1 of 3

০৪০. অপারেশন থিয়েটারের চোখ-ধাঁধানো আলো

অপারেশন থিয়েটারের চোখ-ধাঁধানো আলো রেমির নিষ্প্রভ চোখে ম্লান ও একাকার। নিজের শরীরের মধ্যে এক নদীর কলধ্বনি শুনতে পাচ্ছে সে। রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে না, ডাক্তাররা উদ্বিগ্ন। একটি সদ্যোজাত শিশু মাতৃহারা হবে।

কিন্তু রেমির কোনও উদ্বেগ নেই। এই মধ্যযৌবনে জীবনের খেলা মাঝপথে থামিয়ে চলে যেতে কারই-বা ভাল লাগে! কিন্তু আশ্চর্য এই, রেমি কোনও শোক অনুভব করে না। তার আধাচেতনায় অবশ্য চারদিককার এই উদ্বেগ ও ভয় গিয়ে আঘাত করছে না। সে দেখতে পাচ্ছে না তার শ্বশুরের স্তম্ভিত ক্ষুব্ধ মুখ। সে দেখতে পাচ্ছে না হতভম্ব ধ্রুবর কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা, কিন্তু নিজের নিজকুম শরীরে এক ধরনের কঠিন শীতলতা টের পাচ্ছে সে। শীত নয়, কেমন জমাট, শক্ত পাথরের মতো অমোঘ এক শীতলতা তার দুই পা অনড় এবং অবশ করে রেখেছে। মাথাটা গুলিয়ে যাচ্ছে বারে বারে। চোখের সামনে নানারকম দৃশ্যাবলী ভেসে যাচ্ছে। তার সবটারই কোনও অর্থ নেই কিছু। মাঝে মাঝে সে টের পাচ্ছে যে, সে রেমি। সে রেমিই, আর কেউ নয়। আবার মাঝে মাঝে হারিয়ে যাচ্ছে তার সত্তা।

তার চারদিকে নানান টুকটাক শব্দ হচ্ছে। চাপা কথাবার্তা। বারবার মুখোশ পরা ডাক্তারের মুখ এসে ঝুকে গড়ছে মুখের ওপর। ড্রিপ চলছে। কিন্তু রক্তের কলধ্বনি বড় উতরোল। একটু আগে অসহনীয় গর্ভযন্ত্রণা সহ্য করেছে সে দাঁত টিপে। জন্ম দিয়েছে ধ্রুবর সন্তানকে। নিষ্কলঙ্ক, খাঁটি, চৌধুরীবাড়ির রক্তবাহী শিশুটি নিরাপদে নেমে গেছে মায়ের খোলস ছেড়ে। রেমির এর চেয়ে বেশি আর কী দেওয়ার ছিল এদের? এবার ছুটি, এবার সে ঘুমিয়ে পড়বে।

মিসেস চৌধুরী!

উঁ।—রেমি ক্ষীণ জবাব দেয়।

জিবটা বের করুন তো! প্লিজ!

বড় ক্ষীণ এই আদেশ বহু দূর থেকে ভেসে আসে যেন। রেমি চিরকাল আদেশ পালন করে। কারও অবাধ্য সে কোনওকালে ছিল না।

কষ্টে রেমি জিবটাকে ঠেলে দেয় বাইরে। মনে হল, যেন পাহাড় ঠেলার পরিশ্রম।

কে যেন বলল, শি ইজ রেসপন্ডিং, সেন্‌স আছে।

আছে। তবে ইটস এ হেভি ব্লিডিং, শি উইল বি সিংকিং ফাস্ট।

কে একজন হেঁকে বলল, ব্লাড, কুইক।

রেমিকে কিছুই স্পর্শ করে না, চোখের পাতা সামান্য একটু খুলে সে চেয়ে থাকে। গোধূলি! কনে-দেখা রং চারদিকে, এ সময়ে পাখিরা ঘরে ফেরে। দিন যায়। রাত আসে।

তার আর কী দেওয়ার ছিল নারীজন্ম সার্থক করতে? কোন কাজ বাকি রয়ে গেল? কোন ঋণ? কোন দোষত্রুটি! ঘাট মানি বাবা, ক্ষমা করো। আর আসব না কখনও তোমাদের কাছে। কে। আমাকে এনেছিল পৃথিবীতে? এবার ফিরিয়ে নাও।

পুরী থেকে অত শপথ করে ফিরেছিল রেমি, রাখতে পারল না রোখা ঠিক করে এসেছিল, ধ্রুবর সঙ্গে আর বসবাস নয়। দূরে থাকবে, যদি তাতে কোনওদিন ওর কাছে মূল্য হয়!

শ্বশুরমশাইয়ের জন্য সেই শপথ ভাঙতে হল।

পরদিন সে হাজির হল কালীঘাটের বাড়িতে।

রাত্রিবেলা ক্লান্ত কৃষ্ণকান্ত ফিরলেন। মুখে দুশ্চিন্তার গভীর বেখা। চোখের নীচে কাজলের মতো কালিমা।

রেমিকে দেখে সেই গহন বিষণ্ণতার মধ্যেও সত্যিকারের একটু আনন্দ অস্ফুট হয়ে ফুটল।

এলে মা?

আপনার কী হয়েছে?

তেমন কিছু নয়।

আপনি রোগা হয়ে গেছেন।

এ বয়সে একটু রোগা হওয়া ভাল, বুঝলে!

না, বুঝলাম না, টপ করে রোগা হওয়া ভাল লক্ষণ নয়।

কৃষ্ণকান্ত কোনও জবাব না দিয়ে হাসলেন। সস্নেহে রেমির দিকে চেয়ে রইলেন কিছুক্ষণ, একটু মাথা নাড়লেন।

খাওয়ার টেবিলে যখন বসলেন তখন কৃষ্ণকান্তকে কিছুটা সজীব দেখাচ্ছিল, রাত্রে তাঁর খাওয়া-দাওয়া যৎসামান্য, খই দুধ বা একটু ছানা। কখনও-সখনও এক-আধখানা হাতে গড়া রুটি।

সেই সামান্য খাবার সেদিন অনেকক্ষণ ধরে খেলেন কৃষ্ণকান্ত। খেতে খেতে বললেন, তুমি কি একথা বিশ্বাস করবে বউমা যে, আমি কখনও চুরি করিনি, দুর্নীতির আশ্রয় নিইনি, অকারণে মিথ্যে কথা বলিনি? বিশ্বাস করবে?

কেন করব না? আমি তো জানি ওসব।

কৃষ্ণকান্ত মাথা নেড়ে বলেন, কিছুই জানো না মা, পলিটিকস করলে বুঝতে, চুরি না করা এক কথা, আর অন্যের চুরি দেখেও চোখ বুজে থাকা অন্য কথা। এমন অনেক সময়েই হয়, তুমি চাও বা না চাও অনেক অন্যায়কে তোমার প্রশ্রয় দিতেই হয়।

সেও জানি।

অনেক সময়ে এইসব অন্যের করা দোষের ভাগ নিতে হয় নিজের ঘাড়ে।

আপনার কী হয়েছে বাবা?

সব তোমাকে বলা যায় না। তবে আমাকে একটা মাইনর পোর্টফলিও দেওয়া হয়েছে। সম্ভবত সম্পূর্ণ সরিয়ে দেওয়ারই প্রস্তুতি। সেটা ঘটবার আগেই অবশ্য আমাকে নিজে থেকেই সরে আসতে হবে।

রেমি ছেলেমানুষের মতো বলে, তাতে ভালই তো হবে। আপনার বিশ্রাম দরকার। কিছুদিন রেস্ট নিন।

কৃষ্ণকান্ত মাথা নেড়ে বলেন, দূর বোকা, পুরুষ মানুষের বিশ্রাম কি শুয়ে বসে হয় মা? কাজই তার বিশ্রাম, কাজ না থাকলে আমি কতদিন বাঁচব?

কাজ করবেন। মন্ত্রী যারা না হয় তারা কি কাজ করে না?

কৃষ্ণকান্ত মৃদু একটু হেসে বলেন, তোমার কথাগুলো এত সহজ মা, ভিতরে টনটন করে গিয়ে লাগে। বাস্তবিকই তাই। তবে যে বাঘ একবার মানুষ খেয়েছে তার অন্য মাংস আলুনি লাগে। এও হল সেই বৃত্তান্ত।

আপনি কি রেজিগনেশন দিচ্ছেন?

ঠিক বলতে পারি না। কয়েকদিনের মধ্যেই একটু দিল্লি যাব। হাইকম্যান্ডের সঙ্গে কথা আছে। ফিরে এসে ডিসিশন নেব। আমি তো রাতারাতি পলিটিশিয়ান হইনি মা, আমার পিছনে একটা উজ্জ্বল ইতিহাস আছে।

জানি, বাবা।

তাই আমাকে টক করে সরিয়ে দেওয়া সহজ নয়। কিন্তু এসব কথা থাক। আমার হেনস্থা দেখে যে লোক সবচেয়ে খুশি হতে পারত তার খবর বলো তো। সে ব্যাটা করছে কী?

জানি না, উনি আমাকে হোটেলে ফেলে কোথাও চলে গিয়েছিলেন।

কদিনের জন্য?-হেমকান্ত আঁতকে উঠে জিজ্ঞেস করেন।

এক রাত উনি ছিলেন না।

তোমাকে বলেও যায়নি।

না।

হোটেলের ঘরে তুমি একা ছিলে! সর্বনাশ!

সেইজন্যই ডিসিশনটা নিতে হল। আমি চলে এলাম।

দামড়াটা তখনও ফেরেনি?

ফিরেছে। স্টেশন থেকে ফোন করে জানতে পারি।

তুমি দারুণ বুদ্ধিমতী।

আমি এখন কী করব, বাবা?

কী করবে? তোমার কিছু করার নেই। যা করার আমি করছি।

কী করবেন? ওঁকে ফিরিয়ে আনবেন?

কৃষ্ণকান্ত একটু হাসলেন। মাথা নেড়ে বললেন, সে কাজ খুব সহজ নয়। ভুবনেশ্বরে আমার এক প্রভাবশালী বন্ধু আছে। ক্যাবিনেট মিনিস্টার। তাকে জানিয়েছিলাম। পুরীতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ওই হোটেল ছেড়ে দামড়াটা চলে গেছে। বুদ্ধি রাখে। যেই দেখেছে তুমি নেই, সঙ্গে সঙ্গে আঁচ করে নিয়েছে কলকাতায় এসে তুমি আমাকে খবর দেবে। সময় নষ্ট না করে পালিয়েছে।

কিন্তু উনি পালাচ্ছেন কেন?

সেটা ওই জানে। ধ্রুব কিছুদিন আইন পড়েছিল। পাশ করেছে কি না তা আমি জানি না, কোনওদিন বলেনি আমাকে। কিন্তু আইন পড়ে না হোক, আইন বারবার ভাঙলেও বেশ ভাল আইনের জ্ঞান হতে পারে। কাজেই ধ্রুব আইন ভালই জানে। পুলিশ যে ওর কিছু করতে পারবে না সেটা ওর না জানার কথা নয়। হয়তো এই কাণ্ড করে আমাকে অপদস্থ করার একটা পন্থা বের করছে।

রেমি একটু দুঃসাহসী হল। মাথা নিচু করে আচমকাই বলে বসল, আমাকে একটা কথা বলবেন আজ?

কী কথা, মা?

আমার শাশুড়ি কীভাবে মারা যান?

কৃষ্ণকান্ত একটুও দ্বিধা করলেন না। খুব সহজ কণ্ঠে বললেন, ধ্রুব তোমাকে কী বলেছে জানি, কিন্তু একথা সবাই জানে তোমার শাশুড়ি আত্মহত্যা করেন গায়ে আগুন দিয়ে। অনেকে এতে আমার দোষ খুঁজে পায়। হতেও পারে। তোমার শাশুড়ির মানসিক জগতের খবর আমি বিশেষ রাখিনি। আমরা আগের দিনের মানুষ, স্ত্রীলোককে নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত নই। তবে উনি আমার কাছে তেমন কোনও অনুযোগ অভিযোগ করতেন না। কী করে বুঝব বলল, ওঁর আসল প্রবলেমটা কী ছিল?

আপনার ছেলে কিন্তু খুব তাঁর মায়ের কথা বলেন।

বলতেই পারে। হি ওয়াজ এ উইটনেস অফ দি ইভেন্ট। ছেলে নিজের চোখের সামনে যদি নিজের মাকে পুড়ে যেতে দেখে তবে তার একটা পার্মানেন্ট এফেক্ট তার মনে থাকবেই।

আপনার ছেলে ওই ঘটনার জন্য আপনাকেই দায়ি করতে চায়।

কৃষ্ণকান্ত ম্লান একটু হেসে বলেন, আমি জানি, মা। আমার ফাঁসি হলে ধ্রুব হরির লুট দেবে। কিন্তু আগেই বলেছি, স্ত্রী কেন আত্মহত্যা করলেন তা বলা আমার পক্ষে সহজ নয়। ঘটনাটা যখন ঘটে তখন আমি কলকাতার বাইরে। প্রত্যক্ষ হাত তত থাকতে পারে না, তবে পরোক্ষ কারণের কথা যদি বলো তবে স্বীকার করতে বাধা নেই, আমার অমনোযোগ এবং খানিকটা অবহেলা তো ছিলই।

আর কোনও কারণ নয়?

কী করে বলি! উনি তো একটা চিরকুটও রেখে যাননি, যা থেকে বোঝা যাবে।

তাহলে আপনার ছেলে আপনাকেই দায়ি করে কেন?

ধ্রুব তার মাকে খুব ভালবাসত। আসলে শিশু অবস্থা থেকে ভাইবোনেরা পেয়েছিল মাকেই। বাবাকে তো পায়নি। জেল খাটা, পলিটিকস করে বেড়ানো, হিল্লি-দিল্লি ঘুরে আমার সময় হত না সংসারের দিকে তাকানোর। কাজেই ওরা মাকে ঘিরেই বড় হয়েছে। মা ওদের দ্বিতীয় সত্তা। তোমার শাশুড়ি মানুষটাও ছিলেন নরম-সরম এবং স্নেহপ্রবণ, তবে বড় দুর্বল প্রকৃতির। একটু কঠোর কথা বা কোনও দুঃসংবাদ সইতে পারতেন না। সহজেই ভয় পেতেন। তাঁকে ভালবাসাও সহজ ছিল, তাই তিনি যখন মারা গেলেন এবং ওরকম ভয়ংকরভাবে, তখন আক্রোশে পাগল ধ্রুব একটা স্কেপগোট খুঁজতে লাগল।

ক্ষেপগোট মানে?

এমন একজন, যার ওপর মায়ের ওই ভয়ংকর মৃত্যুর দায়ভাগ চাপানো যায়।

এটা তো ওঁর অন্যায়। ভীষণ অন্যায়।

অন্যায় তো বটেই। কিন্তু আমি প্রতিবাদ করিনি কখনও।

কেন করেননি?

স্ত্রীর প্রতি তেমন কর্তব্য করিনি মা, ভিতরে ভিতরে নিজেকে দোষী মনে হয়। মা-মরা ছেলেটা আর কোথায় সান্ত্বনা পাবে? যদি আমাকে দোষী ভেবে খানিকটা স্বস্তি পায় তো পাক না। ঠিক এরকম ভেবেই আমি ধ্রুবকে একরকম প্রশ্রয় দিতাম। সেটা যে ওর মনে এতদূর ডালপালা ছড়াবে তা ভেবে দেখিনি। আমার আরও দুই ছেলে আছে। তারা কিন্তু ওর মতো করে ভাবে না।

রেমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। কৃষ্ণকান্ত সেদিন ভারী অন্যমনস্ক মুখে উঠে গেলেন টেবিল থেকে।

ধ্রুব ফিরল না। তবে তার এই ফেরার হওয়ার ঘটনাটা বেশ চাউর হয়েছে এটা বোঝা গেল।

একদিন সকালে টেলিফোন কবল রাজা, ধ্রুবর পিসতুতো ভাই। বয়স ধ্রুবর মতোই। ভারী সুন্দর দেখতে। দারুণ গান গায়। রেডিয়োতে আজকাল প্রায়ই তার প্রোগ্রাম থাকে। তা ছাড়া। ফুটকড়াইয়ের মতো ইংরিজি বলে, ভাল ছাত্র ছিল, ইনডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে একটা বিদেশি ফার্মে দুর্দান্ত একটা চাকরিও পেয়ে গেছে।

রাজা বলল, বউদি, ধ্রুবদা কলকাতায় ফিরেছে জানো?

না তো।

ফিরেছে কিন্তু।

তোমার সঙ্গে দেখা হয়েছে?

ঠিক দেখা হয়নি। তবে আমি খবর পেয়েছি।

তাই নাকি?

আমার সঙ্গে যদি যাও তবে তোমাকে ধ্রুবদার ডেরায় নিয়ে যেতে পারি।

ডেরাটা কোথায়?

জায়গাটা খুব ভাল নয়।

ভাল নয় মানে কতটা খারাপ?

আরে না না, বার-টার নয়। বরং উলটো, একটা রিলিজিয়াস বাড়িতে ঢুকে পড়েছে।

সে কী?

ভয় পেয়ো না। সন্ন্যাসী হয়নি, ইটস এ ক্যামোফ্লেজ।

জায়গাটা কোথায়?

নর্থ ক্যালকাটায়।

আমাকে নিয়ে গিয়ে কী হবে?

যদি যেতে চাও তো নিয়ে যেতে পারি।

আমি গিয়ে তো কিছু করতে পারব না, বরং শ্বশুরমশাইকে বলো।

ওরে বাবা! ছোটমামা শুনলে হেভি ফায়ার হয়ে যাবে। পুলিস কেসও হয়ে যেতে পারে।

তাহলে আর কী করা?

আমি বলছিলাম কী, তুমি চলল। আমার মনে হচ্ছে ধ্রুবদার অবস্থা এখন আবার সাধিলেই খাইব। তুমি গিয়ে বললেই সুট করে ফিরে আসবে।

না রাজা, নিজের ইচ্ছেয় যদি ফেরে তো ফিরুক, আমি ওঁর বাবাকে না বলে ওঁকে ফেরাতে যেতে পারি না।

তুমি ধ্রুবদার ওপর রেগে আছো বউদি, লোকটাকে তোমরা সবাই একটু ভুল বুঝে যাচ্ছে কিন্তু।

কীরকম?

যতটা খারাপ লোকটাকে মনে হয় ততটা খারাপ নয়।

জানলাম।

কাল চলল।

অত তাড়া কীসের?

তাড়া আছে বউদি। সেটা সিরিয়াস।

খুব সিরিয়াস বলে তো মনে হচ্ছে না।

তুমি সবটা জানো না।

তাহলে সবটা বলো।

ঠিক আছে। আমি কাল যাচ্ছি।

পরদিন রাজা এল। তার স্বভাবসুলভ ফিচেল হাসিটা ঠোঁটে নেই। বরং একটু উদ্বেগ মাখা মুখ। কী হল? তোমাকে গম্ভীর দেখাচ্ছে কেন?—রেমি শঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞেস করে। যে খবরটা তোমাকে কাল টেলিফোনে দিয়েছিলাম সেটা ঠিক নয়। ধ্রুবদা ওখানে নেই।

রেমি ধ্রুবকে চেনে। তাই হেসে বলল, তাতেই বা কী? অত অ্যাংজাইটির কিছু ব্যাপার নয়। কোথাও আছে! এসে যাবে।

রাজা হঠাৎ হাত বাড়িয়ে রেমির একটা হাত চেপে ধরল, না বউদি, তুমি বুঝতে পারছ না, ধ্রুবদাকে রেসকিউ করতে হবে। হি ইজ ইন এ ট্র্যাপ।

ট্র্যাপ! হাতটা ছাড়িয়ে নিল না রেমি। উঠল। বলল, আচ্ছা যাচ্ছি। কিন্তু এটাও কোনও ট্র্যাপ নয় তো! তোমার ধ্রুবদাই হয়তো তোমাকে পাঠিয়েছে?

না, বউদি! আপন গড।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *