1 of 2

কচ্ছপ ও ঈগলপক্ষী

কচ্ছপ ও ঈগলপক্ষী

পক্ষীরা অনায়াসে আকাশে উড়িয়া বেড়ায়, কিন্তু আমি পারি না; ইহা ভাবিয়া, এক কচ্ছপ অতিশয় দুঃখিত হইল, এবং, মনে মনে অনেক আন্দোলন করিয়া, স্থির করিল, যদি কেহ আমায়, এক বার, আকাশে উঠাইয়া দেয়, তাহা হইলে, আমিও, পক্ষীদের মত, সচ্ছন্দে উড়িয়া বেড়াইতে পারি। অনন্তর, সে এক ঈগল পক্ষীর নিকটে গিয়া কহিল, ভাই! যদি তুমি, দয়া করিয়া, আমায় একটি বার আকাশে উঠাইয়া দাও, তাহা হইলে, সমুদ্রের গর্ভে বহু রত্ন আছে, সমুদয় উদ্ধৃত করিয়া তোমায় দি। আকাশে উড়িয়া বেড়াইতে, আমার বড় ইচ্ছ; হইয়াছে।

 ঈগল, কচ্ছপের অভিলাষ ও প্রার্থনা শুনিয়া, কহিল, শুন কচ্ছপ! তুমি যে মানস করিয়াছ, তাহা সিদ্ধ হওয়া অসম্ভব। ভূচর জন্তু, কখনও, খেচরের ন্যায়, আকাশে উড়িতে পারে না। তুমি এ অভিপ্রায় ছাড়িয়া দাও। আমি যদি তোমায় আকাশে উঠাইয়া দি, তুমি তৎক্ষণাৎ পড়িয়া যাইবে, এবং, হয় ত, ঐ পড়াতেই, তোমার প্রাণত্যাগ ঘটিবেক। কচ্ছপ ক্ষান্ত হইল না, কহিল, তুমি আমায় উঠাইয়া দাও। আমি উড়িতে পারি, উড়িব; না উড়িতে পারি, পড়িয়া মরিব; তোমায় সে ভাবনা করিতে হইবেক না। এই বলিরা, কচ্ছপ অতিশয় পড়াপীড়ি করিতে লাগিল। তখন ঈগল, ঈষৎ হাস্য করিয়া, কচ্ছপকে লইয়া অনেক উর্ধে উঠিল, এবং, তবে তুমি উড়িতে আরম্ভ কর, এই বলিয়া, উহাকে ছাড়িয়া দিল। ছাড়িয়া দিবা মাত্র, কচ্ছপ এক পাহাড়ের উপর পড়িল, এবং, যেমন পড়িল, তাহার সর্ব্ব শরীর চূর্ণ হইয়া গেল।

অহঙ্কার করিলেই পড়িতে হয়।

নাহঙ্কারাৎ পরো রিপুঃ।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *