1 of 2

দ্য বেলুন-হোয়্যাক্স

দ্য বেলুন-হোয়্যাক্স

খবরটা রীতিমত বিস্ময়কর। একেবারেই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। বিস্ময়কর খবরটা এক্সপ্রেস কতৃক প্রেরিত হয়েছে। আর এটা এসেছে নরফোক হয়ে।

অবিশ্বাস্য! খবরটা কেবলমাত্র বিস্ময়করই নয়, রীরিমত অবিশ্বাস্যও বটে।

যার সম্বন্ধে এতকিছু বলা হচ্ছে, সে খবরটা আসলে কি, তাই না? –মাত্র তিনদিনে আটলান্টিক মহাসাগর করা–কী করে সম্ভব।

খবরে আরও বলা হয়েছে–উড়ন-যন্ত্রের সাহায্যে মি, মংক ম্যাসন এমন অসম্ভব একটা কাজকে সম্ভব করে তুলেছেন জয়মাল্য গলায় পরেছেন। অসাধারণ নিতান্তই অসাধারণ সাফল্য!

ভিক্টোরিয়া! মনুষ্য চারিত বেলুন ভিক্টোরিয়া।

মি. রবার্ট হল্যান্ড, মি. ম্যাসন, মি. ঘ্যারিসন আইমওয়ার্থ, মি. হেসন আর অন্য চারজন আকাশচারী ভিক্টোরিয়া নামক বেলুনটায় চেপে পঁচাত্তর ঘণ্টায় এক দেশ থেকে অন্য দেশে উড়ে গিয়ে চার্লস্টন, এস. স্টনের নিকটবর্তী সুলিভান দ্বীপে হাজির হলো। এ ঘটনাটাই যাত্রার পূর্ণ বিবরণ হিসেবে গণ্য হবে।

সমস্যা! একের পর এক সমস্যায় জড়িয়ে রীতিমত নাজেহাল হবার যোগাড় হলো। শেষপর্যন্ত বহু চেষ্টা চরিত্রের মাধ্যমে বড়–উল্লেখযোগ্য একটা সমস্যার কিনারা করা সম্ভব হলো।

এবার জলপথ আর স্থলপথের মতোই আকাশপথেও মানুষের বিচরণ সম্ভব হলো। আকাশও বিজ্ঞানের কাছে মাথানত করতে বাধ্য হলো।

বিজ্ঞানের রাজ্যে এবার আকাশও মানুষের সাধারণ ভ্রমণপথে পরিণত হয়ে গেল। পৃথিবীবাসীর দীর্ঘদিনের আশা-আকাঙ্খ এবার সম্ভাবনাময় হয়ে উঠল। মানুষ এবার থেকে অনায়াসেই এক স্থান থেকে অন্য স্থানে মর্জিমাফিক ভ্রমণ করতে পারবে।

সত্যি একটা বেলুনে চেপে আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করে স্থলভূমিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। আরও আছে। এরকম একটা অসম্ভব পরিকল্পনাকে বাস্তবে দিতে গিয়ে, আটলান্টিক সমুদ্রের মতো বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ওপর দিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে গিয়ে কোন সমস্যা দেখা দেয়নি, বড় রকমের কোনো বিপদেও পড়তে হয়নি।

একটা বর্ণও বানিয়ে বলছি না, অতিকায় যন্ত্রটা আগাগোড়া সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে ছিল।

আর সে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে, একূল থেকে অন্যকূলে পৌঁছতে সময় কত লেগেছে? তাও বলছি–দীর্ঘ যাত্রাটা কল্পনাতীতভাবে সম্পন্ন মাত্র পঁচাত্তর ঘণ্টায়। আরও বলছি–এ খুবই সাধারণ সমুদ্রযাত্রাটার সময়কাল ছিল। এ মাসেরই দুই তারিখের সকাল বারোটা থেকে নয় তারিখের দুপুর দুটা পর্যন্ত।

এ অসম্ভব যাত্রার সঙ্গি ছিলেন বিখ্যাত বৈমানিকদ্বয় মি. রবার্ট হল্যান্ড, মি. মংক ম্যাসন, লর্ড বেন্টিঙ্কের ভাইপো মি. অসবোর্ন, স্যার এভারর্ড বিংহাস্ট, জ্যাক শেপার্ড, প্রভৃতি বইয়ের লেখক মি. হ্যারিসন আইন্সওয়ার্থ, উইলসনের দুজন দক্ষ নাবিক আর প্রাক্তন অসফল উড়ন-যন্ত্রের আবিষ্কারক মি. হেনসন–মোট আটজন, আটজনের একটা দলও বলা যেতে পার।

আমরাই যে প্রথম এ ভ্রমণবৃত্তান্ত সর্বসাধারণের কাছে তুলে ধরতে পারছি তা। এস. সি.-এ একজন মহানুভব এজেন্ট চার্লস্টনের সার্বিক সাহায্য সহযোগিতার ফলেই সম্ভব হয়েছে। নিচে সে ভ্রমণের যে বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হচ্ছে, তাকে সবদিক থেকেই নির্ভুল বলে মনে করা যেতে পারে। অর্থাৎ যা-কিছু ঘটেছিল তার সঙ্গে সামান্যতম খাদ না মিশিয়েই সম্পূর্ণ যথাযথভাবে পেশ করা হলো বলে নির্দিধায় মনে করা যেতে পারে। তবে একটা মাত্র খুবই নগণ্য ব্যাপার ছাড়া বিবরণটাকে হুবহু উল্লেখ করা হয়েছে। মি. হ্যারিমশ আর মি. মংক ম্যাসনের যৌথ তৎপরতায় লিখিত বিবরণীয়–হুঁবহু নকলও একে বলা যেতে পারে।

উপরোক্ত ব্যাপারটা ছাড়াও বেলুনটার গঠন প্রকৃতি, আকৃতি আর সেটার ব্যাপারে মৌলিক যাবতীয় তথ্যের জন্য এস সি-র এজেন্ট মি. চার্লস্টন, মি. হ্যারিসন আর মি. মংক জ্যাকসনের অমায়িক আচরণের জন্য তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ ঋণী।

আসল পাণ্ডুলিপিতে যা-কিছু লিখিত আছে তার একটামাত্র দিকের কিছু পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে। এরও কারণ যথেষ্টই রয়েছে। কারণটা সাধারণ হলেও অবশ্যই খুবই সঙ্গত। আমাদের এজেন্ট মি. ফরসাই বিবরণীটাকে অর্থপূর্ণ ও মনোজ্ঞ করে তোলার জন্যই কম-বেশি রদবদল করতে বাধ্য হয়েছেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *