৪০. খিযির (আ) ও ইলিয়াস (আ)-এর ঘটনা

খিযির (আ) ও ইলিয়াস (আ)-এর ঘটনা

খিযির (আ) সম্পর্কে পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে যে, তার নিকট থেকে ইলমে লাদুমী অর্জন করার জন্যে মূসা (আঃ) তার কাছে গমন করেছিলেন। আল্লাহ তা’আলা তাদের দু’জনের ঘটনা তাঁর পবিত্র গ্রন্থের সূরা কাহাফে বর্ণনা করেছেন। উল্লেখিত ঘটনা সম্পর্কে তাফসীরে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। আমরা সেখানে ঐ হাদীসটিরও উল্লেখ করেছি। যাতে খিযির (আ)-এর নাম স্পষ্ট

মূসা (আ) ইব্‌ন ইমরান, যার প্রতি তাওরাত অবতীর্ণ হয়েছিল।

খিযির (আ)-এর নাম, বংশ পরিচয়, নবুওত ও অদ্যাবধি জীবিত থাকা সম্পর্কে উলামায়ে কিরামের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তার কিছু বর্ণনা নিম্নে পেশ করা হল :

হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) বলেন, কথিত আছে যে, খিযির (আ) আদম (আ)-এর ঔরসজাত সন্তান।

তিনি দারা কুতনীর বরাতে-ইব্‌ন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন, যে, খিযির (আ) আদম (আ)-এর ঔরসজাত সন্তান। দাজ্জালকে মিথ্যা প্ৰতিপন্ন করার সময় পর্যন্ত তাকে আয়ু দান করা হয়েছে। এই হাদীসটি ‘মুনকাতে’ এবং গরীব পর্যায়ের।

আবু হাতিম (র) বলেন, আমার উস্তাদ আবু উবায়দাহ প্রমুখ বলেছেন, আদম সন্তানদের মধ্যে দীর্ঘতম আয়ুর অধিকারী হচ্ছেন খিযির (আ) আর তার নাম হচ্ছে খাযরুন। তিনি ছিলেন আদম (আ)-এর পুত্ৰ কাবীল এর সন্তান। তিনি আরো বলেন, ইব্‌ন ইসহাক (র) উল্লেখ করেছেন, যখন আদম (আ)-এর মৃত্যুর সময় হল, তখন তিনি তাঁর সন্তানদেরকে জানালেন যে, একটি প্লাবন আসন্ন। তিনি তাদেরকে ওসীয়তা করলেন, তারা যেন তাঁর মৃতদেহ তাদের সাথে নীেযানে উঠিয়ে নেয় এবং তার নির্দেশিত স্থানে তাকে দাফন করে। যখন প্লাবন সংঘটিত হল, তখন তারা তাঁর লাশ তাদের সাথে উঠিয়ে নিলেন আর যখন তারা অবতরণ করলেন, তখন নূহ (আ) তাঁর পুত্রদের নির্দেশ দিলেন, যেন তারা তাকে তাঁর ওসীয়ত মত নির্দিষ্ট স্থানে দাফন করেন। তখন তাঁরা বলতে লাগলেন, পৃথিবী এখনও বসবাসযোগ্য হয়ে উঠেনি। এখনো তা’ নিভৃত নির্জন। তখন নূহ (আঃ) তাদেরকে দাফনের কাজে উৎসাহিত করলেন। তিনি বললেন, ‘আদম (আ)-এর দাফনের দায়িত্ব যিনি নেবেন, তাকে দীর্ঘায় করার জন্যে আদম (আ) আল্লাহর দরবারে দুআ করেছিলেন। ঐ সময় তারা দাফনের নির্দেশিত স্থানে যেতে ভীতিবোধ করলেন। ফলে আদম (আ)-এর দেহ তাদের কাছেই রয়ে গেল। শেষ পর্যন্ত খিযির (আ) আদম (আ)-এর দাফনের দায়িত্ব পালন করেন। এবং আল্লাহ তা’আলাও তার প্রতিশ্রুতি পূৰ্ণ করেন। তাই আল্লাহ তা’আলা যত দিন চান, খিযির (আ) ততদিন জীবিত থাকবেন।

ԳՀO

ইবনে কুতীয়বা তার মাআরিফ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন যে, খিযির (আ)-এর নাম বালিয়া। কেউ কেউ বলেন, তার নাম ঈলীয়া ইব্‌ন মালকান, ইব্‌ন ফালিগ ইব্‌ন আবির, ইব্‌ন শালিখ, ইব্‌ন আর-ফাখশায, ইব্‌ন সাম, ইব্‌ন নূহ (আ)।

ইসমাঈল ইব্‌ন আবু উয়ায়েস (র) বলেন, আমাদের জানা মতে, খিৰিরি (আ)-এর নাম হচ্ছে- মামার ইব্‌ন মালিক ইব্‌ন আবদুল্লাহ ইব্‌ন নসর ইব্‌ন লাযিদ।

আবার কেউ কেউ বলেন, খিযির (আ)-এর নাম হচ্ছে—খাযিরন ইব্‌ন আমীয়াঈল, ইব্‌ন ইয়াফিয ইব্‌ন ঈস, ইব্‌ন ইসহাক, ইব্‌ন ইবরাহীম খলীল (আ)। কেউ কেউ বলেন, তার নাম আরামীয়া ইব্‌ন খালকীয়া। আল্লাহ তা’আলাই অধিক পরিজ্ঞাত।

কেউ কেউ বলেন, তিনি ছিলেন মূসা (আ)-এর সমসাময়িক মিসরের সম্রাট ফিরআউনের পুত্র। এটা অত্যন্ত দুর্বল অভিমত।

ইবনুল জাওয়ী (র) বলেন, উপরোক্ত অভিমতটি মুহাম্মদ ইব্‌ন আইয়ুব, ইব্‌ন লােহীয়া থেকে বর্ণনা করেন। আর তারা দু’জনই হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে দুর্বল।

কেউ কেউ বলেন, তিনি হচ্ছেন ইব্‌ন মালিক ও ইলিয়াস (আ)-এর ভাই। এটা সুদী (র)-এর অভিমত।

কেউ কেউ বলেন, তিনি যুলকারনায়নের অগ্রবতী বাহিনীর দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি ছিলেন এমন এক মুমিন বান্দার পুত্র, যিনি ইবরাহীম খলীল (আ)-এর প্রতি ঈমান আনয়ন করেছিলেন এবং তাঁর সাথে হিজরতও করেছিলেন। কেউ কেউ বলেন, তিনি বাশতাসিব ইব্‌ন লাহরাসিরের যুগে নবী ছিলেন। ইব্‌ন জারীর তাবারী (র) বলেন, শুদ্ধমত হল যে, তিনি ছিলেন আফৱীদূন ইব্‌ন আসন্ধীয়ান-এর যুগের প্রথম দিকের লোক এবং তিনি মূসা (আ)-এর যুগ পেয়েছিলেন। হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) সাঈদ ইবনুল মুসায়্যিাব (রা) থেকে বর্ণনা করেন—তিনি বলেন, খিযির (আ)-এর মা ছিলেন রোম দেশীয় এবং পিতা ছিলেন পারস্য দেশীয়।

এরূপ বর্ণনাও পাওয়া যায়—যাতে বোঝা যায় যে, তিনি ছিলেন ফিরআউনের যুগে বনী ইসরাঈলের অন্তর্ভুক্ত।

আবৃ-যুরআ (র) ১১- )।( J, ১৬ এ উবাই ইব্‌ন কা’ব (র) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সা) মিরাজের রাতে সুগন্ধি অনুভব করেন। তখন তিনি বলেন, হে জিবরাঈল! এই সুগন্ধি কিসের? জবাবে জিবরাঈল (আঃ) বললেন, এটা ফিরআউন কন্যার চুল বিন্যাসকারিণী মহিলা, তার কন্যা ও তার স্বামীর কবরের সুগন্ধি। আর এই সুগন্ধির সূচনা হয়েছিল নিম্নরূপ :

খিযির (আ) ছিলেন বনী ইসরাঈলের সম্মানিত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত। তার রাস্তায় ছিল এক ধর্মযাজকের ইবাদতখানা। তিনি খিযির (আ)-এর সন্ধান পান এবং তাকে সত্যধর্ম ইসলামের শিক্ষা দেন। খিযির (আ) যখন বয়ঃপ্রাপ্ত হন, তখন তার পিতা তাকে বিবাহ দেন। তখন খিযির (আ) তাঁর স্ত্রীকে ইসলাম শিক্ষা দেন এবং তার থেকে প্রতিশ্রুতি নেন যে, তিনি তা কারো কাছে

ԳՀS

ব্যক্ত করবেন না। খিযির (আ) যেহেতু স্ত্রী সংসর্গে যেতেন না, তাই তিনি তাকে তালাক দেন। তারপর তার পিতা তাকে অন্য এক মহিলার সাথে বিবাহ দেন। তিনি তাকেও ইসলাম শিক্ষা দেন এবং তার থেকেও প্রতিশ্রুতি নেন যে, তিনি কারো কাছে তা ব্যক্ত করবেন না। অতঃপর তিনি তাকেও তালাক দেন। তাদের একজন তা প্ৰকাশ না করলেও অপরজন প্ৰকাশ করে দিল। তাই তিনি পলায়ন করলেন এবং সাগরের একটি দ্বীপে আশ্রয় গ্ৰহণ করলেন। সেখানে দু’জন কাঠুরিয়া তাকে দেখতে পায়। তাদের মধ্য হতে একজন তাঁর কথা গোপন রাখল। কিন্তু অন্যজন প্রকাশ করে দিল। সে বলল, আমি ইযকীল অর্থাৎ খিযির (আ)-কে দেখেছি। তাকে বলা হল, তুমি ইযকীলকে দেখেছ, তবে তোমার সাথে আর কে দেখেছে? সে বলল, আমার সাথে অমুকও দেখেছে। তাকে প্রশ্ন করা হল, তখন সে এ সংবাদটি গোপন করল। আর তাদের ধর্মে এ রীতি ছিল, যে ব্যক্তি মিথ্যা বলত তাকে হত্যা করা হত, তাই তাকে হত্যা করা হল। ঘটনাচক্ৰে ইতিপূর্বে গোপনকারী ব্যক্তিটি পূর্বোক্ত গোপনকারিণী মহিলাকে বিয়ে করেছিল। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন মহিলাটি ফিরআউনের কন্যার চুল আঁচড়াচ্ছিল, এমনি সময় তার হাত থেকে চিরুনিটি পড়ে যায়, তখন সে বলে উঠল-ফিরআউন ধ্বংস হোক। কন্যা তার পিতাকে এ সংবাদটি দিল। ঐ মহিলাটির স্বামী ও দুইটি পুত্র ছিল। ফিরআউন তাদের কাছে দূত পাঠাল এবং মহিলা ও তার স্বামীকে তাদের ধর্ম ত্যাগ করতে প্ররোচিত করল। কিন্তু তারা তাতে অস্বীকৃতি জানাল। তখন সে বলল, ‘আমি তোমাদের দু’জনকে হত্যা করব। তাঁরা বললেন, যদি তুমি আমাদেরকে হত্যাই কর তাহলে আমাদেরকে এক কবরে দাফন করলে তবে এটা হবে আমাদের প্রতি তোমার অনুগ্রহ। বৰ্ণনাকারী বলেন, এর চেয়ে অধিক সুগন্ধি আর কখনও পাওয়া যায়নি। মহিলাটি জান্নাতের অধিকারী হন। আর এই মহিলাটিই ছিল ফিরআউনের কন্যার সেবিকা, যার ঘটনা পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে।

খিযির (আ)-এর ব্যাপারে চিরুনির ঘটনাটি সংক্রান্ত উক্তি সম্ভবত উবাই ইব্‌ন কা’ব (রা) কিংবা আবদুল্লাহ ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর। আল্লাহই সম্যক জ্ঞাত।

কেউ কেউ বলেন, খিযির (আ)-এর উপনাম ছিল আবুল আব্বাস। তবে খিযির তার উপাধি ছিল- এটাই অধিক গ্রহণযোগ্য।

ইমাম বুখারী (র) আবু হুরায়রা (রা)-এর বরাতে রাসূলুল্লাহ্ (সা) থেকে বর্ণনা করেন। খিযির (আ)-কে খিযির বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে এজন্য যে, একদিন তিনি একটি সাদা চামড়ার উপর বসেছিলেন। অকস্মাৎ দেখা গেল তার পেছন থেকে সাদা চামড়াটি সবুজ আকার ধারণ করে কোপে উঠল।

অনুরূপভাবে আবদুর রাজ্জাক (র) বর্ণনা করেন। অতঃপর তিনি বলেন, হাদীস শরীফে উল্লেখিত ৯৬১৯ শব্দটির অর্থ হচ্ছে সাদা শুকনো ঘাস এবং এরূপই অন্য জিনিস যেমন শুকনো তুষ।

খাত্তাবী (র) বলেন, আবু উমর (র) বলেছেন ১৬-৯ এর অর্থ হচ্ছে শুভ্র রংয়ের ভূমি যার উপর কোন ঘাস জন্মোনি।  (১ম খণ্ড) ৯১—

ԳՀՀ

কেউ কেউ বলেন, এটা ছিল সাদা তুষ; রূপক অর্থে ফাঁৱওয়া শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। এ অর্থেই বলা হয়ে থাকে ৩-1।( ১৩৬-৯ এটার অর্থ হচ্ছে, চুলসহ মাথার চামড়া। যেমন আরবী কবি রাঈ বলেন,

অর্থাৎ— তুমি আমাদের ঘরের পাশে কাফ্রীটিকে আনন্দিত দেখবে, তখন যেদিন সে খাবার পায়। কাফ্রাটির কোঁকড়া চুলও খুশীতে আন্দোলিত—তার দুটোও হাঁটু এমন দেখতে পাবে, মনে হয় যেন তার মাথার চামড়ায় বীজ বপন করা হয়েছে আর মাথার দুই পাশে মরিচ

খাত্তাবী (র) বলেন, ‘খিযির (আ)-কে তার সৌন্দর্য ও চেহারার উজ্জ্বলতার জন্যে খিযির নামে অভিহিত করা হয়েছে।’ এ বর্ণনাটি বুখারী শরীফের বর্ণনার পরিপন্থী নয়। আবার বর্ণিত কারণের যে কোনটির প্রয়ােজনীয়তা অনুভূত বিধায় বুখারী শরীফের উল্লেখিত তথ্যটি অধিকতর গ্রহণীয়। তাই অন্য কোন ব্যাখ্যার প্রয়োজন নেই।

হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) ও… ইব্‌ন আব্বাস (রা) সূত্রে উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, খিযির (আ)-কে খিযির বলা হয়ে থাকে। এ জন্যে যে, তিনি একবার সাদা চামড়ার ওপর সালাত আদায় করেন। অকস্মাৎ চামড়াটি সবুজ বর্ণ ধারণ করে নড়ে উঠে। হাদীসের উপরোক্ত সূত্রটিতে কোন এক পর্যায়ে একজন বৰ্ণনাকারী

মুজাহিদ (র) বলেন, ‘তাঁকে খিযির (আ) বলা হত এজন্যে যে, তিনি যখন কোথাও সালাত আদায় করতেন তার আশেপাশের স্থানটিতে ঘাস জন্মাত ও স্থানটি সবুজ হয়ে যেত।’ তিনি আরো বলেন, ‘মূসা (আ) ও ইউশা (আঃ) যখন পদাঙ্ক অনুকরণ করে পশ্চাতে অগ্রসর হচ্ছিলেন, তখন তারা সমুদ্রের মাঝে একটি ফরাশের উপর শোয়া অবস্থায় খিযির (আ)-কে দেখতে পেলেন। তিনি কাপড়ের দুই প্রান্ত মাথা ও দুই পায়ের নিচে মুড়ে রেখেছিলেন। মূসা (আ) তাকে সালাম করলেন। তখন তিনি মুখ থেকে কাপড় সরালেন ও সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন, এ জায়গায় সালাম কোথেকে এল? আপনি কে? মূসা (আ) বললেন, ‘আমি মূসা।’ তিনি বললেন, ‘আপনি কি বনী ইসরাঈলের মূসা?’ তিনি বললেন, জি হাঁ। অতঃপর যা ঘটেছিল আল্লাহ তা’আলা কুরআন শরীফে তা বর্ণনা করেছেন।

এ কাহিনীর বর্ণনা ধারা থেকে খিযির (আ) যে নবী ছিলেন তার কিছুটা ইঙ্গিত মিলে। / প্রথমত আল্লাহ্র বাণী :

অতঃপর তারা সাক্ষাৎ পেল আমার বান্দাদের মধ্যে এমন একজনের, যাকে আমি আমার নিকট হতে অনুগ্রহ দান করেছিলাম ও আমার নিকট হতে শিক্ষা দিয়েছিলাম এক বিশেষ জ্ঞান। (সূরা কাহাফ : ৬৫)

ԳՀՏ)

দ্বিতীয়ত কুরআনে উল্লেখিত মূসা (আ)-এর উক্তি। ইরশাদ করেন :

মূসা তাঁকে বলল, ‘সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দান করা হয়েছে তা থেকে আমাকে শিক্ষা দেবেন— এ শর্তে আমি আপনার অনুসরণ করব কি?’ সি বলল, ‘আপনি কিছুতেই আমার সঙ্গে ধৈর্যধারণ করে থাকতে পারবেন না। যে বিষয় আপনার অবগতিতে জ্ঞানায়ত্ত নেই, সে বিষয়ে আপনি ধৈর্যধারণ করবেন কেমন করে?’ মূসা বলল, ‘আল্লাহ চাইলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না।’ সে বলল, ‘আচ্ছ। আপনি যদি আমার অনুসরণ করবেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না,

যতক্ষণ না আমি সে সম্বন্ধে আপনাকে কিছু বলি।’ (সূরা কাহাফ : ৬৬-৭০)

যদি তিনি ওলী হতেন ও নবী না হতেন তাহলে মূসা (আ)ও তাকে লক্ষ্য করে এরূপ বলতেন না। আর তিনিও এরূপ জবাব দিতেন না। বরং মূসা (আঃ) তাঁর সঙ্গ লাভের আবেদন করেছিলেন যাতে তিনি তার কাছ থেকে এমন কিছু ইলম শিখতে পারেন, যা আল্লাহ তা’আলা তাকেই বিশেষভাবে দান করেছিলেন। তিনি নবী না হলে তিনি মাসুম বা নিষ্পাপ

शऊनाः तान्।

মহান নবী, সম্মানিত রাসূল ও নিষ্পাপ সত্তা মূসা (আ)। নিষ্পাপ হওয়া জরুরী নয় এমন একজন ওলীর কাছ থেকে শিক্ষা লাভের জন্য এত আগ্রহী হতেন না। আবার মূসা (আ)ও যুগ যুগ ধরে তাকে খুঁজে তার কাছে পৌছার ইচ্ছে পোষণ করতেন না। কেউ কেউ বলেন, ‘এখানে উল্লেখিত L. — শব্দের অর্থ হচ্ছে। আশি বছর।’ অতঃপর মূসা (আঃ) যখন তাঁর সাথে মিলিত হলেন, তখন তিনি বিনয় ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করলেন এবং তাঁর কাছ থেকে উপকৃত হবার মানসেই তাকে অনুসরণ করেন।

এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, তিনি মূসা (আঃ)-এর মতই একজন নবী ছিলেন, যার কাছে তাঁরই মত ওহী প্রেরিত হত, আর তাকে আল্লাহ তা’আলা এমন সব লাদুনী ইলম ও নবুওতের গোপনীয় তথ্যাদি দান করেছিলেন, যে সম্বন্ধে বনী ইসরাঈলের মূসা (আ)-কে অবহিত করেননি। রুম্মানী (র) খিযির (আ)-এর নবুওতের অনুকূলে এ দলীলটি পেশ করেছেন।

তৃতীয়ত, খিযির (আ) কিশোরটিকে হত্যা করলেন। আর এটা মহান আল্লাহর ওহী ব্যতীত হতে পারে না। এটিই তাঁর নবুওতের রীতিমত একটি দলীল এবং তার নিষ্পাপ হবার প্রকৃষ্ট প্ৰমাণ। কেননা, ওলীর পক্ষে ইলাহামের মাধ্যমে আদিষ্ট হয়ে প্ৰাণ বধ করার পদক্ষেপ গ্ৰহণ বৈধ নয়। ইলাহামের দ্বারা নিষ্পাপ হবার বিষয়টি সুনিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয় না, বরং এখানে ভুল-ভ্ৰান্তির আশংকা সর্বজন স্বীকৃত। কিশোরটি প্রাপ্ত বয়স্ক হলে কাফির হবে, তার প্রতি গভীর

মহব্বতের দরুন তার পিতামাতা তার অনুকরণে পথভ্রষ্ট হবেন ইত্যাদি তথ্য অবগত হয়ে অপ্রাপ্ত বয়সের কিশোরটিকে খিযির (আ) হত্যা করার পদক্ষেপ নেয়ায় বোঝা যায় যে, এ হত্যাকাণ্ডে বিরাট কল্যাণ নিহিত ছিল। আর তা হচ্ছে তার পিতার ঐতিহ্যবাহী বংশ রক্ষা এবং কুফারী ও তার শাস্তি থেকে তাকে রক্ষার ব্যবস্থা করা। এটাই তাঁর নবুওতের প্রমাণ।

অধিকন্তু এতে বোঝা যায় যে, তিনি তার নিষ্পাপ হওয়ার কারণে আল্লাহর সাহায্যপুষ্ট। শায়খ আবুল ফারাজ ইব্‌ন জাওয়ী (র) তাঁর মতবাদের পক্ষে খিযির (আ)-এর নবুওত প্রমাণের জন্যে এই দলীলটি পেশ করতেন। আর রুম্মানী (র)ও এটাকে তার দলীল রূপে পেশ করেছেন।

চতুর্থত, খিযির (আ) যখন তাঁর কর্মকাণ্ডের রহস্য মূসা (আ)-এর কাছে ব্যাখ্যা করলেন এবং মূসা (আ)-এর কাছে তার তাৎপর্য সুস্পষ্ট হলো তারপর খিযির (আ) মন্তব্য করেন :

অর্থাৎ— ‘আমি যা কিছু করেছি। আমার নিজের ইচ্ছে মত করিনি। বরং আমি এরূপ করতে আদিষ্ট হয়েছিলাম। আমার কাছে ওহী প্রেরণ করা হয়েছিল।’

এসব কারণ দ্বারা খিযির (আ) যে নবী ছিলেন তা প্রমাণিত হয়। তবে এটা তার ওলী হওয়া বা রাসূল হওয়ার পরিপন্থী নয়, যেমন অন্যরা বলেছেন। তাঁর ফেরেশতা হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। উপরোক্ত বৰ্ণনায় তার নবী হওয়ার ব্যাপারটা প্ৰমাণিত হবার পর তিনি ওলী হওয়ার সপক্ষে কোন নির্ভরযোগ্য প্রমাণ থাকে না। যদিও কোন কোন সময় আল্লাহর ওলীগণ এমনসব তথ্য অবগত হন, যেগুলো সম্বন্ধে প্ৰকাশ্য শরীয়ত প্ৰতিষ্ঠার জন্যে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ অবহিত থাকেন না।

খিযির (আ)-এর আজ পর্যন্ত বেঁচে থাকার ব্যাপারে মতবিরোধ রয়েছে। তবে জমহুর উলামার মতে, তিনি এখনও জীবিত রয়েছেন। কেউ কেউ বলেন, নূহ (আ)-এর বংশধরগণ প্লাবন শেষে জাহাজ থেকে অবতরণ করার পর আদম (আ)-এর লাশকে নির্ধারিত জায়গায় যেহেতু তিনিই দাফন করেছিলেন, সেহেতু তিনি দীর্ঘ হায়াতের ব্যাপারে পিতা আদম (আ)-এর দুআ পেয়েছিলেন। আবার কেউ কেউ বলেন, তিনি আবে হায়াত পান করেছিলেন, তাই তিনি এখনও জীবিত রয়েছেন।

তথ্য বিশারদগণ বিভিন্ন তথ্য পেশ করেছেন এবং এগুলোর মাধ্যমে খিযির (আ)-এর আজ

পর্যন্ত জীবিত থাকার প্রমাণ পেশ করেছেন। যথাস্থানে আমরা এ সম্বন্ধে আলোচনা করব। খিযির (আ) মূসা (আ)-কে বলেছিলেন :

এখানেই আপনার এবং আমার সম্পর্কের ইতি। যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি, আমি তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি। (সূরা কাহাফ : ৭৮)

এ সম্পর্কে অনেক মুনকাতে বা বিচ্ছিন্ন সূত্রের হাদীস বর্ণিত রয়েছে।

ԳՀ@

বায়হাকী (র) আবু আবদুল্লাহ মুলাতী (র) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মূসা (আ) যখন খিযির (আ) থেকে বিদায় নিতে চাইলেন, তখন তিনি তাকে বললেন, ‘আমাকে ওসীয়ত করুন!’ খিযির (আ) বললেন, ‘মানুষের জন্য কল্যাণকারী হবেন, অকল্যাণকারী হবেন না, হাসিমুখে থাকবেন, ক্রুদ্ধ হবেন না। একগুয়েমি করবেন না, প্রয়োজন ব্যতিরেকে ভ্ৰমণ করবেন।

দেখলে হাসবেন না।’ hr

ওহাব ইব্‌ন মুনাব্বিহ (র) বলেন, খিযির (আ) বলেছিলেন, ‘হে মূসা! দুনিয়া সম্বন্ধে মানুষের নিমগ্নতা অনুযায়ীই তাদেরকে দুনিয়ায় শাস্তি প্ৰদান করা হয়ে থাকে।’ বিশর ইব্‌ন হারিস আল হাকী (র) বলেন : মূসা (আ) খিযির (আ)-কে বলেছিলেন, ‘আমাকে উপদেশ দিন। তখন তিনি বলেছিলেন, আল্লাহ তা’আলা আপনার জন্যে তাঁর আনুগত্যকে সহজ করে দিন৷’ এ সম্পর্কে একটি মারফু হাদীস ইব্‌ন আসাকির (র) থেকে যাকারিয়া ইব্‌ন ইয়াহইয়া আল ওকাদ সূত্রে বর্ণিত রয়েছে। তবে এ যাকারিয়া একজন চরম মিথ্যাবাদী, সে বলে… উমর (রা) বলেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেন, ‘আমার ভাই মূসা (আ) বলেছিলেন, হে আমার প্রতিপালক! এ কথা বলে তিনি আল্লাহর বাণী স্মরণ করেন, অতঃপর তার কাছে খিযির (আ) আসলেন, তিনি ছিলেন একজন যুবক। সুরভিতদেহী, ধবধবে সাদা কাপড় পরিহিত ও কাপড়কে টেনে ধরে রয়েছেন। তিনি মূসা (আ)-কে বললেন, আপনার প্রতি আল্লাহর শান্তি ও রহমত বৰ্ষিত হোক, হে মূসা ইব্‌ন ইমরান!! আপনার প্রতিপালক আপনার কাছে সালাম প্রেরণ করেছেন।’ মূসা (আ) বললেন, ‘তিনি নিজেই সালাম (শান্তি), তার কাছেই সালাম, সমস্ত প্ৰশংসা আল্লাহ তা’আলার, যিনি সারা জগতের প্রতিপালক, যার যাবতীয় অনুগ্রহের হিসাব করা সম্ভব নয় এবং তার সাহায্য ব্যতীত তার যাবতীয় নিয়ামতের শোকারগুজারীও সম্ভব নয়।

এরপর মূসা (আ) বললেন, আমি আপনার কাছে কিছু উপদেশ চাই যেন আল্লাহ তা’আলা। আপনার পরে আমাকে এগুলোর দ্বারা উপকৃত করেন। খিযির (আ) বললেন, ‘হে জ্ঞান অন্বেষী, জেনে রাখুন, বক্তা শ্রোতা থেকে কম ভৎসনার পাত্র, তাই আপনি যখন কারো সাথে কথা বলবেন, তাদেরকে বিরক্ত করবেন না। আরো জেনে রাখুন, আপনার অন্তরটি একটি পাত্রের ন্যায়। তাই আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে কি দিয়ে আপনি তা পরিপূর্ণ করছেন! দুনিয়া থেকে সামান্য গ্রহণ করুন, বাকিটা আপনার পেছনে ফেলে রাখুন। কেননা, দুনিয়া আপনার জন্যে বসবাসের জায়গা নয়। এটি শান্তি পাবার জায়গাও নয়। দুনিয়াকে বান্দাদের জন্য স্বল্প পরিমাণ বলেই আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং পরকালের জন্য পাথেয় সংগ্রহের স্থান বলেই মনে করতে হবে। ধৈর্যধারণ করবেন, তাহলে পাপ থেকে বাঁচতে পারবেন। হে মূসা (আ)! জ্ঞান অন্বেষন কর, যদি তুমি জ্ঞান লাভ করতে চাও— কেননা, জ্ঞান যে অন্বেষণ করে, সেই তা লাভ করতে পারে। জ্ঞান অন্বেষণের জন্যে অতিরিক্ত বকবক করবেন না। কারণ, তাতে আলিমগণ বিরক্ত হন ও বোকামি প্রকাশ পায়। তবে আপনাকে মধ্যমপন্থী হতে হবে। কেননা, এটা আল্লাহ প্রদত্ত তাওফীক ও সত্যপথ লাভের উপায়। মূখদের মূর্থিতা থেকে বিরত থাকুন! বোকাদের ব্যাপারে ধৈর্যধারণ করুন। কেননা, এটাই বুদ্ধিমানের কাজ ও এটাতেই উলামায়ে

ԳՀԿ

কিরামের সৌন্দর্য নিহিত। যদি কোন মুর্থ লোক আপনাকে গাল দেয়, ধৈর্যধারণ করে চুপ থাকবেন ও সতর্কতার সাথে তাকে পরিহার করবেন। কেননা, তার বোকামি আপনারই অধিক ক্ষতি করবে ও আপনাকে আরও অধিক তিরস্কৃত করবে।

‘হে ইমরানের পুত্র! আপনি কি অনুভব করেন না যে আপনাকে অতি অল্প জ্ঞানই দেয়া হয়েছে। কোন কিছুতে অযথাই জড়িয়ে পড়বেন না এবং বিপথগামী হবেন না। হে ইমরানের পুত্র! আপনি এমন কোন বন্ধ দরজা খুলবেন না, যেটা কিসে বন্ধ করেছে তা আপনার জানা নেই। অনুরূপ এমন কোন খোলা দরজা বন্ধ করবেন না। যা কিসে উন্মুক্ত করেছে তা আপনার জানা নেই। হে ইমরানের পুত্ৰ! যে ব্যক্তির দুনিয়ার প্রতি লোভের শেষ নেই, দুনিয়ার প্রতি তার আকর্ষণের অন্ত নেই এবং যে ব্যক্তি নিজেকে হীন বোধ করে এবং তার ভাগ্যের ব্যাপারে। আল্লাহ তা’আলাকে দোষারোপ করে সে কেমন করে সংসারাসক্তিমুক্ত হতে পারবে? প্রবৃত্তি যার উপর প্রভাব বিস্তার করে রয়েছে, তাকে কি কামনা-বাসনা থেকে বিরত রাখা যায়? কিংবা মূখ্যতা যাকে গ্ৰাস করে ফেলেছে, জ্ঞান অন্বেষণ কি তার কোন উপকার সাধন করতে পারে? না, পারে না। কেননা, তার অভীষ্ট আখিরাত হলেও সে তাে শুধু দুনিয়ার প্রতিই আকৃষ্ট।’

‘হে মূসা! যা শিখবেন তা কার্যে পরিণত করার জন্য শিখবেন। কোন কিছু নিয়ে শুধু গল্প করার জন্যই তা শিখবেন না। যদি এরূপ করেন, তাহলে এটা ধ্বংসের কারণ হবে আপনার জন্যে অথচ তা অন্যের জন্যে আলোকবর্তিকা হবে। হে মূসা ইব্‌ন ইমরান! সংসার থেকে মোহমুক্তি ও তাকওয়াকে আপনার পোশাকরূপে গ্ৰহণ করুন। আর ইলম ও যিকিরকে নিজের বুলিতে পরিণত করুন! বেশি বেশি করে নেক আমল করবেন; কেননা, অচিরেই আপনি মন্দ কাজের শিকার হতে পারেন। আল্লাহর ভয়ে নিজের অন্তরকে কম্পমান রাখুন, কেননা তা আপনার প্রতিপালককে সন্তুষ্ট করবে। সৎ কাজ করুন, কেননা, মন্দ কাজ করা অবশ্যম্ভাবী। আমার এসব নসীহত আপনার কাজে আসবে, যদি আপনি তা স্মরণ রাখেন।’ বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর খিযির (আ) চলে গেলেন এবং মূসা (আ) দুঃখ-ভারাক্রান্ত মনে কান্নাকাটি করতে লাগলেন।

উপরোক্ত বর্ণনাটি শুদ্ধ নয়। সম্ভবত এটা যাকারিয়া ইব্‌ন ইয়াহিয়া আল ওক্কাদ আল মিসরীর মনগড়া বর্ণনা। একাধিক হাদীস বিশারদ তাকে মিথ্যাবাদী প্ৰতিপন্ন করেছেন। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে যে, হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) তার ব্যাপারে নিশ্চচুপ।।

হাফিজ আবু নুয়ায়ম আল ইসফাহানী (র) আবু উমামাহ (রা) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর সাহাবিগণকে লক্ষ্য করে একদিন বললেন, ‘আমি কি তোমাদের কাছে খিযির (আ) সম্বন্ধে কিছু বলবো? তাঁরা বললেন, জী হাঁ্যা! হে আল্লাহর রাসূল! রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, ‘একদিন খিযির (আ) বনী ইসরাঈলের একটি বাজারে হাটছিলেন। এমন সময় একজন মুকাতাব১ ক্রীতদাস তাকে দেখল এবং বলল, ‘আমাকে কিছু সাদকা দিন, আল্লাহ

মুকাতাব হচ্ছে ঐ দাস যে তার মালিককে নির্দিষ্ট পরিমাণ মুক্তিপণ পরিশোধের শর্তসাপেক্ষে স্বাধীনতা লাভের . ܬ

তা’আলা আপনাকে বরকত দান করবেন।’ খিযির (আ) বললেন, আমি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী একজন বান্দা আল্লাহ তা’আলা যা ইচ্ছা করেন, তাই হয়ে যাক। আমার কাছে তোমাকে দান করার মত কিছু নেই।

মিসকিন ব্যক্তিটি বলল, আমি আল্লাহর নামে আপনার কাছে যাঞ্চা করছি যে, আমাকে কিছু সাদকা দিন।

আমি আপনার চেহারায় আসমানী আলামত লক্ষ্য করেছি এবং আপনার কাছে বরকত কামনা করছি। খিযির (আ) বললেন, আল্লাহ্ তা’আলার প্রতি ঈমান রেখে অর্থাৎ শপথ করে বলছি, ‘আমার কাছে তোমাকে দেবার মত কিছুই নেই। তবে তুমি আমাকে নিয়ে বিক্রি করে দিতে পোর।’ মিসকিন লোকটি বলল, এটা ঠিক আছে তো? তিনি বললেন, হ্যা, এটা আমি তোমাকে সত্যিই বলছি। তুমি আমার কাছে একটি বড় যাঞ্চা করেছ। তবে আমি আমার প্রতিপালকের সন্তুষ্টির জন্য তোমাকে নিরাশ করব না। তুমি আমাকে বিক্রি করে দাও।’ বর্ণনাকারী বলেন, সে তাকে বাজারে উঠাল এবং চারশ’ দিরহামের বিনিময়ে তাকে বিক্রি করে দিল। তিনি ক্রেতার কাছে বেশ কিছুদিন অবস্থান করলেন। কিন্তু ক্রেতা তাকে কোন কাজে নিয়োজিত করলেন না। খিযির (আ) ক্রেতাকে বললেন, আমা থেকে কিছু না কিছু উপকার

পাবার জন্য আপনি আমাকে ক্ৰয় করেছেন, তাই আপনি আমাকে কিছু করতে দিন! ক্রেতা বললেন, ‘আপনাকে কষ্ট দিতে আমি পছন্দ করি না। কেননা, আপনি একজন অতি বৃদ্ধ দুর্বল লোক।’ খিযির (আ) বললেন, ‘আমার কোন কষ্ট হবে না।’ ক্রেতা বললেন, ‘তাহলে আপনি এ পাথরগুলোকে সরিয়ে দিন।’ প্রকৃতপক্ষে একদিনে ছয়জনের কম লোক এগুলোকে সরাতে পারতো না। ক্রেতা লোকটি তার কোন কাজে বের হয়ে পড়লেন ও পরে ফিরে আসলেন। অথচ এক ঘন্টার মধ্যে পাথরগুলো সরানোর কাজ সমাপ্ত হয়েছিল। ক্রেতা বললেন, ‘বেশ করেছেন!! চমৎকার করেছেন। আপনি যা পারবেন না বলে আমি ধারণা করেছিলাম তা আপনি করতে সমর্থ হয়েছেন।’

অতঃপর লোকটির সফরের প্রয়োজন দেখা দিল। তিনি খিযির (আ)-কে বললেন, আমি আপনাকে আমানতদার বলে মনে করি। তাই আপনি আমার পরিবারের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করুন! তিনি বললেন, ‘তাহলে আমাকে কি করতে হবে বলে দিন!’ ক্রেতা লোকটি বললেন, আমি আপনাকে কষ্ট দেয়াটা পছন্দ করি না। তিনি বললেন, না আমার কোন কষ্ট হবে না। তখন তিনি বললেন, ‘আমি ফিরে আসা পর্যন্ত আপনি আমার ঘরের জন্য ইট তৈরি করবেন।’ লোকটি তাঁর ভ্রমণে বের হয়ে পড়ল ও কিছুদিন পর ফেরত আসল এবং তার প্রাসাদ তৈরি দেখতে পেল। তখন তিনি তাকে লক্ষ্য করে বললেন, আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, ‘আপনি কে? এবং আপনার ব্যাপারটি কী?’ তিনি বললেন, আপনি আল্লাহর শপথ দিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন। আর আল্লাহর নামে যাঞ্চাই আমাকে দাসে পরিণত করেছে। আমি আপনাকে বলে দিচ্ছি, আমি কে। আমিই খিযির- যার কথা। আপনি শুনে আসছেন; আমার কাছে একজন মিসকিন ব্যক্তি সাদকা চেয়েছিল। আমার কাছে তাকে দেবার মত কিছুই ছিল না। সে আল্লাহর নামে ও আল্লাহর সন্তুষ্টির দোহাই দিয়ে আমার কাছে পুনরায় কিছু চাইল।

ԳՀԵr

অগত্যা আমি নিজেকেই তার হাতে তুলে দিলাম। তখন সে আমাকে বিক্রি করে দেয়। আমি একটি তথ্য আপনার কাছে বলছি, আর তা হচ্ছে- ‘আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টির দোহাই দিয়ে যদি কেউ কারো কাছে কিছু যাঞ্চা করে আর সে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তা না দেয়, তাহলে সে কিয়ামতের দিন তার শরীরে মাংসবিহীন চামড়া নিয়ে দণ্ডায়মান হবে এবং চলার সময় মটমট শব্দকারী কোন হাড়ও তার শরীরে থাকৰো না।’ ক্রেতা লোকটি বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! আমি আল্লাহ তা’আলার প্রতি সুদৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করলাম এবং না। চিনে আমি আপনাকে কষ্ট দিয়েছি।’ তখন তিনি বললেন, ‘জ্ঞাতে কোন কিছু আসে-যায় না, বরং তুমি ভালই করেছ ও নিজকে সংযত রেখেছি।’ লোকটি বলল, ‘হে আল্লাহর নবী! আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক! আপনি আমার পরিবার ও সম্পদ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলার নির্দেশিত হুকুম অনুযায়ী নির্দেশ করুন, যাতে আমি আপনাকে মুক্ত করে দিতে পারি।’ তিনি বললেন, ‘আমি চাই, তুমি আমাকে মুক্ত করে দাও- যাতে আমি আমার প্রতিপালকের ইবাদত করতে পারি।’ অতঃপর লোকটি খিযির (আ)-কে মুক্ত করে দিলেন। তখন খিযির (আ) বললেন, : ‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তা’আলার যিনি আমাকে দাসত্ত্বে নিপতিত করেছিলেন এবং পরে তা থেকে মুক্তি দিয়েছেন।’এ হাদীসটিকে মারফ বলা ঠিক নয় সম্ভবত এটা মওকুফ পর্যায়ের। বর্ণনাকারীদের মধ্যে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিও রয়েছেন। আল্লাহ্ তা’আলাই সমধিক জ্ঞাত।

گ – عجالة المنتظر فی شرح حال الخضر ۹ |S| ۹।( ۹ آقا (؟) (SIGR آ۹dة আবদুল ওহহাব ইব্‌ন যাহহাক (র)-এর বরাতে বর্ণনা করেন। কিন্তু এ ব্যক্তিটি গ্রহণযোগ্য নয়।

হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) সুদী (র) সূত্রে বর্ণনা করেন যে, খিযির ও ইলিয়াস (আ) ছিলেন দুই সহোদর ভাই। তাদের পিতা একজন বাদশাহ ছিলেন। একদিন ইলিয়াস (আ) তার পিতাকে বললেন, আমার ভাই খিযির-এর রাজত্বের প্রতি কোন আগ্রহ নেই, যদি আপনি তাকে বিয়ে দেন তাহলে হয়ত তার কোন সন্তান জন্ম নিতে পারে, যে হবে রাজ্যের কর্ণধার। অতঃপর তাঁর পিতা একটি সুন্দরী কুমারী যুবতীর সাথে তার বিয়ে দিলেন। খিযির (আ) মহিলাকে বললেন, ‘আমার কোন মহিলার প্রয়োজন নেই, তুমি চাইলে আমি তোমাকে বন্ধনমুক্ত করে দিতে পারি। আর যদি চাও তাহলে তুমি আমার সাথে থাকতেও পার। আল্লাহ্ তা’আলার ইবাদত করবে ও আমার রহস্যাদি গোপন রাখবে।’ মহিলা তাতে সম্মত হলেন। এভাবে তিনি তার সাথে এক বছর অবস্থান করলেন। এক বছর পর বাদশাহ মহিলাটিকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেন, ‘তুমি যুবতী এবং আমার ছেলেও যুবক, তোমাদের সন্তান কোথায়?’ মহিলা বললেন, ‘সন্তান তো আল্লাহর তরফ থেকে হয়ে থাকে। তিনি যদি চান সন্তান হয়, আর না চাইলে হয় না।’ তখন পিতা পুত্রকে নির্দেশ দিলেন এবং পুত্ৰ মহিলাকে তালাক দিলেন। পিতা তাকে আবার অন্য একটি সন্তানবতী স্বামীহীনা মহিলার সাথে বিয়ে দিলেন। মহিলা বাসর ঘরে এলে খিযির (আ) পূর্বের মহিলাকে যা বলেছিলেন তাকেও তাই বললেন। তখন মহিলা তার সাথে থাকাকেই বেছে নিলেন। যখন এক বছর গত হল, বাদশাহ মহিলাকে সন্তান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। মহিলা উত্তরে ৰিললেন, ‘আপনার ছেলে, মেয়েদের কোন প্রয়োজনবোধ করেন না।’ তাঁর পিতা তখন তাঁকে ডাকলেন, কিন্তু তিনি পলায়ন করলেন। তাকে ধরে আনার জন্য লোক পাঠানো হয়, কিন্তু তারা তাকে ধরে আনতে সমর্থ হলো না।

ዓቖs

কথিত আছে যে, তিনি দ্বিতীয় মহিলাটিকে হত্যা করেছিলেন, কেননা সে তার রহস্য ফাস করে দিয়েছিল। এ কারণেই তিনি অতঃপর পলায়ন করেন ও দ্বিতীয় মহিলাকে তিনি নিজ থেকে

এভাবে মুক্ত করলেন।

পূর্বের মহিলা শহরের কোন এক পাশে নির্জন জায়গায় থেকে আল্লাহ তা’আলার ইবাদত করছিলেন। এমনি সময় একদিন এক লোক মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। মহিলা পুরুষটিকে বিসমিল্লাহ পড়তে শুনলেন। মহিলা পুরুষকে বললেন, ‘তোমার কাছে। এ নামটি কেমন করে আসল?’ অর্থাৎ— তুমি কোথা থেকে এ নামটি শিখলে? তিনি বললেন, আমি খিযির (আ)-এর একজন শিষ্য। তখন মহিলা তাকে বিয়ে করলেন ও তার ঔবসে সন্তান ধারণ করলেন। অতঃপর ঐ মহিলাই ফিরআউনের কন্যার চুল বিন্যাসকারিণী রূপে নিযুক্ত হন। একদিন মহিলা ফিরআউনের কন্যার মাথার চুল আঁচড়াছিলেন, এমন সময় তার হাত থেকে চিরুনিটি পড়ে যায়। চিরুনিটি উঠাবার সময় মহিলা বললেন, ‘বিসমিল্লাহ’ অর্থাৎ- আল্লাহর নামে উঠাচ্ছি। ফিরআউন কন্যা বলল ৪ ‘আমার পিতার নামে বল।’ মহিলা বললেন, ‘না। বরং এমন আল্লাহর নামে উঠবে যিনি আমার, তোমার ও তোমার পিতার প্রতিপালক।’ মেয়েটি তার পিতাকে এ ব্যাপারটি সম্পর্কে জানাল। ফিরআউন তখন একটি গর্তে তামা ভর্তি করে তা উত্তপ্ত করতে নির্দেশ দিল। এরপর তার নির্দেশে গর্তের মধ্যে মহিলাটিকে নিক্ষেপ করা হল। মহিলা যখন তা দেখতে পেলেন, তখন তিনি যাতে এ গর্তে পড়ে না যান এজন্যে পিছিয়ে আসলেন। তখন তার একটি ছোট ছেলে যে তার সাথে ছিল— বলল, ‘হে আম্মাজান! তুমি ধৈর্য ধর, কেননা তুমি সত্যের উপর রয়েছ।’ তখন তিনি আগুনে ঝাপ দিলেন এবং প্ৰাণ ত্যাগ করলেন। (আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি রহমত নাযিল করুন!)

ইব্‌ন আসাকির (র) আবু দাউদ আল-আমা নাকী থেকে বর্ণনা করেন। আর সে ছিল একজন চরম মিথু্যক ও জাল হাদীস রচয়িতা। সে আনাস ইব্‌ন মালিক (রা) সূত্রে এবং কাসীর ইব্‌ন আবদুল্লাহ ইব্‌ন আমর ইব্‌ন আউফ থেকে আর সেও ছিল আরেকজন চরম মিথু্যক। সে তার পিতামহের বরাতে বর্ণনা করে যে, খিযির (আ) একরাতে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর নিকট আসলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা)-কে দু’আ করতে শুনলেন। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বলছিলেন, ‘হে আল্লাহ! আমাকে ভয়ভীতি থেকে রক্ষাকারী বস্তুসমূহ অর্জনে সাহায্য কর! আর তোমার নেককার বান্দাদের আগ্রহের ন্যায় তাদের আগ্রহের বস্তুসমূহের প্রতি আমার আগ্রহ সৃষ্টি করে দাও।’ রাসূলুল্লাহ (সা) তার কাছে আনাস ইব্‌ন মালিক (রা)-কে পাঠালেন। আনাস (রা) তাকে সালাম দিলেন। তখন তিনি সালামের উত্তর দিলেন এবং বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলে দিও : অর্থাৎ—’আল্লাহ তা’আলা আপনাকে সকল নবীর তুলনায় এমন মর্যাদা দিয়েছেন, যেমন সব মাসের তুলনায় রমযান মাসকে মর্যাদা দান করেছেন। আবার আপনার উম্মতকে সকল উম্মতের তুলনায় এমন মর্যাদা দিয়েছেন যেমনি জুম’আর দিনকে অন্যদিনসমূহের তুলনায় মর্যাদা দিয়েছেন।’

উপরোক্ত বর্ণনাটি মিথ্যা, তার সূত্র বা মতন কোনটাই শুদ্ধ নয়। এটা কেমন করে হতে পারে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সামনে আত্মপ্রকাশ করবেন না। অথচ তিনি স্বয়ং একজন  (১ম খণ্ড) ৯২—

ԳVOO

অনুগত ও একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এসেছিলেন? মিথ্যা হাদীস রচয়িতারাও সাধারণত তাদের কিসসা-কাহিনীতে খিযির (আ)-এর উল্লেখ করে থাকে। তাদের কেউ কেউ আবার এরূপও দাবি করে যে, খিযির (আ) তাদের কাছে আসেন, তাদেরকে সালাম করেন, তাদের নাম-ধাম ঠিকানা তিনি জানেন। এতদসত্ত্বেও তিনি মূসা ইব্‌ন ইমরান (আ)-কে চেনেননি, অথচ আল্লাহ তা’আলা। মূসা (আঃ)-কে উক্ত যমানায় শ্রেষ্ঠ মানুষ ও আল্লাহর নবী হিসেবে প্রেরণ করেছিলেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি বনী ইসরাঈলের মূসা?

হাফিজ আবু হুসাইন ইবনুল মুনাদী (র) আনাস (রা)-এর বর্ণিত এই হাদীসটি উদ্ধৃত করার পর বলেন, হাদীস বিশারদগণ একমত যে, এ হাদীসটির সূত্র মুনকার পর্যায়ের, তার মতনে ক্রটি আছে। এর মধ্যে জালিয়াতির লক্ষণ সুস্পষ্ট।

হাফিজ আবু বকর বায়হাকী আনাস ইব্‌ন মালিক (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সা) ইনতিকাল করেন তাঁর সাহাবীগণ তাঁর চতুষ্পার্শ্বে বসে গেলেন ও রোদন করতে লাগলেন। তারা সকলে একত্রিত হলেন। এমন সময় একজন আধাপাকা শাশ্রষ্টধারী উজ্জ্বল স্বাস্থ্যবান এক ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করলেন ও সকলকে ডিঙ্গিয়ে তাঁর নিকটবতী হলেন এবং কান্নাকাটি করলেন। অতঃপর সাহাবায়ে কিরামের প্রতি তাকালেন ও বললেন, : ‘প্রতিটি মুসীবত হতেই আল্লাহ তা’আলার কাছে সান্তনা রয়েছে। প্রতিটি ক্ষতিরই ক্ষতিপূরণ রয়েছে এবং প্রতিটি নশ্বর বস্তুর স্থলবতী রয়েছে। সুতরাং আল্লাহর প্রতি সকলে প্রত্যাবর্তন করুন! তারই দিকে মনোযোগী হোন! তিনি আপনাদেরকে মুসীবতের মাধ্যমে পরীক্ষা করছেন। তাই আপনারা ধৈর্যধারণ করুন!! ক্ষতিগ্ৰস্ত হচ্ছে সে-ই যার ক্ষতি পূরণ হবার নয়। এ কথা বলে তিনি চলে গেলেন।’ সাহাবীগণের একজন অন্যজনকে বলতে লাগলেন, তোমরা কি এই ব্যক্তিকে চেন? আবু বকর (রা) ও আলী (রা) বললেন, : ‘হ্যা, রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জ্ঞাতি ভাই খিযির (আ)।’

উপরোক্ত হাদীসটি আবু বকর ইব্‌ন আবৃন্দ দুনিয়াও বর্ণনা করেছেন। তবে হাদীসের মূল পাঠে বায়হাকীর বর্ণনার সাথে কিছুটা গরমিল রয়েছে। বায়হাকী (র) বলেন, ‘এ হাদীসের সূত্রে উল্লেখিত ইবাদ ইব্‌ন আবদুস সামাদ ছিলেন দুর্বল। কোন কোন সময় তাকে হাদীস শাস্ত্ৰে মুনকার বা প্রত্যাখ্যাত বলে গণ্য করা হয়। আনাস (রা) হতে অন্য একটি বর্ণনা রয়েছে যার অধিকাংশই জাল বলে ইব্‌ন হিব্বান ও উকায়লী (র) মনে করেন। ইমাম বুখারী (র) এটাকে মুনকারুল হাদীস বলেছেন। আবু হাতিম (র) বলেন, এটা অত্যন্ত দুর্বল ও মুনকার হাদীস। ইব্‌ন আদী (র) বলেন, আলী (রা)-এর ফযীলত সম্বন্ধে বর্ণিত হাদীসগুলোর অধিকাংশই দুর্বল ও শিয়াদের অতিরঞ্জিত বৰ্ণনা।

ইমাম শাফিঈ (র) তাঁর মুসনাদে আলী ইব্‌ন হুসাইন (র) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সা) যখন ইনতিকাল করেন ও শোকবাণী আসতে থাকে, তখন উপস্থিত সাহাবীগণ এক ব্যক্তিকে বলতে শুনেন, তিনি বলেছেন, ‘প্রতিটি মুসীবত থেকেই আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে সান্তুনা রয়েছে, প্রতিটি নশ্বর বস্তুর স্থলবতীর্ণ রয়েছে, প্রতিটি ক্ষতিরই ক্ষতিপূরণ রয়েছে। সুতরাং আল্লাহ্ তা’আলার প্রতি ভরসা করুন ও তার কাছেই প্রত্যাশা

ԳVoՏ

করুন। আর প্রকৃত মুসীবতগ্রস্ত ব্যক্তি তিনিই, যিনি সওয়াব থেকে বঞ্চিত হন। আলী ইব্‌ন হুসাইন (র) বলেন, ‘তোমরা কি জান, তিনি কে ছিলেন? তিনি ছিলেন খিযির (আ)।’

উক্ত হাদীসের বর্ণনাকারী কাসিম আমরী প্রত্যাখ্যাত। ইমাম আহমদ ইব্‌ন হাম্বল (র) ইয়াহয়া ইব্‌ন মাঈন (র) তাকে মিথ্যাবাদী বলেছেন। আহমদ (র) আরো বলেন যে, সে হাদীস জাল করতো। অধিকন্তু হাদীসটি মুরসাল হওয়ার কারণে এরূপ গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে তা গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ্ তা’আলাই সম্যক জ্ঞাত। উপরোক্ত হাদীসটি অন্য একটি দুর্বল সূত্রে আলী (রা) থেকে বর্ণিত, কিন্তু তা শুদ্ধ নয়।

আবদুল্লাহ ইব্‌ন ওহাব (র) মুহাম্মদ ইব্‌ন মুনকাদির (র) থেকে বর্ণনা করেন যে, একদিন উমর ইব্‌ন খাত্তাব (রা) একটি জানাযার নামায আদায় করছিলেন, এমন সময় তিনি একজন অদৃশ্য ব্যক্তির আওয়ায শুনলেন, ‘আপনার প্রতি আল্লাহ্ তা’আলা রহমত করুন। আমাদেরকে ছেড়ে জানাযা পড়বেন না।’ উমর (রা) তার জন্য অপেক্ষা করলেন। তিনি নামাযে যোগদান করলেন এবং মৃত ব্যক্তির জন্য এরূপ দু’আ করলেন

ان تعاذ به نکثیرا عصالک وان تغفرله ففقیر الی رحمتلک . অর্থাৎ— ‘হে আল্লাহ! আপনি যদি তাকে শান্তি দেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই সে আপনার অবাধ্যতা করেছে। আর আপনি যদি তাকে মাফ করে দেন তাহলে সে তো আপনার রহমতেরই মুখাপেক্ষী।’ মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর ঐ ব্যক্তি বললেনঃ طوبی للت یا صاحب القبر ان لم تکن عریفا او جابیا او خازنا او کاتبا

اوشرطیا. অর্থাৎ- হে কবরের বাসিন্দা! তোমার জন্য সুসংবাদ, যদি না তুমি তত্ত্বাবধানকারী, কর উশুলকারী, খাজাঞ্চী, কোষাধ্যক্ষ, কিংবা কোতিয়াল হয়ে থাক।

তখন উমর (রা) বলেন, চল, আমরা তাকে তার দু’আ ও তার উক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি যে, তিনি কে? বৰ্ণনাকারী বলেন, এমন সময় তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। তাঁরা লক্ষ্য করে দেখলেন যে, তার পায়ের চিহ্ন এক হাত দীর্ঘ। তখন উমর (রা) বলেন, আল্লাহর শপথ! ইনিই খিযির (আ), যার সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদেরকে অবহিত করেছিলেন।

উপরোক্ত বর্ণনাটিতে একজন রাবী অজ্ঞাত পরিচয়। এ বর্ণনার সূত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা পায়নি। এরূপ বর্ণনা শুদ্ধ বলে বিবেচিত হয় না।

হাফিজ ইব্‌ন আসাকির (র) আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, একদিন রাতের

বেলায় আমি তাওয়াফ করছিলাম। হঠাৎ এক লোককে আমি কা’বা শরীফের গিলাফ ধরে থাকতে দেখলাম। তখন তিনি বলছিলেন ৪

JT ܒܩܝܢܵܢܝ ܀

ԳvbՀ

অর্থাৎ— হে মহান সত্তা! যার বাণী শুনতে কেউ বিরক্ত বোধ করে না, যাঞো যাকে বিব্রত করে না, পুনঃ পুনঃ কাকুতি মিনতিকারীর মিনতিতে এবং যাত্ৰঞাকারীদের প্রার্থীনায় যিনি বিরক্ত হন না, আপনার ক্ষমার শীতলতা দিয়ে আমার প্রাণ জুড়ান! এবং আপনার রহমতের স্বাদ

ज्ञांश्चन् न्!

আলী (রা) বলেন, আমি বললাম, ‘আপনি যা বলছিলেন তা আমার জন্য পুনরায় বলুন।’ তিনি বললেন, ‘আমি যা বলেছি তুমি কি তা শুনে ফেলেছি?’ বললাম, শুনেছি। তখন তিনি আবার বললেন, ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে খিযিরের প্রাণ ন্যস্ত। আলী (রা) বলেন, ‘ইনিই হচ্ছেন খিযির (আ)।’ যে ব্যক্তি দু’আটি প্রতি ফরয সালাতের পর পড়বে তার গুনাহরাশি আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে দেবেন, যদিও তার গুনাহরাশি সাগরের ফেনা, গাছের পাতা ও তারকার সংখ্যার মত হয়, তবুও আল্লাহ তা’আলা তা মাফ করে দেবেন।

এ হাদীসটি যঙ্গাফ পর্যায়ের। কেননা, এর একজন বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইব্‌ন মুহারিযেরবর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। আবার অন্য একজন বর্ণনাকারী ইয়াখীদ ইব্‌ন আসাম, আলী (রা)-এর সাক্ষাৎ পাননি। এ ধরনের বর্ণনা শুদ্ধ বলে বিবেচিত হয় না। আল্লাহই সম্যক জ্ঞাত।

আবু ইসমাইল তিরমিয়ী (র)ও এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। তবে এর শেষাংশের বক্তব্যটুকু এরূপ : ‘এমন সত্তার শপথ যার হাতে খিযিরের জান ও প্ৰাণ ন্যস্ত, যদি তোমার পাপরাশির পরিমাণ আকাশের তারকা, বৃষ্টি, ভূমণ্ডলের কংকররাশি ও ধূলিকণার সংখ্যার সমানও হয় তবুও আল্লাহ তা’আলা চোখের পলকের চাইতে দ্রুত তা মাফ করে দেবেন।

এই হাদীসটিও মুনকাতে’ বা সূত্র বিচ্ছিন্ন। এই হাদীসের সূত্রে অজ্ঞাত পরিচয় লোকও

রয়েছে।

ইবনুল জাওয়ী (র) ও আবু বকর ইব্‌ন আবীদ দুনিয়া (র)-এর মাধ্যমে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। পরে তিনি মন্তব্য করেন, এ হাদীসের সূত্র অপরিচিত ও এ হাদীসে ধারাবাহিকতা রক্ষিত হয়নি। আর এটাতে ব্যক্তিটি যে খিযির (আ) ছিলেন, তাও প্রমাণিত হয় না। ইব্‌ন আসাকির (র) ইব্‌ন আব্বাস (রা)-এর বরাতে মারফু’ রূপে বর্ণনা করেন যে, খিযির (আ) ও ইলিয়াস (আঃ) প্রতি বছর হজ্জের মৌসুমে পরস্পর সাক্ষাত করতেন। একে অন্যের মাথা মুণ্ডন করতেন ও নিম্ন বর্ণিত বাক্যগুলো উচ্চারণ করে একে অন্যের থেকে বিদায় গ্রহণ করতেন :

অর্থাৎ- আল্লাহর নামে শুরু করছি মাশাআল্লাহ। আল্লাহ ছাড়া কেউ কল্যাণ দেয় না-মাশাআল্লাহ। আল্লাহ ছাড়া কেউ অকল্যাণ দূর করে না-মাশাআল্লাহ। প্রতিটি নিয়ামত তার থেকেই এসে থাকে-মাশাআল্লাহ। আল্লাহ তা’আলা প্রদত্ত ছাড়া অন্য কারো নিজস্ব শক্তি, সামর্থ্য নেই।

avos)

বর্ণনাকারী বলেন, ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকাল উক্ত দু’আটি তিন তিন বার পড়বে তাকে আল্লাহ তা’আলা ডুবে মরা থেকে, পুড়ে মরা থেকে ও চুরির ক্ষতি থেকে নিরাপদ রাখবেন।’ বর্ণনাকারী বলেন, আমার যতদূর মনে হয়, ইব্‌ন আব্বাস (রা) আরো বলেছেন, ‘শয়তান, অত্যাচারী বাদশাহ, সাপ ও বিচক্ষুর অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখবেন।’

ইমাম দারা কুতনী (র) বলেন, এ হাদীসটি গরীব পর্যায়ের। হাদীসটি বর্ণনায় একমাত্র আল হাসান ইব্‌ন যারাইক (র) নামক একজন অপরিচিত রাবী রয়েছেন।

ইব্‌ন আসাকির (র) মিথ্যা হাদীস রচয়িতা আলী ইব্‌ন হাসান জাহাদামী-এর মাধ্যমে আলী ইব্‌ন আবু তালিব (রা) থেকে একটি মারফু’ হাদীস বর্ণনা করেন। তার প্রারম্ভিকা হচ্ছে— তিনি বলেন, প্রতি বছর আরাফার দিন আরাফাতের ময়দানে জিবরাঈল, মিকাঈল, ইস্রাফিল ও খিযির (আ) একত্রিত হন। এটি একটি সুদীর্ঘ জল হাদীস। এটি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এখানে উদ্ধৃত कद्भछि न्ा।

ইব্‌ন আসাকির (র) হিশাম ইব্‌ন খালিদ সূত্রে অন্য একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তাতে বলা হয়েছে, ইলিয়াস ও খিযির (আ) দু’জনই বায়তুল মুকাদাসে প্রতি বছর রমযানের সিয়াম পালন করেন ও বায়তুল্লাহয় হজ্জ করেন এবং যম যম কয়া থেকে একবার পানি পান করেন যা সারা বছরের জন্যে যথেষ্ট হিসেবে গণ্য।

ইব্‌ন আসাকির (র) আরো বর্ণনা করেন, ওলীদ ইব্‌ন আবদুল মালিক ইব্‌ন মারওয়ান যিনি দামেশকের জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা- একবার সে মসজিদে রাতে ইবাদত করার অভিপ্ৰায় প্রকাশ করেন, তিনি মসজিদ কর্তৃপক্ষকে মসজিদটি খালি রাখার নির্দেশ দেন। তাঁরা তা করলেন, যখন রাত শুরু হল তিনি ‘বাবুস আসসাআত’ নামক দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলেন ও এক ব্যক্তিকে বাবুল খাদরা ও তার মধ্যবতী স্থানে সালাতরত দেখতে পান। খলীফা। মসজিদ কর্তৃপক্ষকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি কি তােমাদেরকে মসজিদ খালি করে দিতে বলিনি? তারা বললেন, হে আমিরুল মুমিনীন! ইনি খিযির (আ), প্রতিরাতে তিনি এখানে এসে जळाऊ ऊप्लश कंट्र शुदकन्।

ইব্‌ন আসাকির (র) রাবাহ ইব্‌ন উবায়দা (র) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন,’একদিন আমি একটি লোককে দেখলাম উমর ইব্‌ন আবদুল আষীয (র)-এর হাতে ভর দিয়ে তাঁর আগে আগে চলছে। তখন আমি মনে মনে বললাম, এ লোকটি পাদুকাবিহীন। অথচ উমরের কত অন্তরঙ্গ! বৰ্ণনাকারী বলেন, উমর ইব্‌ন আবদুল আষীয (র) সালাত শেষে ফিরে আসলেন, তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম— এই মাত্ৰ যে লোকটি আপনার হাতে ভর দিয়ে চলছিলেন তিনি কে? তিনি বললেন, ‘তুমি কি তাকে দেখেছি হে রাবাহি?’ আমি বললাম, ‘জী হাঁ’। তিনি বললেন, ‘তোমাকে তো আমি একজন পুণ্যবান লোক বলেই জানি। তিনি হচ্ছেন আমার ভাই, খিযির (আ)। তিনি আমাকে সুসংবাদ দিলেন যে, আমি অচিরেই শাসনকর্তা হব এবং ন্যায় বিচার করব।’

শায়খ আবুল ফারাজ ইবনুল জাওয়ী (র) এ হাদীসের সূত্রে উল্লেখিত রামলীকে উলামায়ে কিরামের নিকট সমালোচিত ব্যক্তি বলে মন্তব্য করেছেন। এ বর্ণনার অন্যান্য রাবী সম্পর্কেও বিরূপ সমালোচনা রয়েছে।

ԳՎ28

ইব্‌ন আসাকির (র) অন্যান্য সূত্রেও উমর ইব্‌ন আবদুল আষীয (র) ও খিযির (আ)-এর মিলিত হওয়ার কথা বর্ণনা করেছেন। এ ধরনের সকল বর্ণনাকেই তিনি অনির্ভরযোগ্য বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ইব্‌ন আসাকির (র) উমর ইব্‌ন আবদুল আষীয (র), ইবরাহীম আত-তায়মী, সুফইয়ান ইব্‌ন উয়াইনা (র) এবং আরো অনেকের সাথে খিযির (আ) মিলিত হয়েছিলেন বলে বর্ণনা

করেছেন।

যারা বিশ্বাস করেন যে, খিযির (আ) আজও বেঁচে আছেন। এসব রিওয়ায়তই তাদের এরূপ বিশ্বাসের ভিত্তি। এ প্রসঙ্গে মারফু ‘বলে কথিত যে সব বর্ণনা রয়েছে সেগুলো অত্যন্ত দুর্বল। এ ধরনের হাদীস বা বর্ণনা দ্বারা ধর্ম ও ঘটনার ব্যাপারে দলীল পেশ করা যায় না। বড়জোর এগুলোকে কোন সাহাবীর উক্তি বলা যেতে পারে, আর সাহাবীকে তো মাসুম বলা যায় না।’১

আবদুর রাজ্জাক (র) আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) একদিন দাজ্জাল সম্পর্কে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, দাজ্জাল আবির্ভূত হবে, কিন্তু মদীনার রাস্তায় প্রবেশ করা তার জন্যে নিষিদ্ধ। রাস্তার মাথায় আসলে মদীনার একজন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি তার দিকে অগ্রসর হয়ে বলবেন— আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি দাজ্জাল যার সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ (সা) আমাদেরকে বলে গিয়েছেন। দাজ্জাল বলবে— তোমরা কি বল? যদি আমি এ লোকটিকে হত্যা করি ও পরে জীবিত করি, তোমরা কি আমার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে? তারা বলবে, না। দাজ্জাল লোকটিকে হত্যা করবে, পুনরায় জীবিত করবে। যখন ঐ ব্যক্তি জীবিত হবেন, তখন তিনি বলবেন, আল্লাহ তা’আলার শপথ! তোমার সম্বন্ধে এখন আমার অন্তদৃষ্টি তীক্ষতর হল। বৰ্ণনাকারী বলেন, দাজ্জাল দ্বিতীয়বার তাকে হত্যা করতে উদ্যত হবে, কিন্তু সে তা করতে পারবে না। বর্ণনাকারী মামার (র) বলেন, ‘আমার কাছে এরূপ বর্ণনাও পৌঁছেছে যে, ঐ মুমিন বান্দার গলা তামায় পরিণত করা হবে।’ আবার এরূপ বর্ণনাও পৌঁছেছে, যে ব্যক্তিকে দাজ্জাল একবার হত্যা করবে এবং পুনরায় জীবিত করবে—তিনি হচ্ছেন খিযির (আ)।

উপরোক্ত হাদীসটি বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফে রয়েছে। কোন কোন হাদীসের মূল।(।( 5।( ۹।(।(۶|||||||||S’ils | SS فیاتی بشاب تمتلی شبابا فی قتله | جا)GRI}گ ۶؟؟:।(।( 2।(۶ ভরা যৌবনের অধিকারী যুবককে নিয়ে আসবে এবং তাকে হত্যা করবে। হাদীছে। উল্লেখিত মূল ۹)} }}ه i۹گ -(1) 511।( 1।( ۹।( ۹ آگ الذی حدثنا عنه رسول الله صلعم 2।(۶ বর্ণনাকারী শুনেছেন বলে বোঝা যায় না। বরং এটা বহুল প্রচলিত বিবরণও হতে পারে। যা বহু সংখ্যক লোক এক পৰ্যায় থেকে অন্য পৰ্যায় শুনেছেন। শায়খ আবুল ফারাজ ইবনুল জাওয়ী (র) তাঁর কিতাব -1 ,,,।( 1_June – এ সম্পর্কে মারফু রূপে বৰ্ণিত হাদীসগুলোকে জাল বলে আখ্যায়িত করেছেন। আর সাহাবা, তাবেয়ীন ও তাবে-তাবেয়ীন থেকে যে সব বর্ণনা এসেছে এগুলোর সূত্ৰসমূহ দুর্বল এবং বর্ণনাকারীদের পরিচয়বিহীন বলে তিনি আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর এ সমালোচনা চমৎকার।

১. সাহাবীগণ মাসুম না হলেও তাদের দোষ চর্চা বা নিন্দাবাদ জায়েয নয়।

ԳVOÇ

খিযির (আ) ইনতিকাল করেছেন বলে যারা অভিমত পেশ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, ইমাম বুখারী (র), ইবরাহীম আল হারবী (র), আবুল হুসায়ন ইবনুল মুনাদী (র), ইবনুল জাওয়ী (র)। ইবনুল জাওয়ী এ ব্যাপারে অধিকতর ভূমিকা নিয়েছেন। এ সম্পর্কে তিনি |

প্রকারের দলীল রয়েছে। সে দলীলসমূহের একটি হল আল্লাহর বাণী : …….. (i. L4% ‘a14 11 এ11: ৬% অর্থাৎ—আমি তােমার পূর্বেও কোন মানুষকে অনন্ত জীবন দান করিনি। (সূরা আম্বিয়া : ৩৪)

সুতরাং খিযির (আ) মানুষ হয়ে থাকলে তিনিও অবশ্যই এই সাধারণ নিয়মের অন্তর্ভুক্ত হবেন। আর বিশুদ্ধ দলীল ব্যতীত তাকে ব্যতিক্রম বলে গণ্য করা যাবে না। সাধারণ নিয়ম হচ্ছে ব্যতিক্রম না থাকা-যতক্ষণ না নবী করীম (সা) থেকে তার সপক্ষে কোন দলীল পাওয়া যায়। খিযির (আ)-এর ক্ষেত্রে এরূপ কোন ব্যতিক্রমের প্রমাণ পাওয়া যায় না।

দ্বিতীয় দলীল হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলার বাণী :

স্মরণ করা যখন আল্লাহ নবীদের অংগীকার নিয়েছিলেন, ‘তোমাদেরকে কিতাব ও হিকমত যা কিছু দিয়েছি তারপর তোমাদের কাছে যা রয়েছে তার সমর্থক রূপে যখন একজন রাসূল আসবে, তখন তোমরা অবশ্যই তার প্রতি ঈমান আনবে এবং তাকে সাহায্য করবে।’ তিনি বললেন, ‘তোমরা কি স্বীকার করলো? এবং এ সম্পর্কে আমার অঙ্গীকার কি তোমরা গ্ৰহণ করলে?’ তারা বলল, ‘আমরা স্বীকার করলাম।’ তিনি বললেন, ‘তবে তোমরা সাক্ষী থাক এবং আমিও তোমাদের সাথে সাক্ষী রইলাম।’ (সূরা আল ইমরান : ৮১)

ইব্‌ন আব্বাস (রা) এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, আল্লাহ তা’আলা তার প্রেরিত প্ৰত্যেক নবী থেকে এ মর্মে অঙ্গীকার নিয়েছেন যে, যদি মুহাম্মদ (সা)-কে তার আমলে পাঠানো হয় এবং তিনি জীবিত থাকেন, তাহলে তিনি মুহাম্মদ (সা)-এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবেন ও তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য সহায়তা করবেন। আল্লাহ তা’আলা প্রত্যেক নবীকে হুকুম দিয়েছিলেন তিনি যেন তার উম্মত থেকে এ মর্মে অঙ্গীকার নেন যে, যদি তাদের জীবিত অবস্থায় তাদের কাছে মুহাম্মদ (সা)-কে প্রেরণ করা হয় তাহলে তারা তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে ও তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য করবে। সুতরাং খিযির (আ) যদি নবী কিংবা ওলী হয়ে থাকেন। তাহলে তার ক্ষেত্রেও এই অঙ্গীকার প্রযোজ্য। তিনি যদি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যুগে জীবিত থাকতেন তাহলে তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়েই তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর খিদমতে হাযির থাকতেন, রাসূলের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতেন এবং রাসূল (সা)-কে তিনি সাহায্য করতেন। যাতে কোন শত্রু রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ক্ষতি করতে না পারে। আর তিনি যদি ওলী হয়ে থাকেন, তাহলে আবু বকর সিদ্দিক (রা) ছিলেন তার থেকে বেশি মর্যাদাবান। আর যদি নবী হয়ে থাকেন তাহলে মূসা (আ) ছিলেন তার থেকে বেশি মর্যাদাবান।

ԳNOՆ

ইমাম আহমদ (র) তাঁর মুসনাদে… জাবির ইব্‌ন আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে পবিত্র সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ, যদি মূসা (আ) আমার যমানায় বেঁচে থাকতেন তাহলে আমার অনুসরণ ব্যতীত তাঁর কোন উপায় থাকত না। এ ব্যাপারটি সন্দেহাতীতভাবে সত্য, এবং ধর্মের একটি মৌলিক বিষয়— যা দিবালোকের মত সুস্পষ্ট এবং এর জন্য কোন দলীল-প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। উপরোক্ত আয়াতটিও তার সমর্থন করে। যদি নবীগণ রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যমানায় জীবিত থাকতেন, তাহলে তাঁরা রাসূলুল্লাহ (সা)-এর অনুসারী হতেন এবং তাঁর আদেশ-নিষেধের আওতাধীন থাকতেন। যেমন রাসূলুল্লাহ্ (সা) মিরাজের রাতে যখন সকল নবীর সাথে মিলিত হলেন, তাকে তাদের সকলের উপরে মর্যাদা দান করা হয়, আর যখন তারা তার সাথে বায়তুল মুকাদাসে অবতরণ করেন ও সালাতের ওয়াক্ত হয় আল্লাহ তা’আলার আদেশে আদিষ্ট হয়ে জিবরাঈল (আঃ) রাসুলুল্লাহ (সা)-কে তাদের সকলের ইমামতি করতে বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) তাদের অবস্থান স্থল কর্তৃত্বের এলাকায় তাদেরকে নিয়ে সালাত আদায় করেন। এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সা) শ্রেষ্ঠ ইমাম ও মহাসম্মানিত আখেরী রাসূল।

যখন জানা গেল আর প্রত্যেক মুমিন বান্দার নিকটই তা সুবিদিত যে, যদি খিযির (আ) জীবিত থাকতেন তাহলে তিনি মুহাম্মদ (সা)-এর উম্মত ও তাঁর শরীয়তের অনুসারীদের অন্তর্ভুক্ত হতেন। এছাড়া তার গত্যন্তর থাকত না। ধরুন, ঈসা (আ)-এর কথা। তিনি যখন শেষ যমানায় অবতরণ করবেন, তখন তিনি মহানবীর পবিত্র শরীয়ত মুতাবিক ফয়সালা করবেন। তিনি এই শরীয়তের বহির্ভূত কোন কাজ করবেন না এবং এর বিরোধিতাও করবেন না। অথচ তিনি পাঁচজন শ্ৰেষ্ঠ (১ -।( 16) পয়গাম্বরের অন্যতম এবং তিনি বনী ইসরাঈলের শেষ নবী। এটা জানা কথা যে, কোন সহীহ কিংবা সন্তোষজনক হাসান’ পর্যায়ের বর্ণনা পাওয়া যায় না, যার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, খিযির (আ) কোন একদিনও রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে মিলিত হয়েছিলেন এবং তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে কোন একটি যুদ্ধেও অংশগ্রহণ করেননি। বদরের যুদ্ধের কথা ধরুন, সত্যবাদী ও সত্যায়িত রাসূলুল্লাহ্ (সা) যখন আল্লাহ তা’আলার কাছে দুআ করছিলেন, তার কাছে সাহায্য প্রার্থীনা করছিলেন এবং কাফিরদের মুকাবিলায় বিজয় প্রার্থীনা করছিলেন, তখন তিনি বলছিলেন, এই ছোট দলটি যদি ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে পৃথিবীতে আর তােমার ইবাদত হবে না। ঐ ছোট দলটিতে ছিলেন সেদিন মুসলমানদের ও ফেরেশতাদের নেতৃবর্গ, এমনকি জিবরাঈল (আ)ও তথায় উপস্থিত ছিলেন। যেমন হাসসান ইব্‌ন ছাবিত (রা) তার কাসীদার একটি লাইনে—যাকে আরবের শ্রেষ্ঠ গৌরবগাথা বলে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে- বলেন, :

অর্থাৎ— বদরের সাবীর পাহাড়ে আমাদের পতাকাতলে জিবরাঈল (আ.) ও মুহাম্মদ (স) কাফিরদের প্রতিহত করছিলেন।

যদি খিযির (আ) জীবিত থাকতেন তাহলে তার এই পতাকাতলে থেকে যুদ্ধ করাটাই হত তার মহান মর্যাদা ও সর্বশ্রেষ্ঠ যুদ্ধাভিযান।

ԳVoԳ

কাজী আবু ইয়ালা মুহাম্মদ ইবনু হুসাইন হাম্বলী (র) বলেন, ‘আমাদের জনৈক আলিমকে খিযির (আ) সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, তিনি কি ইন্তিকাল করেছেন?’ তিনি বললেন, ‘হ্যা’। তিনি আরও বলেন, অনুরূপ বর্ণনা আবু তাহের ইবনুল গুবারী (র) সূত্রেও আমাদের কাছে পৌঁছেছে। তিনি এভাবে যুক্তি দেখাতেন যে, যদি খিযির (আ) জীবিত থাকতেন তাহলে তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর দরবারে অবশ্যই আগমন করতেন। এ তথ্যটি ইবনুল জাওয়ী (র) তার ‘আল-উজালা’ গ্রন্থে উদ্ধৃত করেছেন।

কোন ব্যক্তি যদি এরূপ বলেন যে, তিনি যুদ্ধক্ষেত্রগুলোতে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কেউ তাকে দেখেনি। তা হলে তার উত্তর হবে যে, এরূপ সম্ভব নয়, এটা সুদূর পরাহত। কেননা, এতে শুধু ধারণার বশবতী হয়ে সাধারণ নিয়ম-কানুনকে বাদ দিয়ে বিষয়টিকে বিশেষভাবে বিচার করতে হয়। অতঃপর একথাটিও বিবেচ্য যে, রহস্যাবৃত হবার চেয়ে এতেই তাঁর মর্যাদা ও মুজিযা বেশি প্রকাশ পেতো। পুনরায় যদি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর পরে তাঁকে জীবিত ধরা হয় তাহলে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ইনতিকালের পর হাদীসসমূহ ও কুরআনুল করীমের আয়াতসমূহের প্রচার ও প্রসারের দায়িত্ব তার উপর বর্ততো। উপরন্তু মিথ্যা হাদীস বিকৃত রিওয়ায়েতের বিরুদ্ধাচরণ, বিভিন্ন বাতিল মতবাদের খণ্ডন, মুসলিম জামাতের সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ, জুম’আ ও জামায়াতে উপস্থিত হওয়া, তাদের উপকার সাধন করা এবং তাদের প্রতি অপরের ক্ষতিসাধনকে প্রতিহত করা, উলামায়ে কিরামকে সৎপথে পরিচালিত করা ও অত্যাচারী শাসকদের সঠিক পথে চলতে বাধ্য করা এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা ইত্যাদি কর্তব্য পালন, বিভিন্ন শহরে, বনে-জঙ্গলে তার কথিত আত্মগোপন করে থাকা, এমন লোকদের সাথে বসবাস করা যাদের অধিকাংশের অবস্থা অজানা এবং তাদের তত্ত্বাবধান করা অপেক্ষা বহুগুণে শ্রেয়। এ আলোচনার পর এ বিষয়ে আর সন্দেহের কোন অবকাশ থাকে না। আল্লাহ তা’আলা যাকে চান তাকে সৎপথ প্ৰদৰ্শন করেন।

সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফে এবং অন্যান্য কিতাবেও আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রা) থেকে বর্ণিত রয়েছে যে, একদিন রাসূলুল্লাহ্ (সা) এশার নামায আদায় করলেন এবং সাহাবীগণকে লক্ষ্য করে বললেন, আজকের রাতে তোমরা কি একটা কথা চিন্তা করেছ যে, আজকের দিনে যারা পৃথিবীতে জীবিত রয়েছে, একশ’ বছর পর তাদের কেউই পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকবে না। বর্ণনাকারী আবদুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রা) বলেন, একথা শুনে লোকজন ভীত হয়ে পড়লেন। অথচ রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাঁর যুগের সমাপ্তির কথাই বুঝাচ্ছিলেন। ইমাম আহমদ (র) ও সামান্য শাব্দিক পার্থক্যসহ অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

ইমাম আহমদ (র) জাবির ইব্‌ন আবদুল্লাহ (রা) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর ইনতিকালের একমাস কিংবা কিছুদিন পূর্বে বলেছেন : তোমাদের মধ্যে যারা এখন জীবিত, একশ’ বছরের মাথায় তাদের কেউই জীবিত থাকবে না।

অন্য এক সূত্রে ইমাম আহমদ (র) জাবির ইব্‌ন আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূল (সা) ইনতিকালের একমাস পূর্বে বলেন, তারা আমাকে কিয়ামত সম্বন্ধে প্রশ্ন করেছে, অথচ এ সম্বন্ধে শুধু আল্লাহ তা’আলাই জানেন। আল্লাহর শপথ, আজকাল পৃথিবীতে

(১ম খণ্ড) ৯৩—

ԳՖեr

যারা রয়েছে তাদের কেউই একশ’ বছর অতিক্রম করবে না। ইমাম মুসলিম (র) ও তিরমিয়ী (র) অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

ইবনুল জাওয়ী (র) বলেন, উপরোক্ত বিশুদ্ধ হাদীসগুলো খিযির (আ)-এর বেঁচে থাকার দাবিকে নাকচ করে দেয়। অন্যান্যা উলামা বলেন, খিযির (আ) যদি রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যুগ না পেয়ে থাকেন, যেমন দৃঢ় দলীল দ্বারা বোঝা যায়— তাতে কোন সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে না। আর যদি তিনি তার যুগ পেয়ে থাকেন তাহলে এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, তিনি একশ’ বছর পর আর জীবিত ছিলেন না। সুতরাং এখন আর তিনি বেঁচে নেই। কেননা তার ক্ষেত্রেও সাধারণ নীতি প্ৰযোজ্য। যতক্ষণ না, ব্যতিক্রমের অকাট্য দলীল পাওয়া যায়। আল্লাহ তা’আলাই সম্যক জ্ঞাত। হাফিজ আবুল কাসিম সুহায়লী তাঁর কিতাব ১৯১৬-১1, — – -)। -এ ইমাম বুখারী (র) আবু বকর ইবনুল আরাবী (র) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি নবী করীম (সা)-এর যুগ পেয়েছেন, কিন্তু এরপর তিনি উপরোক্ত হাদীসের মর্ম অনুসারে ইনতিকাল করে গিয়েছেন। খিযির (আ) রাসূলুল্লাহ (সা)-এর যুগ পর্যন্ত জীবিত ছিলেন বলে ইমাম বুখারী যে মন্তব্য করেছেন, এতথ্যটিতে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। সুহায়লী (র) খিযির (আ)-এর ঐ পর্যন্ত বেঁচে থাকার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছেন এবং এটাই অধিকাংশের মত বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরো বলেন, তার রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সাথে সাক্ষাৎ করা এবং রাসূলুল্লাহ (সা)-এর ইনতিকালের পর নবী পরিবারের প্রতি তার সমবেদনা জ্ঞাপনের বিষয়টি বিশুদ্ধ হাদীসসমূহে বর্ণিত রয়েছে। অতঃপর তিনি আমাদের পূর্বে বর্ণিত দুর্বল হাদীসগুলো উপস্থাপন করেন। কিন্তু এগুলোর সূত্র উল্লেখ করেননি। আল্লাহ তা’আলাই সম্যক অবগত।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *