০৫. এর আগের চিঠিটা পড়ে

এর আগের চিঠিটা পড়ে নিশ্চয়ই মনে হয়েছে, সে রাত্রে ট্রেনের মধ্যে একটা কেলেঙ্কারি হয়েছিল। না, সে রকম কিছু হয়নি। তবে দু পেগ খাবার পরই কাকু আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, কি কবিতা আমি কি মাতাল হয়েছি?

আমি বিজ্ঞের মতো গম্ভীর হয়ে বললাম, কোনো ভদ্র-শিক্ষিত লোক মাতাল হয় না। আমার কথা শুনে কাকু হো হো করে হাসতে হাসতে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর হুইস্কির গেলাসটা আমার মুখের সামনে ধরলেন, তুমি একটু খাবে না?

না কাকু, প্লিজ?

কেন? ভয় কী?

ভয় কেন করবে? ইচ্ছে করছে না।

ইচ্ছে করছে না বোলো না। কিছুটা ভয় আর কিছুটা সঙ্কোচের জন্যই তুমি খাচ্ছ না।

কোনো ব্যাপারেই আমার ভয় বা সঙ্কোচ নেই।

কাকু মিট মিট করে হাসতে হাসতে বললেন, বিশ্বাস করি না।

আমি হাসতে হাসতে বললাম, সময় এলেই প্রমাণ পাবেন।

কাকু গেলাসের বাকি হুইস্কিটা একবারে গলায় ঢেলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন, তুমি আমাকে একটুও ভালোবাস না।

একশোবার আপনাকে ভালোবাসি।

কিন্তু তার তো কোনো প্রমাণ পাচ্ছি না।

শুধু হুইস্কি খেলেই বুঝি আপনি তার প্রমাণ পাবেন?

তা বলছি না; তবে যদি ভালোবাসতে তাহলে এতবার অনুরোধ করার পর নিশ্চয়ই অন্তত এক পেগ খেতে।

তারপর হুইস্কি খেয়ে যদি মাতাল হই?

এমন ভাবে খাবে যাতে নেশা হবে না কিন্তু মৌজ হবে।

ঠিক আছে, জানা থাকল।

.

বেশি দিন নয়, মাত্র তিন দিন আমরা পুরী ছিলাম। সত্যি বলছি ভাই, এর আগে এমন আনন্দ কখনও হয়নি। হেমন্তকাকু বয়সে অনেক বড় হলেও সত্যি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে গেলেন।

কলকাতা ফেরার পর আমাকে আনন্দে, খুশিতে ভরপুর দেখে মা জিজ্ঞাসা করলেন, খুব আনন্দ করেছিস, তাই না?

আমি মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, হ্যাঁ মা। খুব আনন্দ করেছি।

খুব ঘুরেছিস?

খুব ঘুরেছি, খুব খেয়েছি, খুব সাঁতার কেটেছি, খুব ঘুমিয়েছি, খুব মজা করেছি।

কিছু আর বাকি রাখিসনি।

হেমন্তকাকু বাবাকে বললেন, তোর চাইতে তোর মেয়ের সঙ্গে আমার বেশি বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।

বাবা হাসতে হাসতে বললেন, বিয়ে-টিয়ে যখন করলি না তখন আমার মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই জীবনটা কাটিয়ে দে।

মার জন্য বাবা কোর্টে ছাড়া কোথাও বেরুতেন না। সব সময় বাড়িতেই থাকতেন। তাই আমি মাঝে মাঝে কাকুর সঙ্গে কলকাতার মধ্যে এদিক ওদিক বা সিনেমা থিয়েটারে যেতাম। কখনও কখনও ছুটির দিন আমি কাকুর ফ্ল্যাটেই সারাদিন কাটাতাম। মাঝে মাঝে আমার দু-একজন বন্ধুও কাকুর ওখানে যেতো। তারপর হয়তো আমরা সবাই মিলে কোথাও বেড়াতে বা সিনেমা দেখতে যেতাম।

তারপর মার শরীর খারাপ হতে শুরু করল। মাঝে মাঝেই কলেজ থেকে ফিরে এসে দেখি বাবা কোর্টে যাননি। মার বিছানার ধারেই বসে আছেন। আমিও মার পাশে বসি। মার মাথায়, বুকে হাত বুলিয়ে দিই। মা বলেন, তুই চান-টান করে আয়।

আমি বলি, একটু পরে যাব।

মা আমার হাত দুটো নিজের দুর্বল হাতের মধ্যে নিয়ে বলেন, না, যা। অনিয়ম করলে শরীর খারাপ হয়ে যাবে। মা একসঙ্গে বেশি কথা বলতে পারতেন না বলে একটু থেমে বলতেন, আমি অসুস্থ হয়েছি বলে তোরা কেন অনিয়ম করবি? আমি আর কোনো কথা না বলে উঠে যেতাম।

একদিন কলেজ থেকে ফিরে দেখি বাবা চুপচাপ নিজের ঘরে বসে আছেন। আমাকে দেখেই একবার আমার দিকে তাকালেন। দেখলাম জলভরা ভারে মেঘের মতো দুটো চোখ টল টল করছে। আমি যেন সহ্য করতে পারলাম না। বেরিয়ে এলাম, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাবা আমাকে ডাকলেন, খুকি মা, শুনে যা।

আমি কাছে যেতেই বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে বুকের উপর মাথা রেখে অসহায় ছোট বাচ্চার মতো কাঁদতে কাঁদতে বললেন, তোর মা চলে গেলে আমরা কি করে বাঁচব রে খুকি? এই পৃথিবীতে আমার তো আর কোনো বন্ধু নেই।

ভাই রিপোর্টার, সে দুঃখের দিনের কথা এত বছর পরও লিখতে গিয়ে আমার দুচোখ জলে ভরে যাচ্ছে। বাবার শৈশব-কৈশোর আমি দেখিনি। তার প্রথম যৌবনের খবরও আমি জানি না, কিন্তু আমার জ্ঞান-বুদ্ধি হবার পর থেকেই দেখেছি মা ছাড়া বাবা এই পৃথিবীর আর কিছু চিনতেন না, জানতেন না। বাবা মাকে শুধু ভালোবাসতেন না, যথেষ্ট শ্রদ্ধাও করতেন। আমার বেশ মনে পড়ে কলকাতায় আসার পর বাবা একদিন আমাকে বলেছিলেন, জন্ম জন্ম তপস্যা করার ফলেই তোর মাকে আমি স্ত্রী হিসেবে পেয়েছি। বাইরের লোক ওর রূপ দেখে স্তম্ভিত হয় কিন্তু ওর গুণের কাছে রূপ কিছুই না।

মা এমনই দুরারোগ্য ব্যাধিতে ভুগছিলেন যে বাবা সর্বস্ব কিছু পণ করেও তাকে বাঁচাতে পারলেন না। মা চলে গেলেন। আমি তখনই জানতাম, বাবা এই আঘাত সহ্য করতে পারবেন না। আমার বি. এ. পরীক্ষা শেষ হবার দিন তিনেক পরেই বাবার হার্ট অ্যাটাক হল। বাহাত্তর ঘণ্টা পার হবার পর হেমন্তকাকু বললেন, আর ভয় নেই। বিপদ কেটে গেছে।

আমার অদৃষ্টের মহাকাশে মুহূর্তের জন্য সূর্য উঁকি দিলেও আবার সঙ্গে সঙ্গে মেঘে ঢাকা পড়ল। বাবাও চলে গেলেন।

সে-সব দিনের কথা বেশি লিখে তোমার মনে দুঃখ দেব না। তুমি সহজেই আমার অবস্থা বুঝতে পারছ। আমি ভাবতে পারিনি এমন অকস্মাৎ আমার জীবনের সব আলো নিভে যাবে। হেমন্তকাকুর বিরুদ্ধে আমার অনেক অভিযোগ কিন্তু তা সত্ত্বেও মুক্তকণ্ঠে বলব, সেই অন্ধকার। অমানিশার রাত্রিতে আর কোনো আত্মীয় বন্ধু নয়, শুধু উনিই আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন।

কাকু আমাকে বললেন, ডোন্ট ফরগেট কবিতা, আমি এখনও বেঁচে আছি। তোমার কিছু ভাবতে হবে না। তুমি এম. এ. পাশ কর, ডক্টরেট হও; তারপর ভেবে দেখা যাবে।

সত্যি আমাকে কিছু ভাবতে হল না। আমাদের কালীঘাটের বাড়িটা পঁচাত্তর হাজার টাকায়। বিক্রি করলেন। ফার্নিচার আর বাবার আইনের বই-পত্তর বাবার জুনিয়ারকে দেওয়া হল। আমি কাকুর দুখানা ঘরের ফ্ল্যাটে চলে গেলাম।

কাকুর ফ্ল্যাটে একটা ড্রইংরুম, একটা বেড রুম, বেডরুমের সঙ্গেই বাথরুম আর ছোট একটা স্টাডি। এ ছাড়া একটা কিচেন। কাকুর সংসার-ধর্মের ভার সালাউদ্দিন নামে একজন খানসামা-কাম-বাবুর্চির উপর। ছেচল্লিশ সালের দাঙ্গার সময় কাকু সালাউদ্দিনকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিলেন। তারপর থেকেই সালাউদ্দিন স্বেচ্ছায় কাকুর সংসারের ভার নিয়েছে। ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলে সালাউদ্দিন যখন আসে তখন কাকু ঘুমিয়ে থাকেন। ওর হাতের চা খেয়েই কাকুর ঘুম ভাঙে। ব্রেকফাস্ট খেয়ে কাকু অফিস যান। আবার লাঞ্চের সময় আসেন। রাত্রের রান্না ফ্রিজে রেখে সালাউদ্দিন আড়াইটে তিনটে নাগাদ চলে যায়। শুধু রান্নাবান্না নয়, কাকুর সংসারের সব কিছু দায়িত্বই ওর। বাজার হাট, জামা কাপড়, বিছানা বালিশ, মোটর গাড়ির তদারকি ছাড়াও হুইস্কি সোড়া এনে রাখার দায়িত্বও এই সালাউদ্দিনের।

কাকুর বেডরুমটা বেশ বড়। সুতরাং সে ঘরের এক পাশে আমার খাট আর একটা আলমারি রাখায় কারুরই কোনো অসুবিধে হল না। কাকুর ঘরেই শোবার ব্যাপারে একবার যে মনে খটকা লাগেনি, তা নয়; তবে প্রথম কথা আর কোনো শোবার ঘর ছিল না, আর দ্বিতীয় কথা, যার স্নেহ অবলম্বন করে আমি এখানে এলাম, তাকে অবিশ্বাস করা অন্যায়। পাশের স্টাডিটা আমিই নিলাম। ওখানেই পড়াশুনা করব।

তারপর একদিন কাকু নিজে আমাকে ইউনিভার্সিটিতে নিয়ে এম এতে ভর্তি করে দিলেন আর বললেন, এতোদিনে নিশ্চয়ই আমাকে চিনেছ। ট্রিট মি অ্যাজ এ রিয়েল ফ্রেন্ড, কোনো ব্যাপারে দ্বিধা করবে না।

আমিও সঙ্গে সঙ্গে বললাম, আমি আপনার ফ্ল্যাটে থাকছি বলে আপনিও কোনো ব্যাপারে দ্বিধা করবেন না।

কাকু বললেন, সন্ধের পর দু এক পেগ হুইস্কি খাই, তা তো তুমি জানো। সুতরাং আর কোনো ব্যাপারে তো আমার দ্বিধা হবার কোনো কারণ নেই।

হুইস্কি খাবার কথা বলছি না। আপনার জীবনধারণের অন্য কোনো ব্যাপারেও দ্বিধা করবেন।

না, না, কোনো ব্যাপারেই দ্বিধা সঙ্কোচ নেই।

আমার নতুন জীবন বেশ ভালো ভাবেই শুরু হল। সালাউদ্দিন আসার আগেই উঠে পড়ি। স্নান সেরে বেরুতেই সালাউদ্দিন আসে। চা খাই। কারুর সঙ্গে একটু কথা বলি। খবরের কাগজ পড়ি। তারপর একটু পড়াশুনা করি। পড়াশুনা করতে করতেই সামান্য কিছু খাই। তারপর কাকু অফিস বেরিয়ে যাবার পরই খেতে বসি! খেয়ে দেয়েই ইউনিভার্সিটি। বেরুবার সময় সালাউদ্দিনকে জিজ্ঞাসা করি, চাচা, কিছু আনতে হবে?

এমনি কিছু আনতে হবে না, তবে সাহেবের গেঞ্জি কিনে আনলে ভালো হয়।

ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে কলেজ স্ট্রিট মার্কেট থেকে কাকুর জন্য চারটে গেঞ্জি কিনেই বাড়ি আসি। ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরে কোনো দিন সালাউদ্দিনের দেখা পাই, কোনোদিন পাই না। একটু বিশ্রাম করি। হয়তো কোনো পত্র পত্রিকা একটু উল্টে দেখি। কোনো কোনোদিন দু-একজন বান্ধবী এসেও হাজির হয়। সবাই মিলে আড্ডা দিই, চা-টা খাই।

এর মধ্যে টেলিফোন বেজে ওঠে।

হ্যালো! কে কাকু!

কী করছ?

সুপর্ণা আর আরতি এসেছে। ওদের সঙ্গে গল্প করছি।

নো বয় ফ্রেন্ড?

আমি হাসতে হাসতে বলি, নো দেয়ার ইজ নো বয় ফ্রেন্ড।

আমার সব বান্ধবীদের সঙ্গেই কাকুর খুব ভাব। আমার কথা শুনেই ওরা বুঝতে পারে, কাকুর ফোন। আরতি তাড়াতাড়ি উঠে এসে রিসিভারের সামনে মুখ দিয়ে বলে, কাকু, সিনেমা দেখাবেন না?

কাকু আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, কে সিনেমা দেখার কথা বলল?

আমি বললাম, আরতি।

আর কেউ আছে?

সুপর্ণাও আছে। ওদের বলে দাও রবিবার দুপুরে আমাদের সঙ্গে খাবে ও সিনেমা দেখবে।

এ রকম আনন্দ, হৈ-হুঁল্লোড় আমরা মাঝে মাঝেই করি। কখনও কখনও ছুটির দিনে আমি আর কাকু কোথাও আশে-পাশে ঘুরে আসি।

যাই হোক ইউনিভার্সিটি থেকে ফিরে এসে আমি আর কোথাও যাই না। একটু বিশ্রাম করে দু-এক ঘণ্টা পড়াশুনা করি। কাকু অফিস থেকে বেরিয়ে অফিসের কাজে সলিসিটার অ্যাডভোকেটদের চেম্বার ঘুরে সাড়ে সাতটা আটটায় বাড়ি ফিরলেই আমি চা-টা দিই। একটু গল্প করি। তারপর উনি স্নান করতে গেলে আমি কোনো কোনোদিন সামান্য কিছু রান্নাবান্না করি।

এরপর কাকুর ড্রিঙ্ক করার পালা। এখন আর কাকুকে কিছু করতে হয় না। আমিই বোতল থেকে গেলাসে হুইস্কি ঢালি, সোড়া মিশিয়ে ওকে দিই। ওকে সাহচর্য দেবার জন্য আমিও এক গেলাস অরেঞ্জ স্কোয়াস বা অন্য কোনো সফট ডি নিই। তারপর কাকু হুইস্কির গেলাসটা একটু উঁচু করে ধরে বলেন, চিয়ার্স। ফর আওয়ার লাস্টিং ফ্রেন্ডশিপ!

আমি মাথা নত করে হাসি মুখে কাকুর শুভ কামনা গ্রহণ করি।

দু-এক ঘন্টা সময় কেটে যায়।

তারপর আমরা খাওয়া-দাওয়া করে শুয়ে পড়ি।

এইভাবেই দিনগুলো বেশ কাটছিল। দেখতে দেখতে কটা মাস পার হয়ে গেল।

.

সেদিন কাকুর জন্মদিন। কাকু অফিস থেকে ফিরেই আমার হাতে একটা প্যাকেট দিয়ে বললেন, আজ তুমি এই শাড়িটা পরলে আমি খুব খুশি হব।

নিশ্চয়ই পরবো।

এখুনি পরে এসো।

স্ট্যাডিতে গিয়ে প্যাকেট খুলে দেখি, বেশ দামি মাইসোর সিল্কের শাড়ি। পরলাম। তারপর আমার কিনে আনা উপহারটা কাকুকে দিয়ে প্রণাম করতেই উনি আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন, এ বটল অফ স্কচ! লাভলি!

আমি ওকে প্রণাম করে সোজা হয়ে দাঁড়াতেই উনি দুহাত দিয়ে আমার মখখানা ধরে কপালে স্নেহচুম্বন দিয়ে বললেন, গড ব্লেস ইউ।

তারপর কাকু স্নান করে আসতেই ওর গেলাসে নতুন স্কচের বোতল থেকে হুইস্কি ঢালতেই উনি দুহাত ধরে বললেন, কবিতা, আজ আমার একটা অনুরোধ রাখতে হবে।

বলুন কি অনুরোধ?

আজ আমার সঙ্গে তোমাকেও একটু ড্রিঙ্ক করতে হবে।

এই পৃথিবীর সমস্ত আপনজনকে হারাবার পর যার স্নেহচ্ছায়ায় আমি আশ্রয় পেয়েছি, সেই কাকুর জন্মদিনে আমি কিছুতেই তার অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারলাম না। বললাম, করব।

কাকু নিজেই দুটো গেলাসে হুইস্কি-সোডা ঢেলে আমার হাতে একটা গেলাস তুলে দিতেই

আমি বললাম, চিয়ার্স!

চিয়ার্স!

গেলাসে এক চুমুক দিয়েই বললাম, এ এমন কি মধু যে আপনি রোজ রোজ খান? আস্তে আস্তে একটু একটু করে খাও। দেখবে কি ভালো লাগছে।

ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় এক পেগ শেষ করেই আমি দুজনের খাবার নিলাম। কাকু আবার দুটো গেলাস ভরে ডাইনিং টেবিলে আসতেই আমি বললাম, আবার!

আজ আমাকে দুঃখ দিও না কবিতা।

.

কথায় বলে, লোকে অনুরোধে পেঁকি গেলে। আমিও কারুর অনুরোধে সেদিন দু পেগ হুইস্কি খেলাম। খাওয়া দাওয়া শেষ করে ওই নতুন মাইসোর সিল্কের শাড়ি পরেই আমি শুয়ে পড়লাম।

তখন কত রাত জানি না। হঠাৎ ঘুম ভেঙে যেতেই দেখি, কাকু আল্‌তো করে আমার বুকের ওপর হাত রেখে আমার পাশে অসহায় শিশুর মতো অকাতরে ঘুমুচ্ছেন। মুহূর্তের জন্য চমকে উঠলেও কিছুটা নেশার ঘোরে, কিছুটা ঘুমের ঘরে আমি ওকে কিছুই বলতে পারলাম না। আমি আবার ঘুমিয়ে পড়লাম।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *