১০. রোসেটার পাথর

রোসেটার পাথর

আগের উইকএন্ডে বাড়ি গিয়েছিলাম। সোমবার তেমন কোনো ভালো ক্লাস ছিল না। তাই সেদিনও দিনের বেলাটা বাড়িতে কাটিয়ে সন্ধেবেলায় যখন হোস্টেলের ঘরে ঢুকলাম দেখি ভবেশদা পিজির সঙ্গে বসে চা আর তেলেভাজা খাচ্ছেন। পিজি আমাকে দেখেই বলল,

‘এই দেখ, একদম ঠিক টাইমে এসে গেছিস, ভবেশদা গরমাগরম বেগুনি নিয়ে এসেছেন। ঝটপট বসে পড়।’

তেলেভাজা আবার ছাড়া যায় নাকি! আমি প্রায় ঝাঁপিয়েই পড়তে যাচ্ছিলাম আর তখনই ভবেশদা বললেন,

‘টি-শার্টটা তো বেশ। কোথা থেকে জোগাড় করলে এটা?’

‘মামা ইজিপ্টে বেড়াতে গিয়েছিল বলেছিলাম না? ওখান থেকে এনে দিয়েছে।’

গোলগলা টি-শার্টটাতে সাদার ওপরে কালো দিয়ে হায়রোগ্লিফিক অক্ষর প্রিন্ট করা ছিল। আমাদের চলমান মিশরীয় এনসাইক্লোপিডিয়ার চোখ এড়ায়নি সেটা। ভবেশদা আমাকে দাঁড় করিয়ে টি-শার্টটার ওপরে ঝুঁকে এলেন। মিনিটখানেক খুঁটিয়ে দেখার পরে বললেন,

‘ধুস, তোমার মামাকে বেকার জিনিস গছিয়েছে। হায়রোগ্লিফিক অক্ষর আছে। কিন্তু এলোমেলো। এগুলোর কোনো মানে নেই।’

পিছন থেকে পিজি বলল,

‘আপনি হায়রোগ্লিফ পড়তে পারেন?’

‘হুঁ, খুব সামান্য। হায়রোগ্লিফ পড়া কি অত সহজ হে, পিজি ভাই। এর রহস্য উদ্ধার করার জন্য কত মানুষ কত রাত জেগেছে জানো?’

‘হ্যাঁ, শুনেছিলাম খুব কঠিন ভাষা নাকি এটা।’

‘হ্যাঁ, সত্যি খুব কঠিন। সেকথায় পরে আসছি। আগে যে লোকটার জন্য শুধু হায়রোগ্লিফ না, গোটা মিশর দেশটাকেই পৃথিবীর মানুষ চিনল, তার কথা বলি। কয়েকটা হিন্টস দি তোমাদেরকে, দেখি পারো কি না।

‘লোকটার হাইট ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি, যুদ্ধবাজ, প্রায় গোটা ইউরোপ দখল করে ফেলেছিলেন, কিন্তু বেড়ালকে ভয় পেতেন, সত্যজিৎ রায় যে লিজঁ দি অঁর পেয়েছিলেন সেটা ইনি চালু করেছিলেন।’

আমরা দু-জনেই মাথা চুলকোলাম একটু, ভবেশদা এবারে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,

‘তোমাদের দেখলে মাঝে মাঝে মনে হয় উলুবনে মুক্তো ছড়াচ্ছি। ওকে, আরও দুটো শব্দ বলছি, দেখ পার কি না এবারে। ওয়াটারলু, সেন্ট হেলেনা।’

‘নেপোলিয়ন বোনাপার্টে!’

image95.jpg

‘এই তো হয়েছে এবারে। স্কুলের ইতিহাস বইয়ের বাইরে আর কোনোদিন কিছু পড়নি বুঝতেই পারি।’

ভবেশদার কথা গায়ে মাখলে চলে না, আমি বললাম,

‘কিন্তু নেপোলিয়নের সঙ্গে ইজিপ্টের কী সম্পর্ক?’

‘ওই লোকটাই তো সব কিছুর উৎস!’

‘মানে?’

‘গুছিয়ে বলি, শোনো। সালটা ১৭৯৮, নেপোলিয়ন তখন ফ্রেঞ্চ অ্যাডমিরাল জেনারেল। হঠাৎ করে ওঁর মাথায় একটা ইচ্ছা চাপল। আলেকজান্ডার ছিল ওঁর ছোটোবেলাকার হিরো। সেই আলেকজান্ডারের পথ অনুসরণ করবেন। ইজিপ্ট দখল করতে হবে।’

‘আচ্ছা, এই হল নেপোলিয়নের মিশরে আসার কারণ।’

‘এইটা ছাড়াও আরেকটা কারণ ছিল যদিও। নেপোলিয়নের ফন্দি ছিল ইজিপ্ট দখল করে সুয়েজের মধ্যে দিয়ে ক্যানাল বানিয়ে রেড সি-তে এসে পড়া। সেখান থেকে আরব সাগরের পথ ধরে এশিয়ার একটা দেশে আসা।’

‘কোন দেশ?’

‘যে দেশে এখন আমরা বসে আছি।’

‘বলেন কী! নেপোলিয়ন ভারতে আসার চেষ্টা করেছিলেন?! কিন্তু কেন?’

‘কারণটা খুব সহজ। ভারত তখন ব্রিটিশদের অধীনে। নেপোলিয়নের লক্ষ্য ছিল দেশের এক রাজার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ব্রিটিশদের ভারত থেকে উৎখাত করা। এতে ব্রিটিশদের শক্তি কমত। ইউরোপেও ওদের হারানো সহজ হয়ে যেত। এবারে, দেশের কোন রাজার সঙ্গে নেপোলিয়ন হাত মেলাবার কথা ভেবেছিলেন সেটা দেখো পিজি ভাই কেমন চট করে বলে দেবে।’

ভবেশদা এবারে পিজির দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘তোমাদের ছোটোবেলায় দূরদর্শনে এঁকে নিয়ে খুব বিখ্যাত একটা সিরিয়াল হয়েছিল। এঁর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সঞ্জয় খান। একবার সেটে আগুন লাগার জন্য এর শুটিং তিন বছর পিছিয়ে গিয়েছিল।’

‘হেঁ হেঁ, বুঝে গেছি, টিপু সুলতান।’

‘ওই দেখো, বল কোর্টে পড়ার সঙ্গেসঙ্গে ফোরহ্যান্ড স্ম্যাশ মেরেছে ছেলে। টিপু সুলতানকে নেপোলিয়ন নাকি চিঠিও পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠির কী হয়েছিল সেটা আজও কেউ জানে না। তো যাই হোক, আগের কথায় ফিরে আসি।’

‘হ্যাঁ, নেপোলিয়নের ইজিপ্টে আসা।’

‘ঠিক, পয়লা জুলাই, ১৭৯৮-এ কয়েকশো রণতরীতে চল্লিশ হাজার সৈন্য নিয়ে নেপোলিয়ন ইজিপ্টের উত্তরদিকে আলেকজান্দ্রিয়ার উপকূলে পৌঁছোলেন। আলেকজান্দ্রিয়ার শহর দখল করার পরে ফ্রেঞ্চ আর্মি ধীরে ধীরে কায়রোর দিকে এগোতে লাগল। বিখ্যাত গিজার যুদ্ধে তারা সেই সময়ের শাসক মামলুকদের হারিয়ে কায়রোর দখলও নিল, যাকে এখন বলে ব্যাটেল অফ দ্য পিরামিডস। ২১ জুলাই কায়রো ফ্রেঞ্চদের হাতে এল। কিন্তু নেপোলিয়নের গোটা ইজিপ্ট দখল করার স্বপ্ন সত্যি হয়নি। মরুভূমির প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই অনেক সৈন্যর মৃত্যু হয়। অনেকে মারা যায় পেট খারাপে আর প্লেগে। অন্যদিকে ব্রিটিশ সৈন্যরাও চলে আসে ইজিপ্টে। খুফুর পিরামিডের গল্প বলার সময় অ্যাডমিরাল নেলসনের কথা বলেছিলাম, মনে আছে?’

‘হ্যাঁ, ক্রিকেটে ১১১ যাঁর নামে।’

image96.jpg

নেপোলিয়নের মিশরে আসার পথ

‘কারেক্ট, এই অ্যাডমিরাল নেলসনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ন্যাভাল ফোর্স ফ্রেঞ্চদের প্রায় সবকটা রণতরী ধ্বংস করে ফেলে। ১৮০১ সালে ফ্রেঞ্চরা হার মানে ব্রিটিশদের কাছে। নেপোলিয়ন যদিও তার অনেক আগেই ফ্রান্সে পালিয়ে এসেছিলেন। ব্রিটিশদের জাহাজে করেই শেষমেষ ফ্রান্সে ফেরে মাত্র ১০০০ জন সৈন্য। নেপোলিয়নের আর সুয়েজ খাল কেটে ভারতে পৌঁছোনো হয়নি। সেটা হলে আমাদের ইতিহাসটা অন্যরকম হত।’

‘কিন্তু আপনি বলেছিলেন নেপোলিয়নের জন্যই পৃথিবীর মানুষ প্রাচীন মিশরকে চিনেছিল। সেরকম তো কিছু পেলাম না এতে।’

‘সেই কথাতেই আসছি এবারে, নেপোলিয়ন তো শুধু সৈন্যসামন্ত নিয়েই ইজিপ্টে আসেননি। ওঁর সঙ্গেই এসেছিল ১৬৭ জন স্কলার। তাদের মধ্যে ছিল ইঞ্জিনিয়ার, সার্ভেয়র, ডাক্তার, বোটানিস্ট, আর্কিয়োলজিস্ট, ইন্টারপ্রিটার, কেমিস্ট, জুলজিস্টরা। এদের কাজ ছিল মিশরের মাটিতে যা কিছু পাওয়া যাবে সেগুলোর পরীক্ষা করা, এক জায়গাতে নোট করা। আর তাদের হস্তগত করা দেশের জন্য। এরা মিশর থেকে অজস্র মূর্তি, প্রত্নসামগ্রী আর প্যাপিরাস নিয়ে দেশে ফেরে, যেগুলো ফ্রান্সে সাড়া ফেলে দেয়। সবার তখন এই অদ্ভুত দেশটা নিয়ে আগ্রহ, যেখানে নাকি বিশাল উঁচু পিরামিড আছে, অদ্ভুত দেখতে স্ফিংস আছে আর আছে মমি! মৃত মানুষের শরীরকে নাকি ওরা বাঁচিয়ে রাখে! ফ্রান্সের সবকটা বড়ো খবরের কাগজে এগুলো প্রথম পাতায় চলে আসে। সেখান থেকে বাকি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়তে আর সময় লাগেনি। মানুষ সেই প্রথম চিনল অনেক দূরের একটা দেশকে। দেশে ফিরে আসার পরে এই স্কলাররাই একটা বিশাল বই প্রকাশ করেন। নাম দেস্ক্রিপশন দি ইজিপ্তে । ন-টা ভলিউমের টেক্সট, আবার এগােরাটা ভলিউম শুধু ছবির জন্য! মিশর দেশটার হেন কোনো জিনিস নেই যা এর মধ্যে ছিল না। তবে সবারই একটা জায়গাতে গিয়ে মুশকিল হল।’

‘সেটা কী?’

ভবেশদা কচরমচর করে বেগুনি চিবোতে চিবোতে বললেন,

‘যা কিছু পাওয়া গেছিল মিশরে তার সবেতেই একটা অদ্ভুত লিপিতে লেখা। অন্য সবরকম লিপির থেকে একদম আলাদা। ছোটো ছোটো ছবি ওপর থেকে নীচেতে নয়তো পাশাপাশি আঁকা। সাপ, পালক,পাখি, সূর্য… কেউ কিচ্ছু বুঝতে পারছিল না এর মানে। আবার এর অর্থ উদ্ধার না করা গেলে তো দেশটার ইতিহাসই অধরা থেকে যাবে!’

‘বুঝেছি, হায়রোগ্লিফের কথা বলছেন।’

‘হুম, হায়রোগ্লিফ শব্দটা হল গ্রিক, যার মানে খোদাই করা পবিত্র অক্ষর। মিশরের খুব হাতে-গোনা কয়েকজনই এই লিপির ব্যবহার জানতেন। তাঁরদের মধ্যে প্রায় সবাই ছিলেন পুরোহিত। এঁরা আর কাউকে এই বিদ্যা শেখাতেন না। তাই ফারাওদের যুগ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হায়রোগ্লিফ জানা মানুষও একসময় পৃথিবী থেকে হারিয়ে যায়। হায়রোগ্লিফ একটা লিপি যার সঙ্গে আশেপাশের আর কিচ্ছুর মিল নেই। সাধারণত কোনো নতুন লিপি উদ্ধার করার সময় তার কাছকাছি থাকা অন্য কোনো লিপির সাহায্য নেওয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কিছুই পাওয়া যাচ্ছিল না। আর এইখানেই একটা বড়ো আবিষ্কারের কথা লুকিয়ে আছে। একটা কালো পাথরের টুকরো।’

‘পাথর?!’

‘হ্যাঁ। রোসেটা স্টোনের নাম শুনেছ?’

‘না তো।’

‘তাহলে সেই গল্পটা ঝট করে বলে দিই, সালটা ১৭৯৯, ব্রিটিশ ন্যাভাল আর্মি তখন ফ্রেঞ্চদের চারিদিক থেকে ঘিরে ধরছে। তাই ফ্রেঞ্চরা চেষ্টা করল সমুদ্রের উপকূলগুলোতে নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করতে। রোসেটা হল এমনই একটা জায়গা, নীল নদ যেখানে ভূমধ্যসাগরে এসে মিশেছে সেখানকার একটা পুরোনো পরিত্যক্ত শহর। ফ্রেঞ্চ অফিসার জ্যাভিয়ার পকার্ডের ওপরে দায়িত্ব পড়ল এই রোসেটাতে একটা আর্মি বেস তৈরি করার। ওখানে মামলুকদের আমলের একটা ভেঙে-পড়া প্রাসাদ ছিল, সেটাকেই সারিয়ে নিয়ে একটা আর্মি ব্যারাক আর ওয়াচ টাওয়ার বানাতে আরম্ভ করলেন পকার্ড। কাজ ভালোই চলছিল। কিন্তু ১৯ জুলাই একজন ফ্রেঞ্চ সৈন্য সেই ভাঙা প্রাসাদের ভেতরে দেখতে পেল একটা মাঝারি মাপের পাথরের চাঁই যার ওপরের আর নীচের দিকটা ভাঙা। সঙ্গেসঙ্গে খবর গেল পকার্ডের কাছে। পকার্ড একনজরে পাথরটাকে দেখেই বুঝেছিলেন এর গুরুত্ব। চকচকে মসৃণ কালো রং, লম্বায় তিন ফুট, প্রস্থে দু-ফুট, আর প্রায় দশ ইঞ্চি মোটা বেশ ভারী পাথর। তার গায়ে খোদাই করা তিনরকমের লিপি। একটা হায়রোগ্লিফ, একটা ডিমোটিক, যে ভাষা দেশের সাধারণ মানুষ ব্যবহার করত। আরেকটা হল গ্রিক।’

‘গ্রিক!’

‘হ্যাঁ, এতে অবাক হওয়ার তো কিছু নেই। গ্রিকরা বেশ কয়েকশো বছর রাজত্ব করেছিল মিশরে। তবে তাদের সময়কার কোনো লেখা এতদিন পাওয়া যায়নি। এই প্রথম এমন কিছু পাওয়া গেল যেখানে হায়রোগ্লিফের লিপিগুলোকে গ্রিক লিপির সঙ্গে মেলানো যাবে! পকার্ড সঙ্গেসঙ্গে খবর পাঠিয়ে দিলেন ফ্রান্সে। সেখানকার খবরের কাগজগুলোতে বড়ো করে বেরোল রোসেটা স্টোনের কথা। সবাই এবারে আশায় বুক বাঁধল। এবারে দুর্বোধ্য হায়রোগ্লিফের মানে উদ্ধার করা যাবে!’

‘দাঁড়ান, দাঁড়ান!’

শেষ কয়েক মিনিট দেখছিলাম পিজি মোবাইলে কী-একটা দেখছে। মোবাইলটা এবারে আমার হাতে দিতে দিতে বলল,

‘এই দেখ, রোসেটা স্টোন কেমন দেখতে। কিন্তু ভবেশদা, এখানে তো বলছে যে পাথরটা এখন আছে লন্ডনে, ব্রিটিশ মিউজিয়ামে!’

image97.jpg

ফ্রান্সের শাম্পোলিয়ন ও ইংল্যান্ডের ডা থমাস ইয়ং যাঁরা হায়রোগ্লিফের পাঠোদ্ধার করেন

‘হ্যাঁ, তাই তো।’

‘কিন্তু আপনি যে বললেন…’

‘ফ্রেঞ্চদের হাত থেকে ব্রিটিশদের কাছে কী করে এল তাই ভাবছ তো? এটাও একটা মজার গল্প, একটু আগেই বললাম যুদ্ধে হেরে গিয়ে ফ্রেঞ্চদের ব্রিটিশ জাহাজে করেই দেশে ফিরতে হয়েছিল। তো, এই জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন জেনারেল হাচিনসন। ইনি একটা অদ্ভুত জেদ করে বসেন। তাঁরর হাতে পাথরটা দিয়ে তবেই ফ্রেঞ্চরা জাহাজে উঠতে পারবে। তার আগে নয়। হাচিনসনের বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না এই পাথরটার ব্যাপারে। শুধুমাত্র চকচকে কালো রঙের জন্য ইনি প্রায় জোর করেই রোসেটা স্টোনকে কেড়ে নেন ফ্রেঞ্চদের কাছ থেকে। তাই এই পাথরের ঠাঁই হয় ইংল্যান্ডে। ইজিপশিয়ান ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যান্টিকুইটি এখন অনেক চেষ্টা চালাচ্ছে পাথরটাকে মিশরে ফেরত আনার। কিন্তু মিউজিয়াম কৰ্তৃপক্ষ একটা অদ্ভুত যুক্তি খাড়া করেছে। পাথরটাকে ওরা মিশরের মাটিতে পায়নি, পেয়েছে ফ্রেঞ্চ সৈন্যদের হাত থেকে। তাই মিশরে ওটাকে ফেরত পাঠাবার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।’

‘ঠিক এমনটাই আমাদের কোহিনুরের সঙ্গেও হয়েছে, তাই না?’

‘একদম তাই, কোহিনুরের মতোই রোসেটা স্টোনও তার উৎসে কোনোদিন ফিরতে পারবে বলে মনে হয় না।’

‘তাহলে এই পাথর থেকে হায়রোগ্লিফের রহস্যের সমাধান হয়েছিল কি?’

‘সেটা হয়েছিল, কিন্তু তাতে লেগেছিল আরও তেইশ বছর! আর যে লোকটা হায়রোগ্লিফের মানে উদ্ধার করেছিলেন তিনি কোনোদিন পাথরটাকে নিজের চোখে দেখার সুযোগও পাননি!’

‘বলেন কী?!’

‘হ্যাঁ ভাই। ইতিহাস বার বার আমাদের অবাক করে, তাই না!’

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *