১৫. সাইদুর রহমান সাহেব

১৫

সাইদুর রহমান সাহেব অবাক হয়ে বললেন, ‘আপনার কী হয়েছে।’

মিসির আলি বললেন, ‘শরীরটা খারাপ স্যার।’

‘শরীর তো আপনার সবসময়ই খারাপ। এর বাইরে কিছু হয়েছে কি না বলেন। আপনাকে হ্যাগার্ডের মতো দেখাচ্ছে!’

‘গত পরশু রাতে কে যেন তালা ভেঙে আমার ঘরে ঢুকে জিনিসপত্র ভেঙেচুরে তছনছ করেছে।’

‘আপনি বাসায় ছিলেন না?’

‘আমি তো স্যার প্রথমেই আপনাকে বলেছি তালা ভেঙে ঢুকেছে। কাজেই আমার ঘরে থাকার প্রশ্ন ওঠে না।’

সাইদুর রহমান সাহেব গম্ভীর হয়ে গেলেন।

মিসির আলি বললেন, ‘আমি ছুটির অ্যাপ্লিকেশন দিয়েছি। দিন দশেকের ছুটির আমার খুব দরকার।’

সাইদুর রহমান সাহেব মুহূর্তের মধ্যে গম্ভীর হয়ে গেলেন। ঠাণ্ডা গলায় বললেন, ‘ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস—ট্রাস তো এমনিতেও হয় না। এর মধ্যে আপনারা ছুটি নিলে তো অচল অবস্থা। এর চেয়ে আসুন, সবাই মিলে ইউনিভার্সিটি তালাবন্ধ করে চলে যাই, কী বলেন?’

মিসির আলি সহজ স্বরে বললেন, ‘আপনি কি স্যার আমার সঙ্গে রসিকতা করতে চেষ্টা করছেন?’

‘রসিকতা করব কেন?’

‘গত দু’ বছরে আমি কোনো ছুটি নিই নি। এখন নিতান্ত প্রয়োজনে চাচ্ছি। দিতে না চাইলে দেবেন না। আপনার নিজের কী অবস্থা? এ-বছরে আপনি কি কোনো ছুটি নেন নি?

‘অন্যের সঙ্গে সবসময় একটা কমপেয়ার করার প্রবণতাটা আপনার মধ্যে খুব বেশি। এটা ঠিক না মিসির আলি সাহেব। আপনি সি. এল.-এর ফরমটা রেখে যান, আমি রিকমেন্ড করে দেব।’

মিসির আলি উঠে দাঁড়ালেন। সাইদুর রহমান বললেন, ‘উঠবেন না, আপনার সঙ্গে আমার জরুরি কথা আছে। বসুন।’

তিনি বসলেন। জরুরি কথাটা কি আঁচ করতে চেষ্টা করলেন। সাইদুর রহমান সাহেবের মুখ হাসি-হাসি। কাজেই কথাটা মিসির আলির জন্যে নিশ্চয়ই সুখকর হবে না।

‘আপনার পার্ট টাইম অ্যাপয়েন্টমেন্টের মেয়াদ তো শেষ হতে চলল। এক্সটেনশনের জন্যে কী করছেন?’

মিসির আলি বিস্মিত হয়ে বললেন, ‘আমাকে কিছু করতে হবে নাকি। আমার তো ধারণা ছিল, আমার কিছু করার নেই। ইউনিভার্সিটি যা করার করবে।’

সাইদুর রহমান সাহেব কিছু বললেন না। তাঁর চোখ-মুখ উজ্জ্বল। এর মানে কী? তাঁকে কি এক্সটেনশন দেয়া হবে না? সেটা তো সম্ভব নয়। যেখানে ফুল টাইম টীচার অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবার কথা, সেখানে পার্ট টাইম চাকরির এক্সটেনশন হবে না? এটা কেমন কথা!

‘স্যার, আপনি ঠিক করে বলেন তো ব্যাপারটা কি। আমার মেয়াদ শেষ?’

‘এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এক জনের এডহক অ্যাপয়েন্টমেন্ট তো হয়েছে। এখন আর আমাদের টীচারের শর্টেজ নেই।‘

‘তাই নাকি?’

‘হ্যাঁ তাই। খাজনার থেকে বাজনা বেশি। ছাত্রের চেয়ে টীচারের সংখ্যা বেশি।’

মিসির আলি ঠাণ্ডা গলায় বললেন, ‘আমি তো আপনার কোনো ক্ষতি করি নি। আপনি কেন আমার পেছনে লেগেছেন?’

‘আরে, এটা কী বলছেন! আমি আপনার পেছনে লাগব কেন? কী ধরনের কথা এ-সব?’

মিসির আলি উঠে দাঁড়ালেন। আর এখানে বসে থাকার কোনো মানে হয় না। সাইদুর রহমান সাহেব বললেন, ‘কি, চললেন?’

‘হ্যাঁ, চললাম।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্তাস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করলে কেমন হয়? তাঁরা কি কিছু করতে পারবেন? পারবেন নিশ্চয়ই। কিন্তু এ-জাতীয় কারোর সঙ্গে তাঁর পরিচয় নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব কমসংখ্যক অধ্যাপককেই তিনি চেনেন।

‘স্যার স্লামালিকুম।’

মিসির আলি তাকিয়ে দেখলেন, দু’টি ছাত্র দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বললেন, ‘তোমরা কিছু বলবে?’

‘জ্বি-না স্যার।’

‘আচ্ছা, ঠিক আছে।’

তিনি হাঁটছেন ক্লান্ত ভঙ্গিতে। চাকরি চলে গেলে তিনি অথই পানিতে পড়বেন। সময় ভালো না। দ্বিতীয় কোনো চাকরি চট করে জোগাড় করা মুশকিল। সঞ্চয় তেমন কিছু নেই। ইচ্ছা করলে সঞ্চয় করা যেত। ইচ্ছা করে নি। এ পৃথিবীতে কিছুই জমা করে রাখা যায় না। সব খরচ হয়ে যায়।

মিসির আলি হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে বললেন, ‘I cannot and will not believe that man can be evil.’

তাঁর প্রিয় একটি লাইন। প্রায়ই নিজের মনে বলেন। কেন বলেন? এই কথাটি কি তিনি বিশ্বাস করেন না? যা আমরা বিশ্বাস করি না, অথচ বিশ্বাস করতে চাই, তা-ই আমরা বারবার বলি।

তিনি ঘড়ি দেখলেন। তিনটা বাজে। শরীর খারাপ লাগছে। বাসায় ফিরে যেতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু অনেক কাজ পড়ে আছে। আজমলের সঙ্গে দেখা করা এখনো হয়ে ওঠে নি। ফিরোজের সঙ্গে দেখা করতে পারেন নি। তার সঙ্গে দেখা করার সব ক’টি প্ৰচেষ্টা বিফল হয়েছে। অথচ খুব তাড়াতাড়ি দেখা করা দরকার। সাজ্জাদ হোসেনেরই-বা খবর কি? সে কি হানিফা সম্পর্কে কোনো তথ্য পেয়েছে? না কোনো চেষ্টাই করে নি?

নীলুর সঙ্গেও আর দেখা হয় নি। এর মধ্যে দু’ বার গিয়েছেন ঝিকাতলায়। দু’ বারই বাসার সামনে থেকে চলে এসেছেন। কেন যে তাঁর লজ্জা লাগছিল! লজ্জার কী আছে? কিছুই নেই। তিনি যাচ্ছেন তাঁর ছাত্রীর বাসায়। এর মধ্যে লজ্জার কী?

লাইব্রেরি থেকে একটা বই ইস্যু করার কথা–ইল্যুশন অ্যান্ড হেলুসিনেশন’, ডঃ জিম ম্যাকার্থির বই। প্রচুর কেইস হিস্ট্রি আছে সেখানে। কেইস হিস্ট্রিগুলো দেখা দরকার। কোনোটার সঙ্গে কি ফিরোজের বা নীলুর ব্যাপারগুলো মেলে? পুরোপুরি না-মিললেও অনেক উদাহরণ থাকবে খুব কাছাকাছি। সেগুলো খুঁটিয়ে দেখা দরকার।

মিসির আলি লাইব্রেরিতে চলে গেলেন। সাধারণত যে-বইটি খোঁজা হয়, সে বইটিই পাওয়া যায় না। ভাগ্যক্রমে এটি ছিল। চমৎকার বই। তিন শ’র মতো কেইস হিস্ট্রি আছে। আজ রাতের মধ্যেই শেষ করে ফেলতে হবে। তিনি স্টিভিনশনের ‘সমনোমবলিক প্যাটার্ন’ বইটিও নিয়ে নিলেন। এটিও একটি চমৎকার বই। তাঁর নিজেরই ছিল। তাঁর কাজের ছেলেটি পুরানো বইয়ের দোকানে বিক্রি করে দিয়েছে। মহা বদমাশ ছিল। তাঁকে প্রায় ফতুর করে দিয়ে গেছে। তিনি একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন। মানুষ কত বিচিত্র! এই ছেলেটিকে তিনি বিশেষ স্নেহ করতেন। স্নেহ অপাত্রে পড়েছিল। মানুষের বেশির ভাগ স্নেহ-মমতাই অপাত্রে পড়ে।

‘কেউ আমার খোঁজ করেছিল, হানিফা?’

‘জ্বি না।’

‘চা বানিয়ে আন। দুধ-চিনি ছাড়া।’

হানিফা চলে গেল। তার শরীর বোধ হয় খানিকটা সেরেছে। মুখের শুকনো ভাবটা কম। ঘরে ওজন নেবার কোনো যন্ত্র নেই। যন্ত্র থাকলে দেখা যেত, ওজন কিছু বেড়েছে কি না।

মিসির আলি ইজি চেয়ারে শুয়ে জিম ম্যাকার্থির বইটির পাতা ওল্টাতে লাগলেন। কত বিচিত্র কেইস হিস্ট্রিই-না ভদ্রলোক জোগাড় করেছেন!

কেইস হিস্ট্রি নাম্বার সিক্সটি থ্রী
মিস কিং সিলভারস্টোন
বয়স পঁচিশ।
কম্পুটার প্রোগ্রামার।
দি এনেক্স ডিজিটাল্‌স্‌ লিমিটেড
ডোভার। ক্যালিফোর্নিয়া

মিস কিং সিলভারস্টোন থ্যাংকস গিভিংয়ের দু’ দিন আগে দি এনেক্স ডিজিটাল্‌স্‌ লিমিটেডের তিনতলার একটি ঘরে কাজ করছিলেন! সন্ধ্যা মিলিয়ে গেছে। অফিসের এক জন গার্ড ছাড়া দ্বিতীয় ব্যক্তি নেই। গার্ড একতলায় কফিরুমে। সে বলে গেছে মিস সিলভারস্টোন যেন কাজ শেষ করে যাবার সময় তাকে বলে যান।

কাজেই মিস সিলভারস্টোন রাত আটটার সময় কাজ শেষ করে কফিরুমে গেলেন। অবাক কাণ্ড, কফিরুম অন্ধকার। কেউ কোথাও নেই। তিনি ভয় পেয়ে ডাকলেন–’মুলার।’ কেউ সাড়া দিল না।

তিনি ভাবলেন, মুলার হয়তো-বা সোফায় ঘুমিয়ে পড়েছে। কাজেই তিনি ঘরে ঢুকে বাতি জ্বালিয়ে স্তম্ভিত হয়ে দেখলেন—মুলার নেই, তবে সোফায় এক জন অস্বাভাবিক লম্বা মানুষ বসে আছে। মানুষটি নগ্ন। তিনি চেঁচিয়ে ওঠার আগেই লোকটি বলল, ‘ভয় পেও না। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

‘তুমি কে?’

‘আমি এই গ্রহের মানুষ নই। আমি এসেছি সিরাস নক্ষত্রপুঞ্জ থেকে। আমি পৃথিবীর একটি রমণীর গর্ভে সন্তানের সৃষ্টি করতে চাই।’

মিস সিলভারস্টোন পালিয়ে যেতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু পারলেন না। তাঁর পা যেন মেঝের সঙ্গে আটকে গেছে। তিনি চিৎকার করতে চেষ্টা করলেন–গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হল না। তিনি অবাক হয়ে লক্ষ করলেন, একে-একে তাঁর গায়ের কাপড় আপনা-আপনি খুলে যাচ্ছে। দেখতে-দেখতে তিনি সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে গেলেন। এই লোকটি তখন উঠে দাঁড়াল। তিনি লক্ষ করলেন, লোকটির গায়ের চামড়া ঈষৎ সবুজ, এবং তার গা থেকে চাপা এক ধরনের আলো বেরুচ্ছে।

লোকটি এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরল। আপনা-আপনি বাতি নিভে গেল।

এই হচ্ছে মিস কিং সিলভারস্টোনের গল্প। তিনি পরবর্তী সময়ে গর্ভবতী হয়ে পড়েন এবং ডাক্তারের কাছে জানতে চান, তাঁর বাচ্চাটির গায়ের রঙ সবুজ হবার সম্ভাবনা কতটুকু।

ম্যাকার্থির একুশ পৃষ্ঠার বিশ্লেষণ আছে কেইস হিস্ট্রির সঙ্গে। তিনি অভ্রান্ত যুক্তিতে প্রমাণ করেছেন, এটি ইলিউশনের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। মিস সিলভারস্টোন সেখানে দেখেছেন মুলারকে। সিরাস নক্ষত্রপুঞ্জের কোনো আগন্তুককে নয়।

মিসির আলি একটির পর একটি কেইস হিস্ট্রি গভীর আগ্রহে পড়তে শুরু করলেন। তাঁর নিজেরও এ-রকম একটি বই লেখার ইচ্ছা হতে লাগল। সেখানে রানু, নীলু, ফিরোজের কেইস হিস্ট্রি এবং অ্যানালিসিস থাকবে। কিন্তু তা করতে হলে এদের সমস্ত রহস্য ভেদ করতে হবে। তা কি সম্ভব হবে? কেন হবে না? অসম্ভব আবার কী? নোপোলিয়নের কী-একটি উক্তি আছে না এ প্রসঙ্গে — Impossible is the word…? উক্তিটি কিছুতেই মনে পড়ল না।

হানিফা চা বানিয়ে এনেছে। সুন্দর লাগছে তো মেয়েটিকে। মেয়েটির ব্যাপারে খোঁজ নিতে হবে। তিনি কি অলস হয়ে যাচ্ছেন? বোধহয়। বয়স হচ্ছে। আগের কর্মদক্ষতা এখন আর নেই। মিসির আলি একটি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।

‘আপনের চা।’

‘হানিফা চায়ের কাপ সাবধানে নামিয়ে রাখল। তিনি লক্ষ করলেন, মেয়েটি নখে নেলপালিশ লাগিয়েছে। নেলপালিশ তিনি তাকে কিনে দেন নি। সে নিজেই তার জমানো টাকা থেকে কিনেছে। তাঁর নিজেরই কিনে দেয়া উচিত ছিল।

‘হানিফা বস্। তোর সঙ্গে গল্পগুজব করি কিছুক্ষণ।

হানিফা বসল। মিসির আলি বললেন, ‘আমি তোর বাবা-মাকে খুঁজে বের করবার চেষ্টা করছি, বুঝলি?’

হানিফা কিছু বলল না। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে রইল। তিনি কি পারবেন এর কোনো খোঁজ বের করতে? না-পারার কী আছে? এটি এমন জটিল কাজ নিশ্চয়ই নয়। সাজ্জাদ হোসেন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে তিনি বলেছেন, মেয়েটির নাম ‘ইমা’ হবার সম্ভাবনা। এই নামের কোনো নিখোঁজ মেয়ের তথ্য আছে কি না দেখতে।

সে চোখ-মুখ কুঁচকে বলেছে, ‘বুঝলি কি করে, ওর নাম ইমা?’ তিনি সে-প্রশ্নের জবাব দিতে পারেন নি। দিতে পারেন নি বলাটা ঠিক হল না, বলা উচিত–দিতে পারতেন, কিন্তু দেন নি। সব প্রশ্নের উত্তর সবাইকে দেয়া যায় না।’ইমা’ নামটি কোত্থেকে পাওয়া, সেটা কাউকে না বলাই ভালো, বিশেষ করে পুলিশকে। পুলিশরা এ-জাতীয় আধিভৌতিক ব্যাপার সাধারণত বিশ্বাস করে না।

পুলিশের ওপর পুরোপুরি নির্ভরও তিনি করেন নি। তাঁর এক ছাত্রকে কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। তার কাজ হচ্ছে প্রতিদিন পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়ে পুরনো পত্রিকা ঘাঁটা। দেখবে, ‘ইমা’ নামের নিখোঁজ মেয়ের কোনো খবর ছাপা হয়েছে কি না। এই কাজের জন্য সে ঘন্টায় পঞ্চাশ টাকা করে পাবে। দশ ঘন্টার জন্যে পাঁচ শ’ টাকা তিনি তাকে আগেই দিয়ে দিয়েছেন। কাজে যাতে উৎসাহ আসে, তার জন্যে এক হাজার টাকার একটি পুরস্কারের কথাও বলেছেন। যদি সে ‘ইমা’ নামের কোনো নিখোঁজ বালিকার খবর বের করতে পারে, তাহলে এককালীন টাকাটা পাবে।

এই ব্যাপারে মিসির আলির মন খুঁতখুঁত করছে।’ইমা’ নামটির ওপর এতটা গুরুত্ব দেয়া ঠিক হয় নি। যে-কোনো নিখোঁজ বালিকার সংবাদ সংগ্রহ করতে বলাটাই যুক্তিযুক্ত ছিল। এক জনের অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার ওপর এতটা আস্থা রাখা ঠিক নয়। তিনি নিজে এক জন যুক্তিবাদী মানুষ। তাঁর জন্যে এটা অবমাননাকর।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *