লোহার দানো
এক বাপ। তার তিন ছেলে। ছেলেরা বেশ বড় হয়েছে। বাবা একদিন রাজমিস্ত্রিদের ডেকে পাঠালেন। তারপর হুকুম দিলেন, ‘আমার এই তিন ছেলের জন্যে তিনটে বাড়ি বানিয়ে দাও তো।’ তারপর ছেলেদের ডেকে বললেন, ‘শোনো বাছারা, একটা কথা বলি বাছারা; বয়স তো হল এবার কিন্তু তোমাদের বিয়ে-সাদি করতে হবে। বাড়ি ঘর সব তৈরি হল বলে। আর ঘরনি নেই? যত তাড়াতাড়ি পারো বউ আনা চাই।’
‘বউ? বউ কোথায় পাব?’
‘রোসো এক্ষুনি বলছি।’ বুড়ো তিনটে আপেল নিয়ে এল। ছেলেদের হাতে আপেল তিনটে দিয়ে বললে, ‘তিনজনে আলাদা আলাদা দিকে ছুড়ে দাও। যেখানটিতে গিয়ে আপেল পড়বে ঠিক সেখানটিতে বউয়ের দেখা মিলবে।’
তিন ভাই বাবার হাত থেকে তিনটে আপেল নিল। বড়ভাই ঘুরে পুবে মুখ করে দাঁড়ালে। তারপর হেঁইয়ো বলে জোর এক ঝাঁকানি দিয়ে ছুড়ে দিল আপেলটা। আপেল গিয়ে পড়ল পুরুতের বাড়ির বাগানে। সেখানে বাদাম গাছের তলায় বসে বসে পুরুতের মেয়ে গান গাইছিল আর সেলাই করছিল। হঠাৎ আকাশ থেকে আপেল পড়তে দেখে পুরুতের মেয়ে চট করে কুড়িয়ে নিল আপেলটা। তারপর জামার মধ্যে লুকিয়ে রেখে দিল।
মেজভাই সূর্য যেদিকে পাটে বসেন সেই দিকে মুখ করে দাঁড়ালে। তারপর জোরসে দিল আপেলটা ছুড়ে। আপেলটা গিয়ে পড়ল এক বাড়ির চৌকাঠের কাছে। সেই বাড়িতে থাকত এক বুড়ি। ঠিক সময়েই বুড়ির মেয়ে ঘরের বাইরে যাচ্ছিল। আপেল দেখেই নিলে টপ করে তুলে।
ছোটভাই দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে ভাবলে আমার কপালে বড়লোকের মেয়ে তো আর জুটবে না। তাই বনের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে দিলে আপেলটা ছুড়ে। আপেল গিয়ে পড়ল মস্ত মস্ত মাথা উঁচু বিশাল সারি দেওয়া বনের ঠিক মাঝখানটিতে। কাছেই এক বুড়ো ওক গাছ। বয়স তার কবে একশো বছর পেরিয়ে গেছে। বুড়ো ওকের গা ঘেঁসে পেরিয়ে যাচ্ছিল একটা কচ্ছপ। লাল টুকটুকে আপেলটা দেখে গড়িয়ে গড়িয়ে এনে বুকের তলায় রেখে অপেক্ষা করতে লাগল।
বুড়ো বললে, ‘যাও তো বাছারা, এবার যে যার বউ নিয়ে এসোগে।’ বড়ভাই সোজা চলে গেল পুবে সেই পুরুতের বাড়িতে। তারপর চটপট পুরুতের মেয়েকে নিয়ে এসে ঘরে তুললে।
মেজভাই নিয়ে এল সেই বুড়ির মেয়েকে। আর ছোটভাই? না পায় খুঁজে আপেল, না পায় খুঁজে বউ। কী আর করবে। নিজেই নিজেকে ধিক্কার দেয়। এবার সে কচ্ছপটা তুললে আপেল খুঁজতে। ওমা দেখে কী কচ্ছপের পেটের তলাতেই আপেল রয়েছে। কী আর করে। কচ্ছপটাকেই কোলে করে বাড়ি নিয়ে গেল। আর আপেলটা নিল অন্য হাতে। বাড়ি যাবার পর বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেছে। ছোটভাইয়ের মনে হল কচ্ছপ-বউয়ের খিদে পায়নি তো? একটা ঝুড়ি চাপা দেওয়া ছিল তার কচ্ছপ-বউ। ঝুড়িটা তুলে কাছেই আপেলটা রেখে দিল।
ছোটভাই দরজা এঁটে দিয়ে চলে গেল মাঠে কাজ করতে। সারাদিন মাঠে খাটাখাটনি করে সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরল ছোটভাই শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে। পেটেও তেমনি খিদে। দরজা খুলে ঘরে ঢুকে দেখে ও-মা— এ কী কাণ্ড! নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারে না। সারা ঘর তকতক ঝকঝক করছে। ঝাঁটপাট দেওয়া সারা। সুন্দর করে সব গোছানো। প্রতিটি জিনিস যেখানে রাখবার সেখানেই আছে। চুল্লির উপর থরে থরে বাসন ভরা খাবার। মুখে দিয়ে ছোটভাই তো ভারী খুশি— আঃ কী স্বাদ! কোনটা ফেলে কোনটা খায়? অবাক হয়ে ভাবে কে আমার ঘর দোর ঝাড়লে, মুছলে, গুছোলে? কেই বা এমন খাসা রান্না করলে? টেবিলে ঠিক খেতে বসতে যাবে ছোটভাইয়ের মনে পড়ল তার কচ্ছপ-বউয়ের কথা। ছোটভাই ঢাকনাটা তুলে কচ্ছপের কাছে গিয়ে দেখে ঠিক যেমনটি ছিল কচ্ছপ তেমনটিই আছে। কচ্ছপ-বউ বসে বসে ঢুলছে। পরনে তার নিজের শক্ত চামড়ার তৈরি পোশাক। আপেলটা পাশে পড়ে আছে। মনে হয় বেশ কয়েকবার কেউ কামড়ে খেয়েছে।
ছোটভাই টেবিলে বসে পেটভরে খেল। টানটান নরম বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে দিল এক লম্বা ঘুম। পরদিন সকালে আবার দোর-জানলা বন্ধ করে ছোটভাই চলে গেল মাঠে কাজ করতে। সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরে দেখে— কালকের চেয়ে আজ আরও পরিষ্কার করে ঘর-দোর গোছানো। চুল্লির উপর মস্ত বড় বড় বাসন ভরা সব চমৎকার খাবার। ছোটছেলে ভাবে দেখো তো কাণ্ড। কার এত সাহস? কুলুপ আঁটা থাকে, তবু ঘরে ঢুকে ঘরকন্নার সব কাজ সেরে যায়! ব্যাপারটা তো জানা দরকার।
পরদিন সকালে ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতে ছোটভাই বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ল। বলদদুটোকে খোঁটা থেকে খুলে এমন ভাব করতে লাগল যেন এই মাঠে চলল আর কী। তারপর গ্রামের শেষ পর্যন্ত একবার গিয়েই ফিরে এল বাড়িতে। ঘরের পিছনে নিচু হয়ে বসে লুকিয়ে লুকিয়ে ছোট জানলাটায় চোখ লাগিয়ে বসে রইল। দেখবে ব্যাপারটা কী। যে ঝুড়িটার তলায় কচ্ছপটা থাকত, দেখে কী সেটা আস্তে আস্তে উঠে গেল। বেরিয়ে এল তার কচ্ছপ-বউ। আর আপেলটা দিলে সামনে গড়িয়ে। আপেলটা গড়িয়ে আলনার নীচে চলে গেল। কচ্ছপ এগোয় আপেলের পেছন পেছন। তারপর আপেলটা বের করে কচ্ছপ-বউ এক কামড়ে বেশ অনেকটা আপেল খেয়ে নিল। আপেলটা খেয়েছে কি খায়নি তক্ষুনি সে হয়ে গেল পরমাসুন্দরী এক কন্যা। আহা সে কী রূপ। শোনা যায় না, বলা যায় না, না যায় লেখা। সুন্দরী তো হাত পা ধুয়ে নিল। তারপর ঘরদোর ঝাঁটপাট দিল। চুলো ধরাল। তারপর দুটো-তিনটে পাত্রে রান্না বসিয়ে লেগে গেল ময়দা মাখতে। তার হাতে চাকি-বেলনা এমন ঘুরতে লাগল ঠিক জাদুর মতো। রুটি বেলছে আর মাটিতে ছড়িয়ে পড়ছে সাদা সাদা আটার গুঁড়ো। তারপর সে গেল দাওয়ায়—
‘একটি দুটি
পাঁচটি সাতটি,
নরম রুটি
জাদুর চাকতি,
কাছিম বউটি এসে
(আমার) কপাল ফিরল শেষে।’
ছোটভাই জানলা দিয়ে দেখে আর মনে মনে ছড়া কাটে। হঠাৎ ছোটভাইয়ের মনে পড়ল কাজকর্ম সারা হলেই তো কচ্ছপ-বউ তার খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়বে। তার আগেই আজ খোলসটা পোড়ানো চাই। একটু পরেই কচ্ছপ-কন্যা গেল কুয়োপাড়ে দড়ি বালতি নিয়ে জল আনতে। বাইরে পা দিয়েছে কি দেয়নি ছোটভাই এসে ঢুকল ঘরে। খোলসটা চট করে নিয়ে একটানে সোজা ছুড়ে দিল উঠোন পার করে ফেলে। ও-মা তক্ষুনি কোথা থেকে সাঁ করে নেমে এসে একটা বাজপাখি ছোঁ মেরে নিয়ে গেল কচ্ছপকুমারীর জোব্বাটা।
‘হায়, হায়, কী করলে, কী করলে’, বলতে বলতে ছুটে এল কচ্ছপকুমারী। ‘এবার আর তোমার দুর্দশার শেষ থাকবে না গো।’
‘তোমার জন্য আমি সব কষ্ট সহ্য করতে পারব।’ হাসিমুখে উত্তর দেয় ছোটভাই।
এদিকে হয়েছে কী সন্ধ্যা হতে না হতেই সারাগ্রামে খবরটা ছড়িয়ে পড়ল। কচ্ছপ আর কচ্ছপ নেই। সে এক পরমাসুন্দরী মেয়ে হয়ে গেছে। অন্য দু’জন বউ কোথায় লাগে। পুরুতের মেয়ে আর বুড়ির মেয়ে, ওর দুই জা, ওর নখের যুগ্যি নয়।
মেয়ের রূপের কথা গিয়ে উঠল দেশের জারের কানে। তাঁর আর তর সয় না। সোজা হাজির ছোটভাইয়ের বাড়ি। কচ্ছপকুমারী কী আর করে বাড়িতে অতিথি, সামনে যেতেই হল। নিয়ম আছে অতিথি এলে ডেকে নিয়ে ঘরে বসাতে হয়। জার বসলেন। চোখে চশমা এঁটে মেয়েটির মাথা থেকে পা অবধি খুঁটিয়ে দেখলেন। তারপর ছোটভাইয়ের দিকে ফিরে বললেন, অবশ্য বিড়বিড় করে, ‘এ সুন্দরী বাপু তোমার জন্য নয়। আমি একে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাব— এ হবে আমার পাটরানি।’
‘আমার বউ আমি কিছুতেই দেব না।’ ছোটভাই উত্তর দিল।
‘দিতেই হবে, না দিলে মজা টের পাবি।’ জার তো আরও কত গালমন্দ করলেন। তারপর নিজের লোকজনদের হেঁকে বললেন, ‘লাগাও একশো বেত।’ জারের লোকজন তক্ষুনি ছোটভাইকে মাটিতে পেড়ে ফেলে মারতে শুরু করল। আর তার বউ তো হাত জোড় করে চিৎকার করতে লাগল— ‘হায় হায় গো কেন আমার চামড়ার খোলসটা ফেলে দিলে। খোলসটা থাকলে তার তলে চাপা থাকতুম। কেউ দেখতে পেত না। এখন দেখো তো কী বিপদ। লোকগুলো কী নিষ্ঠুর— তোমায় কী মারই না মারছে।’
একশো বেত মারা শেষ হল। জার আবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘কী হে, এবার দেবে তো বউ?’
‘কিছুতেই না, মারতে চাও মেরে ফেলো। তবু আমার বউ আমি দেব না।’
জার ঠোঁটের উপর ঠোঁট চেপে কী যেন ভাবলেন। তারপর লোকজনদের হুকুম দিলেন, ‘যাও তো এক্ষুনি ন’টা থলে নিয়ে এসো। তিন থলে যব, তিন থলে গম আর তিন থলে চাল চাই।’
জারের লোকজন তক্ষুনি সব এনে হাজির করল। জারের হুকুম হল, ‘সব দানা মাটিতে উপুড় করে ভাল করে মিশিয়ে দাও।’ ন’থলে শস্য তখুনি উপুড় করে মিশিয়ে জারের লোকজন মস্ত একটা স্তূপ করে দিল।
জার বললেন, ‘কাল সকাল পর্যন্ত সময় দিচ্ছি। চাল, যব, গম আলাদা করে রাখা চাই। যদি ভোরের প্রথম কুঁকড়ো ডাকার আগে কাজ শেষ করতে পারিস, তবে তোর বউ তোর কাছে থাকবে। আর যদি না পারিস তবে তোর বউকে প্রাসাদে নিয়ে যাব।’
জার চলে গেলেন। ছোটভাই কপাল চাপড়ে কাঁদে আর বলে, ‘এমন বউ বুঝি রাখতে পারব না ঘরে। হায় হায় গো।’ দু’চোখ বেয়ে তার চোখের জল পড়ছে। কচ্ছপকুমারী কাছে এল, তার ছোট্ট সুন্দর রুমাল দিয়ে ছোটভাইয়ের চোখদুটি মুছিয়ে দেয়। বলে ‘কেঁদো না গো কেঁদো না। দৌড়ে যাও ঠিক বনের মাঝে। যেখানে সেই একশো বছরের বুড়ো ওক গাছ দাঁড়িয়ে আছে ঠিক সেইখানটিতে যাবে। হাতে এই পাথরটা নিয়ে যাও। তিনবার পাথরটা ওই ওক গাছের গুঁড়িতে ঠুকবে আর বলবে—
শোনো বুড়ো ওক বন,
ওক পাইনের মিশেল বন,
(যা) বলছি শুনে নাও
কাজ একটি মোরে,
দিতেই হবে করে।
এই ছড়াটা বলেই পিছন ফিরে এক্কেবারে দে দৌড়। খবরদার পিছে ফিরে তাকাবে না।’
ছোটভাই পাথরটা নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলল সেই বনে। বুড়ো ওকের কাছে পৌঁছে যেমনটি বউ তিনবার পাথর ঠুকে ছড়া বলতে শিখিয়ে দিয়েছিল ঠিক তেমনি বলল। তারপর এক্কেবারে দে দৌড়। একটিবারও পিছে ফিরে তাকাল না। তার পিছনে পিছনে ধেয়ে চলল অগুনতি কালো কালো পিঁপড়ে। সারি বেঁধে নদীর স্রোতের মতো তারা গিয়ে ঢুকল ছোটভাইয়ের ঘরে। এসেই সবাই মিলে কাজে লেগে গেল। একটি একটি করে যব গম চাল বেছে আলাদা আলাদা তিনটে স্তূপ করে দিল। প্রথমটা সোনালি গমের স্তূপ। দ্বিতীয় স্তূপে যব আর তৃতীয় স্তূপে সাদা চাল।
ভোর হতেই লোকজন নিয়ে জার এসে হাজির। কাজ সারা দেখে জারের কী হা হুতাশ। জিব কামড়ান। কপাল চাপড়ান। মন ঠিক করে আবার ছোটভাইকে হুকুম করলেন, ‘কাল সকাল হবার আগেই লোহা দিয়ে একটা মানুষ তৈরি করে দিতে হবে। সে—
হাঁটবে চলবে খটখট,
কথা কইবে পটপট,
থামবে দোরের কাছ ঘেঁষে
আদব কায়দা, কুর্নিশে
ভোর হবে যেই রাতির,
করবে আমায় খাতির।’
আবার তো ছোটভাই কাঁদতে বসল। ভারী চিন্তা। কচ্ছপ-বউ বলল, ‘ভেবো না গো, ভেবো না, জলদি বনে যাও। যেখানে গিয়েছিলে ঠিক সেখানটিতে যাবে। বলবে—
শোনো বুড়ো ওক বন,
ওক পাইনের মিশেল বন,
আমার দিকে দেখো
কথাটি মোর রাখো,
কোথায় আছে লোহার দানো,
তলব করে জলদি আনো
একটুও দেরি না-করে
পাঠিয়ে দেবে মোর ঘরে।’
ছোটভাই বউয়ের কথামতো সব ঠিকঠাক করল। তারপর ঘরে ফিরে গেল, একটিবারও পিছন ফিরে তাকাল না। আর লোহার দানোর সে কী গর্জন! সারা বন তছনছ তোলপাড়।
পরদিন ভোরে জার আসতেই ছোটভাই বললে, ‘এই নাও তোমার লোহার মানুষ।’
জারের তো চক্ষুস্থির। লোহার মানুষ সত্যি সামনে— চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসে। দাঁতে লাগে ঠক্ঠকি। এমন ভয়ংকর জীব জার জন্মে দেখেননি। হাতদুটো ইস্পাত দিয়ে তৈরি, মাথাটা পেটা লোহার। আর লোহার পায়ে লোহার ঝনঝনানি বুট। পা ফেলে আর আগুন ঠিকরোয়। জারকে দেখে লোহার দানো ধীরে ধীরে তার দিকে এগোয়। কোথায় জারমশাইকে নিচু হয়ে কুনিশ করবে, তা নয় জারকে দুটো হাতে বাগিয়ে ধরে সে কী ঝাঁকুনি! জার তো চিতপটাং। এক্কেবারে পপাত চ মমার চ। আর ওঠেই না। জারের লোকজন বিপদ দেখে যে যেদিকে পারলে ছুটে পালাল। লোহার দানো ফিরে গেল সেই বনে। আর সবার ছোট যে ভাই সে তার সবার সেরা সুন্দরী বউ নিয়ে সুখে স্বচ্ছন্দে মনের আনন্দে ঘর করতে লাগল।