॥ ৩ ॥
যে পথে এসেছিলাম সেই পথেই আবার ফিরে চলেছি। দেড়টা বেজে গেছে, কিন্তু খাওয়ার কথা মনেই নেই। যশোহর রোডে পড়ে বলরামবাবু একবার বলেছিলেন, ‘চা খাবেন নাকি স্যার? গলাটা একটু ভিজিয়ে নিলে……’ ফেলুদা সে কথায় কান দেয়নি। বলরামবাবুও বোধহয় ব্যাপারটায় একটা অ্যাডভেঞ্চারের গন্ধ পেয়ে আর চায়ের কথা বলেননি।
গাড়ি পঁচাত্তর কিলোমিটার স্পিডে ছুটে চলেছে, আর আমি ভাবছি কী অল্পের জন্যেই না মাথাটা ফসকে গেল। সকালে যদি লোডশেডিংটা না হত, আর রেডিয়োর খবরটা যদি ঠিক সময়ে শুনতে পেতাম, তা হলে এতক্ষণে হয়তো আমরা মূর্তি সঙ্গে নিয়ে আর্কিয়লজিক্যাল সার্ভের আপিসে ছুটে চলেছি। কিংবা হয়তো সোজা ভুবনেশ্বর। মন্দিরের গায়ে ভাঙা মূর্তি আবার জোড়া লেগে যেত, আর ফেলুদা তার জোরে হয়তো পদ্মশ্রী-টদ্মশ্রী হয়ে যেত।
এই এক ঘণ্টার রোদেই রাস্তা অনেকটা শুকিয়ে গেছে, মনে মনে ভাবছি বলরামবাবু আরেকটু স্পিড তুললে পারেন, এমন সময় হঠাৎ একটা জিনিস চোখে পড়ায় পালস রেট-টা ধাঁ করে বেড়ে গেল।
একটা গাড়ি-মেরামতের দোকানের সামনে একটা নীল অ্যাম্বাসাডর দাঁড়িয়ে আছে।
বলরামবাবু যে সিদিকপুরের কথাবার্তা মন দিয়ে শুনেছিলেন সেটা তার প্রশ্ন থেকে বুঝতে পারলাম। —‘গাড়ি থামাব স্যার?’
‘সামনের চায়ের দোকানটায়’, ফেলুদা চাপা গলায় জবাব দিল।
বলরামবাবু স্টাইলের মাথায় মেরামতির দোকানের দুটো দোকানের পরে ট্যাক্সিটাকে রাস্তার ডানদিকে নিয়ে গিয়ে ঘ্যাঁ-ষ করে ব্রেক কষলেন। ফেলুদা গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে তিন কাপ চা অর্ডার দিল। কাপ তো নয়, কাচের গেলাস।
‘আর কী আছে ভাই?’
‘বিস্কুট খাবেন? ভাল বিস্কুট আছে।’
কাচের বোয়ামের মধ্যে গোল গোল নানখাটাই-টাইপের বিস্কুট, ফেলুদা তারই দুটো করে দিতে বলল।
আমার চোখ নীল অ্যাম্বাসাডরের দিকে। পাংচার সারানো হচ্ছে। একটি ভদ্রলোক, মাঝারি হাইট, মাঝারি রং, বয়স চল্লিশ-টল্লিশ, ঘন ভুরু ঘন হাতের লোম, কানের পাশ দিয়েও বোধহয় লোম বেরিয়েছে, মাথার চুল ব্যাকব্রাশ করে আঁচড়ানো। গাড়ির পাশে ছটফট ভাব করে পায়চারি করছেন আর ঘন ঘন টান দিচ্ছেন আধপোড়া সিগারেটে। বাঙালি কি? কথা না বললে বোঝার উপায় নেই।
চা তৈরি হচ্ছে। ফেলুদা চারমিনার বার করে একটা মুখে পুরে পকেট চাপড়ে দেশলাই না-পাওয়ার ভান করে ভদ্রলোকের দিকে এগিয়ে গেল।
আমি আমাদের ট্যাক্সির কাছেই রয়ে গেলাম। দুই গাড়ির মধ্যে তফাত বিশ-পঁচিশ হাত। বলরামবাবুর আড়চোখ নীল গাড়ির দিকে।
‘এক্সকিউজ মি, আপনার কাছে কি…’
ভদ্রলোক পকেট থেকে একটা লাইটার বার করে জ্বালিয়ে ফেলুদার দিকে এগিয়ে দিলেন।
‘থ্যাঙ্কস্!’ ফেলুদা ধোঁয়া ছাড়ল। ‘টেরিবল ব্যাপার!’
ভদ্রলোক ফেলুদার দিকে চেয়ে আবার চোখ নামিয়ে নিলেন।
‘আপনি তো ক্র্যাশের ওখানে গিয়েছিলেন’, ফেলুদা বলল। —‘আপনার গাড়িটা যেন আসতে দেখলাম……?’
‘ক্র্যাশ?’
‘আপনি জানেন না? কাঠমান্ডুর প্লেন……সিদিকপুরে……’
‘আমি টাকি থেকে আসছি।’
টাকি হল হাসনাবাদের কাছেই একটা শহর।
আমরা কি তা হলে ভুল করলাম? গাড়ির নম্বরটা যদি দেখে রাখতাম তা হলে খুব ভাল হত।
‘আর কতক্ষণ লাগবে হে?’ ভদ্রলোক অধৈর্য হয়ে প্রশ্ন করলেন মেরামতির লোকটাকে।
‘এই হয়ে গেল স্যার। পাঁচ মিনিট।’
চায়ের দোকান থেকে বলরামবাবু হাঁক দিয়ে জানালেন চা রেডি। ফেলুদা নীল গাড়ি ছেড়ে আমাদের হলদে গাড়ির দিকে এগিয়ে এল। হাতে গেলাস নিয়ে তিনজনে দোকানের সামনের বেঞ্চিতে বসার পর ফেলুদা চাপা গলায় বলল, ‘ডিনাই করছে। ডাহা মিথ্যেবাদী।’
আমি বললাম, ‘কিন্তু নীল অ্যাম্বাসাডর তো আরও অনেক আছে। এ রংটা তো খুব কমন, ফেলুদা।’
‘লোকটার জুতোয় এখনও কালো ছাইয়ের দাগ লেগে আছে। তোর নিজের স্যান্ড্যালটার দিকে চেয়ে দেখেছিস একবার?’
সত্যিই তো! স্যান্ড্যালের রংটাই বদলে গেছে ক্র্যাশের জায়গায় গিয়ে। আর ওই ভদ্রলোকেরও তাই। ব্রাউন জুতোয় কালোর ছোপ।
ফেলুদা যে ইচ্ছে করেই ধীরে সুস্থে বিস্কুট খাচ্ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছিলাম। পাঁচ মিনিটের জায়গায় পনেরো মিনিট পরে অন্য গাড়িটা সুস্থ অবস্থায় মেরামতির দোকান থেকে বেরিয়ে যশোহর রোড দিয়ে কলকাতার দিকে রওনা দিল। আর তার পরমুহূর্তেই আমাদের গাড়িও ধাওয়া করল তার পিছনে। দুটোর মাঝখানে বেশ অনেকখানি ফাঁক, কিন্তু ফেলুদা বলল সেই ভাল; লোকটার সন্দেহ উদ্রেক করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
দমদমের কাছে এসে হঠাৎ আরেক পশলা বৃষ্টি নামল। সামনে সব ধোঁয়াটে হয়ে গেছে, ভাল দেখা যাচ্ছে না, তাই বলরামবাবুকে বাধ্য হয়েই স্পিড বাড়িয়ে নীল গাড়ির আরেকটু কাছাকাছি গিয়ে পড়তে হল। ভদ্রলোক বেশ রসিক; বললেন, ‘হিন্দি ফিলিমের মতন মনে হচ্ছে স্যার। সেদিন শত্রুঘনের একটা বইয়ে দেখলুম এইভাবে গাড়ির পেছনে গাড়ি ফলো করছে। অবিশ্যি সেখানে পেছনের গাড়িটা একটা পাহাড়ের গায়ে ক্র্যাশ করল।’
ফেলুদা বলল, ‘একদিনে একটা ক্র্যাশই যথেষ্ট। আপনি স্টেডি থাকুন। কলকাতায় পাহাড় না থাকলেও—’
‘কী বলচেন স্যার! থার্টিন ইয়ারস গাড়ি চালাচ্ছি—এখনও পর্যন্ত একটিও নট এ সিঙ্গল অ্যাক্সিডেন্ট।’
‘ডব্লু এম এ ফাইভ থ্রি ফোর নাইন’, ফেলুদা বিড়বিড় করে বলল। আমিও নম্বরটা মাথায় রেখে দিলাম, আর বার বার ‘পাঁতিচান…পাঁতিচান…পাঁতিচান’ আওড়ে নিলাম। এটা আর কিছুই নয়—পাঁচ তিন চার আর ন’য়ের প্রথম অক্ষরগুলো দিয়ে তৈরি। নম্বর মনে রাখার দু-তিন রকম উপায় ফেলুদা শিখিয়ে দিয়েছে, তার মধ্যে এটা একটা।
বলরামবাবু সত্যিই বাহাদুর ড্রাইভার, কারণ কলকাতার ট্র্যাফিকে ভরা গিজগিজে রাস্তা দিয়েও ঠিক নীল গাড়িকে সামনে রেখে চলেছেন। কোথায় যাচ্ছে গাড়িটা কে জানে।
‘মূর্তিটা নিয়ে কী করবে বলো তো লোকটা?’ শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করলাম ফেলুদাকে।
‘ভুবনেশ্বরে ফেরত নিয়ে যাবে না নিশ্চয়ই। যে জাতের ধুরন্ধর, তাতে মনে হয় আবার আরেকজন বিদেশি খদ্দের জোগাড় করার চেষ্টা করবে। একই জিনিস উপরো-উপরি দুবার বিক্রি করার এমন সুযোগ তো চট করে আসে না।’
নীল গাড়ি শেষ পর্যন্ত দেখি আমাদের পার্ক স্ট্রিটে এনে ফেলেছে। পুরনো গোরস্থান ছাড়িয়ে, লাউডন স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিটের মোড় ছাড়িয়ে শেষে গাড়ি দেখি হঠাৎ বাঁ দিকে মোড় নিয়ে কুইন্স ম্যানসনের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকছে।
‘যাব স্যার?’
‘আলবৎ।’
আমাদের ট্যাক্সিও গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকল। একটা প্রকাণ্ড খোলা জায়গা; তার মাঝখানে একটা পার্ক, আর চারদিকে ঘিরে রয়েছে পাঁচ-ছ’তলা উঁচু সব বাড়ি। পার্কের চারদিকে গাড়ি পার্ক করা রয়েছে, তার মধ্যে আবার দু-একটা স্কুটারও রয়েছে। আমাদের ডান দিকে কুইন্স ম্যানসন। আমরা ট্যাক্সি দাঁড় করালাম, নীল গাড়ি কিছু দূরে একেবারে শেষ মাথায় গিয়ে থামল। আমরা গাড়ির ভিতরে বসে আছি কী হয় দেখার জন্য।
ভদ্রলোক একটা কালো ব্যাগ হাতে নিয়ে নামলেন, দরজার কাচ তুললেন, দরজা লক করলেন, তারপর ডান দিকে গিয়ে একটা বড় দরজা দিয়ে কুইন্স ম্যানসনে ঢুকে গেলেন।
এক মিনিট অপেক্ষা করে ফেলুদাও ট্যাক্সি থেকে নামল আমি তার পিছনে। সোজা চলে গেলাম সেই দরজার দিকে। একটা ঘড় ঘড় শব্দ আগেই কানে এল; গিয়ে দেখি দরজা দিয়ে ঢুকেই একটা আদ্যিকালের লিফ্ট, সেটা সবেমাত্র নীচে নেমেছে। ঝটপটাং শব্দ করে লোহার কোলাপ্সিব্ল দরজা খুলে বুড়ো লিফটম্যান খাঁচা থেকে বেরিয়ে এল। ফেলুদা হঠাৎ একটা ব্যস্ততার ভাব করে তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘মিস্টার সেনগুপ্ত এইমাত্র ওপরে গেলেন না?’
‘সেনগুপ্ত কৌন?’
‘এইমাত্র যিনি ওপরে গেলেন?’
‘আভ্ভি গিয়া পাঁচ নম্বরকা মিস্টার মল্লিক। সেনগুপ্তা ইঁহা কোই নেহি রহ্তা।’
‘ও। আমারই ভুল।’
পাঁচ নম্বর ফ্ল্যাট। মিস্টার মল্লিক। এগুলো মনে রাখতে হবে। ফেলুদা খাতা আনেনি; বাড়ি গিয়ে নোট করে নেবে নিশ্চয়ই।
কিন্তু বাড়ি ফিরতে যে এখনও দেরি সেটা একটু পরেই বুঝলাম। ফেলুদা বলরামবাবুকে ভাড়া চুকিয়ে ছেড়ে দিল, ভদ্রলোক যাবার সময় একটা স্লিপ দিয়ে বলে গেলেন, ‘এটা আমার পাশের বাড়ির টেলিফোন, আপনি বললে আমায় ডেকে দেবে। দরকার-টরকার পড়লে একটু খবর দেবেন স্যার। একঘেয়ে কাজের মধ্যে যদি মাঝে মাঝে…।’
পার্ক স্ট্রিট থানার ও সি মিস্টার হরেন মুৎসুদ্দির সঙ্গে ফেলুদার আলাপ ছিল। দু বছর আগে হ্যাপি-গো-লাকি বলে একটা রেসের ঘোড়াকে বিষ খাইয়ে মারার রহস্য ফেলুদা আশ্চর্যভাবে সমাধান করেছিল; তখনই মুৎসুদ্দির সঙ্গে আলাপ হয়। আমরা এখন তাঁর আপিসে। ভদ্রলোক মূর্তি চুরির খবরটা কাগজে পড়েছেন। ফেলুদা সেইখান থেকে শুরু করে আজকের পুরো ঘটনাটা তাঁকে বলে বলল, ‘যদ্দূর মনে হয় এই মল্লিক চুরির ব্যাপারটা নিজে না করলেও, চোরাই মাল উদ্ধার করে সেটাকে পাচার করার ভারটা নিজেই নিয়েছে। তার সম্বন্ধে কিঞ্চিৎ ইনফরমেশন, আর একটি লোক তার পিছনে রাখা—এই দুটো অনুরোধ করতে আমি এসেছি। তার কার্যকলাপের দিকে একটু নজর রাখা দরকার। মিস্টার মল্লিক, পাঁচ নম্বর কুইন্স ম্যানসন, নীল অ্যাম্বাসাডর, নম্বর ডব্লু এম এ ফাইভ থ্রি ফোর নাইন।’
মুৎসুদ্দি এতক্ষণ একটা পেনসিল কানের মধ্যে গুঁজে বসেছিলেন, এবার সেটাকে টেবিলের উপর নামিয়ে রেখে বললেন, ‘হবে। আপনি যখন বলছেন তখন হবে। একটা স্পেশাল কনস্টেব্ল লাগিয়ে দিচ্ছি, সে ওকে চোখে চোখে রাখবে। আর আমাদের ফাইলে যদি কিছু থাকে তাও দেখছি। থাকবেই যে এমন কোনও কথা নেই, যদি না লোকটা এর আগে কোনও গণ্ডগোল করে পুলিশের নজরে এসে থাকে।’
‘ব্যাপারটা খুব আর্জেন্ট কিন্তু। মূর্তি আবার বেহাত হলেই মুশকিল।’
মুৎসুদ্দি মুচকি হেসে বললেন, ‘কেন, মুশকিল কেন? আমরা তো আর ঘোড়ার ঘাস কাটি না, মিস্টার মিত্তির। আপনি একা ম্যানেজ করতে না পারলে আমাদের সাহায্য চাইলে আমরা কি আর রিফিউজ করব? আমরা আছি কীসের জন্য? পাবলিককে হেলপ করার জন্যেই তো? তবে একটা কথা বলি—একটা অ্যাডভাইস, অ্যাজ এ ফ্রেন্ড—এই সব র্যাকেটের পেছনে মাঝে মাঝে এক একটা দল থাকে—গ্যাং—এবং তারা বেশ পাওয়ারফুল হয়। গায়ের জোর বলছি না। পয়সার জোর। পোজিশনের জোর। শিক্ষিত অবস্থাপন্ন লোকেরা যখন নোংরা কাজে নামে, তখন সাধারণ ক্রিমিন্যালদের চেয়ে তাদের বাগে আনা অনেক বেশি শক্ত হয়, জানেন তো? আপনি ইয়াং, ট্যালেন্টেড, তাই আপনাকে এগুলো বলছি—নইলে আর আমার কী মাথাব্যথা বলুন!……’
ওয়লডর্ফে চীনে খাবার অর্ডার দিয়ে ফেলুদা ম্যানেজারের ঘর থেকে কুইন্স ম্যানসন পাঁচ নম্বরে একটা টেলিফোন করে, হ্যালো শুনেই ফোনটা রেখে দিয়ে খানিকটা নিশ্চিন্ত হয়ে বলল, ‘লোকটা এখনও ঘরেই আছে।’
আমরা বাড়ি ফিরলাম পৌনে তিনটেয়। চারটের কিছু পরে মিস্টার মুৎসুদ্দির টেলিফোন এল। প্রায় পাঁচ মিনিট কথা হল, সেটা সঙ্গে সঙ্গে ফেলুদা তার খাতায় নোট করে নিল। তারপর আমি না জিজ্ঞেস করতেই আমার কৌতুহল মিটিয়ে দিল। —
‘লোকটার পুরো নাম জয়ন্ত মল্লিক। দিন পনেরো হল কুইন্স ম্যানসনে এসে রয়েছে। ফ্ল্যাটটা আসলে মিস্টার অধিকারী বলে একজন ভদ্রলোকের। ইনি ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের এক রেস্টোরেন্টের মালিক। বোধহয় মল্লিকের বন্ধু। অধিকারী এখন দার্জিলিঙে। তার অবর্তমানে মল্লিক ফ্ল্যাটটা ব্যবহার করছে। গাড়িটাও অধিকারীর। সেই গাড়ি করেই মল্লিক আজ তিনটে নাগাদ গ্র্যান্ড হোটেলে গিয়েছিল। ভিতরে ঢুকে পাঁচ মিনিট পরে বেরিয়ে এসে বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে। কুড়ি মিনিট অপেক্ষা করার পর আবার ভিতরে ঢোকে। দশ মিনিট পরে বেরিয়ে এসে গাড়িতে করে ডালহৌসি যায়। সেখানে কিছুক্ষণের জন্য মুৎসুদ্দির লোক ওকে হারিয়ে ফেলে, তারপর ফেয়ারলি প্লেসে রেলওয়ে বুকিং আপিসের বাইরে গাড়ি দেখে ভিতরে ঢুকে দেখে, মল্লিক কিউয়ে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনছে। এখান থেকে মনমড, সেখান থেকে আওরঙ্গাবাদ। সেকেন্ড ক্লাসের রিজার্ভ টিকিট। আরও খবর থাকলে পরে টেলিফোন করবে।’
‘আওরঙ্গাবাদ যাচ্ছে?’ আমি জায়গাটার নামই শুনিনি।
‘আওরঙ্গাবাদ’, ফেলুদা বলল। ‘আর আমরা এখন যাচ্ছি সর্দার শঙ্কর রোড, শ্রীসিদ্ধেশ্বর বোসের বাড়ি। একটা কনসালটেশনের দরকার।’