০৯. স্টেশন বলতে একটা প্ল্যাটফর্ম

॥ ৯ ॥

স্টেশন বলতে একটা প্ল্যাটফর্ম, আরেকটা ছোট্ট কাজ চালাবার মতো টিকিটঘর। আসলে স্টেশন তৈরির কাজ এখনও চলছে; কবে শেষ হবে তার কোনও ঠিক নেই। আমরা টিকিটঘরের কাছেই একটা জায়গা বেছে নিয়ে সুটকেস আর হোল্ড-অল মাটিতে পেতে তার উপরে বসেছি। এখানে বসার একটা কারণ এই যে, কাছেই একটা কাঠের পোস্টে একটা কেরোসিনের বাতি ঝুলছে, কাজেই অন্ধকার হলেও সেই আলোতে আমরা অন্তত পরস্পরের মুখটা দেখতে পাব।

স্টেশনের কাছে একটা ছোটখাটো গ্রাম জাতীয় ব্যাপার আছে। ফেলুদা একবার সে দিকটায় ঘুরে এসে জানিয়েছে যে, খাবারের দোকান বলে কিছুই নাকি সেখানে নেই। খাবার বলতে আমাদের এখন যা সম্বল দাঁড়িয়েছে, সেটা হচ্ছে ফ্লাস্কের মধ্যে সামান্য জল আর লালমোহনবাবুর কাছে এক টিন জিভেগজা। বুঝতে পারছি, আজ রাতটা এই গজা খেয়েই থাকতে হবে। মিনিট দশেক হল সূর্য ডুবেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে। গুরুবচন সিং আসবে বলে বিশেষ ভরসা হয় না, কারণ আমরা এই যে তিন ঘণ্টা হল এসেছি, তার মধ্যে একটা গাড়িও যায়নি রাস্তা দিয়ে—না যোধপুরের দিকে, না জয়সলমীরের দিকে। রাত তিনটে পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মে বসে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় আছে বলে মনে হয় না।

ফেলুদা ওর সুটকেসটার উপর বসে রেলের লাইনের দিকে চেয়ে আছে একদৃষ্টে। ওকে এর মধ্যে বার দু’-তিন দেখেছি বাঁ হাতের তেলোর চাপে ডান হাতের আঙুল মটকাতে। বেশ বুঝছি ওর ভেতর একটা চাপা উত্তেজনার ভাব রয়েছে, আর তাই ও কথাও বলছে না বেশি।

দালদার টিনটা খুলে একটা জিভেগজা বার করে তাতে একটা কামড় দিয়ে লালমোহনবাবু বললেন, ‘কী থেকে কী হয়ে যায় মশাই। আগ্রা থেকে যদি এক কামরায় সিট না পড়ত, তা হলে কি আর এভাবে আমার হলিডের চেহারাটা পালটে যেত?’

‘আপনার কি আপশোস হচ্ছে?’ ফেলুদা জিজ্ঞেস করল।

‘বলেন কী মশাই।’ ফেলুদার প্রশ্নটা ভদ্রলোক হেসেই উড়িয়ে দিলেন। ‘তবে কী জানেন, ব্যাপারটা যদি আমার কাছে আর একটু ক্লিয়ার হত, তা হলে মজাটা আরও জমত।’

‘কোন ব্যাপারটা?’

‘কিছুই তো জানি না মশাই। খালি শাট্‌ল্‌ ককের মতো এদিকে থাপ্পড় খেয়ে ওদিকে যাচ্ছি, আর ওদিকে থাপ্পড় খেয়ে এদিকে আসছি। এমনকী আপনি যে আসলে কে—হিরো না ভিলেন—তাই তো বুঝতে পারছি না, হে হে।’

‘কী হবে জেনে?’ ফেলুদা মুচকি হেসে বলল। ‘আপনি যখন উপন্যাস লেখেন, সব জিনিস কি আগে থেকে বলে দেন? এই রাজস্থানের অভিজ্ঞতাটাকে একটা উপন্যাস বলে ধরে নিন না। গল্পের শেষে দেখবেন সব রহস্য পরিষ্কার হয়ে গেছে।’

‘আমি আস্ত থাকব তো গল্পের শেষে? জ্যান্ত থাকব তো?’

‘ঠেকায় পড়লে আপনি যে দৌড়িয়ে খরগোশকেও হার মানাতে পারেন সেটা তো চোখেই দেখলাম। এটা কি কম ভরসার কথা?’

একটা লোক এসে কখন জানি কেরোসিনের বাতিটা জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে। সেই আলোয় দেখতে পেলাম স্থানীয় পোশাক পরা দুটো পাগড়িধারী লাঠি ঠক্ ঠক্‌ করতে করতে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে। তারা এসে আমাদের ঠিক চার-পাঁচ হাত দূরে মাটিতে উবু হয়ে বসে নিজেদের মধ্যে দুর্বোধ্য ভাষায় কথাবার্তা আরম্ভ করে দিল। লোক দুটোর একটা ব্যাপার দেখে আমার মুখ হাঁ হয়ে গেল। তাদের দু’জনেরই গোঁফ জোড়া অন্তত চার বার পাক খেয়ে গালের দু’ পাশে দুটো ঘড়ির স্প্রিং-এর মতো হয়ে রয়েছে। মনে হয়, টেনে সোজা করলে এক এক দিকে অন্তত হাত দেড়েক লম্বা হবে। লালমোহনবাবুরও দেখি চক্ষুস্থির।

ফেলুদা চাপা গলায় বলল, ‘ব্যান্ডিটস্।’

‘বলেন কী!’ লালমোহনবাবু ফ্লাস্ক থেকে জল ঢেলে খেলেন।

‘নিঃসন্দেহে।’

লালমোহনবাবু এবার দালদার টিনটা বন্ধ করতে গিয়ে ঢাকনাটা হাত থেকে ফসকে ফেলে একটা বিশ্রী শ্যানখেনে শব্দ করে নিজেই আরও বেশি নাভার্স হয়ে পড়লেন।

লোকগুলোর গায়ের রং একেবারে সদ্য কালি দিয়ে বুরুশ করা নতুন জুতোর মতো চকচকে। দুটোর মধ্যে একটা লোক এবার সিগারেট বার করে মুখে পুরল, তারপর পকেট থাবড়ে-থুবড়ে একটা দেশলাইয়ের বাক্স বার করে সেটা খালি দেখে ট্রেনের লাইনের দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিল। খচ করে একটা শব্দ শুনে ফেলুদার দিকে চেয়ে দেখি, সে তার লাইটারটা জ্বালিয়ে লোকটার দিকে এগিয়ে দিয়েছে। লোকটা প্রথমে একটু অবাক, তারপর মুখ বাড়িয়ে সিগারেটটা ধরিয়ে ফেলুদার কাছ থেকে লাইটারটা নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখে এখানে-সেখানে টিপে ফস করে সেটাকে জ্বালল। লালমোহনবাবু কী জানি বলতে গেলেন, কিন্তু গলা দিয়ে পরিষ্কার আওয়াজ বেরোল না। লোকটা আরও তিনবার লাইটারটা জ্বালিয়ে-নিভিয়ে সেটা ফেলুদাকে ফেরত দিয়ে দিল। লালমোহনবাবু এবার ঢাকনা লাগানো টিনটা সুটকেসে ভরতে গিয়ে পুরো টিনটাই হাত থেকে ফেলে গতবারের চেয়ে আরও চারগুণ বেশি শব্দ করে বসলেন। ফেলুদা সেদিকে কোনও ভ্রূক্ষেপ না করে তার থলি থেকে নীল খাতাটা বার করে এই টিমটিমে আলোতেই সেটা উলটে-পালটে দেখতে লাগল।

হঠাৎ লক্ষ করলাম টিকিট ঘরের পিছনে কিছুটা দূরে একটা কাঁটা ঝোপের উপর কোত্থেকে জানি একটা আলো এসে পড়েছে।

আলোটা বাড়ছে। এবার একটা গাড়ির আওয়াজ পেলাম। জয়সলমীরের দিক থেকে আসছে গাড়িটা। যাক বাবা! মনে হচ্ছে গুরুবচনের সমস্যার সমাধান হলেও হতে পারে।

গাড়িটা হুস্ করে নাকের সামনে দিয়ে যোধপুরের দিকে চলে গেল। ঘড়িতে দেখলাম সাড়ে সাতটা।

ফেলুদা খাতা থেকে মুখ তুলে লালমোহনবাবুর দিকে চাইল। তারপর বলল, ‘আচ্ছা লালমোহনবাবু, আপনি তো গল্প-টল্প লেখেন, বলুন তো ফোসকা জিনিসটা কী এবং ফোসকা কেন পড়ে!’

‘ফোসকা?…ফোসকা?…’ লালমোহনবাবু থতমত খেয়ে গেছেন। ‘কেন পড়ে মানে, এই ধরুন আপনি সিগারেট ধরাতে গিয়ে হাতে ছ্যাঁকা লাগল—’

‘সে তো বুঝলাম—কিন্তু ফোসকা পড়বে কেন?’

‘কেন? ও—আই সি—কেন…’

‘ঠিক আছে। এবার বলুন তো একটা লোককে মাথার উপর থেকে দেখলে তাকে বেঁটে মনে হয় কেন?’

লালমোহনবাবু চুপ করে হাঁ করে চেয়ে রইলেন। আবছা আলোয় দেখলাম তিনি হাত কচলাচ্ছেন। পাশের লোক দুটো এক সুরে একভাবে গল্প করে চলেছে। ফেলুদা একদৃষ্টে লালমোহনবাবুর দিকে তাকিয়ে রয়েছে।

লালমোহনবাবু জিভ দিয়ে ঠোঁট চেটে বললেন, ‘আমাকে এ সব, মানে, কোশ্চেন—’

‘আরেকটা প্রশ্ন আছে লালমোহনবাবু—এটার উত্তর আপনি নিশ্চয় জানেন।’

লালমোহনবাবু নির্বাক। ফেলুদা যেন তাঁকে হিপ্‌নোটাইজ করে ফেলেছে।

‘আজ সকালে আপনি সার্কিট হাউসের পিছনের বাগানে আমার জানালার কাছে কী করছিলেন?’

লালমোহনবাবু এক মুহূর্ত পাথর। তারপরেই তিনি একেবারে হাত-পা ছুঁড়ে হাউমাউ করে উঠলেন।

‘আরে মশাই—আপনার কাছেই তো যাচ্ছিলুম! আপনারই কাছে! এমন সময় ময়ূরটা এমন চেঁচিয়ে উঠল—আর তারপর একটা চিৎকার শুনলাম—কেমন জানি নার্ভাস-টাভার্স হয়ে…’

‘আমার ঘরে যাবার কি অন্য রাস্তা ছিল না? আর আমার কাছে আসার জন্য মাথায় পাগড়ি আর গায়ে চাদর দিতে হয়?’

‘আরে মশাই, গায়ের চাদর তো বিছানার চাদর, আর পাগড়ি তো সার্কিট হাউসের তোয়ালে। একটা ডিজগাইজ না হলে লোকটার উপর স্পাইং করব কী করে?’

‘কোন লোকটা?’

‘মিস্টার ট্রটার! ভেরি সাস্‌পিশাস্‌! ভাগ্যে গেসলুম। কী পেলুম দেখুন না, ওর জানলার বাইরে ঘাসের উপর। সিক্রেট কোড! এইটেই তো আপনাকে দিতে যাচ্ছিলুম, আর ঠিক সেই সময় ময়ূরটা চেঁচামেচি লাগিয়ে সব ভণ্ডুল করে দিলে।’

আমি লক্ষ করছিলাম লালমোহনবাবুর ঘড়িটা। সত্যি, এই ঘড়িটাই তো দেখেছিলাম ছাত থেকে।

লালমোহনবাবু সুটকেস খুলে তার খাপ থেকে একটা কোঁকড়ানো কাগজের টুকরো বার করে ফেলুদাকে দিল। বুঝলাম কাগজটাকে দলা পাকানো হয়েছিল, সেটা আবার সোজা করা হয়েছে।

ফেলুদার পাশে গিয়ে কেরোসিনের আলোতে দেখলাম কাগজটায় পেনসিল দিয়ে লেখা আছে—

IP 1625 + U
U—M

ফেলুদা ভীষণভাবে ভুরু কুঁচকে কাগজটার দিকে চেয়ে রইল। আমি এই অ্যালজেব্রার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝলাম না, যদিও লালমোহনবাবু দু’বার ফিস্ ফিস্ করে বললেন, ‘হাইলি সাস্‌পিশাস্‌।’

ফেলুদা ভাবছে, আর ভাবতে ভাবতে আপন মনে বিড়বিড় করছে—

‘যোল শ’ পঁচিশ…যোল শ’ পঁচিশ…এই সংখ্যাটা কোথায় যেন দেখেছি রিসেন্টলি?…’

‘ট্যাক্সি নম্বর?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম।

‘উঁহু…যোল শ’ পঁচিশ…সিক্সটিন টোয়েন্টি ফা—’

ফেলুদা কথাটা শেষ না করে এক ঝটকায় থলে থেকে ব্র্যাড্‌শ টাইম টেবলটা বার করল। পাতা ভাঁজ করা জায়গায় খুলে পাতার উপর থেকে নীচের দিকে আঙুল চালিয়ে এক জায়গায় এসে থামল।

‘ইয়েস। সিক্সটিন টোয়েন্টি ফাইভ হচ্ছে অ্যারাইভ্যাল।’

‘কোথায়?’ জিজ্ঞেস করলাম।

‘পোকরানে।’

বললাম, ‘তা হলে তো P-টা পোকরান হতে পারে। পোকরানে সিক্সটিন টোয়েন্টি ফাইভ। আর বাকিটা?’

‘বাকিটা…বাকিটা…আই পি—আবার প্লাস ইউ।’

‘তলার Mটা কিন্তু ভাল লাগছে না মশাই’, লালমোহনবাবু বললেন। M বললেই কিন্তু মার্ডার মনে পড়ে।’

‘দাঁড়ান মশাই—আগে ওপরেরটার পাঠোদ্ধার করি।’

লালমোহনবাবু বিড়বিড় করে বললেন, ‘মার্ডার…মিসট্রি…ম্যাসাকার…মনস্টার…’

ফেলুদা কোলের উপর কাগজটা খোলা রেখে ভাবতে লাগল।

লালমোহনবাবু গজার টিনটা বার করে আমাদের আবার অফার করলেন। আমি একটা নেবার পর ফেলুদার দিকে টিনটা এগিয়ে দিয়ে ভদ্রলোক বললেন, ‘ভাল কথা—আমিই যে আপনার জানালার কাছে গিয়েছিলুম, সেটা কী করে বুঝলেন স্যার? আপনি কি আমায় দেখে ফেলেছিলেন নাকি?’

ফেলুদা একটা গজা তুলে নিয়ে বলল, ‘পাগড়িটা খোলার পর বোধহয় চুলটা আঁচড়াননি। ঘটনাটার কিছুক্ষণ পর যখন আপনার সঙ্গে দেখা হয়, তখন আপনার চুলের অবস্থাটা দেখেই সন্দেহ হয়েছিল।’

ভদ্রলোক হেসে বললেন, ‘কিছু মনে করবেন না স্যার—আপনাকে কিন্তু সেন্ট-পারসেন্ট গোয়েন্দা বলেই মনে হচ্ছে।’

ফেলুদা এবার তার একটা কার্ড বার করে লালমোহনবাবুকে দিল। লালমোহনবাবুর দৃষ্টি উদ্ভাসিত হয়ে উঠল।

‘ওঃ!—প্রদোষ সি মিটার! এটা কি আপনার রিয়্যাল নাম?’

‘আজ্ঞে হ্যাঁ। সন্দেহের কোনও কারণ আছে কি?’

‘না, মানে ভাবছিলাম কী অদ্ভুত নাম!’

‘অদ্ভুত?’

‘অদ্ভুত নয়? দেখুন না কেমন মিলে যাচ্ছে। —প্রদোষ—প্র হচ্ছে প্রফেসন্যাল, দোষ হচ্ছে ক্রাইম আর সি হচ্ছে—টু সি—অর্থাৎ দেখা—অর্থাৎ ইনভেস্টিগেট। অর্থাৎ প্রদোষ সি ইজ ইকুয়্যাল টু প্রফেসন্যাল ক্রাইম ইনভেস্টিগেটর!’

‘সাধু সাধু!’—আর মিটার?’

‘মিটারটা একটু ভেবে দেখতে হবে’, লালমোহনবাবু মাথা চুলকে বললেন।

‘কিস্যু ভাবার দরকার নেই। আমি বলে দিচ্ছি। ট্যাক্সি মিটার জানেন তো? সেই মিটার—অর্থাৎ ইন্ডিকেটর। তার মানে শুধু ইনভেস্টিগেশন নয়, অল্‌সো ইনডিকেশন। ক্রাইমের তদন্তই শুধু নয়, ক্রিমিন্যাল বার করে তার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ। হল তো?’

লালমোহনবাবু ‘ব্রাভো’ বলে হাততালি দিয়ে উঠলেন। ফেলুদা কিন্তু আবার সিরিয়াস। আরেকবার হাতের কাগজটার দিকে দেখে সেটাকে শার্টের বুক-পকেটে গুঁজে রেখে সিগারেটটা বার করে বলল, ‘I এবং U-এর অবিশ্যি খুব সহজ মানে হতে পারে। I অর্থাৎ আমি এবং U অর্থাৎ তুমি, কিন্তু প্লাস ইউ-টা গোলমেলে। আর দ্বিতীয় লাইনটার কোনও কিনারাই করা যাচ্ছে না।…তোপ্‌সে, তুই বরং হোল্ড-অলটা বিছিয়ে শুয়ে পড়। আপনিও—লালমোহনবাবু। এখনও তো সাড়ে সাত ঘণ্টা দেরি ট্রেন আসতে। আমি আপনাদের ঠিক সময়ে তুলে দেবো।’

কথাটা মন্দ বলেনি ফেলুদা। শুধু স্ট্র্যাপ দুটো খুলে হোল্ড-অলটাকে বিছিয়ে প্ল্যাটফর্মের উপর শুয়ে পড়লাম। চিত হওয়ামাত্র আকাশের দিকে চোখ গেল, আর তক্ষুনি বুঝতে পারলাম যে, একসঙ্গে এত তারা আমি জীবনে কখনও দেখিনি। মরুভূমিতে কি আকাশটা তা হলে একটু বেশি পরিষ্কার থাকে? তাই হবে।

আকাশ দেখতে দেখতে ক্রমে চোখটা ঘুমে বুজে এল। একবার শুনলাম লালমোহনবাবু বলছেন, ‘উটে চড়লে গাঁটে বেশ ব্যথা হয় মশাই।’ আরেকবার যেন বললেন, ‘এম্‌ ইজ মার্ডার।’ এর পর আর কিছু মনে নেই।

ঘুম ভাঙল ফেলুদার ঝাঁকানিতে।

‘তোপ্‌সে—উঠে পড়—গাড়ি আসছে।’

তড়াক করে উঠে হোল্ড-অল বেঁধে ফেলতে ফেলতে ট্রেনের হেড-লাইট দেখা গেল।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *