অন্তরভেদী অবলোকন

অন্তরভেদী অবলোকন

কাল মৃত্যু হাত বাড়িয়েছিলো আমার ঘরে। জানলার
ফাঁক দিয়ে সেই দীর্ঘ হাত অন্ধের অনুভব শক্তির মতো
বিছানার ওপর একটু একটু এগোল। আমার স্ত্রী শিশুটির
মাথায় পানির ধারা দিচ্ছিলেন। তার চোখ ছিল পলকহীন, পাথর।
স্তন দুটি দুধের ভারে ফলের আবেগে ঝুলে আছে!
পানির ধারা প্রপাতের শব্দের মতো হয়ে উঠে সবকিছুতে
কাঁপন ধরিয়ে দিলো। লুণ্ঠনের আলো ময়ূরের পালকের
অনুকরণে কাপতে লাগলো। অবিকল।

আর সেই হাত, বালিশের কাছে এসে পড়েছে, আমি
দেখলাম। স্ফীত শিরা, নখ কাটা হয়নি। রোমশ।
আমার চীৎকার করতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু মৃত্যুর সামনে আমি
কোনদিন শব্দ করতে পারি না।
সেই হাত জাপটে ধরতে ক্রোধ হলো। কিন্তু মৃত্যুর শক্তি
সম্বন্ধে আমি জানতাম, আমার ধারণা ছিল।
তবে কি প্রার্থনা করবো? না, মৃত্যু তো চেঙ্গিসের
অন্ধের মতো দ্রুতগামী, বধির।
–কে? কে?

জলের ধারা থমকে গেল। আমার স্ত্রী চোখ তুলে
তাকালেন। তার নগ্ন হাতে শূন্য জলপাত্র। ব্লাউজের বোতাম
খুলে গিয়ে ‘ম’-এর আকারের মতো কণ্ঠা উদোম হয়ে আছে।
নির্জল চোখে অন্তরভেদী অবলোকন।
আমি মৃত্যুর দিকে তাকালাম। দেখি, কুকুরের লেজের
মতো সে জানলার দিকে গুটিয়ে যাচ্ছে। নখ কাটা হয়নি,
স্ফীতশিরা রোমশ।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *