২৬. পরিশিষ্ট / সহায়ক গ্রন্থ

পরিশিষ্ট ১

মিশরের ইতিহাসের সময়পঞ্জি

image226.jpg

পরিশিষ্ট ২

আধুিনক মিশরের ম্যাপ

image227.jpg

পরিশিষ্ট ৩

মিশরীয় দেবদেবী

image228.jpg

আতুম: প্রথম দেবতা। যিনি সৃষ্টি করেছেন সব কিছুকে।

image229.jpg

তেফনুত: আর্দ্রতার দেবী। তেফনুতের শরীর মানবীর হলেও মাথা সিংহীর।

image230.jpg

শু: তেফনুতের স্বামী, নুত আর গেবের বাবা। তেফনুত আর শু-ই প্রথম দেবদেবী, যাঁদের জন্ম দেন আতুম। শু আলো আর বাতাসের দেবতা।নুত- দেবতা ওসাইরিস, আইসিস, সেথ আর নেফথিসের মা। নুতের লম্বা শরীর আকাশের মতো পৃথিবীকে ঘিরে থাকে। প্রতিদিন সকালে নুত সূর্যের জন্ম দেন, আবার সন্ধেবেলায় গিলে নেন। কফিনে, কবরের ছাদে বা মন্দিরের সিলিংয়ে আঁকা থাকত নুতের ছবি। গেব- গেব নুতের ভাই, আবার স্বামীও। গেব পৃথিবীর দেবতা। মানুষ মারা গেলে গেব তাকে তাঁর শরীরে স্থান দেন।

image231.jpg

আমুন: অন্য আরও নাম- আমেন, আমন। মিশরের থেবস শহরের প্রধান দেবতা। একসময় এঁর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় সূর্যের দেবতা রা-কে। নতুন নাম হয় আমুন-রা। আমুনের দেহ মানুষের হলেও কখনো কখনো পাহাড়ি ভেড়া বা রাজহাঁসেরও রূপ ধারণ করেন। আমুন কথার মানেই হল যা লুকোনো, ছদ্মবেশী। আমুনের কাল্ট পরে ছড়িয়ে পড়ে ইথিওপিয়া, লিবিয়া, নুবিয়া, প্যালেস্তিনে। গ্রিকরা আতুমকে দেবতা জিউসের সঙ্গে তুলনা করত।

image232.jpg

আনুবিস: শেয়ালদেবতা৷ বাবা সেথ, মা নেফথিস। মামিফিকেশনের দেবতা। আনুবিসই প্রথম মমি তৈরি করেন। সেই মমি ছিল দেবতা ওসাইরিসের। মৃতের আত্মার বিচারের সময়ও সেখানে আনুবিস থাকেন।

image233.jpg

রা: সূর্যদেবতা৷ মাথাটা বাজপাখির, মুকুটে সূর্য আর একটা সাপ থাকে। রাতের বেলায় রা যখন মাটির নীচে যাত্রা করেন তখন তাঁর মাথাটা হয়ে যায় ভেড়ার। রা-এর সঙ্গে অনেক দেবতাকে মিশিয়ে দেওয়া হয় পরে। যেমন আমুনের সঙ্গে মিশে আমুন-রা, দেবতা মন্টুর সঙ্গে মিশে মন্টু-রা, আবার দেবতা হোরাসের সঙ্গে মিশে রা-হোরাখতি। মনে করা হত সব ফারাওরাই রা- এর সন্তান। হেলিওপলিসে ছিল এঁর মন্দির।

image234.jpg

বাস্তেত: এঁর মাথাটা বিড়ালের। সুখ, আনন্দের দেবী। বাস্তেতের মন্দির ছিল বুবাস্তিস নামের এক শহরে। সেই শহরে বিড়ালের পুজো হত। তারা মারা গেলে তাদের মমি করে রাখার চল ছিল।

image235.jpg

বেস: অন্যান্য দেবদেবীর থেকে একদম আলাদা বেস। বেঁটে, অদ্ভুত রকমের দেখতে, জিভ বেরিয়ে আছে বাইরে। ইনি ভালো সময়ের দেবতা। আবার প্রসবের সময় হবু মায়েদের রক্ষা করতেন বেস।

image236.jpg

হাপি: নীল নদের বানে যে পলি পড়ত তার দেবতা হাপি। উর্বরতার দেবতা। হাপির একটা বড়ো ভুঁড়ি আছে। পুরুষ হলেও স্তন বড়ো। হাপির মাথার মুকুট জলজ উদ্ভিদ দিয়ে বানানো। হাপির মন্দির ছিল আসওয়ানে।

image237.jpg

আইসিস: ওসাইরিসের স্ত্রী, হোরাসের মা। মৃত ওসাইরিসকে নতুন জীবন দিয়েছিলেন আইসিস, তাই তিনি ডাক্তারির দেবী। আইসিসের মুকুটে একটা সিংহাসন থাকে। আইসিসের সবচেয়ে বড়ো মন্দির ছিল ফিলিতে। লন্ডনেও রোমান সাম্রাজ্যের সময়কার আইসিসের একটা মন্দির পাওয়া গেছে।

image238.jpg

ওসাইরিস: প্রথম দেবতা যাঁর মমি তৈরি হয়েছিল। মাটির নীচের জগতের রক্ষাকর্তা ইনি। এঁর শরীরের গঠনও মমির মতো। ইনি চাষবাসেরও দেবতা। ওসাইরিসের সবচেয়ে বড়ো মন্দির ছিল অ্যাবিদসে।

image239.jpg

সেথ: অন্য নাম- সেত, সেতেখ, সুতি, সুতেখ। দেবতা ওসাইরিসের ভাই। ইনি ওসাইরিসকে খুন করেন। এঁর সঙ্গেই পরে সিংহাসনের অধিকার নিয়ে লড়াই হয় হোরাসের। এঁর শরীরটা মানুষের হলেও মাথাটা এক অদ্ভুত দর্শন প্রাণীর। সেথ দেবতা রা-এর সঙ্গে থাকেন। বাজে আবহাওয়া আর ঝড়ের জন্য দায়ী ইনি।

image240.jpg

নেফথিস: গেব আর নুতের সন্তান, দেবতা সেথের স্ত্রী। মৃত আত্মাকে রক্ষা করেন নেফথিস। তাই মমির কফিনে নেফথিসের ছবি থাকত, যেখানে দুটো হাত পাখির ডানার মতো।

image241.jpg

হাথোর: দেবতা রা-এর মেয়ে। দেবতা হোরাসের স্ত্রী। প্রেম, সৌন্দর্য, আনন্দ, সংগীতের দেবী। হাথোরের তিনটে রূপ। গোরুর মতো, নারীর শরীর যার কান দুটো গোরুর আর নারী যার মুকুটে গরুর শিং আছে। হাথোরের সবচেয়ে বড়ো মন্দির ছিল দেনদারাতে। কূট মানবজাতিকে শাস্তি দেওয়ার জন্য দেবতা রা একবার হাথোরকে পৃথিবীতে পাঠান। হাথোর উন্মত্ত অবস্থায় নির্বিচারে মানুষ মারতে থাকেন। শেষে মদ খাইয়ে নেশাতুর করে তাঁকে শান্ত করা হয়।

image242.jpg

হোরাস: ওসাইরিস এবং আইসিসের সন্তান। এঁর মাথাটা বাজপাখির। ফারাওদের রক্ষাকর্তা হলেন হোরাস। হোরাসের সবচেয়ে বড়ো মন্দির ছিল এডফুতে।

image243.jpg

খুম: সেই দেবতা যিনি নীল নদ তৈরি করেছিলেন। এঁর শরীরটা মানুষের হলেও মাথাটা মেষের। খরার সময় মিশরীয়রা খুমের পুজো করত।

image244.jpg

খনসু: অন্য নাম- খেনসু, খনস, খুনস। চাঁদের দেবতা। এঁর মাথাটা ছিল বাজপাখির, মুকুটে থাকত একফালি চাঁদ আর পূর্ণিমার চাঁদ। শয়তান আত্মাদের দেবতা খনসু দূর করতেন। রাজা দ্বিতীয় রামেসিস তাঁর বন্ধু এক সিরিয়ান রাজার কাছে খুনসুর মুর্তি পাঠান, সেই রাজার অসুস্থ মেয়ের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে। কার্নাকে ছিল এঁর মন্দির।

image245.jpg

মাত: ন্যায় এবং বিচারের দেবী। জগতের ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব ছিল মাতের ওপরে। মৃত্যুর পরে আত্মার বিচারও করতেন মাত।

image246.jpg

মন্টু: যুদ্ধের দেবতা। এঁর আশীর্বাদেই নাকি সমগ্র মিশরকে এক রাজত্বের ছাতার তলায় আনতে পেরেছিলেন ফারাওরা।

image247.jpg

মুত: দেবতা রা-এর কন্যা, আমুনের স্ত্রী। মায়ের মতো ইনি ফারাওদের রক্ষা করতেন। এঁর মুকুটে একটা শকুন থাকত।

image248.jpg

তাহ: কারিগরি বিদ্যার দেবতা। আবার কোনো কোনো পুরাণে বলা আছে ইনি নাকি পৃথিবীর সৃষ্টিও করেছিলেন। তাহ-এর শরীরটা মমির মতো, মাথা মোড়ানো। মেমফিসে তাহ-এর মন্দির ছিল।

image249.jpg

সোবেক: কুমিরের মাথাওয়ালা দেবতা। মুকুটে একজোড়া শিং-এর সঙ্গে থাকত একজোড়া পালক৷ কোম ওম্বোতে ছিল এঁর মন্দির। সেখানে কুমিরের মমি বানিয়ে রাখা হত। এখনও সেই মমি দেখতে পাওয়া যায়।

image250.jpg

থথ: বিদ্যা আর জ্ঞানের দেবতা। শরীরটা মানুষের হলেও মাথাটা আইবিস পাখির মতো। কখনো আবার বেবুনের রূপও ধারণ করেন। ইনিই নাকি হায়রোগ্লিফিক হরফ সৃষ্টি করেন। গ্রিকরা এঁকে দেবতা হারমিসের সঙ্গে তুলনা করত৷ মৃতের আত্মার বিচারের সময় থথ পাপ পুণ্যের হিসেব লিখে রাখেন। এঁর মন্দির ছিল হারমোপলিসে।

image251.jpg

আতেন: এই দেবতার কোনো মানুষ বা পশুর রূপ নেই। আতেনের প্রতীক একটা গোল চাকতি, সূর্য। ফারাও চতুর্থ আমেনহোতেপ আতেনের পুজো শুরু করেন। তখন তিনি নিজের নাম বদলে রাখেন আখেনাতেন। 

image252.jpg

নেইথ: অন্য নাম- নিত, নেত। শিকার আর যুদ্ধের দেবী। মিশরের দক্ষিণে নীল নদের পশ্চিম পাড়ে ছিল এই দেবীর মন্দির।

image253.jpg

সেখমেত: অন্য নাম- সাখমেত, সাকমিস, সাখেত। যুদ্ধ আর শুশ্রূষার দেবী। যুদ্ধের সময় ইনি ফারাওদের রক্ষা করতেন। সেখমেতের মাথাটা ছিল সিংহীর। এঁর শ্বাস থেকেই নাকি মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছিল।

image254.jpg

 তাওয়ারেত: উর্বরতার দেবী। মেয়েরা সন্তান লাভের আশায় এঁর পুজো করত। এঁর গোটা শরীরটা জলহস্তীর মতো হলেও পিঠটা কুমিরের।

image255.jpg

সেশাত: বুদ্ধি, জ্ঞানের দেবী। ইনি প্যাপিরাসের ওপরে সময়ের ইতিহাস লিখে রাখেন। এঁর পুজো মন্দিরে হত না, হত লাইব্রেরিতে।

সহায়ক গ্রন্থতালিকা

1. Joyce Tyldesley.

Egypt, How a Lost Civilization was Rediscovered, 

BBC Books, 2005.

2. TGH James.

An Introduction to Ancient Egypt.

British Museum Publications Limited, 1979

3. Bill Manley.

Egyptian Hieroglyphs for Complete Beginners.

Thames and Hudson, 2012.

4. Mark Collier, Bill Manley

How to Read Egyptian Hieroglyphs.

British Museum Press, 1998.

5. Ahmed M Abul Ella

By Way of Accident.

Self published, Printed in Great Britain by Amazon, 2014.

6. Joyce Tyldesley.

The Penguin Book of Myths and Legends of Ancient Egypt.

Penguin books, 2011.

7. National Geographic History Magazines.

Jan-Feb 2016

July-Aug 2017

Nov-Dec 2017

8. Editor- Dale M Brown.

Egypt: Land of The Pharaohs.

Time-Life Books, 1992.

9. Joyce Tyldesley.

The Pharaohs.

Quercus Books, 2009.

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *