• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

হে আমার ছেলে – শায়খ ড. আলী তানতাবী রহ.

লাইব্রেরি » হে আমার ছেলে – শায়খ ড. আলী তানতাবী রহ.
Current Status
Not Enrolled
Price
Free
Get Started
Log In to Enroll

হে আমার ছেলে – শায়খ ড. আলী তানতাবী রহ

বরাবর 

জনাব, মীম হামযা 

ইসমাঈলিয়া, মিশর 

(সে আমার কাছে চিঠি লিখে কসম দিয়েছিল, যেন আমি তাঁর চিঠি পড়ি এবং উত্তর প্রদান করি।) 

তুমি কেন সংশয় ও লজ্জা নিয়ে আমার কাছে চিঠি লিখছ? তুমি কি ভাবছ, তুমি একাই শিরাউপশিরায় যৌবনের উত্তাপ অনুভব করছ এবং দুনিয়াতে এই সমস্যা শুধুই তোমার; আর কারও নয়? 

হে আমার ছেলে! বিষয়টি এমন নয়। সহজ করে ভাবো। এই রোগ শুধু তোমার একার নয়; বরং এটা যৌবনের রোগ। বিষয়টি নিয়ে আগেপরে অনেক লিখেছি। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমি আমার প্রবন্ধ-নিবন্ধ খুব একটা সংরক্ষণ করতে পারি না। তা ছাড়া আমি কথার দ্বিরুক্তিও পছন্দ করি না। তা না হলে আগের কোন লেখা তোমার কাছে পাঠিয়ে দিতে পারতাম, অথবা বলে দিতে পারতাম তা সংগ্রহের কোন উপায়। 

যে সমস্যা তুমি অনুভব করছ, তা যদি তোমার ঘুম কেড়ে নিয়ে থাকে, তা হলে মনে রেখো, ছোট বড় আরও অনেকেরই ঘুম সে কেড়ে নিয়েছে। অনেকের চোখ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে নিদ্রাসুখ। ছাত্রকে সরিয়ে দিয়েছে তার পড়াশোনা থেকে; শ্রমিককে তার কাজ থেকে এবং ব্যবসায়ীকে তার ব্যবসা থেকে। যেই প্রেমের বর্ণনায় পরীক্ষায় পড়েছেন শত শত কবি, যেই প্রেমকে হালাল করতে গিয়ে ধরাশায়ী হয়েছেন শত শত সাহিত্যিক, সেই প্ৰেম এবং তোমার অনুভূত বিষয় পুরোপুরি অভিন্ন, কিন্তু তুমি একে নিয়েছ উন্মুক্ত ও আবরণমুক্ত বিষয়রূপে। মানুষ এর সাথে পরিচিত হয়েছে; তবে তারা প্রতারিত হয়নি। তারা একে ধরেই চকোলেটের কাগজের মত মুড়িয়ে ফেলেছে, যাতে এর প্রকৃতি থেকে অন্যদেরকে ফাঁকি দেওয়া যায়। তুমি ঝর্ণায় ঠোঁট লাগিয়ে পান করেছ; আর মানুষ তা পান করেছে কারুকার্যমণ্ডিত পেয়ালায় ভরে। পানি আবু নাওয়াসের পেয়ালায় সোরাহির পানির মত, যার অভ্যন্তরে তিনি কেসরা প্রতিষ্ঠা করেছেন। চিঠিতে লেখা তোমার উত্তেজনা কবির কবিতা, গায়কের গান ও চিত্রকরের ফলকে পুঞ্জিভূত উত্তেজনার মতই; কিন্তু সর্বনাম এখানে স্পষ্ট, আর ওখানে উহ্য। তবে সুপ্ত ও গোপন রোগ অধিক সর্বনেশে। 

তোমার মত এই বয়সে যে-ই উপনীত হয়, তার-ই পুঞ্জিভূত শান্ত আগুন জ্বলে ওঠে এবং শিরাউপশিরায় তার তাপ অনুভব করে। দুনিয়া তার চোখে আরেক দুনিয়ায় পরিণত হয়। তার চোখে বদলে যায় মানুষও। তখন আর সে নারীকে রক্তমাংসের মানুষ হিসেবে দেখতে পায় না। নারীর মানবীয় বৈশিষ্ট্যের কথা সে বিস্মৃত হয়; ভুলে যায় তার দোষত্রুটিও। একটি আকাঙ্ক্ষার মধ্যে শত আকাঙ্ক্ষা, আর একটি আরজুর মধ্যে শত আরজু সমবেত হয়। 

স্বভাবজাত কল্পনায় সে নারীকে এমন কাপড় পরিধান করায়, যা তার সব দোষত্রুটি ঢেকে দেয়, আড়াল করে সব অসম্পূর্ণতা; তাকে প্রকাশ করে শুধু কল্যাণ ও পরিপূর্ণ সৌন্দর্যের প্রতিমারূপে। সে তাকে নিয়ে সেই খেলাই খেলতে থাকে, যে খেলা একজন মূর্তিপূজারী পাথর নিয়ে খেলে। পূজারী নিজেই সেটা ছেঁটে মূর্তি বানায়, তারপর সেটাকে রব মনে করে পূজতে থাকে । মূর্তিপূজারীর জন্য পাথরের মূর্তি প্রভু; আর প্রেমিকের জন্য নারী কল্পনার প্রতিমা। 

এগুলো সবই স্বাভাবিক ও যৌক্তিক; তবে যা সবসময় স্বাভাবিক ও যৌক্তিক থাকে না, তা হল এই যে, তরুণ যুবক এসব অনুভব করে পনেরো-ষোলো বছর বয়সে; কিন্তু তারপরও শিক্ষাব্যবস্থা তাকে বিশ‍- পঁচিশ বছর বয়স পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থান করতে বাধ্য করে। 

এই বছরগুলোতে তরুণ কী করবে? যৌবনের দহন, দেহের উষ্ণতা ও আবেগ-উত্তেজনার বিচারে জীবনের কঠিনতম সময়। 

কী করবে সে? 

এখানেই সমস্যাটা । 

আল্লাহর নিয়ম আর মানুষের প্রকৃতি তাকে বলবে, বিয়ে করো। 

তবে সামাজিক পরিবেশ ও শিক্ষাব্যবস্থা তাকে বলবে, তিনটা থেকে যেকোন একটা পথ গ্রহণ করো; যার সবগুলো ক্ষতিকর। কিন্তু তুমি চতুর্থ পথ, যেটাই একমাত্র কল্যাণ, অর্থাৎ বিবাহ থেকে বিরত থাকো। হয়তো তুমি আপন মনে নিজের স্বভাবজাত কল্পনা ও যৌবনের স্বপ্নে বিভোর থাকো। এই ভাবনায়ই আত্মনিয়োগ করো। রুচিহীন গল্প পড়ে, অশ্লীল ফিল্ম আর নগ্ন ছবি দেখে এই চাহিদা পূর্ণ করো। এক সময় দেখবে, ওগুলো তোমার মন ভরিয়ে তুলছে; তোমার দৃষ্টি ও চোখ তৃপ্ত হচ্ছে। এরপর তুমি যেদিকে তাকাবে, সেদিকে শুধু সুতন্বী নারীদের বিভ্রান্তিকর ছবিই দেখতে পাবে। ভূগোলের বই খুললে দেখবে তাদের চেহারা ভাসছে। পূর্ণিমার চাঁদের দিকে তাকালে দেখবে, সেখানেও তারা আছে। দিগন্তের লালিমায়, রাতের আঁধারে, জাগরণের কল্পনায় এবং ঘুমের স্বপনে দেখতে পাবে শুধু তাদেরই ছবি। 

কবির ভাষায়-

 أرِيدُ لِأَنْسَى ذِكْرَهَا فَكَأَنَّمَا تَمَثْلُ لِي لَيْلَى بِكُلِّ سَبِيلِ

      আমি যতই চাই লাইলাকে ভুলে যেতে 

      ততই সে দশদিক থেকে আড়ি পাতে। 

এক পর্যায়ে তুমি কিংকর্তব্যবিমূঢ়, ভারসাম্যহীন অথবা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে। 

অথবা তুমি অবলম্বন করতে পারো আরেক পথ, আজকাল বর্ণচোরারা যাকে বলে গোপন অভ্যাস (হস্তমৈথুন)। এর আগে এই কাজের এ নাম ছিল না। এর হুকুম সম্পর্কে ফকীহগণ আলোচনা করেছেন। কবিরা এ নিয়ে সরব হয়েছেন। সাহিত্যের গ্রন্থাবলিতে এ সম্পর্কে একটি অধ্যায় ছিল। আমি তোমাকে সেদিকে ইঙ্গিত দিতে চাই না। তার সূত্রও বলতে চাই না। যদিও তিন পন্থার মধ্যে এটিই সবচেয়ে কম অনিষ্টকর, কিন্তু যদি এটা সীমা ছাড়িয়ে যায় এবং প্রয়োগ খুব বৃদ্ধি পায়, তা হলে মন বিষণ্ন হয়ে পড়ে; অসুস্থ হয়ে পড়ে শরীর। এই কাজ ভুক্তভোগী যুবককে করে তোলে হাড্ডিসার বুড়ো, ভিতু ও হতাশ। সমাজ থেকে সে পালায়। মানুষের সাক্ষাতে সে আতঙ্ক বোধ করে। জীবনকে ভয় করে এবং জীবনের সব অনুষঙ্গকে এড়িয়ে চলে। 

অথবা তুমি হারাম স্বাদের কাদায় নামতে পারো। এগিয়ে যাবে অন্ধকার পথে; নোংরা পল্লীর দিকে। খুইয়ে ফেলবে তোমার স্বাস্থ্য, যৌবন, ভবিষ্যৎ ও ধর্ম— ক্ষণিকের তৃপ্তিতে। তুমি দেখবে, যে সনদের আশায় তুমি দিনরাত দোড়ঝাপ করছ, যে চাকরি পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছ, যে ইলম হাসিলের জন্য তুমি স্বপ্নে বিভোর, এগুলো সব তুমি হারিয়ে ফেলেছ। আরও দেখবে, তোমার শরীরে শক্তি ও যৌবনের এমন কিছু অবশিষ্ট নেই, যার বলে তুমি কর্মতৎপরতার ঊষ্ণ ভুবনে আত্মনিয়োগ করবে। 

এতদসত্ত্বেও তুমি ভেবো না যে, তুমি পরিতৃপ্ত হতে পারবে। কক্ষণও নয়। যখন তুমি একজনের সাথে মিলিত হবে, তখন সেই মিলন তোমার লোলুপতা বৃদ্ধি করবে। ব্যাপারটি তৃষ্ণা মেটাতে লোনা পানি পান করার মত। তৃষ্ণাকাতর ব্যক্তি যতই লোনা পানি পান করে, তার পিপাসা ততই বাড়তে থাকে। তুমি যদি তাদের হাজার জনের সাথে সখ্য গড়ে তোল, তারপর আরেক জনকে আকর্ষণীয়া রূপে এবং তোমাকে এড়িয়ে চলতে দেখতে পাও, তা হলে তাকে পাওয়ার জন্য তুমি পাগল হয়ে যাবে। তাকে না পেলে তুমি ওই ব্যক্তির মতই ব্যথা অনুভব করবে, যে জীবনে কখনও নারীর পরশ পায়নি। 

ধরো, তুমি যা চাও, তার সবকিছুই তাদের কাছে পেয়ে গেলে এবং দেশের সরকার ও তোমার সম্পদ পরিপূর্ণ রূপে তোমাকে সঙ্গতি দিল, তবে তোমার স্বাস্থ্য কি সঙ্গতি দিবে? স্বাস্থ্য কি পারবে জৈবিক চাহিদার শত ভার বইতে? এক্ষেত্রে বীরর- বাহাদুরও ধরাশায়ী হয়ে যায়। কতজন শক্তির নায়ক ছিল- ভারোত্তোলন, কুস্তি, তীরনিক্ষেপ ও দৌড় প্রতিযোগিতায় ছিল বিস্ময়; তবে তারা জৈবিক চাহিদার ডাকে সাড়া দিয়েছিল এবং স্বভাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল, ফলে তারা বিচূর্ণ হয়ে গেছে। 

আল্লাহর হেকমতের বিস্ময়কর দিক হচ্ছে তিনি উত্তম কাজের সঙ্গে সওয়াব, সুস্থতা ও উদ্যম রেখেছেন; আর গর্হিত কাজের সঙ্গে রেখেছেন শাস্তি, পতন ও রোগব্যাধি। আর পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনের কারণে ষাট বছরের বৃদ্ধকে দেখা যায় তিরিশ বর্ষীয় যুবকের মত। যেসব সত্য ও যথার্থ ইংরেজী প্রবাদ আমরা পেয়েছি, সেগুলোর মধ্যে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে এই কথাটি ‘যে ব্যক্তি তার যৌবন সংরক্ষণ করবে, তার বার্ধক্যও সুরক্ষিত থাকবে।’ 

পুরুষ মানুষকে যদি তার প্রাকৃতিক অবস্থার উপর ছেড়ে দেওয়া হত এবং এসব নগ্ন ছবি, কামোত্তেজক গল্প-উপন্যাস, অশ্লীল সিনেমা, নারীর নগ্নতা ও বেহায়াপনার সয়লাব না থাকত, তা হলে তার কামভাব মাসে বা দুই মাসে একবার জাগ্রত হত। কেননা, একথা শাস্ত্রে স্বীকৃত যে, প্রাণী (এখানে মানুষও প্রাণী) যত বেশি উন্নতির সিঁড়িতে আরোহন করে, ততই তার যৌনমিলন হ্রাস পায় এবং গর্ভ দীর্ঘায়িত হয়। এজন্য মোরগ-মুরগী প্রতিদিনই যৌনমিলন করে থাকে। কেননা, একটি ডিমের গর্ভজাত হওয়ার মেয়াদ হচ্ছে একদিন। তবে বিড়াল একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। সে বিড়ালীর সাথে যৌনমিলন করে বছরে একবার বা দুইবার। কেননা, বছরে তার গর্ভধারণ একবার বা দুইবার। আমার ধারণা, মানুষ বিড়ালের চেয়ে উন্নত। তা হলে এমন কেন যে, বিড়ালের একটি মৌসুম আছে, তা হল আমাদের দেশে ফেব্রুয়ারী মাস; অথচ কিছু কিছু মানুষের বেলায় বছরের সবগুলো মাসই ফেব্রুয়ারী? এই উত্তেজক বস্তুগুলোর কারণে নয় কি? 

এই প্ররোচনা দানকারী বিষয়গুলোই আপদের মূল। অনিষ্টের আহ্বায়ক ও ইবলীসের প্রতিনিধিরা হচ্ছে এগুলোর উৎস, যারা উন্নতি, অগ্রগতি ও বিকাশের শ্লোগান দিয়ে নারীর জন্য নগ্নতা, বেহায়াপনা ও পরপুরুষের সাথে মেলামেশাকে মোহনীয় করে তুলছে। নারীর প্রতি তাদের দরদ ছাগলের প্রতি কসাইয়ের দরদের মত। কসাই ছাগল পালে, তার যত্ন নেয়, তাকে মোটাজাতা করে- কিন্তু সে এসব কিছু করে ছাগলটাকে যবাই করা জন্য । 

প্রথমে একদল লোক বিদেশী অভিনেত্রীদের নগ্ন ছবি তাদের পত্রিকায় প্রকাশ করে। তারপর শরীরচর্চার দোহাই দিয়ে প্রকাশ করে স্কুলের মেয়েদের ছবি। এরপর উপকূলের নারীদের ছবি প্রকাশ করে ভ্রমণের অজুহাতে। সূক্ষ্ম কৌশল আর পরিকল্পিত ছক অনুসারে এর উপর তারা বহু দিন পর্যন্ত তারা তৎপরতা চালাতে থাকে। ইবলীসকে খুশি করার জন্য এক্ষেত্রে তারা অনেক ধৈর্যের পরিচয় দেয়। যদি তাদের এই চক্রান্ত, তাদের পত্রিকা এবং পূর্বের অশ্লীল গল্পমালা আর পরের অসভ্য সিনেমা না থাকত, যদি ভ্রষ্টতার বিদ্যালয় থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত লোকজন আমাদের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলেমেয়ের দায়িত্ব না নিত, তা হলে আমরা দেখতাম না এবং আমাদের কল্পনায়ও আসত না যে, এমন একদিন সামনে আসবে, যখন মুসলিম মেয়েরা বাস্কেট বল খেলার নামে, ব্যায়ামের অনুষ্ঠান প্রদর্শনীর নামে অথবা সমুদ্রভ্রমণের নামে পায়ের গোছা ও ঊরু পর্দামুক্ত করছে। যদি কাসেম আমীনকে আর ফেতনার সূচনাতে তার ডাকে যারা সাড়া দিয়েছিল, তাদেরকে পুনর্জীবিত করা হয় এবং নারীর যে অবস্থা হয়েছে, তা তারা প্রত্যক্ষ করে (যা কখনই তারা চায়নি), তা হলে নিশ্চয় তারা জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে।

তোমাকে সুদৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি যে, কামচাহিদা চরিতার্থকরণের কাজটি প্রকৃতপক্ষে খুব তুচ্ছ এবং তোমার ধারণার চেয়ে অনেক হাল্‌কা। তবে তার সম্পর্কে আলোচনা বিরাট ব্যাপার। কাজটির চেয়ে তার বর্ণনা অন্তরে অনেক বেশি দাগ কাটে। যদি এই শাস্ত্র- অথাৎ কবিতা, গল্প, চিত্রাঙ্কন ও গান না থাকত, যদি না থাকত এই চক্রান্ত, যা নারীকে মোহনীয় করে পেশ করে এবং প্রেমকে কমনীয় করে উপস্থাপন করে, তা হলে সেই দৈহিক সম্পর্কের জন্য যে উষ্ণতা তুমি অনুভব করছ, তার দশ ভাগের এক ভাগও তোমার ও অন্য যুবকদের অন্তরে দেখা যেত না। নিশ্চয় কাজটি চিকিৎসা শাস্ত্রের একটি অপারেশনের মত। নিশ্চয় কাজটি খুব নোংরা। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা তার জন্য একটি অবশকারী ওষুধের ব্যবস্থা রেখেছেন, যা একেবারে বধির ও অন্ধ করে দেয়। ফলে মানুষ এর মধ্যে কোন কদর্যতা দেখতে পায় না। আর এই অবশকারী ওষুধ হচ্ছে কামচাহিদা। মানুষ যদি শান্তভাবে বিষয়টি নিয়ে ভাবে, শিরাউপশিরার আকলের পরিবর্তে যদি মাথার আকল দিয়ে এ সম্পর্কে চিন্তা করে, তা হলে আমি যা বললাম, সেটাই প্রমাণিত হবে। 

এসব উত্তেজক বিষয় কাজ করতে পারে না এবং তিক্ত ফল দিতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত অন্যায়ের সহচর না পাওয়া যায়, যে তোমাকে অশ্লীলতার রাস্তা দেখিয়ে দিবে এবং তোমাকে তার দরজায় পৌঁছে দিবে। এগুলো সব পরিপূর্ণ প্রস্তুত গাড়ির মত। আর এই সহচর হচ্ছে স্টিয়ারিঙের মত। গাড়ির যত শক্তিই থাক, স্টিয়ারিং ছাড়া তা অচল । 

                                   *** 

আমি যেন শুনতে পাচ্ছি যে, তুমি বলছ, এ তো গেল অসুখের কথা; ওষুধ কী?

ওষুধ হচ্ছে আমাদেরকে আল্লাহর নিয়ম ও বিভিন্ন বস্তুর প্রকৃতির দিকে ফিরে আসা। আল্লাহ যেখানে একটি বস্তু হারাম করেছেন, সেখানে আরেকটি বস্তু হালাল করে দিয়েছেন। সুদ হারাম করেছেন; আর ব্যবসা হালাল করেছেন। যেনা হারাম করেছেন; বিয়েকে হালাল করেছেন। এখানে ওষুধ হচ্ছে বিয়ে। 

হ্যাঁ, বিয়েই সংশোধনের একমাত্র পথ। আমি ইসলামী সংস্থা ও সমাজসংস্কারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে প্রস্তাব রাখব, সেগুলো যেন একটি নতুন বিভাগ চালু করে। সেই বিভাগ যুবকদেরকে বিয়ে করার জন্য উৎসাহ দিবে এবং বিয়ের কাজে বিভিন্ন প্রকারের সহায়তা দিবে। প্রস্তাবকারী যুবককে উপযুক্ত কনের সন্ধান দিবে। উপযুক্ত কনের জন্যও বরের সন্ধান করবে। যদি যুবক দরিদ্র হয়, তা হলে তাকে টাকা-পয়সা করজও দিবে। এই প্রস্তাবের কিছু বিশ্লেষণ ও আনুষঙ্গিক বিষয় আছে। যে বা যারা এই প্রস্তাব গ্রহণ করে আমল করতে চাইবে, আমি তাকে বিস্তারিত বিবরণ পেশ করব। 

যদি বিয়ে তোমার পক্ষে সম্ভব না হয় এবং অশ্লীল কাজের ইচ্ছাও তোমার না থাকে, তা হলে একমাত্র পথ হচ্ছে আত্মনিয়ন্ত্রণ। যা লিখতে চাইছি, তা বোঝাতে গিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষা ব্যবহার করে জটিল করতে চাই না। কাজেই একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরতে চাই। তুমি কি চায়ের কেতলী দেখেছ, যেটা আগুনের উপর ফুটতে থাকে। যদি এটার মুখ ভালো করে বন্ধ করে দাও এবং তারপর নীচে আগুন জ্বালাতে থাকো, তা হলে আবদ্ধ তাপ সেটা ব্লাস্ট করে দিবে।

যদি তুমি সেটা ফুটো করে দাও, তা হলে পানি পড়ে যাবে এবং কেতলীটা পুড়ে যাবে। আর যদি তার সাথে ট্রেনের বাহুর মত একটি বাহু লাগিয়ে দাও, তা হলে সেটা কল ঘুরাতে পারবে এবং ট্রেন চালাতে পারবে। আরও অনেক বিস্ময়কর কাজ করতে পারবে। প্রথমটা হচ্ছে ওই ব্যক্তির অবস্থা, যে কামচাহিদাকে নিজের ভিতরে আটকে রাখে; তা নিয়ে শুধু ভাবতে থাকে এবং জল্পনা-কল্পনা করতে থাকে। দ্বিতীয়টা হচ্ছে ভ্রষ্টতার পথ অবলম্বনকারীর অবস্থা, যে কামচাহিদা হারাম পন্থায় চরিতার্থ করতে ঘুরে বেড়ায়। আর তৃতীয়টা হচ্ছে দৃঢ়তা অবলম্বনকারীর অবস্থা। 

আত্মনিয়ন্ত্রণ অর্থ হচ্ছে আধ্যাত্যিক, যৌক্তিক, অথবা দৈহিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে তুমি তোমার সত্তা থেকে বেরিয়ে পড়বে। এতে সঞ্চিত শক্তি নিঃশেষ হবে এবং অবরুদ্ধ শক্তি নির্গত হবে আল্লাহর কাছে মোনাজাত ও এবাদতে গভীর মনোযোগ দেওয়ার মাধ্যমে; অথবা কোন কাজে মনোনিবেশ ও গবেষণায় লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে; কিংবা শিল্পে আত্মনিয়োগ করে এবং যেসব চিত্র তোমার প্রবৃত্তি উপস্থাপন করে, সেগুলো কবিতায় প্রকাশ করে, চিত্রপটে এঁকে, গুনগুন করে গেয়ে, অথবা স্বাস্থ্যগত তৎপরতা তথা খেলাধুলা ও শরীরচর্চায় অংশগ্রহণ করে। 

হে আমার ছেলে! যে ব্যক্তি নিজেকে এই ভালোবাসে, সে নিজের উপর কাউকে প্রাধান্য দেয় না। সুতরাং যখন সে আয়নার সামনে দাঁড়াবে এবং নিজের কাঁধ ও বুকের দৃঢ়তা আর বাহুর শক্তি অবলোকন করবে, তখন তার কাছে এই সুঠাম, সুস্থ ও শক্তিশালী দেহ যেকোন নারীর দেহ থেকে প্রিয় মনে হবে। সে এই দেহ কোন যুবতীর চোখের কৃষ্ণতা বা নীলিমার বিনিময়ে বিসর্জন দিতে, নিজের শক্তি ক্ষয় করতে এবং একজন হাড্ডিসার মানুষে পরিণত হতে রাজি হবে না। 

হ্যাঁ, এটাই ওষুধ— বিবাহ। এটাই পরিপূর্ণ চিকিৎসা। বিবাহ সম্ভব না হলে আত্মনিয়ন্ত্রণ। এটা সাময়িক ব্যবস্থা। তবে এটা শক্তিশালী ব্যবস্থা। উপকারী; ক্ষতিকর নয়। 

তবে উদাসীন বা উশৃঙ্খল সমাজ যে কথা বলে যে, এই সামাজিক সমস্যার সমাধান হচ্ছে দুই শ্রেণিকে সহঅবস্থানে অভ্যস্থ তোলা, যাতে সহজভাবে জৈবিক চাহিদা পূর্ণ হয় এবং ব্যাপকভাবে পতিতালয় খুলে দেওয়া, যাতে সেখানে গোপন ব্যভিচার সম্পন্ন করা যায়। এটা একটা অর্থহীন প্রস্তাব। অনেক অমুসলিম দেশ নরনারীর সহঅবস্থান পরীক্ষা করে দেখেছে। এতে সেখানে কামচাহিদা আর বিশৃঙ্খলা শুধু বৃদ্ধিই পেয়েছে। পতিতালয়ের কথাই ধরা যাক। আমরা যদি তা স্থাপন করি, তা হলে বিশাল পরিসরে তা স্থাপন করতে হবে, যাতে সমস্ত যুবকের জন্য যথেষ্ট হতে পারে। এতে শুধু কায়রোতেই দশ হাজারের অধিক পতিতা থাকতে হবে। কেননা, কায়রোর ২৫ লক্ষ অধিবাসীর মধ্যে অন্তত দুই লক্ষ তরুণ। 

তা ছাড়া যখন আমরা যুবকদের জন্য পতিতালয়ে যাওয়া বৈধ করে দিব, তখন তাদের বিয়ের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে। তখন মেয়েদের বেলায় আমরা কী করব? তাদের জন্যও কিছু মহল নির্মাণ করব, যেখানে পুরুষ পতিতরা অবস্থান করবে?

                                 *** 

হে আমার ছেলে! আল্লাহর কসম! এগুলো অর্থহীন সংলাপ। এগুলো তাদের বিবেকের কথা নয়; বরং প্রবৃত্তির। চরিত্রের সংশোধন, নারীর অগ্রগতি, সভ্যতার বিকাশ, স্বাস্থ্যের উন্নতি, সমৃদ্ধ জীবন— এগুলোর কোনকিছুই তাদের উদ্দেশ্য নয়। এগুলো মুখরোচক কিছু শব্দ, যেগুলো তারা সবসময় আওড়ায়। 

প্রতিদিন তারা একেকটি শ্লোগান আবিষ্কার করে মানুষকে থমকে দেয় এবং তাদের মিশন প্রচার করে। তাদের উদ্দেশ্য, যেন আমাদের মেয়ে ও বোনরা রাস্তায় নেমে পড়ে এবং তারা তাদের দেহের প্রকাশ্য ও গোপন অংশ দেখে দেখে আত্মতৃপ্তি লাভ করতে পারে। 

মুসলিম নারীদেরকে হালাল-হারাম উপভোগের উপকরণ বানানো তাদের লক্ষ। ভ্রমণের সময়ে তাদের নিয়ে নির্জনে যাওয়া এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদেরকে অর্ধনগ্ন করে নাচানোও বিশেষ উদ্দেশ্য। কিন্তু এরপরও কিছু কিছু পিতা প্রতারিত হচ্ছেন। তারা মেয়েদের সম্ভ্রম বিসর্জন দেন, শুধু নিজেরা সভ্য বলে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য । 

পরিশেষে হে আমার ছেলে! এই উত্তর যদি তোমাকে সন্তুষ্ট না করে, তা হলে পুনরায় চিঠি লিখতে সংকোচ কোরো না। মানবদেহে আল্লাহ তাআলা যে জৈবিক উত্তাপ রেখেছেন, তার উষ্ণতা অনুভূত হলে আমার কাছে তা ব্যক্ত করতে দ্বিধা করার প্রয়োজন নেই। এ হচ্ছে শক্তি, সামর্থ্য যৌবনের নিদর্শন। ছাত্রাবস্থায় থাকলেও তোমার উচিত বিয়ে করে নেওয়া।

যদি বিয়ে করার সামর্থ্য তোমার না থাকে, তা হলে আল্লাহর ভয়, এবাদত ও পড়াশোনায় আত্মনিয়োগ এবং শৈল্পিক ব্যস্ততার আশ্রয় গ্রহণ করো। নিয়মিত ব্যায়াম করাও আবশ্যক। কারণ, এও এক প্রকারের উত্তম চিকিৎসা। 

প্রসঙ্গটি অত্যন্ত দীর্ঘ। একটি নিবন্ধে এর চেয়ে বেশি বলা সমীচীন নয়। যে আরও বেশি জানতে চায়, তাকে পত্রমারফত অতিরিক্ত জানানোর অবকাশ আছে। বিষয়টি প্রবন্ধেও হতে পারে, যদি প্রকাশকদের সদিচ্ছা থাকে। 

                                  —সমাপ্ত–

বইটি প্রুফ সংশোধন করে পাঠিয়েছেন – Montasir Sabit

বইয়ের ধরন: ইসলামিক বই

মহুয়ার গান – কাজী নজরুল ইসলাম

রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ - শিবনাথ শাস্ত্রী

রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ – শিবনাথ শাস্ত্রী

কবিতার বিষপান

কবিতার বিষপান – মোস্তাকিম হোসাইন মৃদুল প্রধান

রোধ – গোলাম মাওলা নঈম

Reader Interactions

Comments

  1. Montasir Sabit

    January 31, 2023 at 5:20 pm

    ধন্যবাদ ভাইয়া।।

    Reply

Leave a Reply to Montasir Sabit Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.