১০. সেকালের সম্পাদকীয়

সেকালের সম্পাদকীয়

সম্পাদক সম্বন্ধে নয়, সেকালের ‘সম্পাদকীয়’ সম্বন্ধে বলছি। সাংবাদিকের ভাষায় যাকে ‘এডিটোরিয়াল’ বা ‘লিডার’ বলা হয়। সাম্প্রতিককালের ‘সম্পাদকীয়’ নয়, সংবাদপত্রের জন্মকালের সম্পাদকীয়। সম্পাদকরা তো নিশ্চয়ই পড়বেন, সাহিত্যপত্রের ও সংবাদপত্রের পাঠকরাও পড়বেন। শিশু—সংবাদপত্রের প্রবীণ সম্পাদকের শিশুসুলভ ‘সম্পাদকীয়’ পড়লে আজকালকার সবচেয়ে গুরুগম্ভীর সম্পাদকও হেসে ফেলবেন। মহাভারতের কথার মতন ‘সম্পাদকীয়’—র কথা অমৃতসমান না হলেও উপভোগ্য।

আমাদের দেশের প্রথম সংবাদপত্র সম্বন্ধে ইংরেজরা প্রকাশ করেন এবং ইংরেজরাই তার সম্পাদক ছিলেন। সাংবাদিকতা সম্বন্ধে ইংরেজরা আজও শ্রেষ্ঠত্বের গর্ব করেন এবং গর্ব তাঁরা সত্যিই করতে পারেন। ইংরেজরাই আমাদের সাংবাদিকতার দীক্ষাগুরু। এহেন গুরুদেবের এদেশে সাংবাদিকতার যৎকিঞ্চিৎ নিদর্শন দেখলে শিষ্যরা আজ আর হয়তো উপকৃত হবেন না, কিন্তু অবাক হবেন। যাঁরা সংবাদপত্রের প্রথম প্রবর্তক, সেকালের সেই ইংরেজ সাংবাদিকদের সংযম বা শালীনতাবোধ বলে বিশেষ কিছু ছিল না। তখন এ দেশের ইংরেজ—সমাজের ঠিক যেরকম চেহারা ছিল, তাঁদের প্রথম সংবাদপত্রে আয়নার মতন সেই চেহারাটাই প্রতিফলিত হয়েছে। অবশ্য তা—ই হবার কথা, কারণ সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ ছাড়া আর কী! ‘সমাচার দর্পণ’ নয়, সংবাদপত্রকে ‘সমাজ—দর্পণ’ বলা চলে। হিকি সাহেব প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশ করেন ১৭৮০ সালে, নাম ‘বেঙ্গল গেজেট’। কিন্তু তাল সামলাতে পারলেন না। এমন কদর্যভাবে ওয়ারেন হেস্টিংসের স্ত্রী সম্বন্ধে যা—তা লিখে ফেললেন, যে, তাঁর কাগজ সরকারি আদেশে বন্ধ হয়ে গেল। একজনের স্ত্রী সম্বন্ধে সংবাদপত্রে লেখা, তা—ও আবার ওয়ারেন হেস্টিংসের স্ত্রী সম্বন্ধে—সে যে কী ভয়ানক তাজ্জব ব্যাপার তা আজ আমরা কল্পনাই করতে পারব না, এমনকি ভোটাভুটির খেউড়—লড়াইয়ের সময়ও নয়। লেডি হেস্টিংস তখনকার কলকাতার ফ্যাশন ও এটিকেটকর্ত্রী ছিলেন। একবার তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনেকেই তখন খানাপিনার সভায় ছোঁক—ছোঁক করে ঘুরে বেড়াতেন। শোনা যায়, মিসেস হেস্টিংস নাকি তখন কলকাতায় বসেও লন্ডন—প্যারিসের হাল—ফ্যাশনের খবর রাখতেন। তাঁর বিশেষ সংবাদদাতারা নিয়মিত চিঠিপত্র লিখে তাঁকে এই সমস্ত খবর জোগাতেন। একবার তিনি খবর পেলেন যে, লন্ডনের সবচেয়ে স্মার্ট মেয়েরা নাকি এমন পোশাক পরতে শুরু করেছেন যে, তাঁদের যত বয়সই হোক, দেখলে কচি খুকি বলে মনে হয়। সঙ্গে সঙ্গে হেস্টিংসপত্নী একদিন হঠাৎ কচি খুকি সেজে এক ভোজসভায় উপস্থিত হয়ে কলকাতার অন্যান্য ইংরেজ মহিলাদের হকচকিয়ে দিলেন। মিসেস ফে (Fay) ভীষণ চটে গিয়ে বললেন, ওটা ‘infantile simplicity’ নয় এবং ‘her whole dress being at variance with our present modes.’ আর—একবার মিসেস হেস্টিংস কোনো এক মজলিশে মাথার চুল একেবারে আলুথালু করে জড়িয়ে তাল পাকিয়ে উপস্থিত হলেন। চূড়াকার কবরী বেঁধে ড্রেসারের কাছ থেকে ড্রেসিং করে, বাকি যে মহিলারা এসেছিলেন, তাঁদের তো প্রধানা লেডির এই কেশের অবস্থা দেখে চক্ষু স্থির হয়ে গেল। মিসেস ফে ব্যাপারটাকে ‘Whim of the moment’ বলে ঠাট্টা করলেন। যা—ই হোক, এইভাবে লেডি হেস্টিংস কলকাতার প্রধানা মহিলা হয়ে তখনকার কলকাতায় ইংরেজ সমাজকে নাচিয়ে বেড়াতেন এবং হিকি সাহেব হেস্টিংসের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেই বেশি মেলামেশা করতেন। কিন্তু তাহলেও হিকি সাহেবের হেস্টিংসপত্নী সম্বন্ধে মানহানিকর কিছু লেখা উচিত হয়েছিল? আজকাল কত মহিলাই তো কত রকমের চালচলন করে ঘুরে বেড়ান এবং তাঁরা নিশ্চয় কারও স্ত্রী, কারও ভগিনী বা কারও কন্যা। কিন্তু তার জন্য কি কোনো সম্পাদক তাঁদের সম্বন্ধে যা—তা মন্তব্য করে কাগজটাকে বন্ধ করে দিতে চান? অথচ ইংরেজ গুরুদের অবস্থা সেকালে এইরকমই ছিল। যেমন ছিল তাঁদের ইঙ্গ—সমাজ, তেমনি ছিল তাঁদের সংবাদপত্র। তাঁদের দৈনন্দিন জীবনের অনাচার, ব্যভিচার, লোভ—হিংসা—বিদ্বেষ, অশিষ্টতা ও উচ্ছৃঙ্খলতার প্রতিচ্ছবি ছিল তাঁদের প্রথম যুগের সংবাদপত্রগুলি। মুনাফা নিয়ে মারামারি করা, স্ত্রীলোক ও মদিরা নিয়ে টানাটানি করা, প্রেম করে নাকানিচোবানি খাওয়া এবং এ দেশের লোকদের ক্রীতদাসের মতন চাবকানো—এই ছিল তখনকার কলকাতার ইঙ্গ—ভারতীয় সমাজের দৈনন্দিন কর্ম ও ধর্ম। এইসব উপকরণই তখন সংবাদপত্রের খোরাক জোগাত। তখন রাজনীতি বিশেষ ছিল না, পার্টি—পলিটিকস তো ছিলই না, পার্লামেন্টের অধিবেশন ছিল না, এমনকি ইলেকশনও ছিল না। সুতরাং সংবাদপত্রের আর কাজ কী? কিছু কিছু বিজ্ঞাপন ও নতুন নতুন ব্যবসার জিনিসপত্তরের খবর ছাপানো, টুকিটাকি নোটিশ বা বিজ্ঞপ্তি ছাপানো, মাঝে মাঝে দু’চারটে বিদেশের ও এ দেশের রাজদরবারের চমকপ্রদ সংবাদ দেওয়া, আর লোকজনের পিছনে লাগা, বিশেষ করে ফেউয়ের মতন মহিলাদের পিছনে লাগাই ছিল সম্পাদকের অন্যতম কাজ। তাতেও তাঁদের কোনোরকম সংযম বা শালীনতাবোধ ছিল না। অসংযমের মাত্রা তাঁরা এত দূর ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন যে, ১৭৯৯ সালে ওয়েলেসলি প্রথম প্রেস আইন জারি করে সংবাদপত্রের স্বাধীন মতামত প্রকাশে হস্তক্ষেপ করেন। সেক্রেটারিকে আগে না দেখিয়ে কোনো সংবাদপত্রে কিছু ছাপা চলবে না। যদি কোনো সম্পাদক নিয়মভঙ্গ করেন, তাহলে তাঁকে ইয়োরোপে নির্বাসিত করা হবে। ইয়োরোপে নির্বাসন দেওয়ার কারণ হল, তখনকার ইংরেজি সংবাদপত্রের সম্পাদকও ছিলেন ইংরেজরা, বাংলা সংবাদপত্রও ছিল না, বাঙালি সম্পাদকও ছিলেন না কেউ। যে ইংরেজরা আমাদের দেশে ছাপাখানা ও সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা করে নবযুগের প্রবর্তন করেছিলেন, সেই ইংরেজদেরই অপকর্মের ফলে সর্বপ্রথম আমরা তার স্বাধীনতা হারালাম।

হিকির কাগজ হেস্টিংসপত্নীকে অপমান করে বন্ধ হয়ে গেল। তারপর ‘ইন্ডিয়া গেজেট’ ক্যালকাটা গেজেট’, ‘হরকরা’ প্রভৃতি আরও কয়েকখানি কাগজ প্রকাশিত হল। ১৭৮৪ সালে ‘ক্যালকাটা গেজেট’ প্রকাশিত হয় এবং তাতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির খবরাখবর ও বিজ্ঞপ্তি প্রচারের অনুমতি দেন কাউন্সিল। কিন্তু তাহলেও, সরকারি বিভাগের সঙ্গে সম্পাদকীয় বিভাগের একটা ব্যবধান ছিল এবং সম্পাদকও তাঁর নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে চলতেন। সংবাদপত্রে সম্পাদকীয় মন্তব্যের বিষয়বস্তু তখন খুব বেশি ছিল না। সেই সময় ‘সম্পাদকীয়’ স্তম্ভে যা প্রকাশ করা হত তা আজ বোধহয় কোনো সম্পাদকই প্রকাশ করতে সাহস করবেন না, বরং লজ্জা বোধ করবেন। কিন্তু আগেই বলেছি, তখনকার ইংরেজ সম্পাদকের লজ্জা, মান, ভয় কোনোটারই তেমন বালাই ছিল না এবং কোনোটা নিয়েও তাঁরা সাংবাদিকতা করতেন না। সম্পাদকীয় স্তম্ভে মধ্যে মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় সম্বন্ধে আলোচনা বা মন্তব্য একেবারেই যে করা হত না তা নয়। ফরাসি বিপ্লবের খবর, ডক্টর জনসনের শবযাত্রার বর্ণনা, উইলিয়াম জোন্সের মৃত্যুর পর মন্তব্য, চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ইত্যাদি বিষয়ও ‘ক্যালকাটা গেজেট’—এ সম্পাদকীয় স্তম্ভে প্রকাশ করা হত। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে কদাচিৎ লেখার সুযোগ হত। শুনলে হয়তো অবাক হবেন, সাধারণত সম্পাদকীয় স্তম্ভে ছাপা হত ‘কবিতা’ ও ‘চুটকি’ খবর। আজকাল কবিতা ও কবির প্রাচুর্য নিয়ে আমরা ঠাট্টাবিদ্রুপ করে থাকি, আর সংবাদপত্রে কবিতার বিশেষ আমলও দেওয়া হয় না, সম্পাদকীয়তে তো নয়ই। ‘ক্যালকাটা গেজেট’ কিন্তু ফ্রান্সিস গ্লাডউইনি সাহেব মনের আনন্দে কবিতা ছাপতেন এবং রীতিমতো কবিদের একটা ‘কর্নারই’ ছিল তাঁর পত্রিকায়। সংস্কৃত কবিতা, ফরাসি কবিতা, লাতিন কবিতা বেছে বেছে অনুবাদ করে দেওয়া হত। শুধু অনুবাদ নয়, অরিজিনাল কবিতাও যথেষ্ট ছাপা হত, এবং সত্যিই তার মধ্যে অরিজিনালিটি আছে কি নেই, তা নিয়ে সম্পাদকমশায় বিশেষ মাথা ঘামাতেন না। ‘ফিলিংটাই’ তখন বিচার্য বিষয় ছিল। কেউ যদি সত্যি কোনো অকৃত্রিম ‘ফিলিং’ থেকে হৃদয়ের ভাবানুভাব কবিতায় প্রকাশ করতেন এবং সেই কবিতা—

‘To the Editor of the Gazette

Sir,—By inserting the accompanying in your paper you will oblige.’

A Well-wisher.’

শুধু এইটুকু লিখে পাঠিয়ে দিতেন, তাহলে সম্পাদকমশায় তা বাতিল কাগজের বাস্কেটে ফেলে দিতেন না, সাগ্রহে ও সযত্নে ছাপাতেন, এমনকি তাঁর নিজের সম্পাদকীয় স্তম্ভে। আজকাল এরকম উদার সম্পাদক বাস্তবিকই দুর্লভ। কী জানি কেন, দু’চার দিনের রাজনৈতিক নেতা, চোর—ডাকাত, খুনি, ব্যবসায়ী ইত্যাদি শ্রেণির লোকজন এবং তাদের কার্যকলাপ ছাড়া আধুনিক সম্পাদকরা আর কাউকে বিশেষ আমল দিতে চান না, সম্পাদকীয় স্তম্ভে তো একেবারেই না। কবিদের কোনো স্থান নেই, প্রেমিকদের তো একেবারেই নেই। তা—ই বলে আধুনিক সম্পাদকরা যে প্রেমিক বা কবি হতে পারেন না তা নয়। কিন্তু যে—কোনো কারণেই হোক, সম্পাদকীয় স্তম্ভে প্রেম ও প্রেমিকদের কথা আলোচনা করা একেবারে যেন ‘ট্যাবু’। তখনকার ইংরেজ সম্পাদকরা এরকম বেরসিক ছিলেন না। প্রেমিকদের ব্যর্থ প্রেমের কবিতা বিশুদ্ধ প্রেমের কবিতা, তাঁরা সাগ্রহে প্রকাশ করতেন। প্রেমিকদের এইভাবে প্রচুর স্কোপ দিয়ে উৎসাহিত করা হত। অবশ্য প্রেমটাও তখন পর্বত লঙ্ঘনের মতন একটা ভয়ানক ব্যাপার ছিল, এখনকার মতন এতটা সড়গড় ছিল না।

কলকাতার ইংরেজ সমাজের মেয়েরা তখন অত্যন্ত দুর্লভ বস্তু ছিলেন। নবাবের কাছ থেকে নতুন সনদ পাওয়া, জমিদারি পাওয়া বা খিলাত পাওয়া তার চেয়ে অনেক সহজ ছিল। কিন্তু প্রেম করার মতন বা বিবাহ করার মতন মেয়ে পাওয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন। ক’জন মেয়েই বা বিলেত থেকে বাংলা দেশে আসতেন? কোম্পানির চাকরি নিয়ে বিলেত থেকে যে সাহেবরা এ দেশে আসতেন, তাঁরা খুব বেশি টাকা বেতন পেতেন তা নয়। খুব অল্প টাকাই তাঁরা বেতন পেতেন। তার জন্য তাঁদের সকলকেই গোপনে বেনামীতে ব্যবসাবাণিজ্য করতে হত এবং সাধারণত এ দেশি বাঙালি গোমস্তা ও দালালদের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাঁরা উপরি অর্থ রোজগারের ব্যবস্থা করতেন। তা ছাড়া, একাই তাঁরা আসতেন, অনেকটা দুঃসাহসিক যাত্রীর মতন, ‘কেরিয়ার’ তৈরির উদ্দেশ্যে। তারপর যখন অনেকে কেরিয়ার তৈরি করে সামান্য কেরানি থেকে গবর্নর—জেনারেল পর্যন্ত হয়ে, প্রচুর ধনদৌলত সঞ্চয় করে দেশে ফিরতে লাগলেন এবং ইংরেজ ‘নবাব’ বলে পরিচিত হলেন, তখন বিলেতের অবিবাহিত কন্যাদের বাপ—মায়েদের মধ্যে একটা চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হল। কিছু কিছু কুমারী কন্যা তখন তাঁরা কলকাতার শহরে চালান দিতে লাগলেন। এবং সেই সময় থেকে বিলেতি কৌচগাড়ি, বিলেতি মদ, জুয়েলারি ইত্যাদির সঙ্গে বিলেতি তরুণীদেরও এ দেশে আমদানি হতে থাকল। বিলেতি বাপ—মায়েরা তাঁদের কন্যাদের পাঠাতেন সিবিলিয়ান, বড় অফিসার ইত্যাদি পাকড়াও করার জন্য। স্বল্প বেতনের যুবক ইংরেজ কেরানি কর্মচারীরা এইসব বিলেতি কুমারীদের কাছে বিশেষ পাত্তাই পেতেন না। দূর থেকে তাঁরা দেখতেন, আর দীর্ঘশ্বাস ফেলতেন। পাকা ঝুনো ইংরেজরা, যাঁরা প্রচুর অর্থ জমিয়েছেন, তাঁদের নিয়েই প্রচণ্ড কম্পিটিশন হত এবং তাঁদের সাপ্লাই কম, ডিমান্ড বেশি বলে বিবাহ—বাজারে দামও চড়ে যেত খুব। সুতরাং ইংরেজ তরুণীরাও সহজে ‘হাজব্যান্ড’ নির্বাচন করতে পারতেন না এবং ইংরেজ তরুণরাও দূর থেকে হাহুতাশ করতেন। মধ্যে থেকে বিবাহযোগ্য তরুণ ও তরুণী উভয়েরই বয়স বাড়তে থাকত। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা হত ইংরেজ তরুণীদের। স্বামী—শিকারে ব্যর্থ হয়ে দিন গুনতে গুনতে তাঁরা প্রৌঢ়ত্বের কোঠায় পৌঁছতেন এবং সেটা ঢাকা দেবার জন্য মুখে রং করে আজকালকার একশ্রেণির আধুনিকার মতন বিবাহ—বাজারে ঘুরে বেড়াতেন। এই নিয়ে ঠাট্টা করে জনৈক ইংরেজ কবি একটি সুন্দর কবিতা লিখেছিলেন—

Pale faded stuffs, by time grown faint

Will brighten up through art;

A Britain gives their faces paint,

For sale at India’s mart.

কলকাতার ইংরেজ সমাজের তখনকার প্রেমের বাজার ও বিবাহের বাজারের এই অবস্থাটা মনে রাখলে, ‘ক্যালকাটা গেজেট’ পত্রিকার ‘পোয়েটস কর্নার’ এবং সম্পাদকীয় স্তম্ভে প্রেমের কবিতা ছাপার কারণ অনেকটা বোঝা যায়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *