• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

চেঙ্গিস খান সব মানুষের সম্রাট – হ্যারল্ড ল্যাম্ব

লাইব্রেরি » যায়নুদ্দিন সানী, হ্যারল্ড ল্যাম্ব » চেঙ্গিস খান সব মানুষের সম্রাট – হ্যারল্ড ল্যাম্ব
চেঙ্গিস খান সব মানুষের সম্রাট - হ্যারল্ড ল্যাম্ব

চেঙ্গিস খান সব মানুষের সম্রাট – হ্যারল্ড ল্যাম্ব

অনুবাদ – যায়নুদ্দিন সানী 

প্রথম প্রকাশ – ফেব্রুয়ারি ২০১৪ 

প্রচ্ছদ – ধ্রুব এষ 

উৎসর্গ 

বাবা ও মা-কে 

ভূমিকা 

রহস্য 

সাত শ বছর আগে একজন মানুষ প্রায় পুরো পৃথিবীই জয় করে ফেলেছিলেন। নিজেকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আবিষ্কার হওয়া অর্ধেক পৃথিবীর অধিপতি হিসেবে, আর মনুষ্য সভ্যতার ওপর রাজত্ব করেছিলেন ত্রাস দিয়ে এবং তা চলেছিল আরো কয়েক প্রজন্ম ধরে। 

জীবনে অনেক উপাধি পেয়েছিলেন তিনি। ‘শক্তিশালী গুপ্ত ঘাতক’, ‘বিধাতার চাবুক’, ‘প্রকৃত যোদ্ধা’, ‘রাজার রাজা’— এমন সব উপাধি পেলেও তিনি সবচেয়ে বেশি পরিচিত ‘চেঙ্গিস খান’ নামে। 

অন্য সব সম্রাটের ওপর এই উপাধি প্রযোজ্য না হলেও, সবগুলো উপাধিই তার প্রাপ্য। আমরা, আমেরিকানরা ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে বড় হয়েছি। আমাদের কাছে ‘গ্রেট’ শুরু হতো ম্যাসিডনের অ্যালেকজান্ডারকে দিয়ে, চলত সিজার হয়ে নেপোলিয়ান পর্যন্ত। ইউরোপের এসব পরিচিত নায়কের চেয়ে অনেক বড় মাপের সম্রাট ছিলেন চেঙ্গিস খান। 

আসলে তাকে সাধারণভাবে পরিমাপ করা কঠিন। তিনি যখন তার সেনাবাহিনী নিয়ে যুদ্ধযাত্রা করতেন, তখন তার পরিমাপ মাইলের হিসেবে না হয়ে হতো অক্ষাংশ আর দ্রাঘিমাংশের হিসেবে। যেসব শহর তার চলার পথে পড়ত, প্রায়ই সেসব হারিয়ে যেত, নদীর গতিপথ পাল্টে যেত। মরুভূমি ভরে যেত পলায়নরত আর মূমূর্ষু মানুষে। আর যখন তিনি কোনো এলাকা পেরিয়ে আসতেন, প্রায়ই সেই জনবহুল এলাকায় জীবিত প্রাণী বলতে থাকত কেবল নেকড়ে আর দাঁড়কাক। 

তার সৃষ্ট মানব জীবনের এমন ধ্বংসযজ্ঞ কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে দেয় আধুনিক কল্পনাকে— যে কল্পনাশক্তি আমাদের ভেতর তৈরি হয়েছিল শেষ ইউরোপীয় যুদ্ধ থেকে। চেঙ্গিস খান, গোবির মরুভূমি থেকে বেরিয়ে আসা একজন উপজাতি গোত্রপ্রধান, পৃথিবীর সমস্ত সভ্য মানুষদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং জয়ী হয়েছিলেন। 

এ কথার মানে কী তা বুঝতে হলে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে ত্রয়োদশ শতাব্দীর দিকে। আমরা দেখতে পাব মুসলমানরা বিশ্বাস করত এমন ভয়াবহ জাগতিক বিপর্যয় কেবল ঐশ্বরিক শক্তির কারণেই হতে পারে। পৃথিবীর ধ্বংস সম্ভবত এখনই হতে যাচ্ছে। ইতিহাসবিদরা বলেন, ‘কখনোই না। ইসলাম কখনোই এমন অবস্থায় পড়েনি। তারা নাজারিবাসী আর মঙ্গোলদের আক্রমণের মাঝে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। 

চেঙ্গিস খানের মৃত্যুর পরও পরবর্তী এক পুরুষ খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকা ভীত হয়ে থাকত— যখন ভয়ঙ্কর মঙ্গোল অশ্বারোহীরা পশ্চিমে ইউরোপের দিকে এগিয়ে যেত। পোল্যান্ডের বোলেসলাস আর হাঙ্গেরির বেলা আক্রান্ত এলাকা থেকে ভীত অধিবাসীরা পালিয়েছিল। সাইলেসিয়ার রাজপুত্র হেনরি এবং তার ‘টিউটনিক নাইট’রা লেগনিয়ে মারা গিয়েছিলেন, মঙ্গোলদের তীরের আঘাতে বরণ করেছিলেন রাশিয়ার রাজা জর্জের পরিণাম। আর সেন্ট লুইয়ের কাছে ক্যাস্তি লের সুন্দরী রানি ব্লাঞ্চে কেঁদেছিলেন, “আমার পুত্র, কোথায় তুমি?” 

অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা মাথার জার্মানির দ্বিতীয় ফ্রেড্রিক তাদের পাপের জন্য খ্রিস্টান অধ্যুষিত এলাকা ভ্রমণ করেন। আর ইংল্যান্ডের তৃতীয় হেনরিকে তিনি লিখেছিলেন যে, তাতাররা ঈশ্বরের শাস্তির চেয়ে কম নয় আর এই তাতাররা হচ্ছে ইসরায়েলের হারিয়ে যাওয়া সেই দশটি উপজাতির একটি, যারা স্বর্ণালি বাছুরের উপাসনা করত এবং সেজন্য তাদের এশিয়ার আবর্জনায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। 

নির্ভরযোগ্য রজার বেকন তার মতামত ব্যক্ত করেছিলেন এভাবে যে, মঙ্গোলরা ছিল খ্রিস্টানবিরোধী সেনা। ওরা আসত ভয়ঙ্কর খরার সময়েও সবশেষ শস্যটা লুট করে নিয়ে যেতে। 

এই বিশ্বাসটা আরো বদ্ধমূল হয়েছিল সেন্ট জেরমের কাছে ভুল করে দেয়া একটা তথ্যের জন্য। সেখানে বলা হয়েছিল, খ্রিস্টানবিরোধী সময়ে এশিয়ার পাহাড়ের পেছনের গগ এবং ম্যাগগের আবাসভূমি থেকে তুর্কিদের একটি জাতি বেরিয়ে আসবে। দূষিত আর নোংরা এক জাতি, যারা মদ বা লবণ কিংবা গম, কোনো কিছু ব্যবহার করে না, আর এরা এক মহাধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। 

তাই পোপ লিওনদের সভা ডেকেছিলেন, যার একটা কারণ ছিল কীভাবে মঙ্গোল ঝড়ের আক্রমণ থেকে বাঁচা যায় তার উপায় নিয়ে আলাপ করা। সংখ্যালঘুদের সন্ন্যাসী, শক্ত এবং সাহসী প্লানো কারপিনির জনকে, পোপের পক্ষ থেকে মঙ্গোলদের সঙ্গে দেখা করতে পাঠানো হয়েছিল, “কারণ আমরা ভয় পাচ্ছি, ঈশ্বরের চার্চের জন্য এই মুহূর্তের নিকটতম আর সবচেয়ে অবশ্যম্ভাবী যে বিপদের ভয় ছিল, তা আসতে পারে এদের কাছ থেকে।” 

মঙ্গোলদের ত্রাস থেকে বাঁচার জন্য চার্চে প্রার্থনার আয়োজন করা হতো। 

তার এই ধ্বংসযজ্ঞ, তার এই মানবসভ্যতাকে রুখে দেয়াই যদি কেবল পুরো গল্প হতো, তবে চেঙ্গিস খান দ্বিতীয় অ্যাট্টিলা (হুনদের রাজা, ৪৩৪-৪৫৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভয়ঙ্কর ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন) বা উদ্দেশ্যবিহীন ধ্বংসযজ্ঞ চালানো তৈমুর লং-এর চেয়ে বেশি কিছু হতেন না। তবে এই চাবুকটি ছিলেন একজন প্রকৃত যোদ্ধা আর ছিলেন মুকুট আর উপাধির সম্রাট। 

এখন আমরা চেঙ্গিস খানকে ঘিরে থাকা রহস্যের মুখোমুখি হবো। একজন উপজাতি, একজন শিকারি আর পশু চরানো রাখাল তিনটি সাম্রাজ্যের শক্তি ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। একজন বর্বর, যিনি নিজে কোনো শহর দেখেননি আর লেখার ব্যবহার জানতেন না, তিনি পঞ্চাশটি জনপদের জন্য আইন তৈরি করেছিলেন। 

সামরিক প্রতিভার দিক থেকে ইউরোপীয়দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিভাবান ছিলেন নেপোলিয়ান। কিন্তু আমরা ভুলতে পারি না যে, তিনি বিশাল একটি সেনাবাহিনীকে মিসরে তাদের নিজ ভাগ্যের ভরসায় এবং অন্য একটি সেনাবাহিনীর একাংশকে রাশিয়ার বরফে পরিত্যাগ করেছিলেন। আর অবশেষে ওয়াটার লু’র যুদ্ধে ছত্রভঙ্গ হয়েছিলেন। তার সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে, তার আইন ছুড়ে ফেলা হয় আর তার পুত্র তার মৃত্যুর পূর্বেই ক্ষমতাচ্যুত হন। 

চেঙ্গিস খানের সমতুল্য বিজয়-প্রতিভা খোঁজার প্রয়োজনে আমাদের অবশ্যই ম্যাসিডনের আলেকজান্ডার, সেই বেপরোয়া আর বিজয়ী যুবক— তার দিকে তাকাতে হবে। আলেকজান্ডার ছিলেন ঈশ্বরের মতো; বিশাল বাহিনী সঙ্গে করে উদীয়মান সূর্যের দিকে যাত্রা শুরু করতেন, সঙ্গে থাকত গ্রিক সংস্কৃতির আশীর্বাদ দুজনেই মৃত্যুবরণ করেন যখন তাদের বিজয়ের স্রোত বইছিল, আর তাদের নাম থেকে গিয়েছিল বর্তমান এশিয়ার কিংবদন্তি হিসেবে। 

কেবল তাদের মৃত্যুর পরেই তাদের প্রাপ্তির পরিমাপে ভিন্নতা এসেছিল, আর এখানেই তাদের তুলনায় পার্থক্য দেখা যায়। আলেকজান্ডারের সেনানায়কেরা রাজত্বের জন্য নিজেদের ভেতর যুদ্ধ শুরু করেন, যার ফলে তার পুত্র পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। 

তাই সত্যিকার অর্থেই চেঙ্গিস খান আর্মেনিয়া থেকে কোরিয়া আর তিব্বত থেকে ভল্গা পর্যন্ত এলাকার এমন এক একচ্ছত্র অধিপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেখানে কোনো প্রতিবাদ ছাড়া অনায়াসেই আসীন হয়েছিলেন তার পুত্র। তার দৌহিত্র, কুবলাই খানও শাসন করে গেছেন অর্ধেক পৃথিবী। 

কীভাবে একজন বর্বর মানুষ, একেবারে নিঃস্ব অবস্থা থেকে এক বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করলেন, তা আজও ইতিহাসবিদদের কাছে এক রহস্য। সম্প্রতি তার সময়ের ইতিহাস সংগ্রহ করা ইংল্যান্ডের একজন পণ্ডিত ব্যক্তি স্বীকার করেন যে, তার এই উত্থান ছিল সত্যিই ব্যাখ্যাতীত। একজন যোগ্য সেবক একটু থেমে আরো আশ্চর্য হয়ে বলেন, “চেঙ্গিস খানের এই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে তুলনা করার জন্য আমরা শেক্সপিয়ারের প্রতিভা ছাড়া আর কাউকেই খুঁজে পাই না।” 

অনেক কারণেই চেঙ্গিস খানের ব্যক্তিত্ব আমাদের কাছে লুকনো ছিল। তার একটি হলো—মঙ্গোলরা লিখতে জানত না অথবা তার প্রয়োজনও তারা বোধ করত না। আর সে কারণেই, তার সময় সম্পর্কে যতটুকু জানা যায়, সেই তথ্যগুলো পাওয়া যায় বিচ্ছিন্ন কিছু উঘুইর, চীনা, পার্সি আর আর্মেনীয় নথি থেকে। কিছুদিন আগে পর্যন্তও মঙ্গোলদের এই জয়গাথাগুলো সন্তোষজনকভাবে অনূদিতই হয়নি। 

তার সম্পর্কে তথ্য দেয়া বেশিরভাগ বিচক্ষণ ইতিহাসবিদই আসলে ছিলেন তার শত্রু—তাকে বিচার করার আগে অবশ্যই এই তথ্যটি মনে রাখা উচিত। তারা ছিলেন অপরিচিত এক জাতি। এসব ইতিহাসবিদের অবস্থা ছিল ত্রয়োদশ শতকের ইউরোপীয়দের মতো তাদের দেখা পৃথিবীর বাইরে যে পৃথিবী ছিল, তা সম্পর্কে তাদের ধারণা ছিল বেশ অস্পষ্ট। 

মঙ্গোলদের তাই তারা পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অস্পষ্টতা থেকে আচমকা বেরিয়ে আসা এক জাতি হিসেবে। মঙ্গোলদের ভয়ঙ্কর প্রভাব তারা তাদের জীবনে অনুভব করেছিলেন, আর প্রত্যক্ষ করেছিলেন সেই ভয়ঙ্কর প্রভাবের তাদেরকে পেরিয়ে অন্য দেশে চলে যাওয়া। দারুণ প্রভাব ফেলা এইসব অভিজ্ঞতা তাদের কাছে ছিল একেবারেই অচেনা। মঙ্গোলদের সম্পর্কে সে সময়ের একজন মুসলমান পণ্ডিতের বক্তব্য ছিল, “ওরা এসেছিল, দখল করেছিল, হুলস্থুল লাগিয়ে দিয়েছিল—সবকিছু লুটপাট করে জড়ো করে তারপর চলে গিয়েছিল।” 

মঙ্গোলদের সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা এবং তা পর্যালোচনা করা ছিল বেশ কঠিন একটা ব্যাপার। প্রাচ্য বিশেষজ্ঞরা, যারা এই কাজটি করেছেন, তারা সবাই, স্বাভাবিকভাবেই, মঙ্গোলদের বিজয়ের রাজনৈতিক উপাখ্যানই লিখেছেন। 

তারা চেঙ্গিস খানকে আমাদের কাছে ক্ষমতালিপ্সু এক অসভ্যশক্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন— প্রায়ই যারা সভ্যতা গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য মরুভূমি থেকে আসত। 

তার জয়গাঁথা পড়ে তাকে ঘিরে জমে থাকা রহস্যের ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে না। এগুলোতে খুব সাধারণভাবে বলা হয়েছে, চেঙ্গিস খান ছিলেন ঈশ্বরদের গোত্রের একজন অধিকর্তা। রহস্যের বদলে আমরা পাই অলৌকিক ঘটনা। 

আমরা যেমনটা দেখলাম, ইউরোপের মধ্যযুগের ইতিহাসবিদরা বিশ্বাস করতেন, মঙ্গোলদের ভেতর এক ধরনের শয়তানি ক্ষমতা ভর করেছিল আর তা ইউরোপের ওপর আছড়ে পড়েছিল। 

এসব ব্যাপার আসলে খুবই বিরক্তিকর। আধুনিক ইতিহাসবিদদের উচিত ত্রয়োদশ শতাব্দীর এইসব কুসংস্কার ঝেড়ে ফেলা। বিশেষ করে ত্রয়োদশ শতাব্দীর এই ধারণা যে, চেঙ্গিস খান ছিলেন একজন অশরীরী আক্রমণকারী 

চেঙ্গিস খানকে ঘিরে থাকা রহস্যের ওপর আলো ফেলার খুব সহজ একটা উপায় আছে। আমরা এখন ঘড়ির কাঁটা সাত শ বছর পিছিয়ে দেব আর সেই সময়ের ইতিহাসবিদরা যে চেঙ্গিস খানের চিত্র এঁকেছিলেন সেই চেঙ্গিস খানের দিকে তাকাব। কোনো আলৌকিক ঘটনা নয়, কোনো অসভ্য শক্তির আবির্ভাব নয়, আমরা তাকাব সেই মানুষটির দিকে। 

আমরা কেবল মঙ্গোল উপজাতির রাজনৈতিক অর্জন নিয়ে কথা বলব না, কথা বলব সেই মানুষটি সম্পর্কে, যিনি মঙ্গোলদেরকে এক অপরিচিত উপজাতি থেকে অর্ধেক বিশ্বের অধিকর্তা করেছিলেন। 

এই মানুষটিকে প্রকৃতভাবে বুঝতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সাত শ বছর আগে যে পরিবেশে তিনি ছিলেন, তার নিজের সেই পরিবেশে, তার নিজের মানুষের মাঝে। বর্তমান সভ্যতার আলোকে তাকে বিচার করলে হবে না। আমাদের অবশ্যই তাকে বিচার করতে হবে অনুর্বর এক এলাকায়, বল্গা হরিণের পেছনে ছোটা একদল শিকারি আর ঘোড়সওয়ারী উপজাতির মাঝে বেড়ে ওঠা মানুষ হিসেবে। 

এখানকার মানুষেরা পরিধান করত পশুর চামড়ার তৈরি পোশাক। আহার ছিল পশুর দুধ আর মাংস। ঠাণ্ডা আর আর্দ্রতা থেকে বাঁচতে তারা শরীর তৈলাক্ত করে রাখত। তাদের মৃত্যু অনাহারে হবে, না প্রচণ্ড শীতে— তা নিয়ে মতভেদ হতো। আবার কখনো মৃত্যু আসত অন্য মানুষের অস্ত্রের আঘাতে। 

সাহসী ফ্রা কারপিনি, যিনি ছিলেন এই এলাকায় যাওয়া প্রথম ইউরোপীয়, তিনি বলেন, “এখানে কোনো শহর নেই। যেদিকে তাকাই কেবল ধু-ধু মরুভূমি। এক শ ভাগের এক ভাগ জমিও এখানে উর্বরা নয়। কেবল নদীর ধার ঘেঁষে একটু জমি উর্বরা। তাও আবার খুবই দুর্লভ। 

“এই এলাকাগুলোতে বড় গাছও পাওয়া যেত না, যদিও যে ঘাস ছিল তা গবাদিপশুর জন্য বেশ উপকারী। এমনকি এলাকার অধিপতি আর রাজপুত্ররাও আগুন জ্বালাতো গবাদিপশুর শুকনো গোবর দিয়ে। 

“আবহাওয়াও ছিল বেজায় রুক্ষ। গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে বজ্রসহ ভয়ানক ঝড় হতো। অসংখ্য মানুষ মারা যেত এইসব ঝড়ে। শুধু তাই নয়, এখানে হতো প্রচণ্ড তুষারপাত। কখনো এমন হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা বাতাস বইতো যে মানুষের ঘোড়ার পিঠেও বসে থাকতে পারত না। এমনই এক প্রচণ্ড ঝড়ে আমরা মাটিতে পড়ে গিয়েছিলাম আর ধুলোর ভেতরে কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না। প্রায়ই হঠাৎ করে হতো প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি। অসহ্য গরমের পরেই আসত তীব্র শীত।”

এই হচ্ছে গোবি মরুভূমি। সময়টা, ১১৬২ সাল। বারো পশুর ক্যালেন্ডারে শূকরি বছর। 

Book Content

চেঙ্গিস খান – প্ৰথম পৰ্ব
চেঙ্গিস খান – দ্বিতীয় পৰ্ব
চেঙ্গিস খান – তৃতীয় পৰ্ব
চেঙ্গিস খান – চতুর্থ পৰ্ব
চেঙ্গিস খান – চিরকুট
লেখক: যায়নুদ্দিন সানী, হ্যারল্ড ল্যাম্ববইয়ের ধরন: অনুবাদ বই, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, ইতিহাস ও সংস্কৃতি

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.