখ্যা দান করে বলেন, :

یا صاچبی الهیجُن اما اخدگما فیشقی رئهٔ خمُرا. (হে আমার জেলখানার সাথীরা। তােমাদের স্বপ্নের ব্যাখ্যা হল : তােমার্দের দু’জনের মধ্যে একজন আপন মনিবকে মদ্য পান করাবে) সে লোকটি ছিল সাকী।

وأما ألأخرُ فَيُضلَّ فَتُأكل الطير وث و أشيم. আর দ্বিতীয়ুজনকে শূলে চড়ান হবে, এবং পাখিরা তার মাথা থেকে আহার করবে। সে ব্যক্তিটি ছিল রুটি প্রস্তুতকারী। ১৫% °৪৫%। সার্স। এ-পর্তু (যে বিষয়ে তােমরা জানতে চেয়েছিলে তার সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে) অর্থাৎ যা বলে দেয়া হল তা অবশ্যম্ভাবীরূপে কার্যকর হবে এবং যেভাবে বলা হল সেভাবেই হবে। এ জন্যে হাদীসে এসেছে, স্বপ্নের ব্যাখ্যা যতক্ষণ করা না হবে ততক্ষণ তা ঝুলন্ত থাকে। যখন ব্যাখ্যা করা হয় তখন তা বাস্তবায়িত হয়।

ইব্‌ন মাসউদ্দ, মুজাহিদ ও আবদুর রহমান ইব্‌ন যায়দ ইব্‌ন আসলাম (রা) থেকে বর্ণিত : কয়েদী দু’জন স্বপ্নের কথা বলার পরেও ইউসুফ (আঃ)-এর ব্যাখ্যা দানের পরে বলেছিল, আসলে আমরা কোন স্বপ্ৰই দেখি নাই। তখন হযরত ইউসুফ (আঃ) বলেছিলেন

এ°- (যে বিষয়ে তােমরা জিজ্ঞাসা করেছ সে বিষয়ের الأمر الذيى فی هر تشتف پیان

ফয়সালা চূড়ান্ত হয়ে গেছে।)

(যে ব্যক্তি সম্পর্কে ইউসুফের ধারণা ছিল যে, সে মুক্তি পাবে। তাকে সে বলে দিল : তোমার প্রভুর কাছে আমার কথা বলবে। কিন্তু শয়তান তাকে প্রভুর কাছে তার বিষয় বলার কথা তুলিয়ে দিল। ফলে ইউসুফ কয়েক বছর কারাগারে রইল। (১২ : ৪২)

আল্লাহ জানান যে, যে ব্যক্তির প্রতি ইউসুফ (আঃ)-এর ধারণা হয়েছিল যে, সে মুক্তিলাভ করবে— সে ব্যক্তি ছিল সাকী এর্ড (৫,৩,…। (তােমার মানবের নিকট আমার কথা বলবে।)

অর্থাৎ আমি যে বিনা অপরাধে জেলখানায় আছি এ বিষয়ে বাদশাহর কাছে আলোচনা করিও। এ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করা বৈধ এবং তা আল্লাহর উপর তাওয়াককুলের পরিপন্থী নয়।

আল্লাহ বাণী :فانشاه الشيطاتُ يَكُويُم

(শয়তান তাকে তার প্রভুর নিকট তার কথা বলার বিষয় ভুলিয়ে দিল) অর্থাৎ যে মুক্তি লাভ করল তাকে ইউসুফ যে অনুরোধ করেছিলেন তা বাদশাহর কাছে আলোচনা করতে শয়তান তাকে ভুলিয়ে দিল। মুজাহিদ, মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক প্রমুখ আলিম এ কথাই বলেছেন।

এটাই সঠিক এবং এটাই আহলি কিতাবগণের বক্তব্য।

w w فی ا مسجن چۂ & پنئن ۰

(ফলে ইউসুফ কয়েক বছর কারাগারে রইল) ৫১.৯ শব্দটি তিন থেকে নয় পর্যন্ত সংখ্যার জন্যে ব্যবহৃত হয়; কারও মতে সাত পর্যন্ত, কারও মতে পাচ পর্যন্ত। কারও মতে দশের নিচে যে কোন সংখ্যার জন্যে এর ব্যবহার হয়। ছালাবী এসব মতামত বর্ণনা করেছেন। বলা হয়ে থাকে $১৬.৭ °-৯ এবং UL৯৩ – ৯ ব্যাকরণবিদ ফাররার মতে, দশের নিচের সংখ্যার জন্যে – এর ব্যবহার বৈধ নয় বরং তার জন্যে — • • শব্দ ব্যবহার করা হয়।

উক্ত দু’খানা আয়াত দ্বারা ফাররার মতামত রদ হয়ে যায়। ফাররার মতে ৫-৬ -এর ۴۹3।( 3}ه ۶ تسعین ۴ک)}ه بیضعة عشر بیضعة عشرون 3 il}ه آک)|تTگ کGمه ۹۹له 5 ك -(-T) عشر .40615ة 5FGRialة 1 llة ITCR* 461 بضع و الف – 518 لك بضع ومائة উর্ধের ক্ষেত্রে ৫-১১-এর ব্যবহার হবে না। সুতরাং ১.১.– &-১ বলা যাবে কিন্তু — ০৯ | ll 1 S GR3 এ মতও সঠিক নয়। 6कन्मन्मة كITCة 1611ة وتسعون بضعة وعشرون

হাদীসে এসেছে :

ঈমানের ষাটের উপরে, ভিন্ন রেওয়ায়তে সত্তরের উপরে শাখা আছে: তন্মধ্যে সর্ব উপরের শাখা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা এবং সর্বনিমের শাখা পথের উপর থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে দেওয়া। (সহীহ বুখারী) কেউ কেউ বলেছেন ২-৫% হেঁ; ঐL.৫%,। … … এর –~) (সর্বনাম) ইউসুফ নির্দেশ করেছে। কিন্তু তাদের এ মত অত্যন্ত দুর্বল। যদিও এ মত ইব্‌ন আব্বাস (রা) ও ইকরিমার বলে বর্ণনা করা হউক না কেন। ইব্‌ন জারীর এ প্রসঙ্গে যে হাদীসের উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণরূপে দুর্বল ও অগ্রহণযোগ্য। ইবরাহীম ইব্‌ন ইয়াখীদ আল-খাওয়ী আল-মাককী (র) এ হাদীসের সনদে একক বৰ্ণনাকারী। অথচ তার বর্ণনা অগ্রহণযোগ্য। অপর দিকে হাসান-ও কাতাদা (র)-এর মুরসাল বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। আর এ

স্থলে তো তা আরও বেশি অগ্রহণযোগ্য। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

সহীহ ইব্‌ন হিব্বানে হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কারাগারে অধিককাল পর্যন্ত আবদ্ধ থাকার কারণ সম্পর্কে এক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। হাদীসটি আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : আল্লাহ ইউসুফের প্রতি রহম করুন, তিনি যদি এg (4, 25% ‘তোমার প্রভুর কাছে আমার কথা বলবে’ কথাটি না বলতেন, তবে তাকে অতদিন কারাগারে থাকতে হত না। আল্লাহ তা’আলা হযরত লুত (আ)-এর প্রতিও রহম করুন; কারণ তিনি তাঁর

কওমিকে বলেছিলেন।–তোমাদের মুকাবিলায় আমার যুদি সুজু শুক্তি থাকত বিস্তৃত্ব! কােন শক্ত

অবলম্বনের আশ্রয় পেতাম |

আল্লাহ যত নবী প্রেরণ করেছেন তাদেরকে বিপুল সংখ্যক লোক বিশিষ্ট গোত্ৰেই প্রেরণ

করেছেন।

কিন্তু এ হাদীস এই সনদে মুনকার। তাছাড়া মুহাম্মদ ইব্‌ন আমর ইব্‌ন আলকামা সমালোচিত রাবী। তার বেশ কিছু একক বৰ্ণনায় বিভিন্ন রকম দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষত এ শব্দগুলো একান্তই মুনকার। ইমাম বুখারী ও মুসলিমের হাদীসও উক্ত হাদীসকে ভুল প্রতিপন্ন করে।

রাজা বলল, ‘আমি স্বপ্নে দেখলাম, সাতটি স্থূলকায় গাভী ওদেরকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং দেখলাম সাতটি সবুজ শীষ ও অপর সাতটি শুষ্ক। হে প্ৰধানগণ! যদি তোমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা করতে পার তবে আমার স্বপ্ন সম্বন্ধে অভিমত দাও।’ ওরা বলল, ‘এটা অর্থহীন স্বপ্ন এবং আমরা এরূপ স্বপ্ল-ব্যাখ্যায় অভিজ্ঞ নই।’ দু’জন কারাবন্দীর মধ্যে যে মুক্তি পেয়েছিল এবং দীর্ঘকাল পরে যার স্মরণ হল, সে বলল, আমি এর তাৎপর্য তোমাদেরকে জানিয়ে দেব। সুতরাং তোমরা আমাকে পাঠাও। সে বলল, হে ইউসুফ! হে সত্যবাদী! সাতটি স্থূলকায় গাভী, তাদেরকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষ ও অপর সাতটি শুষ্ক শীষ সম্বন্ধে তুমি আমাদেরকে ব্যাখ্যা দাও। যাতে আমি তাদের কাছে ফিরে যেতে পারি ও যাতে তারা অবগত হতে পারে। ইউসুফ বলল, ‘তোমরা সাত বছর একাদিক্ৰমে চাষ করবে। তারপর তোমরা যে শস্য সংগ্ৰহ করবে তার মধ্যে যে সামান্য পরিমাণ তোমরা ভক্ষণ করবে, তা ব্যতীত সমস্ত শীষ সমেত রেখে দিবে, এবং এরপর আসবে সাতটি কঠিন বছর, এ সাত বছর যা পূর্বে সঞ্চয় করে রাখবে লোকে তা খাবে, কেবল সামান্য কিছু যা তোমরা সংরক্ষণ করবে তা ব্যতীত। এবং এরপর আসবে এক বছর, সে বছর মানুষের জন্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে এবং সে বছর মানুষ প্রচুর ফলের রস নিংড়াবে। (১২ : ৪৩-৪৯)

এখানে হযরত ইউসুফ (আ)-এর কারাগার থেকে সসম্মানে বের হওয়ার কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। তা এভাবে যে, মিসরের বাদশাহ রায়্যান ইব্‌ন নূহ উপরোক্ত স্বপ্নটি দেখেন। তার বংশ লতিকা হচ্ছে : রায়্যান ইবনুল ওলীদ ইব্‌ন ছারওয়ান ইব্‌ন আরাশাহ ইব্‌ন ফারান ইব্‌ন আমর ইব্‌ন আমলাক ইব্‌ন লাউয ইব্‌ন সাম। আহলি কিতাবগণ বলেন, : বাদশাহ স্বপ্নে দেখেন যে, তিনি এক নদীর তীরে দাড়িয়ে আছেন। হঠাৎ সেখান থেকে সাতটি মোটাতাজা গাভী উঠে এসে নদী তীরের সবুজ বাগিচায় চরতে শুরু করে। অতঃপর ঐ নদী থেকে আরও সাতটি দুর্বল ও শীর্ণকায় গাভী উঠে এসে পূর্বের গাভীদের সাথে চরতে থাকে। এরপর এ দুর্বল গাভীগুলো মোটাতাজা গাভীদের কাছে গিয়ে সেগুলোকে খেয়ে ফেলে। এ সময় ভয়ে বাদশাহর ঘুম ভেঙে যায়। কিছুক্ষণ পর বাদশাহ পুনরায় ঘুমিয়ে পড়েন। এবার আবার স্বপ্নে দেখেন, একটি ধান গাছে সাতটি সবুজ শীষ। আর অপর দিকে আছে সাতটি শুকনো ও শীর্ণ শীষ। শুকনো শীষগুলো সবুজ সতেজ শীষগুলোকে খেয়ে ফেলছে। বাদশাহ এবারও ভয়ে ভীত হয়ে ঘুম

8V8

থেকে জেগে উঠেন। পরে বাদশাহ পারিষদ ও সভাসদবর্গের কাছে স্বপ্নের ‘বর্ণনা দিয়ে এর ব্যাখ্যা জিজ্ঞেস করলেন। কিন্তু তারা কেউই স্বপ্নের ব্যাখ্যায় পারদশী ছিল না। বরং قالوا তারা বলল, এটা তো অর্থহীন স্বপ্ন) অর্থাৎ এটা হয়ত রাত্রিকালের স্বপ্ন( اشفان اجلا বিভ্ৰাট। এর কোন ব্যাখ্যা নেই। এছাড়া স্বপ্নের ব্যাখ্যা দানে আমরা পারদশীও নই। তাই তারা বলল : 64][6} ¢9©Y$ &g{L» & 1 , %% (আর আমরা স্বপ্নের ব্যাখ্যা দানে অভিজ্ঞ নই।) এ সময় সেঁই কয়েদিটির ইউসুফ (আ)-এর কথা স্মরণে পড়ল যে কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেছিল এবং যাকে হযরত ইউসুফ (আঃ) অনুরোধ করেছিলেন তার মনিবের নিকট ইউসুফ (আঃ)-এর কথা আলোচনা করতে। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত সে ঐ কথা তুলে রয়েছিল। মূলত এটা ছিল আল্লাহ নির্ধারিত তকদীর এবং এর মধ্যে আল্লাহর নিগুঢ় রহস্য নিহিত ছিল। ঐ মুক্ত কয়েদী যখন বাদশাহর স্বপ্নের কথা শুনল ও এর ব্যাখ্যা প্রদানে সকলের অক্ষমতা দেখল, তখন ইউসুফ (আঃ)-এর কথা ও তাঁর অনুরোধের কথা স্মরণ পড়ল। আল্লাহ তাই বলেছেন 3 JL4% (দু’জন কারাবন্দীর মধ্য থেকে যে ব্যক্তি মুক্তি اكزى نجا وثهما وأذكر بعد اما লাভ করেছিল এবং দীর্ঘকাল পরে যার স্মরণ হয়েছিল, সে বলল,)… … অর্থ প্রচুর সময়ের পর অর্থাৎ কয়েক বছর পর। ইব্‌ন আব্বাস (রা) ইকরিম (রা) ও দাহহাক (র)-এর কিরাআত অনুযায়ী ) 5819 44( أمثلة)-এর অর্থ ৬L. II — ভুলে যাওয়ার পর স্মরণ হল, মুজাহিদের কিরাআত ধ_•। এ • মীমের উপর সাকিন; এর অর্থও ভুলে যাওয়া (J -1) : f

امهت و کنت لا انسی حدیثا – کذالک الد هر یزری بالعقول . অর্থাৎ— ‘আমি ইদানীং অনেক কথা তুলে যাই। অথচ ভুলে যাওয়ার দোষ আমার মধ্যে ছিল না। এভাবেই যুগের বিবর্তন জ্ঞানকে কলংকিত করে দেয়।’ পারিষদবর্গ ও বাদশাহকে – উদ্দেশ করে সে বলল, أنَّا أنبئكم بتأويله فَارُ يسلؤث (আমি আপনাদেরকে এ স্বপ্নের তাৎপর্য জানাতে পারব। সুতরাং আর্মার্কে পাঠিয়ে দিন) অর্থাৎ ইউসুফ (আ)-এর কাছে। তারপর ইউসুফ (আঃ)-এর কাছে গিয়ে সে বলল?

‘হে ইউসুফ! হে সত্যবাদী! সাতটি মোটাতাজা গাভী, তাদেরকে সাতটি শীর্ণকায় গাভী ভক্ষণ করছে এবং সাতটি সবুজ শীষকে অপর সাতটি শুষ্ক শীষ খেয়ে ফেলছে—এ স্বপ্নের আপনি ব্যাখ্যা বলে দিন। যাতে আমি লোকদের কাছে ফিরে গিয়ে বলতে পারি এবং তারাও জানতে পারে।’ (১২ : ৪৬)

আহলি কিতাবদের মতে, বাদশাহর কাছে সাকী ইউসুফ (আঃ)-এর আলোচনা করে। বাদশাহ ইউসুফ (আ)-কে দরবারে ডেকে এনে স্বপ্নের বৃত্তান্ত তাঁকে জানান এবং ইউসুফ (আ) তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে শুনান। এটা ভুল। আহলি কিতাবদের পণ্ডিত ও রাব্বানীদের মনগড়া

8Ն(:

কথা। সঠিক সেটাই যা আল্লাহ কুরআনে বলেছেন। যা হোক, সাকীর কথার উত্তরে ইউসুফ (আ) কোন শর্ত ছাড়াই এবং আশু মুক্তি দাবি না করেই তাৎক্ষণিকভাবে বাদশাহর স্বপ্নের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে শুনালেন এবং বলে দিলেন, প্রথম সাত বছর স্বচ্ছন্দময় হবে এবং তারপরের সাত বছর দুৰ্ভিক্ষ থাকবে।

(এরপর আসবে এক বছর। সে বছরে মানুষের জন্যে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে)। ফলে প্রচুর ফসল ফলবে ও মানুষ সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে থাকবে। ………. */ ** *6 (সে বছরে তারা প্রচুর রস নিংড়াবে) অর্থাৎ আখ, আঙ্গুর, যয়াতুন, তিল ইত্যাদির রস র্বের করবে— তাদের অভ্যাস অনুযায়ী। স্বপ্নের ব্যাখ্যার সাথে হযরত ইউসুফ (আঃ) সচ্ছলতার সময় ও দুর্ভিক্ষকালে তাদের করণীয় সম্পর্কে পথনির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন, প্রথম সাত বছরের ফসলের প্রয়োজনের অতিরিক্ত অংশ শীষসহ সঞ্চয় করে রাখবে। পরের সাত বছরে সঞ্চিত ফসল অল্প অল্প করে খরচ করবে। কেননা এরপরে ফসলের জন্যে বীজ পাওয়া দুষ্কর হতে পারে। এ থেকে হযরত

ইউসুফ (আঃ)-এর প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতার পরিচয় পাওয়া যায়।

  • ~ ) ریوی ۰ران رژی شعلهوون রাজা বলল, তোমরা ইউসুফকে আমার নিকট নিয়ে এস। দূত যখন তাঁর নিকট উপস্থিত হল তখন সে বলল, তুমি তোমার প্রভুর নিকট ফিরে যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস কর, এবং যে নারীগণ হাত কেটে ফেলেছিল তাদের অবস্থা কী? আমার প্রতিপালক তাদের ছলনা সম্পর্কে সম্যক অবগত। রাজা নারীগণকে বলল, ‘যখন তোমরা ইউসুফ থেকে অসৎ কর্ম কামনা করেছিলে, তখন তোমাদের কী হয়েছিল! তারা বলল, অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! আমরা ওর মধ্যে কোন দোষ দেখিনি। আয়ীয্যের স্ত্রী বলল, এক্ষণে সত্য প্ৰকাশ হল। আমিই তার থেকে অসৎ কর্ম কামনা করেছিলাম— সে তো সত্যবাদী। সে বলল, আমি এটা বলেছিলাম, যাতে সে জানতে পারে যে, তার অনুপস্থিতিতে আমি তার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করিনি এবং আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্র সফল করেন না। সে বলল, আমি আমাকে নির্দোষ মনে করি না। মানুষের মন অবশ্যই মন্দকর্মপ্রবণ। কিন্তু সে নয়, যার প্রতি আমার প্রতিপালক দয়া করেন। আমার প্রতিপালক অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (১২ : ৫০-৫৩) (১ম খণ্ড) ৫৯

8ტNტ

বাদশাহ যখন হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর প্রজ্ঞা, বুদ্ধিমত্তা, সঠিক সিদ্ধান্ত ও অনুধাবন ক্ষমতার সম্যক পরিচয় পেলেন, তখন তাকে তার দরবারে উপস্থিত করার আদেশ দেন। যাতে করে তিনি তাঁকে কোন দায়িত্বপূর্ণ পদে নিয়ােজিত করতে পারেন। দূত যখন ইউসুফ (আঃ)-এর কাছে আসে তখন হযরত ইউসুফ (আঃ) সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তিনি জেলখানা থেকে ততক্ষণ পর্যন্ত বের হবেন না, যতক্ষণ না প্রত্যেক ব্যক্তি জানতে পারে যে, তাকে অন্যায়ভাবে ও শক্রিতাবশত কারাগারে আবদ্ধ করা হয়েছিল এবং মহিলারা তার প্রতি যে দোষ আরোপ করেছে তা সম্পূর্ণ অমূলক অপবাদ, তিনি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। তাই তিনি বললেন : J} & ১৩) %11% (তুমি তোমার প্রভুর কাছে চলে যাও) অর্থাৎ বাদশাহর কাছে।

(এবং তাকে জিজ্ঞেস কর, যেসব মহিলা নিজেদের হাত কেটে ফেলেছিল তাদের অবস্থা কী? আমার প্রতিপালক তো তাদের ছলনা সম্পর্কে সম্যক অবগত।) কেউ কেউ এখানে ৫%%এর অর্থ মুনিব ও প্ৰভু বলেছেন। অর্থাৎ আমার মনিব আৰ্যীয আমার পবিত্রতা এবং আমার প্রতি আরোপিত অপবাদ সম্পর্কে ভাল করেই জানেন। সুতরাং বাদশাহকে গিয়ে বল, তিনি ঐ মহিলাদেরকে জিজ্ঞেস করে দেখুন যে, তারা যখন আমাকে অন্যায় ও অশ্লীল কাজে প্ররোচিত করার চেষ্টা করেছিল, তখন আমি কত দৃঢ়ভাবে আত্মরক্ষা করেছিলাম। মহিলাদের কাছে জিজ্ঞেস কুরু হলে তারা বুঝবে যে, প্রকৃত্যু ঘটনা কি ছিল এবং আমিই-বা কী ভাল কাজ كرة الث قة لكر.49481 914) وقثني كاشاركو ما عشنا علثو من ستور?86588118ة মহিমা! আমরা ইউসুফের মধ্যে কোন দােয়ু দেখিনি) ঐ সময় قالت أمركة العزيز (আষীয্যের স্ত্রী বলল) তিনি ছিলেন যুলায়খা। … <। ৬০% (.242 381 (এক্ষণে সত্য প্রকাশিত হল) অর্থাৎ যেটা বাস্তবুও সত্য তৃ প্ৰকাশিতু ও সুস্পষ্ট হয়ে গেল। আর সত্যই অনুসরণযােগ্য। W KWA . Eو در ۶ / ۴ الغ ‘ ላ ረ ሶ / ‘,ሪ ሶ / ሥ / 4 گئی۔ RN ITة كة ISR* بها 6865 STRR STR) أنا راودته عن نفسه ولته لمن الضإدقين করেছিলাম। বস্তৃত সে-ই সত্যবাদী () অর্থাৎ সে দােষমুক্ত। সে আমার কাছে অসৎকর্ম কামনা করেনি এবং তাকে মিথ্যা, জুলুম, অন্যায়, ও অপবাদ দিয়ে কারাবন্দী করা হয়েছে।

আমি এটি বলছিলাম যাতে সে জানতে পারে যে, তার অগোচরে আমি তার বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। আর আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্র সফল করেন না।

কারো কারো মতে, এটা হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কথা। তখন অর্থ হবে : আমি এ বিষয়টি যাচাই করতে চাই এ উদ্দেশ্যে, যাতে আষীয জানতে পারে যে, তার অনুপস্থিতিতে আমি তার সাথে কোন বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। আবার কারো কারো মতে, এটা যুলায়খার উক্তি। তখন অর্থ হবে এই যে, আমি একথা স্বীকার করছি এ উদ্দেশ্যে, যাতে আমার স্বামী জানতে পারে যে, আমি মূলত তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতার কোন কাজ করিনি। এটা অবশ্য তার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু আমার সাথে কোন অশ্লীল কাজ সংঘটিত হয়নি। পরবর্তীকালের অনেক ইমামই এই মতকে সমর্থন করেন। ইব্‌ন জারির ও ইব্‌ন আবী হাতিম (র) প্রথম মত ব্যতীত অন্য কিছু বর্ণনাই করেননি।

غفور رحيم. আমি নিজেকে নির্দোষ মনে করি না। মানুষের মন অবশ্যই মন্দকর্মপ্রবণ। কিন্তু সে নয় যার

প্রতি আমার প্রতিপালক দয়া করেন। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

কেউ বলেছেন, এটা ইউসুফ (আঃ)-এর উক্তি, আবার কেউ বলেছেন যুলায়খার উক্তি। পূর্বের আয়াতের দুই ধরনের মতামত থাকায় এ আয়াতেও দুই প্রকার মতের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটা যুলায়খার বক্তব্য হওয়াটাই অধিকতর যুক্তিযুক্ত ও সঙ্গত।

র বাণী :

রাজা বলল, ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসো। আমি তাকে আমার একান্ত সহচর নিযুক্ত করব। তারপর রাজা যখন তার সাথে কথা বলল, তখন রাজা বলল, আজ তুমি আমাদের কাছে মর্যাদাশালী ও বিশ্বাসভাজন হলে। ইউসুফ বলল, ‘আমাকে দেশের ধন-সম্পদের উপর কর্তৃত্ব প্ৰদান করুন! আমি বিশ্বস্ত রক্ষক ও সুবিজ্ঞ।’ এভাবে ইউসুফ (আঃ)-কে আমি সে দেশে প্রতিষ্ঠিত করলাম। সে সেদেশে যেখানে ইচ্ছা অবস্থান করতে পারত। আমি যাকে ইচ্ছা তার প্রতি দয়া করি; আমি সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করি না। যারা মুমিন এবং মুত্তাকী তাদের পরলোকের পুরস্কারই উত্তম। (১২ : ৫৪-৫৭)

ইউসুফ (আঃ)-এর উপর যে অপবাদ দেয়া হয়েছিল তা থেকে যখন তার মুক্ত ও পবিত্র থাকার কৃথা বাদশাহর কাছে সুস্পষ্ট হল তখন তিনি বললেন : 4.2, … …;-) এ3%, 2.8% – (ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে এসাে, আমি তাকে আর্মার একান্ত সঁহৰ্চর করে রাখব।) অর্থাৎ আমি তাকে আমার বিশেষ পারিষদ ও রাষ্ট্রীয় উচ্চমর্যাদা দিয়ে আমার পারিষদভুক্ত করে রাখব। তারপর বাদশাহ যখন ইউসুফ (আ)-এর সাথে কথা বললেন, এবং তার কথাবার্তা শুনে তাঁর অবস্থাদি সম্যক জানলেন, তখন বললেন, : &:1954 644 341 50%, (আজ তুমি আমাদের কাছে মর্যাদাশীল ও বিশ্বাসভাজন হলে)

(ইউসুফ বলল : আমাকে রাজ্যের ধন-সম্পদের উপর কর্তৃত্ব প্রদান করুন; আমি বিশ্বস্ত

রক্ষক ও সুবিজ্ঞ () হযরত ইউসুফ (আঃ) বাদশাহর কাছে ধন-ভাণ্ডারের উপর তদারকির দায়িত্বভার চাইলেন। কারণ, প্রথম সাত বছর পর দুর্ভিক্ষের কালে সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশংকা

დახr

ছিল। সুতরাং সে সময় আল্লাহর পছন্দ অনুযায়ী মানুষের কল্যাণ সাধন ও তাদের প্রতি সদয় আচরণ করার ব্যাপারে যাতে ক্ৰটি না হয়, সে লক্ষ্যে তিনি এই পদ কামনা করেন। বাদশাহকে তিনি আশ্বস্ত করেন যে, তাঁর দায়িত্বে যা দেয়া হবে তা তিনি বিশ্বস্ততার সাথে সংরক্ষণ করবেন। এবং রাজস্ব বিষয়ে উন্নতি ও উৎকর্ষ বিধানে তিনি বিশেষ অভিজ্ঞতার পরিচয় দেবেন। এতেই প্রমাণিত হয় যে, যে ব্যক্তি নিজের আমানতদারী ও দায়িত্ব পালনের প্রতি দৃঢ় আস্থাশীল, সে তার যোগ্য পদের জন্য আবেদন করতে পারে।

আহলি কিতাবদের মতে, ফিরআউন (মিসরের বাদশাহ) ইউসুফ (আঃ)-কে পরম মর্যাদা দান করেন এবং সমগ্র মিসর দেশের কর্তৃত্ব তার হাতে তুলে দেন। নিজের বিশেষ আংটি ও রেশমী পোশাক তিনি তাঁকে পরিয়ে দেন, তাকে স্বর্ণের হারে ভূষিত করে এবং মসনদের দ্বিতীয় আসনে তাকে আসীন করেন। তারপর বাদশাহর সম্মুখেই ঘোষণা করা হলো : ‘আজ থেকে আপনিই দেশের প্রকৃত শাসক। কেবল নিয়মতান্ত্রিক প্রধানরূপে রাজ সিংহাসনের অধিকারী হওয়া ছাড়া অন্য কোন দিক দিয়েই আমি আপনার চেয়ে অধিক ক্ষমতাশালী নই। তারা বলেন, ইউসুফ (আঃ)-এর বয়স তখন ত্ৰিশ বছর এবং এক অভিজাত বংশীয়া মহিলা ছিলেন তার স্ত্রী।

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ছালাবী বলেছেন, মিসরের বাদশাহ আয়ীযে মিসর কিতফীরকে পদচ্যুত করে ইউসুফ (আঃ)-কে সেই পদে বসান। কথিত আছে, কিতফীরের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী যুলায়খাকে বাদশাহ ইউসুফের সাথে বিবাহ দেন। ইউসুফ (আঃ) যুলায়খাকে কুমারী অবস্থায় পান। কেননা, যুলায়খার স্বামী স্ত্রী সংসর্গে যেতেন না। যুলায়খার গর্ভে ইউসুফ (আ)-এর দুই পুত্ৰ সন্তানের জন্ম হয়। তাদের নাম আফিরাইম ও মানশা। এভাবে ইউসুফ (আঃ) মিসরের কর্তৃত্ব লাভ করে সে দেশে ন্যায়বিচার কায়েম করেন এবং নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের কাছেই বিশেষ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।

কথিত আছে, ইউসুফ (আঃ) যখন কারাগার থেকে বের হয়ে বাদশাহর সম্মুখে আসেন, তখন তাঁর বয়স হয়েছিল ত্রিশ বছর। বাদশাহ সত্ত্বরটি ভাষায় তার সাথে কথা বলেন। যখন যে ভাষায় তিনি কথা বলেন, ইউসুফ (আঃ) তখন সেই ভাষায়ই তার উত্তর দিতে থাকেন। অল্প

বয়স হওয়া সত্ত্বেও তার এ অসাধারণ যোগ্যতা দেখে বাদশাহ বিস্মিত হন। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

(এভাবে আমি ইউসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠিত করি।) অর্থাৎ কারাগারের সংকীর্ণ বন্দী জীবন

শেষে তাকে মুক্ত করে মিসরের সর্বত্র স্বাধীনভাবে চলাচলের ব্যবস্থা করে দিই। يكب أمثها

– سمي AL44 442 (সে তথায় যেখানে ইচ্ছা নিজের জন্যে স্থান করে নিতে পারত) অর্থাৎ মিসরের

যে কোন জায়গায় স্থায়িভাবে থাকার ইচ্ছা করলে সম্মান ও মর্যাদার সাথে তা করার সুযোগ

(আমি যাকে ইচ্ছা তাকে আমার রহমত দান করি এবং সৎ কর্মশীলদের বিনিময় আমি বিনষ্ট

করি না।) অর্থাৎ এই যা কিছু করা হল তা একজন মুমিনের প্রতি আল্লাহর দান ও অনুগ্রহ

বিশেষ। এ ছাড়াও মুমিনের জন্যে রয়েছে। পরকালীন প্রভূত কল্যাণ ও উত্তম প্রতিদান।

სტსტპა

এ কারণেই আল্লাহ তা’আলা বলেছেন : /که لس س.

(যারা মু’মিন এবং মুত্তাকী তাদের আখিরাতের পুরস্কারই উত্তম :)। কথিত আছে, যুলায়খার স্বামী ইতকীরের মৃত্যুর পর বাদশাহ ইউসুফ (আঃ)-কে তার পদে নিযুক্ত করেন এবং তার স্ত্রী যুলায়খাকে ইউসুফ (আঃ)-এর সাথে বিয়ে দেন। ইউসুফ (আঃ) নিজেকে একজন সত্যবাদী ও ন্যায়নিষ্ঠ উষীর হিসেবে প্রমাণিত করেন।

মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাক (র) বলেন, মিসরের বাদশাহ ওলীদ ইব্‌ন রায়্যান ইউসুফ (আঃ)-এর হাতে ইসলাম গ্ৰহণ করেন। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

জনৈক কবি বলেছেন :

অর্থ ৪ ভয়-ভীতির সংকীর্ণতার পরে থাকে নিরাপত্তার প্রশস্ততা আর আনন্দ স্মৃতির পূর্বে থাকে চূড়ান্ত পেরেশানী ও চিন্তা। অতএব, তুমি নিরাশ হয়ে না। কেননা আল্লাহ হযরত ইউসুফ (আ)-কে অন্ধ কারাগার থেকে মুক্ত করে তার ধন-ভাণ্ডারের মালিক করে দিয়েছিলেন।

ইউসুফের ভাইয়েরা আসল এবং তার কাছে উপস্থিত হল। সে ওদেরকে চিনল; কিন্তু ওরা তাকে চিনতে পারল না এবং সে যখন ওদের সামগ্ৰীীর ব্যবস্থা করে দিল, তখন সে বলল, ‘তোমরা আমার কাছে তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইকে নিয়ে এসো। তোমরা কি দেখছি না যে, আমি মাপে পূর্ণ মাত্রায় দেই? আমি উত্তম মেযবান? কিন্তু তোমরা যদি তাকে আমার কাছে নিয়ে না আসি তবে আমার কাছে তোমাদের জন্যে কোন বরাদ্দ থাকবে না এবং তোমরা আমার নিকটবতী হবে না।’ তারা বলল, ‘তার বিষয়ে আমরা তার পিতাকে সম্মত করার চেষ্টা করব এবং আমরা নিশ্চয়ই এটা করব।’ ইউসুফ তার ভৃত্যদেরকে বলল, ‘ওরা যে পণ্যমূল্য দিয়েছে তা তাদের মালপত্রের মধ্যে রেখে দাও–যাতে স্বজনদের কাছে প্ৰত্যাবর্তনের পর তারা বুঝতে পারে যে, এটা প্রত্যপর্ণ করা হয়েছে; তাহলে তারা পুনরায় আসতে পারে।’ (সূরা ইউসুফ : Gb-VS)

এখানে আল্লাহ হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইদের মিসরে আগমনের বিষয়ে জানাচ্ছেন যে, দুর্ভিক্ষের বছরগুলোতে যখন সমগ্ৰ দেশ ও জাতি তার করাল গ্রাসে পতিত হয়, তখন খাদ্য সংগ্রহের জন্যে তারা মিসরে আগমন করে। ইউসুফ (আঃ) ঐ সময় মিসরের দীনী ও দুনিয়াবী সার্বিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। ভাইয়েরা ইউসুফ (আঃ)-এর কাছে উপস্থিত হলে তিনি তাদের চিনে ফেলেন। কিন্তু তারা তাঁকে চিনতে পারল না। কারণ ইউসুফ (আঃ) এত বড় উচ্চ পদ-মৰ্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারেন এটা তাদের কল্পনারও অতীত ছিল। তাই তিনি তাদেরকে চিনলেও তারা তাকে চিনতে পারেনি।

আহলি কিতাবদের মতে, ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা তার দরবারে উপস্থিত হয়ে তাকে সিজদা করে। এ সময় ইউসুফ (আঃ) তাদেরকে চিনে ফেলেন। তবে তিনি চাচ্ছিলেন, তারা যেন তাঁকে চিনতে না পারে। সুতরাং তিনি তাদের প্রতি কঠোর ভাষা ব্যবহার করেন এবং বলেন, তোমরা গোয়েন্দা বাহিনীর লোক- আমার দেশের গোপন তথ্য নেয়ার জন্যে তোমরা এখানে এসেছ! তারা বলল, আল্লাহর কাছে পানাহ চাই! আমরা তো ক্ষুধা ও অভাবের তাড়নায় পরিবারবর্গের জন্যে খাদ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যেই এখানে এসেছি। আমরা একই পিতার সন্তান | বাড়ি কিনআন। আমরা মোট বার ভাই। একজন আমাদের ছেড়ে চলে গেছে, সর্ব কনিষ্ঠজন পিতার কাছেই আছে। এ কথা শুনে ইউসুফ (আঃ) বললেন, আমি তোমাদের বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করে দেখব। আহলি কিতাবরা আরও বলে যে, ইউসুফ (আঃ) ভাইদেরকে তিনদিন পর্যন্ত বন্দী করে রাখেন। তিনদিন পর তাদেরকে মুক্তি দেন, তবে শামউন নামক এক ভাইকে আটক করে রাখেন। যাতে তারা অপর ভাইটিকে পরবর্তীতে নিয়ে আসে। আহলি কিতাবদের এ বর্ণনার কােন কােন দিক আপত্তিকর। আল্লাহর বাণী : ০১:১৬, 5, ‘454… …, (ইউসুফ যখন তাদের রসদের ব্যবস্থা করে দিলেন) অর্থাৎ তিনি কাউকে এক উট বোঝাইর বেশি খাদ্য রসদ প্রদান কুরতেন না। সে নিয়ম অনুযায়ী তাদের প্রত্যেককে এক উট বোঝাই রসদ প্রদান করলেন। ۹۹عی) قال اث ثوزشي رباب آنگم این اپیگم| তোমাদের বৈমাত্রেয় ভাইটিকে আমার কাছে নিয়ে এসো) ইউসুফ (আঃ) তাদেরকে তাদের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তারা বলেছিল, আমরা বার ভাই ছিলাম। আমাদের মধ্যকার একজন চলে গেছে। তার সহোদরটি পিতার কাছে রয়েছে।

ইউসুফ (আঃ) বললেন, আগামী বছর যখন তোমরা আসবে তখন তাকে সাথে নিয়ে এসো। কি আমি,4 4 /۸ / بس و ۸ . اعی ۸ / / ) ، 4 ۸ / ) 2 ^ . ، ۸ ) পূর্ণ মাত্রায় দেই এবং মেহমানদেরকে সমাদর করি?) অর্থাৎ আমি তোমাদেরকে উত্তমভাবে মেহমানদারী করেছি, তোমাদের থাকার ভাল ব্যবস্থা করেছি। এ কথা দ্বারা তিনি অপর ভাইকে আনার জন্যে তাদেরকে উৎসাহিত করেন। যদি তারা তাকে না আনে। তবে তাদেরকে তার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, :

যদি তাকে আমার কাছে নিয়ে না। আস, তাহলে আমার কাছে তোমাদের কোন বরাদ থাকবে না এবং তোমরা আমার নিকটবতী হবে না।

8 ԳS

অর্থাৎ আমি তোমাদেরকে রসদও দেব না। আমার কাছে ঘোিষতেও দেব না। তাদেরকে প্রথমে যেভাবে বলেছিলেন এটা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। সুতরাং উৎসাহ ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে তাকে হাযির করার জন্যে তিনি এ ব্যবস্থা গ্ৰহণ করেন। 504 144 4, … … 1514 (তারা বললঃ আমরা তার সম্পর্কে তার পিতাকে সম্মত করার চেষ্টা করব।) অর্থাৎ আমাদের * সাথে তাকে আনার জন্যে এবং আপনার কাছে হাযির করার জন্যে সম্ভাব্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাব وركا لقاعاًؤك (এবং আমরা তা অবশ্যই করব।) অর্থাৎ তাকে আনতে আমরা অবশ্যই সক্ষম হব। তারপর হযরত ইউসুফ (আঃ) তাদের প্রদত্ত পণ্যমূল্য এমনভাবে তাদের মালামালের

মধ্যে রেখে দেয়ার জন্যে ভৃত্যদেরকে নির্দেশ দেন যাতে তারা তা টের না পায়।

/ / / / / / / MW W. a / A ہ۶ہ / %

لعلّهم يغرفوئها إذا انقلبول لى أهلهم لعلهم يرجعون . যাতে স্বজনদের কাছে প্রত্যাবর্তনের পর তারা বুঝতে পারে যে তা প্রত্যাৰ্পণ করা হয়েছে। তাহলে তারা পুনরায় আসতে পারে। মূল্য ফেরত দেওয়ার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কেউ বলেছেন, হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর ইচ্ছা ছিল, যখন তারা দেশে গিয়ে তা লক্ষ্য করবে তখন তা ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। অন্য কেউ বলেছেন, হযরত ইউসুফ (আ) আশংকা করছিলেন যে, দ্বিতীয়বার আসার মত অর্থ হয়তো থাকবে না। কারও মতে, ভাইদের নিকট থেকে খাদ্য দ্রব্যের বিনিময় গ্ৰহণ করা তার কাছে নিন্দনীয় বলে মনে হচ্ছিল।

তাদের পণ্যমূল্য কি জিনিস ছিল সে ব্যাপারে মুফাসসিরদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। পড়ে সে সম্পর্কে আলোচনা আসছে। আহলি কিতাবদের মতে তা ছিল রৌপ্য ভর্তি থলে। এ মতই

যথার্থ মনে হয়।

‘তারপর তারা যখন তাদের পিতার কাছে ফিরে আসল তখন তারা বলল, ‘হে আমাদের পিতা! আমাদের জন্যে বরাদ্দ নিষিদ্ধ করা হয়েছে; সুতরাং আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দিন; যাতে আমরা রসদ পেতে পারি। আমরা অবশ্যই তার রক্ষণাবেক্ষণ করব।’ সে বলল, ‘আমি কি তোমাদেরকে তার সম্বন্ধে সেরূপ বিশ্বাস করব, যেরূপ বিশ্বাস পূর্বে তোমাদেরকে করেছিলাম তার ভাই সম্বন্ধে? আল্লাহই রক্ষণাবেক্ষণে শ্রেষ্ঠ এবং তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।’ যখন ওরা ওদের মালপত্র খুলল তখন ওরা দেখতে পেল ওদের পণ্যমূল্য ওদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে।

ওরা বলল, ‘হে আমাদের পিতা! আমরা আর কি প্রত্যাশা করতে পারি? এতো আমাদের প্রদত্ত পণ্যমূল্য, আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে; পুনরায় আমরা আমাদের পরিবারবর্গকে খাদ্য-সামগ্ৰী এনে দেব এবং আমরা আমাদের ভ্রাতার রক্ষণাবেক্ষণ করব এবং আমরা অতিরিক্ত আর এক উট বোঝাই পণ্য আনব; যা এনেছি তা পরিমাণে অল্প। পিতা বলল, ‘আমি ওকে কখনই তোমাদের সাথে পাঠাব না, যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করা যে, তোমরা ওকে আমার কাছে নিয়ে আসবেই, অবশ্য যদি তোমরা একান্ত অসহায় হয়ে না পড়া।’ তারপর যখন ওরা তার কাছে প্ৰতিজ্ঞা করল, তখন সে বলল, ‘আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি, আল্লাহ তার বিধায়ক।’

সে বলল, ‘হে আমার পুত্ৰগণ! তোমরা এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করো না। ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে আমি তোমাদের জন্য কিছু করতে পারি না। বিধান আল্লাহরই। আমি তারই উপর নির্ভর করি এবং যারা নির্ভর করতে চায় তারা আল্লাহরই উপর নির্ভর করুক এবং যখন তারা তাদের পিতা তাদেরকে যেভাবে আদেশ করেছিল সে-ভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে তা তাদের কোন কাজে আসল না; ইয়াকুব কেবল তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল এবং সে অবশ্যই জ্ঞানী ছিল। কারণ আমি তাকে শিক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এটি অবগত নয়। (১২ : ৬৩-৬৮)।

মিসর থেকে তাদের পিতার কাছে ফিরে আসার পরের ঘটনা আল্লাহ তা’আলা এখানে বর্ণনা করছেন : পিতাকে তারা বলে : 0^র্বf (x & y_A (আমাদের জন্যে বরাদ নিষিদ্ধ-করা হয়েছে।) অর্থাৎ এ বছরের পরে আপনি যদি আমাদের ভাইকে আমাদের সাথে না পাঠান। তবে আমাদের বরাদ দেওয়া হবে না। আর যদি আমাদের সাথে পাঠান তাহলে বরাদ বন্ধ করা

w ላ / W و لما فتكوا مُنّاعهم وجَك والبضاعتهم. و كارث إليهم قالوا يأبا

  1. جمري ‘ (যখন তারা তাদের মালপত্র খুলল, তখন দেখতে পেল তাদের পণ্যমূল্য ফেরত দেয়া হয়েছে। তারা বলল, পিতা! আমরা আর কি চাইতে পারি?) অর্থাৎ আমাদের পণ্যমূল্যাটাও

ফেরত দেওয়া হয়েছে। এরপর আমরা আর কি আশা করতে পারি? (A14f2 346 (পুনরায় আমরা আমাদের পরিবারবর্গের জন্যে খাদ্য-সামগ্ৰী এনে দেবো যাতে তাদের বছরের ও বাড়ি

8 ԳV)

/ / . ঘরের সংস্থান হতে পারে।) 4145%, UAL / [ £ » • /% (আমরা আমাদের ভাইকে

রক্ষণাবেক্ষণ করব এবং অতিরিক্ত আনতে পারব।) তার কারণে … …< (আর এক উট বোঝাই পণ্য।) ኅ’

仏 %A少

আল্লাহ বলেন : %5° সূর্ব এ1}ওঁ (যা এনেছি তা পরিমাণে অল্প) অর্থাৎ অন্য সন্তানটি গেলে যা পাওয়া যেতো তার তুলনায় যা আনা হয়েছে তা অল্প। হযরত ইয়াকুব (আ) আপন পুত্র বিনয়ামীনের ব্যাপারে অত্যন্ত কুষ্ঠিত ছিলেন। কারণ তার মাঝে তিনি তার ভাই ইউসুফ (আ)-এর ঘাণ পেতেন, সান্তুনা লাভ করতেন এবং তিনি থাকায় ইউসুফকে কিছুটা ভুলে

থাকতেন। তাই তিনি বললেনঃ।(

(পিতা বলল : আমি তাকে কখনই তোমাদের সাথে পাঠাব না। যতক্ষণ না তোমরা আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করা যে, তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবেই। অবশ্য যদি তোমরা বিপদে পরিবেষ্টিত হয়ে একান্ত অসহায় হয়ে না পড়া।) অর্থাৎ তোমরা সকলেই যদি

তাকে আনতে অক্ষম হয়ে পড়, তবে ভিন্ন কথা।

/ a 4 / ‘

فلما أكؤه موثقهم قال الله علي ماكثون وكثرة. (অতঃপর যখন তারা তার কাছে প্রতিজ্ঞা করল তখন তিনি বললেন, : আমরা যে বিষয়ে কথা বলছি আল্লাহ তার বিধায়ক)। পিতা ইয়াকুব (আ) পুত্রদের থেকে অঙ্গীকারনামা পাকাপোক্ত করে নেন। তাদের থেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা আদায় করেন এবং পুত্রের ব্যাপারে সম্ভাব্য সাবধানতা অবলম্বন করেন। কিন্তু কোন সতর্কতাই তাদেরকে ঠেকাতে পারল না (,,;-) ৬০ ও ৩১ ম ৩, ৩১-২)। হযরত ইয়াকুব (আঃ) তাঁর নিজের ও তাঁর পরিবার-পরিজনের খাদ্য-সামগ্বীর প্রয়োজন না হলে কখনও তাঁর প্রিয় পুত্ৰকে পাঠাতেন না। কিন্তু তকদীরেরও কিছু বিধান রয়েছে। আল্লাহ যা চান তাই নির্ধারণ করেন, যা ইচ্ছা তাই গ্রহণ করেন। যে রকম ইচ্ছা সে রকম আদেশ দেন। তিনি প্রজ্ঞাময়, সুবিজ্ঞ। অতঃপর পিতা আপন পুত্রদেরকে শহরে প্রবেশের সময় এক দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। বরং বিভিন্ন প্রবেশদ্বার দিয়ে যেতে বলেন। এর কারণ হিসেবে ইব্‌ন আব্বাস (রা), মুজাহিদ ইব্‌ন ক’ব, কাতাদা ও সুদী (র) বলেন, যাতে তাদের উপর কারও কুদৃষ্টি না পড়ে, সে জন্যে তিনি এরূপ নির্দেশ দিয়েছিলেন, কেননা তাদের অবয়ব ও চেহারা ছিল অত্যধিক আকর্ষণীয় ও সুশ্ৰী। ইবরাহীম নাখাঈ (র) বলেছেন, এরূপ নির্দেশ দেওয়ার কারণ হল, তিনি তাদেরকে বিক্ষিপ্ত করে দিতে চেয়েছিলেন এ উদ্দেশ্যে যে, হয়ত তারা কোথাও ইউসুফ (আঃ)-এর সংবাদ পেয়ে যেতে পারে কিংবা এভাবে তারা বেশি ংখ্যক লােকের কাছে ইউসুফ (আঃ)-এর সুন্ধান জিজ্ঞেস কুরুত্বে পারে। কিন্তু প্রথম মতই

প্ৰসিদ্ধ। এ কারণেই তিনি বললেন, أفنى عَنكُم بن الآور بن شی L_%% (আল্লাহর

ሳለ

বিধানের বিরুদ্ধে আমি তোমাদের জন্যে কিছুই করতে পারি না।)  (১ম খণ্ড) ৬০

যখন তারা তাদের পিতা যেভাবে আদেশ দিয়েছিলেন সেভাবেই প্রবেশ করল, তখন আল্লাহর বিধানের বিরুদ্ধে তা তাদের কোনই কাজে আসল না। ইয়াকুব কেবল তার মনের একটি অভিপ্রায় পূর্ণ করেছিল এবং সে অবশ্যই জ্ঞানী ছিল। কারণ, আমি তাকে শিক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এ বিষয়ে অবগত নয়। (সূরা ইউসুফ : ৬৮)

আহলি কিতাবদের মতে, হযরত ইয়াকুব (আ) পুত্রদের কাছে আষীয্যের উদ্দেশে হাদিয়াস্বরূপ পেস্তা, বাদাম, আখরোট, তারপিন তেল, মধু ইত্যাদি প্রেরণ করেন। এছাড়া প্রথম বারের ফেরত পাওয়া দিরহাম ও আরও অর্থ সংগ্রহ করে তারা মিসরের উদ্দেশে যাত্রা করে।

ওরা যখন ইউসুফের সম্মুখে উপস্থিত হল, তখন ইউসুফ তার সহোদরকে নিজের কাছে রাখল এবং বলল, ‘আমিই তোমার সহোদর, সুতরাং তারা যা করত তার জন্যে দুঃখ করো না।’

8 ዓó

তারপর সে যখন ওদের সামগ্ৰীীর ব্যবস্থা করে দিল, তখন সে তার সহোদরের মালপত্রের মধ্যে পানিপাত্র রেখে দিল। তারপর এক আহবায়ক চিৎকার করে বলল, ‘হে যাত্রীদল! তোমরা নিশ্চয়ই চোর।’ তারা ওদের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তোমরা কী হারিয়েছ?’ তারা বলল, ‘আমরা রাজার পানিপাত্ৰ হারিয়েছি; যে ওটা এনে দেবে সে এক উট বোঝাই মাল পাবে এবং আমি এর জামিন।’ তারা বলল, ‘আল্লাহর শপথ! তোমরা তো জান, আমরা এ দেশে দুস্কৃতি করতে আসিনি এবং আমরা চোরও নাই।’ তারা বলল, ‘যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও তবে তার শাস্তি কী?’ তারা বলল, ‘এর শাস্তি যার মালপত্রের মধ্যে পাত্ৰটি পাওয়া যাবে, সে-ই তার বিনিময়।’ এভাবে আমরা সীমালংঘনকারীদেরকে শাস্তি দিয়ে থাকি।

তারপর সে তার সহোদরের মালপত্র তল্লাশির পূর্বে তাদের মালপত্র তল্লাশি করতে লাগল, পরে তার সহোদরের মালপত্রের মধ্য হতে পাত্ৰটি বের করল। এভাবে আমি ইউসুফের জন্যে কৌশল করেছিলাম। রাজার আইনে তার সহোদরকে সে আটক করতে পারত না, আল্লাহ ইচ্ছা! না করলে। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় উন্নীত করি। প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপর আছে সর্বজ্ঞানী। তারা বলল, ‘সে যদি চুরি করে থাকে তার সহোদরও তো পূর্বে চুরি করেছিল।’ কিন্তু ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে গোপন রাখল এবং তাদের কাছে প্রকাশ করল না; সে মনে মনে বলল, ‘তোমাদের অবস্থা তো হীনতার এবং তোমরা যা বলছি সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।’ ওরা বলল, ‘হে আখীয! এর পিতা আছেন— অতিশয় বৃদ্ধ; সুতরাং এর স্থলে আপনি আমাদের একজনকে রাখুন। আমরা তো আপনাকে দেখছি মহানুভব ব্যক্তিদের একজন। সে বলল, যার কাছে আমরা আমাদের মাল পেয়েছি তাকে ছাড়া অন্যকে রাখার অপরাধ হতে আমরা আল্লাহর শরণ নিচ্ছি। এরূপ করলে আমরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী হব।’ (১২ : ტპა-°iპა)

এখানে আল্লাহ উল্লেখ করছেন সে সব অবস্থার কথা যখন ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা তার সহোদর বিনয়ামীনকে নিয়ে মিসরে তার কাছে উপস্থিত হয়েছিল। ইউসুফ (আঃ) তাকে একান্তে কাছে নিয়ে জানান যে, তিনি তার আপনি সহোদর ভাই। তাকে তিনি এ কথা গোপন রাখতে বলেন এবং ভাইদের দুর্ব্যবহারের ব্যাপারে সান্তুনা দেন এবং অন্য ভাইদের বাদ দিয়ে কেবল বিনয়ামীনকে কাছে রাখার জন্যে ইউসুফ (আঃ) বাহানা অবলম্বন করেন। সুতরাং তিনি নিজের পানপত্র বিনয়ামীনের মালপত্রের মধ্যে গোপনে রেখে দেয়ার জন্যে ভৃত্যদেরকে আদেশ দেন। উক্ত পানিপাত্ৰটি পানি পান এবং লোকজনকে তাদের খাদ্যদ্রব্য মেপে দেয়ার কাজে ব্যবহৃত হত। এরপর তাদের মধ্যে ঘোষণা দেয়া হয় যে, তারা বাদশাহর পানিপাত্ৰ চুরি করেছে, যে ব্যক্তি তা ফিরিয়ে দেবে তার জন্যে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘোষণাকারী তার জন্যে যিম্মাদার হল। কিন্তু তারা ঘোষণাকারীর দিকে তাকিয়ে এ কথা বলে তাদের প্রতি আরোপিত দোষ প্রত্যাখ্যান করল যে,

قَالُوات الكولقد عرش ثم ماجشنا النفسية فى الأرض έξι και سارقين.

(আল্লাহর কসম, তোমরা তো জানো, আমরা এদেশে দুস্কৃতি করতে আসিনি এবং আমরা

চোরও নই।) অর্থাৎ আপনারা যে আমাদেরকে চুরির দোষে অভিযুক্ত করেছেন, আমরা যে

সেরূপ নই তা আপনারা খুব ভাল করেই জানেন।

‘তারা বলল, তোমরা যদি মিথ্যাবাদী হও তা হলে এর কি শাস্তি হবে? তারা বলল, ‘এর শান্তি- যার মালপত্রের মধ্যে পাত্ৰটি পাওয়া যাবে সে-ই তার বিনিময়। আমরা এভাবেই সীমালংঘনকারীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।

এটা ছিল তাদের শরীয়তের বিধান যে, যার মাল চুরি করবে, তার কাছেই চােরকে অর্পণ করা হবে। এ4 Juওঁ। এই … &L!ার্থ (এভাবেই আমরা সীমালংঘনকারীদের শান্তি দিয়ে থাকি) আল্লাহ বলেন;

فبدأ باو عبيتهم قبل وعاء الخيمه ثم استخرجها من و عار اچیهر، (অতঃপর সে তার সহোদরের মালপত্র তল্লাশির পূর্বে ওদের মালপত্র তল্লাশি করতে লাগল। পরে তার সহোদরের মালপত্রের মধ্য হতে পাত্ৰটি বের করল) এরূপ করার কারণ হল,

অপবাদ থেকে বাচা এবং সন্দেহমুক্ত কৌশল অবলম্বন করা। আল্লাহ বলেন :

Α Λ. λγ./, / λή, ثم سمي’

t .كذالك كذئا ليؤشف ماكانَ لِيَأحَدّ أخاه في رينو المُبكر (এ ভাবে আমি ইউসুফের জন্যে কৌশল করিয়ে দিয়েছিলাম। অন্যথায় বাদশাহর আইনে তার সহোদরকে সে আটক করতে পারত না।) অর্থাৎ তারা যদি নিজেরা এ কথা স্বীকার না করত যে, যার মালপত্রের মধ্যে পাওয়া যাবে, সে-ই তার বিনিময় হবে; তবে মিসরের বাদশাহর প্রচলিত আইনে তাকে ইউসুফ (আঃ) আটকে রাখতে পারতেন না।

”, 4 h. (.. / / / / (, m Y ζ / Α. / Κ ́

رلأ أن يشاء الله. گژف در جاپ میان نشا . (তবে যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন তাহলুে ভিন্ন কথা। আমি যাকে ইচ্ছা মর্যাদায় উন্নীত করি) অর্থাৎ জ্ঞানের ক্ষেত্রে। AJA 1, 28 < 634% (প্রত্যেক জ্ঞানবান ব্যক্তির উপরে রয়েছেন সর্বজ্ঞানী ) কেননা ইউসুফ (আঁ) ছিলেন তাদের চেয়ে অধিক জ্ঞানী। মতামত দান, সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ, দৃঢ়তা ও বিচক্ষণতায় তিনি ছিলেন অধিক পারঙ্গম। আর এ ব্যাপারে তিনি যা কিছু করেছেন তা আল্লাহর নির্দেশক্রমেই করেছেন। কারণ, এর উপর ভিত্তি করেই সৃষ্ট পরিবেশে পরবর্তীতে তার পিতা ও পরিবারবর্গ এবং প্রতিনিধি দলের সেদেশে আগমনের সুযোগ হয়। যা হোক, ভাইয়ের যখু বিনুয়া? }মালপত্রের সুধ, থেকে পুনপাত্র বের করা প্রত্যক্ষ করল তখন তারা বলল : 50; ঐ ‘1 & 1 52%.’ … ওঁ….৫%) (সে যদি চুরি করে থাকে। তবে তার সহোদরও তো ইতিপূর্বে চুরি করেছিল।) সহোদয় বলতে তারা ইউসুফ (আ)-কেই বুঝাচ্ছিল। কথিত আছে যে, হযরত ইউসুফ (আঃ) একবার তাঁর নানার একটি মূর্তি চুরি করে এনে ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। কেউ কেউ বলেছেন, ইউসুফ (আঃ)-এর প্রতি অধিক স্নেহভালবাসার টানে তার ফুফু। তার ছোটবেলায় নিজের কাছে রেখে লালন-পালন করার জন্যে কৌশল হিসেবে ইসহাকের একটি কোমরবন্দ গোপনে ইউসুফ (আঃ)-এর কাপড়ের মধ্যে বেঁধে রাখেন। ইউসুফ (আঃ) তা টের পাননি। পরে কোমরবন্দটির সন্ধান করা হলে ইউসুফের কাপড়ের মধ্যে তা পাওয়া যায়। তাদের কথায় এ দিকেই ইংগিত ছিল। কেউ কেউ বলেছেন : ইউসুফ ঘর থেকে খাদ্য নিয়ে গোপনে ভিক্ষুকদেরকে আহার করাতেন। এছাড়া এ প্রসঙ্গে আরও বিভিন্ন ঘটনা বিভিন্নজনে বলেছেন। এজন্যেই ৪

(তারা বলল, সে যদি চুরি করে থাকে, তবে ইতিপূর্বে তার সহোদরও তো চুরি করেছিল কিন্তু প্ৰকৃত ব্যাপার ইউসুফ নিজের মনের মধ্যে গোপন করে রাখল।) সেই গোপন কথাটি এই

fA々* /,/ ノ (47 * / %,//% / 、ZA% l۹۹گ ۹ تا همة انجام 21 ۹ تا ۲۹ام)STIT) انت شامگانا. و الآله) المپیما تصریفون : আল্লাহ ঐ বিষয়ে খুবই অবহিত যা তোমরা ব্যক্ত করছি।) ইউসুফ (আঃ) এ কথা মনে মনে বললেন, প্রকাশ করলেন না। তিনি সহনশীলতার সাথে তাদেরকে ক্ষমা ও উপেক্ষা করেন এবং সেই সুযোগে তারা দয়া ও করুণা লাভের উদ্দেশ্যে বলল :

বলল, হে আষীয! এর পিতা আছেন অতিশয় বৃদ্ধ। সুতরাং এর স্থলে আপনি আমাদের একজনকে রাখুন। আমরা আপনাকে একজন মহানুভব ব্যক্তি হিসেবে দেখছি। সে বলল; যার কাছে আমাদের মাল পেয়েছি তাকে ছাড়া অন্যকে রাখার অপরাধ হতে আমরা আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। এরূপ করলে আমরা অবশ্যই জালিমে পরিণত হব। (১২, ৪ ԳԵ-Գs)

অর্থাৎ আমরা যদি অপরাধীকে ছেড়ে দেই এবং নিরপরাধকে আটক রাখি তাহলে সেটা হবে সীমালংঘন। এটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বরং মাল যার কাছে পাওয়া গেছে তাকেই আমরা আটকে রাখব। আহলি কিতাবদের মতে, এই সময়ই ইউসুফ (আঃ) তাদের কাছে নিজের পরিচয় ব্যক্ত করেন। কিন্তু এটা তাদের মারাত্মক ভুল, প্রকৃত ব্যাপার তারা মোটেই বুঝেনি। আল্লাহ বলেন :

a / a 4 القيق أيايَكُش من 5وج الكو إلأ القوم الكافرون. তারপর যখন তারা তার নিকট হতে সম্পূর্ণ নিরাশ হল, তখন তারা নির্জনে গিয়ে পরামর্শ করতে লাগল। ওদের মধ্যে যে বয়োজ্যেষ্ঠ ছিল, সে বলল, তোমরা কি জান না যে, তোমাদের পিতা তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার নিয়েছেন এবং পূর্বেও তোমরা ইউসুফের ব্যাপারে ক্রটি করেছিলে। সুতরাং আমি কিছুতেই এ দেশ ত্যাগ করব না, যতক্ষণ না আমার পিতা আমাকে অনুমতি দেন অথবা আল্লাহ আমার জন্যে কোন ব্যবস্থা করেন এবং তিনিই বিচারকের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। ‘তোমরা তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও এবং বলবে, হে আমাদের পিতা! আপনার পুত্র চুরি করেছে এবং আমরা যা জানি তারই প্রত্যক্ষ বিবরণ দিলাম। অদৃশ্যের ব্যাপারে আমরা অবহিত ছিলাম না। যে জনপদে আমরা ছিলাম তার অধিবাসীদের জিজ্ঞাসা করুন এবং যে যাত্রীদলের সাথে আমরা এসেছি তাদেরকেও। আমরা অবশ্যই সত্য বলছি।

ইয়াকুব বলল, না, তোমাদের মন তোমাদের জন্যে একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং পূর্ণ ধৈর্যই শ্রেয়; হয়তো আল্লাহ তাদেরকে এক সঙ্গে আমার কাছে এনে দিবেন। তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।’ সে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল এবং বলল, ‘আফসোস ইউসুফ এর জন্যে।’ শোকে তার চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গেল এবং সে ছিল অসহনীয় মনস্তাপে ক্লিষ্ট। তারা বলল, ‘আল্লাহর শপথা! আপনি তো ইউসুফ এর কথা ভুলবেন না যতক্ষণ না। আপনি মুমূর্ষ। হবেন, অথবা মৃত্যুবরণ করবেন।’ সে বলল, ‘আমি আমার অসহনীয় বেদনা, আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর কাছে নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর কাছ থেকে জানি যা তোমরা জান না। ‘হে আমার পুত্ৰগণ! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার সহোদরের অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহর আশিস থেকে তোমরা নিরাশ হয়ে না। কারণ আল্লাহর আশিস হতে কেউই নিরাশ হয় না, কাফিরগণ ব্যতীত। (১২ : ৮০-৮৭)

আল্লাহ ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইদের সম্পর্কে জানাচ্ছেন যে, যখন তারা বিনয়ামীনকে ইউসুফ (আঃ)-এর হাত থেকে ছাড়িয়ে আনার ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গেল, তখন পারস্পরিক পরামর্শের জন্যে একটু দূরে সরে গিয়ে মিলিত হল। তখন তাদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠ রূবীল

(তােমরা কি জুন না লু,তোমাদের পিতা তােমাদেরর কাছ থেকে আল্লাহর নামে অঙ্গীকার

নিয়েছেন —44.3% (2 * 1.5 L_0^7 & 5 এবং পূর্বেও তােমরারা ইউসুফের ব্যাপারে ক্ৰটি করেছিলে) অর্থাৎ অবশ্য কিন্তু তোমরা সে অঙ্গীকার রক্ষা কর নাই। বরং তাতে ক্রটি

করেছ। যেমন তোমরা ইতিপূর্বে তার ভাই ইউসুফের ব্যাপারেও ক্রটি করেছিলো। এখন আমার

ওয়ান নিহয়া 8 ԳS जाभ6न्म ७dभन्म কােন উপায় নেই। যা নিয়ে পিতার সামনে দাঁড়াব। ১৯৩১ – 27, 31 (সুতরাং আমি কিছুতেই এ দেশ ত্যাগ করব না) অর্থাৎ আমি এ দেশেই স্থায়িভাবে থেকে যাব যতক্ষুণ না আমার পিতা আমাকে অনুমতি দেন।) অর্থাৎ তার কাছে کمانڈین اِلیٰ اپئی এ3 (অথবা আল্লাহ আমার জন্যে কােন ব্যবস্থা করুন!)। যেসূত্র الLه إلى 1 5 ITG3* পিতার কাছে ভাইকে ফিরিয়ে নেয়ার কোন উপায় যদি বের করে দেন। 3 4 5 6 46 6 SLK]। (তিনিই শ্ৰেষ্ঠ ফয়সালাদানকারী)। … … با ژجگؤا إلى ابيكم فقولوا 65%, 14 / 5), (তােমরা তােমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও এবং বল, হে পিতা! আপনার পুত্র চুরি করেছে।) অর্থাৎ তোমরা যা প্রত্যক্ষ করেছি। তাই পিতার কাছে গিয়ে বল। ‘… a . . . / */s éク //,(A, / / 9 (4 / // আমরা যে, জানি তারই( و ما شاهدنا بالا بپیما علمنا و ما کناللغی پیب حافظنین প্রত্যক্ষ বিবুরুর্ণ; অদৃশ্যের ব্যাপারে সুমরা অবহিত ছিলাম না।) এৰে। J.4% AALLATAAA AAAAASTTSBB BBB DBBDBB BBBS BB

অধিবাসীদের আপনি জিজ্ঞেস করুন এবং যে যাত্রীদলের সাথে আমরা এসেছি তাদেরকেও) অর্থাৎ আমরা আপনাকে এই সংবাদ দিলাম যে, আমাদের ভাই চুরি করে ধরা পড়েছে এটা মিসরে সর্বত্র রটে গেছে এবং যে কাফেলার সাথে আমরা এসেছি তাদের এ ঘটনাটি জানা আছে। কেননা, তখন তারা সে আমাদের সাথেই ছিল।.634944 616 (আমরা অবশ্যই সত্য বলছি।) قال بل سكولك لكم أنفشكم امر) فضية جويل (ইয়াকুব বলল, না তোমাদের মন তোমাদের জন্য একটি কাহিনী সাজিয়ে দিয়েছে। সুতরাং পূর্ণ ধৈৰ্যই শ্ৰেয়।) অর্থাৎ তোমরা যা বলছি আসল ঘটনা তা নয়। সে চুরি করেনি। কেননা, তার স্বভাব-চরিত্র এ রকম নয়। বরং এটা তোমাদেরই একটা সাজান গল্প। অতএব, ধৈর্য অবলম্বনই

(88.।(

ইব্‌ন ইসহাক (র) প্রমুখ বলেছেন, ইউসুফ (আ)-এর ব্যাপারে সীমালংঘনের পরে তার ভাইয়েরা যখন বিনয়ামীনের সাথেও অসন্দ-ব্যবহার করতে শুরু করে তখন পিতা ইয়াকুব (আ) উপরোক্ত কথা বলেন। প্রাচীনকালের কোন কোন পণ্ডিতের উক্তি L৯৭ – ধ -, …।( -।( ১৯ ‘মূন্দের পরবর্তী প্রতিফলু মন্দ্ৰই হয়ে থাকে। অতঃপর হযরত ইয়াকুব (আ) বলেন : تم سمي’

[ * 4.546 45।( (হয়তো আল্লাহ্ তাদেরকুে এক সঙ্গে আমার কাছে এনে দেবেন।) অর্থাৎ ইউসুফ, বিনয়ামীন ও রূবীলকে। راكة هو العليم)R-SRRff সর্বজ্ঞ।) অর্থাৎ প্রিয়জনদের বিরহে আমি যে অবস্থায় পতিত হয়েছি তা তিনি সম্যক অবগত &*</^। (প্রজ্ঞাময়) অর্থাৎ তিনি যা ফয়সালা ও বাস্তবায়ন করবেন তা অত্যন্ত প্রজ্ঞার সাথে করবেন। চূড়ান্ত কৌশল ও অলংঘনীয় দলীলের অধিকারী একমাত্র তিনিই। :244 666 (এবং সে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিল।) অর্থাৎ ইয়াকুব (আ) পুত্রদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললেন : এa 4.4%, .14 441 15, 14% (হায়! আফসোস ইউসুফের জন্যে।) পূর্বের দুঃখের সাথে নতুন দুঃখের উল্লেখ করছেন এবং যে ব্যথাটি সুপ্ত ছিল তা পুনরায় উজীবিত হয়ে ওঠে। জনৈক কবি বলেছেন :

‘তুমি কামনার বশে তােমার হৃদয়কে যেথায় ইচ্ছা ফিরাতে পারো। কিন্তু প্রেমের বেলায় প্রথম প্রেমিকই আসল |’

অন্য এক কবি বলেছেন :

গোরস্তানের কবরসমূহের কাছে গিয়ে আমার ক্ৰন্দন ও অশ্রুপাত দেখে আমার বন্ধু আমাকে তিরস্কার করল। সে বললঃ লিওয়া (বালির টিবি) ও দাকাদিকের (শক্তভূমির) মধ্যবতী। যত কবর আছে তার মধ্যে যে কবরই নজরে পড়বে, সে কবরের পাশেই কি তুমি এভাবে কাঁদতে থাকবে? আমি তাকে বললাম, দুঃখই দুঃখীজনকে পরিচালিত করে। আমাকে আমার

কাজের উপর ছেড়ে দাও। এখানে যত কবর আছে সবই আমার প্ৰেমাস্পদ মালিকের কবর। / /

DB BB S AAAAA AAAA AAAA AAAA S0S ATASBB BBB BBB BBB BDD DB যায়) অর্থাৎ कानूाकाछैिब्र झएल। {{65 64% (এবং সে ছিল অসহনীয় মনস্তাপে কাতর।) অর্থাৎ ইউসুফ (আ)-এর জন্য অতিশয় শোক, তাপ ও অধীর আগ্রহে তিনি মুহ্যন্য হয়ে পড়েন। পুত্ৰগণ যখন পিতাকে সন্তান হারাবার শোকে কাতর অবস্থায় দেখল। তখন। ]L*

(তারা বলল) অর্থাৎ পিতার প্রতি করুণাবশে ও মমতাবোধে বলল? سل

‘আপনি তো ইউসুফকে ভুলবেন না, যতক্ষণ না মুমূর্ষ হবেন কিংবা মৃত্যুবরণ করবেন।) অর্থাৎ তারা বলছে, আপনি সৰ্বক্ষণ ইউসুফ (আ)-কে স্মরণ করছেন ও শোক প্ৰকাশ করছেন। ফলে দিন দিন। আপনার শরীর শিথিল হয়ে যাচ্ছে ও শক্তি ক্ষয়ে যাচ্ছে। এর চাইতে বরং নিজের

প্রতি কিছুটা লক্ষ্য রাখলুই আপনার জন্য ভাল হতাে।

قال رتشا أشكو بنك وخززى إلى الكو. وأهم من الكو ما لا كعلملوك.

ইয়াকুব বলল, ‘আমি আমার অসহনীয় বেদনা ও আমার দুঃখ শুধু আল্লাহর নিকট নিবেদন করছি এবং আমি আল্লাহর নিকট থেকে এমন কিছু জানি যা তোমরা জান না।’ অর্থাৎ পিতা তার পুত্রদেরকে বলছেন : আমি যে দুঃখ-যাতনার মধ্যে আছি তার অনুযোগ না তোমাদের কাছে করছি, না অন্য কারও কাছে বরং আমার অনুযোগ আল্লাহর কাছেই ব্যক্ত করছি আর আমি জানি যে, আল্লাহ আমাকে এ অবস্থা থেকে মুক্তি দেবেন ও উদ্ধার করবেন। আমি আরও জানি যে, ইউসুফ (আঃ)-এর স্বপ্ন অবশ্যই বাস্তবে পরিণত হবে এবং স্বপ্ন অনুযায়ী আমি ও তােমরা তার উদ্দেশে সিজদাবনত হবো। তাই তিনি বলেন : $ _ % 21।( 6, 21:16 6,144 (আমি আল্লাহর কাছ থেকে জানি যা তােমরা জান না।) তারপর তিনি পুত্ৰগণকে ইউসুফ (আ) ও তার ভাইকে সন্ধান করার জন্যেও জনসমাজে তাদের ব্যাপারে আলোচনা করার জন্যে উৎসাহিত করেন ৪

পুত্ৰগণ! তোমরা যাও, ইউসুফ ও তার সহোদরের অনুসন্ধান কর এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ে না। কেননা আল্লাহর রহমত থেকে কাফির ব্যতীত কেউ নিরাশ হয় না।

অর্থাৎ কঠিন অবস্থার পর মুক্তি পাওয়ার আশা থেকে নিরাশ হয়ে না। কেননা, বিপদ ও সংকটের পর তা থেকে আল্লাহর রহমতে উদ্ধার পাওয়ার ব্যাপারে কেবলমাত্ৰ কাফিররাই নিরাশ

হতে পারে।

যখন তারা তার কাছে উপস্থিত হল। তখন বলল, ‘হে আষীয! আমরা ও আমাদের পরিবার-পরিজন বিপন্ন হয়ে পড়েছি এবং আমরা তুচ্ছ পণ্য নিয়ে এসেছি। আপনি আমাদের রসদ পূর্ণমাত্রায় দিন এবং আমাদেরকে দান করুন; আল্লাহ দাতাগণকে পুরস্কৃত করে থাকেন। সে বলল, তোমরা কি জান, তোমরা ইউসুফ ও তার সহোদরের প্রতি কিরূপ আচরণ করেছিলো? যখন তোমরা ছিলে অজ্ঞ? ওরা বলল, তবে কি তুমিই ইউসুফ? সে বলল, আমিই ইউসুফ এবং এ আমার সহোদর: আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। যে ব্যক্তি মুত্তাকী এবং ধৈর্যশীল, আল্লাহ সেরূপ সৎকর্মপরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেন না।’ ওরা বলল, আল্লাহর শপথ! আল্লাহ নিশ্চয় তোমাকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং আমরা নিশ্চয়ই অপরাধী ছিলাম। সে বলল, ‘আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু। তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও এবং এটি আমার পিতার মুখমণ্ডলের উপর রাখবে। তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। আর তােমাদের পরিবারবর্গের সবাইকে আমার কাছে নিয়ে এস।’ (১২ : ৮৮-৯৩)

এখানে আল্লাহ ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইদের পুনরায় ইউসুফ (আঃ)-এর কাছে গমন এবং খাদ্যের বরাদ্দ ও অনুদান পাওয়ার আবেদন ও সেই সাথে বিনয়ামীনকে তাদের কাছে প্ৰত্যার্পণর অনুরোধ সম্পর্কে আলোচনা করছেন।

(যখন তারা ইউসুফের কাছে উপস্থিত হল তখন বলল, হে আষীয! আমরা ও আমাদের পরিবার-পরিজন বিপুর হয়ে পড়েছি!) বিপন্ন হওয়ার কারণ দুর্ভিক্ষ, দুরবস্থা ও সন্তানাদির সংখ্যাধিক্য। وجثتاريبضاعة مزجاة (এবং আমরা সামান্য কিছু পণ্য নিয়ে এসেছি।) অর্থাৎ অতি নগণ্য পণ্যমূল্য—ব্র্যা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি ছাড়া আমাদের থেকে গ্রহণ করার মত নয়। নগণ্যের ব্যাখ্যায় কেউ বলেছেন, রদী মুদ্রা; কেউ বলেছেন, কম পরিমাণ মুদ্রা আবার কেউ বলেছেন, বাদাম, কফি বীজ ইত্যাদি। ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তা ছিল কয়েকটি খড়ের বস্তা ও রাশি এবং এ রকম আরও কিছু।

علينا. ان الله يجزى المثضيقين . (আপনি আমাদের বরাদ পূর্ণমাত্রায় দিন এবং আমাদেরকে দান করুন। আল্লাহ দাতাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকেন।)

সুদী বলেছেন, এখানে দান বলতে তাদের নগণ্য পণ্যমূল্য গ্রহণ করা বুঝানো হয়েছে। ইব্‌ন জুরায়জ বলেন, এখানে দান করুন বলতে বুঝানো হয়েছে, আমাদের ভাইকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিন। সুফয়ান ইব্‌ন উওয়ায়না বলেন, আমাদের নবীর জন্যে সাদকা গ্ৰহণ যে হারাম করা হয়েছে, তার দলীল নেয়া হয়েছে এই আয়াত থেকে। ইব্‌ন জারীর (রা) এটি বর্ণনা করেছেন। শেষে হযরত ইউসুফ (আঃ) যখন দেখলেন, তাদের অবস্থা এই; যা কিছু তারা নিয়ে এসেছে তা ছাড়া আর কিছুই তাদের কাছে নেই, তখন তিনি নিজের পরিচয় দিলেন, তাদের প্রতি দয়া প্ৰদৰ্শন করলেন এবং তাদের ও নিজের প্রতিপালকের অনুগ্রহের কথা উল্লেখ করেন। এ সময় হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর কপালের একদিকে যে তিল ছিল তা আনাবৃত করে দেখালেন, যাতে তারা তাকে শনাক্ত করতে পারে। তিনি বললেন :

هل عَلِمُتُمْ مَا فعلثمييؤشف وأخيه إذ أثثم جُاهلون. فالؤا.

(তোমরা কি জান, তোমরা ইউসুফ ও তার সহোদরের প্রতি কিরূপ আচরণ করেছিলে? যখন তোমরা ছিলে অজ্ঞ। তারা বলল;) এ কথা শুনে তারা অতি আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেল এবং বারবার ইউসুফের প্রতি তাকাতে থাকে। কিন্তু তারা বুঝে উঠতে পারছিল না যে, এ ব্যক্তিই তবে কি তুমিই ইউসুফ? সে( كَرتك لأنتك يوشف قال أنَّا يُؤشف ولهذا اچی | آلا) বলল, আমিই ইউসুফ এবং এই আমার সহোদর ভাই।) অর্থাৎ আমি সেই ইউসুফ যার সাথে তােমরা ঐ আচরণ করেছিলে এবং পূর্বে যার প্রতি অত্যাচার করেছিলে। এই | ‘ + (এই আমার ভাই) কথাটি পূর্বের কথাকে জোরালো করার উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে এবং এদের দুই ভাইয়ের প্রতি তাদের মনে যে হিংসা লুক্কায়িত ছিল আর যেসব ষড়যন্ত্র অপকৌশল, তাদের বিরুদ্ধে পুঁকিয়েছিল সে দিকে এর দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়েছে। তাই তিনি বলেছেন : 5, 7 4

(……. &i/ (আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।) অর্থাৎ আমাদের প্রতি আল্লাহর কৃপা, দান, অনুকম্পা বর্ষিত হয়েছে। আমাদেরকে তিনি সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। আর এটা আমাদেরকে দিয়েছেন তার প্রতি আমাদের আনুগত্য, তোমাদের নিপীড়নে। ধৈর্যধারণ,

পিতার সাথে সদাচরণ ও আমাদের প্রতি পিতার মহব্বত ও মেহের বদৌলতে।

(যে ব্যক্তি মুত্তাকী ও ধৈর্যশীল। আল্লাহ সেরূপ সৎকর্ম পরায়ণদের শ্রমফল নষ্ট করেন না। তারা বলল, আল্লাহর শপথ, আল্লাহ তোমাকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন।)

অর্থাৎ আল্লাহ তোমাকে মর্যাদা দান করেছেন, অনুগ্রহ করেছেন যা আমাদের প্রতি করেন নি। ৬৭%,। পুর্থ &J% (আমরা নিশ্চয়ই অপরাধী ছিলাম () অর্থাৎ পূর্বে তােমার সাথে যা করেছি। তাতে আমরাই ছিলাম। অপরাধী। আর এখন তো তোমার সম্মুখেই আমরা আসামীর কাঠগড়ায় হাফির। ৫ %1*K»1¥ {4£ » $ J-14 (সে বলল, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে

কোন অভিযোগ নেই।) অর্থাৎ তােমরা যা কিছু করেছ তার কােন প্রতুিবোধ আমি নেব না। এরপর আরও বাড়িয়ে বললেন : يغفر اللّه لكم وهو أزخم الترجمين (আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন এবং তিনি দয়ালুদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু)। কারও কারও মতে ১ এর উপর ওয়াকফ (অর্থাৎ তােমাদের উপর কোন অভিযোগ নেই) এবং تثريبروبليكم :</ 4f11 2634 53.j। আলাদা বাক্য (অর্থাৎ আল্লাহ আজ তােমাদেরকে ক্ষমা করবেন); কিন্তু এ মত দুর্বল। প্রথম মতই সঠিক।

তখন হযরত ইউসুফ (আঃ) নিজের গায়ের জামা তাদের কাছে দিয়ে বললেন, এটা অন্ধ পিতার চােখের ওপর রেখে দিও। এতে আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে। এ ছিল প্রকৃতির সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম, নবুওতের আলামত ও বিরাট এক মু’জিযা। শেষে তিনি

ভাইদেরকে তাদের পরিবার-পরিজনসহ সসম্মানে মিসরে চলে আসার জন্যে বলে দেন।

إنه هو الغفور الرّحيم. তারপর যাত্রীদল যখন বের হয়ে পড়ল তখন তাদের পিতা বলল, ‘তোমরা যদি আমাকে অপ্রকৃতিস্থ মনে না কর তবে বলি, আমি ইউসুফের ঘ্ৰাণ পাচ্ছি। তারা বলল, আল্লাহর শপথ! আপনি তো আপনার পূর্ব বিভ্রান্তিতেই রয়েছেন। তারপর যখন সুসংবাদবাহক উপস্থিত হল এবং তার মুখমণ্ডলের উপর জামাটি রাখল। তখন সে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে পেল। সে বলল, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর কাছ থেকে জানি, যা তোমরা জান না? ওরা বলল, ‘হে আমাদের পিতা! আমাদের পাপের জন্যে ক্ষমা প্রার্থীনা করুন। আমরা তো অপরাধী।’ সে বলল, ‘আমি আমার প্রতিপালকের কাছে তোমাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থীনা করব। তিনি তো অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (১২ : ৯৪-৯৮)

8Եr:8

আবদুর রাজ্জাক (র) ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি … | °1» ¥ €L -এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, কাফেলা যখন মিসর থেকে যাত্রা করে তখন একটি প্রবল বায়ু-প্রবাহ ইউসুফ (আ)-এর জামার ঘােণ ইয়াকুব (আঃ)-এর কাছে নিয়ে পৌছায়।

(সে বলল, আমি অবশ্যই ইউসুফের ঘ্ৰাণ পাচ্ছি -যদি তােমরা আর্মাকে অপ্রকৃতিস্থ মনে না কর।’)

ছাওরী, শু’বা (র) প্রমুখ বলেছেন, আট দিনের পথের দূরত্ব থেকেই তিনি এই ঘাণ পান। হাসান বসরী (র) ও ইব্‌ন জুরায়জ মন্ধী (র) বলেছেন, ইয়াকুব (আ.) ও কাফেলার মধ্যকার দূরত্ব ছিল আশি ফারসাখের ১ এবং ইউসুফ (আঃ)-এর নিখোজকাল থেকে ঘাণ পাওয়া পর্যন্ত সময়ের ব্যবধান আশি বছর। 263, 4 × 5 × 4 অর্থাৎ তোমরা যদি বল যে, অতি বৃদ্ধ হওয়ার ফলে আমি প্রলাপোক্তি করছি। ইব্‌ন আব্বাস (রা), আতা, মুজাহিদ, সাঈদ ইব্‌ন জুবোয়র ও কাতাদা (র) বলেছেন : ৩.৩১,১৯৭ অর্থাৎ ১৩,১৫৯…; তোমরা আমাকে নির্বোিধ সাব্যস্ত করে। মুজাহিদ ও হাসান (র) বলেছেন : ১৬৩-১৯৯৭ অর্থ ৬-১৫° তােমরা যদি আমাকে অতিশয় বৃদ্ধ সাব্যস্ত করে। ৩.aj। এu»L•A{ &6, 3166 131 =

তারা বলল, ‘আল্লাহর শপথ! আপনি তো আপনার পুরনো বিভ্রান্তির মধ্যেই রয়েছেন।’ কাতাদা ও সুদী (র) বলেন, তারা এ কথা দ্বারা একটি শক্ত কথাই বলেছে। আল্লাহ বলেন :

فلماً ان جاء البشير القاه على وجهه فارنةً بصيرًا. ( তারপর যখন সুসংবাদবাহক উপস্থিত হল এবং তার মুখমণ্ডলের উপর জামাটি রাখল তখন তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলেন।) অর্থাৎ অতি স্বাভাবিকভাবেই কেবল মুখমণ্ডলের উপর ইউসুফ (আঃ)-এর জামাটি রাখার সাথেই দৃষ্টিশক্তি ফিরে সুসে। অথচ তিনি তখন ছিলেন অন্ধ) ألم أقل لكم إتلك العلم من الله ما لا تعلمؤن 8 391715 646 1018ق f8f 3138 في (আমি কি তোমাদেরকে বলিনি যে, আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন কিছু জানি, যা তোমরা জান না।) অর্থাৎ আমি জানি যে, আল্লাহ ইউসুফকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেবেন, আমার চক্ষু

তার দ্বারা ভাল হয়ে যাবে এবং প্রশান্তি দান করবেন।

قالوا يَاً أباتا اشتُنْفِرُ لَنَّا ذُنُوبَنَا إِنَّا كُنَّا خَاطنين. (তারা বলল, হে পিতা! আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থীনা করুন। কেননা অবশ্যই আমরা ছিলাম। অপরাধী।) তারা অপরাধমূলক যেসব কাজ ইতিপূর্বে করেছে এবং পিতা ও তার পুত্র ইউসুফ (আঃ)-এর কাছ থেকে তার মুকাবিলায় যে ব্যবহার পেয়েছে এবং ইউসুফ (আঃ)-কে তারা যা করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেসব ব্যাপারে। আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থীনার জন্যে তারা পিতার কাছে আবেদন জানায়। তাদের নিয়ত যখন তওবা করা অথচ তখনো তা কার্যকর হয়নি তখন আল্লাহ তাদেরকে তওবা করার তাওফীক দান করেন এবং পিতা তাদের আবেদনে

م সাড়া দেন এবং বলেন, : . سوف استغفاز لکم ربی). با نه هو الغفور الرجیم আমার প্রতিপালকের কাছে তোমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থীনা করব। তিনি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।

১. ফারসাখ বলতে প্ৰায় আট কিলোমিটার বোঝায়।

8br○

ইব্‌ন মাসউদ (রা), ইবরাহীম আততায়মী, আমর ইব্‌ন কায়স, ইব্‌ন জুরায়জ (র) প্রমুখ বলেছেন- হযরত ইয়াকুব (আ) পুত্রদের পক্ষে ইসতিগফার করার জন্যে শেষ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। ইব্‌ন জারীর মুহারিব ইব্‌ন দীছার (র) সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : হযরত উমর (রা) মসজিদে নববীতে এসে জনৈক ব্যক্তিকে বলতে শুনেন :

اللهم دعوتی فاجبات و امر تنی فاطاعت و هذا السحر فاغفر لی.

‘হে আল্লাহ! ‘আপনি আমাকে আহবান করেছেন, আমি সাড়া দিয়েছি; আপনি আমাকে হুকুম করেছেন, আমি তা মেনে নিয়েছি। এখন রাতের শেষ প্রহর; অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ হযরত উমর (রা) গভীরভাবে উক্ত শব্দের প্রতি লক্ষ্য করে বুঝতে পারলেন যে, আওয়াজটি আবদুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রা)-এর ঘর থেকে আসছে। তিনি আব্দুল্লাহ ইব্‌ন মাসউদ (রা)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন। আবদুল্লাহ বলেন, : হযরত ইয়াকুব (আ) পুত্রদের পক্ষে প্রার্থীনা করার জন্যে শেষ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন- তিনি বলেছিলেন:;; … … এ4;. ৪৫% স্থা (আমি অচিরেই তােমাদের জন্যে আমার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থীনা করব।) অপর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন : LK %SL, ৩, ৪, … . 2013 (যারা শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থীনা করে।) /・ー一ァ/

সহীহ হাদীসে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন; আমাদের প্রতিপালক প্রতিরাতে দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন— কে আছে তওবাকারী? আমি তার তওবা কবুল করব। কোন প্রাথী আছে কি? আমি তাকে দান করব। আছে কোন প্রার্থীনাকারী? আমি তার প্রার্থীনা মঞ্জর করব।

এক হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত ইয়াকুব (আ) তাঁর পুত্রদের পক্ষে ক্ষমা প্রার্থীনার জন্যে জুমআর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। ইব্‌ন জারীর (রা) ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন; এটি আমার ভাই ইয়াকুব (আ.)-এর তার ছেলেদের উদ্দেশে

A / . . 晶 বলেছিলেন। ۹۹ ستوف اشتغفولگام زبان Sid – حتی ناتی لیلة الجمعة N 9** না জুমআর রাত আসে। উক্ত সনদে এ হাদীসটি খুবই অপরিচিত। হাদীসটি মারফু হওয়ার ব্যাপারেও বিতর্ক রয়েছে। বরং এটা ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর মওকুফ হাদীস বা নিজস্ব উক্তি হওয়ার সম্ভাবনাই অধিক।

তারপর তারা যখন ইউসুফের নিকট উপস্থিত হল, তখন সে তার পিতা-মাতাকে আলিঙ্গন করল এবং বলল, আপনারা আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাপদে মিসরে প্রবেশ করুন। এবং ইউসুফ তার পিতা-মাতাকে উচ্চাসনে বসাল এবং তারা সকলে তার সম্মানে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল। সে বলল, ‘হে আমার পিতা! এ হচ্ছে আমার পূর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা; আমার প্রতিপালক একে সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেন এবং শয়তান আমার ও আমার ভাইদের সম্পর্ক নষ্ট করবার পরও আপনাদেরকে মরু অঞ্চল থেকে এখানে এনে দিয়ে আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা তা নিপুণতার সাথে করেন। তিনি তো সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে রাজ্য দান করেছ এবং স্বপ্নের ব্যাখ্যা শিক্ষা দিয়েছ। হে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা! তুমিই ইহলোক ও পরলোকে আমার অভিভাবক। তুমি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দাও এবং আমাকে সৎকর্ম পরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করা। (১২ : ৯৯-১০১)

এখানে দীর্ঘ বিচ্ছেদের পর প্ৰিয়জনদের সাথে পুনঃমিলনের অবস্থা বৰ্ণনা করা হয়েছে। বিচ্ছেদের সময়সীমা সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত আছে। কারও মতে, আশি বছর। কারও মতে, তিরাশি বছর। এ দু’টি মতের কথা হাসান (র) থেকে বর্ণিত হয়েছে। কাতাদা (র)-এর মতে, পয়ত্ৰিশ বছর। কিন্তু মুহাম্মদ ইব্‌ন ইসহাকের মতে, বিচ্ছেদের কাল মাত্র আঠার বছর। আহলি কিতাবদের মতে, এই সময় ছিল চল্লিশ বছর। তবে ঘটনার উপর দৃষ্টিপাত করলে বিচ্ছেদকাল খুব বেশি বলে মনে হয় না। কেননা, মহিলাটি যখন ইউসুফকে ছলনা দিয়েছিল তখন অনেকের মতে তিনি মাত্ৰ সতের বছরের যুবক। তিনি আত্মরক্ষা করলেন, ফলে কয়েক বছর। জেলখানায় থাকেন। ইকরিমা প্ৰমুখের মতে, জেলখানায় থাকার সময়সীমা সাত বছর। এরপর প্রাচুর্যের সাত বছর অতিক্রান্ত হয়। তারপর মানুষ দুর্ভিক্ষের সাত বছরে পতিত হয়। এর প্রথম বছরে ইউসুফ (আঃ)-এর ভাইয়েরা খাদ্যের জন্য মিসরে আসে। দ্বিতীয় বছরে তারা বিনয়ামীনকে নিয়ে আসে। আর তৃতীয় বছরে ইউসুফ (আঃ) নিজের পরিচয় দেন এবং পরিবার-পরিজনকে নিয়ে আসতে বলেন। ফলে সে বছরেই ইউসুফ (আঃ)-এর গোটা পরিবার মিসরে তাঁর কাছে চলে আছে। এ হিসেবে মিলনকালে তার বয়স হয়েছিল ১৭+৭+৭+3=৩৪ به e – CRR&।(۹|| 5।( ۹۹۹ ۱۹۶۹) فلما داخلؤ امّللی اؤشف اوای لله ابوبه اچ۹ কাছে উপস্থিত হল তখন সে তার পিতা-মাতাকে আলিঙ্গন করল।) অর্থাৎ ভাইদের থেকে আলুদা হয়ে ইউসুফ (আঃ) কুৰ্বল তাঁর পিতা-মাতার সাথে একান্তে মিলিত হন। TRIجمة گ&||||||||||||||||||||||||||۹||۰||۶||ت : ۹۹۶ ۹۹) و قال اث خ1ژا میباشد کرزان شاء الآله اچپایین নিরাপদে মিসরে প্রবেশ করুন।)। কারো কারো মতে, এখানে বর্ণনা ঘটনানুক্ৰমিক নয়। ঘটনা ছিল, প্রথমে তিনি তাদেরকে মিসরে প্রবেশের জন্য স্বাগত সম্ভাষণ জানান, তারপর তাদেরকে আলিঙ্গন করেন। ইব্‌ন জারীর (রা) এ ব্যাখ্যাকে দুর্বল বলেছেন। তাঁর এ মন্তব্যকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। ইমাম সুদী (র) বলেছেন, যে, ইউসুফ (আঃ) নিজে অগ্রসর হয়ে পিতা-মাতার সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং পথে যেখানে তারা অবতরণ করেছিলেন সেখানে তাদের তাবুতে গিয়ে তাদের আলিঙ্গন করেন। তারপর সেখান থেকে যাত্রা করে মিসরের, প্লবুেশ দ্বারের সন্নিকটে পৌছলে ইউসুফ (আঃ) বললেন, : 52, 1 41।( LA, ৬, ……. 1514.5 (আল্লাহর ইচ্ছায় আপনারা নিরাপদে মিসরে প্রবেশ করুন।) তবে বলা যেতে পারে যে, এ আয়াতের

ব্যাখ্যায়। উক্তরূপ কথা সংযোজন না করেও পারা যায় এবং এর কোন প্রয়ােজনও নেই। যেমন

مصر আল্লাহ চাহেন তো নিরাপদ অবস্থায়( ان شاه الله امپثین( *****۹l fNPIC s۹۹g|Rچچf থাকবেন।) এ ব্যাখ্যা খুবই সঠিক ও সুন্দর।

আহলি কিতাবদের মতে, হযরত ইয়াকুব (আঃ) যখন বিলবীস এলাকায় জাশির নামক স্থানে পৌঁছেন, তখন হযরত ইউসুফ (আঃ) তার সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্যে বের হয়ে আসেন। ইয়াকুব (আ) নিজের আগমনবার্তা পৌছানোর জন্যে য়াহ্যাকে আগেই পাঠিয়ে দেন। তারা আরও বলেছেন, মিসরের বাদশাহ ইয়াকুব (আ)-এর পরিবারকে অবস্থান গ্রহণ এবং তাদের গৃহপালিত সমস্ত পশু ও মালপত্র নিয়ে থাকার জন্যে সম্পূর্ণ জশির এলাকা তাদেরকে ছেড়ে দেন। একদল মুফাসসির উল্লেখ করেছেন যে, হযরত ইউসুফ (আঃ) যখন হযরত ইয়াকুব (আ) তথা ইসরাঈল-এর অন্যান্য সংবাদ শুনলেন, তখন তার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্যে দ্রুত বের হয়ে আসেন। সেই সাথে ইউসুফ (আঃ)-এর সহযোগিতা ও আল্লাহর নবী ইসরাঈলের সম্মানার্থে বাদশাহ ও তার সৈন্যরা এগিয়ে আসে। ইসরাঈল বাদশাহর জন্যে দা আ করেন। নবী ইয়াকুব (আ)-এর আগমনের বরকতে আল্লাহ মিসরবাসীর উপর থেকে অবশিষ্ট বছরগুলোর দুৰ্ভিক্ষ তুলে নেন। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

ইয়াকুব নবীর সাথে তাঁর পুত্ৰগণ ও পুত্রদের সন্তান ও পরিজনসহ মোট কত লোক মিসরে এসেছিলেন সে ব্যাপারে বিভিন্ন মত পাওয়া যায়। আবু ইসহাক সাবিঈ (র) ইব্‌ন মাসউদ (রা)-এর বরাতে বলেন, এদের সংখ্যা ছিল তেষট্টি। মূসা ইব্‌ন উবায়দা (রা) আবদুল্লাহ ইব্‌ন শাদার বরাতে বলেছেন, তিরাশিজন। আবু ইসহাক মাসরুক (রা) সূত্রে উল্লেখ করেছেন যে, এরা যখন মিসরে প্রবেশ করেন তখন এদের সংখ্যা ছিল তিনশ’ নব্বই। কিন্তু এরা যখন মূসা (আ)-এর নেতৃত্বে মিসর থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন তাদের যুদ্ধক্ষম যুবকের সংখ্যাই ছিল ছয় লক্ষের উপরে। আহলি কিতাবদের মতে, তারা সংখ্যায় ছিল সত্তরজন। তারা এদের নামও উল্লেখ করেছে। আল্লাহর বাণী : ৬%, 11 . 14 14641 & 45% (এবং ইউসুফ তার পিতা-মাতাকে উচ্চাসনে বসাল।) কেউ কেউ বলেছেন, ইউসুফের মা ঐ সময় জীবিত ছিলেন। না। তাওরাতের পণ্ডিতগণের মতও তাই। কোন কোন মুফাসসির বলেছেন, ঐ সময় আল্লাহ তাঁকে জীবিত করে দেন। অপর এক দলের মতে, ইউসুফ (আঃ)-এর খালার নাম ছিল। লাইলী। খালাকে মায়ের স্থানে গণ্য করা হয়েছে। ইব্‌ন জারীর (র) ও অন্যরা বলেছেন, কুরআনের সুস্পষ্ট দাবি হল, ঐ সময় তার মা জীবিত ছিলেন। সুতরাং এর বিরুদ্ধে আহলি কিতাবদের মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্যে ভিন্ন ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয় এবং এটাই শক্তিশালী মত। আল্লাহই সর্বজ্ঞ। পিতা-মাতাকে উচ্চাসনে উঠানোর অর্থ তাদেরকে নিজের কাছে সিংহাসনে বসান। ‘{ * 4.54 118% € % (এবং তারা সকলে তার সম্মানে সিজদায় লুটিয়ে পড়ল)। অর্থাৎ তার পিতা-মাতা ও এগার ভাই ইউসুফ (আঃ)-এর সম্মানার্থে সিজদা করেন। এ রকম সিজদা করা তাদের শরীয়তে ও পরবর্তী নবীদের শরীয়তে বৈধ ছিল; কিন্তু আমাদের শরীয়তে এটা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। ‘/’, 3 এ33.944 114 (সে বলল, হে আমার পিতা! এটাই আমার পূর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা () অর্থাৎ এটা সেই স্বপ্নের ব্যাখ্যা যা পূর্বে আমি আপনাকে শুনিয়েছিলাম যে, এগারটি নক্ষত্র এবং সূর্য ও চন্দ্র আমাকে সিজদা করছে। আপনি আমাকে এ স্বপ্ন গোপন রাখার জন্যে বলেছিলেন এবং তখন আমাকে কিছু প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।

‘আমার প্রতিপালক তা সত্যে পরিণত করেছেন এবং আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। কেননা, তিনি আমাকে কারাগার থেকে মুক্ত করেছেন।’

অর্থাৎ দুঃখ-কষ্ট ও সংকীর্ণতার পরে আমাকে শাসক বানিয়েছেন। মিসরের যেখানে ইচ্ছা! সেখানেই আদেশ কার্যকরী করার ক্ষমতা দান করেছেন।;’| $_ %z_ »L =; (আপনাদেরকে মরু অঞ্চল থেকে এখানে এনে দিয়েছেন।)

অর্থাৎ গ্রাম থেকে তারা ইবরাহীম খলীলুল্লাহর দেশের আরাবাত নামক এক নিভৃত মরু

л /

পল্লীতে

আমার ও ভাইদের মাঝে সম্পর্ক নষ্ট করার পর।) অর্থাৎ তারা যেসব নির্যাতনমূলক আচরণ করেছিল— যার বর্ণনা পূর্বে দেয়া হয়েছে তারপর। L… … এ’… ……. … …, (নিশ্চয় আমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা করেন, তা নিপুণতার সাথেই সম্পন্ন করেন।) অর্থাৎ তিনি যখন কোন কিছু করার ইচ্ছা করেন তখন তা বাস্তবায়নের উপায় বের করেন ও এমন সহজ-সরল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করেন যা মানুষের ধরা-ছোয়ার বাইরে। বরং তিনি নিজেই তা নির্ধারণ করেন এবং তাঁর নিজ কুদরত্বে সূক্ষ্মড়াবে সম্পন্ন করেন। …।( 64 64), (তিনিই তাে সর্বজ্ঞ।) সকল বিষয়ে অবগত £52]] (প্রজ্ঞাময়)। অর্থাৎ পরিকল্পনা গ্রহণে, পদ্ধতি নির্ধারণে ও বাস্তবায়নে তিনি প্ৰজ্ঞাশীল।

আহলি কিতাবদের মতে, হযরত ইউসুফ (আ)-এর কর্তৃত্বে যত খাদ্য রসদ ছিল তা তিনি মিসরবাসী ও অন্যদের কাছে সকল প্রকার জিনিসের বিনিময়ে বিক্রি করেন। যেমন স্বর্ণ, রৌপ্য, যমীন, আসবাবপত্র ইত্যাদি; এমনকি তাদের জীবনের বিনিময়েও বিক্রি করেছেন। ফলে তারা সবাই ক্রীতদাসে পরিণত হয়। এরপর তিনি তাদের ব্যবহারের জন্যে তাদের জমি-জিরাত ছেড়ে দেন এবং তাদেরকে এই শর্তে মুক্তি দেন যে, তারা যে সব ফসল ও ফল উৎপন্ন করবে: তার এক-পঞ্চমাংশ রাজস্ব দেবে। এটাই পরবর্তীকালে মিসরের স্থায়ী প্রথায় পরিণত হয়।

সালাবী (র) বলেছেন, দুর্ভিক্ষের সময়ে হযরত ইউসুফ (আঃ) ক্ষুধার্তাদের কথা ভুলতে পারতেন না। দুৰ্ভিক্ষকালে তিনি কখনও পেট ভরে খেতেন না। প্রত্যহ দুপুরে তিনি মাত্ৰ এক লুকমা খাবার খেতেন। তার দেখাদেখি ঐ সময়ে অন্যান্য দেশের রাজরাজড়ারা-ও এই নীতি অনুসরণ করেন। আমি বলি, আমীরুল মুমিনীন হযরত উমর (রা)-ও তাঁর আমলে দুর্ভিক্ষের বছরে পেট ভরে আহার করেন নি। দুর্ভিক্ষের পর সচ্ছলতা ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি এ নিয়ম পালন করেছেন। ইমাম শাফিঈ (র) বলেন, দুৰ্ভিক্ষ কেটে যাওয়ার পর জনৈক বেদুঈন হযরত উমর (রা)-কে জানায় যে, দুৰ্ভিক্ষ দূর হয়েছে। আপনি এখন মুক্ত স্বাধীন।

এরপর হযরত ইউসুফ (আঃ) যখন দেখলেন যে, তার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ পরিপূর্ণ হয়েছে, তাঁর আশা-আকাঙক্ষা পূর্ণ হয়ে গেছে, তখন উপলব্ধি করলেন যে, এই পৃথিবীর কোনই স্থায়িত্ব নেই। এর উপরে যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হবে। আর পূর্ণতার পরেই আসে ক্ষয়ের পালা (৩Lea,JI ১। ‘L’, ‘J। এ L-৩) তখন তিনি আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। আল্লাহর অনেক অনুগ্রহ ও করুণার কথা স্বীকার করলেন এবং মুসলিম অবস্থায় মৃত্যু দান এবং সত্ৰলোকদের অন্তর্ভুক্ত রাখার জন্য দু’আ করেন। তার এ দু’আ ছিল এমন পৰ্যায়ের, যেমন

8br>

6) اللهم احیانا مسلمین و توفنا مسلمین }l &Rآ۹ آ}ه)।( ۹।(R{ ‘S}د ۶ آ|| ۹।(।( ۹।(S আল্লাহ! আমাদেরকে মুসলিমরূপে জীবিত রাখুন এবং মুসলিমরূপে মৃত্যু দান করুন) অর্থাৎ যখন আপনি আমাদেরকে মৃত্যু দিবেন, তখন যেন আমরা মুসলমান থাকি। এমনও বলা যায় যে, তিনি এ দু’আ করেছিলেন মৃত্যু-শয্যায় থাকা অবস্থায়। যেমনিভাবে রসূলুল্লাহ (সা) তাঁর মৃত্যু-শয্যায় থেকে প্রার্থীনা করেছিলেন। তাঁর রূহকে উর্ধ জগতে উঠিয়ে নিতে ও নবী-রাসূল ও اللهم فى الرفيق الاعلى د CF٢٦هP5C5 | 3$ | * (Pil) <((.*(f> چيS په CT۹)*چاچPiffه এ দু’আ তিনবার বলার পর তিনি ইনতিকাল করেন।

এমনও হতে পারে, হযরত ইউসুফ (আঃ) শরীর ও দেহের সুস্থ থাকা অবস্থার উপর ইসলামের সাথে মৃত্যু কামনা করেছিলেন। আর এটা তাদের শরীয়তে বৈধ ছিল। হযরত ইব্‌ন 5}گS({isRI ماتمنی نبی قط الموت قبل یوسف RiG<F <f6f58) (۹) آS]<R{lP ইউসুফ (আঃ)-এর পূর্বে কোন নবী মৃত্যু কামনা করেননি। কিন্তু আমাদের শরীয়তে মৃত্যু কামনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে, ফিৎনা-ফ্যাসাদের সময় তা জায়েয আছে। যেমন ইমাম আহমদ (র) হযরত মু’আৰ্য (রা)-এর দুআ সম্বলিত হাদীস বর্ণনা করেছেন : ‘হে আল্লাহ! আপনি যখন কোন সম্প্রদায়কে পরীক্ষায় ফেলতে চান তখন ঐ পরীক্ষায় আমাকে না ফেলেই فاذا ارادت بقوم فتنة فتوفنا الیله غیر مفتونین।( ۹۹۹اً f8CRIقع )||۹||۹||۹||۶||||||| অন্য এক হাদীসে আছে : হে আদম সন্তান! ফিৎনায় জড়িয়ে পড়ার চেয়ে মৃত্যুই তোমার জন্যে Ge:

ياً ليتنى مت قبل هذا وكنت نسيا منسيا ة 1031f6216ة (l (SIIد 8 5 الة N 5 ‘Sعة (হায়, আমি যদি এর পূর্বে মরে যেতম এবং মানুষের স্মৃতি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যেতম। (সূরা মািরয়াম : ২৩) হযরত আলী (রা) ইব্‌ন আবি তালিবও মৃত্যু কামনা করেছিলেন তখন, যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চরমে ওঠে, ফিৎনা-ফাসাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে, হত্যা-সন্ত্রাস বিস্তার লাভ করে এবং সর্বত্র সমালোচনার চর্চা হতে থাকে। সহীহ বুখারী সংকলক ইমাম আবু আবদুল্লাহ বুখারী (র)-ও মৃত্যু কামনা করেছিলেন, যখন তাঁর বিরোধীরা সর্বত্র বিরোধিতার বিভীষিকা ছড়িয়ে দিয়েছিল এবং তিনি অত্যধিক মানসিক যাতনায় ভুগছিলেন।

স্বাভাবিক অবস্থায় মৃত্যু কামনা সম্পর্কে ইমাম বুখারী (র) ও ইমাম মুসলিম (র) তাদের সহীহ গ্ৰন্থদ্বয়ে হযরত আনাস ইব্‌ন মালিক (রা)-এর হাদীস বর্ণনা করেছেন, যাতে আছে— রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন :

বিপদে ও দুঃখে পড়ে তোমরা মৃত্যু কামনা করো না। কেননা বিপদগ্ৰস্ত ব্যক্তি যদি নেককার হয়, তাহলে তার নেকী বেড়ে যাবে। আর যদি সে পাপিষ্ঠ হয় তাহলে তার পাপ কমে যাবে। বরং এ রকম বলা উচিত যে, হে আল্লাহ! যতদিন বেঁচে থাকা আমার জন্যে কল্যাণকর

(১ম খণ্ড) ৬২—

85O

হয় ততদিন আমাকে জীবিত রাখুন!! আর মৃত্যু যখন আমার জন্যে মঙ্গলময় হয় তখন আমাকে মৃত্যু দান করুন।

এখানে -> বলতে মানুষের দেহের রোগ বা অনুরূপ অবস্থা বোঝান হয়েছে, দীন সম্পৰ্কীয় নয়। এটা স্পষ্ট যে, হযরত ইউসুফ (আঃ) মৃত্যু কামনা করেছিলেন তখন, যখন তিনি মৃত্যু-শয্যায় শায়িত কিংবা তার নিকটবতী হয়েছিলেন। ইব্‌ন ইসহাক (র) আহলি কিতাবদের উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন যে, হযরত ইয়াকুব (আ) মিসরে পুত্র ইউসুফ (আ)-এর কাছে সতের বছর থাকার পর ইনতিকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি ইউসুফ (আঃ)-এর কাছে ওসীয়ত করে যান যে, তাঁকে যেন তাঁর পিতৃ-পুরুষ ইবরাহীম (আ) ও ইসহাক (আ)-এর পাশে দাফন করা হয়। সুদী (র) লিখেন যে, হযরত ইউসুফ (আঃ) ধৈর্যের সাথে এ ওসীয়ত পালন করেন। পিতার মৃতদেহ তিনি সিরিয়ায় পাঠিয়ে দেন এবং পিতা ইসহাক (আ) ও পিতামহ ইবরাহীম খলীলুল্লাহ (আ)-র কবরের পাশে একই গুহায় তাকে দাফন করা হয়।

আহলি কিতাবদের মতে, হযরত ইয়াকুব (আ) যখন মিসরে যান। তখন তাঁর বয়স ছিল একশ’ ত্রিশ বছর। তাদের মতে, তিনি মিসরে সতের বছর জীবিত থাকেন। (১৩০+১৭= ১৪৭ বছর)। কিন্তু এতদসত্ত্বেও তারা হযরত ইয়াকুব (আ)-এর বয়স লিখেছে সর্বমোট একশ’ চল্লিশ বছর। এ কথা তাদের কিতাবে লিখিত আছে। নিঃসন্দেহে এটা তাদের ভুল। এটা হয় লিপিগত ভুল কিংবা তাদের হিসেবের ভুল অথবা তারা চল্লিশের উপরের খুচরা বছরগুলোকে ছেড়ে দিয়েছে। কিন্তু এ রকম করা তাদের নীতি নয়। কেননা, অনেক স্থানে তারা খুচরা সংখ্যাসহ উল্লেখ করেছে। এখানে কিভাবে এর ব্যতিক্রম করল তা বোধগম্য নয়।

আল্লাহ কুরআনে বলেন :

তবে কি তােমরা উপস্থিত ছিলে যখন ইয়াকুবের মৃত্যু নিকটবতী হয়? যখন সে সন্তানদের বলল : আমার পর তোমরা কার ইবাদত করবে? তারা বলল : আমরা আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম, ইসমাঈল ও ইসহাকের উপাস্যের ইবাদত করব। তিনি একক উপাস্য। আর আমরা সবাই তার কাছে আত্মসমৰ্পণকারী। (সূরা বাকারা : ১৩৩)

হযরত ইয়াকুব (আ) আপনি সন্তানদেরকে যে খালিস দীনের প্রতি ওসীয়ত করেন, তা হল দীন ইসলাম। যে দীনসহ সমস্ত নবীকে তিনি প্রেরণ করেছেন। আহলি কিতাবরা উল্লেখ করে, হযরত ইয়াকুব (আ) তাঁর পুত্রদেরকে একজন একজন করে ওসীয়ত করেন এবং তাদের অবস্থা ভবিষ্যতে কেমন হবে সে সম্পর্কে অবহিত করেন। পুত্ৰ ইয়াহুযাকে তিনি তাঁর বংশ থেকে এক মহান নবীর আগমনের সু-সংবাদ দেন। বংশের সবাই তার আনুগত্য করবে। তিনি হলেন সায়্যিদিনা ঈসা ইব্‌ন মারিয়াম (আ)। আল্লাহই সর্বজ্ঞ।

আহলি কিতাবদের বর্ণনা মতে, হযরত ইয়াকুব (আ)-এর মৃত্যুতে মিসরবাসী সত্তর দিন পর্যন্ত শোক পালন করে। হযরত ইউসুফ (আ) চিকিৎসাবিদদেরকে উৎকৃষ্ট সুগন্ধি দ্বারা পিতার

8እ››

মরদেহকে অক্ষুন্ন রাখতে আদেশ দিলে তারা তাই করে। এভাবে চল্লিশ দিন অতিবাহিত হয়। অতঃপর হযরত ইউসুফ (আঃ) মিসরের বাদশাহর কাছে এই মর্মে মিসরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি চান যে, তিনি পিতাকে পিতৃ-পুরুষদের পাশে দাফন করবেন। বাদশাহ অনুমতি দিলেন। ইউসুফ (আঃ)-এর সাথে মিসরের গণ্যমান্য ও প্রভাবশালী লোকদের এক বিরাট দল গমন করে। হিবরূন (হেব্রন) নামক স্থানে পৌঁছে পিতাকে সেই গুহায় দাফন করেন, যে গুহাটি হযরত ইবরাহীম (আ) ‘ইফরূন ইব্‌ন সাখার-এর কাছ থেকে খরীদ করে নিয়েছিলেন। সাতদিন তথায় অবস্থান করার পর সকলেই স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। পিতার মৃত্যুতে ইউসুফ (আ)-এর ভাইগণ ইউসুফ (আঃ)-কে অত্যধিক সান্তুনা দেন ও সম্মান দেখান। ইউসুফ (আঃ)-ও তাদেরকে সম্মানিত করেন এবং প্রত্যাবর্তনের পর উত্তমভাবে তাদেরকে মিসরে থাকার ব্যবস্থা করেন। এরপর আসে। হযরত ইউসুফ (আঃ)-এর অন্তিমকাল। মৃত্যুকালে তিনি স্ব-বংশীয়দেরকে ওসীয়ত করে যান যে, তারা যখন মিসর থেকে বের হয়ে যাবেন তখন যেন তার লাশও মিসর থেকে সাথে করে নিয়ে যান এবং বাপ-দাদার কবরের পাশে তাকেও যেন দাফন করা হয়।

ফলে মৃত্যুর পরে হযরত ইউসুফ (আ)-এর লাশ সুগন্ধি দ্বারা আবৃত করে একটি সিন্দুকে পুরে মিসরে রেখে দেওয়া হয়। হযরত মূসা (আঃ) যখন বনী ইসরাঈলকে নিয়ে মিসর থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন ঐ সিন্দুকও নিয়ে আসেন এবং তার পিতৃ-পুরুষদের পাশে দাফন করেন। পরে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। আহলি কিতাবদের মতে, মৃত্যুকালে হযরত ইউসুফ (আ)-এর বয়স হয়েছিল একশ’ দশ বছর। আহলি কিতাবদের এই লেখাটি আমি দেখেছি এবং ইব্‌ন জারীর (র) ও তা নকল করেছেন। মুবারক ইব্‌ন ফুযালা হাসান সূত্রে বর্ণনা করেছেন : ইউসুফ (আ)-কে যখন কুয়ায় নিক্ষেপ করা হয়, তখন তাঁর বয়স ছিল সতের বছর। পিতার কাছ থেকে অনুপস্থিত ছিলেন আশি বছর এবং পিতার সাথে মিলনের পরে জীবিত ছিলেন তেইশ বছর। সুতরাং মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল (১৭+৮০+২৩) একশ’ বিশ বছর। অন্যদের মতে, মৃত্যুকালে তিনি তাঁর ভাই ইয়াহুযাকে ওসীয়ত করে যান।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *