জটিল ব্যাপার

জটিল ব্যাপার

একটা জটা জুটিয়াছিল।

পরচুলার ব্যবসা করি না; সখের থিয়েটার করাও অনেকদিন ছাড়িয়া দিয়াছি। তাই, আচম্বিতে যখন একটি পিঙ্গলবর্ণ জটার স্বত্বাধিকারী হইয়া পড়িলাম তখন ভাবনা হইল, এ অমূল্য নিধি লইয়া কি করিব।

কিন্তু কি করিয়া জটা লাভ করিলাম সে বিবরণ পাঠকের গোচর করা প্রয়োজন; নহিলে বলা কথা নাই হঠাৎ জটা বাহির করিয়া বসিলে পাঠক স্বভাবতই আমাকে বাজীকর বলিয়া সন্দেহ করিবেন। এরূপ সন্দেহভাজন হইয়া বাঁচিয়া থাকার চেয়ে উক্ত জটা মাথায় পরিয়া বিবাগী হইয়া যাওয়াও ভাল।

রবিবার প্রাতঃকালে বহিদ্বারের সম্মুখে মোড়ায় বসিয়া রোদ পোহাইতে ছিলাম। সাঁওতাল পরগণার মিঠেকড়া ফাল্গনী রৌদ্র মন্দ লাগিতেছিল না—এমন সময় এক গ্যটাগোঁটা সন্ন্যাসী আমার সম্মুখে আসিয়া আবির্ভূত হইলেন। হুঙ্কার ছাড়িয়া বলিলেন, বম মহাদেব। ভিখ লাও।

বাবাজীর নাভি পর্যন্ত সাকৃতি জটা দুলিতেছে, মুখ বিভূতিভূষিত। তবু ভক্তি হইল না, কহিলাম, কিছু হবে না।

বাবাজী ঘূর্ণিত নেত্রে কহিলেন, কেঁও! তু ম্লেচ্ছ হ্যায়? সাধু-সন্ত নহি মাতা?

বাবাজীর বচন শুনিয়া আপাদমস্তক জ্বলিয়া গেল, বলিলাম, নহি মানতা।

সাধুবাবা অট্টহাস্যে পাড়া সচকিত করিয়া বলিলেন, তু বাংগালী হ্যায় বাংগালীলোগ ভ্রষ্ট হোতা হ্যায়!

আর সহ্য হইল না; উঠিয়া সাধুবাবার জটা ধরিয়া মারিলাম এক টান।

কিছুক্ষণ দু-জনেই নির্বাক। তারপর বাবাজী জটাটি আমার হস্তে রাখিয়া মুণ্ডিত শীর্ষ লইয়া দ্রুত পলায়ন করিলেন। রাস্তায় কয়েকজন লোক হৈ হৈ করিয়া উঠিল, বাবাজী কিন্তু কোনও দিকে দৃকপাত করিলেন না।

একজন পথচারী সংবাদ দিয়া গেল,—লোকটা দাগী চোর, সম্প্রতি জেল হইতে বাহির হইয়া ভেক লইয়াছে। সে যাহোক, কিন্তু এখন এই জটা লইয়া কি করিব? সংবাদদাতাকে সেটা উপহার দিতে চাহিলাম, সে লইতে সম্মত হইল না।

হঠাৎ একটা প্ল্যান মাথায় খেলিয়া গেল—গৃহিণীকে ভয় দেখাইতে হইবে।

বাহিরে প্রকাশ না করিলেও আধুনিকা বলিয়া প্রমীলার মনে বেশ একটু গর্ব আছে। গত তিন বৎসরের বিবাহিত জীবনে কখনও তাহাকে সেকেলে বলিবার সুযোগ পাই নাই। নিজেকে সে পুরুষের সমকক্ষ মনে করে, তাই তাহার লজ্জার বাড়াবাড়ি নাই; কোনও অবস্থাতেই লজ্জা বা ভয় পাওয়াকে সে নারীসুলভ লজ্জার ব্যতিক্রম মনে করে।

তার এই অসঙ্কোচ আত্মম্ভরিতা মাঝে মাঝে পৌঁরুষকে পীড়া দিয়াছে, একটা অস্পষ্ট সংশয় কদাচিৎ মনের কোণে উঁকি মারিয়াছে—

ভাবিলাম, আজ পরীক্ষা হোক প্রমীলার মনের ভাব কতটা খাঁটি, কতটা আত্মপ্রতারণা।

জটা লুকাইয়া রাখিয়া বাড়ির ভিতরটা একবার ঘুরিয়া আসিলাম। প্রমীলা বাড়ির পশ্চাদ্দিকের ঘরে বসিয়া আছে। তাহার হাতে একখানা চিঠি। নিশ্চয় জটা-ঘটিত গণ্ডগোল শুনিতে পায় নাই।

আমাকে দেখিয়া সে মুখ তুলিয়া চাহিল। মুখখানা গম্ভীর। জিজ্ঞাসা করিল, কিছু চাই?

বলিলাম, না। কার চিঠি?

বাবার।

বাড়ির সব ভাল?

প্রমীলা নীরবে ঘাড় নাড়িল। আমি ঘরময় একবার ঘুরিয়া বেড়াইয়া বলিলাম, আজ বিকেলে আমায় জংশনে যেতে হবে। রাত্রি এগারোটার গাড়িতে ফিরব।

বেশ।

রাত্রে একলাটি বাড়িতে থাকবে, ভয় করবে না তো?

ভয়! ঈষৎ ভ্রূ তুলিয়া বলিল, আমার ভয় করে না।

ভাল। ঘর হইতে চলিয়া আসিলাম। হঠাৎ এত গাম্ভীর্য কেন?

যাহোক, আজ রাত্রেই গাম্ভীর্যের পরীক্ষা হইবে।

রাত্রি সাড়ে দশটার সময় বন্ধুর গৃহে খানিকটা ছাই লইয়া মুখে মাখিয়া ফেলিলাম; তারপর আলখাল্লা ও জটা পরিধান করিয়া আয়নায় নিজেকে পরিদর্শন করিলাম।

বন্ধু সপ্রশংসভাবে বলিলেন, খাসা হয়েছে, কার সাধ্যি ধরে তুমি দাগাবাজ ভৎসন্ন্যাসী নও। এক ছিলিম গাঁজা টেনে নিলে হত না?

না, অভ্যাস নেই বলিয়া বাহির হইলাম।

নিজের বাড়ির সম্মুখে উপস্থিত হইলাম। দরজা বন্ধ। পিছনের পাঁচিল ডিঙাইয়া ভিতরে প্রবেশ করিলাম।

শয়নঘরে আলো জ্বলিতেছে। দরজার বাহির হইতে উঁকি মারিয়া দেখিলাম, প্রমীলা আলোর সম্মুখে ইজি-চেয়ারে বসিয়া নিবিষ্ট মনে পশমের গেঞ্জি বুনিতেছে।

হঠাৎ ঘরে প্রবেশ করিয়া বিকৃত কণ্ঠে বলিলাম, হর হর মহাদেও!

প্রমীলার হাত হইতে শেলাই পড়িয়া গেল, সে ধড়মড় করিয়া উঠিয়া চমকিত কণ্ঠে বলিল, কে?

আমি খ্যাঁক খ্যাঁক্ করিয়া হাসিয়া বলিলাম, বম শঙ্কর! জয় চামুণ্ডে!

প্রমীলা বিস্ফারিত স্থির দৃষ্টিতে আমার পানে চাহিয়া দাঁড়াইয়া রহিল, ভয় পাইয়া পলাইবার কোনও চেষ্টা করিল না। তারপর সশব্দে নিশ্বাস টানিয়া নিজের বুকের উপর হাত রাখিল। সুরেশদা, তুমি এ বেশে কেন?

ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া গেলাম। সুরেশদা! আমি পাকা সন্ন্যাসী, আমাকে সুরেশদা বলে কেন?

প্রমীলা স্খলিতস্বরে বলিল, সুরেশদা, আমি তোমাকে চিনতে পেরেছি। কিন্তু তুমি কেন এলে?—তোমাকে আমি বলেছিলুম আর আমার কাছে এস না, তবু তুমি এখানে এলে?

মাথার মধ্যে বিদ্যুৎ খেলিয়া গেল। সুরেশ প্রমীলার বাপের বাড়ির বন্ধু, বোধ হয় একটু সম্পর্কও আছে। লোকটাকে আমি গোড়া হইতে অপছন্দ করিতাম; প্রমীলার সঙ্গে বড় বেশী ঘনিষ্ঠতা করিত। কিন্তু সে ঘনিষ্ঠতা যে এত দূর

ভাঙা গলায় বলিলাম, প্রমীলা—আমি—

প্রমীলা দুই মুঠি শক্ত করিয়া তীক্ষ্ণ অনুচ্চ স্বরে বলিল, না না, তুমি যাও সুরেশদা, ইহজন্মে আমাদের মধ্যে সব সম্পর্ক ঘুচে গেছে। আগেকার কথা ভুলে যাও। এখন আর আমি তোমার কাছে যেতে পারব না।

দাঁতে দাঁত চাপিয়া বলিলাম, প্রমীলা, এক দিনের জন্যেও কি তুমি আমাকে ভাল—

বাসতুম। এখনও বাসি। কিন্তু তুমি যাও সুরেশদা, দোহাই তোমার—এখনই বাড়ির মালিক এসে পড়বে—সর্বনাশ হবে।

আমি তাহার কাছে ঘেঁষিয়া গেলাম কিন্তু সে সরিয়া গেল না, উত্তেজনা-অধীর স্বরে বলিল, যাবে? আমার গালে চুনকালি না মাখিয়ে তুমি যাবে না? তোমার পায়ে পড়ি সুরেশদা, এখনই সে এসে পড়বে। তবু দাঁড়িয়ে রইলে? আচ্ছা, এবার যাও— সহসা সে আমার ভস্মলিপ্ত অধরে চুম্বন করিল—এস। আমার হাত ধরিয়া ঘরের বাহিরে টানিয়া লইয়া চলিল। আমি হতভম্বের মতো চলিলাম।

খিড়কির দ্বার খুলিয়া দিয়া প্রমীলা বলিল, আর কখনও এমন পাগলামি করো না। যদি থাকতে না পার, চিঠি দিও-ও আমার চিঠি পড়ে না। কিন্তু এমনভাবে আর কখনও আমার কাছে এস না। মনে রেখ, যত দূরেই থাকি আমি তোমারই, আর কারুর নয়।

অন্ধকারে তাহার মুখ দেখিতে পাইলাম না, কিন্তু মনে হইল সে উচ্ছ্বসিত কান্না চাপিবার চেষ্টা করিতেছে।

নিজের খিড়কির দরজা দিয়া চুপি চুপি চোরের মতো বাহির হইয়া গেলাম।

.

কেঁচো খুঁড়িতে সাপ বাহির হইল।

কিন্তু তবু, চিরদিন অন্ধের মতো প্রতারিত হওয়ার চেয়ে এ ভাল।

প্রমীলার চুম্বন আমার অধরে পোড়া ঘায়ের মতো জ্বলিতেছিল, তাহার কথাগুলা বুকের মধ্যে কাটিয়া কাটিয়া বসিয়া গিয়াছিল! ইহজন্মে আমাদের মধ্যে সব সম্পর্ক ঘুচে গেছে— কিরূপ সম্পর্কের ইঙ্গিত এই কথাগুলার মধ্যে রহিয়াছে? বাসতুম—এখনও ভালবাসি—আমার সঙ্গে তবে এই তিন বৎসর ধরিয়া কেবল অভিনয় চলিয়াছে! আমি তোমারই, আর কারুর নয়, স্বামী শুধু বিলাসের সামগ্রী জোগাইবার যন্ত্র! উঃ! এই নারী! আধুনিকা শিক্ষিতা নারী!

বন্ধুর গৃহে ফিরিলে বন্ধু জিজ্ঞাসা করিলেন, কি হল! বিদুষী বৌ সন্ন্যাসী ঠাকুরকে কি রকম অভ্যর্থনা করলে?

মুখের ছাই ধুইতে ধুইতে বলিলাম, ভাল।

দাঁতকপাটি লেগেছিল?

মনে মনে বলিলাম, লেগেছিল, আমার।

স্থির করিলাম, নাটুকে কাণ্ড ছোরাছুরি আমার জন্য নয়। প্রমীলা কতখানি ছলনা করিতে পারে আজ দেখিব; তারপর তাহার সমস্ত প্রতারণা উদঘাটিত করিয়া দিয়া বাড়ি ছাড়িয়া চলিয়া আসিব। ভদ্রলোক ইহার বেশী আর কি করিতে পারে? ইহার পরও যদি প্রমীলা তাহার আধুনিক কালচারের দর্প লইয়া বাঁচিয়া থাকিতে পারে তো পারুক। রোহিণী-গোবিন্দলালের থিয়েটারী অভিনয় করিয়া আমি নিজে নিজেকে কলঙ্কিত করিব না।

বাড়ি গিয়া দ্বারের কড়া নাড়িলাম। প্রমীলা আসিয়া দ্বার খুলিয়া দিল। দেখিলাম, তাহার মুখ প্রশান্ত, চোখের দৃষ্টিতে গোপন অপরাধের চিহ্নমাত্র নাই।

সে বলিল, এরই মধ্যে স্টেশন থেকে এলে কি করে? এই তো পাঁচ মিনিট হল ট্রেন এল, আওয়াজ শুনতে পেলুম।

জুতা জামা খুলিতে খুলিতে বলিলাম, তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে এলুম—তুমি একলা আছ! প্রথমটা আমাকেও তো অভিনয় করিতে হইবে!

কিছু খাবে নাকি? দুধ মিষ্টি ঢাকা দিয়ে রেখেছি।

না—খেয়ে এসেছি। টেবিলের উপর আলোটা বাড়াইয়া দিয়া চেয়ারে বসিলাম।

শোবে না? আলো বাড়িয়ে দিলে যে!

আমার সমস্ত ইন্দ্রিয় তাহার কণ্ঠস্বরে, মুখের ভঙ্গিমায়, দেহের সঞ্চালনে, কোন একটা নির্দেশক চিহ্ন খুঁজিতেছিল। কিন্তু আশ্চর্য তাহার অভিনয়, চক্ষের পলকপাতে তাহার মনের কথা ধরা গেল না। —এমনি করিয়াই এত দিন বন্ধ করিয়া রাখিয়াছে! উঃ—

বলিলাম, আলো বাড়িয়ে দিলুম তোমার মুখ ভাল করে দেখব বলে।

সে গ্রীবাভঙ্গি সহকারে হাসিয়া বলিল, কেন, আমার মুখ তুমি এই প্রথম দেখছ নাকি?

বলিলাম, না। কিন্তু মুখ কি ইচ্ছে করলেই দেখা যায়! আমার মুখ তুমি দেখতে পেয়েছ?

পেয়েছি। এত রাত্রে আর হেঁয়ালি করতে হবে না—শুয়ে পড়। আমি আসছি।

পাশের ঘরে গিয়া অতি শীঘ্র বেশ পরিবর্তন করিয়া সে ফিরিয়া আসিল। এখনও শোওনি? শীতও করে না বুঝি! আমি বাপু ছেলেমানুষ, আর দাঁড়াতে পারব না। একটু হাসিল।

তারপর আমার হাত ধরিয়া টানিয়া বলিল, ওগো এস, শুয়ে পড়ি।

এত ঘনিষ্ঠ, এত অন্তরঙ্গ এই কথা কয়টি, যে আমার হঠাৎ ধোঁকা লাগিল—আগাগোড়া একটা দুঃস্বপ্ন নয় তো?

প্রমীলা!

শঙ্কিত চক্ষে চাহিয়া সে বলিল, কি গা?

আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলাম, না, কিছু নয়। শুয়ে পড়াই যাক, রাত হয়েছে।

শয়ন করিবার পর কিয়ৎকাল দু-জনেই চুপ করিয়া রহিলাম। পাশাপাশি শুইয়া দুইজন মানুষের মধ্যে কতখানি লুকোচুরি চলিতে পারে ভাবিলে আশ্চর্য হইতে হয়।

হঠাৎ প্রমীলা বলিল, আজ সন্ধ্যের পর কানন বেড়াতে এসেছিল।

কানন?

হ্যাঁ গো–কানন। যাকে বিয়ের আগে এত ভালবাসতে—এখন মনেই পড়ছে না?

গম্ভীরভাবে বলিলাম, ভালবাসতুম না, সে আমার ছেলেবেলার বন্ধু।

ঐ হল। সে দু-তিন দিন হল বাপের বাড়ি এসেছে; আজ এ বাড়িতে এসেছিল। তার সঙ্গে অনেক গল্প হল।

কি গল্প হল?

তুমি কবে একবার কালিঝুলি মেখে ভূত সেজে রাত্রে তার শোবার ঘরে ঢুকেছিলে, সেই গল্প বললে।

কিয়ৎকাল নীরব থাকিয়া বলিলাম, আর কি বললে?

আরও অনেক গল্প। আচ্ছা, রাত দুপুরে সোমত্ত মেয়ের ঘরে ঢুকেছিলে কেন বল তো?

ভয় দেখাবার জন্যে।

আর কোনও মতলব ছিল না?

মাথায় রাগ চড়িতেছিল। প্রমীলা আমার খুঁত ধরিতে চায় কোন স্পর্ধায়? অথবা ইহাও ছলনার একটা অঙ্গ?

গলার স্বরটা একটু উগ্র হইয়া গেল—না। তবে তুমি অন্য কিছু ভাবতে পার বটে!

কেন?

আমি বিছানার উপর উঠিয়া বসিলাম, প্রমীলা!

কি?

তোমার সুরেশদা এখন কোথায়?

ক্ষীণস্বরে প্রমীলা বলিল, সুরেশদা!

হ্যাঁ—সুরেশদা—যাকে বিয়ের আগে এত ভালবাসতে—মনে পড়ছে না?

কিছুক্ষণ স্তব্ধ থাকিয়া প্রমীলা ধীরে ধীরে বলিল, পড়ছে। তাঁকে বিয়ের আগে ভালবাসতুম, এখনও বাসি।

স্তম্ভিত হইয়া গেলাম। আমার মুখের উপর একথা বলিতে বাধিল না?

দাঁতে দাঁত চাপিয়া বলিলাম, তোমার এই সুরেশদা এখন কোথায় আছেন বলতে পার?

পারি! তুমি শুনতে চাও?

বল। তোমার মুখেই শুনি!

প্রমীলা ঊর্ধ্বে অঙ্গুলি দেখাইয়া বলিল, তিনি স্বর্গে।

স্বর্গে?—মানে?

প্রমীলা ভারী গলায় বলিল, আজ সকালে বাবার চিঠি পেয়েছি, সুরেশদা মারা গেছেন। তুমি সুরেশদাকে পছন্দ করতে না, তাই তোমাকে বলিনি। হঠাৎ একটা উচ্ছ্বসিত দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিল, সুরেশদা দেবতার মতো লোক ছিলেন, আমাকে মার পেটের-বোনের চেয়েও বেশী স্নেহ করতেন।

মাথাটা পরিষ্কার হইতে একটু সময় লাগিল।

প্রমীলা আমার গায়ে হাত রাখিয়া মৃদুহাস্যে বলিল, এবার ঘুমোও। তারপর নিজের কথার পুনরাবৃত্তি করিয়া বলিল, আর কখনও এমন পাগলামি করো না। মনে রেখ আমি তোমারই, আর কারুর নয়—

২৫ ভাদ্র ১৩৪২

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *