১৬. ওদের আবার আগের জায়গায়

ওদের আবার আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। খানিক বাদেই গাড়ির শব্দ কানে আসতেই বোঝা গেল বৃদ্ধ বেরিয়ে গেলেন বোর্ডের মিটিং-এ যোগ দিতে। মেজর বললেন, তাজ্জব ব্যাপার! এতকাল আমেরিকায় আছি, জানতাম পুলিশই শেষ কথা। এক-একটা শহরের ভার একজন শেরিফের ওপর থাকে, পুলিশ তাঁর নির্দেশে চলে। কিন্তু এই আটলান্টিক সিটিতে শান্তিশৃঙ্খলা দেখার জন্যে গুণ্ডাদের একটা বোর্ড আছে তা জানতাম না। পুলিশ কী করে অ্যালাউ করছে। কথাগুলো বলেই তিনি জিভ কাটলেন, যাচ্চলে, অ্যালাউ বলে ফেললাম, ইংরেজি শব্দ।

মুখভর্তি কাঁচা-পাকা দাড়ি নিয়ে জিভ বের করলে মানুষকে যে কিভূত দেখায়, তা অর্জুনের জানা ছিল না। মেজরের এতক্ষণে খেয়াল হয়েছে। বললেন, অবশ্য এখন ওরা নেই এ বাড়িতে, শুনতে পাচ্ছে না।

টেপ রেকড়ার চালিয়ে যেতে পারে। অর্জুন বলল।

সিম্বা চুপচাপ একটা চেয়ারে বসে ছিল। তাকে খুব বিরক্ত এবং উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। হঠাৎ সে ঝুঁকে পড়ল, তোমাদের মতলবটা কী?

মতলব? অর্জুন অবাক হল।

তখন থেকে তোমরা নিজেদের ভাষায় কথা বলে যাচ্ছ। আমরা বুঝতে পারছি কিনা তা নিয়ে একটুও ভাবছ না তোমরা। কিন্তু আমি কোনও অন্যায় করিনি। তোমরা অনুরোধ করেছিলে বলে তোমাদের এই আটলান্টিক সিটিতে নিয়ে এসেছিলাম। এখন আর আমার পক্ষে এখানে থাকা সম্ভব নয়। আমি চলে যাচ্ছি। দরকার হলে আমি পুলিশকে ফোন করব। কথা বলতে বলতে উঠে দাঁড়িয়েছিল সিম্বা।

অর্জুন বলল, তুমি কি বুঝতে পারছ না? আমরা এখানে বন্দি হয়ে আছি।

আই ডোন্ট কেয়ার। আমি কোনও অন্যায় করিনি যে, কেউ আমাকে বন্দি করে রাখবে। আমি এখান থেকে সোজা বেরিয়ে যাব। তোমাদের যদি ইচ্ছে হয় আমার সঙ্গে আসতে পারো। সিম্বা এগিয়ে গেল দরজার দিকে। দরজা ঠেলতে বুঝতে পারল ওটা বাইরে থেকে বন্ধ। স্ট্রেঞ্জ! ওরা ভেবেছে কী? সে ঘুরে দাঁড়াল গ্যাব্রিয়েলার দিকে মুখ করে, তুমি! তুমি তোমার বান্ধবী মারা গিয়েছে বলে কাঁদছিলে, কিন্তু কোথায় নিয়ে এসেছ আমাদের?

গ্যাব্রিয়েলা খুবই দুঃখিত হয়ে বললেন, আই অ্যাম সরি। সত্যি আমি জানতাম না আমার বান্ধবীর বাবা একজন মাফিয়া নেতা। এখানে না জেনে তোমাদের নিয়ে এসে খুব অন্যায় করেছি আমি।

সিম্বা কাঁধ ঝাঁকাল। তারপর অর্জুনকে বলল, কিন্তু এখানে বসে থাকব না আমরা। এসো, চেষ্টা করি এখান থেকে বেরিয়ে যেতে।

ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। পরদা সরিয়ে জানলা দেখা হল। সেগুলো গ্রিলে বন্দি। এই ঘর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথ নেই। পাশের ঘরের অবস্থা একই রকম! মেজর কাঁধ দিয়ে বেরোবার দরজায় আঘাত করলেন। দরজাটায় শব্দ হল, দেওয়াল কাঁপল। অর্জুনের খেয়াল হল। এখানকার বাড়ির দেওয়াল ইটের নয়। কাঠের। মেজর ধাক্কা দেওয়ায় সেই কাঠে কাঁপন লেগেছে। অর্জুন মেজরকে আর একবার ধাক্কা দিতে বলল। এবার আর একটু জোরে। সঙ্গে সঙ্গে পাশের ঘরে আওয়াজ হল। সিম্বা ছুটে গেল সেখানে গিয়ে চেঁচিয়ে উঠল। অর্জুন দ্রুত সেখানে পৌঁছে দেখল একটা কাঠের বিমের মধ্যে ঢোকানো আর একটি কাঠ ঈষৎ খুলে এসেছে। তিনজনের মিলিত চেষ্টায় সেটাকে খুলে ফেলার পর দেওয়ালের একটা অংশকে সরানো সম্ভব হল। বাইরের আলো ভেতরে ঢুকল। গ্যাব্রিয়েলা গালে হাত দিয়ে এতক্ষণ দেখছিলেন, বললেন, থ্যাঙ্ক গড!

ফাঁক দিয়ে বাইরে পা বাড়াতেই অর্জুন দেখল সে বারান্দায়। লন থেকে অনেক উঁচুতে এই বারান্দা। বাড়িতে কেউ নেই নাকি? এতটা শব্দ হল অথচ কাউকে ছুটে আসতে দেখা যাচ্ছে না। চারজন বাইরে আসতেই সিম্বা প্রথমে তার গাড়িটাকে দেখতে পেল। সে চাপা গলায় বলল, লেটস গো!

ঠিক তখনই অর্জুন কুকুরটাকে এগিয়ে আসতে দেখল। তারপর আরও তিনটে। চারটেরই লেজ কাটা। হিংস্র চোখে বারান্দার দিকে মুখ উঁচু করে তাকিয়ে আছে। একজন মুখ খুলতে বোঝা গেল, ওই দাঁত একটা বাইসনের ঠ্যাং চিবিয়ে ফেলতে পারে। এরা যে ভয়ঙ্কর শিকারি তা বুঝতে অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। পুরো বাড়িটা এদের জিম্মায় ছেড়ে ওরা চলে গেছে নিশ্চিন্তে। বারান্দা থেকে মাটিতে পা দিলে আর দেখতে হবে না।

বাকি তিনজনের নজর কুকুরগুলোর ওপর পড়েছিল। মেজর বললেন, ডেঞ্জারাস। তবে আফ্রিকায় আমি এই ধরনের বুনো কুকুরের মোকাবিলা করেছি।

অর্জুন বলল, মালিক আর যে খাবার দেয় তারা ছাড়া পৃথিবীর সব মানুষ ওদের শত্রু। কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। ওদের ট্রেনিং নেই, তাই এই বারান্দায় উঠে আসছে না।

মেজর হতাশ গলায় বললেন, তা হলে আমরা এখান থেকে যাব কী করে?

ওদের না সরালে কোনও উপায় নেই। অর্জুন বলল।

মেজর একটু ঝুঁকে গলায় চু চু শব্দ তুললেন। কুকুর চারটে নড়ছে না। মেজর আরও একটু ঝুঁকলেন, কাম অন ব্রাদার্স। তোদের সঙ্গে আমাদের কোনও শত্রুতা নেই। যুধিষ্ঠিরের সঙ্গী ছিল তোদের পূর্বপুরুষ। প্রায় স্বর্গে পৌঁছে গিয়েছিল। অর্জুন, আমি ঠিক বলছি তো? সেই অবস্থায় ঘুরে তাকাতে গিয়ে মেজর নীচে পড়ে যাচ্ছিলেন ব্যালান্স হারিয়ে, কিন্তু অর্জুন শেষ মুহূর্তে তাঁকে ধরে ফেলতে তিনি রক্ষা পেলেন। আর তিনি বারান্দা থেকে মাটিতে পড়ছেন দেখে চারটে কুকুর বিদ্যুতের মতো ছুটে এসেছিল সামনে।

উঠে দাঁড়িয়ে পেছনে সরে এলেও থরথরিয়ে কাঁপছিলেন মেজর, ইম্পসি। অর্জুন চারপাশে তাকাল। তারপর খানিকটা হেঁটে দরজার হুড়কো বাইরে থেকে খুলে ভেতরে ঢুকল। দরজার পাশেই একটা ছোট শেফ রয়েছে। সে মেজরকে অনুরোধ করল সাহায্য করতে। মেজর হাত লাগালে সেটাকে ঠেলতে ঠেলতে বারান্দায় বের করে সদ্য-ভাঙা কাঠের ফোকরের পাশে নিয়ে এল। তারপর বলল, আপনারা ঘরের ভেতর চলে যান। দরজাটা বন্ধ রাখুন। আমি বলামাত্র ছুটে বেরিয়ে আসবেন বারান্দায়।

কথাগুলো ইংরেজিতে বলায় সিম্বা জিজ্ঞেস করল, তুমি কী করতে চাও?

কুকুরগুলোকে বারান্দায় তুলতে চাই। তোমাদের প্রত্যেকের রুমালগুলো আমাকে দাও। সে হাত বাড়াতে প্রত্যেকেই রুমাল দিল।

কারও কাছে নেল কাটার আছে?

গ্যাব্রিয়েলা ব্যাগ খুলে সেটা এগিয়ে দিতেই অর্জুন নেলকাটারের ভেতরে ঢোকানো ছোট্ট ছুরির ফলা বের করে বাঁ হাতের ওপর দিকে চাপ দিতেই কয়েক ফোঁটা রক্ত বেরিয়ে এল। মেজর চেঁচিয়ে উঠল, কী করছ?

কয়েক ফোঁটা রক্ত। কিস্যু হবে না। আপনারা ঘরের ভেতর ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিন। কুইক। আমি বলামাত্রই দরজা খুলে বাইরে চলে আসবেন। অর্জুনের কথায় বিস্মিত মুখ নিয়ে তিনজন ভেতরে চলে যেতে অর্জুন চারটে রুমালে রক্তের ফোঁটাগুলো মাখিয়ে নিতেই নতুন রক্ত বের হওয়া বন্ধ হল। ছুরির ডগায় রক্ত লেগে রয়েছে তখনও। সে নেলকাটারটা উঠোনে ছুড়ে ফেলতেই চারটে কুকুর একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ল ওটার ওপর। প্রথমজন গন্ধ শুকে জিভ দিয়ে ছুরিটা চাটল। অর্জুন এবার প্রথম রুমাল গোল করে পাকিয়ে ওদের কাছাকাছি ছুড়তেই কুকুরটা ছুটে গেল।রুমালে নাক ঢুকিয়ে গন্ধ শুঁকতেই সে গোঁ গোঁ আওয়াজ তুলল। বাকি তিনজন তখন রুমাল শুকছে। এবার দ্বিতীয় রুমাল ছুড়ল বারান্দার সিঁড়িতে। কুকুরটা লাফিয়ে সেখানে পৌঁছে রুমালের ঘ্রাণ নিতে শুরু করতেই তৃতীয়টিকে বারান্দার ওপর ছুড়তেই ওরা সমস্ত শিক্ষা ভুলে লাফিয়ে উঠে এল বারান্দার ওপর। অর্জুন আর এক মুহূর্ত নষ্ট না করে কাঠের ফোকর দিয়ে ভেতরে ঢোকার সময় চতুর্থ রুমালটি ভাঙা কাঠের ফাঁকে খুঁজে দিয়ে দৌড়ে বাইরের ঘরে চলে আসতেই কুকুরগুলো হুড়মুড়িয়ে ফোকর দিয়ে ঢুকতে লাগল। অর্জুনের চিৎকারে ওরা তিনজন দরজা খুলে বাইরে যেতেই অর্জুন অনুসরণ করল। এক ইঞ্চির জন্যে প্রথম কুকুরটা ওকে ধরতে পারেনি। একেবারে ওর মুখের ওপর দরজা বন্ধ করতেই সে দেখল মেজর শেলফটাকে ঠেলছেন ফোকর বন্ধ করতে। ওকে সাহায্য করছে সিম্বা। কিছু না বলতেই ওঁরা বুঝে গিয়েছেন বলে ভাল লাগল অর্জুনের। সে ছুটে গিয়ে হাত লাগাতে ফোকরটা শেলফের আড়ালে চলে গেল।

ওপাশের বন্ধ দরজা থেকে ফিরে এসে কুকুরগুলো ফোকর দিয়ে বেরোবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হল। ওদের চাপে শেলফ নড়ছে। অর্জুন বলল, জলদি।

ওরা দ্রুত নীচে নেমে গাড়ির কাছে ছুটে গেল। চাবিটা যে ড্যাশবোর্ডে ঝুলতে দেখবে, ভাবেনি অর্জুন। ওরা গাড়িতে উঠে বসতেই সিম্বা এঞ্জিন চালু করল। আর তখনই শেলফটা সামান্য সরে যেতে কুকুরগুলো বারান্দায় নেমে ঝাঁপিয়ে পড়ল নীচে। অর্জুন চিৎকার করল, কাচ তুলুন, কাচ তুলুন।

দ্রুত কাচ তুলে দিতে সিম্বা গাড়ি ঘুরিয়ে গেটের দিকে নিয়ে গেল। গেট বন্ধ। গাড়ি থেকে নেমে গেট খোলার চেষ্টা করা এখন পাগলামি করা হবে।

অর্জুন বলল, স্পিড বাড়াও, সোজা গেটে ধাক্কা মারো।

ধাক্কা লাগতেই যেমন গেট খুলে গেল তেমনই কান ফাটিয়ে সাইরেন বেজে উঠল। গ্যাব্রিয়েলা আতঙ্কিত গলায় বললেন, এখনই পুলিশ চলে আসবে। ওা বার্গলার অ্যালার্ম লাগিয়ে গিয়েছে।

গাড়ি তখন রাস্তায় পড়ে তীব্রভাবে ছুটছে। মেজর বললেন, নিজেরা মাফিয়া গুণ্ডা হয়ে গেট অ্যালার্ম লাগিয়েছে। চলো, সোজা থানায় গিয়ে রিপোর্ট করি। ওরা কিছুটা এগিয়ে যেতেই পুলিশের গাড়ি আসতে দেখল পরপর দুটো। ওদের পাশ কাটিয়ে গাড়িদুটো বেরিয়ে গেল।

অর্জুন জিজ্ঞেস করল, আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে আছে?

নিশ্চয়ই। কিন্তু কেন? মেজর তাকালেন।

আমি আর সিম্বা নেমে যাচ্ছি। যারা আমাদের খোঁজ করছে তারা নিশ্চয়ই জানে সিম্বা আমাদের গাড়ি চালিয়ে এখানে এনেছে। আমরা যে চারজন আছি তাও নিশ্চয়ই ওদের জানা হয়ে গিয়েছে। তাই আপনি আর গ্যাব্রিয়েলা সোজা নিউ ইয়র্ক চলে যান।

অসম্ভব! তোমরা এখানে পড়ে থাকবে আর আমি চলে যাব, এ হতে পারে না। মেজর গ্যাব্রিয়েলার দিকে তাকালেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে আছে? বাঃ, বেশ। আপনি চালান, সিম্বা আপনার সঙ্গে চলে যাক। বাঁ দিকে গাড়ি দাঁড় করাও।

সিম্বা গাড়ি থামাতে মেজর নেমে পড়লেন, কুইক অর্জুন। গ্যাব্রিয়েলা, আপনি সামনে এসে স্টিয়ারিং-এ বসুন।

গ্যাব্রিয়েলা দরজা খুলে এগিয়ে আসতেই সিম্বা আসন পরিবর্তন করতে করতে বলল, তোমরা ফিরবে কী করে?

মেজর বললেন, আমাদের নিয়ে ভেবো না। যদি পারো রাস্তা থেকে ফোনে তোমার বাবাকে বোলো, অচেনা কোনও লোকের সঙ্গে আমাদের ব্যাপারে কথা না বলতে। উইশ ইউ হ্যাপি রিটার্ন।

গাড়িটা বেরিয়ে গেল। মেজর বললেন, এইজন্যে এ-দেশের মেয়েদের আমার ভাল লাগে। যে-কোনও বিপদের সামনে ওরা সাহস করে দাঁড়াতে পারে।

সামনেই একটা রেস্টুরেন্ট। পাশে পেট্রল পাম্প। অর্জুন লক্ষ করেছে এখানকার পাম্পের গায়ে দাম লিখে বোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়। পাম্পের শোরুমে রুটি থেকে সিগারেট সবকিছু পাওয়া যায়।

ওরা রেস্টুরেন্টে ঢুকল। এখন বিকেল হয়ে গিয়েছে। অবশ্য এখানে রাত নামে অনেক দেরিতে। দরজার পাশেই টেলিফোন বুথ। অর্জুন মেজরকে বলল, টু ওয়ান টু ফাইভ জিরো ফাইভ টু নাম্বারটা ধরে দেবেন?

কার নাম্বার? মেজর চোখ ছোট করলেন।

নাম্বার কার তা আমি জানি না। গ্যাব্রিয়েলা বললে মারা যাওয়ার আগে ওই নাম্বার জিম তাকে বলেছে পুলিশকে দিতে।

ও হ্যাঁ, হ্যাঁ। তোমার তো বেশ স্মরণশক্তি, আমার মনেই ছিল না। এটা লং ডিসট্যান্স কল হবে। মেজর টেলিফোন তুললেন।

আমেরিকার পাবলিক টেলিফোনের সিস্টেম খুব মজার। পকেটে কার্ড থাকলে সাধারণ একটা বুথ থেকে পৃথিবীর যে-কোনও প্রান্তে ফোন করা যায়। কিন্তু ওটা না থাকলে বিপদ। নিউ ইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলিস ফোনে কথা বলতে গেলে কোয়ার্টার দিতে দিতে প্রাণ বেরিয়ে যাবে। পঁচিশ সেন্টে ভারতীয় সিকির মতো ওদের কোয়াটার হয়। অত কোয়াটার কেউ পকেটে রাখে না। ফলে কার্ড ছাড়া ফোন করা ঝকমারি।

মেজর বললেন, কুইক, রিং হচ্ছে।

অর্জুন এগিয়ে গিয়ে রিসিভার তুলল। ওপাশ থেকে কেউ সেই মুহূর্তে গম্ভীর গলায় বলল, হেলো? কে বলছ?

বস-এর সঙ্গে কথা বলতে চাই।

কে বলছ। তোমার নাম এবং কোড নাম্বার বলো।

আমি জিমের বন্ধু, আমার কোড নাম্বার হল সাপের লকেট।

কয়েক সেকেন্ড চুপচাপ, তারপর প্রশ্ন ছুটে এল, কে?

একটু আগে পরিচয় দিয়েছি বস।

কোত্থেকে বলছ?

সেটা বলা যাবে না। আপনি জিমকে খুন করলেন কেন? ও তো কোনও অন্যায় করেনি। আপনার দলের লোকের ওপর এমন অকারণে অত্যাচার করলে ওরা তো আপনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে।

তুমি কে?

আমি সেই সাপের মালিক, যে সাপ আপনাকে ধ্বংস করতে পারে। শুনুন, গাড়িটা ফিরে যাচ্ছে নিউ ইয়র্কে। আপনার লোকজনকে এখনই নির্দেশ দিন যাতে কেউ ওদের ক্ষতি করতে না পারে।

কোন গাড়ি?

দেখুন, আমি আর কথা বাড়াচ্ছি না। শুধু দেখতে চাই হাইওয়েতে কোনও অ্যাকসিডেন্ট হচ্ছে না। রিসিভার নামিয়ে রাখতেই অর্জুন দেখল একটা পুলিশের গাড়ি সামনে এসে দাঁড়াল। গাড়ি থেকে নামল দুটো বিশাল চেহারার পুলিশ। দুজনেই কালো। অর্জুন দ্রুত মেজরকে নিয়ে একটা থামের আড়ালে চলে যেতে পুলিশ দুটো এগিয়ে এল।