ইন এ গ্লাস ডার্ক লি

ইন এ গ্লাস ডার্ক লি

আমার কাছে এই গল্পের কোনো ব্যাখা নেই। আমার কাছে কোনো তত্ত্বও নেই–কেন এবং কীজন্য এটা, এটা একটামাত্র জিনিস–যেটা ঘটেছিল।

সবকিছু একইরকম। আমি কখনো কখনো বিস্মিত হয়ে যাই, কিভাবে জিনিসগুলো এগোতে পারত যদি আমি সময়মতো সেগুলো লক্ষ্য করতে পারতাম। একটামাত্র গুরুত্বপূর্ণ খুঁটিনাটি তথ্য। কিন্তু আমি এটা কখনোই উপলব্ধি করিনি। এবং এটা আমি অনেক বছর পরে বুঝতে পেরেছিলাম। যদি আমি এটা লক্ষ্য করতাম–ঠিক আছে, আমি মনে করি তিন জনের জীবনে অনেক বেশি পরিবর্তন আসত। যাইহোক এটা খুবই একটা ভীতিপ্রদ চিন্তা।

এখানে ঘটনাটা শুরুর জন্য, আমাকে গরমকালের ১৯১৪ সালে ফিরে যেতে হয়েছে–এটা যুদ্ধের আগে। যখন আমি ব্যাজওয়ার্দি থেকে নীল কারসলেকে নিয়ে নেমে এসেছিলাম। নীল, আমি মনে করি আমার প্রিয় বন্ধু। আমি তার ভাই অ্যালানকেও চিনি, কিন্তু ভালোভাবে চিনি না। সিলভিয়া, তাদের বোন, আমি তার সঙ্গে কখনই সাক্ষাৎ করিনি। সে অ্যালান-এর থেকে দুবছরের বড় এবং নীলের থেকে তিন বছরের ছোট। দুবছর যখন আমরা স্কুলে একসঙ্গে ছিলাম, আমি তার সঙ্গে ছুটির দিনে সময় কাটানোর জন্য ব্যাজওয়ার্দিতে যেতাম এবং দুবার আমাকে কেউ বাধা দিয়েছিল। সুতরাং এটা বোঝ গিয়েছিল গেল যে আমি ২৩ বছরের ছিলাম যখন আমি নীল এবং অ্যালানের ঘরে গেছিলাম।

আমাদের সেখানে অনেক বড় বড় পার্টি হত। নীলের বোন একজনের সঙ্গে ঘনিষ্ট হয়েছিল। সেই লোকটার নাম হল চার্লস ক্ৰলে। নীল বলেছিল যে ক্রলে তার বোনের থেকে একটু বেশী বয়সী ছিল কিন্তু সে খুব মার্জিত, ভদ্র এবং বাস্তবিকপূর্ণ ছিল।

আমরা পৌঁছেছিলাম, আমি মনে করছি, ঠিক সাতটার সময় সন্ধেবেলা। প্রত্যেকেই তাদের নিজস্ব ঘরে গেছে রাতের খাবার খাওয়ার পর। নীল আমাকে নিয়ে গেল, ব্যাজওয়ার্দি খুব আকর্ষিত এবং ভ্রাম্যমান পুরনো বাড়ি ছিল। এটা শেষ তিন শতকে বিনামূল্যে যোগ করা হয়েছিল এবং অনেক সিঁড়িতে ভর্তি ছিল। যেগুলো ওপরে কিংবা নীচের দিকে গেছে। এটা এমন একটা ঘর যেখানে তুমি তোমার পথ খুঁজে পাবে না। আমি মনে করি নীল আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আসবে বলে এবং আমাকে ওখানে নিয়ে গেছিল রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। আমি তখন খুব লজ্জিত হয়েছিলাম যখন আমি সেই সমস্ত লোকেদের সঙ্গে প্রথমবার সাক্ষাৎ করেছিলাম। আমি মনে করি যে অট্টহাসি হেসে এটা বলা যেতে পারে যে এটা এমন এক ধরনের বাড়ি যেখানে লোকজন সরু গলির মধ্যে ভূতের দেখা পাবে। এবং সে বলেছিল অসতর্কভাবে যে সে বিশ্বাস করে এই জায়গাটায় একটা ভূতের বাসস্থান ছিল। কিন্তু কেউ কখনই ভূতকে দেখেনি। এবং এমনকি সে নিজেও জানে না ভূতকে কেমন দেখতে ছিল।

তারপর সে তাড়াহুড়ো করে গেল, তারপর আমি অ্যানি। সন্ধেবেলার পোশাকের জন্য স্যুটকেসে ঢুঁ মারলাম। তখন কারসলেকটা ঠিকঠাক ছিল না। তারা তাদের পুরনো ঘরকে আঁকড়ে ধরেছিল। কিন্তু সেখানে কোনো ছেলে চাকর ছিল না যে সন্ধেবেলার পোশাকটা বার করে দেবে।

ঠিক আছে, আমি মঞ্চে চলে গেলাম, টাইটাকে ঠিকঠাক বেঁধে। আমি গ্লাসের সম্মুখে দাঁড়িয়েছিলাম। আমি আমার নিজের মুখ এবং নিজের কাঁধগুলো দেখতে পাচ্ছিলাম এবং তাদের পিছনে একটা ঘরের দেওয়াল ছিল–একটা প্রশস্ত দেওয়াল, যেটা মাঝখানে ভেঙ্গে গেছে দরজার দ্বারা–এবং যখন আমি আমার টাইটা শেষবারের মত বাঁধলাম, আমি দেখলাম যে দরজাটা খোলা ছিল।

আমি জানি না আমি কেন চারিদিকে ফিরে তাকালাম না আমি মনে করি এটা একটা প্রাকৃতিক জিনিস হওয়া উচিত কিছু করার জন্য। যাইহোক, আমি এটা করিনি। আমি শুধু দেখেছিলাম দরজাটা দুলছিল ভোলা অবস্থায়। যখন এটা দুলছিল তখন আমি ঘরটা অতিক্রম করে দেখলাম। এটা একটা শোওয়ার ঘর ছিল-আমার ঘর থেকেও এটা অনেক বড়–দুটো বিছানার সুবিধা ছিল। এবং আমার শ্বাসপ্রশ্বাসটা যেন কেউ চেপে ধরেছিল।

খাটের একটা পায়াতে একজন মেয়ে ছিল এবং তার গলায় মানুষের দুটো হাত দিয়ে জড়ানো ছিল এবং লোকটি তাকে আস্তে আস্তে পিছনের দিকে টানছিল এবং তার গলা চেপে ধরছিল যেরকম সাধারণতঃ করা হয় যাতে মেয়েটি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যায়।

সেখানে ভুল হওয়ার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা ছিল না। আমি যেখানে কি দেখলাম পুরো পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছিল, সেখানে একটা হত্যার ঘটনা ঘটেছিল।

আমি পরিষ্কারভাবে সেই মেয়েটির মুখটা দেখতে পাচ্ছিলাম, তার স্পষ্টত সোনালী চুলগুলো। এবং নিদারুণ যন্ত্রণাদায়ক ভীতি তার সুন্দর চোখের মধ্যে। যেটা রক্তের দ্বারা লাল হয়ে উঠেছিল। তাদের মধ্যে ওই লোকটার পেছনে, তার হাতগুলো এবং একটা ক্ষত তার মুখের বামদিক থেকে গলা পর্যন্ত চলে গিয়েছিল।

এটা কিছু সময় লাগবে বলার জন্য। কিন্তু বাস্তবিকপক্ষে একটা কিংবা দুটো মুহূর্ত অতিবাহিত হয়েছিল তারপর আমি বোকার মত তাকিয়ে থাকলাম। তারপরে আমি ঘুরতে লাগলাম কিভাবে এখান থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যেতে পারে।

এবং আমার পেছনের দেওয়াল, যেটা গ্লাসে প্রতিফলিত হচ্ছিল, সেখানে একটা ভিক্টোরিয়ান মেহগনির আলখিল্লা ছিল। কোনো দরজা খোলা ছিল না, সেখানে কোনো হিংসাও ছিল না। আমি আবার আয়নার দিকে ঘুরে গেলাম তখন আয়নার মধ্যে শুধু আলখিল্লার প্রতিফলন পড়ল।

আমি আমার চোখের চারদিকে হাতটা ঘোরালাম। তারপর আমি ছুটে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম এবং আলখিল্লাটাকে সামনের দিকে টানতে চেষ্টা করলাম, ঠিক সেই মুহূর্তে নীল অন্য দরজা দিয়ে প্রবেশ করল এবং আমাকে জিজ্ঞাসা করল–আমি কি সমস্ত বাজে কাজ করার চেষ্টা করছি।

সে আমাকে নিশ্চয়ই কিছুটা বুদ্ধিহীন ভেবেছিল, যখন আমি তার দিকে ফিরে তাকালাম এবং আমি দাবি করলাম আলখিল্লার পেছনে কোনো দরজা আছে। সে বলল, সেখানে একটা দরজা ছিল, সেটা পরের ঘরে যাওয়ার পথ নির্দেশ করেছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম–কে পরের ঘরটা অধিকার করে আছে এবং সে বলল লোজন তাকে ওলাডাম বলে ডাকে। এই ওলাডাম তার স্ত্রীকে নিয়ে এখানে বসবাস করত। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম–মিসেস ওলডাম-এর কি সুন্দর সোনালী চুল ছিল এবং তখন সে শুকনো ভাবে উত্তর দিল যে মিসেস ওলডাম কালো ছিল। তখন আমি ভাবতে পারলাম যে আমি নিজে নিজেকে ওদের সঙ্গে টেনে তুললাম, কিছু অবাস্তব ব্যাখ্যা করলাম, তারপর একসঙ্গে আমরা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে আসলাম। আমি নিজেকে বললাম যে আমার মনের মধ্যে কিছু ঘটনা উদিত হচ্ছে–আমি তখন খুব লজ্জিত হয়ে গেলাম এবং আমি তখন নিজেকে গাধার সঙ্গে তুলনা করলাম।

এবং তখন–নীল বলল–আমার বোন সিলভিয়া এবং আমি যে মেয়েটার সুন্দর মুখটা দেখেছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আমাকে শ্বাসরুদ্ধ করে মারার চেষ্টা করা হয়েছিল। এবং আমাকে তার বাকদত্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই লোকটা একজন কালো লম্বা মানুষ যার মুখমণ্ডলের বামদিকে ক্ষতের দাগ আছে।

-ঠিক আছে, ঠিক আছে, আমি ভাবতে পছন্দ করি এবং বলি, তোমার কি করা উচিত ছিল আমার জায়গায়, এখানে সেই মেয়েটা–যাকে চিহ্নিত করা গেছে–এবং এখানে সেই মানুষটাকে দেখছি যে সেই মেয়েটার গলা টিপে ধরেছিল। এবং তাদের একমাসের মধ্যে বিয়ে হবে।

আমি ছিলাম–কি ছিলাম না-এটা একটা ভবিষ্যতের দৈবদৃষ্ট ছিল। যদি সিলভিয়া এবং তার স্বামী ভবিষ্যতে কিছু সময় এখানে থাকার জন্য আসত এবং তাদেরকে যদি এই ঘরটা দেওয়া হত (সব থেকে খালি ঘর) এবং এই জায়গায় আমি এই করাল বিভীষিকা লক্ষ্য করতে পারতাম।

আমাকে এটার সম্বন্ধে কী করতে হল? আমি কি কিছু করতে পেরেছিলাম? কেউ কি এমনকি নীল, কিংবা ওই মেয়েটা, তারা কি আমাকে বিশ্বাস করেছিল?

আমি পুরো ঘটনাটা আমার মনের মধ্যে এক সপ্তাহ ধরে ভাবতে লাগলাম। আমি ভাবলাম, এটা বলব কি বলব না? এবং ঠিক সেই সময়ে একটা জটিল পরিস্থিতি উদ্ভব হল। তুমি দেখ আমি সিলভিয়া কারসলেক-এর সঙ্গে ভালোবাসায় জড়িয়ে পড়লাম, যখনি আমি তাকে প্রথমবার দেখেছি।

আমি তাকে অনেক বেশী করে চাইতাম পৃথিবীর অন্য কিছুর থেকেও…এইভাবে যেটা আমার হাত বেঁধে দিয়েছিল।

এবং অধিকন্তু, আমি যদি কিছু না বলতাম, সিলভিয়া চার্লস ক্ৰলেকে বিয়ে করত এবং ক্রলে তাকে মেরে ফেলত।

এবং সুতরাং আমার আসার আগের দিন, আমি তাকে বোকার মত সবকিছু বলে ফেললাম। আমি বলেছিলাম সে যেন আমাকে বুদ্ধিসম্পন্ন ভাবে, কিন্তু আমি জাঁকজমকপূর্ণভাবে শপথ করি যে আমি যা দেখেছি আমি তাকে বলেছিলাম, তারপরে আমি ভেবেছিলাম যে সে ক্ৰলেকে বিয়ে করার জন্য দৃঢ় সংকল্প, আমার অবশ্যই তাকে অদ্ভুত অভিজ্ঞতা বলা উচিত ছিল।

সে শান্তভাবে শুনছিল, তার চোখে কিছু দেখা গেল কি না, আমি বুঝতে পারলাম না। সে মোটেই রাগী ছিল না, যখন আমি বলা শেষ করলাম, সে আমাকে অনেক ধন্যবাদ জানাল। আমি একটা মূখের মত বারবার বলতে লাগলাম। আমি এটা দেখেছিলাম, আমি সত্যিই এটা দেখেছিলাম। তারপর সে বলল–আমি বিশ্বাস করছি তুমি যখন এত করে বলছ, আমি তোমাকে বিশ্বাস করি।

ঠিক আছে। আমি জানি না এটা ঠিক কিংবা আমি একজন বোকা। কিন্তু এক সপ্তাহ পরে সিলভিয়া চার্লস ক্রলের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভেঙ্গে দিল।

তারপরে যুদ্ধ আরম্ভ হল, এবং তখন অন্য কিছু ভাবার আর সময় ছিল না। একবার কিংবা দুবার সিলভিয়াকে ছেড়ে আমাকে যেতে হয়েছিল, তাই আমি চেষ্টা করেছিলাম যতটা সম্ভব তাকে এড়িয়ে যেতে।

আমি তাকে পাগলের মত ভালবাসতাম এবং সারা জীবনের জন্য তাকে চাইতাম। কিন্তু আমি ভাবতাম যেন এটা হচ্ছে না কি, এটা আমাকে ঋণী করেছিল যে সে ক্ৰলের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটিয়েছে এবং আমি নিজেকে বলতে লাগলাম যে আমি এটার বিবেচনা করেছি এবং এটা খুব একটা আগ্রহান্বিত ছিল না।

তারপর, ১৯১৬ সালে নীল মারা যায়, এবং তার শেষ মুহূর্তের কথাগুলো আমাকে বলতে হয়েছিল সিলভিয়াকে। আমি কিন্তু তারপরে বসে থাকিনি, সিলভিয়া নীলকে ভীষণ শ্রদ্ধা করত এবং সে আমার প্রিয় বন্ধু ছিল। সিলভিয়া খুব মিষ্টি এবং শ্রদ্ধার ক্ষেত্রেও খুব মিষ্টি মেয়ে ছিল, আমাকে আমার নিজের জিভকে ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হয়েছিল এবং প্রার্থনা করতে হয়েছিল যাতে একটা বুলেট সমস্ত দুর্দশাগ্রস্ত ব্যবসাকে শেষ করে দিতে পারে। সিলভিয়া ছাড়া জীবনে বাঁচা যাবে না সে উপলব্ধি করেছিল।

কিন্তু সেখানে আমার নামে কোন বুলেট ছিল না, একজন আমার ডানকানের কাছে ছিল, কিন্তু আমি জবুথবু না হয়ে সোজা এগিয়ে চললাম। চার্লস ক্ৰলে ১৯১৮ সালের শুরুতে যুদ্ধে মারা যায়।

যাইহোক এটা একটা পার্থক্য তৈরী করেছিল, আমি ১৯১৮ সালের বসন্তকালে বাড়িতে আসলাম, এবং আমি সোজা সিলভিয়ার কাছে চলে গেলাম এবং তাকে বললাম যে, আমি তাকে ভালোবাসি। আমার খুব বেশী বিশ্বাস ছিল না যে সে আমার দেখাশোনা করবে এবং তুমি আমাকে একটা পালক দিয়ে নাড়িয়ে দিয়েছিলে যখন সিলভিয়া আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে আমি তাকে এত তাড়াতাড়ি বলিনি কেন। আমি ক্ৰলের সম্বন্ধে ভাবতে লাগলাম এবং সে বলল, কিন্তু কেন, তুমি ভাব যে আমি এই সম্পর্কটা তার সঙ্গে ভেঙ্গে দিয়েছি। এবং তারপরে সে আমাকে বলল যে সে আমাকে ভালবেসেছে যেরকম আমি তাকে ভালো বেসেছিলাম–একদম প্রথম দেখা থেকে।

আমি বললাম যে আমি ভেবেছিলাম হয়তো এই গল্পের জন্য এটা ঘটেছে এবং সে বিদ্রুপাত্মকভাবে অট্টহাস্যে হাসতে লাগল এবং বলল–তুমি যদি একজন মানুষকে ভালবাস, তাহলে তোমার এতটা কাপুরুষ হওয়া উচিত নয়, এবং আমি আমার পুরনো কল্পনাগুলি ভাবতে লাগলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম যে এটা ছিল অদ্ভুত কিন্তু এর থেকে বেশী কিছু নয়।

ঠিক আছে, এটার পর আর কিছু বলার নেই। তারপর সিলভিয়াকে আমি বিয়ে করলাম এবং আমরা খুব খুশী ছিলাম। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে সে সেই মুহূর্তে আমার হয়ে গেছে। তখন সে আমাকে ভালো স্বামী হওয়া থেকে রুখতে পারবে না, আমি সিলভিয়ার প্রতি ভীষণ অনুরক্ত ছিলাম, কিন্তু আমি অন্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত ছিলাম। কারণ তার হাসিটা আমাকে তার প্রতি আগ্রহান্বিত করে তুলেছিল। এটা তাকে আনন্দিত করেছিল, আমি মনে করি বরং সে এটা পছন্দ করত। এটা প্রমাণ করেছিল আমি তার প্রতি কতটা অনুরক্ত ছিলাম।

আমার জন্য, আমি পুরোপুরি বুঝতে পেরেছিলাম, এবং নির্ভুলভাবে আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে আমি নিজে নিজেকে বোকা বানাচ্ছিলাম। এবং আমাদের জীবনে শান্তি এবং সুখ আরো বেশি বিপদাপন্ন হয়ে উঠেছিল। আমি জানতাম,আমি বললাম, কিন্তু আমি পরিবর্তন করতে পারলাম না। প্রত্যেক সময় সিলভিয়া একটি করে চিঠি পেয়েছিল। সে আমাকে দেখায়ওনি। এবং আমি বিস্মিত হয়ে গেলাম এটা ভেবে যে কার কাছ থেকে এই চিঠিগুলো আসছে। যদি সে হাসত এবং অন্য কোনও লোকের কথা বলত, আমি তার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।

প্রথমে আমি যেরকম বলেছিলাম সিলভিয়া আমাকে নিয়ে অট্টহাসি হাসত, সে ভাবত এটা একটা বড় ঠাট্টা, তারপর সে ভাবত না যে ঠাট্টাটা অনেক মজার ছিল। শেষপর্যন্ত সে ভাবল না যে এটা একটা ঠাট্টা ছিল।

ধীরে ধীরে সে আমার থেকে দূরে সরে যেতে লাগল, কোনও শারিরিক অনুভূতি নয়, সে তার গোপন মনটি আমার থেকে দূরে সরিয়ে নিল, আমি কখনোই বুঝতে পারিনি কি তার ভাবনা ছিল। সে খুব দয়ালু, কিন্তু দুঃখজনক যে এটা অনেক দূরত্ব থেকে ভাবা হয়েছিল।

আস্তে আস্তে আমি বুঝতে পারলাম যে সে আমাকে কখনই ভালবাসেনি। তার ভালাবাসা মরে গেছে এবং আমি সেটাকে মেরে ফেলেছি।

পরের ধারাটি সত্যিই অনস্বীকার্য। আমি নিজে এটার জন্য অপেক্ষা করতাম–এটি সত্যিই ভয়ঙ্কর ছিল।

তারপর ডেরেক ওয়েনরাইট আমাদের জীবনে আসল, তার সবকিছু ছিল যেটা আমার ছিল না। তার বুদ্ধি ছিল এবং গভীর জ্ঞানলব্ধ মন ছিল। সে খুব ভালো দেখতে ছিল, এবং আমাকে বাধ্য করা হয়েছিল এটা স্বীকার করার জন্য–এবং সত্যিকারে সে একজন খুব ভালো ছেলে ছিল। যেই মুহূর্তে আমি তাকে দেখলাম আমি নিজে নিজেকে বললাম এটাই হচ্ছে সেই মানুষ সিলভিয়ার জন্য…..।

সিলভিয়া এটার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, আমি জানতাম সে লড়াই করেছিল কিন্তু আমি তাকে কোনও সাহায্য করিনি। আমি পেরেছিলাম না সাহায্য করতে। আমি আমার বিষাদগ্রস্ত অন্ধকার নিয়ে বিরাজ থাকতাম। আমি নরকের যন্ত্রণা ভোগ করেছিলাম, আমি আমি আমার নিজের হাত বাড়াতে পারছিলাম না নিজেকে রক্ষা করার জন্য, আমি তাকেও সাহায্য করতে পারিনি। আমি জিনিসগুলো খারাপের দিকে নিয়ে গেছিলাম। আমি তাকে একদিন হারালাম। এটা অভদ্র, অমার্জিত, অপব্যবহার। আমি ঈর্ষা এবং দুর্দশায় পাগল হয়ে গেছিলাম। যে সমস্ত জিনিসগুলো বলেছিলাম সেগুলো নির্দয় এবং অসত্য ছিল এবং এটা যখন আমি বলেছিলাম তখন বোঝা গেল এটা কতটা নির্দয় এবং অসত্য ছিল। যদি আমি এটা বলে বর্বরোচিত আনন্দ পেয়েছিলাম।

আমি মনে করতে পারছি না, সিলভিয়া কোনও প্রতিক্রিয়া করেছিল কিনা এবং আস্তে আস্তে কুঁকড়ে গেল।

আমি তাকে সহ্যের শেষ সীমা পর্যন্ত নিয়ে আসলাম।

–আমি মনে করি, সে বলল, এটা চলতে পারে না।

 যখন আমি বাড়ি আসলাম সেই রাত্রে ঘরটা ফাঁকা ছিল–পুরোপুরি ফাঁকা, সেখানে একটা নোট ছিল যেটা চিরাচরিত আদবকায়দায় লেখা।

এটাতে সে বলেছিল যে সে আমাকে ছেড়ে দিল–চিরদিনের জন্য। সে ব্যাজওয়ার্দিতে এক কিংবা দুদিনের জন্য যাচ্ছিল, তারপর সে একজন লোকের কাছে গেল যে সিলভিয়াকে খুব ভালোবাসত এবং তাকে চাইত। আমাকে এটা চূড়ান্ত বলে ধরে নিতে হল।

আমি মনে করলাম, যে আমি আমার সন্দেহটাকে বিশ্বাস করিনি। আমার খারাপ ভয়ের কালো-সাদার ধারণা আমাকে উন্মত্তের মত পাগল করে তুলেছিল।

আমি ব্যাজওয়ার্দিতে গেলাম তারপর। যাতে যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি যাওয়া যায়। আমি গাড়িতে গেলাম।

সিলভিয়া তখন তার ফ্রকটা পরিবর্তন করছিল রাতের খাবারের জন্য। আমার মনে পড়ছে আমি যখন সজোরে ঘরের মধ্যে প্রবেশে করলাম, আমি তার মুখ দেখতে পেয়েছিলাম–আর হতচকিত হয়ে গেলাম তার সুন্দর মুখ দেখে, সেইসঙ্গে আমি ভয়ও পেয়ে গেছিলাম।

আমি বললাম–তোমার জন্য কেউ নেই, আমি একমাত্র আছি। কেউ না। কেউ নেই।

আমি তার গলা টিপে ধরলাম এবং আঁকড়ে তাকে পেছনের দিকে বাঁকিয়ে দিলাম।

হঠাৎ আমি আমার প্রতিফলন আয়নাতে দেখতে পেলাম। সিলভিয়া শাসরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিল এবং তার গলা টিপে ধরেছিলাম। এবং আমার গালের যে ক্ষত যেখানে বুলেটের দাগ ছিল, ডান কানের তলা পর্যন্ত।

-না–আমি তাকে হত্যা করিনি। এই ঘটনাটা আমাকে বিপর্যস্ত করেছিল। এবং আমি তার গলাটা ছেড়ে দিলাম যাতে সে মেঝেতে পড়ে যায়।

তারপর আমি ভেঙ্গে পড়লাম–এবং সে আমাকে সান্ত্বনা দিল…হ্যাঁ। সে আমাকে সান্ত্বনা দিল।

আমি তাকে সবকিছু বললাম এবং সে আমাকে একটা কথা বলল–একজন মানুষ তাকে ভালোবাসে এবং তাকে চেয়েছিল। সিলভিয়া বলল যে–এটা হল তার ভাই অ্যালান, আমরা তখন দুজন দুজনের হৃদয়ের দিকে তাকালাম ওই রাত্রে, এবং আমি মনে করি না, যে সেই মুহূর্ত থেকে, আমরা কখনও দূরে সরে গেছি দুজনে দুজনের থেকে।

এটা সত্যিই একটা গূঢ় ভাবনা জীবনের মধ্যে দিয়ে যাওয়া-যাই হোক ভগবান কিংবা আয়নার দয়ায় একজন মানুষ হত্যাকারী হতে পারে।

একটা জিনিস ওই রাত্রে মারা গিয়েছিল–ঈর্ষার শয়তানটা যেটা আমাকে অনেকদিন ধরে আবদ্ধ রেখেছিল।

কিন্তু আমি কখনো কখনো বিস্মিত হয়ে যাই–মনে করি যে আমি এইরকম প্রথম ভুল কখনো করিনি–আমার বাম গালে যে ক্ষত–যখন এটা সত্যিই ডান গালে ছিল–সেটা আয়নার দ্বারা উলটে গিয়েছিল। আমি এতটাই নিশ্চিত হতে পারি যে ওই লোকটা চার্লস ক্ৰলে ছিল? আমার কি সিলভিয়াকে সতর্ক করা উচিত ছিল? যদি সে আমাকে বিয়ে করত–অথবা তাকে?

অথবা অতীত এবং ভবিষ্যৎ সমস্তই একই হত?

 সমস্তই একই হত?

আমি একজন সহজ সাধারণ মানুষ–এবং আমি কখনোই ভান করতে পারি না এগুলো বোঝার জন্য–কিন্তু, আমি দেখেছিলাম, আমি কি দেখেছিলাম–এবং কী কারণে আমি দেখেছিলাম, আমি এবং সিলভিয়া দুজনে আদবকায়দার সঙ্গে ছিলাম–এবং মৃত্যু পর্যন্ত আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি এবং সম্ভবত এতটা অতিক্রম করে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *