1 of 2

বিধবা ও কুক্কুটী

বিধবা ও কুক্কুটী

কোনও গ্রামে এক দরিদ্র মুসলমান বিধবা বাস করিত। সে কয়েকটী কুক্কুট কুক্কুটী পুষিয়াছিল। কুক্কুটীরা প্রত্যহ যে ডিম পাড়িত, সে ঐ ডিম লইয়া নিকটস্থ হাটে বিক্রয় করিত। বিক্রয়লব্ধ অর্থ হইতে সে কায়ক্লেশে জীবিকা অর্জ্জন করিত। সকল কুক্কুটী অপেক্ষা একটী কুক্কুটীকে ঐ দরিদ্র রমণী ভালবাসিত, কারণ ঐ কুক্কুটী প্রত্যহ প্রভাতে একটী করিয়া ডিম পাড়িত। বিধবা এই জন্য উহাকে অন্যান্য কুক্কুটী অপেক্ষা প্রত্যহ অধিক ধান খাইতে দিত। একদিন বিধবা ভাবিল, যদি ঐ সামান্য ধান খাইয়া কুক্কুটী প্রত্যহ একটী করিয়া ডিম পাড়ে, তাহা হইলে যদি সে প্রত্যহ উহার আহারের পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি করিয়া দেয়, তাহা হইলে কুক্কুটী নিশ্চিতই প্রত্যহ দুইটী করিয়া ডিম পাড়িবে, আর তাহা হইলে, সে সেই ডিম বিক্রয় করিয়া দ্বিগুণ অর্থ সঞ্চয় করিতে পারিবে। ভবিষ্যতে অধিক অর্থ উপার্জ্জন করিতে পারিবে এই আশায় উৎফুল্ল হইয়া, বিধবা সেই দিন হইতে সেই প্রিয় কুক্কুটীর আহারের পরিমাণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি করিয়া দিল। প্রথম দুই তিন দিন কুক্কুটী পূর্ব্ববৎ ডিম পাড়িল। কিন্তু তাহার পর অধিক আহারের ফলে ক্রমে যতই হৃষ্টপুষ্ট হইতে লাগিল, ততই দুই এক দিন অন্তর ডিম পাড়িতে লাগিল। শেষে কুক্কুটী এত অধিক হৃষ্টপুষ্ট হইয়া পড়িল যে, একেবারে ডিম পাড়া বন্ধ করিয়া দিল। তখন বিধবা কপালে করাঘাত করিয়া বলিল, “হায় ! আমি বুদ্ধির দোষে লোভ করিতে গিয়া সব হারাইলাম।” 

অতি লোভ অনেক সময় অনিষ্টকর হইয়া থাকে। 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *